একটু বেশিই ভালোবাসি পর্ব-০৫

0
3957

#একটু_বেশিই_ভালোবাসি
#Maishara_Jahan
Part…………….5

,,,,,,,,,,, কিছুই করতে পারবি না, শুধু শুধু ডায়লগ মেরে লাভ নাই।

,,,,,,,,,,, আআআ আব্বাআআআ ও আব্বা আমি বিয়ে করমু না তুমি কই (কান্না করে)

বাবা,,,,,,,,,,,, কি হয়ছে ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছিস কেনো।

রিমান,,,,,,,,,,, বাবা পিল্জ আমি বিয়েটা এখন করবো না, আমাকে একটু সময় দাও।

বাবা,,,,,,,,,,,, কতো টুকু সময় চায় তোর।

রিমান,,,,,,,,,,, এই ধরো এক দুই বছর।

বাবা,,,,,,,,,,, যা তোকে এক দুই ঘন্টা দিলাম।

রিমান,,,,,,,,,, বাবা তোমরা আমার সাথে এমন কেনো করছো।

বাবা,,,,,,,,,, রিমান কোনো কথা হবে না, সবাইকে বলা হয়ে গেছে বিয়েটা তোকে করতেই হবে। আর তোর মাকে বলেও লাভ নেয়।

রিমান,,,,,,,,,,,, (ঠিক আছে বিয়ে করার খুব শক না ফারিয়া, তাহলে বিয়ে করো পড়ে বুঝাবো রিমান কি জিনিস।

কিছুই করার নেয় আমি শুধু বাড়ির এদিক সেদিক ঘুরতে থাকি। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। আমি শুধু মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম অয়ন আমাকে কোনো মতে রেডি করে।

,,,,,,,,,
মেঘা,,,,, কাজের জন্য তো আজ অয়ন ভাইয়ার সাথে কথাও হলো না ভালো করে। তবে অয়ন ভাইয়া আমার জন্য একটা বক্স পাঠিয়েছে আগে খুলে দেখি কি পাঠিয়েছে।

আমি তাড়াতাড়ি করে বক্সটা খুলি। বক্সটা খুলেই অভাক হয়ে যায়। গায়ের হলুদে হলুদ রঙের লেহেঙ্গা, সাথে চুরি, পায়েল, কানের দুল। আমার বেশ ভালো লেগেছে।

খুশি মনে রেডি হয়ে নিলাম,লেহেঙ্গা পড়ে মাথার চুল গুলো খোঁপা করে চারপাশে ফুলদিয়ে আটকে নিলাম। সাজটা নরমাল রাখলাম এতো মেকাপ আমার পছন্দ না।

রেডি হয়ে লাফাতে লাফাতে নিচে চলে আসলাম, সব মেহমান চলে এসেছে। জোরে গান চলছে, রিমান ভাইয়াকে জোর করে বসিয়ে রেখেছে সাথে তার আরো অনেক বন্ধু আছে। কিন্তু আমার চোখ তো অন্য কাওকে খুঁজছে।

বান্ধবীদের সাথে কথা বলছি, একটা পিচ্চি এসে আমাকে বললো।

,,,,,,,,, আপু তোমাকে না ডাকছে ঐ কোনার রুমটায়।

বলে দৌড় দেয়।

,,,,,,, আমাকে ডাকছে।

আমি ঐ রুমটার সামনে যেতেই কে যেনো হাত ধরে টান দেয়। আমাকে রুমে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। আমি তাকিয়ে দেখি অয়ন ভাইয়া। আবার সেই রাগি লুক। এই ছেলেটা নিজেকে একটু শান্ত রাখতে পারে না।

মেঘা,,,,,,,,, আবার আমি কি করলাম

অয়ন,,,,,,,, তোকে চুল খোঁপা করতে কে বলেছে।

,,,,,,,,,, এখন এটাও একটা দোষ,সবাই এভাবেই খোঁপা করেছে তাই আমিও,,

,,,,,,,,,, তুই দেখিস নি লেহেঙ্গার গলাটা পিঠের দিকে কতো বড়, তোর পিঠ দেখাচ্ছিস সবাইকে। জানিস তোর দিকে কতো জনে কিভাবে তাকাচ্ছে।

ভাইয়ার কথা শুনে নিজের কাছে যেনো কেমন লাগছে, মনটা খারাপ হয়ে গেলো।

,,,,,,,,,,,, ঠিক আছে আমি চেঞ্জ করে আসছি (মন খারাপ করে)

,,,,,,,,,,, আর চেঞ্জ করা লাগবে না।

,,,,,,,,,, আপনার কথা শুনে এভাবে আর কারো সামনে যেতে পারবো না।

,,,,,,,,,,,,,, ভুলটা আমারি তাড়াহুড়োয় ভালো করে চেক করতে পারিনি। দাঁড়া আমি চুল গুলো ছেড়ে দিচ্ছি তাহলেই আর পিঠ দেখা যাবে না।

,,,,,,,,,,, ঠিক আছে আমি খুলে নিবো।

,,,,,,,,, তুই একা পারবি না মাথায় যে ডেকোরেশন করেছিস, পিছে ফির।

ভাইয়া আমাকে ধরে পিছনে ফিরিয়ে দেয়। আমার কেমন জানি লজ্জা লাগছে কারন এখন পিঠ তো ভাইয়াও দেখছে। আমার সামনে আয়না আমি আয়নার দিকে তাকায়।

আয়নায় তাকিয়ে দেখি ভাইয়া সেদিকে তাকাচ্ছে না, মনোযোগ দিয়ে আমার চুলের ক্লিপ খুলে দিচ্ছে। খোঁপা নিচের দিকে যখন ভাইয়া ক্লিপ গুলো খুলছিলো তখন অয়ন ভাইয়ার হাত আমার ঘাড়ে স্পর্শ হচ্ছিলো।

আমি দুহাত দিয়ে লেহেঙ্গা চেপে ধরি, অদ্ভুত একটা ফিলিংস গ্রাস করছিলো আমাকে। ভাইয়া আমার চুল গুলো খুলে দিয়ে, আমাকে সামনে ফিরায়। আমি এখনো চোখ বন্ধ করে আছি।

আমি চোখ খুলে দেখি অয়ন ভাইয়া অদ্ভুত নজরে তাকিয়ে আছে আমার দিকে, ভাইয়া আমার চোখের নিচে আঙুল দিয়ে কাজল ভরিয়ে আমার কানের পিছনে লাগিয়ে দেয়। আমি তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দৌড়ে বেরিয়ে যায়।

দৌড়ে গিয়ে একজনের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে নিয়, ওনি হাতে ধরে ফেলে। সাইডে তাকিয়ে দেখি অয়ন ভাইয়া। তাড়াতাড়ি হাত ছাড়িয়ে নিয়ে। আল্লাহ জানে অয়ন ভাইয়া দেখছে কিনা।

,,,,,,,,,,, তুমি ঠিক আছো তো।

,,,,,,,,,, জ্বী আমি ঠিক আছি, সরি আসলে আমি দেখতে পায়নি।

,,,,,,,,,,, ইটস ওকে। আমি নীল আর তোমার নামটা।

,,,,,,,,, আমি মেঘা।

,,,,,,,,, ওও মেঘা, অনেক বছর পড়ে দেখা হলো, কেমন আছো।

,,,,,,,,,,, ভালো, আমি কি আপনাকে চিনি।

,,,,,,,,,, ভুলে গেছো আমাকে, ছোট বেলা আমরা এক সাথে খেলতাম পড়তাম। তুমি আমি রিমান অয়ন নীল।

,,,,,,,,,,, আপনি কি আদনান আংকেলের ছেলে নীল।

,,,,,,,,,,,, চিনতে পেরেছো তাহলে।

,,,,,,,,,, (একে এখানে কে ডাকলো, আমার তো অয়ন ভাইয়ার কথা ভেবে ভয় লাগছে)

যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। আমাদের কথা বলতে দেখে অয়ন ভাইয়া তাড়াতাড়ি আসে।

অয়ন,,,,,,,,,, মেঘা কে ওনি।

মেঘা,,,,,,,,,,, অয়ন ভাইয়া আপনি আমার সাথে চলে কাজ আছে। (ভাইয়ার হাত ধরে)

নীল,,,,,,,,,,, ও অয়ন কেমন আছিস, অনেক বছর পর দেখা।

অয়ন,,,,,,,,,, কে আপনি।

মেঘা,,,,,,,,, কেও না চলেন।

নীল,,,,,,,,, আরে নিজের বড় ভাইকে চিনিস না, আমি নীল।

অয়নের চেহেরার হাব ভাব পাল্টে যায়। রাগে আগুন হয়ে যায়।

অয়ন,,,,,,,,,, তা এতো বছর পড়ে কি মনে করে।

নীল,,,,,,,,,, মেঘার বাবার সাথে আমাদের একটা বড়ো ডিল ফাইনাল হয়েছে, আর যখন জানতে পেরেছে ওনার বন্ধুর সাথে ডিল হয়েছে তখন কি আর ইনভাইট না করে পারে। আর আমিও ভাবলাম তোর সাথে অনেক দিন ধরে কথা হয় না, তাই দেখা করতে চলে আসলাম। ভাই গলা তো লাগা।

অয়ন,,,,,,,,,,, আমি তোর ভাই না, সো আমাকে ভাই বলার কোনো দরকার নেয়। পার্টিতে এসেছো ভালো কথা, চুপচাপ বসো, খাও আর শান্তি মতো চলে যাও। (রাগে)

নীল,,,,,,,,, নিজের ভাইয়ের সাথে কেও এভাবে কথা বলে,হতে পারি তোর সৎ ভাই কিন্তু আমি তোকে নিজের ভাইয়ের মতোই দেখি।

অয়ন,,,,,,,,, এই ভালো মানুষির নাটক না নিজের কাছে রাখো। আমাকে দেখানোর কোনো দরকার নেয়,আর না আমার সাথে কথা বলার কোনো দরকার আছে।

মেঘা,,,,,,,,,,, চলো ভাইয়া।

আমি ভাইয়াকে হাতে ধরে নিয়ে যায়। অনেক রাগ করে আছে ওনি।

মেঘা,,,,,,,,,, ভাইয়া একটা কথা বলি আজকে আপনাকে অনেক হেন্সাম লাগছে হলুদ পাঞ্জাবিতে। এখন যদি এমন মুখ করে থাকেন তাহলে এর উল্টোটা লাগবে। যান না গিয়ে রিমান ভাইয়ার সাথে বসেন, বিচারা একা একা বসে আছে।

অয়ন,,,,,,,, হুমম।

মেঘা,,,,,,,,, আরেকটা কথা।

,,,,,,,, কি বল।

,,,,,,,,, আমি কি নাচতে পারি, আমার একমাত্র ভায়ের বিয়ে। সবাই নাচবে আমি ছাড়া এটা কেমন লাগবে। আমার কতো শক ভায়ের বিয়েতে,,,

,,,,,, হয়েছি বুঝেছি। ঠিক আছে আজ তোকে মানা করবো না, তবে অশালীন নাচ দেওয়া যাবে না।

,,,,,,,,,, নাচতে পারবো এটাই বেশি।

,,,,,,,,,, ইচ্ছে মতো নেচে নে এই বিয়েতে, আর কার বিয়েতে নাচবি একটা মাত্র ভাই তোর।

,,,,,,,,,, কেনো আপনার বিয়েতে নাচতে দিবেন না।

,,,,,,,,,, আমার বিয়ে আমি অনুমতি দিলেও তুই নাচতে পারবি না।

,,,,,,,,,, কেনো।

অয়ন ভাইয়া হেঁসে চলে যায়। গিয়ে রিমান ভাইয়ার সাথে বসে।

রিমান,,,,,,,,, আল্লাহ মনে পড়লো আমার কথা, কেমনে পড়লো,কে মনে করিয়ে দিলো।

অয়ন,,,,,,,,,,,, শান্ত হ, তোর বিয়ের কাজেই ছিলাম।

,,,,,,,,,, রাখ তোর বিয়ে, একটা কথা শুন।

,,,,,,, হুমম বল।

,,,,,,,, আমি পালিয়ে যাবো, আমাকে সাহায্য কর।

,,,,,,,,,, সরি তুই বলতে লেইট করে ফেলেছিস।

,,,,,,,,, কেনো

,,,,,,,,, তোর আগে আংকেলে আমাকে বুক করে ফেলেছে৷

,,,,,,,,, তুই হোটেল নাকি যে তোকে বুক করে ফেলেছে।

,,,,,,,, আংকেল বলেছে তোকে যেনো কোনো উল্টো পাল্টে কাজ করতে না দিয়।

,,,,,,,, তোর কাছে আংকেল বড় না আমি।

,,,,,,,, তুই বড় তাই তো তোকে কোনো ভুল কাজ করতে দিতে চাই না।

,,,,,,,, হ জানি কেনো তুই বাবার কথা শুনছিস। আমাকে পট্টি পড়াতে হবে না। মনে রাখমু।

রিমান,,,,,,,,, সময় আমারো আসবো। তার মানে বিয়েটা করতেই হবে।

অয়ন,,,,,,,, মনে তো তাই হচ্ছে, তোর পরে কিন্তু আমার পালা।

রিমান,,,,,,,, বিয়ের জন্য এতো পাগল হয়ছোস কেন। আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়া ঠিক করতাছে না।

মেঘা,,,
গান বাঝনা শুরু হয়, আমিও নাচি, আজা নাচলে, নাচলে গানে। তারপর বান্ধবীরা মিলে ডোল বাঝে ডোল বাঝে গানে নাচি। মন তো আরো চাইছিলো কিন্তু ঐখানেই অয়ন ভাইয়া ফুল স্টপ লাগিয়ে দিলো।

আমি বসে আছি, আমার কাছে নীল এসে বসলো।

নীল,,,,,,,,,, অনেক সুন্দর ডান্স করো তুমি।

মেঘা,,,,,,,,, ধন্যবাদ (শুধু অয়ন ভাইয়া না দেখলেই হলো)

নীল,,,,,,,, কি হলো আমার সাথে কথা বলতে মন চাইছে না, শুধু এই জন্য যে আমি অয়নের সৎ ভাই। এতে আমার কি দোষ, অয়ন ও আমাকে ভুল বুঝে আর তুমিও।

মেঘা,,,,,,,,,, না না,, এমন কোনো বেপার না। আসলে অয়ন ভাইয়ার মাথাটা একটু গরম থাকে, পরে ঠিকি বুঝতে পারবে।

,,,,,,,,, তোমার কথায় জেনো সত্যি হয়। তা এখন কি করো।

,,,,,,,,, অনার্স ১ম বর্ষে পড়ি। আপনি।

,,,,,,,,, বাবার ব্যাবসা সামলাচ্ছি। আর অয়ন কি করে।

অয়ন,,,,,,,,, আমারো একটা বড়ো কোম্পানি আছে। যেটা আমি নিজের ক্ষমতায় কিনেছি। আর সেই কোম্পানি এখন আপনার বাবার কোম্পানিকে টক্কর দিতে পারবে।

নীল,,,,,,,,, ওয়াও গুড জব অয়ন।

অয়ন,,,,,,,,, তোমার বাবাকে বলে দিয়ো, যাকে ফেলে চলে গেছিলো সে ইচ্ছে করলে তার বিশাল কোম্পানি ফেলে দিতে পারে।

নীল,,,,,,,,,, তুই নিজেই বলে দে,সামনে দেখ বাবা মা আসছে।

অয়ন সামনে তাকিয়ে দেখে তার বাবা আর সৎ মা আসছে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুব কষ্ট হচ্ছে অয়নের। তারা অয়নের সামনে আসে।

মিঃআদনান,,,,,,, কেমন আছো অয়ন।

অয়ন,,,,,,,,,, ও চিনতে পেরেছেন আমাকে, তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না, কি সৌভাগ্য আমার।

মিঃআদনান,,,,,,,, কেমন আছো অয়ন।

অয়ন,,,,,,,, যেমন রেখে গেছিলেন তার থেকে অনেক ভালো।

রাফিদা,,,,,,, একদম বদলাও নি, ঠিক আগের মতোই আছো। কি দরকার ছিলো কথা বলার।

অয়ন,,,,,,,,,,, আপনি ও বদলাননি আগের মতোই আছেন।

বলে চলে যায়, সেখান থেকে। আমিও ভাইয়ার পিছনে পিছনে যায়। ভাইয়া দূরে গিয়ে বসে। সেখান থেকে দেখছে আংকেল কেমন নীল ভাইয়ার তারিফ করছেন সবার সামনে, কাঁধে হাত রেখে কথা বলছে।

আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে নীল ভাইয়া এটা এসব ইচ্ছে করে করছে, এটা দেখানোর জন্য যে, সে তার বাবার কতোটা প্রিয়। অয়ন ভাইয়া এসব আর দেখতে না পেরে উঠে চলে যায়।

রিমান,,,,,,,, অয়নের খুব কষ্ট হচ্ছে, হয়তো সে দেখাচ্ছে না, তবে তার ভিতরটা জ্বলে যাচ্ছে। আমাকে এখান থেকে যেতে দিবে না, তুই গিয়ে দেখ। মাকে বলে যা রাত অনেক হয়েছে তাই ঘুমাতে যাচ্ছিস।

মেঘা,,,,,,,,,, ঠিক আছে।

আমি মাকে বলে, উপরে চলে যায়। গিয়ে দেখি অয়ন ভাইয়া রুমে বাতি নিবিয়ে বসে আছে। আমি গিয়ে তার পাশে দাঁড়ায়।

মেঘা,,,,,,,,,, ভাইয়া পিল্জ মন খারাপ করে থেকো না, তুমিই তো বলো খারাপ অতীত কোনো দিন মনে রাখতে নেয়। তুমি ও ভুলে যাও মনে করো কিছুই হয়নি।

অয়ন ভাইয়া আমার কোমর জরিয়ে ধরে। আমি দাঁড়িয়ে আছি, অয়ন ভাইয়া বসে আমাকে জরিয়ে ধরে। অয়ন ভাইয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

অয়ন,,,,,,,, কি করে ভুলে যাবো, যে বাবাকে আমি আমার হিরো মানতাম সে আমাদের ছেড়ে চলে যায়। আর তার কারনেই আমার মা হার্ট অ্যাটাক করে। এতোটা বছর একা একা কাটিয়েছি। আমার খবর নেওয়ার প্রয়োজন বোধ ও করেনি।

যেখানে আমার হওয়ার কথা ছিলো সেখানে আজ নীল। ওনাকে দেখে আমার পুরানো সব কষ্টের স্মৃতি বেসে উঠছে। মেঘা আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে, আজ মার কথা ভিষণ মনে পড়ছে।

আমি অয়ন ভাইয়াকে ছাড়িয়ে, ওনার চোখের পানি মুছে দিয়, আমারো অনেক কান্না পাচ্ছে।

মেঘা,,,,,,,,,, পিল্জ কান্না করো না, হয়তো ওনার ও কিছু কারণ ছিলো৷

অয়ন,,,,,,,,,, তুই কিছুই জানিস না। নীল আর তার মা আমার বাবার আগের বউ ছিলো, সেটা মা জানতো না। বাবা নীল আর তার মাকে আমাদের বাসায় আশ্রিতা হিসাবে এনেছিলো। কিছু বছর পড়ে জানতে পারি ওনি বাবার প্রথম স্ত্রী।

ওনি বাবাকে হুমকি দেয়, আমাকে আর মাকে বের না করে দিলে পুলিশের কাছে যাবে আর ওনার কোম্পানি ডুবিয়ে দিবে, সেই ভয়ে ওনি আমাদের বপর করে দেয়। মা সহ্য না করতে পেরে মারা যায়। আর আমি ১২ বছর বয়সে এতিম হয়ে যায়।

কি করে ভুলবো এতো কিছু। কোন বাবা তার সন্তানের সাথে এমন করে। একটা দিনের জন্য দেখতে আসেনি আমাকে। আমি মরে গেছি নাকি বেঁচে আছি সেটা জানার প্রয়োজন বোধ করেনি।

কি করে মাফ করবো বলতো। আজ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। আমি চাই না এদের কথ মনে করে কষ্ট পেতে তাও বুকের মধ্যে ব্যাথা হচ্ছে।

আমি অয়ন ভাইয়ার পাশে বসে ওনাকে জরিয়ে ধরি। অয়ন ভাইয়া কাঁদতে থাকে। আমি অয়ন ভাইয়াকে কখনো কাঁদতে দেখিনি। আমারো চোখে পানি চলে আসে।

মেঘা,,,,,,,,,,, এসব চিন্তা করো না, ঘুমিয়ে পড়ো রাত অনেক হয়েছে।

,,,,,,,,,, পিল্জ আমাকে ছেড়ে যাস না, মনে হয় না আমার আর ঘুম আসবে।

,,,,,,,, কেনো আসবে না, আমি কোথাও যাবো না, আমি শুয়ে পড়েন আপনার ঘুম না আসা পর্যন্ত আমি এখানেই আছি।

অয়ন ভাইয়া আমার কোলে মাথা রেখে, আকড়ে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে, কিন্তু চোখে পানি ঠিকি পড়ছে৷

অয়ন মেঘার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যায়, আর মেঘা খাটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে যায়। রিমান অনেক রাতে দেখতে আসে অয়নকে দেখে ওরা এভাবে ঘুমিয়ে আছে, রিমান হালকা হাসি দিয়ে চলে যায়।

সকালে,,,,,,

সকালে জোরে দরজা লাগানোর শব্দে অয়নের ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখে সে মেঘার কোলে শুয়ে আছে আর মেঘাও খাটে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে।

অয়ন উঠে মেঘাকে আস্তে ঠিক করে শুয়ায়, কিছু খন মেঘার দিকে তাকিয়ে থেকে ওর কপালে একটা কিস দিয়ে উঠে।

অয়ন,,,,,,,,,, এমন কেনো মনে হলো কেও একজন সজোরে দরজা লাগিয়েছে। কে এসেছিলো এই রুমে, বা কেও দরজা খুলে আমাদের এভাবে দেখে রাগে দরজা জোরে লাগিয়েছে।

কিন্তু কে এমন করবে, রিমান এমন করবে না। আংকেল আন্টি দেখলে রাগে হয়তো আমাদের উঠেয়ে জিজ্ঞেস করতে পারে, কিন্তু দরজা লাগিয়ে চলে যাবে না। দূরর হয়তো বেশিই ভাবছি। কয়টা বাঝে। ১০ বাঝে আমাকে কেও ডাক দিলো না।

চলবে,,,,,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ