একটু বেশিই ভালোবাসি পর্ব-০৮

0
3037

#একটু_বেশিই_ভালোবাসি
#Maishara_Jahan
Part……………8

বাবা,,,,,,, জানিস তো তের বোনের উপর কার নজর পড়েছে তাই ওর বিয়ে ঠিক করেছি, বড়ো এসপির সাথে, এখন কোনো গুন্ডা আমার মেয়েকে কিছু করতে পারবে না।

রিমান,,,,,,,,, এটা অয়ন শুনলে কি হবে।

মেঘা,,,,,,,, বাবা আমি এখন বিয়ে করবো না।

রিমান,,,,,,,, আচ্চা আমি এটা বুঝলাম না, তুমার কাছে কি বউ, জামাই এর কালেকশন আছে, নাকি তুমি বউ জামাই এর ব্যাবসা করো, না মানে এতো তাড়াতাড়ি আমার জন্য বউ আর মেঘার জন্য জামাই কোথা থেকে পেলে।

বাবা,,,,,,,,,,,, আরে ঐ এসিপি আমার বন্ধুর ছেলে রাফি। তুই মনে হয় চিনস না,তোর বিয়েতে তো এসেছে।

রিমান,,,,,,,,,আমিন আংকেলের ছেলে রাফি।

বাবা,,,,,,,,, হ্যাঁ,,কাল যা যা হলো সব দেখে ওর বাবা বলেছে ওর ছেলের সাথে মেঘাকে বিয়ে দিতে তাহলে কোনো সাইকো ফাইকো মেঘার কিছু করতে পারবে না। তাছারা ওদের আমার মেঘাকে পছন্দ হয়েছে।

রিমান,,,,,,,,,,,, বাবা অয়ন কোথায়, ওর তো কিছু দিন এই বাড়িতেই থাকার কথা ছিলো।

বাবা,,,,,,,,, অয়নকে আমি রাফিকে আনতে পাঠিয়েছি, ওরা সবাই মেঘাকে দেখতে আসছে তাই।

রিমান,,,,,,,,,,, মারহাবা,,,,, শেয়ালের হাতে মুরগি রাখতে দিছো। তা অয়ন কি জানে যে, ওরা মেঘাকে দেখতে আসছে।

বাবা,,,,,,,,,,,, না,,, আসলে জানতে পারবে, তাড়াহুড়োই কিছু বলতে পারি নি।

রিমান,,,,,,,,, ওও তাহলে তোমার মুরগী সেফ আছে।

বাবা,,,,,,,,,, তোর একটা তার ছিড়া আমরা সবাই জানি, প্রমান করার দরকার নেয়। কি বলে না বলে।

মেঘা,,,,,,,,, ভাইয়া আমি বিয়ে করবো না।

বাবা,,,,,,,,, আমি যা করছি তোর ভালোর জন্যই করছি। আমাদের সম্মান করলে কোনো জামেলা করবি না তুই।

মা,,,,,,,,,, মেঘা মা ছেলে খুব ভালো, সুখে থাকবি। এমন ছেলে আজ কাল পাওয়া যায় না।

মেঘা,,,,,,,,,, সব মা দের এক ডাইলক হয় কেনো।

বাবা,,,,,,,,,, ফারিয়া মা, তুমি একটু মেঘাকে রেডি করে দাও তো।

ফারিয়া,,,,,,,, ঠিক আছে বাবা,,,,,চলো মেঘা।

মেঘা মন খারাপ করে ফারিয়ার সাথে উপরে যায়৷

মেঘা,,,,,,,,,,, ভাবি আমি এই বিয়ে করবো না।

ফারিয়া,,,,,,,,, অয়নকে বলো ও কিছু না কিছু অবশ্যই করবে।

মেঘা,,,,,,,,, অয়ন ভাইয়া কোনো দিন মা বাবার বিরুদ্ধে যায়নি।

ফারিয়া,,,,,,,,, বলে দেখো এবার হয়তো যাবে। আচ্ছা তুমি রেডি হও। আমি অয়ন ভাইয়ার সাথে কথা বলবো।

মেঘা,,,,,,,,,,, সত্যি।

ফারিয়া,,,,,,, হুমম।

কিছু ক্ষন পর অয়ন সবাইকে নিয়ে আসে, সবাই ভিতরে যায়, অয়ন বাহিরে থেকে তাদের বেগ আনছিলো। রিমান তার কাছে যায়।

রিমান,,,,,,,,,,, তোকে দেখো হাসমু নাকি কানমু বুঝতাছিনা।

অয়ন,,,,,,,, মানে, সকাল সকাল পাগল হয়ে গেলি নাকি।

রিমান,,,,,,,, জানিস এটা কার বেগ।

অয়ন,,,,,,,,, হুমম, আংকেল এর বন্ধুর ছেলে রাফির বেগ।

রিমান,,,,,,,,,, ওরা কি জন্য এসেছে জানিস।

অয়ন,,,,,,, কেনো।

রিমান,,,,,,,,, মেঘার জন্য বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে।(একটা বড় বেটকি দিয়ে)

অয়ন সাথে সাথে বেগটা নিচে ফেলে দেয়।

অয়ন,,,,,,,, তো কি হয়েছে, আরো কতো বার তো এসেছে, আংকেল আন্টি রাজি হবে না।

রিমান,,,,,,,,, মা বাবা দুজন রাজি।

অয়ন,,,,,,,,,, রাজি মানে,,, তোদের সামনে উপযুক্ত ছেলে থাকতে এতো দূরে বিয়ে ঠিক করার কি দরকার। আমি কি ভালো টাকা উপার্জন করি না।

,,,,,,, করোস।

,,,,,, আমি কি দেখতে হেন্সাম না।

,,,,,,, সুপার হেন্সাম।

,,,,,,,,, তাহলে তোর বাবার চোখে আমাকে পড়লো না।

,,,,,,,,, তোর সবি আছি কিন্তু পুলিশের চাকরি তো নেয়।

,,,,,,,,, কেনো পুলিশের চাকরি দিয়ে কি করবো তোর বাপে।

রিমান,,,,,,,,, ওনার কথা মোতাবেক, রাফি আইন জিবি তাই ভয়ে কেও মেঘার কিছু করতে পারবে না।

অয়ন,,,,,,,,,, আমি থাকলে মনে হয় মেঘার কেও কিছু করতে পারবে। মেঘা সবচেয়ে বেশি আমার কাছে সেফ থাকবে৷ দূররর

বলে অয়ন বেগে লাথি দিয়ে সবার কাছে যায়।

রিমান,,,,,,,,, দাঁড়া আমিও আসছি।

রিমান আর অয়ন সোফায় বসে, সবাই কতা বলছে। একটু পর মেঘাকে ফারিয়া নিচে নিয়ে আসে। আজকে মেঘা আবার শাড়ি পড়ে গোলাপি রঙের।

মেঘা অয়নের দিকে তাকায়, দেখে অয়ন একদম স্বাভাবিক ভাবে বসে আছে। এতে বেশ অভাক হয় মেঘা। মেঘাকে রাফির পাশে বসানো হয়।

অয়ন রাগে রিমানের হাত চেপে ধরে। রিমান আআ করে উঠে। সবাই রিমানের দিকে তাকায়।

রিমান,,,,,,,,,,,, সরি মনে হয় কোনো পিঁপড়ে কামড় দিছে৷

রোকেয়া বেগম,,,,,,,,, মেঘা তুমি কিসে পড়ো।

মেঘা,,,,,,,(ঢং মনে হয় যানে না) অনার্স প্রথম বর্ষে।

রোকেয়া বেগম,,,,,,,, আমার ছেলে বিদেশ থেকে পড়ালেখা করে এসেছে, দুবছর আমেরিকায় ছিলো। তা মেঘা তুমি কি কি পারো।

মেঘা,,,,,,,,,(বকতে পারি গালি দিতে পারি শুনবেন)

রাফি,,,,,,,,,,,, মা এগুলো জিজ্ঞেস করে কেনো ভোর করছো। তাছাড়া মেঘা সেখানে শুধু রান্না করতে যাবে না। না পারলে শিখে নিবে তাছাড়া রান্না করার লোক তো আছেই। বড় কথা হলো আমাদের মেঘাকে পছন্দ, এখন মেঘার আমাকে পছন্দ হলেই হলো।

রিমান,,,,,,,,, অনেক ভালো ছেলে দেখা যায়।

এই কথা বলার সাথে সাথে অয়ন রিমানের হাত চাপ দিয়ে ধরে।

রিমান,,,,,,,, আআআ অনেক খারাপ ছেলে, অনেক খারাপ এবার ছাড়া (আস্তে)

রাফি,,,,,,,,, আংকেল আমি কি মেঘার সাথে কিছু আলাদা কথা বলতে পারি,যদি কোনো আপত্তি না থাকে।

বাবা,,,,,,,,,, হ্যাঁ অবশ্যই, যাও তোমরা ছাদে যাও,, অয়ন এদের নিয়ে যাও তো।

রিমান,,,,,,,, রিমান হেঁসে দেয়, আবার অয়নকে দেখে হাসি থামিয়ে দেয়।

অয়ন আর রিমান তাদের ছাদে নিয়ে যায়, অয়ন দাঁড়িয়ে আছে, মেঘা বার বার অয়নের দিকে তাকাচ্ছে।

রাফি,,,,,,,,,, আমরা একটু একা কথা বলতে চাই।

রিমান,,,,,,,, হুমম অবশ্যই বলুন।

রিমান অয়নকে কোনো মতে নিয়ে যায়, অয়ন আড়ালে দাঁড়ায়, তার পিছনে রিমান। তাড়া লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে।

মেঘা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে, নিচের দিকে তাকিয়ে।

রাফি,,,,,,,,,,,, তোমাকে শাড়িতে সত্যি খুব সুন্দর লাগে।

মেঘা,,,,,,,,,,,, মৃদু হেসে,,, ধন্যবাদ।

রাফি,,,,,,,,,,, হাসলে আরো বেশি ভালো লাগে। যেহেতু তোমার আমার সাথে সারা জীবন কাটাতে হতে পারে, তাই কিছু প্রশ্ন থাকলে করতে পারো।

মেঘা,,,,,,,,,, কি জিজ্ঞেস করবো। (নিচে তাকিয়ে)

রাফি,,,,,,,,,, আমি এসপি বলে ভয় পাচ্ছো নাতো আবার৷

মেঘা,,,,,,,,,,ভয় কেনো পাবো আমি কি কোনো অন্যায় করেছি না। (সাহস দেখিয়ে)

রাফি,,,,,,,,,,, বেরি গুড,, এখন এভাবেই কথা বলো, ভালো লাগে।

মেঘা,,,,,,,,, আচ্ছা আপনার কোনো প্রশ্ন নেয়।

রাফি,,,,,,,,, না

মেঘা,,,,,,,, কেনো,, আমার বয়ফ্রেন্ড আছে কিনা বা ছিলো কিনা। এটা জানার ও ইচ্ছে নেয়।

রাফি,,,,,,, আইনের লোক আমি, সব খবর নিয়েই এসেছি। তোমার কিছু জানার থাকলে জিজ্ঞেস করতে পারো৷

মেঘা,,,,,,,,, আচ্ছা আপনার কোনো জিএফ নেয়।

রাফি,,,,,,,,, হেসে,,, জানতাম এই প্রশ্নটাই করবে। আমার না কোনো জিএফ ছিলো না আছে।

মেঘা,,,,,,,,,, সত্যি (সন্দেহের নজরে)

রাফি,,,,,,,,, সত্যি,, কেনো বিশ্বাস হয় না।

মেঘা,,,,,,,,, সত্যি বলতে না, কারন আপনি দেখতে ভালো, কথা চাল চরণ সব কিছুই ভালো, আবার ভালো চাকরিও করেছেন, আবার বিদেশেও ছিলেন। আর এতো বছরে কোনো মেয়ের দিকে মন যায়নি। (কৌতুহল নিয়ে)

রাফি,,,,,,,,, অভাক করার মতো হলেও এটাই সত্যি,,, আর ভালো হয়েছে কোনো মেয়ের দিকে মন যায় নি, গেলে তোমার দেখা পেতাম কি করে।

মেঘা,,,,,,,, হুমম,, কথা ভালো বলতে পারেন।

রাফি,,,,,,,,, মুশকি হেঁসে,, আপনার পছন্দ হলো তাহলে।

,,,,,,,,,,,

অয়ন,,,,,,,,,, তোর বোন আজ একটু বেশিই হেঁসে হেঁসে কথা বলছে না।

রিমান,,,,,,,,,, তোর এমন মনে হচ্ছে।

অয়ন,,,,,,,,, আর এতো কিছু কেনো জানা লাগবে তোর বোনের রাফির সম্পর্কে।

রিমান,,,,,,,, বিয়ের আগে সব কিছু জেনে রাখবে না।

অয়ন রিমানের দিকে রাগি ভাবে তাকায়। রিমান এটা দেখে ইনোসেন্ট একটা হাসি দেয়।

অয়ন,,,,,,,,,, আর দেখতে পারবো না, আমি গেলাম।

অয়ন ভিতরে যায়। মেঘা অয়নকে দেখে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।

অয়ন,,,,,,,, তোমাদের নিচে ডাকছে, চলো।

রাফি,,,,,,,,,, হুমম চলো।

যাওয়ার সময় মেঘা অয়নের চোখে আগুন দেখে চুপচাপ তাড়াতাড়ি নিচে চলে যায়।

সব কিছু প্রায় ঠিক ঠাক,, এক মাস পড়ে বিয়ের দিন ঠিক করা হয়, কারন কিছু দিন আগেই রিমানের বিয়ে হয়।

রাফি,,,,,,,,, আচ্ছা মেঘা,,, তোমাকে যে ডিস্টার্ব করে তাকে কি কখনো দেখেছো।

অয়ন,,,,,,,,,, দেখলে ঐ সাইকোকে এখনো বাঁচিয়ে রাখতাম না।

রাফি,,,,,,,,,,, সাইকো মানে।

রিমান,,,,,,,,, শালা এক নাম্বারের সাইকো, না হলে কেও ছোট একটা বিষয়ে চারটি খুন করে ফেলে, রুম পুড়িয়ে ফেলে। হালারে পাইলে এমন জায়গা ইনজেকশন দিমু না যে খবর হয়ে যাবে।

রাফি,,,,,,,, আচ্ছা মেঘা তাহলে তোমার ফোন নাম্বারটা দাও, আমাকে সব ডিটেলস এ বলবা।

অয়ন,,,,,,,,তার জন্য আমরা আছি, ফোন নাম্বার এর কি দরকার।

রাফি,,,,,,,,, তাও একটু কথা বলা যেতো নাম্বারটা পেলে।

অয়ন,,,,,,,,,, ওর ফোন আমার কাছে,, যাতে ওকে কেও ডিস্টার্ব করতে না পারে তাই আমার কাছে রেখে দিয়েছি।

রাফি,,,,,,,,,, ওকে ঠিক আছে,, তাহলে পড়ে একদিন কথা হবে। আর চিন্তা করো না তোমাদের ওই সাইকোকে আমি ধরে ছাড়বো। ওকে বাই মেঘা।

মেঘা,,,,,,,,,, বাই।

ওরা সবাই চলে যায়। বাবা কোনো কথা মানতে রাজি না,আমাকে বিয়ে দিয়েই ছাড়বে। আমি সারা দিন ফারিয়া ভাবির সাথেই ছিলাম। অয়ন ভাইয়ার আশপাশে যায়নি।

রিমান,,,,,,,,, কি রাতেও কি এখানে ঘুমাবি। যা আমার রুম থেকে আমার ঘুম ধরছে।

মেঘা,,,,,,,,,, যাচ্ছি যাচ্ছি,, জানি তো কি ঘুম পাচ্ছে তোর, আমাকে কেনো ভাগাচ্ছিস৷

রিমান,,,,,,,, তোর এই বেশি বুঝাটা ভালো লাগে না আমার। দুদিন পর বিয়ে হয়ে বাচ্চার মা হয়ে যাবি,সভাবটা পাল্টা।

মেঘা,,,,,,,, তোর ও তো বিয়ে হয়েছে, তোর ছেছড়া অভ্যাসটা পাল্টিয়েছিস।

রিমান,,,,,,,,,, এই এদিকে আয় কি কইলি তুই।

মেঘা দৌড় দেয়। ফারিয়া হাসছে।

রিমান,,,,,,,, এতে হাসার কি হলো।

ফারিয়া,,,,,,,,, অনেক কিছু আছে বুঝবেন না আপনি।
,,,,,,,,,
আমি আমার রুমে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দিতে যায়, আর অয়ন ভাইয়া দরজা ফেলে। আর জোরে রুমে ঢুকে যায়।

মেঘা,,,,,,,,,, আপনি এখন।

,,,,,,,, কেনো ঐ রাফির আসার কথা ছিলো বুঝি।

,,,,,,,,,, সে এতো রাতে এখানে আসবে কেনো।

,,,,,,,,, ওও আসলে খুশি হতি বুঝি।

,,,,,,,, আমি কি বলেছি নাকি।

,,,,,,,,,,, আচ্ছা ঐ রাফির সাথে এতো কি হেঁসে বলছিলি। কই আমার সাথে তো এতো হেঁসে কোনো দিন কথা বলিস নি।

,,,,,,,,,, আপনি তো সব সময় রেগে থাকেন, ভালো করে কথা বলবো কিভাবে।

,,,,,,,,,,,, আচ্ছা ঐ রাফির তো দেখি তারিফের বন্যা বয়ে দিয়েছিস। এবার বল আমার মধ্যে কি কি ভালো গুন আছে। (রাগ্নিত ভাবে)

,,,,,,,,,, আ আ আছে, অনেক কিছু আছে।

,,,,,,,, যেমন, আচ্ছা যেমন ছাড় এটা বল কে বেশি ভালো আমি নাকি ঐ রাফি।

মেঘা চুপ করে চিন্তা করতে থাকে।

অয়ন,,,,,,,,,, কি রে বল (ধমক দিয়ে)

মেঘা,,,,,,,,,,, আপনি, আপনি।

,,,,,,,, মনে থাকে জেনো।

বলে অয়ন চলে যায়।
,,,,,,,,,,

রিমান মাঝখানে কোলবালিশ রেখে এক সাইডে শুয়। অন্য পাশে ফারিয়া শুয়ে থাকে। হঠাৎ করে রিমানের ফোন আসে, রিমান ফোন ধরে।

রিমান,,,,,,,,,, হ্যাঁ রাইশা বলো কি অবস্থা।

রাইশা নামটা শুনে ফারিয়া রিমানের দিকে ফিরে, ব্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে।

রিমান,,,,,,,,,, আমিও ভালো আছি,, কি জরুরি কথা।

রাইশা,,,,,,,, এক জনের অবস্থা খুব খারাপ, আপনাকে তাড়াতাড়ি আসতে হবে অপারেশন এর জন্য।

রিমান,,,,,,,, আগে বলবে তো। তুমি সব রেডি করো আমি আসছি।

বলে ফোন রেখে দেয়। রিমান উঠে রেডি হতে থাকে।

ফারিয়া,,,,,,,,, এতো রাতে কোথায় যাবে।

রিমান,,,,,,,, ইমার্জেন্সি এসে গেছে আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে, একটা অপারেশন আছে।

ফারিয়া,,,,,,,,, এতো রাতে,, নাকি ঐ রাইসার সাথে কোথাও যাবেন।

রিমান,,,,,,,, এতো যদি সন্দেহ থাকে তাহলে তুমি একটা ডক্টরের বউ হয়ে ভুল করেছো। একজন ডক্টর এর কোনো টাইম নেয়, যখন খুশি যেতে হতে পারে, তাছাড়া আমাদের বিয়েটা ঠিক কিভাবে হয়েছে তুমিও খুব ভালো করে যানো, তাই আমি অন্য কোথাও গেলেও তোমাকে বলবো এটা আশা করো না।

বলে রিমান বেরিয়ে যায়। ফারিয়া মন খারাপ করে বসে থাকে৷ মন ভালো না হওয়ায় সে সোফায় বসে বসে কার্টুন দেখতে থাকে,মুখে ললিপোপ নিয়ে।

কিন্তু তার কার্টুন দেখাতে কোনো মনযোগ নেয়, সে অন্য দিক তাকিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন। ফারিয়া টিভি ছেড়ে কখন যে ঘুমিয়ে গেছে সে নিজেও জানে না।।

রিমান রাত ২টাই বাসায় আসে, তার কাছে বাসার চাবি আছে তাই কাওকে ডাকে না। রুমে এসে দেখে টিভি চলছে। ফারিয়া সোফাস কেমন টেরা বেকা হয়ে শুয়ে আছে। এক পা সোফার উপরে।

রিমান টিভি বন্ধ করে। তারপর হাত মুখ ধুয়ে আসে। এসে ফারিয়ার কাছে যায়। গিয়ে সোফার নিচে বসে। ফারিয়াকে দেখে রিমান হাসছে৷

,,,,,,, তুমি একদম বাচ্চাদের মতো, একদম কিউট এর ডিব্বা। শত আটকানোর শর্তেও আমার মন বার বার তোমার দিকে চলে যাচ্ছে। কিন্তু তোমার সত্যিটা না জানতে পারলে আমি তোমার কাছে আসতে পারবো না। আশা করি তুমি তাড়াতাড়ি আমাকে জানাবে৷ আর তোমার মিথ্যা বলার পিছনে বড় একটা কারন থাকবে।

রিমান ফারিয়ার হাত থেকে রিমোটটা নিয়ে টেবিলে রাখে। মুখ থেকে ললিপোপটা বের করে রাখে। তারপর ফারিয়াকে কোলে করে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে উঠতে নেয়, ফারিয়া ঘুমের মধ্যে রিমানের গেনজি ধরে টান দেয় আর রিমানে ঠোঁটে খুব কাছের জায়গাটায় ফারিয়ার ঠোঁট লাগে। রিমান তাড়াতাড়ি সরিয়ে নেয়।
তারপর রিমানও শুয়ে পড়ে।

সকালে,,,,,

সকালে ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে নিচে যায় ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য। কিন্তু বাবা সাফ সাফ মানা করে দিয়েছে৷ কয়েক দিন না যেতে। অয়ন ভাইয়া ও বাসায় নেয়। অফিসের কাজে বাহিরে গেছে৷

আমার এখন রাগ হচ্ছে, সবসময় এমন বিপদ ৎেকে অয়ন ভাইয়া আমাকে বাচাতো আজ কোথায় গেছে কে জানে।

তখনি রাফি আসে, আরেক জামেলা। আমাকে নিয়ে নাকি কথা বলতে যাবে। অদ্ভুত কাল কথা তো হলো, আর এতোই বলার প্রয়োজন হলে বাসায় বলুক কে মানা করেছে।

বাবার কথায় রাজি হয়ে ওনার সাথে যায়। পুরো গাড়িতে উনিয় শুধু বক বক করছে আমি শুধু শুনছি।

আমাকে একটা বড় রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায়। গিয়ে বসি। কিছু ক্ষন পড়ে দেখি আমার সামনের দু টেবিলের পরে অয়ন ভাইয়া আর কিছু লোক বসে কথা বলছে। আমি দেখে মুখ লুকানোর বৃথা চেষ্টা করলেও অয়ন ভাইয়া আমাদের দেখে ফেলে।

সেই একটা রাগি লুক নিয়ে আমাদের কাছে আসে। আমার ভয়ে আত্মা কাপছে।

অয়ন,,,,,,,,, তুই এখানে আজকে কি ভার্সিটি বন্ধ।

মেঘা,,,,,,,, আ আ আসলে বাবা যে যেতে না করেছে।

রাফি,,,,,,,,,,,, চিল ব্রো, বিয়ে হওয়ার আগে একটু পরিচয় হওয়ার একটা ব্যাপার আছে না। তুমি এখানে কোনো কাজে এসেছো নাকি।

অয়ন,,,,,,,,, হুমম, আমার একটা মিটিং ছিলো (শান্ত স্বরে, দুহাত পকেটে রেখে)

রাপি,,,,,,,,,,, ওকে তুমি তোমার মিটিং করো, আমরা একটু কথা বলি।

,,,,,,, সিউর (মেঘার দিকে তাকিয়ে)

অয়ন ভাইয়া চলে যায়।

রাফি,,,,,,,, কি খাবে ওর্ডার করো।

মেঘা,,,,,,,, (যেভাবে তাকিয়ে আছে খাবার মনে হয়না গলা দিয়ে নামবে) আমি খাবো না, আপনি করেন।

রাফি,,,,,,,, খাবে না মানে, আচ্ছা আমি ওর্ডার করছি, আমি কিন্তু তোমার পছন্দ সম্পর্কে অনেক কিছু জানি।

আমি রাফি কথা বলছি, অয়ন ভাইয়া এদিকেই তাকিয়ে আছে,হাতে একটা টিস্যু পেপার নিয়ে মুচরা মুচরি করছে।

কিছু ক্ষন পর আমি লক্ষ করলাম সব অয়ন ভাইয়ার টেবিলের সব লোক চলে গেছে কিন্তু একটা মেয়ে বসে আছে। মেয়েটা অয়ন ভাইয়া কাছে গিয়ে বসে।

চেয়ার এতো দূরে দূরে, আর মেয়েটা চেয়ার কাছে এনে অয়নের সাথে বসে। দেখে আমার মুটেও ভালো লাগছে না। আর মেয়েটা কি পড়ে আছে ছিঃ।সেটা বড় কথা না বড় কথা হলো মেয়েটা সুন্দর। তাতে কি।

কি সুন্দর হেঁসে হেঁসে লেগে লেগে কথা বলছে মেয়েটা সে দিকে কোনো খেয়ালি নেয় আর আমি করলেই দোষ।

এক কথায় আমার অনেক জ্বলছে। এগুলো দেখতে দেখতে আমার হাতে খাবার পড়ে যায়।

রাফি,,,,,,, মন কোথায় তোমার। দাড়াও আমি ক্লিন করে দিচ্ছি।

রাফি আমার হাত ধরে, টিস্যু পেপার দিয়ে মুছিয়ে দিচ্ছে। এটা দেখে অয়ন বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে যায়। ভয়ে আমিও দাঁড়িয়ে যায়।

রাফি,,,,,,,, কি হলো।

,,,,,,,,, কিছু না, চলেন আমরা এখন যায়।

,,,,,,, ওকে যাও আমি বিলটা দিয়ে আসি।

,,,,,,ঠিক আছে।

ও মেয়েটা অয়নের হাত ধরে বলছে কি হয়েছে, আনি দেখে তাড়াতাড়ি যায়।

মেঘা,,,,,,,,,,, এই মেয়েটা কে (কপাল কুচকিয়ে)

অয়ন,,,,,,,,,,,, আমার গার্লফ্রেন্ড, তোর কোনো সমস্যা। (ধমক দিয়ে)

অয়ন মেঘার সামনে দিয়ে ঐ মেয়ের হাত ধরে রাগে হনহনিয়ে বেরিয়ে যায়।

কথাটা যেনো আমার বুকে গিয়ে তীরের মতো লাগলো। এখন তো আমার এমন রাগ হচ্ছে যেনো কিছু ভেঙে ফেলি। কেনো জানি খুব কষ্ট হচ্ছে। চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে।

রাফি,,,,,,,, হঠাৎ কি হলো তোমার।

মেঘা,,,,,,,,, আমি বাসায় যাবো, আমার ভালো লাগছে না।

,,,,,,,ঠিক আছে চলো।

নিচে যেতেই কিছু লোক আমাদের ঘিরে ধরে। তাদের হাতে হকি ছিলো। আমাকে মারার কোনো প্লেন ছিলো না, তারা রাফির ওপর হামলা চালায়।

রাফিও নাছড় বান্দা, সেও তাদের সাথে মারামারি করতে থাকে। আমি এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছি। যখন দেখা যাচ্ছে পারা যাচ্ছে না, তখন রাফি তার বন্ধুক বের করে হাওয়ায় গুলি চালায়। সবাই ভয়ে পালিয়ে যায়।

আমরা বাসায় যায়, সবার কাছে খবর পৌঁছে যায়। সবাই এটা দেখে সিদ্ধান্ত নেয় যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়েটা দিয়ে দিবে। কয়েক দিনের মধ্যে বিয়েটা দিয়ে দিবে বলে ঠিক করে।

আমাদের উপর হামলা হয় শুনে অয়ন ভাইয়া দৌড়ে আসে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ