ইষ্ক ইবাদাত পর্ব-১৩+১৪

0
7129

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৩

মুম্বাই লর্ড রেজেন্সি । তোড়া ও রেয়ান্স কে একসাথে বাড়িতে ঢুকতে দেখে বাড়ির সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। আজকের দিনে ওদের কে বেরোতে দেখে তাসনীম দেওয়ান ও রেয়ান্স এর দাদু চিন্তায় ছিলেন যতক্ষণ না ফিরে আসে। তোড়া রেয়ান্স কে একসাথে ফিরতে দেখে লেখা মিটিমিটি হাসতে থাকে দূরে দাঁড়িয়ে। কারণ তোড়া যখন ফোন করে ওকে গাড়ি পাঠানোর জন্য তখনই লেখা রেয়ান্স কে ফোন করে তোড়া কে নিয়ে আসতে বলে। আর এখন ওদের একসাথে আসতে দেখে ওর যেমন আনন্দ হচ্ছে তেমন মজা ও লাগছে। লেখা ঠিকই লক্ষ করেছে তার দিদিয়ার লুক কেমন একটা চেঞ্জ লাগছে। কেমন একটা ভাবে রেয়ান্স কে দেখতে আছে মাঝে মাঝে আর এটা দেখেই তার মজা লাগছে।

-“আদর তুই ঠিক আছিস মা। তাসনীম কাছে এসে বলে ওঠে।

-” ইয়াহ মম আম ফাইন। তোড়া বলে ওঠে।

-“ব্রো এত লেট হলো তোমাদের কি ব্যাপার? লেখা রেয়ান্স এর দিকে এক চোখ মেরে বলে ওঠে।

-” হাওয়া খাচ্ছিলাম তো তাই। রেয়ান্স দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।

এদিকে রেয়ান্স এর কথা শুনে সব মুখ টিপে হাসতে থাকে আর তোড়া ভ্রু কুঁচকে তাকায় রেয়ান্স দিকে বুঝতে পারে এই লোকটা ও কোনও কম নয়।

-“ঠিক আছে যাও ফ্রেশ হয়ে এসো। তাসনীম দেওয়ান গম্ভীর হয়ে বলে ওঠে।

তোড়া কোনো কথা না বলে একবার রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। আর রেয়ান্স ও তোড়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের মাথায় হাত বুলিয়ে নিজের রুমের দিকে যেতে নেয় কিন্তু লেখা যেতে দেয় না।

-” কি হলো লেখা আমাকে যেতে দে। রেয়ান্স বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।

-” এখন তোমার রুমে যেতে পারবে না ব্রো। লেখা মুচকি হেসে বলে ওঠে।

-“কেন শুনি। কোন আনন্দে যেতে পারবো না। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” আনন্দ নাকি দুঃখ সেটা তো পরে বুঝতে পারবে তবে এখন তুমি যেতে পারবে না। তোমার ড্রেস আমি নিচের রুমে রেখেছি ওখানে চলে যাও। লেখা বলে রেয়ান্স কে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়।

————-

এই মুহূর্তে লেখা রেয়ান্স ও তোড়া নিয়ে তাদের রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যেনো তারা রাস্তা চেনে না হারিয়ে যাবে। রেয়ান্স মহা বিরক্ত হয়ে আছে। কিন্তু কোনো উপায় নেই কোনো কথা শুনবে না এই লেখাটা তাই চুপ করে আছে। তোড়ার ও একই অবস্থা। রুমের সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায়। তোড়া কে রেয়ান্স এর পাশে এনে দাঁড় করিয়ে দেয় লেখা।

-“আজ থেকে এটা আপনাদের রুম। আর আমার তরফ থেকে আপনাদের দুজনের জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইলো ফার্স্ট নাইট এর জন্য। লেখা কথা টা বলে ভো দৌড় দেয়।।

ওখানে এখন ও হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তোড়া লেখার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে। ওদিকে থেকে চোখ সরিয়ে পাশে তাকাতেই দেখে রেয়ান্স তার দিকে তাকিয়ে আছে। তোড়া কে তাকাতেই দেখেই ইশারা করে। তারা দুজনেই একসাথে রুমে ঢোকে। আর তার সাথে দুজনের মুখ হা হয়ে যায়। দুজন সামনের দিকে এক পলক তাকিয়ে নিয়ে একে অপরের দিকে তাকায়।

পুরো রুম ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। চারিদিকে ক্যান্ডেল এর আলোয় আলোকিত হয়ে আছে। বিছানায় টা পুরো ফুল দিয়ে ভরা। রুমের এই অবস্থা দেখে দুজন পুরো জমে গেছে। এটা দেখে রেয়ান্স এর মনে একটা মিষ্টি অনুভূতি হলেও তোড়া পুরো স্থির হয়ে আছে সে কি বলবে বা কি করবে বুঝতে পারছে না। রেয়ান্স তোড়ার দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারে তোড়ার মনে এখন কি চলছে।

-” দেখো আমি জানি সব কিছু একটু তাড়াতাড়ি হয়ে গেছে আর এখন এই সব কিছু ও তোমার পক্ষে মেনে নিতে কষ্ট হবে সেটা ও আমি জানি। আর আমি এই সবের ব্যাপার কিছুই জানতাম তাই। রেয়ান্স মৃদু আওয়াজে বলে ওঠে তোড়ার দিকে তাকিয়ে ।

-” আমি জানি তোমার সময় লাগবে আর এটা নিয়ে কোনো তাড়াহুড়ো নেই। তাই নিশ্চিত থাকতে পারো। আমরা এটা নিয়ে পরেও ভাবতে পারি। আমি চাইনা আমাদের সম্পর্ক এই ভাবে শুরু হোক। বিয়েটা যে ভাবেই হোক না কেনো আমি আমাদের এক হওয়া সারা জীবনের পথ চলার রাস্তা এই ভাবে শুরু করতে চাইনা। আমি চাই এইসব আমাদের নিজের অনুভুতি ও ভালোবাসা দিয়ে একে অপরের মাঝে হারিয়ে যেতে। নাকি এইরকম আকস্মিক ভাবে শুরু করতে কেমন। রেয়ান্স বলে ওঠে।

তোড়া রেয়ান্স এর কথা শুনে আসতে আসতে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তার এতক্ষণ এর আটকে থাকা দম যেনো এবার ঠিক হয়ে আসে। সে এবার রেয়ান্স এর দিকে চোখ তুলে তাকায়। রেয়ান্স এর কথা গুলো যেনো আজ তার মন ছুয়ে দিচ্ছে আজকের তাকে বলা রেয়ান্স এর প্রতি টা কথা যেনো তার হৃদয় ঘরে জায়গা করে নিচ্ছে। সে রেয়ান্স এর মুখের দিকে তাকায়। রুমে এর মধ্যে ক্যান্ডেল এর আলোয় রেয়ান্স এর মুখে পড়াতে তাকে আরো বেশি আকর্ষণীয় লাগছে। তোড়া মোহনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রেয়ান্স এর দিকে। রেয়ান্স তাকিয়ে দেখে তোড়া তার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা দেখেই যেনো রেয়ান্স এর মুখে হাসি ফুটে ওঠে।

-“রাত হয়ে গেছে শুয়ে পড়ো। বাই দ্য ওয়ে আমার সাথে বেড শেয়ার করতে তোমার কি কোনো অসুবিধা হবে? রেয়ান্স বলে ওঠে।

রেয়ান্স এর কথা শুনে ঘোর কাটে তোড়ার। সে এতক্ষণ রেয়ান্স কে দেখছিল এটা ভাবতেই চোখ নামিয়ে নেয়। আর তারপরেই রেয়ান্স এর জিজ্ঞেস করা শুনতেই আবার ও যেনো তার বুকের মধ্যে ধুক করে ওঠে।

-” না না কোনো অসুবিধা নেই। তোড়া হড়বড়িয়ে বলে ওঠে।

-” ওকে । বলে মুচকি হেসে বিছানায় এক সাইটে গিয়ে শুয়ে পড়ে রেয়ান্স।

তোড়া কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখে পুরো রুম এর দিকে তার বিছানায় থাকা রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে দেখে এক সাইট হয়ে শুয়ে আছে। তোড়া কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর সেও গুটি গুটি পায়ে গিয়ে এক সাইট হয়ে শুয়ে পড়ে। একবার পাশ ফিরে পাশে তাকায় দেখে রেয়ান্স সোজা হয়ে শুয়ে চোখের ওপর দিয়ে হাত রেখেছে। কিছুক্ষণ দেখার পর তোড়া নিজেও ঠিক হয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকতে থাকতেই ঘুমিয়ে পড়ে যেহেতু এখনও তোড়া কে মেডিসিন নিতে হয় আর তার সাথে ঘুমের ওষুধ নেয় ঘুমের না হওয়ার জন্য আর সেই জন্য তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যায়।

তোড়া ঘুমিয়ে যেতেই রেয়ান্স চোখের ওপরে থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে পাশের দিকে ঘুরে দেখে তোড়া তার দিকে ফিরে ঘুমিয়ে গেছে। মুখের ওপর কয়েক গুচ্ছ চুল এসে পড়েছে। রেয়ান্স তোড়ার দিকে সরে এসে তোড়ার মুখের দিকে তাকায়। হাত এগিয়ে নিয়ে তোড়ার মুখের ওপর থেকে চুল সরিয়ে কানের পাশে দেয়। রেয়ান্স তোড়ার মাথার সাথে তার মাথা ঠেকিয়ে দেয়। তোড়ার ও ঠোঁট ফুলিয়ে রাখা দেখে রেয়ান্স এর হাসি পেয়ে যায় আর তার সাথে আরো বেশি করে আকর্ষণ হতে থাকে। আলতো হাতে রেয়ান্স তোড়ার ঠোঁটে হাত স্লাইড করতে থাকে। তোড়া হালকা কেঁপে উঠলেও আবারো ঘুমিয়ে যায়। তোড়ার এমন করাতে রেয়ান্স হেসে ওঠে মুখ এগিয়ে তোড়ার ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যায়। ঠোঁটের সাথে ঠোঁট ছুয়ে দিতে গিয়েও ফিরে আসে। না সে চায় না এই ভাবে তোড়ার এই মিষ্টি ঠোঁটের স্পর্শ নিতে চায়না। তাই রেয়ান্স তোড়ার থেকে একটু দূরে সরে তোড়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সে বুঝতে পারছে আজকে আর ঘুম তার চোখে ধরা দিচ্ছে না। এই ঘুম কুমারী তার চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে তাকে তার নেশায় আবদ্ধ করে নিজেই ঘুমিয়ে গেছে।

মাঝ রাতের দিকে রেয়ান্স হঠাৎ করেই খেয়াল করে তোড়া কেমন একটা করছে। এতক্ষণ সে চুপচাপ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল তোড়ার দিকে কিন্তু হঠাৎ করে তোড়ার এমন করাতে ঘোর কেটে যায়। তোড়া হাত পা ছোড়াছুড়ি করছে। আর মুখ দিয়ে কেমন একটা আওয়াজ করছে। তোড়ার এমন করাতে রেয়ান্স হঠাৎ করেই ভয় পেয়ে উঠে বসে তোড়া কে ধরতে যাওয়ার আগেই তোড়া চিৎকার করে উঠে বসে দর দর করে ঘামতে থাকে। রেয়ান্স সরে এসে তোড়া কে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে নেয় রেয়ান্স তোড়া কে। রেয়ান্স অনুভব করে তোড়ার শরীর প্রচণ্ড জোরে কাঁপছে। রেয়ান্স তোড়া কে আরো শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

-“তোড়া সব ঠিক আছে দেখো ভয় পেয়েও না আমি আছি তো তোমার সাথে। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে ওঠে।

-” বাজে স্বপ্ন দেখেছ। এখন শান্ত হয়ে যাও দেখি। আমি সব সময়ে সারা জীবন এর জন্য তোমার সাথে আছি থাকবো তোমাকে সব বিপদ থেকে আগলে রাখব কোনো বিপদ তোমাকে ছুতে দেবো না। রেয়ান্স তোড়া কে তার বুকের মাঝে নিয়ে বলে ওঠে।

তোড়া রেয়ান্স এর কথা শুনে এবার দু হাত দিয়ে শক্ত করে রেয়ান্স কে জড়িয়ে নেয়। এখনও তোড়ার শরীর কাঁপছে। তোড়ার জড়িয়ে ধরতে রেয়ান্স ও আরও ভালো ভাবে জড়িয়ে নেয়। এই প্রথম স্পর্শ ছিল তাদের একে অপরের জড়িয়ে ধরার প্রথম অনুভূতি। যদি ও পরিস্থিতি কিছুটা হলেও অন্য রকম তবু ও এটা রেয়ান্স এর কাছে অনেক দামী ইনফ্যাক্ট তাদের প্রতিটা মুহুর্ত তার কাছে অনেক অনেক বেশি দামি। রেয়ান্স এর এই ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে তোড়া আসতে আসতে শান্ত হতে থাকে। তোড়া কিছুটা শান্ত হলে রেয়ান্স তোড়া কে ওই ভাবেই বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে। আর তোড়া ও গুটি মেরে রেয়ান্স এর বুকের মাঝে থেকে যায়। তার চোখের সামনে এখনও ভেসে আসছে সেই রাতের স্মৃতি বিল্ডিং থেকে নিচে পড়ার দৃশ্য যেনো তাকে পিছু ছাড়ে না চোখ বন্ধ করলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আর তার জন্য ঘুমের ওষুধ ব্যবহার করে। কিন্তু তারপরে ও ঘুমের মাঝে অস্বস্তি পিছু ছাড়ে না। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে আর তোড়া রেয়ান্স কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। রেয়ান্স এই উষ্ণ ভালোবাসার স্পর্শ পেয়ে তোড়া আসতে আসতে ঘুমিয়ে পড়ে। রেয়ান্স মাথা উঁচু করে দেখে তোড়া ঘুমিয়ে গেছে এটা দেখেই মাথায় একটা গভীর চুমু দেয়।

-” আমি জানি ওই কালো স্মৃতি তোমার পিছু ছাড়ছে না। কিন্তু আমি তোমার জীবন সব খারাপ দূর করে দেবো তোমাকে সব সময়ে আমার ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে রাখব যাতে তোমার গায়ে এক চুল পরিমাণ আঁচ না লাগে। রেয়ান্স বলে ওঠে।

সকালে ঘুম ভেঙ্গে যেতেই তোড়া অনুভব করে তার কানের কাছে খুব জোরে ধুকধুক আওয়াজ হচ্ছে কিন্তু এটা কোথায় থেকে আসছে বুঝতে পারছে না তাই পিট পিট করে চোখ খুলে দেখে সে রেয়ান্স বুকের ওপর মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আর তার বাহু বন্ধনে আটকে আছে। তোড়া হঠাৎ এমন দেখে হকচকিয়ে যায়। সে বুঝতে পারে না সে রেয়ান্স এর বুকের মাঝে এলো কি করে। তার পরেই আসতে আসতে মনে পড়ে কাল রাতের কথা। রেয়ান্স জেগে ছিল তাই তোড়ার নাড়াচাড়া দেখে বোঝে ঘুম ভেঙ্গে গেছে। তোড়া রাতের কথা ভেবে মাথা উঁচু করে দেখে রেয়ান্স তার দিকে তাকিয়ে আছে। তোড়া তাকাতে রেয়ান্স তোড়া কে ওই ভাবে জড়িয়ে নিয়েই উঠে বসে। তারপর তোড়ার কপালে গভীর এক উষ্ণ স্পর্শ দিয়ে দেয়।

-“উঠে রেডি হয়ে নাও অফিসে যাবে তো নাকি? রেয়ান্স বলে ওঠে।

তোড়া কোনো কথা না মাথায় নাড়া দেয়। রেয়ান্স ও কোনও কথা না বলে মুচকি হেসে তোড়া কে ছেড়ে উঠে যায়। এদিকে তোড়া কিছুক্ষণ বসে থেকে কালকে থেকে হওয়া রেয়ান্স এর সাথে তার সমস্ত কথোপকথন এর কথা ভাবতে থাকে তারপরেই আনমনে হেসে ওঠে ওয়াশরুমে চলে যায় ফ্রেশ হয়ে রেডি হতে কারণ তাকে অফিসে যেতে হবে তার খেলা যে সবে শুরু হয়েছে। এখনও অনেক কিছু বাকি। তবে তার আগে তাকে কিছু ব্যাপার জানতে হবে।

————–

স্টার গ্রুপ এর সামনে গাড়ির ভিতরে বসে আছে তোড়া রেয়ান্স। রেয়ান্স তোড়া কে নামিয়ে দিয়ে তার অফিসে যাবে। তোড়া রেয়ান্স এর দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে নামতে গেলে রেয়ান্স তার হাত ধরে আটকে নেয়। রেয়ান্স তোড়া কে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে তোড়ার মাথায় ভালোবাসার স্পর্শ দেয়। তোড়া কোনো কথা না বলে চোখ বন্ধ করে নেয়। সে রেয়ান্স প্রত্যেকটা স্পর্শ ফিল করতে চায় তার অনুভূতি গুলো ও নিজের করতে চায়।

-“সাবধানে থাকবে। নিজের খেয়াল রাখবে। আর কিছু হলেই আমাকে ফোন করতে ভুলবে না। এটা জানবে আমি সব সময় তোমার পাশে আছি কেমন? রেয়ান্স বলে ওঠে।

তোড়া কোনো কথা না বলে মাথা নাড়া দেয়। রেয়ান্স ও মুচকি হেসে তোড়া কে যাওয়ার জন্য ইশারা করে। তোড়া নেমে বিল্ডিং এর ভিতরে এন্টার করার সময়ে একবার পিছনে তাকাতেই দেখে রেয়ান্স গাড়ি স্টার্ট করে বেরিয়ে যাচ্ছে। তোড়া নিজের কপালে হাত দিয়ে রেয়ান্স স্পর্শ অনুভব করে তার সাথে তার হার্ট জোরে ছুটতে থাকে তার মুখেও একটা হাসি ফুটে ওঠে।

তোড়া বিল্ডিং এর ভিতরে যেতেই সবাই তাকে দেখে হাই হ্যালো করছে যেহেতু সে এখনও মুম্বাই নিউ কমার হিসাবে টপ হিসাবে আছে। তোড়া অভি এর কেবিনে যেতেই দেখে সেখানে তানিয়া ও আছে। অভি তোড়া কে দেখতে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। তোড়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

-” মিস তোড়া ওয়েলকাম আজ থেকে আপনি এই গ্রুপে অফিসিয়ালি মডেল হিসাবে প্রথম কাজ করতে চলেছেন। অভি হেসে বলে ওঠে।

-” থ্যাঙ্কস ।তোড়া বলে ওঠে।

-“মিস তোড়া আপনি গিয়ে আপনার কেবিনে গিয়ে বসুন আপনার ম্যানেজার আপনার সব কাজ হ্যান্ডেল করবে। তানিয়া বলে ওঠে।

তোড়া কোনো কথা না বলে বাঁকা হাসে। তানিয়া একবার তোড়ার দিকে তাকিয়ে বাইরে থেকে একজন স্টাফ কে ডেকে তোড়ার কেবিনে নিয়ে যেতে বলে। তোড়া কোনো কথা না বলে এক পলক অভি এর দিকে তাকিয়ে চলে যায়।

তোড়া নিজের কেবিনে এসে চারিদিকে একবার তাকিয়ে দেখে নেয়। তারপরেও গিয়ে চেয়ারে বসে পড়ে। কোনো কাজ না পেয়ে নিজের ফোন বের করে রেয়ান্স এর ডিটেইলস চেক করতে থাকে। একের পর এক ডিটেইলস দেখতেই তার চোখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তার চোখে মুখে এক আলাদা খুশি যেনো দেখা যায়।

এদিকে তোড়ার কেবিনের দরজায় হাত রেখে তোড়া কে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষক করতে থাকে। তোড়া কে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে তার সাথে সাথে চোখের কোনা ভিজে ওঠে। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ যেনো উচ্চারণ করতে পারছে না মুখের মধ্যে আটকে আসছে। কাঁপা কাঁপা হাতে দরজা ঠেলে ভিতরে ঢোকে অস্পষ্ট ভাবে ডেকে ওঠে।

-“তাথই……..
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…..

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৪

তোড়া কারোর মুখে নিজের নাম শুনে ফোনের স্ক্রিন থেকে চোখ তুলে সামনের দিকে তাকায়। যদি ও এখন এই নাম তার জন্য কোনও মাইনে রাখে না সে এই নাম ভুলতে চায়। আর তাছাড়া তার সার্জারি করানোর পর তাথই এর চেহারা পাল্টে গেছে যদি ও মুখ সিমিলার রয়েছে শুধু মুখের কিছু পাল্টে গেছে যারা তাথই কে খুব গভীর ভাবে চেনে একমাত্র তারাই ধরতে পারবে যে এটা তাথই কিনা।

তোড়া সামনে তাকাতেই দেখে চোখ ভর্তি পানি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে একটা তার বয়সি মেয়ে হালকা পাতলা গড়নের চেহারা। ওকে দেখতেই তোড়া মুখে একটা হাসি দেখা যায়।

-“রাই.. মৃদু ভাবে বলে ওঠে তোড়া।

তোড়া বুঝতে পারিনি যে তাকে এক পলক দেখায় কেউ তাকে চিনে যাবে। হ্যাঁ এটা যদি অন্য কেউ হতো তাহলে তানিয়াদের মত কনফিউজড থাকতো তাকে কিন্তু যেই মেয়েটা এখন সামনে দাঁড়িয়ে আছে সেতো তার আত্মার মত তার বেস্টি। ছোটো থেকে এক সাথে বড় হয়েছে তার সব দুঃখ কষ্টের একমাত্র সাথী এই রাই। তাকে সব সময়ে সব কিছুর থেকে আগলে রাখত যাতে ভেঙে না পড়ে তাই সাপোর্ট হয়ে সব সময়ে পাশে থাকতো। আর এখন তাকে দেখে মেয়েটা কেঁদে ফেলেছে তোড়া বুঝতে পারছে তার এখন কার ফিলিংস টা ।

তোড়া চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে রাই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে তোড়া কে। তোড়া কোনো কথা না বলে চুপ করে আছে। তার ভিতরে আনন্দ খুশির কষ্টের একটা মিক্সড ফিলিংস আসছে তার চোখেও পানি আসতে চাইছে কিন্তু আসছে না। তার চোখের সব পানি যেনো শুকিয়ে গেছে আর যেটুকু ছিল সেটা ও যেনো চোখের মধ্যে আটকে রেখেছে। রাই তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।

-“আমি জানতাম তুই আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারিস না। আমি জানতাম তুই ফিরে আসবি। রাই কাঁদতে কাঁদতে বলে ওঠে।

-” আচ্ছা এবার চুপ হয়ে যা। তোড়া ও কাঁপা কাঁপা গলায় বলে ওঠে।

-“তুই জানিস ওই খবরটা পেয়ে আমি কতটা ভেঙে পড়েছিলাম আর তোর খবর তো পুরো মুম্বাই ছেয়ে ছিল। আর তোর ওই বোন নামক বিষধর সাপ কত না সিমপ্যাথি আদায় করলো। এখন তোদের বাড়ির সব দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছে ওই মেয়েটা। রাই এক এক করে সব বলে ওঠে।

-” আমি জানি। কিন্তু তুই এটা বল তুই জানলি কি করে আমি এখানে? তোড়া বলে ওঠে।

-” আমি তো এখানে আমার মডেলের সাথে কথা বলতে এসেছিলাম কিন্তু এখানে এসে তোকে পেলাম। রাই বলে ওঠে।

-“মানে মডেল মানে কি বলতে চাইছিস? আর তাছাড়া তোর তো এই সব দেখার কাজ নয়? তোড়া বলে ওঠে।

-” আমাকে পি আর ডিপার্টমেন্ট থেকে এখন ম্যানেজার পোস্ট সিফ্ট করে দিয়েছে। তোর ওই ঘটনার পর থেকে সব কিছুর মধ্যে অনেক বদল হয়ে গেছে রাই বলে ওঠে।

-“তার মানে তুই এখানে তোর মডেলের সাথে কথা বলতে এসেছিস তাই তো। তোড়া ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

-“হ্যাঁ…. আনমনে বলেই রাই হঠাৎ বুঝতে পারে।

-“তার মানে আমি তোর সাথে দেখা করতে এসেছি মানে তুই আমার মডেল আর আমি তোর ম্যানেজার। মানে তুই তোড়া দেওয়ান । রাই অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে বলে ওঠে।

-“হ্যাঁ কেনো তুই মডেল ট্যালেন্ট হান্ট ইভেন্ট দেখিস নি। তোড়া হালকা হেসে বলে ওঠে।

-“আরে আমি আগে কেনো বুঝতে পারিনি নামটা শুনে আরে দেওয়ান তোর মম এর সারনেম তাই না। রাই বলে ওঠে।

-“ইয়েস ।এখন মম আমার সব কিছু। এখন আমি শুধু মাত্র তোড়া দেওয়ান । তোড়া বলে ওঠে।

-“বাহ শেষ মেস আমি তোকে পেয়ে গেলাম ভালোই হয়েছে আমাকে পোস্ট থেকে সিফ্ট করে দিয়ে। রাই তোড়া কে জড়িয়ে বলে ওঠে।

-“ওই পাগলি এটা অফিস তাই এখানে এত জড়াজড়ি করিস না ওদের চোখে পড়ে যেতে পারি। তোড়া রাই কে সাবধান করে বলে ওঠে।

-“ওহ হ্যাঁ স্যরি স্যরি । রাই নিজেকে সামলে বলে ওঠে।

-“বাই দ্যা ওয়ে তুই এই কোম্পানির থেকেও বেটার কোম্পানি তে জয়েন করতে পারতিস তাহলে এখানে কেনো? রাই বলে ওঠে।

-“নতুন জীবনের শুরুটা এখানে থেকে শুরু করতে চেয়েছি এটা আমার প্রতিশোধ এর প্রথম ভাগ। এই কোম্পানি আমি দাঁড় করাতে পারলে এটা আমি আবার ধুলো তে মিশিয়ে ও দিতে পারি। আর এখনও তো এই কোম্পানিতে আছে টাই বা কি পুরো বেনে জল ঢুকে পুরোটা বিষিয়ে গেছে। তাই আমার প্রতিশোধ এর শুরু টা এটা দিয়ে হবে। তাই এখানে জয়েন করা। তোড়া কঠিন ভাবে বলে ওঠে।

-“একদম ঠিক বলেছিস। ওদের সব অন্যায় এর একটা একটা করে জবাব দিতে হবে। আচ্ছা তুই কি কোনো প্ল্যান করেছিস? রাই বলে ওঠে।

-” প্ল্যান হয়ে যাবে। পরিস্থিতি বুঝে প্ল্যান হবে সব সময়ে একই প্ল্যান তো আর চলবে না। আচ্ছা শোন তোকে আগে যেটা করতে হবে এই কয়েক দিনের কোম্পানীতে যা যা হয়েছে তার সব ডিটেইলস আমার চাই। আর তার সাথে অভি ও তানিয়ার ফুল সিডিউল আমার লাগবে। তোড়া বলে ওঠে।

-” ডোন্ট ওয়ারি সব কিছু পেয়ে যাবি। রাই বলে ওঠে।

-” আর শোন আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না যে আমি তোকে আগে থেকে চিনি না আর না তুই আমাকে। আর না আমি তাথই ।আমি তোড়া ।এটা মাথায় রাখবি। ওরা যদি কোনো চাল চেলে থাকে তো ওদের চালে আমি ওদেরকে মাত দেবো। তোড়া বলে ওঠে।

ওরা দুজন কথা বলছিল তার মাঝেই তোড়ার ফোন বেজে ওঠে। তোড়া নিজের ফোন উঠিয়ে স্ক্রিন এর নামের দিকে দেখতে হয়রান হয়ে যায়। ফোনের স্ক্রিন এর ওপরে ভেসে উঠেছে একটাই নাম “রাত” এটা কেমন নাম আর এটা তো ও সেভ করেনি তাহলে। তোড়া ফোনের দিকে তাকিয়ে খানিকটা হিচখিছিয়ে ফোন রিসিভ করে কানে ধরে সাথে সাথে ফোনের ওপারে থেকে ভেসে আসে তীক্ষ্ণ নেশাময় কন্ঠ।

-” তোমার কাজ হয়ে গেছে। কোনো সমস্যা নেই তো।

ওহ তো এটা রেয়ান্স। তোড়া এবার বুঝতে পারে যে ফোনের ওপারে কে হতে পারে কিন্তু তার মাথায় এখনও এটা চলছে যে নাম্বার এভাবে কেনো সেভ করা। ওদিকে তোড়ার কোনো সাড়া না পেয়ে রেয়ান্স আবারো বলে ওঠে।

-” তোড়া । তুমি ঠিক আছো।

-” হুম…। তোড়া সংক্ষেপে উত্তর দেয়।

-“ওহ তো তোমার কাজ কি হয়ে গেছে নাকি এখনও কিছু বাকি আছে? রেয়ান্স জিজ্ঞেস করে ওঠে।

-” তেমন কিছু নেই। কেনো? তোড়া বলে ওঠে।

-“ওকে তুমি ওয়েট করো আমি তোমাকে নিতে আসছি। রেয়ান্স বলে ফোন কেটে দেয়।

তোড়া এদিকে এখনও হতভম্ব হয়ে আছে সে বুঝতে পারছে না এটা হলো টা কি। রেয়ান্স এভাবে ফোন করে রেখে দিলো আর তাছাড়া তার ব্যাপার একটু আগে নেট থেকে দেখে যা বুঝলো সে তো কাজ ছাড়া কিছু বোঝেনা তাহলে সে এখন তার অফিসে কাজ ফেলে তাকে নিতে আসছে। কেনো? আর আরো একটা কথা ভাবছে যে এখানে তার যেমন ডেসক্রিপশন দেয়া আছে আর তার সাথে যেমন ব্যবহার করেছে দুটোই আলাদা তাহলে। তোড়া এখন পুরোপুরি রেয়ান্স এর ভাবনার মধ্যে ডুবে গেছে।

-“ওই কি হলো তোর কি ভাবছিস। রাই তোড়া কে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে ওঠে।

তোড়া রাই ধাক্কা দেয়ায় তোড়া রেয়ান্স এর ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে সে এখন এটা ভাবছে যে রাই কে রেয়ান্স এর কথা বলবে কি বলবে না সে কি বলে দেবে তার আর রেয়ান্স এর বিয়ের ব্যাপারটা। কিছু ভেবেই তোড়া বলে ওঠে।

-“কিছু না। আচ্ছা আমাকে এখন বেরোতে হবে তোড়া বলে ওঠে।

-” ওহ তো চল আমি তোকে ছেড়ে আসছি। এখন তোকে পিক আপ করা ড্রপ করা আমার কাজ বুঝলি। রাই বলে ওঠে।

-“না আজকে আর তোকে আমাকে ড্রপ করতে হবে না। তুই তোর কাজে লেগে আমি চলে যাব। তোড়া বলে ওঠে।

-” ওকে ।বলেই রাই বেরিয়ে যায়।

তোড়া ও নিজের ব্যাগ আর ফোন তুলে নিয়ে কোম্পানির বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে যায়। তার মাথায় এখনও রেয়ান্স এর ব্যাপার গুলো চলছে সে এখনও ভেবে যাচ্ছে রেয়ান্স এর তার প্রতি করা ট্রিট এর ব্যাপারে। রেয়ান্স এর ব্যাপারে আজ পর্যন্ত কোনও স্ক্যান্ডেল নেই। আর না আছে কোনো মেয়ের নিয়ে কোনো কথা। সব সময়ে তার অ্যাটিটিউড সবাই কে আকর্ষন করেছে। সে ভেবে যাচ্ছে ওই রকম একটা লোক তার বর এটা ভাবতেই যেনো তোড়ার মধ্যে কেমন একটা অনুভূতি হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড টপ বিজনেসম্যান দ্য গ্রেট রেয়ান্স রাওয়াত তার বর। তোড়ার সামনে একটা গাড়ি এসে থামতে তোড়া ভাবনার জাল কেটে বেরিয়ে আসে। সামনে তাকাতেই দেখে এটা রেয়ান্স গাড়ি মানে সে চলে এসেছে তাকে নিতে। তোড়া এগিয়ে গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে বসে পড়ে।

তোড়া গাড়িতে বসে রেয়ান্স এর দিকে তাকায় ।যে তার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে গাড়ি চালাতে থাকে। তোড়া এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রেয়ান্স এর দিকে। তার চোখ এখন রেয়ান্স কে দেখতে ব্যস্ত সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে যাচ্ছে। রেয়ান্স এর ওই দুধ সাদা ফর্সা চেহারা আর তার সাথে গালে ট্রিম করা দাড়ি যেনো আরো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। আরো আকর্ষণীয় লাগছে। আর বিড়াল চোখ দুটো আরো বেশি করে আকর্ষণ করে তোড়া কে। পুরো মুখটার ওপরে চোখ বুলাতে থাকে তোড়া। বাম গালের কাছে এসে থেমে যায় তোড়ার চোখ আটকে যায় গালে থাকা তিলের ওপরে। ওই ফর্সা চেহারার ওপর কালো তিল যেনো নজর টিকার মত কাজ করছে। মুখে থাকা এই তিল এর জন্য আরো বেশি আকর্ষিত লাগছে রেয়ান্স কে তোড়ার কাছে। তোড়ার ইচ্ছা করছে রেয়ান্স এই গালে হাত দিয়ে ওই তিল টা কে ছুয়ে দেখতে।

রেয়ান্স বুঝতে পারে তোড়া তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তাকে দেখে যাচ্ছে এটা দেখেই তাই মুখে থাকা হাসিটা আরো বেশি চওড়া হয়ে যায়। তোড়ার দিকে কোনা চোখে তাকিয়ে একবার দেখে নেয়।

-“কিছু করার ইচ্ছা হচ্ছে নাকি? রেয়ান্স দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে ওঠে।

তোড়া রেয়ান্স এর কথা শুনে নিজের ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে। সোজা হয়ে বসে কোনা চোখে একবার তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তোড়া মনে মন ভাবতে থাকে এত তার হচ্ছে কি। সে কেনো রেয়ান্স এর প্রতি এত আকর্ষণ অনুভব করছে কেনো মনে হচ্ছে সে প্রতিটা মুহূর্ত একটু একটু করে রেয়ান্স দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তোড়া এগুলো কিছুই বুঝতে পারছে না যে তার সাথে কি হচ্ছে রেয়ান্স তার পাশে থাকলে তার হার্ট প্রচণ্ড গতিতে বিট করতে থাকে কিন্তু কেনো? কি এই অনুভূতির নাম। তোড়া নিজের মনে ভাবতে থাকে।

রেয়ান্স তোড়া কে নিজের চোখ বাঁচিয়ে কিছু একটা ভাবতে দেখে সে এক হাত দিয়ে তোড়ার দিকে বাড়িয়ে তার কাঁধ জড়িয়ে তার দিকে টেনে নেয়। তোড়া হঠাৎ এমন হওয়াতে খানিকটা চমকে যায় কিন্তু তার পরই নিজেকে সামলে নেয়। সে এক পলক রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে নিজের চোখ নামিয়ে নেয়।

-“তোমার কিছু হলে করতে পারো। কোনো অসুবিধা নেই। আর আমিও কিছু মনে করব না। আফটার অল আমি তোমার হাজব্যান্ড হই। তোমার সম্পূর্ণ রাইট আছে আমার ওপর তাই তোমার কিছু ইচ্ছে হলে করতে পারো আর মাঝে মাঝে এক আধটা চুমু ও খেতে পারো। রেয়ান্স বলে ওঠে।

এদিকে রেয়ান্স এর কথা শুনে তোড়ার চোখ বড় বড় হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এখুনি বেরিয়ে আসবে। তার সাথে গাল টা ও লাল হতে শুরু করেছে। রেয়ান্স এর কথা গুলো শুনে তার হার্ট এত জোরে বিট করছে মনে হচ্ছে এখুনি বেরিয়ে আসবে। রেয়ান্স তোড়ার এমন ভাব দেখে তোড়ার দিকে এগিয়ে তোড়ার গালে একটা কিস করে দেয়। সাথে সাথে তোড়ার যেনো এবার বেহুস হওয়ার পালা। রেয়ান্স তোড়ার এমন এক্সপ্রেশন দেখে দুষ্টু হাসতে থাকে।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…..

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । নিজেদের মতামত জানাবেন।