আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-১৩

0
2957

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:১৩

রাহি বাসর ঘরে বসে আছে। কিছু সময় পর রিফাত রুমে আসে।
রাহি চুপচাপ বসে আছে।
রিফাত: যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
রাহি: ঠিক আছে।
এরপর রাহি ফ্রেশ হতে যায়,আর কিছু সময় পর ফ্রেশ হয়ে আসে।
তারপর রিফাত ফ্রেশ হতে যায় আর কিছু সময় পর বের হয়ে তার মাথায় হাত।
রাহি হাত- পা ছরিয়ে বিছানায় শুয়ে ঘুমাচ্ছে।
রিফাত: হায়রে, ঘুমাই পরছে ঘুম পাগলী।
রিফাত রাহির পাশে গিয়ে রাহিকে ডাকে…
রিফাত: রাহি, ও রাহি জান।
রাহি: কি হয়ছে?
রিফাত: ওঠো কথা বলবো।
রাহি: আমি ঘুমাবো।
এই বলে আবার ঘুমিয়ে পরে।
রিফাত : এই মেয়ে তো আমার সব ইচ্ছা নষ্ট করতেছে ভাবছি আজ সারারাত দুজনে বেলকনিতে বসে মনের কথা বলবো আর এই নাক ডেকে ঘুমাইতাছে।
রিফাত: রাহি ঘুম থেকে ওঠ না হলে কোমড়ে শুরশুরি দিলাম।
শুরশুরির কথা শুনে রাহি তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে ওঠে পরে।
রাহির এমন কান্ড দেখে রিফাত হেসে দেয়।
রিফাত: বেলকনিতে চলো আজ সারারাত গল্প করবো আমরা।
রাহি: ঘুমাবো।
রিফাত: আর একবার ঘুমের কথা বললে শুরশরি দিবো।
রাহি: নাহ…, চলো বেলকনিতে চলো।
রিফাত আর রাহির বেলকনিতে যায়।বেলকনিতে একটা দোলনা রাখা আছে। রিফাত আর রাহি সেখানে গিয়ে বসে…
রিফাত: রাহি জানো আজকের রাতটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে। মনে হচ্ছে যেন ঘুম থেকে ওঠলে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। আমি সব সময় চাই তুমি আমার সাথে থাকো কখনো দূরে যেও না।
রাহি: যাবো না।
রিফাত: আজকের চাদটা তোমার থেকে কম সুন্দর।
রাহি: বুঝেছি কবি হতে মন চাইতাছে। তাহলে একটা কবিতা শুনিয়ে দাও কবি সাহেব।
রিফাত মুচকি হেসে বলে….
রিফাত: অবশ্যই।
তারপর রাহির ডান হাত নিজের দু হাতের মুঠোয় রেখে বলতে শুরু করে……
“মায়াবতী আমার,
তুমি আমার সব।
জীবনের সবটুকু সময় তোমার পাশে থাকতে চাই।
তোমার হাতটি ধরে সারাটা জীবন পাশাপাশি হাটতে চাই।
তোমার নীল শাড়ির আচঁলে আমার মুখটা লুকাতে চাই।
তোমার কালো লম্বা কেশের খোপাঁয়…
আমার ভালবাসার সুতোয় গাঁথা বেলি ফুলের মালাটা গেঁথে দিতে চাই।
সারাটা জীবন তোমার সাথে কাটাতে চাই।
তোমার কোলে মাথা রেখে তোমার কাজলটানা মায়াভরা চোখের গভীরে হারিয়ে যেতে চাই।
মায়াবতী আমার…
তোমার কপালে হাজার ভালবাসার পরশ আমি ছুয়ে দিতে চাই।
তোমার মায়ায় সারাটা জীবন পরে থাকতে চাই।
ভালবাসার মায়াবতীকে আরো ভালবাসতে চাই।[ লেখা:আভিগ্যা আয়াত]
কবিতাটা শেষ করে রিফাত রাহির কপালে একটা চুমু দেয়। আর রাহি নিজের চোখ বুজে নেয়।
রাহি: আমার কবি সাহেব তো অনেক ভাল কবি হয়ে গেছে।
রিফাত রাহির নাক টেনে বলে
রিফাত: হুমম রে ফাজিল মেয়ে।
রাহি রিফাতের নাক টেনে বলে
রাহি: হুমম রে ফাজিল ছেলে।
এরপর রাহি রিফাতের কাধে মাথা রেখে বসে থাকে।

কয়েকদিন পর…
রিফাত: ওমা গো……
রাহি তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে।
রাহি: কি হয়ছে এতো রাতে চিল্লাও কেনো?
রিফাত: চিল্লাবো না তো কি করবো।
রাহি: তুমি বিছানা ছেড়ে নিচে কি করো?
রিফাত: ঘুমের মধ্যে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দিয়ে এখন আবার জিঙ্গেস করছো নিচে কি করি।
রাহি মায়া মায়া চোখ করে বলে…
রাহি: আজ ও লাথি মারছি।
রিফাত: না আজ লাথি না কিক মারছো।
রাহি: আমি তো আর ইচ্ছা করে মারিনা।
রিফাত: হইছে আর বলতে হবে না। বিয়ের দিন থেকে এমন হচ্ছে আর এমন কথা শুনতে শুনতে শেষ।
রাহি ন্যাকা কান্না করে…
রাহি: কাল আমি বাপের বাড়ি চলে যামু আর থাকমু না তোর সাথে।
রিফাত: আমি তাহলে কাল আমার শুশুর বাড়ি চলে যামু।
রাহি: রাগাবি না কিন্তু আমাকে।
রিফাত: ওলে…লে আমার বাবু, রাগে না চকলেট কিনা দিমুনি।
রাহি রাগে তখনি বিছানা থেকে ওঠে রিফাতের কাছে গিয়ে রিফাতের কানে কামড় দেয়।
রিফাত: আহ্,কামড় দেস ক্যা।
রাহি: রাগাস ক্যা।
রিফাত: তাই বলে কানে কামড় দিবি।
রাহি: আমার তোর কানে কামড় দিতে ভাল লাগে তাই দেই।
রিফাত: রাক্ষসী।
রাহি: হুরর রাক্ষস।
এই বলে রাহি আবার ঘুমিয়ে যায়।
সকালে…
রাহি: এইয়ে ঘুম থেকে ওঠেন। আপনার চা নিয়ে আসছি।
রিফাত রাহির ডাকে ঘুম থেকে ওঠে।

রিফাত: চা আজ বেশি মিষ্টি লাগছে না।
রাহি:ঢং। আজ খেয়ে দেয় নাই তাই এই কথা।
রিফাত: বুঝো যখন তো দেওনি কেনো।
রাহি তারপর এক চুমুক খেয়ে রিফাতকে দেয়।
রিফাত: এখন ঠিক আছে।আর শুনো….
রাহি: কি….
রিফাত: সকালের নাস্তার পর তোমায় নিয়ে শপিংয়ে যাবো তো রেড়ি হয়ে থেকো।
রাহি : আচ্ছা।
এরপর রাহি দাদুর রুমে চলে যায়।
কিছু সময় পর রাহি আর সবাই নাস্তা করে নেয়।
নাস্তা শেষে রাহি রেড়ি হয়ে নেয়।

রিফাত গাড়িতে বসে রাহিকে ডাকছে তাড়াতাড়ি আসার জন্য।
একটু পর রাহি গাড়ির কাছে আসে।
রিফাত: এতো সময় লাগে নাকি।
রাহি: বেশি সময় লাগেনি। তাই কথা বাদ দিয়ে গাড়ি চালাও।
রিফাত আর কিছু না বলে চুপচাপ গাড়ি চালাতে শুরু করে।
হঠাৎ রাহি রিফাতকে গাড়ি থামাতে বলে।
রিফাত: কি হয়ছে গাড়ি থামাতে বললে কেনো?
রাহি: ফুচকা খাবো।
রিফাত: হায়রে….
রাহি: তুমি আনতে যাবে নাকি আমি যাবো।
রিফাত:যাচ্ছি।
এরপর রিফাত রাহির জন্য ফুচকা আনতে যায়। ফুচকা নিয়ে আসার পর রিফাত বলে….
রিফাত: এইযে তোমার ফুচকা নাও খাও।
রাহি ফুচকা নিয়ে খেতে থাকে।
কিছু সময় পর…
রাহি আর রিফাত শপিং মলে যায়।
রিফাত আর রাহি অনেক কিছু কেনাকাটা করে শপিং মল থেকে বের হচ্ছে এমন সময় কয়েকটি ছেলের মাঝে থেকে একটা ছেলে রাহিকে টিচ করে বলে…
-ও সন্দুরী আমাদের সাথে একটু কথা বলো।
রিফাতের এই কথা শুনে অনেক রাগ হয় আর সাথে সাথে ছেলেটির কাছে গিয়ে ঠাস করে চড় মারে।
রাহি রিফাতকে ফেরাতে যায় কিন্তু পারে না। রিফাত ছেলেটিকে আরো মারতে যাবে তখন শপিংমলের দারোয়ান এসে রিফাতকে ধরে। ছেলে গুলো সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায়।
রাহি রিফাতের কাছে গিয়ে…
রাহি: রিফাত শান্ত হও। এমন করে রাগ করে না।
রিফাত: কেউ তোমাকে খারাপ কিছু বললে বা কিছু করলে তাকে আমি শেষ করে দেবো।
রাহি: আচ্ছা এখন মাথা ঠান্ডা করো।

রাহির অনেক বুঝানোর পর রিফাতের রাগ কমে। তারপর দুজনে গাড়ি করে বাসায় যাওয়ার জন্য বের হয় শপিং মল থেকে।
রিফাত: রাহি তোমার সাথে কেউ খারাপ ব্যাবহার করলে আমাকে তখনি বলবে। তাকে আমি মেরে ফেলবো।
রাহি: হইছে রাগ কমাও।
কিছু সময় পর দুজনে বাসায় আসে…
-রিফাত ভাই কেমন আছিস?
রিফাত: সিয়াম তুই।
সিয়াম: হুমমম।
রিফাত: রাহি ওর নাম সিয়াম আমার খালাতো ভাই। আর সিয়াম এইটা তোর ভাবী রাহি। সিয়াম আমাদের বিয়েই আসতে পারেনি।
সিয়াম: হাই ভাবী।
রাহি: হাই।
রিফাত: তোরা কথা বল। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
রিফাত তারপর ওপর চলে যায়।
তখন সিহাব রাহির কাছে যায় আর তার হাত ধরে।
রাহি: আপনি আমার হাত ধরছেন কেনো?
সিয়াম: আমি তো ধরতেই পারি দেবরই তো লাগি।
রাহি : হাত ছাড়ুন।
সিয়াম: ভাবি এমন করো কেনো একটু কাছে আসো না।
আর তখনি……..
চলবে….