আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-১২

0
2970

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:১২

রাহি আর রিফাতের বিয়ে সবাই অনেক খুশি।
রাহি -রিফাত ও অনেক প্ল্যান করছে তাদের বিয়ে নিয়ে।
গায়ে হলুদের দিন…..
রাহি: রাদিকা আমার খাবার দিয়ে যা খিদে লাগছে।
রাদিকা : দেখছো মা তোমার মেয়ের বিয়ে তাও মন খারাপ করে নাই।
রিতা: মন খারাপ করবে কেনো আমাদের দুলাভাইটা কেমন তা দেখতে হবে না।
রাদিকা:মন তো বলে আমি বিয়ে করে নেয়।
রাহি: আমার ফাজিলটার ওপর নজর দিবি না বললাম। রিতা: আহারে…..
এই বলে সবাই জোরে হেসে দেয়।
রাহি সবার সাথে বসে আড্ডা দিছে তখন রিফাত ফোন দেয়।
রাহি: এখন ফোন দিছো কেনো?
রিফাত: তোমার সাথে কথা বলবো তাই।
রাহি: আহারে…..
রিফাত: আহারে বলে না গো জান, মনের ভিতর এসে লাগে।
রাহি: ইশ…রে।
রিফাত: হায়… মরে গেলাম।
রাহি: হইসে ঢং।
রিফাত: আজ আমার মায়াবতীকে দেখে জ্ঞান হারাবো না তো।
রাহি: হুররর।
রিফাত: মন বলতেছে এখনই চলে যায় তোমার কাছে কিন্তু যেতে দিচ্ছে না কেউ।
রাহি: বেচারা….
রিফাত : হুমমম।
এরপর দুজন আরো কিছু সময় কথা বলে ফোন রেখে দেয়।
সন্ধ্যা বেলা….
সবাই গায়ে হলুদের স্টেজে বসে আছে। রিফাত অনেক সময় ধরে রাহিকে দেখার জন্য অপেক্ষা করতেছে।
রাদিকা: কি হলো দুলাভাই এই ভাবে এদিক ওদিক তাকাই আছেন কেনো।
রিফাত: আমার আধা ঘরয়ালী শুনো আমার পুরো ঘরয়ালী কই।
রাদিকা : আছে আছে ধৈর্য ধরেন।
কিছু সময় পর রাহি আসে।
রিফাত রাহিকে দেখে পুরো থ হয়ে যায়।
রাদিকা রিফাতের কানে কানে বলে…
রাদিকা: এই ভাবে তাকায় থাকে না, তাহলে নজর লেগে যাবে।
রিফাত: মায়াবতী যে সাজ দিছে আর যা সুন্দর লাগছে চোখ তো সরছে না।
রাহি রিফাতের এমন ভাবে তাকানো দেখে অনেক লজ্জা পায়।
রাহি আজ বাসন্তী রংয়ের কাথান শাড়ী পরছে তার সাথে হালকা মেকাপ আর ম্যাসিং করে সব গহনা পরেছে।যাতে রাহিকে দেখে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
রাহি রিফাতের কাছে এসে ইচ্ছা করে পায়ে পাড়া দেয়।
রিফাত: আহহ্।
রাদিকা: কি হলো দুলাভাই।
রিফাত: একটা ফাজিল মেয়ে পায়ে পাড়া দিছে।
রাদিকা: আপু তুমি….
রাহি রাদিকা আর রিফাতের দিকে তাকিয়ে দাত কেলিয়ে হাসি দেয়।
রাহি রিফাতের কাছে এসে বসে।তারপর রিফাত রাহির কানে কানে বলে..
রিফাত: মায়াবতী তোমাকে আমার রাজ্যের রানী লাগছে।মন বলছে পলকহীন তাকিয়ে থাকি তোমার দিকে।
“মায়াবতীর মায়ায় হারিয়ে যেতে চাই বহুদূর বহুদূর।
তার ভালবাসায় ডুবে যেতে চায় অতলের ও অতলে।
মায়াবতীর প্রেমের সাগরে আমি হারিয়ে যেতে চায়।
রাহি: কবি হলে কবে থেকে
রিফাত: যেদিন থেকে তোমায় ভালবাসতে শুরু করেছি সেদিন থেকে মায়াবতীর কবি হয়েছি।
রাহি: বাহ্ ভাল।
এরপর সবাই রাহি আর রিফাতের গায়ে হলুদ দেয়।
রিফাত রাহির গায়ে হলুদ দিয়ে মিষ্টি খাইয়ে দিতে যায় আর রাহি রিফাতের হাতে কামড় দিয়ে দেয়।
রিফাত: রাহিহ… তোরে কিন্তু মাইর দিমু।
রাহি দাত কেলিয়ে হাসি দিয়ে বলে
রাহি: আমি কামুড় দিমু।
রিফাত: তুই কুকুর নাকি যে কামড় দেস।
রাহি: কুকুর বলবি না কইলাম।
রিফাত: তাহলে কামড় দেস ক্যা।
রাহি: আর একবার কুকুর কইলে কানে কামড় দিমু।
রিফাত: রাক্ষসী।
রাহি : রাক্ষস।
আলিনা: আচ্ছা ঝগড়া বন্ধ কর। বাকিরা হলুদ দিয়ে শেষ করুক।
তারপর রাহি আর রিফাত চুপ হয়ে যায়। সবাই হলুদ দেবার পর নাচ গান শুরু হয়।
রাহি আর রিফাত বসে সবার নাচ দেখছে এমন সময় শিহাব বলে…
শিহাব: এখন আমাদের সামনে ডান্স করবে রাহি আর রিফাত।
সবাই হাত তালি দেয়।
রাহি: আমি তো নাচই পারি না।
আলিনা: তা বললে চলবে না। নাচ করতেই হবে।
এরপর রাদিকা আর আলিনা রিফাত আর রাহিকে টেনে নাচের জায়গায় নিয়ে আসে।
গান শুরু হয়…
রিফাত রাহির কোমড় ধরে আর রাহি তখনি জোরে হেসে দেয়।
রিফাত: হাসছো কেনো?
রাহি: শুর শুরি লাগতছে। হাত সরাও।
রিফাত: হায়রে আমার কপাল।
তারপর রিফাত রাহির কোমড় থেকে হাত সরিয়ে নেয় আর রাহির হাসি বন্ধ হয়।
রিফাত: হাসি বন্ধ হয়ছে।
রাহি: হুমম।
আলিনা: তোরা নাচ বাদ দিয়ে দাড়িয়ে হাসতেছিস কেনো।
রিফাত: আরেক জনের শুরশুরি লাগে তাই হাসতেছে।
রাহি: আমার শুরশুরি নেয়।
রিফাত : মিথ্যেবাদী মেয়ে।
আলিনা: চুপচাপ নাচ শেষ কর।
তারপর রাহি আর রিফাত অল্প একটু নাচ করে।
সব অনুষ্ঠান শেষে রিফাতরা নিজেদের বাড়ি চলে যায়।
রিফাত চলে যাবার সময় রাহির গালে একটা চুমু দিয়ে যায় আর রাহি তখনি রিফাতের বুকে চিমটি দিয়ে দেয়।
অনুষ্ঠান শেষে রাহি ফ্রেশ হয়ে ঘুমাতে যায় তখনি রিফাত ফোন করে।
রিফাত: জান বাসার বাহিরে আসো না।
রাহি: একটু আগে না এখান থেকে গেলে।
রিফাত: হুমমম।
রাহি: তাহলে…
রিফাত: তোমায় নিয়ে ঘুরতে যাবো।
রাহি: আমি ঘুমাবো বাই।
এই বলে রাহি ফোন কেটে দেয় আর ঘুমিয়ে পরে।
রাহি ফোন কেটে দেবার পর রিফাত অনেকবার ফোন দেয় কিন্তু রাহি ফোন ধরে না তাই রিফাত রাহির রুমের বেলকনি দিয়ে রাহির রুমে আসে।
রাহির রুমে এসে দেখে রাহি বিছানায় শুয়ে ঘুমাচ্ছে।
রিফাত ডান হাত নিজের কপালে নিয়ে বলে
রিফাত: হায়রে…. ঘুম পাগলি। কতো ইচ্ছা ছিলো আজ ঘুরতে যাবো। সব প্ল্যান নষ্ট করে দিলো।
এরপর রিফাত রাহির চুলে হাত বুলিয়ে কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে যায়।
পরেরদিন…..
আজ রাহি আর রিফাতের বিয়ে সবাই অনেক ব্যাস্ত। রাহি এখনো ঘুমিয়ে আছে। রাহির ফোনে টুং টুং শব্দ হয় আর তাতে রাহির ঘুম ভেঙ্গে যায়। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে রিফাত মেসেজ করেছে।
রাহি মেসেজ পড়তে থাকে।
” শুভ সকাল আমার জান। আজ আমাদের বিয়ের দিন।কিছু মহূর্ত পর তুমি সারাটা জীবনের জন্য আমার হয়ে যাবে। যাকে ছারা আমার বাঁচা কষ্ট আমি তাকে আজ আমার করে পেয়ে যাবো। তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না যে আমি আজ কতোটা খুশি। তোমায় আমি খুব ভালবাসি আমার মায়াবতী।
রাহি মেসেজেটা দেখে মুচকি মুচকি হাসে আর বলে পাগল একটা।
এরপর রাহি ফ্রেশ হয়ে ড্রইংয় রুমে সবার কাছে যায়।
রাদিকা: আমাদের কনের ঘুম থেকে ওঠে গেছে।
রিতা: আজ ঘুমে তো রিফাত ভাইয়াকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে শুধু।
রিতার কথা শুনে সবাই হেসে দেয়।
তারপর সবাই হাসি মজা করে নাস্তা করে বিয়ের কাজে লেগে পরে।
রাহি আজ অনেক সুন্দর করে সেজেছে।
লাল বেনারসি,মাথায় সুন্দর করে খোপা, ম্যাসিং করে সব গহনা আর মেকাপ করেছে।
দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
রাদিকা : আমার দুলাভাই আজ রাহি আপুকে দেখলে জ্ঞান হারাবে।
রাহি: হুররর।
রিতা: রাদিকা দেখছো রাহির গাল লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।
আলিনা: হবেই তো।
সবাই হেসে দেয়।
কিছু সময় পর…
রিফাত বর সেজে রাহিদের বাসায় আসে। রিফাতকে দেখতে আজ অনেক সুন্দর লাগছে।
বিয়ে বাড়ি হাসি মজার পর রাহি আর রিফাতের বিয়েটা হয়ে যায়।
দুজনের বিয়েতে সবাই অনেক খুশি। রিফাত জেনো হাফ ছেড়ে বাচলো।
রাহির বিদায়ের সময় রাহি আর রাহির বাড়ির সবাই অনেক কান্না করে।
কিছু সময় পর….
রিফাতরা রাহিকে নিয়ে তাদের বাসায় চলে আসে।
বিয়ের সব কাজ শেষ করে আলিনা রাহিকে রিফাতের রুমে নিয়ে যায়। রিফাতের রুমটা বিভিন্ন ফুলে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।পুরো রুম ফুলের গন্ধে ভরে গেছে।
আলিনা রাহিকে রিফাতের বিছানায় বসিয়ে দিয়ে আসে।
আর রাহি……
চলবে…..