আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-০১

0
5695

আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
পর্ব-০১

তোর নাকি বিয়ে করার খুব ইচ্ছে হয়ছে শুনলাম রাহি।
রাহি ভয়ে ভয়ে বলে….
রাহি : না…. না…..। আমি বিয়ে করবো না। আ…. আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই রিফাত স্যার।
রিফাত: না, তোর তো অনেক ইচ্ছে তাই তো শাড়ি পড়ে সেজেগুজে তাদের সামনে যাওয়ার জন্য বসে আছিস।
রাহি: আমি এখনি সব মুছে ফেলছি। আর আমি বিয়ে করবো না। তবু আপনি এখান থেকে যান।[ কান্না করতে করতে]
রিফাত: আমি তো যাবোই তবে তুই যে ভুল করেছিস তার শাস্তি তোকে দিবো তারপর।
রাহি শাস্তির কথা শুনে অারো ভয় পেয়ে যায় আর কান্না করে দেয়।
রিফাত রাগি চোখে রাহির দিকে তাকায় আর নিজের মুখ রাহির মুখের কাছে নেয়। তারপর ডান হাত দিয়ে রাহির চোখের পানি মুছে দেয় আর বাকা হেসে বলে…
রিফাত: এমন করে কান্না করো না জান। তোমার ভুল করার আগে ভাবা উচিত ছিলো । এখন যেহেতু ভুল করে ফেলছো শাস্তি তো তুমি পাবেই।
রাহি: আমাকে মাফ করে দেন বললাম তো আর কখনো এমন করবো না।
রিফাত: আচ্ছা বলো তো কি শাস্তি দেওয়া যায় তোমাকে।
রাহি: বললাম তো আমি আর এমন করবো না।
রিফাত রাগে চোখ বড় বড় করে জোরে চিল্লায় বলে…
রিফাত: চুপ।আর একটা কথাও বলবি না। আমার থেকে পালানোর চিন্তা করছিলি তাই না । কিন্তু তুই ভুলে যাস কেন আমি তোকে কখনো ছাড়বো না। তুই তো আমার পাখি আর তোকে আমার খাঁচায় বন্দি করার ব্যাবস্থা করতেছি যাস্ট ওয়েট।
এই বলে রিফাত রাহির হাত ধরে টেনে বাসার বাহিরে নিয়ে যায়। রিফাত নিজের গাড়ির দরজা খুলে রাহির দিকে তাকিয়ে বলে…
রিফাত :গাড়িতে গিয়ে বসো।
রাহি: কেনো?আমি কোথাও যাবো না।
রিফাত :চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসো। না হলে কিন্তু….
রিফাতকে আর কিছু বলতে না দিয়ে রাহি জোরে চিৎকার করে বলে…
রাহি: আমি বললাম তো আপনার সাথে আমি কোথাও যাবো না।তারপর ও জোর করছেন কেনো।আপনার জন্য আমার জীবনটা নরক হয়ে গেছে।দয়া করে এখান থেকে চলে যান।
রিফাত রাগে..
রিফাত: চুপ। তোর খুব সাহস বেড়ে গেছে না। মুখে মুখে কথা বলিস। এক ভুলের জন্য শাস্তি পাবি আবার আমার সাথে তর্ক করার শাস্তি ও তুই পাবি।
তারপর রিফাত জোর করে রাহিকে গাড়িতে বসিয়ে নিজে গাড়িতে বসে আর গাড়ি চালাতে শুরু করে।
রাহি গাড়িতে বসে কান্না করছে।
রিফাত: কান্না থামা বলছি।
রাহি রিফাতের কথা না শুনে কান্না করছেই।
রিফাত:তোকে কান্না থামাতে বলছি তোর কানে যায় না নাকি কথা।
রাহি :আপনার কি আমি কান্না করি বা না করি।[রাগে]
রিফাত: আমার অনেক কিছুই এখন থাম। না হলে চড় দিবো গালে।
রাহি চড়ের কথা শুনে চুপ হয়ে যায়।কারন এর আগে ও চড় দিয়েছে।
রিফাত কিছু সময় পর গাড়ি থামায় এক জায়গায়।
রাহি গাড়ি থামানো দেখে বাহিরে তাকায়। বাহিরে তাকিয়ে রাহি অবাক।
রিফাত : বের হও গাড়ি থেকে।
রাহি: আমি বের হবো না।
রিফাত রাহির কথা শুনে রাহিকে টেনে বাহির করে আর বলে চলো।
রাহি:এখানে আমি যাবো না।
রিফাত: কেনো জান পাখি।এখানে না গেলে তোমায় আমি আমার খাঁচায় বন্দি করবো কিভাবে।
রাহি রিফাতের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে বলে…
রাহি: আমি মরে গেলে ও আপনাকে আমি বিয়ে করবো না। তাই এই কাজী অফিসে আমি যাবো না।
বলেই রাহি রাস্তা দিয়ে দৌড় দেয়।
রিফাত রাহির পিছনে দৌড় দেয়। কিছু দূর যাবার পর রাহিকে ধরে ফেলে।
রিফাত: তোর সাহস অনেকে বেড়ে গেছে দেখি। আজকে যা যা করছিস তার শাস্তি তুই একটু একটু করে পাবি। তার আগে বিয়েটা করে নেয়।
রিফাত জোর করে রাহিকে নিয়ে কাজী অফিসে যায় আর জোর করে বিয়ে করে নেয়।



রিফাতের বাসায়….
রিফাত রাহিকে নিয়ে তার বাসায় আসে। রাহি চুপচাপ শুধু কান্না করছে।
রিফাত রাহির হাত ধরে বাসার ভিতরে নিয়ে যায়।
রিফাত : খালামুনি তুমি কোথায়?
রিফাতের খালা:কি হয়েছে?
রিফাত: এই বাড়ির বউ নিয়ে এসেছি। তাকে নিয়ে যাও।রিফাতের খালা রিফাতের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।রিফাতের পাশে তাকিয়ে দেখে সত্যি একটা মেয়ে শাড়ি পড়ে দাড়িয়ে আছে।
রিফাতের খালা রিফাতকে কিছু জিঙ্গেস না করে রাহিকে ধরে নিয়ে ড্রইংয় রুমের সোফায় নিয়ে বসায়।
রিফাত ওপরে নিজের রুমে চলে যায়। হঠাং কিছু ভাঙ্গার শব্দে রিফাত নিচে আসে আর দেখে রাহি কাচের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলছে।
রিফাত: রাহি কি হয়েছে এমন করছো কেনো?
রাহি : কি হয়েছে। আপনি মনে হয় কিছুই জানেন না। আমার জীবন নষ্ট করে এখন জিঙ্গেস করছেন কি হয়ছে।
[রিফাতের শার্টের কলার ধরে বলে]
রিফাত: পাগলামি করো না। খাবার খেয়ে নাও।
রাহি: কিছুই খাবো না আমি।
এই বলে সামনে রাখা সব খাবার নিচে ফেলে দেয়।
রিফাত তা দেখে রেগে যায় আর রাহির হাত ধরে টেনে ওপরে নিয়ে যায় আর একটা রুমে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে মে মেঝেতে ফেলে দেয়।
রাহি আহ্ বলে জোরে চিৎকার দেয়।
রিফাত হাটু গেড়ে রাহির মুখের সামনে মুখ নিয়ে বলে…
রিফাত: তোকো কতোবার বলেছি আমার কথা মতো চলবি আমার রাগ ওঠাবি না। তাও আমাকে কেনো রাগাস।তোর খুব শখ না খেয়ে থাকার তাই না।আচ্ছা ঠিক আছে তাই থাক।আজ কোনো খাবার তুই পাবি না সাথে এক ফোটা পানি ও না থাক এই বন্ধ ঘরে।
এই বলে রাহিকে ধাক্কা দিয়ে রিফাত রুম থেকে বের হয় দরজা বন্ধ করে দেয়।
রিফাত তার বাসার সবাইকে ডাকে। সবাই আসার পর
রিফাত: এই দরজা কেউ খুলবে না। আর যদি কেউ খুলো তাহলে তো জানোই সবাই কি পরিনতি হবে তার।
এই বলে রিফাত বাসার বাহিরে চলে যায়।
রাহি রুমের ভিতর বসে কান্না করছে।
কিছু সময় পর রাহির অন্ধকারে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তাই দরজার কাছে গিয়ে দরজা ধাক্কা দেয় আর বলে…
রাহি: দরজা খুলো কেউ দয়া করে। আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
অনেক সময় ডাকার পরও কেউ ভয়ে দরজা খুলে দেয় না। কিছু সময় পর রাহির আর কোনো সাড়া শব্দ পাই না কেউ। তাই বাসার সবাই ভয় পেয়ে যায়। রিফাতের খালামুনি রিফাতকে বারবার ফোন করছে কিন্তু রিফাত ফোন ধরছে না।
রিফাত রাহিকে রুমের মধ্যে রেখে গাড়ি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়।জোরে গাড়িয়ে চালিয়ে একটা নিরব জায়গায় এসে গাড়ি থামায় আর গাড়ি থেকে নেমে সেই জায়গায় দাড়িয়ে জোরে চিৎকার করে বলে।
রিফাত: আমার জীবন কেনো এমন হলো।আমি এমনটা কখনো চাইনি। তাহলে কেনো কেনো সব উল্টো হলো । কেনো সেই দিনটা আমার জীবনে এসেছিলো। যে দিনটার কারনে আজ সব এলোমেলো।
এই সব বলার পর কিছু সময় সে নিরব হয়ে দাড়িয়ে থাকে। তারপর গাড়িতে বসে আর তখন ফোনের দিকে চোখ যায়। ফোন হাতে নিয়ে দেখে তার খালামুনি ফোন দিয়েছিলো।রিফাত তা দেখে ভয় পেয়ে যায় আর রাহির কথা মনে পরে যায়।রাহির অন্ধকারে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তা সে ভুলে গেছিলো রাগের মাথায়। রিফাত তাড়াতাড়ি গাড়ি নিয়ে বাসার উদ্দ্যশে রওনা দেয়।
কিছু সময় পর বাসায় আসে আর তাড়াতাড়ি গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে সেই রুমের সামনে যায় আর তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দেখে…….
চলবে….