একটু বেশিই ভালোবাসি পর্ব-০৩

0
3798

#একটু_বেশিই_ভালোবাসি
#Maishara_Jahan
Part…………… 3

বাবা,,,,,,,,, তোরে তো পড়ে দেখমু, আর শুনে রাখ যাই হোক বিয়ে তোকে করতেই হবে।

বলে বাবা মায়ের পিছন পিছন চলে যায়,আজ বাবার খবর আছে।

রাতে আমরা সবাই টেবিলে খেতে বসি। রিমান ভাইয়া অয়ন ভাইয়াকে আমাদের বাসায় আসতে বলে বাবাকে বুঝাতে।

বাবা,,,,,,,, আজকে খাবারে জ্বাল বেশি হয়েছে।

মা,,,,,,,,, এখন তো আমার রান্না করা খাবার ভালো লাগবেই না, ঐ মেয়ের কাছে যাও মিষ্টি মিষ্টি রান্না করে খাওয়াবে৷ (রাগে)

বাবা,,,,,,,,,,,, আজকের খাবারটা অনেক মজা হয়েছে সত্যি।

মা কথায় কথায় বাবাকে খোঁটা দিচ্ছে, আর আমরা সবাই না পারছি হাসতে না পারছি হাসি থামিয়ে রাখতে৷ রিমান ভাইয়া তো জোরে জোরে হাসতে হাসতে টেবিলে থাপ্পড়াচ্ছে।

বাবা রিমান ভাইয়াকে বড় চামচ দিয়ে একটা মার দেয়। রিমান ভাইয়া তাও হাসছে।

বাবা,,,,,,,,, এই সব কিছু তোর জন্য হয়েছে, আমার তো সন্দেহ হয় তুই আমার ছেলে নাকি।

রিমান,,,,,,,,,, মা দেখছো বাবা তোমাকে সন্দেহ করে। আল্লাহ এটা শুনার আগে আমার বাবার মুখ বন্ধ হয়ে গেলোনা কেনো। (ওভার এক্টিন করে)

বাবা,,,,,,,,,, এ থাম, থাম আমি এটা কবে বললাম।

রিমান,,,,,,,,,, এই মাত্র বললা, তুমি কি বলতে চাও আমি তোমার সন্তান না, তার মানে কি তুমি বলতে চাও আমার মার সাথে কারো সম্পর্ক আছে, নাউজুবিল্লাহ ছিঃ ছিঃ।

মা হাত থেকে ভাতের বোলটা ঠাস করে টেবিলে রেখে দেয়, সাথে সাথে বাবা ভয়ে দাঁড়িয়ে যায়।

মা,,,,,,,,,,, এতো বড়ো কথা, ঠিক আছে আজ থেকে তোমার আমার সাথে থাকার কোনো দরকার নেয়, তুমি চুপচাপ অন্য রুমে থাকবে, আর খাবার নিজে রান্না করে খাবে। (রাগে)

বাবা,,,,,,,,,,, আরে আমি কিছুই করিনি। (ভয়ে)

এবার একটু বেশিই হয়ে গেলো, আমি আর অয়ন ভাইয়া চুপচাপ বসে আছি, রিমান ভাইয়া এর পুরো আনন্দ নিচ্ছে।

রিমান,,,,,,,,, মা তুমি জানো বাবা জেনো কার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে, তুমি বলে দাও না, আমি এই বিয়ে করবো না।

মা,,,,,,,,,,, বিয়ে তোকে করতেই হবে, কিছু দিনের মধ্যে তোকে বিয়ে করিয়ে দিবো। বেশি সময় নেয় কাল সব ঠিক ঠাক করে আসবো।

রিমান,,,,,,,,,, মানে কি এসবের, করবো না বিয়ে আমি।

অয়ন,,,,,,,,,, আংকেল কেনো রিমানকে জোর করছেন, এখন ও বিয়ে করতে চাইছে না। আর কতোই বা ওর বয়স, একটু বড় হোক।

বাবা,,,,,,,,, আর কয়েক দিন পর বুড়ো হবে বড় না। আর তোর ও তো বয়স কম হয়নি, তুই বিয়ে করিস না কেনো৷ কোনো মেয়ে পছন্দ আছে নাকি।

অয়ন ভাইয়া আমার দিকে কিভাবে জেনো তাকিয়ে আছে। এতে আমার দিকে তাকানোর কি আছে।

অয়ন,,,,,,,,,,, পছন্দ তো আছে, সময় হলে বলবো।

অয়ন ভাইয়ার কথা মনে কেমন জেনো হিংসে হচ্ছে সেই মেয়ের প্রতি যাকে অয়ন ভাইয়া পছন্দ করে। একটু চাপা কষ্ট অনুভব হলো।

মেঘা,,,,,,,,,, মেয়েটা বুঝি সুন্দর দেখতে।

অয়ন,,,,,,,,,,, হুমম অনেক।

মেঘা,,,,,,,, ওও ( হুহহহ সুন্দর হলেই বা আমার কি, ঐ মেয়ের কপাল পুড়লো, কারন অয়ন ভাইয়া তাকে পছন্দ করে।)

রিমান,,,,,,,,, এখানে আমার কথা চলছে, তোর কথা পড়ে ভাবা যাবে। আমি এই বিয়ে করবো না বেস।

বাবা,,,,,,,,,,, তুই কেনো তোর বাপেও করবে।

রিমান,,,,,,,,, মা দেখো এই বয়সে নিজের বিয়ের কথা ভাবে৷

মা,,,,,,,,, তোর বাবার শক তো আমি পড়ে মিটাবো কিন্তু এখন তোকে এই মেয়েকে বিয়ে করতেই হবে।

রিমান,,,,,,,,, কি যুগ এলোরে, আগে জানতাম মেয়েদের জোর করে বিয়ে দেয়, এখন ছেলেদেরও ছাড়ে না। আচ্ছা মেয়ের নামটা কি??

মা,,,,,,,, ফারিয়া

রিমান,,,,,,,,,,, ফোন নাম্বার।

বাবা,,,,,,,,,, নাম বলেছি এটাই যথেষ্ট, কাল তকে দেখতে আসবে।

রিমান,,,,,,,,,, বাবা তুমি মনে হয় ভুলে গেছো আমি ছেলে। আর ছেলেরা মেয়ে দেখতে যায়।

বাবা,,,,,,,, ঠিক আছে তাহলে কাল আমরা যাবো তাদের বাড়িতে, তবে বলে রাখছি ঐখানে গিয়ে কোনো ঝামেলা করা যাবে না। তোর বিয়ে ফারিয়ার সাথেই হবে।

অয়ন,,,,,,,,,, এবার রিমান তোর কি হবে।

রিমান,,,,,,,,, বিয়ের পর বাচ্চা হবে।

অয়ন,,,,,,,,, তা তো হবেই,,,, মেঘা তুই খাবার না খেয়ে কি ভাবছিস।

মেঘা,,,,,,,,, কাল ভার্সিটির প্রথম দিন, আর সেখানে নতুন নতুন ফ্রেন্ড ওয়াও অনেক মজা হবে।

অয়ন,,,,,,,,, হুমম মজা তো হবে কিন্তু একটু ভেবে চিন্তে মজা করিস (মেঘাকে চোখ দেখিয়ে) কাল আমি তোকে ছাড়তে যাবে।

রিমান,,,,,,,,,,, হুমম আমিও যাবো।

মেঘা,,,,,,,,,,,( হয়ে গেলো মজা করা, এই অয়ন ভাইয়ার সমস্যাটা কি এটাই বুঝি না)

রিমান,,,,,,,,,,,, এতো তাড়াতাড়ি ভার্সিটিতে ভর্তি হলি কিভাবে।

অয়ন,,,,,,,,,,, আজ কাল টাকা থাকলে কিছুই অসম্ভব না।

সকালে,,,,,,,,,

এই সকালে অয়ন ভাইয়া এসে আমাকে দিয়ে তিন বার ড্রেস চেঞ্জ করিয়েছে। আমার আর ভালো লাগছে না। যেটাই পড়ি ঐটাতেই ওনার প্রবলেম। এবার একটা হালকা গোলাপী থ্রি-পিজ পড়েছি।

অয়ন,,,,,,,,,,, এই কালারটা শরীরের সাথে বেশিই মানিয়ে গেছে, তোর কাছে নরমাল কোনো ড্রেস নেয়।

মেঘা,,,,,,,,,,, অনেক হয়ছে, এর থেকে নরমাল আর কোনোটা নেয়। যাই পরি তাতেই আপনার প্রবলেম। সুন্দর তো লাগছে আমাকে আর কি লাগে। (বিরক্তি নিয়ে)

অয়ন,,,,,,,,,, এতো সুন্দর দেখানো ভালো না।

মেঘা,,,,,,,,, ভাইয়া এবার চলেন, লেইট হয়ে যাবে। (কান্না ভাব নিয়ে)

রিমান,,,,,,,,,, তোরা এতো ক্ষন কি করছিস একটু বলবি। তাড়াতাড়ি চল লেইট হয়ে গেছে।

মেঘা,,,,,,,,, ভাইয়া চল চল।

বলে মেঘা দৌড়ে বেরিয়ে যায়। পিছন পিছন অয়ন ও যায়। তিন জনে ভার্সিটিতে যায়। অয়ন ভাইয়াকে ভার্সিটিতে প্রায় সবাই চিনে। অয়ন ভাইয়া ভার্সিটির ভিতরে ঢুকেই প্রথমে যারা রেগিং করে তাদের সাথে কথা বলে।

ঐ ছেলেরা, সবাই একটা জায়গায় বসে ছিলো। ঐখানে আমাকে নিয়ে যায়৷ অয়ন ভাইয়া যেতেই সবাই দাঁড়িয়ে যায়।

অয়ন,,,,,,,,,,, আমার কথা কান দিয়ে শুনো। এর নাম মেঘা, ও এখন থেকে এই ভার্সিটিতে পড়বে। she is my girl. সো ওর দিকে তাকানোর সাহস ও করবে না।

যদি শুনেছি মেঘাকে কেও বিরক্ত করেছিস তাহলে তো জানিস কি করবো। বেশি দিন তো হয়নি কিছুদিন আগেই পাশ করে এখান থেকে গিয়েছি। আমাকে তো ভালো করে চিনার কথা। সো সবাকে বলে দিবে ওকে ডিস্টার্ব না করতে।

বলে আমাকে ক্লাসের ভিতরে নিয়ে যেতে থাকে, তাও আবার আমার হাত ধরে। মেয়েরা যেভাবে দেখছে যেনো আর কোনো দিন ছেলে মানুষ দেখেনি।

মেঘা,,,,,,,,,,, my girl কেনো বললেন। ওরা কি ভাববে।

অয়ন ভাইয়া হঠাৎ দাঁড়িয়ে যায়, আর ভয়ে আমার বুক কেপে উঠে। মাথাটা আমার দিকে হালকা ঝুকিয়ে বলে,,,,

অয়ন,,,,,,,,,,, কি ভাববে (মুশকি হেঁসে)

মেঘা,,,,,,,,,, ক ক কি আর ভাববে, মনে করবে আ আ আমরা দুজন

অয়ন,,,,,,,,,,, আমরা দুজন (মাথাটা আরেকটু সামনে এনে)

মেঘা,,,,,,,,, যাই ভাবুক আপনি এটা কেনো বললেন।

অয়ন,,,,,,,,,, এটা বলার কারনে তোকে কেও ডিস্টার্ব করবে না।

মেঘা,,,,,,,,, (হুহহ যেভাবে চোখ দেখিয়ে হুমকি দেয়েছেন ওদের ওরা কেও এমনিও ডিস্টার্ব করতো না আমাকে ডেবিল একটা) রিমান ভাইয়া কোথায়।

অয়ন,,,,,,,, প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে কথা বলতে গেছে।

আমাকে ক্লাস রুমে দিয়ে, ভাইয়ারা চলে যায়। এখন শান্তিতে নিশ্বাস নেওয়া যাবে। ভালো ভাবে ক্লাস করি সব গুলো। ১২ বাঝে সব ক্লাস শেষ হয়। এখন আমার ছুটি। বাসায় যাবো।

ভার্সিটির বাহিরে এসে দাঁড়ায়, রিকশা খুঁজছি কিন্তু পাই না। তাই একটু সামনে হেঁটে যাচ্ছে, সামনে রিকশা পাওয়া যাবে।

আমি হেঁটে যাচ্ছি চারজন ছেলে আমার পিছন পিছন আসে, আমার থেকে যথেষ্ট দূরে, কিন্তু তাদের কথা গুলো কানে বাঝছে।

১ছেলে,,,,, ঐ হই চিকনি চামেলি,,, এখানে দেখি নতুন পাখি এসেছে।

২ছেলে,,,,,,,,,,, ভাই দেখো কি ফিগার, আল্লাহ মরেই যাবো।

৩য়,,,,,,,, যাবে না আমাদের সাথে। চলো না যায়।

আরো অনেক বাজে বাঝে কথা বলছে, কোনো রিকশা পাচ্ছি না, আমি তাড়াতাড়ি হাঁটার চেষ্টা করছি। হঠাৎ করে আমার সামনে একটা গাড়ি এসে থামে। আর গাড়ি থেকে অয়ন ভাইয়া বেরিয়ে তিন জনকে উড়া ধুড়া মারা শুরু করে।

অয়ন ভাইয়া যে গতিতে মারছে, বুঝায় যাচ্ছে প্রচুর রেগে আছে। প্রথম আমার খুব ভালো লাগছিলো, ওদের খেতে দেখে। কিন্তু অয়ন ভাইয়া ঐ ছেলের বেট দিয়ে ওদের পিটাচ্ছে।

এখন ছেলেদের জন্য মায়া হচ্ছে, কারন প্রচুর মারছে।

মেঘা,,,,,,,,,, অয়ন ভাইয়া থামো, এবার ওদের ছাড়ো, আর মারতে হবে না, মরে যাবে তো।

অয়ন,,,,,,,,,, ওদের সাহস কি করে হলো তোকে দেখে এমন মন্তব্য করার (মারতে মারতে)

আমার এখন ভয় করছে, অয়ন ভাইয়া যেমন মারছে তেমন ছেলেরাও হার মানছে না। কোনো মতে থামানো যাচ্ছে না।অয়ন ভাইয়াকে ধরার সাহস আমার নেয়, যদি একটা বারি লেগে যায় তাহলে আমাকে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

আমি থামানোর চেষ্টা করছি, তখনি রিমান ভাইয়া আসে, দেখে একটু শান্তি লাগে, রিমান ভাইয়াই পাড়বে অয়ন ভাইয়াকে থামাতে। আমি দৌড়ে রিমান ভাইয়ার কাছে যেতে থাকি আর বলতে থাকি,,

মেঘা,,,,,,,, ভাইয়া অয়ন ভাইয়াকে থামা পিল্জ, বল আর না মারতে।

আমি বলা শেষ করতে না করতে রিমান ভাইয়া গিয়ে ঐ ছেলেদের মারা শুরু করে অয়ন ভাইয়ার সাথে মিলে। আমি মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। কিছু ক্ষনের মধ্যে সবাই পালিয়ে যায়, সাথে হুমকি ফ্রী।

অয়ন ভাইয়া আর রিমান ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে। আছি যায় সেখানে।

মেঘা,,,,,,,,,,, রিমান ভাইয়া তুমি কিছু না জেনে ঐ ছেলেদের মারা শুরু করে দিলে, অয়ন ভাইয়াকে না থামিয়ে।

রিমান,,,,,,,, ওদের সাহস কি করে হলো আমার বন্ধুকে মারার৷

মেঘা,,,,,,,,,, ভাইয়া ওরা মার খাচ্ছিলো। তুই না জেনেই। তুই না ডাক্তার।

রিমান,,,,,,,,, জানার কি আছে দোষ অয়নের থাকলেও ওদের মারতাম। আচ্ছা অয়ন তুই ওদের মারছিলি কেনো৷

অয়ন,,,,,,,,, তোর বোনকে জিজ্ঞেস কর।

এটা বলে রাগে হনহনিয়ে গাড়িতে উঠে চলে যায়।

রিমান,,,,,,,,, তুই আবার কি করলি মেঘা।

মেঘা,,,,,,,,,, সেটাই তো আমি কি করলাম, আমার সাথে রাগ দেখিয়ে চলে গেলো কেনো। ওরা আমাকে ইভটিজিং করেছে, আমি ওদের করছি নাকি।

আমরা বাসায় চলে আসি, সবাই খাওয়া দাওয়া করে রেডি হয়ে গেছি, রিমান ভায়ের বউ দেখতে। তবে আমার মনটা বেশি একটা ভালো না।

অয়ন ভাইয়া আমার সাথে কেনো রাগ দেখালো অদ্ভুত,ভালো লাগে না। আমরা সবাই যাওয়ার জন্য বাহিরে বের হয়, বাহিরে বেরিয়ে দেখি অয়ন ভাইয়া কালো কোর্ট প্যান্ট পড়ে দাঁড়িয়ে আছে।

রিমান,,,,,,, এতে দেড়ি করে এলি যে। আচ্ছা আমরা গাড়িতে বসছি, মেঘাকে তোর গাড়িতে নিয়ে যা।

অয়ন ভাইয়া মুখ কালো করে এক গাদা এটেটিউড নিয়ে গাড়িতে বসে। আমিও গাড়িতে বসি। অয়ন ভাইয়া চুপচাপ মুখ ভার করে বসে আছে। কোনো কথা নেয়। আমার পোশাক, সাজ নিয়েও কিছু বলছে না৷ দূরর ভালো লাগছে না। রাগ যেনো এনার নাকের আগায় থাকে সব সময়।

মেঘা,,,,,,,,, অয়ন ভাইয়া আপনি কার উপর রাগ করে আছেন।

অয়ন ভাইয়া আমার দিকে আগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আবার সামনে তাকায়।

মেঘা,,,,,,, আমার উপর কেনো রেগে আছেন বলবেন তো৷

অয়ন ভাইয়া কোনো কথা বলে না। আমার কেনো জানি এই অবহেলা ভালো লাগছে না। জানি না কেনো তবে কান্না আসছে৷ আর কান্না আসলে আমার ঠোঁট বেঁকে যায়।

চোখের পানি এমনি ভেরিয়ে যায়। অয়ন ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে গাড়ি থামিয়ে দেয়।

অয়ন,,,,,,,,, তুই কি কান্না করছিস।

এটা বলার সাথে সাথে, কান্নার আওয়াজ বেড়ে যায়। জোরে জোরে কান্না করতে থাকি।

অয়ন,,,,,,,,, আরে থাম থাম,,, কি হয়েছে কান্না করছিস কেনো।

মেঘা,,,,,,,,,,, ঐ ছেলেরা আমাকে দেখে বাঝে মন্তব্য করেছে, এতে আমার কি দোষ। আমি কি কোনো খারাপ ড্রেস পড়েছিলাম। সবার মতো আপনিও ভাবেন যাই হোক সব মেয়েদের দোষ। (কান্না করতে করতে হিচকি তুলে ফেলেছে)

অয়ন মেঘার চোখ মুছে দেয়।

,,,,,, কে বলেছে আমি এ জন্য তোর উপর রাগ করেছি।

,,,,,,,, তাহলে কথা বলছেন না কেনো।

,,,,,,,,, কারন আমার রাগটা ঐ ছেলেদের উপর, এটুকু মেরে রাগ কমেনি আমার, আর তুই বার বার বলছিলি ওদের ছেড়ে দিতে। কই তুই বলবি আরো মারতে তা না। এখন রাগ যেহেতু যায় নি তাই কারো উপর তো দেখাতে হবে তাই। রিমানের উপর রাগ দেখাতে পারবো কারন তার মেজাজ এমনি খারাপ। তাই তোর উপর ঝাড়লাম।

,,,,,,,,,, এখনো রাগ করে আছেন।

,,,,,,,,, আমার রাগতো তোর অবস্থা দেখেই চলে গেছে। এভাবে কেও কান্না করে।

,,,,,,,,,, তো কি করবো আপনি কথা বলছিলেন না।

অয়ন ভাইয়া আমার দিকে কিছু ক্ষন তাকিয়ে আছে, তারপর আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে, আমার দুগালে হাত রেখে বলে।

,,,,,,,,,,,, আমি কথা না বললে এতো কষ্ট হয় বুঝি তোর।

আমি অয়ন ভাইয়ার কথা শুনে ফ্রিজ হয়ে গেছি। কি বলবো বুঝছিনা কারন আমি নিজেই জানি না।
অয়ন ভাইয়া হাত সরিয়ে আবার গাড়ি চালাতে থাকে।

আমরা কেও কারো সাথে কথা বলি না, আমার অনেক শান্তি লাগছে কারণ অয়ন ভাইয়া আমার সাথে রাগ করে নেয়। জানি না কেনো অয়ন ভাইয়াকে অনেক খুশি খুশি লাগছে। ঠোঁটে হালকা হাসি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে।

আমরা একটা বাড়ির সামনে এসে নামি। বাড়িটা বেশ সুন্দর আর বড়ো।

মেঘা,,,,,,,,,, ভাইয়া দেখ তোর বউয়ের বাপের টাকা আছে।

রিমান,,,,,,,, নিশ্চিত মেয়ে দেখতে পেত্নীর মতো হবে। আর ওর বাবা আমার বাবাকে টাকার লোভ দেখিয়ে বিয়েতে রাজি করিয়েছে। শুনেছি বাপের একমাত্র মেয়ে।

মেঘা,,,,,,,,,,, কেনো রে আমার বাবার কি কম আছে, আরে ফারিয়া ভাবি মার বান্ধবীর মেয়ে।

রিমান,,,,,,, কিসের ভাবী, এই বিয়ে আমি হতে দিবো না।

আমরা সবাই ভিতরে যাওয়ার জন্য বেল বাজায়। বেল বাঝাতেই ফারিয়ার মা বাবা আসে। খুব যত্নের সাথে ভিতরে নিয়ে যায়। সবাই কথা বলছে আমার নজর শুধু ঐ মেয়েকে খুঁজছে।

সাইলা বেগম,,,,,, কি বাবা তোমার ফারুকে খুঁজছ।

রিমান,,,,,,,,,, ফারু তাও আবার আমার (অভাক হয়ে)

সাইলা বেগম,,,,,,,, আর অবুঝ সাজতে হবে না, আমি এখনি ডাকছি।

মেয়ের মা ফারিয়াকে ডাকে। কালো থ্রি পিজ পড়ে একটা মেয়ে বেরিয়ে আসে। আমার চোখ তো ওখানেই আটকে যায়। দেখতে মাশাল্লাহ। কিন্তু তাতে আমার কি আমি বিয়ে করবো না মানে করবো না।

ফারিয়া এসে সবাইকে সালাম করে, আমরাও সালামের উত্তর নিয়। ফারিয়া অন্য সোফায় বসতে নেয়,,,

সাইলা বেগম,,,,,,, রিমানে পাশে বস,, এমন ভাব করছিস জেনো প্রথম বার দেখছিস।

রিমান,,,,,,, আন্টি কি বলেন আমরা প্রথম বারি তো দেখা করছি।

সাইলা বেগম,,,,,,,, প্রথম দেখা মানে, তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসো।

রিমান,,,,,,,,, হেহহহ এটা আবার কবে হলো।

সাইলা বেগম,,,,,,,, মানে কি ফারিয়া (রাগী চোখে তাকিয়ে)

ফারিয়া,,,,,,,, আ আ আরে মা রিমান মজা করছে, বলে ছিলাম না তোমাকে ওর সাথে এক দিন দেখা করিনি বলে রাগ করেছে। (রিমানের পাশে বসে তার হাত ধরে)

রিমান,,,,,,,,,, সবাই পাগল হয়ে গেছে নাকি, আমি তোমাকে কবে ভালোবাসতাম।

রেহান খান,,,,,,,, রিমান আর কতো নাটক করবি হয়েছে। মনে নেয় তুই একদিন ফারিয়ার সাথে আমাদের দেখা করিয়েছিলি।

রিমান,,,,,,,,,, বলো কি বাবা, আমি তো নিজেই প্রথম দেখলাম ফারিয়াকে, তোমাদের আবার কবে দেখা করালাম।

রেহান খান,,,,,,,, তুই চুপ থাক, ভুলে গেছিস।

রিমান,,,,,,,, বাবা আমি পাগল না আর পাগলের ডাক্তার ও না, তাই ফালতু কথা বলবা না, আরে আমি চিনি না একে।

ফারিয়া,,,,,,,,,,, তুমি এমন করছো কেনো, আচ্ছা সরি বলছি এবার হয়েছে। প্লিজ আর রাগ করে থেকো না।

ফয়সাল শেখ,,,,,,, বাবা আমার মেয়ের উপর আর রাগ করে থেকো না, ওর মন খারাপ দেখে আমার ভালো লাগে না।

রিমান,,,,,,,,,, আমি কিছু বুঝছি না, অয়ন তুই কিছু বল।

অয়ন,,,,,,,,,, তলে তলে টেমপু চালাও তরে তো আমি পড়ে বুঝামু।

রিমান,,,,,,, আরে আমি তলে তলে রিকশাও চালাই না।

মেঘা,,,,,,,, বেইমান বোন কেও কিছু বললি না।

রিমান,,,,,,, আরে,,

রেহান খান,,,,,,,,, চুপ থাক তুই, আমরা কথা বলছি না।

সবাই বিয়ের ব্যাপারে কথা বলছে, আমাকে কেও বলার সুযোগই দিচ্ছে না। আর আমিও বুঝতে পারছি না আমার সাথে কি হচ্ছে।

সাইলা বেগম,,,,,,,,,, আপনারা তো কিছু চান না, মেয়েকে এক কাপড়ে নিতে রাজি, তাহলে ওর নামে যে সম্পত্তি আছে সেটা নিশ্চয়ই জানেন, তাহলে ঐটাও আপনাদের লাগবে না। আল্লাহ তো কম দেয় নি আপনাদের তাই না। তাহলে বলছি কি সম্পত্তিটা বিয়ের আগে তোমার বাবা বা আমার নামে করে দিয়ো, না হলে ওদের কেমন লাগবে। সবাই বলবে যৌতুক নিয়েছে।

ফারিয়া,,,,,,,, কেনো বলবে, বাবা আমার সম্পত্তি আমি আমার নামপ রাখতে চাই, এতো তোমার কোনো সমস্যা আছে।

ফয়সাল শেখ,,,,,,,,, না মা আমার কি সমস্যা, আমার যা কিছু আছে সবিতো তোর।

সাইলা বেগম,,,,,,,, কিন্তু ওদের খারাপ লাগবে।

রেহান খান,,,,,, কেনো খারাপ লাগবে, চিন্তা করবেন না সম্পত্তি আপনার মেয়ের নামেই থাকবে আর কেও তা চাইবে না।

মা আর মেয়ের সম্পর্কটা কেমন জানি খটকা লাগলো। সাইলা বেগম রাগী ভাবে ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে, আর ফারিয়া কেমন ভাবে জেনো হাসি দিচ্ছে তার মার দিকে তাকিয়ে।

বিয়ের দিন তারিখ সব কিছু ঠিক হয়ে যায়, আমি কিছু বলতেও পারি নি কিছু বুঝতেও পারিনি। সব কিছু তাড়াতাড়ি করে, আমাকে জলদি জলদি নিয়ে আসে বাসায়। মনে হলো ট্রেন ছুটে যাচ্ছে।

বাসায় এসে কারো থেকে কোনো উওর পেলাম না, অয়ন আর মেঘা আমাকে বাগিয়ে বাগিয়ে মেরেছে।

রিমান,,,,,,,,, অয়ন আমার উপর বিশ্বাস নেয় তোর।

অয়ন,,,,,,,,,, না। সবাই কি মিথ্যা বলবে নাকি। তুই একা সত্য বাদী আর সবাই মিথ্যাবাদী।

রিমান,,,,,,,, হ

অয়ন,,,,,,,,,,, সর শালা জীবন কইটা সত্য কথা বলছোস।

রাতে,,,,,,,,
মেঘা,,,,,,

আমরা সবাই বসে আছি, বাবা টিভিতে খবর দেখছে, আমরা এমনি বসে আছি, রিমান ভাইয়া গালে হাত রেখে গভীর চিন্তায় মগ্ন।

এই মূহুর্তে একা খবর দেখে আমার শরীর ভয়ে কেঁপে উঠে। খবরে চারজনের লাশ দেখাচ্ছে। নির্মম ভাবে গলায় পোস দিয়ে হত্যা করা হয়েছে, হত্যা করে রাস্তায় ফেলে রেখেছে।

এই চারজন আর কেও না ঐ ছেলেগুলো। আমি অয়ন ভাইয়ার দিকে তাকায়, অয়ন ভাইয়াকে দেখে মনে হচ্ছে সেও অভাক সাথে রিমান ভাইয়াও।

মেঘা,,,,,,,, অয়ন ভাইয়া এসব কি।

অয়ন,,,,,,,, আমি কি করে বলবো, এদের মারলো কে।

এর থেকে ও বেশি ভয় আমার মোবাইলে আসা মেসেজ দেখে হচ্ছে।

চলবে,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ