আমার বোনু পর্ব-০৮

0
338

#আমার_বোনু
#Part_08
#Writer_NOVA

— মাথাটা একটু টিপে দিবে ঊষারাণী? বড্ড বেশি যন্ত্রণা করছে।

ঊষার হৃদযন্ত্রটা থেমে যাওয়ার জোগাড়। কতদিন পর সেই আকুল করা কন্ঠ। তার হৃৎপিণ্ডটা সমানতালে ঢিপঢিপ করে যাচ্ছে। ঊষা যেখানে ছিলো সেখানেই বরফের মতো দাঁড়িয়ে রইলো। তার কাছে মনে হচ্ছে কোন এক অদৃশ্য শক্তি তাকে আটকে রেখেছে। যার দরুন সে এগুতে পারছে না। আবার মন বলছে এটা তার স্বপ্ন। ঘুম ভেঙে গেলে সব হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।এটা যদি স্বপ্নও হয় তবুও সে এত দ্রুত ভাঙতে দিতে চায় না। ঊষার থমকে দাঁড়ানো তে জিবরান চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকালো। মেয়েটা যে ঘোরে আছে তা বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো। এভাবে ভড়কে দিতেই তো প্ল্যানটা করেছিলো। আড়মোড়া ভেঙে ঊষাকে ডাকলো,

— কি হলো এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে?

ঊষা চমকে গেলো। হাতে একটা চিমটি কাটলো। ব্যাথা পেতেই দ্বিগুণ অবাক সে। না,এটা স্বপ্ন নয়। জিবরান তার সামনে। কিন্তু তার পা দুটো যে চলছে না। জড়তা এসে ভিড়ছে তার মনে। জিবরান চোখ দুটো খোলা রেখে আবছা আলোতে ঊষাকে দেখে যাচ্ছে। এর মধ্যে ঊষা একটা কান্ড বাঁধিয়ে বসলো। দ্রুত পায়ে রুমের লাইট জ্বালিয়ে বিছানার দিকে তাকালো। জিবরান চোখের ওপর হাত দিয়ে চিৎকার করে উঠলো।

— লাইট বন্ধ করো প্লিজ! আমার চোখে লাগে।

ঊষার মনে হয়েছে কোন জ্বীন বা ভূত জিবরানের রূপ ধরে তার খাটে শুয়ে আছে। তাই লাইট জ্বালিয়েছে। যদি জ্বীন বা ভূত হয় তাহলে তো লাইটের আলোয় তাদের দেখা যাবে না। কিন্তু খাটের ওপর আস্ত মানুষ দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো। কফি ঠান্ডা পানি হয়ে গেছে। সেটা ড্রেসিং টেবিলের ওপর রেখে ড্রয়ার থেকে মাথাব্যথার বাম হাতে নিলো। ধীর পায়ে জিবরানের সামনে দাঁড়ালো। তার হাত-পা ভীষণ কাঁপছে। হৃৎপিণ্ডটা ধুকপুক করেই যাচ্ছে। হঠাৎ করে আমরা যখন অপ্রত্যাশিত বস্তুটা পেয়ে যাই তখন যেই অনুভূতি হয় সেই অনুভূতি ঊষার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে গেছে। জিবরান চোখের ওপর ডান হাত রেখে শুয়ে আছে। তার মুখে বিরক্তির আভাস। ঊষা ঢোক গিলে আমতাআমতা করে বললো,

— হাতটা সরান।

জিবরান চোখের ওপর থেকে হাত না সরিয়ে নিচু কন্ঠে বললো,

— তুমি আগে লাইট বন্ধ করো। আমি লাইটের আলোতে তাকাতে পারছি না।

ঊষার কানে কথাটা ঢুকলো না। সে এক ধ্যানে জিবরানকে দেখছে। তার তৃষ্ণার্ত চোখ কতদিন ধরে একে দেখতে চাইছে। আজ তার দেখা মিললো। মন ভরে সে দেখবে। ঊষার কোন আওয়াজ না পেয়ে জিবরান ফট করে হাত সরিয়ে তাকালো। দুজনের চোখে চোখ পরতেই ঊষা বিব্রত হয়ে গেলো। লজ্জায় কুঁকড়ে গেলো। হুট করে লজ্জা কোথা থেকে যে আসলো। ঊষা চোখ তুলে আর জিবরানের দিকে তাকাতেই পারলো না। জিবরান ঊষার লজ্জা মাখা মুখ দেখে একগাল হাসলো। তারপর ক্ষীণ গলায় আকুতির কন্ঠে বললো,

— লাইট বন্ধ করো প্লিজ!

ঊষা এক পলক জিবরানের দিকে তাকালো। চেহারার কি হাল করেছে। হাস্যজ্জ্বল চেহারাটা মলিন হয়ে গেছে। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখে বোঝা যাচ্ছে এতদিন ঠিকমতো ঘুমায়নি। উসকোখুসকো চুলগুলো জানান দিচ্ছে এর যত্ন নেওয়া হয়না বহু দিন ধরে। সবসময় নিজেকে পরিপাটি করে রাখা ছেলেটার এই অগোছালো ভাবটা ঊষার মন খারাপ করে দিলো। শ্বাস টেনে হাই পাওয়ারের লাইট বন্ধ করে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দিলো। সামনে এসে জিবরানের কপাল থেকে যে হাতটা সরাবে সেই শক্তি পাচ্ছে না। তার হাত অসম্ভব কাঁপছে। বেশ কয়েকবার হাতটা এগিয়েও সরিয়ে নিলো। অন্য দিকে ঘুরে জিবরানকে বললো,

— হাতটা সরান। আমি মাথায় বাম লাগিয়ে দেই।

জিবরান হাত সরিয়ে একবার নিষ্পলক দৃষ্টিতে ঊষাকে দেখলো। তারপর “আহ” শব্দ করে কপালের পাশ আঙুল দিয়ে চেপে ধরতেই ঊষা ব্যস্ত হয়ে পরলো।

— কি হলো আপনার? দেখি দেখি হাতটা সরান তো।

জিবরান কিছুটা চেপে ঊষাকে বসার জায়গা করে দিলো। ঊষা বসে যত্ন সহকারে জিবরানের কপালে বাম ডলে দিতে লাগলো। জিবরানকে নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে গেছে যে নিজের মাথা ঝিমঝিম করার কথা বেমালুম ভুলে গেছে। মাথায় বাম লাগিয়ে ঊষা আলতো হাতে মাথা টিপে দিতে লাগলো। এর মধ্যে জিবরান একটা গা লোমহর্ষক কান্ড করে বসলো।বালিশ ছেড়ে ঊষার কোলে নিজের মাথা তুলে দিলো। ঊষার হাত দুটো তার কোঁকড়া চুলে ডুবিয়ে দিয়ে বললো,

— মাথাটা একটু বানিয়ে দাও। সাথে চুলগুলো হালকা করে টেনে দিও। আমি একটু ঘুমাই। কতদিন হলে শান্তিতে ঘুমাতে পারি না।

ঊষা স্ট্যাচু হয়ে রইলো। তার শরীরের প্রতিটা পশম দাঁড়িয়ে গেছে। সারা শরীর শিউরে উঠছে। জিবরানের স্পর্শে তার শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। শ্বাস-প্রশ্বাস বোধহয় বন্ধ হয়ে যাবে যাবে অবস্থা। জিবরান একটু নড়েচড়ে দুই হাতে ঊষার কোমড় জড়িয়ে আরাম করে শুয়ে রইলো। কোমড়ে হাতের স্পর্শ পেতেই ঊষার হৃদযন্ত্র পুরোপুরি থেমে গেলো। খামচে বিছানার চাদর ধরে চোখ বন্ধ করে ফেললো। জিবরান বিষয়টা বুঝতে পেরে দুষ্টু হাসি দিলো। মনে মনে বললো,

— সবে তো মাত্র শুরু। আরো কত কি যে তোমায় সহ্য করতে হবে। এখন থেকে তোমার ওপর আমার রোমান্টিক অত্যাচার চলবে ঊষারাণী।

ঊষার পেটের মধ্যে মুখ গুজে দিলো। জিবরান তার ওষ্ঠদ্বয় পেটে ছুঁয়াতেই ঊষা হাজার গুণ ঝাটকা খেলো। জিবরান হালকা করে একটা চুমু খেয়ে বললো,

— লাভ ইউ বউ।

ঊষার যেনো এবার জান যায় যায় অবস্থা। বউ ডাকটা তার কানে বারবার প্রতিধ্বনি হতে লাগলো।এই ছেলে কি তাকে মেরে ফেলবে নাকি। একবার উঠে যেতে চাইলো।কিন্তু জিবরান যে শক্ত করে ধরে রাখেছে। এক চুল পরিমাণও নড়তে পারলো না। তার পেটের মধ্যে জিবরানের উত্তপ্ত নিঃশ্বাস এসে আছড়ে পরছে। তাতে যেনো ঊষার দমবন্ধ হওয়ার জোগাড়। তার মনে হচ্ছে তার শক্তি কেউ শুষে নিচ্ছে। ঊষা না পেরে জিবরানের চুলে হাত বুলাতে লাগলো। মিনিট পাঁচের মধ্যে জিবরান গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো। ঊষা ভাবলো এখন উঠে চলে যাবে। কিন্তু উঠতে গেলেই ঘুম জড়ানো কন্ঠে জিবরান বললো,

— এভাবেই থাকো প্লিজ। আমাকে একটু ঘুমাতে দাও।

ঊষা চুপ হয়ে গেলো। কিন্তু তার হাত-পা জমে যাচ্ছে। বেশি সময় এভাবে থাকলে সে যে স্ট্রোক করবে তা কি জিবরান জানে না? ঊষার কিঞ্চিত রাগ হলো। ইচ্ছে করে তাকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে এখন ঘুমানো হচ্ছে। ঊষা মূর্তির মতো এক ধ্যানে সামনে তাকিয়ে রইলো। মন কে শুধু এটা বলে স্বান্তনা দিলো যে,

— মাঝে মাঝে অবাধ্য অনুভূতিগুলো জায়গা দিতে হয় ঊষা। নয়তো এরা যাবে কোথায়?

মির্জা কুঠির……

রাতের খাবার খেতে বসেছে সবাই। সবার মূল আকর্ষণ এখন জিবরান। হঠাৎ কোথায় গায়েব হয়েছিলো সে আর কোথা থেকে উদয় হলো তাই বর্তমানে আলোচনার মুখ্য বিষয়। জিবরান কোন কথার উত্তর না দিয়ে বেআক্কলের মতো কিছু সময় পরপর দাঁত দেখাচ্ছে। ঈশান বাসায় এসে কিছু বলেনি। তাই কেউ জানেওনি সে কোথায় ছিলো। এদিকে পাক্কা দুই ঘন্টা ঊষার কোলে ঘুমিয়ে জিবরানের মেজাজ বেশ ফুরফুরে। তবে একটু মন খারাপ। বেশ কয়েকবার বড় বোন জিনিয়ার দিকে তাকিয়েও তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেনি। জিনিয়া নিজের মতো করে সবাইকে খাবার পরিবেশন করে দিচ্ছে। অর্ণব এক লোকমা খাবার বোনের মুখে তুলে দিতে দিতে জিবরানকে প্রশ্ন করলো,

— এতদিন কোথায় ছিলে শালাবাবু?

জিবরান মেকি হাসি দিয়ে বললো,
— অন্য পৃথিবীতে।

ইশাত গ্লাস থেকে পানি খেয়ে উত্তর দিলো,
— তাতো বুঝতেই পারছি।

আদিল একবার উপরের দিকে তাকিয়ে জিনিয়াকে বললো,
— অথৈ নিচে আসেনি?

জিনিয়া ইশাতের প্লেটে ভাত বেড়ে দিতে দিতে বললো,
— না! আমি নিচে নামতে বারণ করেছি।

আদিল কথা বাড়ালো না। তবে তার মনের খোটকা কমেনি। সে লক্ষ্য করেছে ইদানীং ঊষা যেখানে থাকে অথৈকে সেখানে দেখা যায় না। মনে মনে অনেক কিছু আন্দাজ করে ফেলেছে সে। তবে এখন এর বিহিত করার উপযুক্ত সময়ের প্রয়োজন।

— আপু, আমায় তরকারি দিবি না?

জিবরান অনেক সাহস নিয়ে তার বোনকে কথাটা বললো। যখন থেকে জিবরানকে দেখছে জিনিয়া তখন থেকে মুখ গোমড়া করে রেখেছে। তার সাথে কোন কথা বলেনি। জিবরানের সামনে তরকারি বাটি ধপ করে রেখে অন্য দিকে চলে গেলো জিনিয়া। জিবরান বুঝতে পারলো ঘটনা সাংঘাতিক। তার বোন আইটেম বোম হয়ে আছে। এখন শুধু ফাটার পালা। জিবরান বাটি থেকে তরকারি নিয়ে অনলকে খাইয়ে দিতে লাগলো। অনল আবার অনেক মামা ভক্ত। মামাকে দেখার পর থেকে সেই যে কোলে চড়েছে এখন অব্দি নামেনি। এমনকি বায়না ধরেছে মামার হাতে ভাত খাবে৷ একমাত্র ভাগ্নের আবদার তো আর জিবরান ফেলে দিতে পারে না। তাই তাকে খাইয়ে দেওয়ার কাজে নিযুক্ত আছে।

অনল খাওয়া রেখে জিবরানের কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,

— আম্মু তোমার ওপর রাগ করেছে মামা। একটু পর গিয়ে রাগ ভাঙিয়ো।

জিবরান এক চোখ মেরে ভাগ্নের কথায় তাল দিয়ে সুর টেনে বললো,
— ওকে মামু।

টেবিলের নিচ দিয়ে ঊষার পায়ে কেউ লাথি মারতেই ঊষা চেচিয়ে উঠলো,

— ছোট ভাইয়ু, ভালো হবে না কিন্তু।

ঈশান মুখটাকে এত ইনোসেন্ট করলো যে সে কিছু জানেই না। অথচ লাথিটা কিন্তু সেই মেরেছে।

— কি হয়েছে বোনু? আমি আবার কি করলাম?

ঊষার মুখে অরূপ খাবার তুলে দিয়েছে। তাই সে বাকি কথা বলতে পারলো না। কটমট করে ঈশানের দিকে তাকিয়ে খাবার চিবুতে লাগলো। মনে হচ্ছে খাবার নয় ঈশানকেই চিবুচ্ছে। ইশাত একঝলক বোনের দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

— কি রে জরিনার মা? তোর মনটা আজ এতো খুশি খুশি কেন?

ঊষা ফট করে একবার জিবরানের দিকে তাকিয়ে ইতস্তত ভঙ্গিতে বললো,

— কই না তো!

অরূপ গাল টিপে হেসে ইশাতকে বললো,
— বুঝিস না কেন ইশাত? আজ তো মন খুশি খুশি থাকবেই। স্পেশাল মানুষ এসেছে যে।

ঊষা অরূপের কাঁধের দিকে মৃদু চাপর মেরে চেচিয়ে উঠলো,
— ভাইয়ু, আজ তুমিও এদের সাথে জয়েন হয়েছো?

অরূপ উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো। ঈশান আবারো পা দিয়ে খোঁচা মেরে শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,

— এতদিন তো কেঁদেকেটে বালতি ভরে ফেলছিস কালুর মা। আজ যেনো আকাশের চাঁদ হাতে পেয়ে গেছিস।

এবার ঊষা রাগলো না। জিবরানের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। তা দেখে ইশাত টিটকারির সুরে বললো,

— দেখ দেখ জরিনার মা কেমন ব্লাসিং হচ্ছে।

ঊষা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো। জিবরান কপাল কুঁচকে ইশাত, ঈশানকে বললো,

— এই তোরা আমার ছেলে-মেয়ের এমন আজব নাম কোথায় পেলিরে? জরিনা, কালু এসব কি?

ঈশান ভেংচি কেটে বললো,
— কালুর বাপ কথা কম বল। আমাদের ভাগ্নে-ভাগ্নীর নাম আমরা যা খুশি তাই রাখবো। তোদের কি রে?

জিবরান কাদো কাদো ফেস করে বললো,
— তাই বলে এসব নাম?

অরূপ বললো,
— হ্যাঁ এসব নামই জরিনার বাপ।

খাবার টেবিলে হাসির রোল পরে গেলো।টেবিলের কোণার দিকে অর্ণবের চেয়ার ঘেঁষে দাড়িয়ে ভাইকে প্রাণভরে দেখছিলো জিনিয়া।হঠাৎ অর্ণবের কথায় তার ঘোর কাটলো।

— তুমিও বসে পরো জিনিয়া।

জিনিয়া মিইয়ে যাওয়া গলায় বললো,
— আমার খিদে নেই।

অর্ণব জানে তার ভাই না খেলে জিনিয়া কখনো খাবে না। তাই আর জোর করলো না। জিনিয়া আবারো ভাইয়ের দিকে নজর দিলো।তার ইচ্ছে করছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে কান টেনে বলতে, ” এতদিন কোথায় ছিলি হতচ্ছাড়া? আমাদের কি একটুও মনে পরেনি তোর?” কিন্তু মনের মধ্যে চাপা অভিমান কাজ করছে। অভিমানে পাহাড় জমে গেছে। সেই অভিমান পুষিয়ে রাখায় অভিযোগ হয়ে গেছে। এত সহজে তো এ সরবে না। তবে একটাই ভাই তার। বেশি সময় অভিমান, অভিযোগ জমিয়ে রাখতে পারে না। জড়িয়ে ধরে আপু বলে ডাক দিলেই বরফ গলে পানি হয়ে যায়। জিনিয়ার ছলছল চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পরলো। তা সবার অগোচরে মুছে ফেললো। কিন্তু জিবরান ঠিকই দেখে ফেলেছে। বোনের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো,

— সরি রে আপু। জানি তোকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। কিন্তু এছাড়া আমার যে কিছু করার ছিলো না। তোর অভিমান ভাঙবো আমি।

অনলকে খাইয়ে হাত ধুয়ে ফেললো জিবরান। সবাই ওকে অনেকবার খাবার খেতে বলছিলো। কিন্তু বোনের অভিমান না ভাঙিয়ে সে খাবে না। অভিমান ভাঙিয়ে বোনের হাতে সে পেটপুরে খাবার খাবে।তবেই তার শান্তি হবে। জিনিয়া চোখ মুছতে মুছতে কিচেনের দিকে চলে গেলো। সেও কিছু খায়নি। জিবরান বোনের পিছু পিছু কিচেনে গেলো। এখন চলবে মান-অভিমান শেষ করার পালা।

~~~ পাতা ঝড়ে যাওয়ার আগে যেমন পাতার রং বদলে যায়। তেমনি মানুষ বদলে যাওয়ার আগে তার কথার ধরণ বদলে যায়।

#চলবে