আড়ালে আবডালে পর্ব-০৭

0
6011

#আড়ালে_আবডালে
#পর্ব_৭
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
_______________________

কড়া রোদে সূর্যের তীপ্ত কিরণের মাঝে বাজারে হাঁটছে নিজাম ইসলাম আর নিহি। শুক্রবার হওয়ায় আজ সকলেরই বন্ধের দিন। সবাই সাপ্তাহিক বাজার করতে এসেছে। সারা সপ্তাহ ডিউটি করে এই শুক্রবারেই একটু রেস্ট নেওয়ার সময় পায় নীলম। তাই নীলমকে আর ঘুম থেকে তুলে বিরক্ত না করে নিজাম ইসলাম নিজেই বাজার করে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার কারণে নিহিও বায়না ধরল বাবার সাথে বাজারে আসবে। নিজাম ইসলাম প্রথমে নাকচ করলেও নিহি না শোনার মতো মেয়ে নয়। তাই বাধ্য হয়ে নিজাম ইসলাম সঙ্গে করে নিহিকে নিয়ে আসেন। দোকানীদের সাথে দরদাম করতে দেখতে বেশ লাগে নিহির। শুধু মানুষজনের ভীড়টাই যা একটু বিরক্ত লাগে। নিহি একটা জিনিস খেয়াল করে দেখেছে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা একটু বেশিই দরদাম করতে পারে এবং বোঝাও যায় দরদাম করায় এরা পটু। মানুষজনের প্রচুর ভীড় দেখে নিজাম ইসলাম বলেন,
“আম্মা তুই এই দোকানের সামনে দাঁড়া। আমি বাজার করে আনি।”
“কেন আব্বু? আমিও যাই?”
তিনি কড়াভাবে বলেন,
“না। অনেক ভীড়। তুই এখানেই দাঁড়া।”

বাবার সঙ্গে কথা বাড়ায় না নিহি। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। নিজাম ইসলাম বাজার করে আসেন। ঘেমেনেয়ে একাকার অবস্থা। বাজার করা শেষ হলে এক হাতে বাজারের ব্যাগ আর অন্য হাতে নিহির হাত ধরে বাজার থেকে বের হন। এক পরিচিত রিক্সাওয়ালাকে দিয়ে বাজার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে নিহিকে নিয়ে রেষ্টুরেন্টে যান। রেষ্টুরেন্টে গিয়ে দেখা হয়ে যায় নিজাম ইসলামের বন্ধু আকবর আজিজের সাথে। আগে তারা একই অফিসের কলিগ ছিল। অনেক দিনের ব্যবধানে দু’বন্ধু দুজনকে দেখতে পেয়ে আলিঙ্গন করে নিল। তাদের আলিঙ্গন শেষ হলে আকবর আজিজ নিহির দিকে তাকিয়ে বলেন,
“সাথে কে এটা?”
নিজাম ইসলাম নিহির কাঁধে ধরে কাছে এনে বলেন,
“এটা আমার আম্মা।”
নিহি কিছুটা লজ্জা পেয়ে মৃদু হেসে আকবর আজিজকে সালাম দেয়। সালামের উত্তর নিয়ে আকবর আজিজ বলেন,
“মাশআল্লাহ্। তোর ছোট মেয়ে না?”
“হ্যাঁ।”
“অনেক বড় হয়ে গেছে।”
তিনি নিহিকে প্রশ্ন করেন,
“কোন ক্লাসে পড়ো আম্মু?”
“ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার।” নিহির উত্তর।

একই টেবিলে বসে গল্পগুজব করে দুই বন্ধু। সংসার, ছেলে-মেয়ে, অবসর সময় সব নিয়ে গল্পগুজব চলছে। নিহি খাচ্ছে আর তাদের কথা শুনছে। সব কথার শেষে আকবর আজিজ বলেন,
“বন্ধু ছোট ছেলেটারে বিয়ে করাব। তোর চেনাজানা ভালো কোনো মেয়ে আছে?”
“তেমনভাবে নাইরে। ভাইয়ের মেয়েদের তো আরো আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। তাও আমি নিহির মায়ের সাথে কথা বলে তোকে জানাব। ও এসব খবর রাখে।”
আকবর আজিজ হেসে বলেন,
“নিজের মেয়েকে চোখে পড়ে না?”

নিহি তখন কোল্ড কফি খাচ্ছিল। উনার কথা শুনে কফি নাক-মুখ দিয়ে বের হওয়ার যোগার। কোনোমতে নিজেকে সামলে নেয়। ভাগ্যিস হট কফি ছিল না। নিজাম ইসলাম হেসে বলেন,
“না রে ভাই। আমার মেয়েরে আরো পড়াব। এখনো তো ছোট অনেক।”
“এটা কোনো কথা বললি বন্ধু? বিয়ের পর কি মেয়েরা পড়ে না? নাকি তোর মনে হয় তোর মেয়েরে আমি পড়াশোনা করতে দেবো না?”
“হা হা! তোর ওপর আমার বিশ্বাস আছে। কিন্তু তবুও। এত তাড়াতাড়ি নিহিকে বিয়ে দেবো না।”
“দেখব আমি।মেয়ে তাহলে বড় হোক।”
আরো কিছুক্ষণ গল্পগুজব করে ওরা উঠে পড়ে। বাড়িতে গিয়ে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে নিহি।
দুপুরে খাবার টেবিলে আকবর আজিজের কথা বলেন নিজাম ইসলাম। নিহিকে যে তিনি ছেলের বউ করে নিতে চান এটাও বলেন। তখন নিহি কিছু না বললেও এবার চেঁচিয়ে ওঠে। বলে,
“ভালো হচ্ছে না আব্বু। তখন কিছু বলিনি বলে ভেবো না এখন চুপ থাকব।”
“আমি আবার কী করলাম?” ইনোসেন্টের মতো মুখ করে বলেন নিজাম ইসলাম। নীলম খেতে খেতে বলে,
“বাবা দেরি করার দরকার নেই। আঙ্কেলের ছেলেকে তো আমি চিনি। খুব ভালো ছেলে। নিহির সাথে বিয়ে হলে খারাপ হবে না। আর কত ঘরে রাখব নিহিকে? এবার বিদায় করে দেওয়া দরকার।”
কথাগুলো বলে মুখ টিপে হাসে নীলম। রাগে নাক, গাল ফুলিয়ে সালেহা বেগমের দিকে তাকিয়ে নিহি বলে,
“তোমার ছেলেকে তুমি কিছু বলবা? নাকি আমি খুন করে ফেলব?”
“তোদের ভাই-বোনের ঝগড়ার মাঝে আবার আমায় টানিস কেন বল তো?” দায়সারাভাবে বলেন সালেহা বেগম। এতে নিহি আরো ক্ষেপে বলে,
“ওহ আচ্ছা! তাই না? যখন তুমি আর আব্বু ঝগড়া করো তখন আমার কাছে কেন নালিশ করো?”

তিতির নিহির হাত ধরে বলে,
“ফুপি আমি আব্বুর বিচার করব। দাদু পঁচা। ছেলেকে বাঁচিয়ে দেয় শুধু।”
সবাই তিতিরের কথা শুনে হেসে ফেলে। নিহি বলে,
“মামনী তুমিই ঐ পাজিটার বিচার করো তো।”
“তুমি না আমার ছোট মা? ছোট মা হয়ে আমার বিচার করবে?” জিজ্ঞেস করে নীলম। তিতির ভাব নিয়ে বলে,
“তুমি আমার পঁচা ছেলে। আর পঁচা ছেলেকে শাস্তি দিতে হয় জানো না?”
এবারও সবাই হাসে। নীলম হাসতে হাসতেই বলে,
“একদম নিহির মতো হয়েছে।”
“হুহ! আমি ভাস্তি তো।” বলে নিহি।
নিজাম ইসলাম বলেন,
“তবে যাই বলিস, নিহিকে কিন্তু আমি দেরি করে বিয়ে দেবো। অনেক পড়াব আমি নিহিকে।”
“দুইদিন পরই বিয়ে করতে চাইবে তোমার মেয়ে।” পিঞ্চ মেরে বলে নীলম।
নিহি বাম হাতে নীলমের চুল ধরে টানে। নিজাম ইসলাম গর্ব করে বলেন,
“আমার মেয়েদের আমি চিনি। আমার বড় মেয়ে কখনো কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমার নিহির ওপর ভরসা আছে।”

নিজাম ইসলামের আত্মবিশ্বাস দেখে তৃপ্তির হাসি হাসে সবাই।
.
.
পরেরদিন কলেজে গিয়ে অনলকে এভোয়েড করা শুরু করে নিহি। অনলের প্রতি দুর্বলতা না চাইতেও বাড়ছে। যেটা নিহি একদমই চাচ্ছে না। অনেক ভরসা নিয়ে কলেজে পড়তে পাঠিয়েছে বাবা। আবেগের বশে কোনো ভুল সিদ্ধান্তে নিলে পড়লে বাবা ভীষণ কষ্ট পাবে। আর যাই হোক, বাবাকে কখনোই কষ্ট দেওয়া যাবে না। নিহির এভাবে এড়িয়ে চলাটা পীড়া দিচ্ছে অনলকে। যতবার নিহির সাথে কথা বলতে যাচ্ছে ততবারই কোনো না কোনো ভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে। এমনকি দুপুরের খাবারটা পর্যন্ত ক্যান্টিনে খেতে আসেনি। ক্লাসে বসেই খেয়েছে। লাইব্রেরীতে একবার হলেও প্রতিদিন আসবে নিহি। আজ একবারও আসেনি। হঠাৎ করে নিহির এমন পরিবর্তন অনলকে ভাবিয়ে তুলছে। যতটা রাগ হচ্ছে তারচেয়েও বেশি কষ্ট হচ্ছে। অনলের ধারণা লিসার জন্যই নিহি এমন বদলে যাচ্ছে। উপমাকে দিয়ে বেশ কয়েকবার ডাকিয়েছে নিহিকে। নিহি আসেনি। ইচ্ছে করলে ক্লাশে গিয়েই নিহির সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যায়। তবে এতগুলো স্টুডেন্টসদের সামনে যদি নিহি কথা বলতে না চায় আর তখন যদি অনল একবার রেগে যায় তাহলে হীতে বিপরীত হয়ে যাবে। উপায় না পেয়ে অনল সুমাইয়াকে রিকোয়েস্ট করে বলে,
“নিহির সাথে একটু কথা বলিয়ে দে না প্লিজ!”
অনলের এমন আকুতি দেখে সুমাইয়া লিসার দিকে তাকায়। লিসা তাকিয়ে আছে সুমাইয়ার দিকে। সুমাইয়ার উত্তরের আগেই লিসা বলে,
“তুমি ওর জন্য এমন পাগল হয়ে আছো কেন? ঐটুকুন একটা মেয়ে তোমাকে পাত্তা দিচ্ছে না। নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাচ্ছে। সেটা তুমি বুঝতে পারছ না?”
“তোর এই কথাগুলো যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে বলব এর জন্য একমাত্র তুই-ই দায়ী। তোর সিনক্রিয়েট করার জন্যই নিহি আমাকে এড়িয়ে চলছে।”
“তাহলে তো আরো বেশি সিনক্রিয়েট করা উচিত ছিল।”
“ভুলেও আর চেষ্টা করিস না।”
“আমার লজ্জা হয় অনল। যেখানে কলেজের কমবেশি অনেক মেয়েই তোমার জন্য পাগল। এমনকি বাহিরেও এমন অনেক আছে। আর সেখানে তুমি…”
“আর সেখানে আমি নিহিকে ভালোবাসি। এটাই সত্যি। আর কিছু?”

আগেরবার সুমাইয়াকে রিকোয়েস্ট করে বললেও এবার রাগ দেখিয়ে বলে,
“তুই নিহির সাথে কথা বলিয়ে দিতে পারবি কী না?”
ধমক খেয়ে সুমাইয়া আমতা আমতা করে,
“চেষ্টা করব।”
“চেষ্টা না। যদি চাস তাহলে অবশ্যই পারবি। কারণ ও বাকিদের না করলেও তোকে না করবে না। ক্লাস ছুটি হলে বলবি দরকারি কথা আছে। কথা বলে হাঁটতে হাঁটতে কলেজের পেছনে আসবি।”
“আচ্ছা।”
.
কলেজের পেছনে অনল অপেক্ষা করতে থাকে। হাত ঘড়িতে বারবার সময় দেখছে। বেশ কিছুক্ষণ পর সুমাইয়ার সাথে নিহিকে আসতে দেখা যায়। নিহি সুমাইয়াকে জিজ্ঞেস করে,
“এখানে কেন আনলেন আপু?”
সুমাইয়া মজা করে বলে,
“তোমায় খুন করে ফেলব।”
কিছুটা হলেও আৎকে তাকায় নিহি। নিহির হাত চেপে ধরে উপমা। দুজনের রিয়াকশন দেখে সুমাইয়া হেসে বলে,
“ভয় পেলে নাকি? আমি মজা করলাম।” বলে নিহির গাল টেনে দেয়।

একটু দূরেই অনলকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে থমকে যায় নিহি। অনলের সামনে আসলেই কেমন যেন গলে যায় নিহি। তবুও মনে জোর এনে নিহি উল্টো পথে হাঁটা শুরু করে। অনল দৌঁড়ে এসে নিহির হাত চেপে ধরে। সুমাইয়া উপমাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে বলে,
“চলো আমরা এইখানে বসে গল্প করি।”
অনিচ্ছা সত্ত্বেও উপমা না করতে পারে না। ওদের থেকে কিছুটা দূরে ঘাসের ওপর বসে দুজন। নিহি হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। অনল কণ্ঠ খাদে রেখে বলে,
“বেশি জোরজবরদস্তি কোরো না। হাতে ব্যথা পাবে।”
“সুযোগ পেলেই হাত ধরেন কেন? আজব! হাত ছাড়েন।”
“তুমি আমায় ইগনোর কেন করছ?”
“ইগনোর? তাও আপনাকে? ইগনোর করার মতো কোনো সম্পর্ক আপনার সাথে আছে আমার?”
“না,নেই। তাও তুমি আগে এমন ছিলে না। লিসার জন্য তুমি এমন করছ? বিশ্বাস করো লিসাকে আমি ফ্রেন্ড ছাড়া আর অন্যকিছু ভাবি না।”
“আমি আগে থেকেই এমন ছিলাম। আর লিসা? ঐরকম একটা ছোট মনের মেয়ের ধার ধাড়ী না আমি। আপনি তাকে বন্ধু ভাবেন নাকি বোন, বউ ভাবেন সেটা আপনার বিষয়। এসব ব্যাপারে আমাকে না জড়ালেই খুশি হব।”
“তাহলে তোমার সমস্যাটা কোথায় আমায় বলো? আমায় কি তোমার ভালো লাগে না?”
“না, লাগে না।”
অনল যেন কিছুটা দমে গেল। এভাবে মুখের ওপর কেউ যে কাউকে না করতে পারে তা ধারণার বাহিরে ছিল। অনল জিজ্ঞেস করে,
“তুমি কি অন্য কাউকে পছন্দ করো বা ভালোবাসো এমনকিছু?”
“না।”
“তবে?”
“তবে কিছুই না। আমি কোনো রিলেশনে জড়াব না।”
“বিয়েও করবে না?”
“ভাগ্যে থাকলে বিয়ে হবে। তবে পরিবারের পছন্দেই।”
“বেশ! তোমার পরিবারকে রাজি করানোর দায়িত্ব আমার। তাহলে তো সমস্যা নেই?”
“চেষ্টা করে দেখেন।”
“অবশ্যই। তার আগে শ্বশুরের মেয়ের মন জয় করব।”

নিহি আর কিছু বলে না। উপমাকে নিয়ে চলে আসে। বাড়িতে যাওয়ার পর আরেকটা চমক অপেক্ষা করছিল নিহির জন্য। বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে আকবর আঙ্কেল তার ছেলেকে নিহির কথা বলেছেন। ছোট বেলায় নিহিকে দেখেছিল। তাই আকবর চাচা চেয়েছেন কোন একটা ক্যাফে দুজনে দেখা করুক। নিহির রাগ হচ্ছে খুব। রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে বলে,
“উনি বলল আর তোমরা রাজি হয়ে গেলে? আর আব্বু, তুমি না বললে তুমি আমায় অনেক পড়াবে? এত তাড়াতাড়ি বিয়ে দেবে না। এখনই মত পাল্টে গেল?”

নিজাম ইসলাম নিহির মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,
“আহা আম্মা! রাগ করিস কেন? আমি তো বিয়ে দেবো বলিনি। আকবরের ছেলে তোকে দেখতে চেয়েছে নাকি। আকবর অনেক অনুরোধ করে বলল তাই!”
“তাই কী? আমাকে দেখারই বা কী আছে? আর এতই যদি দেখার ইচ্ছে হয়েছে তাহলে বাড়িতে আসতে বলতে।”
“আমি বলেছিলাম। আকবর বলল পরে একদিন সবাই মিলে বাড়িতে আসবে। আজ বিকেলে তোদের দেখা করতে বলল।”
“তাহলে পরেই একদিন সবাই আসুক। বিকেলে আমার প্রাইভেট আছে।”
“প্রাইভেটে যেতে হবে না আজ। আমি বলেছি তুই যাবি। না গেলে বুঝিসই তো!”

নিহির ইচ্ছে করছে কতগুলো কথা বাবাকে শুনিয়ে দিতে। কিন্তু অদম্য এই ইচ্ছাকে লুকিয়ে রেখে নিহি রুমে চলে যায়। উপমাকে ম্যাসেজ করে জানিয়ে দেয় আজ আর প্রাইভেটে যাবে না। কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে রেডি হয়ে বাবার বলা সময়ে ক্যাফে চলে যায় নিহি। যেতে প্রায় ১০ মিনিট লেট হয়ে যায়। ক্যাফে এসে মনে পড়ল ছেলের ফোন নাম্বারই আনা হয়নি। তাহলে এখন চিনবে কীভাবে? বাবাকে ফোন করে নাম্বারটা চেয়ে নিল। সেই নাম্বারে কল করে জানা গেল ছেলে আগেই চলে এসেছে। তার পরনে অফ হোয়াইট রঙের শার্ট আর কালো প্যান্ট। নিহি কালো রঙের একটা থ্রি-পিস পরেছে। ক্যাফের ভেতর গিয়ে এদিকে, ঐদিকে তাকিয়ে অফ হোয়াইট শার্ট পরা কাঙ্ক্ষিত মানুষটিকে খুঁজে পাওয়া যায়। পেছন থেকে দেখে ফোনে কথা বলছে। নিহি সরাসরি সেই টেবিলে গিয়ে মুখোমুখি বসে পড়ে। ছেলে দেখে ভারী অবাক হয় নিহি। তেমন নিহিকে দেখেও চমকে যায় সে। ছেলেটি অন্য কেউ নয় আমান! অথচ বাবা বলেছিল ছেলের নাম শাহরিয়ার। তাহলে তার পুরো নাম শাহরিয়ার আমান। ওহ গড! আর ছেলে পায়নি? উনার জন্য মেয়ে কেন খুঁজছে?উনার বাবা কি জানে না ছেলের যে অলরেডি জান, কলিজা, ফুসফুস আছে?

চলবে…