আমার শুধু তোমাকেই চাই পর্ব-১২

0
3001

#আমার_শুধু_তোমাকেই_চাই🍁🍁
#লেখিকা;সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব;১২ (ধামাকা পর্ব ১)

৩৫,,,,,
জি আক্কেল বলুন(মেঘ)

এখানেই বলবো?? না মানে তোমার কাজের জায়গা,, তুমি কাজ করছিলে আমি না হয় পরে বলি??(মহসীন)

না না আক্কেল কোনো সম্যসা নেই আপনি বলুন(মেঘ)

তুমি তো জানোই রহমানের মৃত্যুর আগে আমি ওকে কথা দিয়ে ছিলাম ওর মেয়ে কে আমার ঘরের বউ করে নিয়ে যাবো। আর তাছাড়া মাহিও তো এখন অনেক বড় হয়ে গেছে তাই বলছিলাম কি ওদের চারহাত যদি এক করে দিয়া যেতো,,,, তুমি কি বলো(মহসীন)

আমি আর কি বলবো আক্কেল আপনি গুরুজন আপনি যা বলবেন তাই হবে,,,আর মেহরাব এত বড় কেমনে কেমনে হয়ে গেলো আমি তো ওকে কত দিন দেখিনী সেই ছোট বেলায় দেখেছি ভারি দুষ্ট ছিলো।। তা ও এখন কি করে (মেঘ)

এই তো ফাইনাল ইয়ারে আর কয়েকমাস পর পরিক্ষা তারপর আমার অফিসে বসায় দিবো। তাই আমি বলছিলাম কি যে ওদের যদি এখন এনগেজমেন্ট টা করে রেখে মেহরাব এর পরিক্ষার পর না হয় বিয়েটা দিয়া যাবে কি বলো(মহসীন)

হ্যাঁ আক্কেল আমারও তাই মনে হয়। আর তাছাড়া মাহি কেও তো বলতে হবে। (মেঘ)

তা বেশ। বলছি যে আমাদের মাহি মা যেনো কোন ক্লাসে পড়ে (মহসীন)

এই তো আক্কেল ঢাকা ভার্সীটির ১ম বর্ষে (মেঘ)

কিহ?? তাই নাকি আরে মেহরাব ও তো ওই ভার্সীটিতেই পড়ে(মহসীন)

সত্যি বলছেন আক্কেল,, তা হলে তো ওরা একে অপরকে চিনেই থাকবে যাক একদিক দিয়ে ভালোই হলো (মেঘ)

হ্যাঁ,,, আচ্ছা তাহলে আমি যাই এখন,, পরশোদিন মেহরাব কে সাথে নিয়ে আমরা আসবো (মহসীন)

জি আক্কেল (মেঘ)

এরপর মহসীন চলে গেলো।

ভালোলাগে না নিজেরা প্রেম করবে আর রোজ রোজ আমায় এভাবে একা একা যেতে হবে। আর রিকসাওয়ালারাও হয়েছে দরকার এর সময় হাওয়া(মেঘলা হাটছে আর একা একা বকবক করতে করতে যাচ্ছে,, হঠাৎ পিছন থেকে একটা গাড়ি হর্ন দিলো)

কে রে খেয়েদেয়ে কাজ নেই শুধু শুধু হর্ন দিচ্ছে কান মাথা খেয়ে ফেলল(মেঘলা)

রাস্তার মাঝখান দিয়ে গেলে হর্ন তো দিবেই(মেঘ)

এই কেরে (এটা বলে যেই পিছনে তাকাল দেখলো মেঘ গাড়ি থেকে নেমে দাড়িয়ে আছে)

আ,,,,আপনি এখানে(মেঘলা)

হুম আমি,, তা তুমি একা কেনো মাহি কোথায়(মেঘ)

আরে ও তো মেহ,,,(এখনি কি বলে ফেলছিলাম এই গাম্বাটটা শুনলে তো মাহির প্রেম করা বার হয়ে যাবে)

কি হলো বলে??(মেঘ)

ইয়ে না মানে মাহি তো বাড়ি চলে গেছে ওর খারাপ লাগছিলো তাই (মেঘলা)

৩৬,,,,

হুমম তা তুমি এখানে কি করছো (মেঘ)

কি করছি মানে দেখছেন না বাড়ি যাচ্ছি (মেঘলা)

তা তো দেখতেই পাচ্ছি কিন্তু হেঁটে হেঁটে যাচ্ছো কেনো (মেঘ)

রিকশা পাচ্ছি না তাই (মেঘলা)

আচ্ছা যাও গাড়িতে ওঠো (মেঘ)

ওমমম যাও গাড়িতে ওঠো ওনার কথা আমি ওঠবো না কি করবেন আপনি। একে তো সকালে না বলে চলে গেছে এখন আবার বড় বড় কথা,, আমি রাগ করেছি যাবো না আপনার সাথে,,,, আফসোস যদি এই কথাগুলো মুখে বলতে পারতাম কিন্তু সেই সাহস আমার নেই।

কি হলো কি এতো ভাবছো যাও গাড়িতে ওঠো (মেঘ)

,,,ন,,,না আমি চলে যেতে পারবো (এই বলে হাটা ধরলাম)

হুমমম বুঝেছি মেডাম এর অভিমান হয়েছে ওকে দেখি তুমি কতক্ষণ অভিমান করে থাকো।

আচ্ছা তুমি তাহলে যাও,, আমিও যাই দেখি (এই বলে মেঘ গাড়ির দিকে যেতে লাগল)

কতবড় খারাপ লোক আমি চলে যাচ্ছি দেখেও আমায় থামালো না,, উল্টো রাগ দেখিয়ে চলে যাচ্ছে,, জীবনে কথা বলবো না এই লোকের সাথে,, রাগে দুঃখে এখন আমার কন্না পাচ্ছে (মনে মনে ওনাকে বকতে বকতে সামনে যাচ্ছিলাম তখনি মনে হলো আমি আর হাঁটছি না হাওয়ায় ভাসছি। নিজের দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখি ওনি আমায় কোলে নিয়ে গাড়ির দিকে যাচ্ছে)

আমি তো জানতামি না যে তোমার এতো রাগ বাবাগো,, আমায় রাগ দেখিয়ে চলে যাচ্ছিলে??(মেঘ,, মেঘলাকে গাড়িতে বসিয়ে বলল)

ছাড়ুন আমায় আমি যাবো না আপনার সাথে (এই বলে আমি গাড়ি থেকে নামার জন্য গাড়ির দরজা খুলতে গেলাম তখনি ওনি,, আমায় চেপে ধরে আমার ঠোঁট ওনার ঠোট মিলায়ে দিলো)

চুপচাপ বসে থাকো ওকে (মেঘলাকে ছেড়ে দিয়ে)

(ছি আমি ভানতেও পারিনি ওনি এমনটা করবে লজ্জায় মাথা তুলে ওনার দিকে তাকাতে পারছি না)

৩৭,,,,
রাতে,,,,
শোনো মেহরাব পরশোদিন আমরা তোমার জন্য মেয়ে দেখতে যাবো ওকে (মহসীন)

কি??? এসব কি বলছো বাবা আমার এখনো পড়া শেষ হয়নি আর এখনি বিয়ে?? সরি বাবা আমি বিয়ে করতে পারবো না সরি (মেহরাব)

আমি তোমার মতামত জানতে চাইনি পরশোদিন তুমি আমাদের সাথে যাবে এটাই আমার শেষ কথা ওকে (এটা বলে মহসীন চলে গেলো)

মা, তুমি কিছু বলো বাবাকে (মেহরাব)

আমি কি বলবো আমি বললেই মনে হয় তোর বাবা শুনবে,,, আরে পাগল দেখলেই তো আর বিয়ে হচ্ছে না আগে তুই মেয়েকে দ্যাখ যদি পছন্দ না হয় তখন দেখা যাবে (রুপালি)

কিন্তু মা আমি,,(মেহরাব)

কোনো কিন্তু না,,, এই বলে রুপালি চলে গেলো…

আমাকে বিয়ে দিয়া না আমিও দেখি কি করে বিয়ে দেয় এমন সীন করবো না মেয়ে বিয়ে তো দূরে থাক আমায় দেখলেই ভয় পাবে (শয়তানি হাসি দিয়ে বলল মেহরাব)

,,আসবো মাহি??(মেঘ)

আরে ভাইয়া তুমি আসো না ভিতরে আসো,, তুমি আমার রুমে আসবে এতে পারমিশন নিয়ার কি আছে (মাহি)

তারপর মেঘ মাহির রুমে এসে বললো।

বাবা মা চলে যাওয়ার পরে তোকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি। খেয়ে না খেয়ে তোকে ভালো রেখেছি,,, ভাই নয় একজন বাবার মতো করে তোকে আগলে রেখেছি,, বন্ধুর মতো তোর সাথে মিশেছি। (মেঘ)

হ্যাঁ ভাইয়া তুমি কখনো আমায় বাবা মায়ের অভাব বুঝতে দাওনি। (মাহি)

আজ তোর কাছে একটা জিনিস চাইবো দিবি??(মেঘ)

চলবে,,,,,

#আমার_শুধু_তোমাকেই_চাই🍁🍁
#লেখিকা;সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#বোনার্স পর্ব (ধামাকা পর্ব ২)

৩৮,,,,
এভাবে বলছো কেনো ভাইয়া,, তুমি আমাকে আদেশ করো। বলো কি করতে হবে (মাহি)

তুই তখন অনেক ছোট বাবা তখন তার বন্ধু মহসীন আক্কেল কে কথা দিয়েছিলো যে ওনার ছেলের সাথে তোর বিয়ে দিবে,, কিন্তু বাবা তো এখন নেই তাই বাবার দেয়া কথা আমায় পূরন করতে হবে,,, আজ মহসীন আক্কেল এসেছিলো তোদের বিয়ের কথা বলতে,, পরশো দিন ওনারা এসে তোকে আংটি পরিয়ে দিয়ে যাবে,,, তুই চিন্তা করিস না মেহরাব অনেক ভালো ছেলে (মেঘ)

মেহরাব??(অবাক হয়ে বলল মাহি)

হ্যাঁ মেহরাব মহসীন আক্কেল এর ছেলে,, তোদের কলেজেই পড়ে ফাইনাল ইয়ারে,, তুই চিনিস নাকি(মেঘ)

তারমানে ভাইয়া ওনার সাথে আমার বিয়ের কথা বলছে?? ইয়ে,,, কি মজা,, এই মাহি কন্ট্রোল ভাইয়ার সামনে এমন করলে ভাইয়া বুঝে যাবে (মনে মনে)

কিরে কি হল বল(মেঘ)

ইয়ে না মানে ভাইয়া এত বড় ভার্সীটি আর কত মানুষ ওখানে পড়ে এতো লোকের ভিড়ে আমি ওনাকে কিভাবে চিনবো বলো। আর তাছাড়া ওনি তো ফাইনাল ইয়ারে পড়ে আর আমি ফাস্ট ইয়ার কিভাবে চিনবো বল??( ডাহা মিথ্যা কথা)

হুম সেটাও তো কথা আচ্ছা ওসব বাদ দে এখন তুই বল এই বিয়েতে তোর কি মত(মেঘ)

ইয়ে ভাইয়া তুমি যা বলবে তাই। আর আমি যানি তুমি যা করবে আমার ভালোর জন্যই করবে (আরে আমি কি তোমায় বলবো নাকি যে আমি রাজি আমার বুঝি লজ্জা লাগে না। উফফ কি যে খুশি লাগতেছে মনে মনে)

আমি জানতাম আমার বোন আমি যা বলবো সেটাই শুনবে। আচ্ছা অনেক রাত হয়েছে শুয়ে পড়ো (মেঘ)

ওকে ভাইয়া গুড নাইট।

গুড নাইট ডিয়ার। (এরপর মেঘ চলে গেলো)

ইয়ে কি মজা এখনি মেহরাব কে বলি (ফোন উঠিয়ে) না থাক ওনাকে বলবো না ওনাকে সারপ্রাইজ দিবো ইয়েয়েয়েয়ে।আমি মনে হয় প্রথম মেয়ে যে কিনা নিজের বিয়ের কথা শুনে এতো খুশি হচ্ছে। হায় কি লজ্জা।

পরশোদিন,,,

যথারিতি মেহরাবের মা বাবা মেঘদের বাড়ি আসলো কিন্তু মেহরাব আসিনী ও একটু পর আসবে বলেছে।

আসুন আক্কেল,,, ভালো আছেন আন্টি (ওনাদের বসতে দিয়ে বলল মেঘ)

তুমিই মেঘ বাবা কত বড় হয়ে গেছো (রুপালি)

জি আন্টি,,, মেহরাব কোথায় ও আসিনী??(মেঘ)

এইতো এখনি চলে আসবে(রুপালী)

৩৯,,,,
এদিকে মেহরাব একটা বিয়াবের বতল কিনেছে সেটা খুলে পুরো বিয়ার নিজের গায়ে মেখে বতলটা হাতে নিয়ে মাতাল হওয়ার অভিনয় করে মেঘদের বাড়িতে ঢুকল।

এই আমি এসে পরেছি(মেহরাব)

মেঘ ওনাদের সাথে কথা বলছিলো তখনি দেখলো দরজায় সেদিন এর সেই বখাটে ছেলেটা মাতাল হয়ে দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে।

তুমি এখানে.? এই কে আছো এই বখাটে টাকে এখান থেকে বার করে দাও (মেঘ)

আপনি?? আর মা বাবা তোমরা ওনার বাড়িতে এসেছো?? (মেহরাব)

একি তোমরা দুজন দুজনকে চিনো??(মহসীন)

চিনবো না এ তো একটা বখাটে নষ্ট ফাযিল ছেলে। কিন্তু ও আপনাকে বাবা বলছে কেনো (মেঘ অবাক হয়ে বলল)

আরে ওই তো আমার ছেলে মেহরাব (মহসীন)

কি?? এই বখাটে আপনার ছেলে??আর আপনাকেই বা কি বলবো ছেলে বড় হয়ে গেলে তো বাবা মায়ের ও কথাশোনে না,, তাই এমন বখাটে তৈরি হয়,,,, সরি আক্কেল আমি আপনার এই বখাটে ছেলের সাথে আমার বোনের বিয়ে দিবো না (মেঘ)

আরে যান তো আপনার বোন কে বিয়ে করতে আমার বয়েই গেছে। যায় ভাই এমন পাগল টাইপ সেই মেয়েকে আমার বিয়ে করার কোনো ইন্টারেস্ট নেই(মেহরাব)

এই ছেলে মুখ সামলে কথা বলো নইলে কিন্তু(রেগে বলল মেঘ)

নইলে কি হ্যাঁ নইলে কি?? মারবেন বুঝি মারুন দেখি আপনার কতবড় সাহস(মেঘের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল মেহরাব)

ওদের দুজনে ঝগড়ার মাঝে মাহি এসে বলল।

এখানে কি হচ্ছে (মাহি)

মেহরাব তো এখানে মাহিকে দেখে পুরাই অবাক।

তুমি এখানে??(অবাক হয়ে বলল মেহরাব)

এটা আমার বাড়ি আর এনি(মেঘকে উদ্দেশ্য করে) আমার ভাই (দাঁতে দাঁত চেপে বলল মাহি)

এ্যা (মেঘের দিকে তাকিয়ে বলল মেহরাব আমি শেষ,,🥶🥶🤒🤒😵😵)

মাহি তুই ওকে চিনিস?? (মেঘ)

জ,,,জি ভাইয়া,আ,,আমি ওনাকে,,, ভ,,ভালোবাসি (ভয়ে ভয়ে বলল)

অসম্ভব এই রকম একটা বখাটে ছেলের সাথে আমি কিছুতেই তোর বিয়ে দিবো না। বিয়াদপ, ফাযিল বায়ুন্ডলে (মেঘ)

দেখুন মুখ সামলে কথা বলুন কারো সম্পর্কে না জেনে এভাবে বলবেন না (মেহরাব)

আমি সব জেনেই বলছি আর নিজের চোখে দেখেওছি বখাটে একটা(মেঘ)

দেখুন বার বার বখাটে বলবেন না। আপনি কি হ্যাঁ পাগল ছাগল কোথাকার(মেহরাব)

খবরদার আমার ভাইকে পাগল বলবেন না। ভাইয়া তো ঠিকি বলেছে,,গায়ে এমন মদের বিচ্ছিরি গন্ধ হাতে মদের বতল যে কেউ আপনাকে দেখলে বখাটেই ভাববে(,মাহি)

আরে তোমরা আগে আমার কথাটা তো শোনো (মেহরাব)

কি শুনবো তোমার মতো বখাটে লুফার ছেলের কোনো কথা শুনতে চাই না (মেঘ)

এবার মেহরাব এর রাগ হয়ে গেলো তাই বলল।

এই আপনি চুপ করবেন আমাদের মাঝে কথা বলার আপনি কে বদরাগি মেন্টাল পুলিশ একটা (মেহরাব)

মেহরাব (চিৎকার করে)আপনি কিন্তু ভাইয়া কে অপমান করছেন (মাহি)

আরে যাও তো ওমন ভাই থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো (মেহরাব)

চুপ করুন,, যে আমার ভাইকে সম্মান করতে জানে না তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই বেরিয়ে যান (মাহি)

হ্যাঁ হ্যাঁ আমারও কোনো পাগলের বোনের সাথে সম্পর্ক রাখার কোনো ইচ্ছে নেই (মেহরাব)

হ্যাঁ হ্যাঁ যান তো (মাহি)

হুম যাচ্ছি হুট (মেহরাব)

ফুটুন তো (মাহি)

চলবে,,,,,,

(ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। আর গঠনমূলক কমেন্ট আশা করছি)