ইষ্ক ইবাদাত পর্ব-১৫+১৬+১৭

0
7814

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৫

ফ্রেবরিক রেস্টুরেন্ট এর কোনার এক টেবিলে একে অপরের সামনাসামনি বসে আছে রেয়ান্স তোড়া। রেয়ান্স তার প্রিয় তমার দিকে দেখতে থাকলেও তোড়া মাঝে মাঝে রেয়ান্স এর দিকে দেখছে তো আবার চারিদিকে দেখছে। টেবিলের ওপরে থাকা তার এক হাত এখন রেয়ান্স এর হাতের মধ্যে আবদ্ধ। তার জন্য তার মধ্যে আরো অস্বস্তি কাজ করছে। সেটা এটাও ঠিক বুঝতে পারছে না এটা আদেও অস্বস্তি কিনা।

টেবিলে খাবার সার্ভ হতে রেয়ান্স তোড়ার হাত ছেড়ে দিয়ে তোড়ার দিকে প্লেট এগিয়ে দেয়। তোড়া ও কোনও কথা না বলে খেতে শুরু করে।

-“আচ্ছা তুমি কি আনকম্ফেটবল ফিল করছো? রেয়ান্স তোড়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে খেতে খেতে।

-” হু… না না। আমি ঠিক আছি। তোড়া মৃদু আওয়াজে বলে ওঠে।

-“তাহলে খাচ্ছো না কেনো? রেয়ান্স এবার ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

-” হুম । তোড়া এক পলক রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে বলে ওঠে।

রেয়ান্স তোড়ার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে কয়েক মুহূর্ত দেখেই তোড়ার হাত ধরে উঠিয়ে কোমরে হাত রেখে নিজের পাশে বসিয়ে নেয়। আর এতেই যেনো তোড়ার সারা শরীর কাঁপতে থাকে। এমনিতে রেয়ান্স এর স্পর্শ এর তার সাথে আচমকা এমন হওয়াতে ।তোড়া বড় বড় করে তাকালে ও রেয়ান্স এর কোনো ভাবান্তর নেই সে একই ভাবে তোড়ার কোমরে নিজের হাত রেখে খাবার এর প্লেট তোড়ার দিকে এগিয়ে দিয়ে নিজে খেতে শুরু করে। আর তোড়া এখনও ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে রেয়ান্স এর মুখের দিকে।

-“আমাকে দেখার অনেক সময় পাবে। আপাততঃ এখন খাবার টা শেষ করো। উম বরং খেতে খেতে আমাকে দেখতে পারো। আফটার অল আমি পুরোটাই তোমার। রেয়ান্স খেতে খেতে বলে ওঠে।

রেয়ান্স এর কথা গুলো শুনে তোড়ার বিষম লেগে যায়। চোখ গুলো বড় বড় হয়ে যায়। রেয়ান্স তার খাওয়া থামিয়ে কোমরে থাকা হাত টেনে নিজের আরো কাছে নিয়ে আসে আর অন্য হাত দিয়ে পানির গ্লাস এগিয়ে দেয় তোড়ার দিকে।

-“আসতে আসতে। এত তাড়াতাড়ি বিষম খেলে হবে। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে ওঠে।

তোড়া একবার রেয়ান্স এর দিকে কোনা চোখে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নেয়। সে ভাবতে থাকে এই লোকটা সবার সামনে যেমন থাকে মোটেও তেমন এই লোক ভীষণ ভীষণ খারাপ কি ভাবে তাকে লজ্জা দিচ্ছে শুধু। সবার সামনে অ্যাটিটিউড নিয়ে থাকে মেয়েদের দেখলে দূরে সরে যায় যেনো মনে হয় তারা তাকে গিলে খাবে অথচ কাল থেকে তার সাথে এমন ব্যবহার করে যাচ্ছে আর এমন এমন কথা বলে যাচ্ছে যে তোড়ার কোনো কথা বলার মত অবস্থায় রাখছে না।

-“আমি জানি তুমি আমাকে দেখছিলে এটা কোনো ভুল নয় তুমি আমাকে দেখবে না তো কে দেখবে। একমাত্র আমাকে সব রকম ভাবে দেখার এক মাত্র অধিকার তোমারি আছে। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” আর তাছাড়া তুমি আমাকে এখন থেকে দেখে দেখে নিজের লজ্জা টা একটু কমিয়ে নাও নাহলে পরে আমাকে তোমার লজ্জা ভাঙতে হবে তবে সেটা আমার জন্য ভালো। আমাকে যতো দেখবে তত তোমার লজ্জা ভাঙে যাবে আর তার সাথে তুমিও সব কিছু তাড়াতাড়ি মেনে নিতে পারবে। রেয়ান্স এবার চামচে খাবার নিয়ে তোড়ার মুখের সামনে ধরে।

তোড়া এতক্ষণ রেয়ান্স এর বলা কথা শুনে যাচ্ছিলো আর চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল। রেয়ান্স তোড়া কে তার দিকে তাকাতে দেখে ইশারা করে সাথে সাথে তোড়া হা করে খাবার মুখে নিয়ে নেয়।

-“অফিসে আজ কেমন কাটলো? রেয়ান্স তোড়া কে স্বাভাবিক করার জন্য বলে ওঠে।

-” ভালো। তোড়া বলে ওঠে।

-“কোনো অসুবিধা হয়নি তো? দেখো তোমার সেফটি সব থেকে আগে আমার কাছে। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” না আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তোড়া বলে ওঠে।

-“দেখো তোড়া আমাদের এখন বিয়ে হয়ে গেছে। সেটা যে ভাবেই হোক না কেনো হয়ে গেছে। এখন পরিস্থিতি অন্য রকম তাই তুমি হয়তো মানিয়ে নিতে পারছ না। কিন্তু সম্পর্ক টা মেনে নেওয়ার আগে আমরা ভালো বন্ধু হতে পারি। আমরা যদি একে অপর কে না জানি। ভালো করে যদি কথা না বলি তাহলে কি সম্পর্ক ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এগিয়ে যাবে। তুমি সময় নিতে চেয়েছ ঠিক আছে তার জন্য একে অপরের সাথে কথা বলতে হবে জানতে হবে তারপর তো। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-“হুম ।তোড়া মাথা নেড়ে হালকা ভাবে বলে ওঠে।

-” তো তাহলে কথা না বলে শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলে কি তুমি সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে নাকি? রেয়ান্স ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

-“দেখো তোড়া তুমি যদি মনে করো তুমি এই বিয়ে করে ভুল করেছ বা এমন কিছু তাহলে তুমি আগে বলতে পারো ।নাহলে আমি যদি একবার তোমাকে নিজের করে নেই তাহলে কিন্তু তুমি আর এই বন্ধন থেকে বেরোতে পারবে না। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” রেয়ান্স আমি বিয়েটা নিজের ইচ্ছায় করেছি। আর আমি এটা থেকে বেরোতে কেনো চাইব। আমি শুধু একটু সময় চাচ্ছি। তোড়া মিন মিন করে বলে ওঠে।

-” আমার কাছে ভুল মানেই ভুল। তার কোনো ক্ষমা নেই তাই আমার কাছে থেকে কিছুই লুকিয়ে রাখবে না সেটা যেমনি হোক না কেনো। একবার যদি আমার বিশ্বাস ভাঙে তাহলে আমি কখনো মাপ করব না। রেয়ান্স তোড়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” আমি ও এটাই মানি। তোড়া বলে ওঠে।

-“আর সব সময়েই এটা মনে রাখবে তুমি আমার। মিসেস তোড়া রেয়ান্স রাওয়াত ।রেয়ান্স বলে ওঠে।

-“আচ্ছা একটা কথা বলব? তোড়া জিজ্ঞেস করে ওঠে।

রেয়ান্স তোড়ার দিকে তাকিয়ে ভ্রু দিয়ে ইশারা করে জিজ্ঞেস করে কি?

-” আচ্ছা আপনি “রাত” কেনো সেভ করেছেন? তোড়া বলে ওঠে।

-” ওয়েল এটা আমি তোমাকে বলবো না এটা তোমাকে খুঁজে বের করতে এই নামের মানে কি। রেয়ান্স একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে ওঠে।

তোড়া রেয়ান্স এর কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। রেয়ান্স তোড়ার এমন করে তাকাতে দেখতেই মুখ টিপে হাসতে থাকে কোনো কথা না বলে।

—————

মানান ম্যানসনে লিভিং রুমে বসে আছে সবাই তাদের মধ্যে এখন একটাই আলোচনা আর সেটা হলো এই নতুন মডেল তোড়া দেওয়ান কে নিয়ে। তারা এখন এটা নিয়ে ভাবছে আসলে মেয়েটা কে। তোড়ার নিউজ টা দেখার পর থেকেই এই বাড়িতে হইচই পড়ে গেছে তারা তোড়ার সাথে তাথই এর মিল খুঁজতে চেষ্টা করছে কিন্তু পেরে উঠছে না কারণ তাথই এর মুখের সাথে তোড়ার মুখের অধিকাংশ মিল থাকলেও আবার কিছু মিল নেই। তাথই এর কপালে জুড়ে কালো জরুল ছিল কিন্তু এর তোড়ার মুখে তো কোনো দাগ নেই তাথই এর মুখে থুতনির কাছে ও বড় একটা কাটা দাগ ছিল কিন্তু এর মুখেও সেটা নেই। তাই তারা এখনও ঠিক করে উঠতে পারছেন না যে এটা আসলে তোড়া কিনা। এই খবর দেখার পর থেকেই তোড়ার দাদু বিছানা থেকে উঠেছে। যখন থেকেই তাথই এর মৃত্যু হয়েছে তার পর থেকেই তোড়ার দাদু বিছানা নিয়ে ছিল কিন্তু এই খবর দেখে তিনি একটু সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তোড়ার মা বাবা ও একটু উৎসুক হয়ে আছে তোড়ার আসল পরিচয় জানতে।

সবাই এখন তানিয়া কে ঘিরে আছে কারন এখন এই খবরটা পুরো মুম্বাই ছড়িয়ে পড়েছে তোড়া স্টার গ্রুপ মডেল হিসাবে জয়েন করেছে আর তাই এই বাড়ির সবাই জানতে পেরে তানিয়ার কাছে থেকে জানতে চায় তোড়া কে।

-“দেখো তাথই মারা গেছে সেটা তোমরা সবাই জানো। আর ওটা তাথই নয় ওটা তোড়া দেওয়ান। আমাদের তাথই এর মত দেখতে হলেও আমাদের তাথই নয়। আমরা সবাই দেখেছি তাথই বিল্ডিং থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আর আমিও ভালো করে খোঁজ করে দেখেছি ওটা তোড়া দেওয়ান । তাই ওকে নিয়ে কোনো মায়া রাখতে হবে না। তানিয়া কিছুটা রুক্ষ ভাবে বলে ওঠে।

-“হ্যাঁ আংকেল আন্টি তাথই মারা গেছে। এবার আপনাদের এই সব কিছুর থেকে বেরোতে হবে। আবার আগের মত স্বাভাবিক হতে হবে আর তাছাড়া ওটা তোড়া তাথই নয়। অভি সবার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

এটা শুনেই ওখানে থাকা তোড়ার মা ও দাদুর মুখে আবারো কালো মেঘে ঢেকে যায়। তাদের মনের মধ্যে যদিও একটু আশার কিরণ জাগলেও ওদের এই কথা শুনে সব আশা নিমেষে নিভে গেছে। আর বাড়ির লোকের এই অবস্থা দেখে তানিয়ার মুখে একটা বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে আর অভির মুখে একটা অন্য রকম হাসি ফুটে ওঠে।

————–

-“তোড়া সব ডিটেইলস নিয়ে নিয়েছি। আর সিডিউল অনুযায়ী কালকে ওর ফিল্ম প্রোডাকশন এর সাথে মিটিং আছে। রাই বলে ওঠে।

-” ওকে আমাকে ওর সব ডিটেইলস পাঠিয়ে দে। তোড়া বলে ওঠে।

-“স্টার গ্রুপ কোম্পানির মধ্যে ও অনেক ঘাপলা চলছে আমি তার পুরো একটা চার্জশিট বানিয়েছি তোকে ইমেল করছি। রাই বলে ওঠে।

-“হুম । তোড়া বলে ওঠে।

-” আর হ্যাঁ তোর জন্য প্রচুর কাজের অফার এসেছে। অনেক কোম্পানী তোর সাথে কাজ করতে চাইছে। তুই একবার চেক করে নিলে ওখান থেকে বেঁচে বেঁচে তোর জন্য সিডিউল ফিক্সড করব। রাই বলে ওঠে।

-“ওকে । তোড়া বলে ওঠে।

-” আচ্ছা ঠিক আছে কাল কে সকালে আমি তোকে পিক আপ করতে আসব এড্রেস টা বল। রাই বলে ওঠে।

-“এড্রেস?..আচ্ছা শোন আমি তোকে এস এম এস করে পাঠিয়ে দিচ্ছি। তোড়া বলে ফোন রেখে দেয়।

-” ফিল্ম প্রোডাকশন হুম…. আমি ও দেখি কেমন ফিল্ম প্রোডাকশন। যতো খুশি উড়ে নে। এবার তোর মুখ থুবড়ে পড়ার সময় চলে এসেছে। তোর থেকে যদি না আমি একটা একটা কাজ আমি কেড়ে না নিয়েছি তো আমার নাম ও তোড়া নয়। তোড়া দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।

তোড়া এই সব ভাবতে ভাবতে ওয়াশরুমের দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে পিছনে ঘুরে দেখে রেয়ান্স বেরিয়ে আসছে। রেয়ান্স কে দেখতেই তার চোখ দাঁড়িয়ে গেছে। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চোখের পলক না ফেলে। ব্ল্যাক টাউজার। আর উন্মুক্ত বুক মাথা মুছতে মুছতে বের হচ্ছে। বুকের ওপরে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে। ব্ল্যাক টাউজার এর সাথে এই রকম ফর্সা উন্মুক্ত শরীর যেনো ভীষণ ভাবে আকর্ষণ করছে তোড়া কে সে কিছুতেই চোখ সরিয়ে নিতে পারছে না। রেয়ান্স শরীরের প্রত্যেক টা অ্যাবস যেনো হাতছানি দিয়ে তোড়া কে কাছে টানছে। মাথার ভেজা উষ্ক খুষ্ক চুল আর তার সাথে উন্মুক্ত বিন্দু বিন্দু পানি জমে থাকা অ্যাবস শরীর এতটা আসক্ত করে ফেলেছে তোড়া কে সে হা করে রেয়ান্স এর দিকে তাকিয়ে আছে তার শরীরে মধ্যে যেনো কেমন হাল চাল শুরু হয়ে গেছে হার্ট দ্রুত গতিতে বিট করছে। সে রেয়ান্স এমন শরীর দেখে নেশায় ডুবে যাচ্ছে।

রেয়ান্স সামনে তাকাতেই দেখে তোড়া তার দিকে ঘোর হয়ে নেশাময় দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। তোড়ার এই ভাবে তাকাতে দেখেই রেয়ান্স বুকের মধ্যে রক্ত চলকে ওঠে। তার সারা শরীরের শিরা উপশিরা দিয়ে দ্রুত থেকে দ্রুত রক্ত চলাচল বেড়ে গেছে। তোড়া কে তাকাতে দেখে সে এক মুহূর্তের জন্য নিজের নিয়ন্ত্রন থেকে হারিয়ে গেলে ও নিজেকে সামলে নেয়। তার নিজের দিকে একবার তাকিয়ে বুঝতে পারে তোড়ার এমন ফ্রিজ হয়ে থাকার কারণ। তাই রেয়ান্স বাঁকা হেসে কাবার্ড থেকে টি শার্ট বের করে পরে নেয়। রেয়ান্স তোড়ার দিকে তাকিয়ে দেখে সে এখনও ওই ভাবে তাকিয়ে আছে।

রেয়ান্স তোড়ার সামনে এসে দাঁড়িয়ে দেখে তার যেনো এখনও কোনও হুস নেই। তাই রেয়ান্স নিচু হয়ে তোড়ার দুই গালে আওয়াজ করে কিস করে। আর এর সাথে সাথে তোড়া ঘোর কেটে বেরিয়ে এসে বড় বড় করে তাকায় রেয়ান্স এর দিকে। রেয়ান্স তোড়ার এমন করতে দেখে হালকা হেসে ফেলে কোনো কথা না বলে তোড়া কে কোলে তুলে নেয়। তোড়া পড়ে যাওয়ার ভয়ে রেয়ান্স এর গলায় জড়িয়ে নেয়। রেয়ান্স তোড়ার দিকে একবার তাকিয়ে বিছানায় নিয়ে গিয়ে তোড়া কে নিজের বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে। তোড়া এখনও ওই ভাবেই আছে। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাক।

-“তোড়া তোমার ম্যানেজার কে বাড়ির এড্রেস দিয়ে দাও কেমন। রেয়ান্স তোড়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে ওঠে।

-” হুম ।তোড়া মৃদু আওয়াজে বলে ওঠে।

-“ওকে এখন ঘুমিয়ে যাও। কাল থেকে তোমার লড়াই শুরু হচ্ছে। রেয়ান্স বলে ওঠে।

তোড়া আর কোনো কথা না বলে ওই ভাবে শুয়ে থেকেই কিছুক্ষণ পর ঘুমিয়ে যায়। তোড়ার ঘুমিয়ে যেতে রেয়ান্স তোড়ার ফোন থেকে রাই কে বাড়ির এড্রেস সেন্ড করে দেয়। তারপরেই নিজের ফোন তুলে নেয়।

-” শাহীন আমার স্টার গ্রুপ এর ব্যাপারে সমস্ত ইনফরমেশন চাই কাল সকালের মধ্যে। আর তানিয়া মানান কোন মুভি করতে চলছে ও কোন প্রোডাকশন এর সাথে কাজ করবে খবর নাও। কালকের মধ্যে আমার সব ডিটেইলস চাই। বলেই রেয়ান্স ফোন রেখে দেয়।

রেয়ান্স তোড়ার ব্যাপারে সব কিছু আগে থেকেই খোঁজ রাখে আর যেখানে তোড়ার ম্যানেজার এর কথা সেটা তো আগে দেখে নেবে। তোড়ার বেস্ট ফ্রেন্ড তার ম্যানেজার আর তাছাড়া তার ব্যাপারে সমস্ত ইনফরমেশন নেওয়ার পর রেয়ান্স ভালো দেখেই বাড়ির এড্রেস দেয়ার কথা বলেছে। আর যেখানে তোড়ার কাজের কথা সেটা তো ও খোঁজ নেবে যতো তোড়া বারণ করুক না কেনো সেতো নিজের মত খোঁজ নিতেই পারে তার বউ এর ভালো জন্য এতে নিশ্চয়ই কোনো খারাপ নেই। ভেবেই রেয়ান্স তোড়ার মাথায় একটা গভীর উষ্ণ ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে তোড়া কে আরো শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে চোখ বন্ধ করে।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে….

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৬

স্টার গ্রুপ কোম্পানী তে অভি খুশ মেজাজে বসে আছে। কারণ সে তোড়ার সাথে টাইম স্পেন্ড করার জন্য সুযোগ পেয়ে গেছে। তোড়ার সমস্ত সিডিউল ফিক্সড হয়ে গেছে। যেহেতু তোড়া টপ নিউ কমার ছিল তাই এখন সব জায়গা থেকে তার কাজ করার জন্য অফার দিচ্ছে। আর তার মধ্যে থেকে স্নো ক্লাউড গ্রুপ থেকে স্পোক পার্সেন হওয়ার জন্য অফার এসেছে। আর এটা তোড়ার জন্য ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর প্রথম কাজ হবে। আর ভালো অপরচুনিটি । এখানে কন্ট্রাক্টড সাইন করার সময়ে অভি তোড়ার সাথে যাওয়ার প্ল্যানিং করছে। আর এটা ভেবেই খুশি হচ্ছে।

অভি নিজের মনের মধ্যে তোড়া কে নিয়ে খেয়ালি পোলাও পাকাচ্ছিল কি তখন ফোন বেজে ওঠে। অভি স্ক্রিনে দেখে ডাইরেক্টর মিস্টার গুপ্তা ফোন করেছেন। এটা দেখেই অভি খুশি মনে ফোন রিসিভ করে।

-“হ্যালো মিস্টার গুপ্তা আপনি চিন্তা করবেন আমরা ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবো। অভি হাসি খুশি ভাবে বলে ওঠে ।

-” মিস্টার অভি আমি আপনাকে এটা জানানোর ফোন করেছি যে মিস তানিয়া মানান কে এই মুভি থেকে রিপ্লেস করা হচ্ছে। মিস্টার গুপ্তা বলে ওঠে।

-“কিন্তু কেনো মিস্টার গুপ্তা হঠাৎ করে এমন ডিসিশন কেনো? আপনারা এটা করতে পারেন না। অভি হতভম্ব হয়ে বলে ওঠে।

-“দেখুন মিস্টার অভি যেহেতু আমরা কোনও কন্ট্রাক্টড সাইন করেনি তাই আমরা চাইলে রিপ্লেস করতেই পারি। এটা আমাদের হাতে নেই প্রোডিউশরের ওপর কোনো কথা বলতে পারিনি আফটার অল তিনিই এই মুভি তে ইনভেস্ট করছেন। মিস্টার গুপ্তা বলেন।

-” কিন্তু মিস্টার গুপ্তা আপনার সাথে আমাদের ডিল হয়েছিলো। আপনি তানিয়া কে এই ফিল্মে লিড ক্যারেক্টার হিসাবে নেবেন। অভি হড়বড়িয়ে বলে ওঠে।

-” দেখুন এতে আমার কোনো হাত নেই। আর তাছাড়া ডিল হয়েছিলো কিন্তু সেটা পূরণ হয়নি তাই আশা করি এই কথাটা আর বলবেন না। মিস্টার গুপ্তা বলেই ফোন কেটে দেয়।

অভি যেনো কি করবে বুঝতে পারছে না। সে এতক্ষণ হাসি খুশি থাকলে ও এখন যেনো তার পায়ের থেকে মাটি সরে যাচ্ছে চিন্তায় তার মাথা ফেটে যাচ্ছে কি করে সামলাবে সব কিছু। আর এই মুভি যদি হাত ছাড়া হয়ে যায় সে তার অনেক বড় লস করে ফেলবে। আর তাছাড়া সে এই কথাটা তানিয়া কে কি করে বলবে। অভি এগুলো ভাবতে ভাবতে পাশে থাকা ফ্লাওয়ার ভাস টা ছুড়ে ফেলে। অভি চিন্তা করতে করতে ফোন হাতে নিয়ে তানিয়া কে ফোন করে কিন্তু তানিয়ার ফোন সুইচ অফ আসছে। অনেক দেরি পর্যন্ত ট্রাই করার পরও ফোন লাগছে না আর না তানিয়ার ম্যানেজার না অ্যাসিস্ট্যান্ট কাউকে ফোন পাচ্ছে।

-“আরে সব কি একসাথে মরে গেছে নাকি। কোথায় সব ফোন কেনো পাচ্ছে না কোনো কাজের নয় কেউ। অভি রাগে নিজের মাথার চুল ছিড়তে ছিড়তে বলে ওঠে।

-” মে আই কামিং ? তোড়া দরজায় দাঁড়িয়ে নক করে বলে ওঠে।

অভি এতক্ষণ পাগল এর মত অবস্থায় থাকলেও তোড়ার আওয়াজ শুনে নিজেকে ঠিক করে নেয়। নিজেকে শান্ত করে ভিতরে আসার জন্য পারমিশন দিয়ে দেয়। তোড়া হাসি মুখে রুমে ঢুকে একবার রুমের দিকে তাকায়। সামনে ভাঙা ফুলের ভাস পড়ে থাকতে দেখে তোড়া ভ্রু কুঁচকে যায়। তোড়া বোঝার চেষ্টা করে যে এখানে হচ্ছিলো টা কি।

-“মিস্টার অভি আপনি ঠিক আছেন তো? তোড়া বলে ওঠে।

-” হুম হুম আমি ঠিক আছি। আব এইসব কিছু না আসলে আমার হাত লেগে এটা পড়ে গিয়েছে আমি এখুনি পরিষ্কার করার জন্য বলে দিচ্ছি। অভি একটা মিথ্যা হাসি দিয়ে বলে ওঠে।

-“ওহ আচ্ছা ।তোড়া হাসার চেষ্টা করে বলে ওঠে।
কারণ সে বুঝতে পারছে কিছু তো হয়েছে এখানে। আর অভি ও তার সাথে জোর করে হেসে হেসে কথা বলছে।

-” আরে বসো না দাঁড়িয়ে আছো কেনো। অভি তোড়ার দিকে এগিয়ে এসে বলে ওঠে।

-“হুম থ্যাঙ্কস ।তোড়া এক পা পিছনে নিয়ে অভি এর থেকে সরে এসে বলে ওঠে।

-“আসলে আমার ইনফর্ম করার ছিল যে আমার আজকে স্নো ক্লাউড গ্রুপ এর থেকে কন্ট্রাক্টড সাইন শেরিমানি আছে তাই। তোড়া বলে ওঠে।

-” হুম তোমার ম্যানেজার আমাকে বলেছে। আমিও আসছি ওখানে টেনশন নেই। অভি হেসে হেসে বলে ওঠে।

-“ওকে । তোড়া হেসে বলে ওঠে।

তারপরে একবার তোড়া অভির দিকে তাকিয়ে একটা অ্যাট্রাক্টিভ লুক দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। এদিকে অভি তোড়ার ওই লুক দেখে ফেসে গেছে। সে তোড়া কে পাওয়ার জন্য হন্য হয়ে গেছে না লাইফ পার্টনার নয় তার সাথে নাইট স্পেন্ড করার জন্য। আসলে এই ইন্ডাস্ট্রি এমন একটা জায়গা যেখানে সব ফেম হাসিল করার জন্য বড় বড় নামি দামি লোকেদের নিজের মোহরা বানায়। আর অভি ও সেটা ভাবছে যে যদি তোড়া তার নাম ফেম হাসিল করার জন্য তাকে না ইউজ করে তো কি হয়েছে সে তো করতেই পারে। সে তোড়া কে নাম দেয়ার চেষ্টা করে তাকে বেড পার্টনার তো করতেই পারে। আর তানিয়া সে তো সোনার ডিম পাড়া হাঁস তাকে কিছুতেই ছাড়তে পারবে না অভি সে একজন ইন্টারন্যাশনাল টপ মডেল আর তাছাড়া মানান পরিবারের পাওয়ার ও তার হাতেই তো তাই তানিয়া কে তো হাতে রাখতে হবে আর তাছাড়া কোথাও না কোথাও তানিয়া তাকে কন্ট্রোল করে তাই চাইলেও সে তানিয়া কে ছাড়তে পারবে না।
তার থেকে এটাই ভালো তানিয়া ওর জায়গায় আর তোড়া তোড়ার জায়গা থাক মাঝখানে থেকে সে মজা নেবে। তাই সে আপাততঃ তানিয়ার মুভির কথা ভুলে গিয়ে তোড়ার সাথে যাওয়ার প্ল্যান করে। আর এটা ভেবে বাঁকা হেসে যাচ্ছে। কিন্তু সে এটা বুঝতে পারছে না তার সময় ঘনিয়ে এসেছে।

এদিকে তানিয়া বিউটি পার্লারে নিজের বিউটি ট্রিটমেন্ট করাচ্ছে। যাতে তাকে আজকে খুব সুন্দর লাগে। আজকে মুভি সাইন করা হবে তাই কিন্তু সে এখনো এই খবর থেকে অজানা যে তার নাম রিপ্লেস করে দেওয়া হয়েছে মুভি থেকে। সে খুশি মনে আছে। তার এতদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে ফাইনালি সে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ডেবিউ করতে যাচ্ছে। আর তাকে কেউ আটকাতে পারবে না। এখন সব দিক থেকে সব পাওয়ার তার হবে এখন তার বাড়ির পাওয়ার তার হাতে আর তাছাড়া স্টার গ্রুপের মেইন মডেল হিসাবে আছে আর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যাওয়ার পর সে একজন অ্যাক্ট্রেস হিসাবে ও টপে থাকবে। এই সব ভেবে ভেবেই মনে মনে খুশি হয়ে যাচ্ছে।

কিন্তু সে জানতেও পারে না তার সাথে কি হতে চলেছে সে কত অপমান হতে যাচ্ছে। কত বড় বিপদ তার জন্য অপেক্ষা করছে।

—————-

আর আর ইন্টারন্যাশনাল এন্টারটেইনমেন্ট গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি রেয়ান্স এর কেবিনে ।

– “স্যার কাজ হয়ে গেছে। শাহীন রেয়ান্স এর সামনে দাঁড়িয়ে বলে ওঠে ।

-” হুম । রেয়ান্স বলে ওঠে।

শাহীন বুঝতে পারে তার স্যার তার উত্তরে সন্তুষ্ট হয়নি তাই সে আবারও বলে ওঠে।

-“স্যার ফিল্ম ডিরেক্টর মিস্টার গুপ্তা ফোন করেছিলেন তিনি মিস তানিয়া মানান কে ওই মুভি থেকে রিপ্লেস করে দিয়েছে। শাহীন বলে ওঠে।

-“আর তোমাকে যে ডিটেইলস গুলি দিতে বলেছিলাম। রেয়ান্স মাথা তুলে বলে ওঠে।

-“স্যার আপনার টেবিলে রেখেছি দেখে নেবেন। শাহীন বলে ওঠে।

-“ওকে তুমি যেতে পারো। রেয়ান্স বলে ওঠে।

শাহীন চলে যেতেই রেয়ান্স চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে। রেয়ান্স কালকে তোড়ার বলা কথা গুলো শুনে নিয়েছিলো আর তাছাড়া তানিয়া যে মুভি তে লিড রোল ছিল সেই মুভি আর আর এন্টারটেইনমেন্ট প্রোডিউশ করছে তাই সেখানে তো রেয়ান্স কখনোই তানিয়া কে রাখবে না। যদি ও জানতে না পারতো যে এই মেয়ের জন্য তার বউ কত কষ্ট পেয়েছে তাহলে হয়তো এই রোল তানিয়া কে দিয়ে দিত। কিন্তু এটা জানার পর তো কোনো কারণ ওঠে না ওকে এই অফার দেয়ার।
আর তাই রেয়ান্স মিস্টার গুপ্তা কে বলে তানিয়া কে মুভির থেকে রিপ্লেস করে দিয়েছে।

তার বউ যতো তাকে তার কাজের থেকে দূরে থাকতে বলুক না কেনো সেতো এটা করতে পারে। সামনে থেকে না হোক পিছন থেকে তো এই সাহায্য করতেই পারে। হুম এই কাজটা যদি তোড়া করতে যেতো তাহলে সে অনেক প্রবলেম এর মধ্যে পড়ে যেতো তাই রেয়ান্স এক চুটকিতে সব ঠিক করে দিয়েছে। তোড়া যদি কিছু বুঝতে পারে বা এই কাজের জন্য যদি নারাজ হয়ে যায় তাহলে কারণ হিসাবে এটা বলতেই পারে যে তানিয়া এই মুভির জন্য ঠিক না এটা তো যথেষ্ঠ কারণ আর তাছাড়া সে এই মুভি প্রোডিউশ করছে তাই সে তো করতেই পারে বেকার বেকার তোড়ার টেনশন করছে রেয়ান্স। আর তাছাড়া সে তো জনেই না যে তোড়া এই ব্যপারে কোনো কিছু করতে চলেছে। হুম রাইট তার কোনো বিপদ নেই তোড়ার থেকে। আর তাছাড়া আজকে তার বউ ইন্ডাস্ট্রিতে এসেই স্পোক পার্সন এর অফার পেয়ে গেছে এর জন্য এই ছোটো একটা সারপ্রাইজড দিতেই পারে। এটা ভেবেই মুচকি হেসে ওঠে রেয়ান্স।

—————

-“তোড়া একটা দারুণ খবর আছে তুই জানিস আজ কি হয়েছে। রাই খুশিতে নাচতে নাচতে তোড়ার কেবিনে এসে বলে ওঠে।

তোড়া বসে বসে নিজের কাজ দেখছিল হঠাৎ করেই রাই এমন আসতে সেই কিছুটা হকচকিয়ে গেছে। মাথা তুলে রাই এর দিকে দেখে সে খুব এক্সাইটেড হয়ে আছে। তাই তোড়া ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে।

-“আরে জানিস আমি আমার সোর্স থেকে সিক্রেটলি জানতে পেরেছি যে তানিয়া কে মুভির থেকে রিপ্লেস করে দিয়েছে। রাই লাফিয়ে বলে ওঠে।

-” মানে এটা কি করে সম্ভব। তোড়া অবাক হয়ে বলে ওঠে।

-“আরে মিস্টার গুপ্তা ফোন করে বলে দিয়েছে। ভালোই হলো আমাদের আর কিছু করতে হলোনা। রাই হেসে বলে ওঠে।

-“কিন্তু হঠাৎ করেই কিভাবে? তোড়া এখনও অবাক হয়ে বলে ওঠে।

-” আরে বাবা ওই ফিল্মে আর আর এন্টারটেইনমেন্ট প্রোডিউশ করছে। আর সেখান থেকে অর্ডার এসেছে তানিয়া কে রিপ্লেস করার। রাই বলে ওঠে।

-“আর আর এন্টারটেইনমেন্ট। তারমানে রেয়ান্স। তোড়া বিড়বিড় করে বলে ওঠে

তোড়া এবার ভাবতে থাকে যে তখন অভি এর রুমের ওই অবস্থা কেনো হয়েছিলো। সে এবার বুঝতে পারে। কিন্তু তোড়ার মনে এখন এটা নিয়ে চিন্তা করছে যে হঠাৎ ডেট এর ডেটে গিয়ে তানিয়া কে কেনো রিপ্লেস করা হলো এর মধ্যে কি কোনো ভাবে তার কোনো ব্যাপার লুকিয়ে আছে। তোড়া ভাবতে থাকে কিন্তু কোনো ভাবেই কোনো কিনারা করতে পারে না। কিন্তু তার মন ও মস্তিষ্কের সত্তর পার্সেন্ট বলছে যে রেয়ান্স এটা তার জন্য করেছে। আর এটা ভাবতেই মনে মনে একটা খুশি ছড়িয়ে যায়। তোড়া ফোন উঠিয়ে নিয়ে রেয়ান্স এর নাম্বারে কল করে। ফোন কানেক্ট হতে তোড়ার হার্ট বিট যেনো বেড়ে যায়।

-“হ্যালো । রেয়ান্স বলে ওঠে।

-“হ…হ্যালো । তোড়া খানিকটা কেঁপে উঠে বলে ওঠে।

-“হুম বলো তোড়া কোনো সমস্যা। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-” আসলে আজকে রাতে আমার….স্নো ক্লাউড গ্রুপ এর স্পোক পার্সেন এর জন্য লাইভ শেরিমানি আছে। তাই ….বাড়ি আসতে…. লেট হবে তাই। তোড়ার খানিকটা থেমে থেমে বলে ওঠে।

-“কংগ্রাচুলেশন মাই লাভলি ওয়াইফ । রেয়ান্স খানিকটা হেসে বলে ওঠে।

রেয়ান্স এর এই ওয়াইফ বলতে তোড়ার বুকের ধুকধুক যেনো আরো দশ গুণ বেড়ে গেছে।

-” থ্যাঙ্কস । তোড়া কাঁপা কন্ঠে বলে ওঠে।

-“আচ্ছা ঠিক আমি তোমার কিছু পারসেল পাঠিয়ে দিয়েছি ওটা দেখে নিও। আর হ্যাঁ সাবধানে থাকবে আর নিজের খেয়াল রাখবে ওকে বেবি। রেয়ান্স বলে ওঠে।

-“হুম । তোড়া কোনোরকম ভাবে বলে ওঠে।

তোড়া ফোন রেখে দিয়ে বড় বড় নিঃশ্বাস নিতে থাকে এতক্ষণ যেনো সে শ্বাস নিতে পারছিল না আর রেয়ান্স এর মুখে বেবি শুনে তো তোড়ার দম আটকে নাজেহাল অবস্থা। রাই তোড়ার থেকে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে এতক্ষণ তোড়ার এক্সপ্রেশন লক্ষ করছিলো। তোড়া রাই এর দিকে তাকাতেই দেখে সে তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। এটা দেখেই তোড়া নিজেকে স্বাভাবিক করে নেয়।

-“কি হলো এই ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো? তোড়া বলে ওঠে।

-” তোর কি ব্যাপার বলতো? কি চলছে? রাই ভ্রু নাচিয়ে বলে ওঠে।

-“কিছু না এখন চল অনেক কাজ বাকি আছে। বলেই তোড়া এড়িয়ে যায়।

একদিকে তোড়ার কন্ট্রাক্টড সাইন আর অন্য দিকে তানিয়ার ফিল্ম সাইন শেরিমানি কোনটা সফল হতে চলেছে। তানিয়া তার এই খবর থেকে এখনও অজানা যে তাকে রিপ্লেস করে দেয়া হয়েছে। তাহলে কি হতে চলছে তার সাথে।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…..

#ইষ্ক_ইবাদাত
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৭

ফিল্ম প্রোডাকশন মিটিং এর স্পটে তানিয়া সেজে গুঁজে চলে আসে। হল এর সামনে তানিয়ার গাড়ি এসে থামতে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে তানিয়া। তানিয়া এমন ভাবে এন্ট্রি নেয় যে কোনও সুপার স্টার এসেছে। তানিয়া নিজের অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সাথে ভিতরে ঢুকতে থাকে। মিস্টার গুপ্তার অ্যাসিস্ট্যান্ট এর সাথে দেখা হয়ে যায় ঢোকার মুখে। কিন্তু তানিয়া কে দেখেও না দেখার মত করে পাশ কাটিয়ে যায়। এদিকে লাইভ টিভি ব্রডকাস্ট শুরু হয়ে যায়। তানিয়া গিয়ে ওয়েটিং রুমে বসে থাকে কিন্তু কেউ ওকে ডাকে না। কিছুক্ষণ পর তানিয়া অধৈর্য্য হয়ে নিজের অ্যাসিস্ট্যান্ট কে পাঠায় খোঁজ নেয়ার জন্য। যেখানে লিড ক্যারেক্টার হিসাবে তানিয়ার খুব জোর সরে ওয়েল কাম করার কথা সেখানে ওকে কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না ভেবে রাগে ফেটে পড়ছে। কিছুক্ষণ পর তানিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ছুটতে ছুটতে আসে।

-“ম্যাম প্রোগ্রাম তো শুরু হয়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ আগে কিন্তু আপনাকে কেনো ডাকলো না সেটাই বুঝতে পারছিনা। তানিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে ওঠে।

-” শুরু হয়ে গেছে মানে? আমি এখানে বসে আছি তাহলে প্রোগ্রাম শুরু কি ভাবে হলো। তানিয়া রাগে চিৎকার করতে করতে বলে ওঠে।

-“আমি জানিনা ম্যাম। তানিয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট ভয়ে ভয়ে বলে ওঠে।

-“ওদের এত সাহস আমি লিড ক্যারেক্টার আমাকে ছাড়া ওরা প্রোগ্রাম কি করে শুরু করতে পারে আমি ও দেখছি। তানিয়া রাগে চিৎকার করতে করতে বেরিয়ে যায়।

তানিয়া রাগে চিৎকার করতে করতে এগিয়ে আসে মেইন প্রোগ্রাম হল এর দিকে। চারিদিকে প্রেস মিডিয়ার লোকে ভরা তার সাথে আছে অডিয়েন্স আর ফিল্ম প্রোডাকশন এর মেম্বার। মিস্টার গুপ্তা মিডিয়ার সাথে কথা বলছে এবং তার ফিল্ম এর মেল লিড রোল ও ফিমেল লিড ক্যারেক্টার কে সবার সাথে ইন্ট্রুডিউশ করিতে দিচ্ছে তানিয়া দূর থেকে এই সব দেখেই এগিয়ে যায়।

-“মিস্টার গুপ্তা যেখানে আমি ফিল্ম এর মেইন লিড ক্যারেক্টার সেখানে আমাকে রেখে প্রোগ্রাম কি ভাবে শুরু হতে পারে। তানিয়া সবার সামনে গিয়ে চিৎকার করে বলে ওঠে।

এদিকে ওখানে থাকা সবাই তানিয়ার চিৎকারে অবাক হয়ে তানিয়ার দিকেই দেখতে থাকে। আর মিডিয়ার লোক তো যেনো হট টপিক কোনো কিছু পেয়ে গেছে তারা তাড়াতাড়ি তানিয়ার এই অবস্থার ফটো নিতে শুরু করে।

-“এক্সকিউজমি। মিস তানিয়া আপনাকে কে বললো আপনি এই ফিল্ম এর লিড ক্যারেক্টার আপনাকে কে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়েছে। মিস্টার গুপ্তা তানিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” মিস্টার গুপ্তা আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন। আমি এই ফিল্ম এর লিড ক্যারেক্টার সেটা বুঝি আপনি জানেন না। তানিয়া যেনো পারছেনা এখানেই ব্লাস্ট হয়ে যাবে এমন ভাবে কথা বলে ওঠে ।

-” না। আমাদের ফিল্ম এর মেইন লিড ক্যারেক্টার তো এই যে মিস কাজল আহুজা। তাহলে আপনি কি করে হলেন। আর তাছাড়া আপনি একজন মডেল তাছাড়া আর কিছু না। এই ভুল টা কিভাবে ভেবে ফেললেন। মিস্টার গুপ্তা শান্ত ভাবে তানিয়া কে অপমান করে বলে ওঠে।

এই মুহূর্তে তানিয়ার ফেস দেখতে বিশ্রী লাগছে তার মুখের এতক্ষণ এর শান্ত সিষ্ট সুন্দরী মেয়ের এক্সপ্রেশন চলে গেছে। সবার সামনে এবার তানিয়ার আসল রূপ বেরিয়ে পড়েছে তার এতোদিনে তৈরী করা ইমেজ যেনো আজকের এই ঘটনায় পাল্টে গেছে।

-“আপনি কি আমার সাথে মজা করছেন ওই মেয়েটি লিড ক্যারেক্টার মানে? আমার জায়গায় ও কি ভাবে আসতে পারে? তানিয়া চিৎকার করে বলে ওঠে।

-” মিস তানিয়া আপনি একজন টপ মডেল হতে পারেন কিন্তু আপনি কোনো অ্যাকট্রেস না। আর তার ওপরে আপনি যেখানে এখনও কোনও ডেবিউ করেন নি তাহলে আপনি মুভির লিড ক্যারেক্টার হওয়ার কথা ভাবলেন কি করে? মিস্টার গুপ্তা বলে ওঠে।

-” মিস্টার গুপ্তা আপনি জানেন আপনি কার সাথে কথা বলছেন? তানিয়া যেনো মনে হচ্ছে এবার তার রাগে সব কিছু নষ্ট করে ফেলবে।

-” হ্যাঁ আপনি একজন মডেল এর থেকে বেশি কিছু না। আর আপনি এখন থেকে যেতে পারেন। আপনি এখানে এসে ফালতু ফালতু আমাদের সময় নষ্ট করছেন। মিস্টার গুপ্তা বলে ওঠে।

-” আমি চলে যাবো মানে? ওই মেয়ে এখান থেকে যাবে। তানিয়া বলে ওঠে।

-“বুঝতেই পারছি আপনি এখান থেকে যাবেন না। সিকিউরিটি সিকিউরিটি একে এখান থেকে বের করে দিন। মিস্টার গুপ্তা চিৎকার করে বলে ওঠে।

এদিকে এমন হওয়াতে ওখানে বাকি সবাই তানিয়ার এমন রূপ আর ব্যবহারে সবাই অবাক হয়ে গেছে তার সাথে তানিয়ার ইমেজ পুরো হাসিতে পরিবর্তন হয়ে গেছে। সবাই হাসছে। ওখানে যেহেতু লাইভ চলছিল তো পাবলিক এতক্ষণ ওখানে সব কিছু এতক্ষণ সবাই দেখ ছিল। আর তানিয়ার বিরুদ্ধে চলে গেছে। নানা ধরণের গসিপ শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্নভাবে তারা তানিয়া কে উল্টো পাল্টা কথা বলছে তানিয়া কে যে সিকিউরিটি টেনে হিচড়ে বাইরে নিয়ে যাচ্ছে সেটা ও দেখা যাচ্ছে।

—————-

-“তোড়া তোড়া একটা খুশির খবর আছে। রাই লাফাতে লাফাতে তোড়ার কাছে এসে বলে ওঠে।

-” কি খবর? তোড়া রেডি হতে হতে বলে ওঠে।

-“গেস কর কি হতে পারে? রাই তোড়া কে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে বলে ওঠে।

-” আরে বাবা আমি কি করে জান…. তোড়া পুরো কথা টা আর শেষ করে না রাই এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।

-” তানিয়ার নিউজ? তোড়া বলে ওঠে।

-“ইয়েস ।ওকে শুধু কেমন বিশ্রী দেখতে লাগছে আর পাবলিক কী ভাবে তাকে গালি দিতে আছে। রাই লাফিয়ে বলে ওঠে।

রাই তোড়ার সামনে তার ফোন দিয়ে এক এক করে পাবলিক এর দেয়া তানিয়ার বিরুদ্ধে এক একটা কমেন্ট পড়তে থাকে।

-“আরে এটা টপ মডেল তানিয়া না? কিন্তু একে দেখতে এমন কুৎসিত লাগছে কেনো?

-” এই টপ মডেল তানিয়া কে আমরা কতো ভালো ভেবেছিলাম কিন্তু তার আসল রূপ বেরিয়ে পড়েছে। ছিঃ

-“আমি কি করে এর ফ্যান ছিলাম। আমি ভাবতে ও পারছি না এই রকম একটা মডেল এর ফ্যান ছিলাম।

-” আরে ওকে কেউ ওখান থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দাও ইয়ার।

-” মিস তানিয়া তুমি একটা খারাপ কুৎসিত বিশ্রী মেয়ে তোমাকে আমরা আর মডেল হিসাবে দেখতে চাইনা।

-” ছিঃ টপ মডেল হতে পারে না আবার নাকি সে মুভি তে লিড ক্যারেক্টার প্লে করবে আরে কেউ ওর মুখে কালি মেখে দাও।

ইন্টারনেটে এমন ধরণের প্রচুর কমেন্ট আসছে তানিয়ার বিরুদ্ধে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তানিয়ার জীবনকে পুরো নিচে নামিয়ে দিয়েছে। তার বানানো এত দিনের মিথ্যা ইমেজ এক ঝটকায় মাটিতে নেমে গেছে। ইনফ্যাক্ট তার এর পরেও যতো গুলো কন্ট্রাক্টড ছিল সবাই একে একে ক্যানসেল করতে শুরু করেছে। বলতে গেলে এক দিনের মধ্যে থেকে তানিয়ার জীবনের উল্টো গোনা শুরু হয়ে গেছে আর প্রথম ঝটকায় মাটিতে নেমে গেছে।

তোড়া নিউজ দেখে কিছু বলে না চুপচাপ হয়ে যায় তার যেনো এতে কোনো যায় আসে না। সে রাই এর হাতে ফোন ধরিয়ে দিয়ে নিজে রেডি হতে থাকে আর এদিকে ওর পিছনে দাঁড়িয়ে রাই তানিয়ার ব্যাপারে ভালো মন্দ বলেই যাচ্ছে আর তার সাথে খুশি হয়ে যাচ্ছে।

-“সবে তো খেলা শুরু হয়েছে তানিয়া। তোর সম্মান এর সবে এক শতাংশ নিচে নেমেছে আর আসতে আসতে এটা পুরো মাটির সাথে মিশে যাবে। আর সেটা ও খুব তাড়াতাড়ি হতে চলছে শুধু দেখতে থাক তোর সাথে আর কি কি হয়। আর আমিও দেখি তুই কতটা সহ্য করতে পারিস। তোড়া নিজের মনে বলে ওঠে।

————–

স্নো ক্লাউড গ্রুপ রাত আটটার সময়ে প্রোগ্রাম শুরু হয়ে যায়। হল এর সামনে গাড়ি এসে থামতে ওখানে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা অভি গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে দেয়। ওখানে থাকা সমস্ত রিপোর্টার পুরো টা কভার করতে থাকে তাদের ক্যামেরা দিয়ে। অভি এর হাত ধরে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে তোড়া। আর তার পিছে রাই।
তোড়া গাড়ি থেকে নামতেই হইচই শুরু হয়ে যায়। তাকে আজকে ও খুব আকর্ষণীয় লাগছে। এক দেখায় সবার দৃষ্টি তার দিকে আকর্ষণ করে নিচ্ছে। ওখানে থাকা প্রত্যেকে নেশা ভরা চোখে তোড়া কে দেখে যাচ্ছে ।

তোড়া অভির হাত ধরে রেড কার্পেটের দিয়ে হেঁটে ভিতরে ঢুকছে। তার এই হেঁটে ভিতরে যাওয়ার মধ্যে ও যেনো আলাদা করে একটা নতুনত্ব ব্যাপার আছে যা সবাই কে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। মিডিয়া রিপোর্টার আর বাকি ফ্যানরা তোড়ার উপস্থিতি পাগল হয়ে যাচ্ছে।

অভি নিজেও এই মুহূর্তে নিজের জন্য অ্যাটেনশন ক্রিয়েট করতে চাইছে সে সবার নজরে তোড়ার সাথে আসতে চাচ্ছে। কয়েক ঘণ্টা আগে তানিয়ার অপমানে যেনো তার কিছু যায় আসে না। সে যেনো এই ব্যাপারে কিছুই জানে সে তো এখন তোড়ার সাথে এই মুহূর্তে ইনজয় করতে চাইছে।

তোড়া ভিতরে গিয়ে বসে। একে একে মিডিয়ার দিকে তাকিয়ে নিজের পোজ দিচ্ছে আর তাদের উত্তর ও। স্নো ক্লাউড এর সাথে কন্ট্রাক্টড সেরিমানি হয়ে যায় ভালোই ভালোই কোনো বাধা ছাড়া। স্টার গ্রুপ এর টপ মডেল যেখানে অপমানিত হয়ে পুরো নিউজে ছেয়ে গেছে সেখানে ওই একই গ্রুপ এর নিউ মডেল এর স্পোক পার্সেন হওয়ার জন্য সব জায়গা থেকে অভিনন্দন আসছে তাকে ইন্ডাস্ট্রিতে সবার ওয়েল কাম জানাচ্ছে। সত্যি কখন যে কি হয়ে যায় পলক ফেলতে না ফেলতে সে বলা যায় না ভাগ্য এই সাথে আছে তো এই সাথে নেই একটা ব্যাপার।

ওখানে সবাই ডিনার করলেও তোড়া ডিনার করেনি সে জানে তার জন্য একজন অপেক্ষা করে আছে। তোড়া এই দু তিন দিনের মধ্যে জেনে গেছে যে রেয়ান্স তাকে ছেড়ে খায় না। তাই তোড়া ডিনার না করে তাড়াতাড়ি নিজের কাজ সেরে বের হয়। অভি তোড়া কে ড্রপ করার কথা বললেও সে সাথে সাথে নাকচ করে দেয়। কেনো জানে না তার মন যেনো বলছিল যে রেয়ান্স তার জন্য অপেক্ষা করছে হয়তো তাকে নিতে এসেছে। আর এই সব ভেবেই তার হার্ট বিট করতে থাকে মনের মধ্যে আলাদা একটা অনুভূতি সৃষ্টি হয়। তাই তোড়া তাড়াতাড়ি হল থেকে বেরিয়ে আসে।বাইরে এসে রাই কে অপেক্ষা করতে বলে কিছুটা সামনের দিকে এগোতে দেখে রেয়ান্স এর গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।

তোড়া আর কোনো কাল বিলম্ব না করেই দৌড়ে গিয়ে গাড়ির দরজা খুলে বসে পড়ে পাশে বসে থাকা রেয়ান্স কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেয়ান্স এর গালে একটা গভীর চুমু খেয়ে নেয়।
.
.
.
. ❤️❤️❤️
. চলবে…..

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । টাইপিং মিসটেক গুলো দয়া করে একটু বুঝে নিবেন।