আড়ালে আবডালে পর্ব-০৯

0
6013

#আড়ালে_আবডালে
#পর্ব_৯
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
_____________________

নভেম্বর মাস, শীত পড়তে শুরু করেছে। তেমনভাবে পড়েনি অবশ্য। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতেই শীতের পরিমাণ বেড়ে যাবে। আজও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে। তবুও কলেজে যেতে হবে। কলেজ তো মিস করা যাবে না। পড়ার চাপ বেড়েছে অনেক। এত মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও অনল আর নিহির মাঝে কোনো সম্পর্ক হয়নি। তবে বন্ধুত্ব হয়েছে। অনলের করা পাগলামিগুলো নিহিকে বাধ্য করেছে বন্ধুত্ব করাতে। বৃষ্টির মধ্যে ছাতা মাথায় দিয়ে নিহি কলেজে যাওয়ার জন্য বের হয়। কলেজের সামনে টং দোকানে বেশকিছু ছেলেরা বসে আছে। মেয়েদের দেখে বাজে বাজে কথা বলছে। নিহি চারপাশে তাকিয়ে দেখছে অনল আছে কী-না। অনল সঙ্গে থাকলে কেউ কিছু বলতে পারবে না। আর সঙ্গে না থাকলেও পরে যদি অনলের কানে যায় যে, কেউ নিহিকে ডিস্টার্ব করেছে তাহলে তার অবস্থা নাজেহাল করে দেবে। আজও সেদিনের কথা নিহির মনে পড়ে। শাহরিয়ারের সঙ্গে একটুর জন্য মারামারি হয়নি অনলের। নিচে নেমে অনেক কষ্টে দুজনকে থামিয়েছিল নিহি। তবে অনল বলে দিয়েছিল, শাহরিয়ার যদি নিহির পিছে এমন ঘুরঘুর করে তাহলে এর পরিণাম ভালো হবে না। শাহরিয়ারও প্রায় এক মাস অপেক্ষা করেছিল নিহির জন্য। কোনোক্রমেই যখন নিহিকে রাজি করাতে পারেনি তখন অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করে নিয়েছে। নিহিসহ বাড়ির সবাই বিয়ের দাওয়াতেও গিয়েছিল।

বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অনলের কথা ভাবতেই অনলের উদয় হয়। বাঁচবে অনেকদিন। কথিত আছে, কারো নাম নিলে বা কাউকে স্মরণ করলে যদি সেই মানুষটা তখনই সামনে আসে বা কোনোভাবে তখনই কথা হয় তাহলে নাকি তার হায়াৎ বেড়ে যায়। যদিও শুধুই কথিত কথা! অনলের মাথায় ছাতা নেই। দৌঁড়ে এসে নিহির ছাতার ভেতর ঢুকে পড়ে। নিহি অনলের চেয়ে শর্ট হওয়ায় ছাতার মধ্যে অনলকে কুঁজো হয়ে হাঁটছে হচ্ছে। নিহির থেকে ছাতা নিয়ে নিজেই ধরে। বলে,
“এত শর্ট কেন তুমি?”
“কই এত শর্ট?”
“শর্ট-ই তো।”
“আপনার চেয়ে লম্বা হলে ভালো হতো?”

অনল একবার নিহির মুখের দিকে তাকিয়ে বলে,
“না। তুমি এমনই পার্ফেক্ট আছো।”
কলেজ গেটের সামনে গিয়ে সাকিবের ছাতার নিচে গিয়ে অনল নিহিকে বলে,
“যাও ভেতরে।”
নিহি সম্মতি জানিয়ে ভেতরে চলে যায়। বন্ধুত্ব করার জন্য নিহি বেশকিছু শর্ত দিয়েছিল অনলকে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জড়িয়ে ধরা, হাত ধরা এসব কিচ্ছু করা যাবে না। সবার সামনে এতবেশি কথা বলা যাবে না। অনল নিহির সব শর্তই মেনে নিয়েছিল। কলেজের ভেতর যেতে যেতে সাকিব বলে,
“তোর কাহিনী আমি কিছুই বুঝি না দোস্ত।”
“কীসের কাহিনী?” জিজ্ঞেস করে অনল।
“এইযে, প্রথমে বললি নিহিকে জ্বালাবি। এরপর নিজেই নিহির প্রেমে পড়ে গেলি। পাগলের মতো ভালোবাসলি। আর এখন আবার বন্ধুত্ব করেছিস। তুই চাস কী রে ভাই?”
অনল মৃদু হেসে বলে,
“তোর মোটা মাথায় এতকিছু ঢুকবে না।”
“বুঝিয়ে বললেই হবে।”
“প্রথমে জিদ্দে নিহিকে জ্বালাতে চেয়েছিলাম। এরপর কী হলো কে জানে, প্রেমে পড়ে গেলাম। নিহি আমাকে যতই ইগনোর করতে লাগল ততই আমি ভালোবেসে ফেললাম। পরে বন্ধুত্বের অফারটা নিহিই দিয়েছে। অন্তত বন্ধুত্ব করার জন্য হলেও তো নিহি আমার সঙ্গে কথা বলছে। আর তাছাড়া কোথায় যেন পড়েছিলাম, একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কখনোই নাকি বন্ধু হতে পারে না।দুজনের একজন কেউ না কেউ কারো প্রেমে পড়বেই।”
“সেখানে তুই আগে থেকেই প্রেমে পড়ে ফেঁসে আছিস। নিহির তোর প্রেমে পড়ার কোনো চান্স নাই। তুই দেবদাস হয়ে থাক।”

অনল সাকিবের পিঠে ঘুষি দিয়ে বলে,
“শালা! তুই আমার মন ভেঙে দেস।”
সাকিব ব্যথায় ‘আহ’ শব্দ করে বলে,
“তোর কবির কথার ব্যাখা তো এটাই দাঁড়ায়।”
“হইছে। তোর আর ব্যাখা করা লাগবে না। ক্লাসে চল।”
.
.
চার তলার বারান্দায় নিহিকে উঁকিঝুঁকি দিতে দেখে উপমা ক্লাস থেকে বের হয়ে আসে। পেছন থেকে নিহির গলা জড়িয়ে ধরে বলে,
“লুকিয়ে লুকিয়ে কাকে দেখা হচ্ছে সুন্দরী?”
নিহি চমকে তাকায়। উপমার হাতে আস্তে করে থাপ্পড় দিয়ে বলে,
“ভয় পেয়ে গেছি কুত্তি!”
“হুহ! এখন বল কাকে দেখছিস?”
“বলব না।”
“না বললেও আমি জানি।”
“তাই? বল শুনি।”
“অনল ভাইয়াকে দেখিস। তাই না?”
নিহি মুচকি হেসে বলে,
“হুম।”
“আচ্ছা আমায় একটা কথা বল তো।”
“কী কথা?”
“তুই অনল ভাইয়াকে ভালোবাসিস না?”
“জানি না আমি। তবে, সারাক্ষণ কেন জানি ওর কথাই মাথায় ঘুরপাক খায়। ওর সঙ্গে কথা বলতে, সময় কাটাতে ভালো লাগে।”
“ফাঁইসা তো গেছ সুন্দরী।”
“ধুর!”
“ধুর কী? তুই নিজেও অনল ভাইয়াকে ভালোবাসিস। বলে দিচ্ছিস না কেন? আর কত ঘুরাবি বেচারাকে?”
“কীভাবে বলব? মেয়ে হয়ে নিজে থেকে বলা যায়?”
“ইশ, ঢং! তুই তো নিজেই বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিস।”
“তো কী? এখন আবার প্রপোজ করতে পারে না?”
“তুই পারোস না?”
“আমি?”
“হ, তুই। যুগ আপডেট হইছে বান্ধবী। এখন মেয়েরাও প্রপোজ করে। তাছাড়া ভালোবাসলে ভালোবাসার কথা জানাতে আপত্তি কোথায়?”
“পারব না রে। দেখি না কী হয়!”
“আমিই তাহলে তাকে বলব তোকে প্রপোজ করতে।”
“ঐ না। সব যেভাবে চলছে, চলুক।”
“তাই হোক! ক্লাসে চল।”
.
বৃষ্টি হওয়ার কারণে মাঠ পুরো কর্দমাক্ত। বৃষ্টি অবশ্য এখন নেই। কাঁদার মধ্যে হেঁটে হেঁটে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে এসেছে কোথাও অনল নেই। যাওয়ার আগে একবার বলে গেলে কী হয়? না, তা বলবে না।এমনিতে খুব ভালোবাসা দেখায়!
“আমায় খুঁজছ?”
নিহি পিছে তাকিয়ে চমকে যায়। অনলের ঠোঁটে মুচকি হাসি। উপমা তাড়া দেখিয়ে বলে,
“নিহি, আমার না একটু তাড়াতাড়ি বাড়িতে যেতে হবে। তুই অনল ভাইয়ের সঙ্গে আসিস কেমন?”
নিহিকে কিছু বলতে না দিয়ে অনলের উদ্দেশ্যে বলে,
“ভাইয়া আমার বান্ধবীকে একা ছাড়বেন না কিন্তু।”
অনল হেসে বলে,
“আমি থাকতে একা ছাড়ার প্রশ্নই আসে না। এখন দোকা আছি, বিয়ে হলে ত্রিপল হয়ে যাব।”

নিহির কান গরম হয়ে যায় লজ্জায়। লোকটার মুখে কিচ্ছু আটকায় না। লজ্জার জন্য রাগও দেখাতে পারছে না। উপমা হেসে চলে যায়। অনল হেসে নিহিকে বলে,
“যাবে নাকি দাঁড়িয়ে থাকবে?”
“যাব।”
“চলো।”
দুজনে হাঁটছে চুপচাপ। গেটের বাইরে গিয়ে বাইক স্টার্ট দিয়ে বলে,
“উঠো।”
নিহির সোজাসাপ্টা উত্তর,
“বাইকে যাব না।”
“কেন?”
“এমনি।”
“হেঁটে যাবে?”
“উঁহু। রিক্সায় যাব।”
“আচ্ছা।” বলে বাইক থেকে নেমে সাকিবকে ফোন করে। সাকিব আসার পর বাইকের চাবি দিয়ে বলে বাইক নিয়ে অনলের বাসায় যেতে। তারপর একটা রিক্সা ডেকে দুজনে উঠে পড়ে। রিক্সার দু’প্রান্তে দুজনে বসেছে। মাঝখানে ফাঁকা। নিহি একটু পরপরই কিনারে চাপছে। অনল সেটা খেয়াল করে বলে,
“এত চাপাচাপি না করে রিক্সা থেকে নেমে হেঁটেই যাও।”
নিহি অবাক হয়ে বলে,
“সত্যিই?”
“আরে বাবা, এত কিনারে গেলে তো পড়ে যাবে।”
তারপর নিহির ব্যাগটা নিয়ে মাঝখানে রেখে বলে,
“এবার ঠিকাছে?”
নিহি মৃদু হাসে। সঙ্গে হাসে অনলও।

রিক্সা চলছে পিচ ঢালা পথ দিয়ে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে রাস্তা এখন পরিষ্কার। কিন্তু কাঁচা রাস্তার অবস্থা আবার বেহাল। একেক জায়গায় ভাঙাচূড়া আর কাঁদা-পানিতে পরিপূর্ণ। পাকা রাস্তা ছেড়ে রিক্সা যখন কাঁচা রাস্তায় যায় তখন অনল রিক্সাওয়ালাকে বলে,
“মামা আস্তে চালাইয়েন। আর সাবধানে যাইয়েন।”
নিহি চুপ করে বসে আছে। অনল নিহিকে বলে,
“রিক্সা ধরে বসো। পড়ে গেলে আর চেনা যাবে না কিন্তু।”
নিহি ভেংচি কেটে মৃদু হাসে। নিহি শক্ত করে রিক্সা ধরেও ভয় পাচ্ছে। অনল নিহির সামনে দিয়ে বাম হাত নিয়ে নিহির রিক্সার সাইডে হাত রাখে, যাতে ঝুঁকে পড়ে যেতে না পারে। নিহি মুচকি মুচকি হাসছে। অনল খেয়াল করে বলে,
“হাসছ কেন?”
“ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।”
“কেন, কী হয়েছিল?”
“আগে যখন আমি ছোট ছিলাম তখন ভাইয়ার সাথে রিক্সায় করে কোথাও গেলে, ভাইয়াও এভাবে আমার সামনে হাত দিয়ে রাখত। যাতে আমি পড়ে না যাই।”
“হেয়, তোমার ভাই এভাবে তোমায় আগলে রাখত বলে তার মানে এটা দাঁড়ায় না আমি তোমার ভাই হই।”
“ভাই-ই তো?”
“রাগ উঠাবা না। ধাক্কা মেরে ফেলে দেবো।”
“তাই? ফেলে দেন দেখি।”
“জানোই পারব না। তাই বলতেছ।”
“ভাইয়া কি রাগ করেছেন?”
“চুপ করো।”

নিহি মুখ টিপে টিপে হাসছে। আর অনল রাগে ফুঁসছে। নিহিকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে অনলও চলে যায়। ভাই বলেছে বলে অনলের অভিমান হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। অনল অভিমান করলে বাচ্চাদের মতো লাগে। বাড়িতে গিয়ে একা একা অনলের কথা ভাবে নিহি। ঠোঁটে ফুঁটে ওঠে মিষ্টি হাসি। বালিশ কোলে নিয়ে নিহি উপমাকে ফোন করে। ফোন রিসিভ করার পর নিহি বলে,
“কী করছিস?”
“শুয়ে আছি। হঠাৎ ফোন দিলি যে?”
“আমার ফোন দিতে বারণ নাকি?”
“জি না ম্যাম। কারণ জানতে চেয়েছি শুধু।”
“একটা কথা ভাবছি।”
“কী কথা?”
“আমার মনে হয়, আমিও অনলকে ভালোবাসি।”
“সেটা তো আমি জানিই।”
“আরো একটা কথা ভাবছি।”
“বলে ফেল।”
“অনলকে জানিয়ে দেবো ভালোবাসার কথা।”
উপমা উত্তেজিত হয়ে বলে,
“সত্যিই?”
“হ্যাঁ। কিন্তু আব্বুর কথা মনে হলে আবার পিছিয়ে আসতে মনে চায়।”
“আরে ধুর! আমি বলি শোন, তুই ভালোবাসার কথা জানিয়ে দে। তারপর বলবি যে সম্পর্কের কথা কাউকে যেন না জানায়। ভাইয়ার স্টাডি কমপ্লিট হলে যখন জব করবে তখন তোর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবে। ভাইয়া তো আর কোনোদিক দিয়ে কম নয়। তাছাড়া কলেজের ম্যামের ছেলে। তার কাছে আবার তুই প্রাইভেটও পড়িস। তাই অনল ভাইয়াকে রিজেক্ট করার সম্ভাবনা একদম নেই। আর এমনিতেও, অনল ভাইয়া কিন্তু শুধু আমারই ক্রাশ নয়। কলেজে আরো অনেক মেয়ের ক্রাশ। কখন কোন মেয়ে কেড়ে নিয়ে চলে যাবে! পরে কিন্তু পস্তাবি। কথায় আছে, ‘সময় গেলে, হয় না সাধন।’ তাই সময় থাকতেই সাধন করে ফেল।”
“বলছিস? সবকিছুই এত ইজিলি হবে?”
“আলবৎ হবে। হতেই হবে।”
“তাহলে বলেই দেবো?”
“অবশ্যই। আর আজই।”
“আজই?”
“হু, আজই। প্রাইভেটে গিয়ে। কীভাবে বলবি আমি সেটা জানি না। তবে আজ মানে আজই।”
“আচ্ছা দেখছি।”
“আজ তাহলে তাড়াতাড়ি আসিস প্রাইভেটে।”
“ঠিকাছে। এখন তাহলে রাখছি।”
“রাখ।”

ফোন কেটে দিয়ে নিহি ভাবছে কীভাবে জানানো যায় অনলকে ভালোবাসার কথা? রুমের এই মাথা থেকে ঐ মাথা পর্যন্ত পায়চারী করেও কোনো বুদ্ধি মাথায় আসছে না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবে, ‘সামনে গিয়ে সরাসরি বলব, শোনো আমিও তোমাকে ভালোবাসি। না, না তুমি না! আমি তো আপনি বলি। তাহলে বলব, আমি আপনাকে ভালোবাসি। ইয়াহ্, ছিঃ! কী লজ্জাজনক। আচ্ছা যদি এভাবে বলিও? তখন অনল কী করবে? হাসবে? সে তো দুষ্টু দুষ্টু হেসে শুধু লজ্জা দিতে পারে। লজ্জায় মাটিতে মিশে যাব আমি। চোখের দিকে তাকাতেও পারব না। আচ্ছা ভালোবাসি বলেই যদি একটা দৌড় দেই? না, তাও পারব না। আ’ম ড্যাম শিওর, দৌঁড় দেওয়ার শক্তিও তখন আমার থাকবে না। আচ্ছা ফোনে বলব? বলতে পারব কী? বুক কেমন ধুকপুক করে তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে। কথা তো মুখেই আসে না। ম্যাসেজ করব? ধুর, না! তাহলে চিঠি? উম! চিঠিই লিখি বরং।’

নিহি দ্রুত কাগজ আর কলম নিয়ে লিখতে বসে। কিন্তু লিখতে গিয়ে কলম চলছে না। চলবে কী করে? কী দিয়ে লেখা শুরু করবে সেটাই তো মাথায় আসছে না। ‘প্রিয় অনল দিয়ে শুরু করব? আচ্ছা করলাম না হয়। কিন্তু তারপর? তারপর কী লিখব? আমিও আপনাকে ভালোবাসি। তাহলে কী দাঁড়ায় লেখাটা? প্রিয় অনল, আমি আপনাকে ভালোবাসি! ধ্যাত! এইটা কোনো চিঠি হলো? আচ্ছা শুধু ভালোবাসি লিখব? উফ! না। চিঠির কোনো মাথামুণ্ডুই তো নেই। আরে, এ-কী! আমার হাতও তো চলছে না। কাঁপছে কেন? ধুর, লিখবই না চিঠি।’ চুলের ভেতর হাত ঢুকিয়ে মাথা কাৎ করে জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকে। দাঁত দিয়ে কলম কামড়ে ধরে ভাবতে থাকে, কীভাবে জানানো যায় ভালোবাসার কথা। মাথা একদম ফাঁকা হয়ে আছে। ডান হাতে কলম নাড়াতে নাড়াতে বিড়বিড় করে বলে,’কীভাবে বলব আমি তাকে ভালোবাসি?’

চলবে…
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ।]