একটু বেশিই ভালোবাসি পর্ব-০৬

0
3494

#একটু_বেশিই_ভালোবাসি
#Maishara_Jahan
Part…………6

কিন্তু কে এমন করবে, রিমান এমন করবে না। আংকেল আন্টি দেখলে রাগে হয়তো আমাদের উঠেয়ে জিজ্ঞেস করতে পারে, কিন্তু দরজা লাগিয়ে চলে যাবে না। দূরর হয়তো বেশিই ভাবছি। কয়টা বাঝে। ১০ বাঝে আমাকে কেও ডাক দিলো না।

যায় নিচে গিয়ে দেখি কি অবস্থা। নিচে গিয়ে মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো। নীল বসে বসে চা খাচ্ছে।

অয়ন,,,,,,,,, বিয়ে হতে এখনো সময় আছে, এতো তাড়াতাড়ি এখানে।

নীল,,,,,,,,,,, কাল অনেক রাত হয়ে যায় তাই আংকেল আর যেতে দেয়নি। এক বারে বিয়ে সেরেই যাবো। অয়ন তুই ও তো যাসনি।

রিমান,,,,,,,,,,,, যাওয়ার নিয়মটা বাহিরের মানুষের জন্য। এটা অয়নের বাড়ি ও যখন খুশি আসবে যাবে এটা ওর ইচ্ছে। তবে এই নিয়মটা সবার জন্য না।

নীল,,,,,,,,,,, রিমান তোমার সাথে তো ভালো করে কথা হয়নি কালকে, তা আমার কথা মনে আছে তো।

রিমান,,,,,,,, মনে থাকবে না আবার, ছোট বেলায় একবার গাছে উঠতে গিয়ে তোমার প্যান্ট ফেটে গেছিলো তাই না (জোরে জোরে হেঁসে)

নীল,,,,,,,,, ভালো কিছু মনে রাখতে পারো না।

রিমান,,,,,,,,, দুঃখের বিষয় তো এটাই তোমাকে নিয়ে ভালো কিছু মনে রাখার মতো নেয়। আচ্ছা তুমি বসো আমার অয়নের সাথে কিছু কথা আছে। চল অয়ন।

অয়ন,,,,,,,,, হুমম চল।

রিমান,,,,,,,,,, এর সাথে বেশি কথা বলার কোনো দরকার নেয়, যা তুই ফ্রেশ হয়ে আয়।

,,,,,,,,,,

মেঘা ঘুম থেকে উঠে কয়েকটা টানা দেয়। তারপর আশেপাশে তাকায়।

,,,,,,,,,,,, আমি অয়ন ভাইয়ার রুমে ঘুমিয়ে পড়েছি, কিন্তু অয়ন ভাইয়া কোথায়। বাড়ি ভড়া মানুষ কেও দেখিনি তো, না না দেখলে এতো ক্ষনে গন্ডগোল লেগে যেতো৷ তবে আমাকে সাবধানে রুম থেকে বের হতে হবে কেও দেখলে সমস্যায় পড়ে যাবো।

আমি বিছানা থেকে এক পা বাড়ায় নামার জন্য, সামনে তাকিয়ে দেখি অয়ন ভাইয়া গোসল করে বের হয়। শুধু একটা টাওয়াল পড়ে।

আমার চোখ সেখানেই আটকে যায়, সাদা গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে, চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ছে।

অয়ন,,,,,,,,,,,,, এমন করে কি দেখছিস। (বেকা হাসি দিয়ে)

ভাইয়ার কথা শুনে অন্য দিকে চোখ সরিয়ে নিয়।

মেঘা,,,,,,,,, কই কিছু নাতো। আমি এখনি চলে যাচ্ছি।

বলে তাড়াহুড়ো করে যেতে নিয় আর, নিজের পায়ের সাথে পা বেঝে পড়ে যেতে নিয়। তখনি অয়ন ভাইয়া আমার হাত ধরে কিন্তু কোনো কাজ হয় না, দুজনি খাটের উপর পড়ে যায়।

অয়ন ভাইয়া আমার উপরে পরে। আমি চোখ বন্ধ করে আছি। ভাইয়ার চুলের ফোঁটা ফোঁটা পানি আমার মুখে গলায় পড়ছে। পড়ন্ত প্রতিটা ফোঁটা আমার গায়ে শিহরণ জাগাচ্ছে।

আমি চোখ খুলি, অয়ন ভাইয়া আমার খুব কাছে। অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। তার চোখ থেকে চোখ সরানো যাচ্ছে না।

এই সময় রিমান দরজা খুলে, এমন অবস্থা দেখে দরজা বন্ধ করে আবার তাড়াতাড়ি দরজা খুলে।

রিমান,,,,,,,,,,,, ঐ কি হচ্ছে।

মেঘা অয়নকে জোরে ধাক্কা মেরে উঠে দাঁড়ায়, অয়ন ও উঠে।

মেঘা,,,,,,,,,, ভাইয়া কিছু হচ্ছিলো না।

রিমান,,,,,,,,,,, কিছু না হওয়ার নমুনা তো দেখলাম।

অয়ন,,,,,,,,,, তুই যেমন ভাবছিস তেমন কিছুই না।

রিমান,,,,,,,,,,, আচ্ছা তাহলে কি তুই শুধু টাওয়াল পড়ে মেঘাকে সাঁতার কাটা শিখাচ্ছিস। খবরদার বিয়ের আগে যদি আমার বোনকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছিস তো।

অয়ন,,,,,,,,,, তোর ডায়লগ দেওয়া শেষ হয়েছে।

রিমান,,,,,,,,,, হুমম।

অয়ন,,,,,,,,, তাহলে যা এখান থেকে।

রিমান,,,,,,,,,, যাবোই তো, চল মেঘা।

রিমান মেঘার কাঁধে হাত রেখে ধরে ধরে নিয়ে যায়।

মেঘা,,,,,,,,,,, ভাইয়া আমার পা ভেঙে যায় নি যে, তুমি এভাবে নিয়ে যাচ্ছো।

রিমান,,,,,,,,,, ঠিক আছে ছেড়ে দিলাম, সোজা তোর রুমে যাবি এদিক সেদিক তাকানোর কোনো দরকার নেয়।

মেঘা,,,,,,,,,, হুমম বুঝেছি।

আমি যাচ্ছি আমার রুমে, সামনে নীল ভাইয়া এসে দাঁড়ায়। ভাইয়া কেমন অদ্ভুত ভাবে আমাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখছে। যেটা আমার একদম ভালো লাগছে না।

নীল,,,,,,,,,,, কোথায় যাচ্ছো।

মেঘা,,,,,,,,,, আমার রুমে।

নীল,,,,,,,,,, কোথায় ছিলে এতো ক্ষন।

মেঘা,,,,,,,,, এমনি আশেপাশেই ছিলাম, আমি এখন আসি, অনেক কাজ আছে।

আমি সেখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যায়।

,,,,,,,,

ফারিয়া,,,,,,,,, আজ আমার বিয়ে ভাবতেই অদ্ভুত লাগছে। এমন পরিস্থিতিতে আমার বিয়ে হবে ভাবতেই পারিনি। জানি না রিমান আমাকে মেনে নিবে কিনা। তবে আমি চেষ্টা করবো।

আর তারপরেও যদি আমার জন্য তার মনে কোনো ভালোবাসা না জাগে তাহলে কাজ হয়ে গেলে তোমার জীবন থেকে চিরকালের মতো সরে যাবো।

মা ঠিকি বলতো ভালোবাসা যে কোনো সময় যে কারো জন্য জাগতে পারে। রিমান আমার মনের মতো, ঠিক যেমনটা আমি চাইতাম। হয়তো আমি ওর মনের মতো না।

,,,,,,,

আমি সোফায় বসে আছি, তখনি আমার জন্য একটা পার্সেল আসে, আমি গিয়ে সেটা নিয়।

মেঘা,,,,,,,,,, আমার জন্য কে আবার কি পাঠালো।

বাক্সটা খুলে দেখি, একটা ড্রেস, নীল কালার একটা গ্রাওন। আমি প্রথমে ভাবি এটা অয়ন ভাইয়া পাঠিয়েছে, কিছু এটার সাথে থাকা কাগজটা পরে ভয় লাগছে।

আমি সাথে সাথে বক্স নিয়ে অয়ন ভাইয়া আর রিমান ভাইয়ার কাছে যায়।

রিমান,,,,,,,,,,, ভুত দেখছিস নাকি, এমন দৌড়ে এলি।

মেঘা,,,,,,,,, ভাইয়া বক্স (বক্সটা রিমান ভাইয়ার দিকে বাড়িয়ে)

রিমান,,,,,,,, আমার বিয়ে তাই আমার জন্য গিফট এনেছিস, সো সুইট।

বক্সটা হাতে নিয়ে রিমানের চোখ ছোট ছোট হয়ে যায়।

রিমান,,,,,,,,, আমি কি এখন মেয়েদের জামা পড়বো৷

মেঘা,,,,,,,,,, এটা আমার জন্য।

রিমান,,,,,,,, এটা তোর তো ঢং করে আমাকে দেখাতে এলি কেনো।

অয়ন উঠে কাপড়টা বের করে।

অয়ন,,,,,,,,, এসব জামা পড়া যাবে না, এসব হাতা ছাড়া কাপড় কিনার সাহস হলো কি করে তোর৷

রিমান,,,,,,,,, শুরু হয়ে গেছে দাদি গিরি।

মেঘা,,,,,,,, দূররর এটা আমি কিনি নাই। কেও একজন পাঠিয়েছে সাথে এই কাগজটাও।

অয়ন,,,,,,,,, দে দেখি কাগজটা।

অয়ন ভাইয়া কাগজটা হাতে নিয়ে পড়তে থাকে।

জান পাখি এটা তোমার জন্য, আজকে তুমি এটা পড়লে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগবে। আর হ্যাঁ তুমি কি করো না করো সব কিন্তু আমি খবর রাখি। তাই আমার হিংস্র রুপটা তোমাকে দেখাতে চাই না। সো একটু বুঝে শুনে চলো। love you.

অয়ন ভাইয়া কাগজটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে দেয়। আর জামাটা নিয়ে বাহিরে যায়। আমি আর রিমান তার পিছন পিছন যায় ।

অয়ন ভাইয়া বাগানে গিয়ে জামাটা ফেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।

রিমান,,,,,,,,, আহারে যে দিছে তার কতো গুলো টাকা নষ্ট হয়ে গেলো।

আমি আর অয়ন ভাইয়া ওর দিকে তাকায়।

রিমান,,,,,,,,,, নষ্ট হোক তাতে আমার কি। বিয়ে আমার আমাকে গিফট না দিয়ে তোকে কেনো দেয়।

অয়ন,,,,,,,,, আমি এটা বুঝলাম না এই সাইকো তোর উপর নজর রাখে কিভাবে, কোথা থেকে।এক বার হাতের কাছে পেলে আমি কতো বড় সাইকো সেটা দেখিয়ে দিবো।

নীল,,,,,,,,, কি হচ্ছে এখানে।

রিমান,,,,,,,, কিছুনা ময়লা আবর্জনা পোড়াচ্ছি।

নীল গ্রাওনটার দিকে তাকিয়ে থাকে।

অয়ন,,,,,,,,, মেঘা ভিতরে গিয়ে রেডি হয়ে নে, মেয়েদের বাড়িতে যেতে হবে না আজকে, রিমানের বউ আনতে৷

রিমান,,,,,,,,, শুনতে তো ভালো লাগছে বউ আনতে যাচ্ছি, কিন্তু আমাকে জোর করে মিথ্যা কথা বলে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাই এই বিয়ে আমি মানি না।

অয়ন,,,,,,,,, তোর মানা না মানায় কিছু হয় না। চল তোকেও তো রেডি হতে হবে।

মেঘা,,,,,,,,,হুমম আমিও এখনি রেডি হতে যাচ্ছি।

সন্ধ্যায়,,,,,,,,,,

রিমান ভাইয়া শেরওয়ানি পরেছে, আমি কালো ডিজাইন করা লেহেঙ্গা প্লাজো আর থ্রি-পিজ পড়ি, চুল ছেড়ে হালকা সাজ দিয়ে নিচে নামছি। অয়ন ভাইয়া তাকিয়ে ছিলো দেখে অনেকটা লজ্জা পেয়েছি কিন্তু সাথে নীল ভাইয়াও তাকিয়ে ছিলো।

রিমান,,,,,,,, ওহহহও আজ তোকে একদম রাজকুমারী কুত্তীর মতো লাগছে।

মেঘা,,,,,,,,, আর তোকে বান্দরের মতো। (তবে অয়ন ভাইয়াকে আজ সেই লাগছে, সেম কালার, কালো শেরওয়ানিতে।)

অয়ন,,,,,,,,,,, এতো গাঢ় করে ঠোঁটে লাল লিপস্টিক লাগানোর কি দরকার ছিলো।

মেঘা,,,,,,,,,,, এতো দিকে নজর যায় আপনার।

রিমান,,,,,,,, ও ভাই আজকে অন্তত শান্তি দে আমার বোনটারে, কি সব সময় ওর পিছনে গেলে থাকিস।

অয়ন,,,,,,,,,, আমি ওর ভালোর জন্যই বলছি, ও তোর বোন হলে আ,,,

রিমান,,,,,,,, ও আমার বোন হলে তোরও তো কিছু লাগে, এ কথাটা আর শুনতে মন চাই না। চল চল গাড়িতে গিয়ে বসি না হলে বাবা আবার চেঁচানো শুরু করে দিবে।

অয়ন,,,,,,,,,, আমরা যাচ্ছি তুই আয়।

মেঘা,,,,,,,, ঠিক আছে।

তখন আবার নীল আসে, নীল নীলের মতোই নীল শেরওয়ানী পড়ে৷

নীল,,,,,,,,,,, আজ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।

মেঘা,,,,,,,,,, ধন্যবাদ (এনার ঠোঁটে হাসি থাকলেও চোখ দেখে ভয় করছে, জানি না কেনো) আচ্ছা আপনি আসেন, আমি যাচ্ছি।

আমরা সবাই গাড়িতে বসি, অয়ন ভাইয়া আর রিমান ভাইয়া আরো এক ভাইয়া সাজানো গাড়িতে বসে। আমি অন্য গাড়িতে বসি।

রিমান,,,,,,,,, ভাই এখনো সুযোগ আছে আমাকে পালাতে দে না, আমার বিয়ে করতে ভয় করছে।

অয়ন,,,,,,,,, সারা জীবন বিয়ে বিয়ে করলি আর এখন বিয়ে হয়তাছে আর পালানোর কথা কস৷

রিমান,,,,,,,, তুই না আমার ভালা বন্ধু কিছু একটা কর।

অয়ন,,,,,,,,,, তোর জন্য একটা জিনিস করতে পারি।

রিমান,,,,,,, কি

অয়ন,,,,,,,,,, দোয়া।

রিমান,,,,,,,,,, লাগবো না তোর দোয়া।

বিয়ের বাড়িতে পৌঁছে যায়। গাড়ি থেকে বের হতেই কতো মানুষ দৌড়ে এলো। সব নিয়ম কানুন পালন করে আমাকে ভিতরে নিয়ে বসানো হলো।

,,,,,,
১ম বোন,,,,,,,,, হায় এতো হেন্সাম ডক্টর কোথা থেকে পেলিরে। ইশশ দুলাভাইটা কি হেন্সাম।

২য় বোন,,,,,,,, এমন একটা ছেলে পেলে তো কাজি হয়তো। তোর আগে যদি আমার দেখা হতো রিমান ভাইয়ের সাথে তাহলে তোর জায়গায় আমি থাকতাম।

৩য় বোন,,,,,,,, হার্টের ডক্টর হার্ট চুরি করে নিয়ে গেছে। আসলেও তোর কপালটা খুব ভালো রে পুরোই হিরো পাইছোস।

ফারিয়া,,,,,,,,(সব গুলোর শকুনের নজর, আমার ডক্টরকে নজর লাগিয়ে দিচ্ছে ইশশ)

৪র্থ বোন,,,,,, ইয়ার দুলা ভায়ের সাথে তার একটা বন্ধু এসেছে পুরাই আগুন। এক আগুনকে তো তুই জিতে নিলি আরেকটাকে লাইন তো মারায় যায়।

ফারিয়া,,,,,,,,,, তোদের কথা শুনতে আর ভালো লাগছে না, আর আমাকে নিয়ে যাবি না।

বোন,,,,,,,, পাগল হয়ে গেছে বিয়ে করার জন্য,,, চল নিয়ে যাচ্ছি।

আমাকে নিয়ে যায়, যেখানে রিমানকে বসানো হয়। রিমান আমার সামনে বসা, আমাদের মাঝখানে পাতলা একটা সাদা কাপড় দেওয়া, সব কিছু দেখা যাচ্ছে। চারদিকে সাদা গোলাপ দিয়ে সাজানো।

ফারিয়া,,,,,,,,,(হায় আমার ডক্টরটাকে কতো হেন্সাম লাগছে, মনে হয় ক্রাস খেলাম)

রিমান,,,,,,,,,,,, (লাল লেহেঙ্গায় লাল পরী লাগছে, চোখ সরছে না। সত্যি একটু বেশিই সুন্দর লাগছে)

যখন বিয়ে পড়ানো হয় তখন আমার নজর শুধু ফারিয়ার দিকে ছিলো। তাই কখন কবুল বলে ফেললাম নিজেই বুঝতে পারিনি।

বিয়ে পড়ানোর পড়ে বসে আছি, আমার সাথে ফারিয়া বসে আছে, সাথে আরো কতো গুলো বদমাইস শালিরা। জানি না এই অয়ন কোথায় গেলো।

ফারিয়া,,,,,,,,,,,, থ্যাংস।

রিমান,,,,,,,,,, কেনো।

ফারিয়া,,,,,,,, এতো কেয়ার করে ঔষধ গুলো পাঠানোর জন্য।

রিমান,,,,,,,,, এটা একজন ডক্টর এর কর্তব্য।

ফারিয়া,,,,,,, আচ্চা আর কতো মেয়েকে কর্তব্য দেখাতে গিয়ে এমন করেছেন।

রিমান,,,,,,,,,, বিয়ে হলো এক মিনিট ও হলো না আর এখন থেকেই সন্দেহ শুরু।

ফারিয়া,,,,,,, মেয়েদের সবাবি এমন হয়।

,,,,,,,

আমি খেতে বসেছি, অনেক ক্ষুধা লাগছে। তবে কিভাবে খাবো ভাবির ভায়েরা আমার একটু বেশিই কেয়ার করছে।

কেও এটা এনে দিচ্ছে কেও ঐটা এনে দিচ্ছে , এ জিজ্ঞেস করছে কিছু লাগবে কি না ও জিজ্ঞেস করছে কিছু লাগবে কি না, এভাবে কি খাওয়া যায়।

মানে আমার সামনে কয়েক জন আছেই। সত্যি বলতে একটু ভালোও লাগছে, নিজেকে একজন বিশেষ মানুষ মনে হচ্ছে। তখনি অয়ন ভাইয়া আসে।

অয়ন,,,,,,,, আপনারা এখান থেকে জান, এখানে সব কিছু আছে লাগলে ও নিয়ে খাবে, না হলে আমি আছি হুমম।

অয়ন ভাইয়া যেভাবে বলে আমার নিজেরি উঠে যেতে মন চাইছে।

অয়ন,,,,,,,,,, এখন দেখি কে আসে এখানে।

মেঘা,,,,,,,,, আপনি রিমান ভাইকে একা ফেলে চলে এসেছেন।

অয়ন,,,,,,,, সোজা সোজি বল না, আমি এসেছি তাই তুই ছেলেদের সাথে কথা বলতে পারবি না। চুপচাপ খাবার খা।

মেঘা,,,,,,,,,,, অদ্ভুত আপনি।

অয়ন,,,,,,,,, জানি আমি।

বিয়ে মিটে গেছে এখন আমরা ভাবীকে নিয়ে চলে যাবো। ভাইয়া আর ভাবি এক গাড়িতে বসেছে, সেখানে আর কেও বসে নি।

আর অন্য গাড়িতে অন্যরা। আরেকটা গাড়িতে আমরা বেশি মানুষ হয়ে গেছি, যেখানে তিনজন বসা যায় সেখানে পাঁচ জন। অয়ন ভাইয়ার পাশে আমার এক বোন বসে ছিলো।

কেমন লেগে আছে আমি তাকে জোর করে সরিয়ে সেখানে আমি বসি। অনেক চিপাচিপি হচ্ছে। আমি একদম অয়ন ভাইয়ার সাথে মিশে যাচ্ছি। যতোই নিজেকে সরানোর চেষ্টা করছি তোতই আরো মিশে যাচ্ছি।

আর অয়ন ভাইয়া একটু চাপার চেষ্টা ও করছে না, আমি ওনার থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করছি। হঠাৎ করে অয়ন ভাইয়া পিছন থেকে আমার কোমরে ধরে, আমার পুরো শরীর কেঁপে উঠে। আমি একদম সোজা হয়ে যায়।

অয়ন,,,,,,,,,, চুপচাপ এভাবেই বসে থাক, এতো নড়াচড়া করবি না।

আমি একদম পাথরের মতো বসে আছি,আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে, মনে হচ্ছে কাঁপছি আমি।

,,,,,,,,,

ফারিয়াকে কান্না করতে দেখে ভালো লাগছে না।

রিমান,,,,,,,,, ফারিয়া প্লিজ কান্না করো না, আমি তো আছি।

ফারিয়া আমার দিকে অশ্রু ভরা চোখ নিয়ে তাকায়। তারপর আবার নিচের দিকে তাকিয়ে কান্না করতে থাকে।

রিমান,,,,,,, আচ্ছা তুমি ঠিক কি কারনে কান্না করছো একটু বলো তো।

,,,,,কেনো আবার বাবা ছেড়ে এসেছি কষ্ট হচ্ছে তাই।

,,,,,,,ও আচ্চা, আমাদের এখানে একটা মেয়ে আছে, সে তার বিয়ের দিন এমন কান্না করছিলো যে, কান্না করতে করতে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অবস্থা, সে কিছুতেই যাবেনা, জোর করে তাকে দিয়ে আসা হয়, যারা জোর করে গাড়িতে বসাই তাদের কয়েকজনের জামা টেনে ছিড়ে ফেলে।

,,,,,,, মেয়েটা মনে হয় তার বাবা মাকে অনেক ভালোবাসতো।

,,,,,,, আমরাও এটাই ভেবে ছিলাম, পড়ে গিয়ে জানতে পাড়ি, মেয়ে এ জন্য কাঁদছিলো কারন মেয়ের জামাই টাকলা ছিলো।

এটা শুনে ফারিয়া আর রিমান হাসতে থাকে।
,,,,,,,,,

অনেক রাত হয়ে যায়, রাত প্রায় ২ টার বেশি। আমি অয়ন ভাইয়াকে ধরে ঘুমিয়ে যায়। কখন চোখটা লেগে এসেছে বুঝতেই পারিনি। গাড়ি এসে আমাদের বাসায় এসে থামে।

অয়ন ভাইয়া আমাকে জাগায়। আমি প্রায় অয়ন ভাইয়ার বুকে মাথা রেখে শুয়ে ছিলাম।

মেঘা,,,,,,,,, আপনি কি একটুও ঘুমাননি। (অর্ধেক ঘুমে)

অয়ন,,,,,,,,, শরীরে বার বার কারেন্ট লাগলে কার ঘুমে ধরবে।

মেঘা,,,,,,,,,,,, কারেন্ট লাগছিলো কোথা থেকে।

অয়ন,,,,,,,,,, পাগল তুই বুঝবি না, খুব তাড়াতাড়ি বুঝিয়ে দিবো।

আমরা সবাই ভাবিকে নিয়ে ঘরে যায়, কেমন পোড়া পোড়া গন্ধ করছে। সবাই ভালো করে দেখছে তার টার পুড়ে গেলো নাকি। আমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে আমার রুমে যায়। গিয়েই এক চিৎকার দিয়।

সবাই আমার রুমে আসে, সবাই অভাক হয়ে যায়, এমন কাজ কে করলো। আমার খুব কান্না পাচ্ছে। আমি কান্না করেই দিয়।

অয়ন,,,,,,,,,,, ছাড়বো না এই সাইকোকে। এর সাহস কি করে হলো এখানে এসে এমন করার। (রাগে)

চলবে,,,,,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ