আমার অনুভূতি তুমি পর্ব-০৬

0
438

#আমার_অনুভূতি_তুমি
#পর্বঃ৬
#নুসাইবা_ইসলাম

ইফরার আর ইফরাতের পরিবার ইশাদের বাসায় আসছে অনেক্ষন। ইফরাত, লামিয়া,ইশা ঘুরতে বের হইছে, কারণ বড় রা কথা বলবে সেখানে তাদের এলাউড করে নাই। ইশাদের বাড়ি এর সামনে বড় একটি বাগান আর তার কিছুদুর এ সূর্যদের বাড়ি। সূর্য এর রুম থেকে ইশাদের বাগান স্পষ্টভাবে দেখা যায়। ইফরাত আর ইশা আগে আগে হাটছে লামিয়া এক্টু আসতে আসতে হাটছে। বেলকনি থেকে সূর্য ইফরাতের সাথে ইশা কে দেখে রাগের বসে তার পায়ের কাছে থাকা ফুলের টপ টা লাথি মারে। এরপর দ্রুত ইশাদের কাছে যাওয়ার জন্য হাটা দেয়।

লামিয়া এর মনে কি চলছে তা শুধুমাত্র লামিয়া জানে। লামিয়া কি ভাবছে কি করবে তা শুধুই ধোয়াশা।

আচ্ছা ইশু তোর কি কখোনো কাউকে ভালো লেগেছে? ( ইফরাত)

হুম বাসছি যদি বলেন ভালোবাসা পাপ না,আল্লাহ বলেছেন সে মানুষ সৃষ্টি করেছেন তাদের মন ও দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা ভালোবাসো কিন্তু প্রথমে ভালোবাসা টা আমাকে মানে আল্লাহ কে বাসো,তারপরে আমার নবীকে ভালোবাসো। এরপর মা- বাবাকে ভালোবাসো আর সব শেষে নিজের স্বামী সন্তান কে। তাই আমিও বাসি আমস রব কে রবের রাসুল কে,আমার মা-বাবাকে। যদি প্রেমিক পুরুষ এর কথা জিজ্ঞেস করে থাকেন তাহলে বলবো হ্যাঁ আমার একজনক খুব ভালো লাগে আমি প্রতিটা মোনাজাত এ আল্লাহ কে বলি হ্যাঁ সে যদি আমার জিবনসঙ্গি হিসেবে উত্তম হয় তাহলে তাকে আমার স্বামি হিসেবে দিও। (ইশা)

লামিয়া এবং ইফরায় খুব মনোযোগ সহকারে ইশার প্রতিটা কথা শুনলো ম মুগ্ধতায় তাকিয়ে আছে তারা ইশা এর দিকে। এতোটুকু পিচ্চি কিনা এতোটা ভাবে।

আমি ভাবিনাই বনু তুই এতোকিছু ভাবোস,তোর এই মাথায় এতো কিছু জমা আছে। ( লামিয়া)

হ্যাঁ আপু ভাবি অনেক কিছুই আমল আর করা হয় না। যাইহোক এখন বলো তোমার কি হইছে? কাল থেকে এমন আজিব বিহেভ কেন করছো। ( ইশা)

আজব বিহেভ মাবে ককইই আমি কি করলাম তোর কোথাও ভুল হচ্ছে। ( লামিয়া)

লামিয়ার তোতলানো দেখে ইফরাত আর ইশা কিছু সন্দেহ করছে বাট তা প্রকাশ করলো না। ততক্ষোনে সূর্য এখানে উপস্থিত হয়েছে। সূর্য কে দেখে ইফরাত একদম খুশি হলো না। সূর্য হাসি মুখেই ইফরাতের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে হ্যান্ডশেক করার জন্য। ইফরাত অনিচ্ছা সত্যেও হ্যান্ডশেক করলো।

কি ব্যাপার আজকে সবাই এখানে আসলা বিশেষ কিছু আছে কি? (সূর্য)

হুম অনেক বিশেষ কাজেই আজ আসা দেখতে পারবেন, খুশির খবর আছে আজ একটা তবে কার জন্য কতোটা খুঁশির তা সময় বলবে। ( ইফরাত)

তাই না কি কি এমন খবর আমি জানতে পারি না কি? ( সূর্য)

অবশ্যই এটা এমন এক খবর যা আজ সবাই জানবে, আর হ্যাঁ আমরা অবশ্যই মিষ্টি মুখ করাবো। ( ইফরাত)

ইফরাতের এমন টিটকারি দেওয়া কথা বার্তা একদম সহ্য করতে পারছে না সূর্য তবুও মুখে মিথ্যে একটু হাসি ফূটালো জোর করে। সূর্য এর অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসছে ইশা। সূর্য লামিয়ার দিকে তাকিয়ে এক ভ্রু হাল্কা উঁচু করে জিজ্ঞেস করছে ব্যাপার কি? লামিয়া চোখ নামিয়ে নিলো।

ইফরাত এবার সবাইকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হলো, বাড়িতে ঢুকতেই ইশাকে ওর মামি টেনে সোফায় বসালো । ব্যাগ থেকে আংটি বের করে পড়িয়ে দিলো। ইফরাতের আব্বু ইফরাত কে নিয়ে গেলো সাথে ইশা এর আব্বু ইফরাত কে মিষ্টি খাইয়ে দিলো। এগুলার কিছুই সূর্য বুঝতে পারছেনা আর ইশা তো অবাক হয়ে হা করে তাকিয়ে আছে সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। ইফরাত এবার হাতে মিষ্টি নিয়ে সূর্যের কাছে গিয়ে জোর করে সূর্যকে খাইয়ে দিয়ে জরিয়ে ধরলো।

আরে ভাই মিষ্টি মুখ করো আজ তোমার ছোট বোনের সাথে আমার এংগেজমেন্ট হলো। আমি তোমার দুলাভাই হলাম এ বাবা একটা মিষ্টি কি খাইলা দাড়াও আরো একটা আনছি। ( ইফরাত)

এনগেজমেন্ট মানে? কিসের এনগেজমেন্ট কার সাথে কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না আমি। ( সূর্য)

ইশা আর ইফরাতের বিয়ে ঠিক করেছি আমরা দুই পরিবার,আগামি সপ্তাহের শুক্রবার ওদের বিয়ে আর আজকে এনগেজমেন্ট হলো।(রফিক সাহেব)

বাবার কথায় ইশা অবাক হলেও মনে মনে খুশি হয়েছে কারণ সে ও ইফরাত কে ভালোবেসে ফেলছে। সূর্য রাগে আর একটা কথা না বাড়িয়ে হনহন করে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো। ওদের বিয়েতে দুইপরিবার অনেক খুশি। আজ যেনো সব খুশি ইশাদের বাসায় এসে ভির করছে। সবথেকে বেশি খুশি রফিক সাহেব,একমাত্র মেয়েকে এমন সুযোগ্য এক পাত্রের হাতে তুলে দিতে পেরে সেও খুব শান্তি পাচ্ছে।

ইফরাত রা দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার পড়ে চলে গেছেন। ইফরাত অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করছে ইশুর সাথে কিন্ত মেয়েটা লজ্জায় রুম থেকে বের হ য় নাই। রুমে বসে এগুলা ভাবছে আর ব্লাস করছে ইশু৷ অবশেষে যাকে ভালো লাগছে তাকেই হাসবেন্ড হিসেবে পাচ্ছে এর থেকে বড় কিছু আর হয় না কি দুনিয়াতে । নিচে কিছুর আওয়াজ পেয়ে নিজের ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলো, তারাহুরো করে নিচে নামলো ইশা। দেখতে পেলো তার বড় কাকা আর কাকি সোফায় বসে তার বাবা- মা কে কথা শুনাচ্ছে আর তারা চুপচাপ মাথা নিচু করে আছে।

বাহ মেয়ের বিয়ে ঠিক করে ফেলেছো আর আমরা জানি না? আমরা কি তোমাদের কেউ না রফিক? ( সফিক সাহেব)

আরে এতো বড়লোক বাড়িতে মেয়ের বিয়ে দিচ্ছে সেই চাকচিক্যে তারা অন্ধ হয়ে যাচ্ছে বুঝোনা আমাদের কি চিনবে? (সাজিয়া বেগম)

সূর্যের মায়ের এইসব কথায় রাগ লাগছে ইশুর তবুও চুপচাপ দাঁড়িয়ে শুনছে।

তেমন কিছুই না ভাইজান আজকে ভাইয়া-ভাবি হহঠাৎ এসে বললো এমব ভাবে আর না করতে পারি নাই। আপনাদের তো একটুপরেই জানাইতাম। ইশুর মা)

হইছে এইবার তুমি থামো রাফিয়া আর বলা লাগবে না আমি জানি তোমার ভাই বড়লোক। আর এই কারণেই তোমার মেয়েকে আমাদের সূর্যের সাথ্র বিয়ে দিবোনা বলায় লামিয়ার সাথে বিয়ে ভেঙে দিয়ে সেই সোধ নিলে? আর যা মনে হচ্ছে ইশার সাথে অই ছেলের মনে হয় আগে থেকেই সম্পর্ক তাই না? ( সাজিয়া বেগম)

কি বলছেন ভাবি আপনি এমন কিছুই না এগুলা আপনার ভুল ধারনা। ( রাফিয়া বেগম)

আর বলতে হবে না এইভাবে আর আমার চুল পাকে নাই বইন বুঝি আমি সব। ( সাজিয়া বেগম)

অনেক হইছে চাচি অনেক শুনছি আর না, কি এখানে আমার বাবা – মা কে ইন্সাল্ট করতে আসছেন? অনেক সহ্য করছি আপনাদের কটু কথা আর নয়৷ আপনাদের বলার প্রয়োজন মনে করি না আমি। আপনারা কারা হ্যাঁ? আমার বাবাকে সবসময় ছোট করবেন আপনি বড় বলে?

থামো তুমি ইশা আর রফিক তোর মেয়ে এতো অসভ্য ঠিকঠাক শিক্ষা দিতে পারোস নাকি? বড় কাকার সাথে কিভাবে আচোরণ করছে। ( সফিক সাহেব)

আমার বাবা আমাকে সঠিক শিক্ষা দিয়েছেন বড় কাকা বাট সরি টু সে আপনার মা আপনাকে সেই শিক্ষা দিতে পারে নাই যে কিভাবে ছোট ভাইকে স্নেহ করতে হবে। আপনার সব কাজের খবর আমার কাছে আছে। শুনেন আপনার মতো লোভি অসৎ তো আর আমার বাবা নয় যে অন্যের সম্পদ খাওয়ার জন্য মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিবো। আর চাচি আপনার আবার অন্যমানুষের চরিত্রের সার্টিফিকেট দেওয়ার অনেক শখ তাই না? আপনাকে এটা বলতে আমার একটু ভালো লাগছে না তবুও বলতে হচ্ছে যে আপনার মেয়ে যে ভাগছে সেই খবর কি আমার আম্মু জান মতে গেছে?

চলবে??