আমার খাঁচায় তুমি বন্দি পর্ব-০৭

0
3445

#আমার_খাঁচায়_তুমি_বন্দি
#Avigya_Ayaat
#পর্ব:৭
রিফাতের দাদু: আমি রাহি আর রিফাতের বিয়ে দিতে চাই।
এই কথা শুনে রাহি আর রিফাত দুজনে একসাথে বলে…
রাহি ও রিফাত: কিহ….
দাদু : হুমমম।
রাহি :জীবনে ও না এই বুইড়া খাটাশ, ফাজিল ছেলেরে আমি বিয়ে করবো না।
রিফাত: ওই তুই চুপ থাক। আমি তোর মতো বদের হাড্ডি, প্রেত্নি,ফাজিল মেয়েরে বিয়ে করবো না।
রাহি : তুই চুপ কর।
রিফাত: তুই চুপ কর ডাইনি।
রাহি: তুই আমারে ডাইনি বললি,তোর মাথার সব চুল আমি ছিড়ে ফেলবো দাড়া তুই।
রাহি যেই রিফাতের চুল ধরতে যাবে তখনি রাহির বাবা রাহিকে জোরে ধমক দিয়ে থামতে বলে। তাই রাহি থেমে যায়।
রাহির বাবা: তুমি এসব কি করছো। এই রকম করে কেউ ঝগড়া করে। তুমি তো বড় হইছো বুঝো না।
রাহি এখন কি বলবে না ভেবে ন্যাকা কান্না শুরু করে বলে
রাহি: ও দাদু,তুমি আমার সাথে এমন করলে, আমি আগে জানলে তোমার সাথে পরিচিত হতাম না। তুমি আমাকে এই ফাজিলের সাথে বিয়ে দিতে চাও কেনো গো…..।
দাদু: হইছে নাটক বন্ধ কর।
[রাহি তাদের বাড়ির সামনে পার্কে অনেক সময় গিয়ে বসে থাকতো আর সেখানে রিফাতের দাদু ও যেতো। সেইখানে রাহি আর রিফাতের দাদুর দেখা হয় তারপর তাদের পরিচয় হয় আর রাহির পরিবারের সাথে ও।]
রাহি কুরুন চোখে দাদুর দিকে তাকাই।
দাদু: আচ্ছা আমি তো শুধু বলছি বিয়ে দেবার কথা। বিয়ে তো হই নাই।তোর পরিবারের মতামত ও নিতে হবে।
রাহির বাবা: আমরা রাজি আছি।
রাহি: ও বাবা গো…. তুমি এইটা কিতা কইলা গো।
রাহির মা: ড্রামা কুইন ড্রাম বন্ধ কর।
রাহি : মা তুমি চুপ করো। আমার এই ফাজিলের সাথে বিয়ে হলে ঝগড়া করতে করতে শহিদ হয়ে যাবো গো….
দাদু: আচ্ছা তোরা নিজেদের একটু টাইম দেয়। সব সময় সাথে সাথে থাক। দুজনকে একটু ভাল করে বুঝে নে। তারপর তোদের মত নিয়ে বিয়ের কথা ঠিক করা হবে। তোরা না করলে আর বিয়ে হবে না।
রাহি এই কথা শুনে খুশি হয় আর দাদাুকে বলে
রাহি: ধন্যবাদ দাদু।
দাদু: তবে একটা শর্ত আছে।
রাহি: কিহহহ।
দাদু: ১মাস সময় দেওয়া হবে আর এই ১মাস সময়ে দুজনে কোনো ঝগড়া করতে পারবি না।
রাহি: এইটা কি সম্ভব হবে।
দাদু: তা না হলে বিয়ে দিয়ে দেয়।
রাহি : না একদমই না।
দাদু: আচ্ছা।
রাহি রিফাতের দিকে তাকিয়ে বলে…
রাহি: মনে থাকবে তো আপনার।
রিফাত: আমার সব মনে থাকে। অন্যদের মতো না সব ভুলে যাই।
রাহি: দেখছো দাদু আমাকে খুচা দিয়ে কথা বললো।
রিফাত: দাদু আমি কারো নাম ধরে বলি নাই।এখন সে যদি নিজেকে মনে করে আমি কি করবো বলো তো দাদু।
রাহি রাগে খাটাশ একটা বলে মুখ ভেংচি দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।
রিফাতের দাদু আর রিফাত ও কিছু সময়,পর চলে যায়।
পরেরদিন….
রাহির মা : রাহি তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে রেড়ি হয়ে নেয়। রিফাত তোকে নিতে আসবে।
রাহি: সে কেনো আসবে।
রাহির মা: কাল তোর দাদু কি শর্ত দিয়ে গেছে মনে নেয়।
রাহি: তাই বলে ওই খাটাশের সাথে যেতে হবে।
রাহির মা : আবার খাটাশ বলসিস।
রাহি: ভুল হয়ে গেছে।
রাহির মা : তাড়াতাড়ি রেড়ি হয়ে নেয় যা ।
রাহি আর কিছু না বলে চুপচাপ রেড়ি হয়ে নেয়।
রিফাত রাহিদের বাসার সামনে গাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। রাহি ও গাড়ির সামনে এসে দাড়ায়।
রিফাত: ভিতরে এসে বসো।
রাহি পিছনের দরজা খুলে পিছনে গিয়ে বসে।
রিফাত : আমি গাড়ির ড্রাইভার না তাই দয়া করে সামনে এসে বসেন।
রাহি :কাকের মুখে এতো সুন্দর করে কথা কিভাবে আসলো।
রিফাত : মানে?
রাহি: এইযে ঝগড়ার মতো না বলে সুন্দর করে বললেন তাই আরকি।
রিফাত: জান আমি তো তোমার সাথে আদুরে গলায় কথা বলতাম আবার বলবো ওকে জানু,।
রাহি: আল্লাহ গো আবার শুরু করছেন।
রিফাত: জান তুমি কি সামনে এসে বসবে নাকি কুলে তুলে আনবো।
রাহি: আসছি।
এই বলে তাড়াতাড়ি সামনে এসে বসে।
তা দেখে রাহি মুচকি হাসি দেয়।
অফিসে যাবার পর সারাক্ষণ রিফাতের সাথে ছিলো ঝগড়া করতে গিয়ে ও করে নাই।
রাহির আর ভাল লাগছে না বসে থাকতে তাই রিফাতকে বলে..
রাহি: আমার আর এখানে বসে থাকতে ভাল লাগছে না তাই বাহিরে গেলাম।
এই বলে রাহি রিফাতের কেবিনের বাহিরে আসে। রিতার কেবিনে যাবে এমন সময় রাহি শুনে অফিসের দুৃজন বলছে
-কিছুদিন ধরে চাকরিতে এসে স্যারকে নিজের মায়ায় আটকে নিয়েছে।
-হুমম দেখো না সারাদিন স্যারের রুমে আছে। কি করে কে জানে।
রাহির কথাগুলো শুনে অনেক খারাপ লাগে তাই রাহি সোজা নিজের বাসায় চলে আসে।
দুইদিন পর….
রাহি এই দুদিন অফিসে যায়নি আর রিফাতের সাথে ও কোনো কথা বলেনি।
আজ সকালে রাহি নিজের রুমে শুয়ে আছে তখন রিফাত রাহির রুমে এসে রাহিকে ডাকে।
রাহি ঘুম থেকে ওঠে দেখে রিফাত সামনে…
রাহি: আপনি এখানে কেনো।
রিফাত: অফিসে চলো।
রাহি: আমি আর যাবো না অফিসে।
রিফাত: কেনো কি হয়ছে।
রাহি : যা হবার হইছে। আমি যাবো না বললাম তো।
রিফাত: আমার রাগে ওঠাবে না তাড়াতাড়ি রেড়ি হয়ে চলো।
রাহি জোরে চিৎকার করে বলে…
রাহি: বললাম তো আমি যাবো না।
রিফাত রাগে বলে
রিফাত: জোরে একটা থাপ্পড় দিবো না। তখন সব কথা শুনবে।
রাহি: তোর কথা কে শুনবে ফাজিল ছেলে।
রিফাত আর কোনো কথা না বলে ঠাস করে গালে একটা চড় মারে। তারপর বলে…
রিফাত: আরেকটা মারবো নাকি তাড়াতাড়ি রেড়ি হয়ে যাবি আমার সাথে।
রাহি: আসছি। তুই আমার রুম থেকে যা ফাজিল ছেলে। আমারে চড় মারছিস,বের হয় তাড়াতাড়ি।
রিফাত কের হয়ে যায় আর রাহি রেড়ি হয়ে বের হয় কিছু সময় পর।
তারপর দুজনে একসাথে অফিসে যায়।
অফিসে যাবার পর রিফাত রাহিকে বলে তুমি কেবিনে যাও আমি আসছি।
রাহি কেবিনে যায় কিছু সময়পর রিফাত কেবিনে আসে।
রাহি: কোথায় গিয়েছিলেন?
রিফাত: একটু দরকার ছিলো।
রাহি রিফাতের সাথে কথা বলছে এমন সময় ম্যানেজার রিফাতের রুমে আসে
ম্যানেজার: স্যার সবাই মিটিং রুমে ওয়েট করছে আপনাদের জন্য।
রিফাত: আচ্ছা আপনি যান, আমরা আসছি।
ম্যানেজার তারপর চলে যায়।
রাহি: সবাই মিটিং রুমে কেনো।
রিফাত: চলো তাহলে বুঝবে।
রিফাত আর রাহি তারপর মিটিং রুমে যায়।
মিটিং রুমে…
রিফাত: সবাইকে এখানে ডাকার কারন হলো অনেকে আমার আর রাহি ব্যাপারে অনেক কিছুই কলছেন। কিন্তু কেউ আমাদের মাঝে কি আছে তা সঠিক যানেন না। তাই সবাইকে বলছি। আমাদের ব্যাপারে আজে বাজে কথা বলবেন না। আর যদি কোনো কথা শুনি তাহলে কাল ওই দুজনের সাথে যা হইছে আপনাদের সাথে ও তাই হবে। ধন্যবাদ। এখন যার যার কাজে যান।
সবাই চলে যাবার পর….
রাহি: কাল কি হয়ছে অফিসে।
রিফাত: কিছু না।
এই বলে রিফাত মিটিং রুম থেকে বের হয়ে আসে।
রাহি কাল কি হয়ছে তা জানার জন্য রিতার কেবিনে যায়।
রাহি: রিতা কাল কি হয়েছে অফিসে।
রিতা: তুই জানিস না।
রাহি: না।
রিতা : কাল দুজন মেয়েকে স্যার চাকরি থেকে বের করে দিছে।
রাহি: কোন দুজন?
রিতা: মাহিমা,অবনি।
রাহি দুজনের কথা শুনে অবাক। এই দুজনই তো সেই দিন বাজে কথা গুলো বলছিলো।
রাহি: তুই জানিস কেনো বের করে দিছে।
রিতা: তোকে নিয়ে কিসব বলছিলো তাই।
রাহি: আচ্ছা।
অন্যদিকে…..
রিফাত নিজের কেবিনে বসে আছে। এমন সময় একজন তার কেবিনে আসে..
-ভিতরে আসতে পারি কি
রিফাত: আরে অয়ন তুই।
অয়ন: ওয়েটিং রুমে বসে ছিলাম এতো সময় শুনলাম মিটিং রুমে ছিলি। তা সবার সাথে রাগারাগি কেনো করেছিস।
রিফাত: রাহির জন্য।
অয়ন: রাহি আবার কে?
রিফাত :তোর হবু ভাবি।
অয়ন : কি বুলছিস এসব সত্যি নাকি।
রিফাত: হুমমম।
অয়ন: এই রাহি সেই মেয়ে না যে তোর সাথে ঝগড়া করে শুধু।
রিফাত: হুমমম।
অয়ন: দোস্ত কেমনে কি হলো আমাকে বল…
রিফাত : আসলে……..
চলবে……