আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-০৬

0
3598

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:৬

সেই দিন রাহি খুশি মনে বাসায় চলে আসে।
পরেরদিন……
সকাল সকাল রাহি খুশি মনে অফিসের জন্য বের হয়।রাহির মন আজ খুব ভাল কারন আজ থেকে রিফাতকে অনেক জালাবে তাই।
অফিসে আসার পর রাহি রিতার কেবিনে যায়।
রাহি:কেমন আছিস
রিতা: রাহি তুই।
রাহি :হুমম।
রিতা:তুই না চাকরি আর করবি না। তাহলে…
রাহি: আমি চাকরি করতে আসিনি এসেছি তো রিফাতকে শায়েস্তা করতে।
[বলেই দাত কেলিয়ে সয়তানি হাসি দেয়।]
রিতা: কি বলছিস কিছুই বুঝতেছি না।
রাহি :আচ্ছা শুন।
তারপর রাহি রিতাকে সব খুলে বলে।
রিতা: বাবারে তুই এতো ফাজিল। তোকে দেখে বুঝা যায় না। রিফাত স্যার তাহলে ঠিকই বলে।
রাহি: কি ঠিক বলে।
রিতা:এইযে তুই ফাজিল মেয়ে।
রাহি: রিতা চুপ। আমি আমার কেবিনে গেলাম বাই।
তারপর রাহি নিজের কেবিনে চলে যায়। কিছু সময় পর রিফাত অফিসে আসে। রিফাত এসেছে শুনে রাহি রিফাতের কেবিনে যায়।
রাহি: স্যার ভিতরে আসবো।
রিফাত রাহিকে দেখে মনে মনে বলে ফাজিল মেয়ে এসে হাজির।
তারপর রাহিকে বলে
রিফাত: আসেন ভিতরে।
রাহি ভিতরে গিয়ে বলে
রাহি :স্যার কালকের শর্ত গুলো মনে আছে তো।
রিফাত : হুমম।
রাহি : মনে থাকলেই ভাল।এখন বাই আমার কাজ আছে।
তারপর রাহি চলে আসে।
কিছু সময় পর…
রাহি:পিয়ন দাদা কফি করছো কার জন্য।
পিয়ন:রিফাত স্যারের জন্য।
রাহি:আচ্ছা দাও আমি করে দেয়।
পিয়ন:আরে না। আমিই করে দিবো। তোমার কিছু করতে হবে না।
রাহি:দাদা আমি অনেক ভাল পারি দেখি তুমি সরো আমি করে দেয়।
তারপর রাহি কফি করে পিয়নের কাছে দেয় রিফাতকে দিয়ে আসার জন্য।
পিয়ন কফি নিয়ে যাবার পর রাহি তাড়াতাড়ি নিজের কেবিনে চলে যায়।
একটু সময় পর রিফাতের চিল্লানোর শব্দ শুনতে পায় রাহি। তাই নিজের কেবিনে বসে হাসছে।
কিছু সময় পর রাহি রিফাতের কেবিনে যায়।
রাহি: কফিটা কেমন হয়ছিলো স্যার।
রাহির কথা শুনে রাগি চোখে রাহির দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তখনি রাহি তাকে থামিয়ে বলে…..
রাহি:শর্ত মনে আছে তো।না হলে দাদুকে বলছি।
রিফাত রাহির কথা শুনে চুপ হয়ে যায়।
রাহি :আজকের কফির উপাদান ছিলো কফি,লবন,লেবু।আপনার জন্য নিজ হাতে বানিয়েছি।কেমন হয়ছিলো যদি একটু বলতেন।
রাহির কথা শুনে রিফাত রাগে ফুসছে। তাই রাগ কমানোর জন্য টেবিলে থাকা গ্লাসটা ভেঙ্গে ফেলে আর চেয়ার থেকে ওঠে রাহির দিকে যায়।
রিফাতের এগিয়ে আসা দেখে রাহি বলে
রাহি: আমার দিকে আসছেন কেনো? শর্ত কি ভুলে গেলেন নাকি।
রিফাত : না জান শর্ত কেনো ভুলবো।
রাহি: ওই মা। এই সব কি বলতাছেন।
রিফাত: ঠিকই বলতাছি তো জান। তোমার সাথে রাগ করা নিষেধ, গায়ে হাত তুলা নিষেধ। কিন্তু আদর করা তো নিষেধ না। তাই আজ থেকে তোমাকে শুধু আদর করবো কেমন জানু।
রাহি: নাহ……..
রিফাত: কাছে আসো একটু আদর করি।
রাহি: আল্লাহ গো। আমারে বাচাঁও।
এই বলে তাড়াতাড়ি রিফাতের কেবিন থেকে বের হয়ে আসে।
রাহি: মা গো মা, নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলাম নাকি।
অন্যদিকে…
রিফাত চেয়ারে বসে হাতে কলম নিয়ে তা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বলছে….
রিফাত: মিস রাহি তুমি যদি চলো ডালে ডালে আমি চলবো পাতায় পাতায়। যতোবার আমাকে শায়েস্তা করতে আসবে ততোবার তুমি শায়েস্তা হয়ে যাবে।
রাহি তারপর অনেকবার চেষ্টা করে রিফাতকে শায়েস্তা করার জন্য কিন্তু আর করতে পারে না। যখনি যা করতে যায় তখনি রিফাত আদরে গলায় রোমান্টিক কথা বলে আর রাহি তাড়াতাড়ি রিফাতের সামনে থেকে চলে আসে।
আজ সকালে রাহি অফিসে যায় আর নিজের কেবিনে গিয়ে দেখে সেখানে অন্য একটা মেয়ে বসে আছে।
রাহি: এইটা তো আমার কেবিন আপনি এখানে কি করেন।
মেয়েটি: ম্যাম আমার নাম তুলি। এখানে আজ আমার জবের ১ম দিন। এইটা আমার কেবিন ম্যাম।
রাহি: কিহ…..। রিফাত আজ আবার কোন নাটক শুরু করলো।
রাহি রাগে রিফাতের কেবিনে যায়। কেবিনে গিয়ে রিফাতকে বলে…
রাহি: আমার কেবিনে অন্য কেউ কেনো?
রিফাত: জানু তুমি। আমি তো তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।
রাহি: ওই আপনার আজাইরা সোহাগের কথা বাদ দিয়ে আমার প্রশ্নের উওর দেন।
রিফাত:জানু আজ থেকে তুমি সবসময় আমার সাথে থাকবে এইটা তোমার নতুন জব।সারাদিন আমার চোখের সামনে থাকবে। আমি যে কোনো জায়গায় গেলে, তুমি আমার সাথে যাবে।
রাহি: আমি এই জব করবো না।
রিফাত: জানু তুমি দাদুকে কিন্তু বলেছে তুমি এইখানে জব করবে। সো আমি যে জবের কথা বলবো তাই তুমি করবে আমার জান।
রাহি বিরক্ত হয়ে বলে…
রাহি: ওই আমারে এই জান টান বলা বন্ধ করেন। ভাল লাগে না আর।
রিফাত: ঠিক আছে জান বলবো না। ওকে বাবু।
রাহি: বাবু কে আবার
রিফাত: তুমি।
রাহি : অসহ্য।
এই বলে রাহি সেখান থেকে বের হয়ে যাবে এমন সময় রিফাত বলে
রিফাত: তোমার জব হলো সবসময় আমার পাশে থাকার। তাই এখন আমার সামনে বসে থাকবে।
রাহি: আমি পারবো না।
রিফাত: তাহলে আদর নিবে তুমি।
রাহি: নাহ…..
রিফাত: তাহলে আমার সামনে বসে থাকো।
রাহি বিরক্ত হয়ে ঠাস করে চেয়ারে বসে। আর মনে মনে বলে
রাহি: কেনো যে আসছিলাম এই ফাজিলটারে শায়েস্তা করতে। তারে শায়েস্তা করতে গিয়ে এখন আমি শায়েস্তা হইতাছি।
রাহি অনেকক্ষণ ধরে রিফাতের সামনে বসে আছে।রাহির আর ভাল লাগছে না। অন্যদিকে রিফাত ফাইল দেখছে আর রাহির দিকে আড় চোখে দেখে মুচকি মুচকি হাসছে। যা দেখে রাহির আরো রাগ ওঠছে।
রাহি: আপনি আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো।
রিফাত: কই
রাহি: আমি দেখছি বুঝছেন।
রিফাত: তুমি আমার দিকে তাকাই ছিলে তাই এই কথা বলছো।
রাহি: তুই একটা অসহ্য ফাজিল ছেলে খালি আমার পিছে লাগিস।
রিফাত: আবার তুই করে বলে।
রাহি : বলুম তোর কি
রিফাত: তুই একটা ফাজিল বদের হাড্ডি।
রাহি: ওই তুই আমাকে তুই করে বলোস কেনো।
রিফাত: বলুম তোর কি।
রাহি: আমার মনে কয়তাছে তোর গলা টিপায় মেরে ফেলি।
রিফাত: আমি তোরে ছাড়ুম নাকি।
রাহি রাগে চেয়ার থেকে ওঠে বলে
রাহি: তুই থাক তোর অফিসে আমি চললাম আমার বাড়ি। আমি আর এই চাকরি করতাম না।
রাহি তারপর বাসায় আসার জন্য বের হয়ে আসে আর তা দেখে রিফাত জোরে হেসে দেয়।
পরেরদিন…..
রাহি বিকেলে নিজের বাসার ছাদে দাড়িয়ে আছে এমন সময় দেখে রিফাত আর রিফাতের দাদু তাদের বাসায় আসছে।
রাহি তাড়াতাড়ি নিচে নেমে আসে।
রাহি নিচে এসে দেখে তারা সোফায় বসে আছে।
রাহি: দাদু তুমি আমাদের বাসায়।
দাদু: দরকার আছে তাই।
রাহির মা: কি দরকার হলো যে অসময়ে আমাদের বাসায়।
দাদু: রাহির বাবা কোথায়?
রাহির মা: আমি ডেকে নিয়ে আসছি । আপনারা চা খান।
রাহি: দাদু তুমি আসছো বুঝলাম কিন্তু এইটাকে কেনো নিয়ে আসছো।
দাদু: থাক আর ঝগড়া করতে হবে না আমার পাশে বস তুই।
কিছু সময় পর রাহির বাবা আসে। তারপর সবাই কিছু কথা বলে। হঠাৎ রিফাতের দাদু বলে…
দাদু: আসলে আমি এখানে এসেছি একটা কারনে
রাহির বাবা: কিসের জন্য।
দাদু: আমি রিফাতের সাথে রাহির বিয়ে দিতে চাই।
এই কথা শুনে রাহি আর রিফাত এক সাথে বলে
রাহি ও রিফাত:কিহহহহহ…..
তারপর……
চলবে…..