আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-০২

0
5670

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:2

রিফাত বাসায় এসে তাড়াতাড়ি রুমের দরজা খুলে দেখে রাহি রুমের মধ্যে নেই। রিফাত তাড়াতাড়ি ওয়াশরুমের দিকে যায় কিন্তু ওয়াশ রুমে ও নেই। পুরো রুম খুজে দেখে কিন্তু রাহিকে খুজে পাই না। রিফাত রাগে বেডের পাশে রাখা শো-পীচ টা হাতে নিয়ে ফ্লোরে ফেলে দেয়। হঠাৎ তার চোখ যায় বেলকনির দিকে তাড়াতাড়ি বেলকনিতে যায় আর দেখে সেখানে কাপড় বাঁধা। রিফাত তা দেখে জোরে ফ্লোরে পা দিয়ে লাথি মারে।
কিছু সময় আগে….
রাহির শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল তাই দরজার কাছে এসে দরজা খুলার জন্য অনেক ডাকাডাকি করে। কিন্তু কেউ দরজা খুলে না। এদিকে রাহির অবস্থা ও খারাপ হতে থাকে। তখনি রাহি বেলকনির দরজা দেখতে পায় তাড়াতাড়ি বেলকনির দরজা খুলে বেলকনিতে গিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয়। একটু শান্ত হবার পর রাহির মনে হয় এখান থেকে পালিয়ে যাবে। তাই সে রুমে এসে আলমারিতে কাপড় খুজতে থাকে। তারপর কাপড় নিয়ে বেলকনির গ্রিলের সাথে বেধে নিচে নেমে পালিয়ে যায় রিফাত আসার আগে।
এই দিকে…
রিফাত রাগে ফায়ার হয়ে গেছে। দুচোখ দিয়ে যেনো রক্ত ঝড়বে এমন লাল হয়ে গেছে।
রাগে চিৎকার করে বলে….
রিফাত: রাহি তোকে কখনোই আমার থেকে দূরে যেতে দেবো না। কিন্তু তুই আজ আবার আমার কথা শুনিস নি। এর শাস্তি তুই পাবি। তোকে যে সারাটা জীবন আমার খাচায় বন্দি হয়ে থাকতে হবে। আমি জানি তুই কোথায় গেছিস। আজকের ভুলের জন্য তোকে অনেক বড় শাস্তি পেতে হবে।
এই বলে রিফাত বাসা থেকে গাড়ি নিয়ে বেড় হয়ে যায়। গাড়ি রাহির বাড়ির সামনে এনে থামায়।গাড়ি থেকে নেমে রাহির বাসার ভিতরে যায়।
রাহির বাবা -মা ড্রইংয় রুমে বসে আছে। রিফাতকে দেখে তারা দাড়িয়ে যায়। রাহির বাবা রিফাতকে বলে….
রাহির বাবা: তুমি এখানে কি করো?
রিফাত: রাহি কোথায়?
রাহির বাবা: আমি জানি না। তুমিই তো আমার মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলে।
রিফাত আর কিছু না বলে রাগে রাহির রুমের দিকে যায় আর রুমে গিয়ে দরজা লক করে দেয়।
রাহি রুমের ভিতর শুয়ে ছিলো দরজা লাগানোর শব্দে তাকিয়ে দেখে পাশে রিফাত দাড়িয়ে আছে রাগি ভাবে। রাহি রিফাতের রক্তচুক্ষু দেখে ভয় পেয়ে যায়। রিফাতের চোখ দেখে মনে হয় যেনো এখনি চোখ দিয়ে গিলে খাবে রাহি কে।
রাহি ভয়ে বিছানা থেকে নেমে তাড়াতাড়ি দরজা খুলতে যায় আর তখনি রিফাত রাহির হাত ধরে টান দেয়। আর পাশের দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।
রাহি ভয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়।
রিফাত রাহির গাল জোরে চেপে ধরে তার মুখের কাছে মুখ নিয়ে বলে
রিফাত:তোর সাহস হলো কি করে আমার বাসা থেকে চলে আসার। তোর কি মনে একটু ও ভয় নেয় যে আমি জানার পর তোর কি অবস্থা করবো আমি। সত্যি তোর অনেক সাহস বেরে গেছে।
রিফাতের কথা শুনে রাহি কান্না করে দেয়।
তা দেখে রিফাত রেগে বলে..
রিফাত: একদম নেকা কান্না করবি না। তোর কোনো কাজ করার আগে ভাবা উচিত ছিলো এখন কান্না করে কোনো লাভ নেই।কান্না থামা বলছি।
রাহি কান্না করতেই আছে। তাই রিফাত রাগে রাহির গালে জোরে একটা থাপ্পড় দেয়।
রাহি ও মা গো বলে গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে রিফাতের দিকে তাকায়।
রিফাত: কান্না থামা না হলে আরেকটা দিবো।
রাহি রিফাতের কথায় কান্না থামায়।
রিফাত:চল বাড়ি চল।
রাহি রাগি চোখে রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে….
রাহি: আমি যাবো না। যে আপনি আমার জীবন নরক করে দিয়েছেন আমি আপনার বাসায় কখনো যাবো না।
রিফাত: দেখ আমার রাগ আর বাড়াস না।তাহলে তোর শাস্তি আরো কঠিন হবে। তাই বলছি চুপচাপ আমার সাথে চল।
রাহি কিছু বলতে যাবে তার আগে রিফাত রাহির হাত ধরে টেনে রুম থেকে বের হয়।
রাহির বাবা: তুমি আমার মেয়েকে এই ভাবে নিয়ে যেতে পারো না।
রিফাত রাগি গলায় বলে…
রিফাত: রাহি আমার বিয়ে করা বউ। তো আমি ওকে নিয়ে যাবো কি যাবো না তা আমার সিদ্ধান্ত আপনার না। আশা করি আমার কোনো কাজে বাধা দিতে আসবেন না। তাহলে আমি কি করবো নিজে ও জানি না। আর আপনাদের কাছে আমি ভাল মানুষ না তা আমি জানি।তাই আমার কাজে বাধা দিবেন না।
রিফাত আর কিছু না বলে,না শুনে রাহির হাত ধরে টেনে গাড়িতে এনে বসায়।
কিছু সময় পর….
রিফাত গাড়ি চালাচ্ছে আর রাহি চুপচাপ বসে গাড়ির জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে।
রাহি আর কি করবে সে তো রিফাতের সাথে পারবে না। তার সাথে পারলে তো তার জীবনটা আর এমন হতো না। তার সাথে ওই নরকে যেতে হতো না।
রাহি অতীতের দিনগুলো ভাবছে এমন সময় রিফাত বলে..
রিফাত: আচ্ছা তোর সাহস এতো বাড়লো কি করে।
রিফাতের কথায় রাহি ঘাবড়ে যায়…
রাহি আমতা আমতা করে বলে…
রাহি: আ…আ.. আমার ভুল হয়ে গেছে। মাফ করে দেন।
রিফাত রাহির কথা শুনে রাগে বাম হাত দিয়ে রাহির গাল চেপে ধরে বলে
রিফাত: মাফ তো করা যাবে না। শাস্তি তো তোকে দিবোই।
রাহি কান্না করতে করতে বলে….
রাহি: প্লিজ এমন করবেন না।
রিফাত মুচকি হেসে…
রিফাত: আচ্ছা তোর হাতের দাগটা কি এখনো আছে নাকি নেই?
রিফাতের কথা শুনে রাহির বুক কেপে ওঠে।সে আরো কান্না করে দেয় হাতের দিকে তাকিয়ে।
রিফাত: দেখি সেই হাতটা।
রাহি হাত লুকিয়ে ফেলে।
রিফাত তা দেখে রেগে….
রিফাত: হাত লুকাতে বলি নাই আমাকে দেখাতে বলসি কানে যায় না নাকি কথা তোর।
রাহি ভয়ে ভয়ে বাম হাতটা রিফাতের দিকে এগিয়ে দেয়।
রাহির হাত কাঁপছে।
রিফাত রাহির হাত নিজের ডান হাত দিয়ে ধরে আর আরেক হাত দিয়ে রাহির হাতের সেই দাগ গুলোই হাত বুলিয়ে দেয়।
রাহি রাগে তার হাত ছাড়িয়ে আনে।
রিফাত: তুই হাত সরিয়ে নিলি কেনো।
রাহি: আপনি একটা খারাপ মানুষ।
রিফাত: তুই যে এইটা ভাবিস তা আমি আগে থেকেই জানি।
রাহি রিফাতের কথা শুনে মুখ ভেংচি দিয়ে অন্যদিকে তাকায়।
কিছু সময় পর রিফাত বাসায় আসে। নিজে গাড়ি থেকে নেমে রাহিকে নামতে বলে। রাহি আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ নেমে পড়ে।
দুজনে বাসার ভিতরে যায়।
রিফাত: খালামনি। আমার আর রাহির জন্য খাবার পাঠিয়ে দিয়ো ওপরে।আমরা রুমে যাচ্ছি।
তারপর রিফাত রাহির হাত ধরে ওপরে নিয়ে যায়।
রুমের ভিতরে….
রিফাত: আমি ভেবেছিরাম তোকে শাস্তি দিবো। কিন্তু হাতের দাগগুলো ভাল হয়নি তাই মাফ করে দিলাম যা। তবে মনে রাখিস আর কখনো আমার কথার বাইরে গেলে তার পরিনতি খারাপ হবে।
রাহি রাগে বলে…
রাহি : আমি আপনার কোনো কথাই শুনবো না। আর আমি সুযোগ পেলেই এখান থেকে চলে যাবো। তবে এইবারের মতো ভুল করবো না।
রাহির কথা শুনে রিফাতের মাথায় আগুন ধরে যায়।তাই রাহির গালে জোরে একটা চড় মারে আর বলে তুই যাতে এখান থেকে পালাতে না পারিস তাই করছি একটু অপেক্ষা কর। আমি আসছি।
এই বলে রিফাত রুম থেকে বের হয়ে নিচে নেমে আসে আর কিছু সময় পর রুমে যায়।
রাহি রিফাতকে দেখে ভয় পেয়ে যায়। রিফাতের হাতের জিনিস দেখে রাহি জোরে চিৎকার দিয়ে বলে…..
চলবে……..