আহনাফ চৌধুরী পর্ব-০৫

0
97

#আহনাফ_চৌধুরী
#পর্ব_৫
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
_______________
অর্ষা ত্রস্ত দৃষ্টিতে তাকাল পাশে। কিছুটা অবাকও হয়েছে সে। বিস্মিতকণ্ঠেই জিজ্ঞেস করল,

“আপনি এখানে?”

আহনাফ একটা টিস্যু এগিয়ে দিয়ে বলল,

“চোখ মুছে নিন।”

অর্ষা টিস্যুটা নিল না। সে তখনো তাকিয়ে ছিল আহনাফের দিকে। আহনাফের দৃষ্টি ছিল সামনে ফাঁকা স্থানে। যখন দেখল যে অর্ষা টিস্যু নিচ্ছে না, তখন সে পাশ ফিরে অর্ষার মুখের দিকে তাকাল। চোখদুটি নজরে আসতেই ফের সে অনুশোচনায় দ’গ্ধ হতে লাগল। দৃষ্টি নত করে ফেলল। নরমস্বরে বলল,

“আমি খুবই দুঃখিত, অর্ষা। আমি ভাবতেও পারিনি যে এমন কিছু হবে বা হতে পারে। আমি আপনাকে দেখিনি তখন।”

অর্ষা একটা দীর্ঘশ্বাস নিল। তামিমের হঠাৎ কল করে ডিনারের অফার করা আবার অর্ষার এরকম অবস্থাতেও আসার জন্য জোর করার পেছনের কারণটি এখন তার কাছে একদম পরিষ্কার। সে আহনাফের হাত থেকে টিস্যু নিয়ে চোখ মুছে বলল,

“আমি জানি।”

আহনাফ আবার তাকাল অর্ষার দিকে। অর্ষা বলল,

“আমি জানি, আপনি ইচ্ছে করে এটা করেননি। করার কথাও নয়। কেননা আপনার সাথে তো আমার কোনো শত্রুতা নেই। আপনি রাগের বশে ছিলেন বলে আমাদের উপস্থিতি খেয়াল করেননি। ঐ ঘটনার পর থেকে আপনার মা এবং তামিম ভাইয়া যে কতবার সরি বলেছে তার কোনো হিসাব নেই। এতবার সরি শুনে আমার নিজেরই উলটো অনুতপ্ত বোধ হচ্ছিল। কারণ দোষ না করেও আমার চেয়ে বয়সে বড়ো কেউ এতবার সরি বললে আমার নিজেকেই ছোটো মনে হয়। খারাপ লাগে। সেখানে আপনার মা তো আমার মায়ের মতোই। আমি তার জায়গায় নিজের মাকে ইমাজিন করছিলাম। এজন্য খারাপ লাগাটা আরও বেশি কাজ করেছে। অন্যদিকে তামিম ভাইয়াও আমার বড়ো। আমার নিজের কোনো ভাই নেই। তিন বোন আমরা। তাই তামিম ভাইয়া খুব সহজেই আমার এবং অর্থির কাছে ভাইয়ের জায়গাটা দখল করে নিয়েছে। আপনি হয়তো জানেন না যে, ইতোমধ্যে অর্থি তামিম ভাইয়ার জন্য কতটা পাগল হয়ে গেছে। অর্থি সন্ধ্যার পরপরই ঘুমিয়ে পড়ে। নয়তো আজ সাথে আসলে দেখতে পারতেন ওর পাগলামি।”

শেষের কথাগুলো বলে একটু হাসল অর্ষা। আসলে সে পরিস্থিতি এবং আহনাফ দুটোই স্বাভাবিক করতে চাইছে। আহনাফ ক্ষীণস্বরে বলল,

“সত্যিই কি আমার প্রতি আপনার কোনো রাগ নেই?”

অর্ষা দু’দিকে মাথা নাড়াল। ফের টিস্যু দিয়ে চোখের পানি মুছে মৃদু হেসে বলল,

“না। দয়া করে, আন্টি এবং তামিম ভাইয়ার মতো আপনিও বারবার সরি বলে কিংবা এই প্রসঙ্গ টেনে এনে আমাকে পূণরায় অস্বস্তিতে ফেলবেন না।”

“কিন্তু আমি কী করে বুঝব যে আপনি আমার ওপর রেগে নেই?”

“আমার ব্যবহার কিংবা কথায় কি মনে হচ্ছে যে আমি অভিনয় করছি?”

আহনাফ একটু বাঁকা হেসে বলল,

“কী জানি! মেয়েদের মনে তো অনেক কিছুই চলে।”

প্রত্যুত্তরে অর্ষাও বিদ্রুপের সহিত বলল,

“কেন? ছেলেদের মনে কি অনেক কিছু চলে না?”

“এনিওয়ে, আমি আপনাকে আপনার পছন্দের কিছু গিফ্ট করতে চাই। যদি আপনি সেটা গ্রহণ করেন, তাহলে আমি বুঝে নেব যে আপনি আমার ওপর রেগে নেই এবং আমাকে ক্ষমাও করে দিয়েছেন।”

“এখানে গিফ্টের কথা আসছে কোত্থেকে?”

“আসছে। আমরা কারও ওপর রেগে থাকলে কিংবা তাদের অপছন্দ করলে তাদের দেওয়া কোনো কিছু গ্রহণ করি না। আসলে, আমি এরকম। তাই বললাম।”

“আমার গিফ্ট লাগবে না। আমি সত্যিই আপনার ওপর রেগে নেই।”

“ওকে ফাইন। তাহলে তো আমার দেওয়া গিফ্ট নিতেও আপনার অসুবিধা নেই।”

“আপনার সাথে তো আমার গিফ্ট আদান-প্রদান করার মতো সম্পর্ক নেই।”

“সম্পর্কের নামকরণের জন্য তো আমি গিফ্ট দেবো না। আমি দেবো জাস্ট শিওর হওয়ার জন্য। বলুন আপনাদের পছন্দের কী দেওয়া যায়?”

অর্ষা ক্ষীণশ্বাস নিয়ে বলল,

“সেটা পরে দেখা যাবে।”

“পরে কখন?”

“সময় তো চলে যাচ্ছে না। আপনি তামিম ভাইয়ার ফ্রেন্ড। তাই ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় আমাদের আবার যোগাযোগ হবে। তখন না হয় বলব?”

“শিওর?”

“হ্যাঁ।”

“কথা দিচ্ছেন?”

অর্ষা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,

“দিচ্ছি।”

“থ্যাঙ্কিউ।”

অর্ষা মৃদু হাসল। আহনাফ অনেকক্ষণ পর বলল,

“বেশি ব্যথা করছে?”

অর্ষা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। আহনাফ অর্ষার চোখের কিনারের কালশিটে দাগের দিকে তাকিয়ে বলল,

“চোখের কথা বলেছি।”

“একটু ব্যথা তো করবেই কিছুদিন।”

“চোখেও লেগেছে?”

“না।”

“আমার আপনাকে দেখলেই কষ্ট হচ্ছে। নিজেকে নিজেই যেন ক্ষমা করতে পারছি না।”

“এমন হলে তো আপনার সামনে আর আসা যাবে না। ছেলে মানুষ এত নরম মনেরও হয় নাকি?”

আহনাফ হাসল। অর্ষা ভ্রুকুটি করে বলল,

“হাসছেন কেন?”

“না, এমনিই।”

অর্ষা আর কিছু বলল না। তামিম কল দিল এর কিছুক্ষণ পরই। খাবার সার্ভ করা হয়েছে এজন্য চলে আসতে বলল। কল কেটে আহনাফ অর্ষাকে নিয়ে তামিম এবং ঐশির কাছে গেল।
.
.
সকাল থেকে বাড়ির সবাই সব কাজ গুছিয়ে রেডি হয়ে নিচ্ছে। সবার আগে রেডি হয়ে বসে আছে অর্থি। বাকিদের সে তাড়া দিচ্ছে। সবাই মিলে আজ তামিমদের বাসায় যাবে। তামিমের বাবার অনুরোধে এঙ্গেজমেন্টের আয়োজন ওদের বাসাতেই হবে। এই কয়দিনে ঐশির বাবা ওসমান আলম ছেলে ও তার পরিবার সম্পর্কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সকল তথ্য নিয়েছেন। ছেলের বা পরিবার সম্পর্কে সকল তথ্যই ইতিবাচক ছিল। তাই তারাও আর কোনো আপত্তি করেনি। এখন ভালোই ভালো মেয়েটার বিয়ে হলেই তিনি কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। ঐশির বিয়ের পর অর্ষার বিয়েটাও তিনি এবার দ্রুত দিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন। ঐশির মতো পড়াশোনার পাট চুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না।

ওসমান আলম তৈরি হয়ে ড্রয়িংরুমে অপেক্ষা করছিলেন। অর্থি ব্যস্ত হয়ে ঐশির রুম থেকে বের হলো বাবাকে ডাকতে ডাকতে।

“ও বাবা, বাবা। বাবা গো।”

ওসমান আলম হেসে উঠলেন। মেয়ের মতোই উতলা হয়ে বললেন,

“কী বাবা?”

“অর্ষা আপুকে ফোন দাও না! বাসায় আসতে বলো জলদি।”

“বাসায় আসতে বলব মানে? অর্ষা কোথায় গেছে?”

আমেনা বেগম ড্রয়িংরুমে আসতে আসতে বললেন,

“একটু কলেজে গেছে। কী নাকি প্রজেক্ট জমা দেওয়ার লাস্ট ডেইট আজ তাই।”

“ও আসবে কখন? আমরা যাব কখন?”

“চলে আসবে। তুমি তাও ফোন দিয়ে দেখো।’
_________

“তোমার এই অবস্থা হয়েছে তুমি আমাকে একটাবার জানাবে না?” রাগ দেখিয়ে জানতে চাইল রিহান।

অর্ষা কয়েক সেকেন্ড নিরব থেকে রিহানকে বোঝার চেষ্টা করল। পাঁচদিন পর আজ সকালে নিজেই ফোন করে দেখা করতে বলেছে। অর্ষা বলেছে যে, আজ ঐশির এঙ্গেজমেন্ট। সে হয়তো দেখা করতে পারবে না। কিন্তু রিহান বেশ জোর করেছে দেখা করার জন্য। এজন্য সে এত সকালে এসেছে দেখা করতে। রিহানও পরিস্থিতি বুঝে রাজি হয়ে গেছে।

“চুপ করে আছো কেন?”

রিহানের প্রশ্নে অর্ষা অন্যদিকে তাকিয়ে বলল,

“তোমার কি আমার খবর রাখার মতো সময় আছে রিহান?”

“সময় নেই মানে?”

“মানে আমি জানতে চাচ্ছি, আমার প্রায়োরিটি কি আদৌ আছে তোমার কাছে?”

“অবশ্যই তোমার প্রায়োরিটি আছে আমার কাছে। আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি কাজের জন্য বিজি থাকি। এজন্য হয়তো তোমাকে ঠিকঠাক সময় দিতে পারি না। এটা আমিও স্বীকার করি। কিন্তু ভালো তো বাসি।”

“তাই? আমি কেন সেটা ফিল করতে পারি না তাহলে? আমার কেন মনে হয় তুমি আমাকে অপশন হিসেবে তোমার জীবনে রেখে দিয়েছ?”

রিহান অর্ষার মুখের দিকে নিষ্পলক কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থেকে দীর্ঘশ্বাস নিল। অর্ষার হাত ধরে বলল,

“আমি সরি সেদিনের ঘটনাটির জন্য। আসলে কাজের এত প্রেসার এখন! আর জানোই তো আমাদের লাইফ সম্পর্কে। সবে মাত্র আমার ক্যারিয়ার একটু একটু করে তৈরি হচ্ছে। এখন যদি কেউ আমাদের এভাবে দেখে ফেলত তাহলে এটা নিয়ে নানান ধরণের ঘটনা তৈরি হতো।”

“তুমি আমায় ভালোবাসো? আর নিজের ভালোবাসাকে সবার সামনে স্বীকার করতে এত কীসের ভয় তোমার?”

“ভয় না। বোঝার চেষ্টা করো…”

“হ্যাঁ, বুঝি। সবই বুঝি আমি। তুমি এখন সেলেব্রিটি। অনেক কিছুই তোমায় মেইনটেইন করে চলতে হয়। সতর্ক থাকতে হয়। তাই বলে এতটাই যে, তোমার গার্লফ্রেন্ড এসে তোমাকে সারপ্রাইজও দিতে পারবে না! আসলে সরি বলা দরকার আমার। আমিই সবসময় অবুঝের মতো আচরণ করি।”

রিহান এবার জড়িয়ে ধরল অর্ষাকে। বলল,

“প্লিজ! আর রাগ করে থেকো না। তুমি এভাবে গাল ফুলিয়ে থাকলে কি আমার ভালো লাগবে বলো?”

“আমি রাগ করে নেই।”

রিহান অর্ষার গাল টেনে দিয়ে বলল,

“লক্ষী বাচ্চা! কিন্তু এত করে বলার পরও তুমি নিজের খেয়াল রাখো না কেন? কীভাবে চলাফেরা করো যে পড়ে যাও? এখন যদি চোখের কোনো ক্ষতি হতো?”

“হলে হতো।”

“কী ব্যাপার? এখনো তোমার রাগ কমেনি?”

অর্ষা চুপ করে আছে। রিহান বলল,

“ব্যথা করছে না? আসো একটা চুমু দিয়ে দেই।” বলে রিহান অর্ষার চোখের কাছে ঠোঁট এগিয়ে নিচ্ছিল।

অর্ষা বাঁধা দিল রিহানকে। কেমন যেন বিরক্ত লাগছে তার। মনে হচ্ছে, রিহানের ভালোবাসার সবটাই নাটক। কেন এমন মনে হচ্ছে সে জানে না! তবে রিহান নিজেই যেন দুজনের মধ্যে হওয়া দূরত্বটাকে প্রশ্রয় দিয়েছে, যে কারণে অর্ষা বিরক্তবোধ করছে।

অর্ষা সরে গিয়ে বলল,

“এত আহ্লাদ দেখাতে হবে না। উলটো ব্যথা আরও বেশি পাব। আমার এখন যেতে…”

অর্ষার কথা শেষ হওয়ার আগেই তার ফোন বেজে উঠল। বাবা কল করেছে। সে ফোন রিসিভ করে বলল,

“এইতো আসছি আমি।”

কথা শেষে রিহানকে বলল,

“যেতে হবে।”

“ঠিক আছে। চলো পৌঁছে দিচ্ছি।”

অর্ষা মাথা নাড়াল। রিহান প্রাইভেট কার কিনেছে গতমাসে। আগে বাইকে করে অর্ষাকে নিয়ে ঘুরলেও এখন দেখা করতে আসলে কার নিয়ে আসে। হয়তো সেইফটির জন্যই। ড্রাইভ করতে করতে রিহান বলল,

“কাল আমার একটা গানের শো আছে। ভাবছিলাম তোমাকে নিয়ে যাব। কিন্তু এখন তোমার চোখের যেই অবস্থা! মানুষ কী না ভাববে!”

“হুম। এখন আমাকে দেখতে খুবই বাজে লাগছে আমি জানি। আমি যাব না, টেনশন করো না।”

“আমি আসলে ওভাবে বলতে চাইনি, অর্ষা।”

“একটা গান শোনাও তো। অনেকদিন হলো তোমার গান শুনি না।”

এই প্রসঙ্গে অর্ষা আর কোনো কথা বলতে চাইছে না। যদিও রিহানের কথায় সে যথেষ্ট কষ্ট পেয়েছে তবুও সে নিজেকে স্বাভাবিক রাখল। কথা বাড়াতে চাইল না। প্রসঙ্গ বদলানোর জন্য রিহানকে গান গাইতে বলল। রিহানও আর কথা বাড়ায়নি। অর্ষার পছন্দের একটা গান শুনিয়েছে। বাড়ির একটু দূরেই অর্ষাকে নামিয়ে দিল সে। অর্ষা গাড়ি থেকে নেমে বলল,

“তোমার জন্য মাঝে মাঝে আমার খুব মায়া হয়। এত সুন্দর তুমি! কেন যে আমার মতো একটা মেয়েকে ভালোবাসতে গেলে!”

কথাগুলো বলে নিজেই হাসল অর্ষা। বিষাদের হাসি! রিহান তৎক্ষণাৎ কিছুই বলতে পারল না। শুধু চুপচাপ অর্ষার চলে যাওয়া দেখছিল।
.

তামিমদের বাড়িতে পৌঁছে দেখল মোটামুটি ভালোই আয়োজন করেছে তারা। বাড়ির ভেতরটা লাইটিং, ফুল আর বেলুন দিয়ে সাজিয়েছে। তামিমের অনেক ফ্রেন্ডও এসেছে আজ। শুধু পরিবার বলতে আহনাফের বাবা-মা এসেছে। আর ছিল তামিম ও অর্ষার বাড়ির লোকজন। ড্রয়িংরুমে বসার পর আহনাফের সাথে একবার চোখাচোখি হলো অর্ষার। কেমন যেন গাম্ভীর্যপূর্ণ লাগছে আজ আহনাফকে। তবে একদমই চুপচাপ। এই লোক যে সেদিন তার সাথে এত কথা বলেছে এটা এখন নিজের কাছেই বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। হঠাৎ করেই রিহানের কথা মনে পড়ে সে উদাস হয়ে গেল। ভেতরে ভেতরে ছটফট করতে লাগল। অস্থির লাগছিল ভীষণ।দিনদিন তার মানসিক শান্তি হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করতে লাগল সে আপাতত এসব চিন্তা মাথা থেকে বের করার জন্য।

সবার হৈচৈ, হাসি-আনন্দে কিছুটা সম্ভবও হলো। সবাই যখন ব্যস্ত ছিল তখন আহনাফের মুখোমুখি হলো সে। আহনাফের মুখে কোনো হাসি নেই। তবে অর্ষাকে সে এমন একটা কথা বলল যে তার মুখ বিস্ময়ে হা হওয়ার উপক্রম। বেশি সময় নেয়নি আহনাফ। গম্ভীর হয়েই বলেছে,

“আপনার চোখের পাশে হওয়া ঐ কালশিটে দাগটার জন্যই বোধ হয় আপনার সৌন্দর্য কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। সুন্দর লাগছে আপনাকে।”

নির্বাক ভঙ্গিতে অবাক হয়ে সে আহনাফের চলে যাওয়া দেখল। মনে পড়ে গেল রিহানের বলা কথাটিও। রিহান! যাকে সে ভালোবাসে। যার সাথে তার প্রণয়ের সম্পর্ক; সেই মানুষটাই তাকে বলেছে, তার এই অবস্থার জন্য শো-তে নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। মানুষ নানান ধরণের কথা বলবে। যার উত্তর এক কথায় দাঁড়ায়, অর্ষাকে কুৎসিত, অসুন্দর ও বিশ্রী লাগছে। রিহানের ইমেজের ব্যাপার! যদিও সে অর্ষাকে গার্লফ্রেন্ড বলে পরিচয় করিয়ে দিত না। বড়জোর বলত, ফ্রেন্ড! এতেও রিহানের কত ভাবনা, কত আপত্তি! আর এই আহনাফ নামক লোকটা কী বলে গেল? কালশিটে দাগটাই তার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে? মানুষে মানুষে ও তাদের চিন্তা-ভাবনা এতটা বৈচিত্র্যময় কেন?

চলবে…