একটু বেশিই ভালোবাসি পর্ব-০৯

0
3008

#একটু_বেশিই_ভালোবাসি
#Maishara_Jahan
Part……………9

আমরা বাসায় যায়, সবার কাছে খবর পৌঁছে যায়। সবাই এটা দেখে সিদ্ধান্ত নেয় যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়েটা দিয়ে দিবে। কয়েক দিনের মধ্যে বিয়েটা দিয়ে দিবে বলে ঠিক করে।

আমাদের উপর হামলা হয় শুনে অয়ন ভাইয়া দৌড়ে আসে।

মেঘা মন খারাপ করে সোফায় বসে আছে। অয়ন মেঘার কাছে গিয়ে বসে। আর হতভম্ব হয়ে মেঘাকে জিজ্ঞেস করে।

অয়ন,,,,,,,,, তোর কিছু হয়নি তো।

মেঘা,,,,,,,,,, না (অভিমানী কন্ঠে, অন্য দিকে তাকিয়ে)

রিমান,,,,,,,,, তুই ও তো ছিলি ঐখানে রাফি বললো। তাহলে তুই দেখিসনি।

অয়ন,,,,,,,,, আমি দেখলে কাওকে যেতে দিতাম না ঐখান থেকে।

রিমান,,,,,,,,,, কোথায় ছিলি।

মেঘা,,,,,,,,, ওনি ব্যস্থ মানুষ, অনেক জরুরি কাজে জরুরি লোকের সাথে ব্যস্থ ছিলো।

রিমান,,,,,,,,, অয়ন ভাই, মাথা ঠান্ডা কর তোকে একটা খবর দিয়, মেঘার বিয়ে কিছু দিনের মধ্যে হয়ে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয় সবাই।

অয়ন,,,,,,, কিহহহ,, কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি। আংকেল এটা একটু বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে গেলো না।

বাবা,,,,,,,,,, কিছু করার নেয়, মেঘা রাফির সাথে সেফ থাকবে। আজ রাফির কারনে মেঘা বেঁচে গেছে৷

অয়ন,,,,,,,,,, তোর বাপ একটু বেশিই বুঝে। (রিমানের কানে)

রিমান,,,,,,,,,,, একটু বেশ অনেকটাই বেশি বুঝে (আস্তে)

অয়ন,,,,,,,,,, আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি মেঘাকে তো জিজ্ঞেস করেন ও রাজি আছে কিনা।

মেঘা,,,,,,,,, আমি রাফিকে বিয়ে করতে রাজি। আজ বললে আজি করে নিবো।(রাগে অভিমানে)

এটা বলে মেঘা হনহনিয়ে উপরে তার রুমে চলে যায়।

রিমান,,,,,,,,,, মেঘার আবার কি হলো।

অয়ন,,,,,,,,, তোর বোনকে মরণ এ টানছে। (বলে বাহিরে যায়, পিছনে রিমান ও যায়)

রিমান,,,,,,,,,, আরে দাঁড়া কই যাস।

অয়ন,,,,,,,,,, আমি যেভাবে হোক বিয়েটা ভাঙবো, কিন্তু তোর বোনের এটা বলার কি দরকার যে, সে রাফিকে বিয়ে করতে রাজি, তাও আবার আজ বললে আজি। (রাগ)

রিমান,,,,,,,,,, মেঘা আবার রাফির প্রেমে পড়ে যায়নি তো।

অয়ন,,,,,,,,(রিমানের গলা ধরে) তাহলে ঐ রাফি আর তোর বোনকে মেরে নদীতে ভাসিয়ে দিবো। (রাগে)

রিমান,,,,,,,,, আরে ছাড়, আমি কি রাফির প্রেমে পড়ছি নাকি। ছাড় ছাড়।

অয়ন রিমানের গলা ছেড়ে দেয়।

রিমান,,,,,,,, আর শুন কি মেরে দিবো মেরে দিবো বলছিস। তুই আমার বন্ধু মানলাম কিন্তু মেঘা ও আমার বোন একটু হলেও খারাপ লাগে।

অয়ন,,,,,,,,,, আমার যে কষ্ট লাগছে ঐটা কি। এক কাজ কর রাফিকে ফোন কর, আর বল এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করার কি দরকার।

রিমান,,,,,,,,, আমি

অয়ন,,,,,,,,, চুপচাপ ফোন কর।

রিমান ফোন করে রাফিকে।

রাফি,,,,,,,, হ্যালো, রিমান বলো

রিমান,,,,,,,, আচ্ছা বিয়েটা একটু বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে না।

রাফি,,,,,,,,, আমি ও তো তাই বলছি বিয়েটা একটু বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার বাবা কোনো কথায় শুনছে না আমার।

রিমান,,,,,,,,, সব বাবারাই বদের হাড্ডি হয়।

রাফি,,,,,,,,,, মানে।

রিমান,,,,,,,,, কিছু না৷

রাফি,,,,,,, আচ্ছা তোমার আর কোনো কথা না থাকলে আমি ফোনটা রাখি, আসলে আমি থানায় আছি।

রিমান,,,,,,, ঠিক আছে।

অয়ন,,,,,,,,,, তার মানে বিয়েটা হচ্ছে, যাক আমার জন্যই ভালো (মৃদু হেঁসে)

,,,,,,, আহারে ভালো পোলাটা দুঃখে পাগল হয়ে গেলো। মেঘা অন্য কারো বউ হয়ে যাবে। (অয়নকে ঝাকিয়ে)

,,,,,,,,,,, এটা তো আমি হতে দিবো না, বউ তো তোর বোন আমারি হবে। আর খুব তাড়াতাড়ি।

,,,,,,,,,, বিয়ে করবি ভালো কথা, কিন্তু আমার কিছু শর্ত আছে।

,,,,,,,, কি শর্ত (ব্রু কুঁচকিয়ে)

,,,,,,,, ১. আমার বোনকে জোর করে উঠিয়ে নিয়ে বিয়ে করা যাবে না। ২. পালিয়ে বিয়ে করা যাবে না। ৩. ধোঁকা দিয়ে সবার অমতে বিয়ে করা যাবে না। এতে আমার বোনের বা আমার পরিবারের বদনাম হতে পারে।

অয়ন রিমানে কথা শুনে, তার কোনো তক্কা না করে, না শুনার মতো বান করে চলে যায়।

রিমান,,,,,,,,,,,, আমি তোর ভবিষ্যতের শালা লাগি, আর শালাকে এভাবে অপমান করতে পারিস না, শুন(জোরে) আমার কোনো ইজ্জতি নেয়। দিন আমারো আসবে হুহহ।
,,,,,,,,,,

মেঘা ঐদিকে রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে কান্না করছে।

আমার অনেক রাগ হচ্ছে, একটা চাপা কষ্ট অনুভব হচ্ছে। আর কি হারানোর ভয় ও করছে। সব মিলিয়ে অদ্ভুত একটা ফিল হচ্ছে। আমি চাই না কান্না করতে তাও চোখ থেকে পানি ঝরেই যাচ্ছে। আগে কখনো এতটা কষ্ট হয়নি। আর কারো উপর এতোটা অভিমানী রাগ ও হয়নি।
,,,,,,,,,,

রিমান রুমে গিয়ে দেখে ফারিয়া গভীর চিন্তায় মগ্ন। নিজের চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে কিছু একটা ভাবছে।

রিমান,,,,,,,,,, কি এতো মনোযোগ দিয়ে ভাবছো।

ফারিয়া কিছু ক্ষন রিমানের দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর বলে,,,,,

ফারিয়া,,,,,,,,, আচ্ছা রিমান তোমার কাছে শত শত মানুষের জীবন বেশি দামি নাকি অনেক গুলো টাকা।

রিমান,,,,,,,, যেহেতু আমি ডক্টর তাই মানুষের জীবনের কথায় বেশি ভাববো। আর ডক্টর না হলেও মানুষের জীবন আমার কাছে বেশি দামি হতো সেটা একজনের থাক বা শত জনের।

ফারিয়া,,,,,,,,,, আচ্ছা মনে করো তোমার কাছে বিশাল জমি আছে সেখানে অনেক মানুষ থাকে। তাদের আর কোথাও যাওয়ার যায়গা নেয়। এখন কেও যদি এসে তোমাকে বিশ কোটি বা তার থেকেও বেশি দেয় ঐ জমিটা দিয়ে দেওয়ার জন্য, তাহলে তুমি কি করবে।

রিমান,,,,,,,,,, আমার কাছে কোনো জমিও নেয় বা কেও আমাকে বিশ কোটি, বাপরে বাপ বলতেও ভারি লাগছে। যাই হোক দিবে না। সো এসব আলতু ফালতু কথা বলে লাভ নেয়।

ফারিয়া,,,,,,,,,, কাল আমার সাথে তোমাকে একটা জায়গায় যেতে হবে, যাবে।

রিমান,,,,,,,,,,,,, কোথায় কেনো।

ফারিয়া,,,,,,,,,, যেতে বলছি যাবে।

রিমান,,,,,,,,, সরি পারবো না।

ফারিয়া,,,,,,,,,,, ঠিক আছে,, বাবা (জোরে ডাক দিয়ে)

রিমান,,,,,,,,,, এই বাবাকে কোনো ডাকো, ভালো করে বললেই যাবো।

ফারিয়া,,,,,,,,,, কালকে আমার সাথে একটা জায়গায় যাবে। (হেঁসে)

রিমান,,,,,,,,, ঠিক আছে ঠিক আছে, এতো অনুরোধ করা লাগবে না, আমি যাবো।

ফারিহা,,,,,,,,,, ধন্যবাদ।

রিমান,,,,,,,,,,, ওকে আমি এখন হসপিটালে যাচ্ছি, একটু কাজ আছে।

ফারিয়া,,,,,,,,, হুমম ওকে।
,,,,,,,,,,,,

অয়ন অফিসে তার চেম্বারে বসে বসে কিছু একটা ভাবছে। তখন নীল সোজা ঢুকে যায়।

নীল,,,,,,,,,,, কিভাবে মেঘার বিয়ে আটকাবি সেটা ভাবছিস নাকি৷

অয়ন মাথা উঠিয়ে দেখে নীল দাঁড়িয়ে আছে। সাথে সাথে উঠে দাঁড়ায়।

অয়ন,,,,,,,,,, তুই ভিতরে এলি কিভাবে। রিনা, রিনা (জোরে চিৎকার করে)

রিনা দৌড়ে আসে।

রিনা,,,,,,,,,,, জ্বি স্যার, কিছু হয়েছে।

অয়ন,,,,,,,,, তুমি কি করছিলে, যে কেও আমার কেবিনে আমার অনুমতি ছারা ডুকে যাচ্ছে। (জোরে রাগে)

নীল,,,,,,,,, ওকে বকে লাভ নেয়, আমি বলেছিলাম যে আমি তোর ভাই।

অয়ন,,,,,,,,, ভাই মাই ফুট,,,, তুই আমার কোনো ভাই না। আর রিনা আরেক বার জেনো এমন ভুল না হয়।

রিনা,,,,,,,, সরি স্যার।

নীল,,,,,,,,, রিনা, একটু যাওতো আমার অয়নের সাথে কিছু কথা আছে।

রিনা অয়নের দিকে তাকায়।অয়ন চোখের ইশারায় যেতে বলে। রিনা চলে যায়।

নীল,,,,,,,,, শুনলাম মেঘার নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সত্যি নাকি।

অয়ন,,,,,,,, এটা নিয়ে তোর মাথা না ঘামালেও চলবে, আর হ্যাঁ ঐ দিন মেঘাকে কি উল্টো পাল্টে বলছিলি। তোর শকুনের নজর মেঘা থেকে সরিয়ে নে, না হলে কিছু দেখার অবস্থায় রাখবো না।

নীল,,,,,,,,,, আমি তো ভয় পেয়ে গেছি। কি করবো বল আমাদের দুই ভাইয়ের বড্ড মিল, তোর যেটা ভালো লাগে আমারো সেটা ভালো লাগে।

অয়ন,,,,,,,,,, এটা অন্য কিছু মনে করিস না, যে তোকে আগের মতো দিয়ে দিবো।

নীল,,,,,,,,,,, অহুহহ ভুল তুই দিসনি আমি ছিনিয়ে নিয়েছি।

অয়ন,,,,,,,, এটা তোর ভুল ধারনা, আমি দিয়েছি বলে নিতে পেরেছিস, না হলে কারো সার্মথ্য ছিলো না।

নীল,,,,,,,, দেখা যাবে কার কতো টুকু সার্মথ্য।

অয়ন,,,,,,,,, সেটা আমার প্রমান করার দরকার নেয়। শুধু একটা কথা, মেঘার দিকে চোখ তুলে তাকালে তোর জন্য খুব একটা ভালো হবে না।জাস্ট গেট আউট।

নীল,,,,,,,,,, ওকে মনে রাখবো।

বলে নীল বেরিয়ে যায়, অয়নের অফিস থেকে।

নীল,,,,,,,, কি করবো ভাই, আমার অভ্যাসটা খারাপ হয়ে গেছে, তোর থেকে তোর প্রিয় জিনিস ছিনিয়ে নিতে আমার খুব ভালো লাগে। আর মেঘাতো তোর খুব কাছের জিনিস। (হেঁসে) যাক যেটা জানতে গেছিলাম সেটা জানা হয়ে গেছে, তার মানে সত্যি সত্যি মেঘার অন্য কারো সাথে বিয়ে। অন্য কারো সাথে মেঘার বিয়ে হলে অয়ন অনেক বেশি কষ্ট পাবে, আর আমার সাথে হলে তো কষ্টের কোনো সীমা থাকবে না (অট্টহাসি দিয়ে)

,,,,,,,,,,,

ফারিয়া রিমানের হসপিটালে যায়, গিয়ে রিমানকে খুঁজতে থাকে। রিমানকে খুঁজতে তার চেম্বারে যায়। গিয়ে দেখে সেখানে রিমান নেয়। ফারিয়া সেখানে গিয়ে রিমানের ডক্টরের পোশাক পড়ে দেখছে, তার চেয়ারে বসছে, সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। তখন নার্স আসে।

নার্স,,,,,,,,,, কে আপনি এখানে এভাবে কি করেন।

ফারিয়া,,,,,,,,,, আমি ডক্টর রিমানের বউ। (একটা ভাব নিয়ে)

নার্স,,,,,,,, সরি মেম, ডক্টর রিমান তো সবার সাথে কেন্টিনে আড্ডা দিচ্ছে।

ফারিয়া,,,,,,,,,, কাদের সাথে (কৌতুহল নিয়ে)

নার্স,,,,,,,,, ডক্টর শফিস, ড.রহিম, ড.সাইমা ড.রাইসা।

এই নামটা শুনার সাথে সাথে উঠে দাঁড়ায়, হতভম্ব হয়ে জিজ্ঞেস করে,

ফারিয়া,,,,,,,,, কেন্টিনটা কোথায়, নিয়ে চলো তো আমাকে।

এটা বলে নার্সের আগে আগে আমি যাচ্ছি, তাড়াহুড়ো করে গিয়ে দেখি, রিমান দুটো ছেলে আর চারটি মেয়ের সাথে বসে আছে। আর বসেছে কোথায় একদম দুমেয়ের মাঝখানে। তাদের হাত রিমানের কাঁধে। এমন ভাবে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে যেনো আর কোনো দিন হাসতে পারবে না। দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে। আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে ডাক দিয়।

ফারিয়া,,,,,,,,,,, রিমান (একটু জোরেই ডাক দিয়)

রিমান পিছনে ফিরে দেখে ফারিয়া দাঁড়িয়ে আছে, এটা দেখে রিমান উঠে মেয়েদের থেকে একটু দূরে দাঁড়ায়। কিছু একটা চিন্তা করে, আবার কাছে এসে দাঁড়ায়। সবাই দাঁড়িয়ে পড়ে।

রিমান,,,,,,,,, তুমি এখানে কেনো এসেছো৷

ফারিয়া,,,,,,,,,, কেনো আমি আসাতে তোমার বুঝি কোনো প্রবলেম হয়েছে। আর আমি না আসলে তো দেখতেই পারতাম না তোমার জরুরি কাজটা কি।

ড.রফিক,,,,,,, ভাবি আপনি ভুল বুঝছেন, আমরা কাজ শেষ করে, রিমান থেকে বিয়ের ট্রিট নিচ্ছিলাম।

রিমান,,,,,,,,, তুমি এখানে কেনো এসেছো এটা আগে বলবে।

ফারিয়া,,,,,,,,, বাবা পাঠিয়েছে, এই ফাইলটা আপনি ড্রয়িংরুমে রেখে এসেছিলিন, তাই পাঠিয়েছে। (খালি হাত আগে বাড়িয়ে)

রিমান,,,,,,,,, কোথায় ফাইল (সন্দেহর নজরে)

ফারিয়া তার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে নেয়। হাতটা আবার নিচে নামিয়ে ফেলে।

ফারিয়া,,,,,,,,,, আপনার চেম্বারে রেখে এসেছি (একটা হাসি দিয়ে)

সবাই ফারিয়াকে দেখে মুশকি মুশকি হাসছে।

ফারিয়া,,,,,,,,, সবাই আমাকে এমন অদ্ভুত ভাবে দেখছে কেনে।

রিমান,,,,,,,,, দেখবেই তো, তুমি আমার ইনিফ্রম এ কি করো। (হাত দুটো ভাঝ করে রেখে)

ফারিয়া নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে এখনো রিমানের ইনিফ্রম পড়ে আছে। লজ্জায় ফারিয়া তাকিয়ে একটা হাসি দেয়।

ফারিয়া,,,,,,,,, আসলে দেখছিলাম ডক্টরের পোশাক পরলে আমাকে কেমন লাগে।

রিমান,,,,,,, তোমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়। এ শফিক, এ রহিম, এ সইমা, এ রাদিকা, এ নিঝুম আর এ হলো রাইশা।

সব মেয়েদের চেহেরা ভালো করে দেখলাম, আর রাইশার চেহেরা একটু বেশিই ভালো করে দেখছি।

ড.রফিক,,,,,,,, এখন ভাবি এসে গেছে, এখন তো চর রিমান মেয়েদের সাথে এতো ঘুরতে যেতে পারবে না, মিশতে পারবে না, তাই না।

রিমান,,,,,,,, এমন কিছু না, ফারিয়া মোটেও এমন না মেয়েদের সাথে ঘুরলে কথা বললে কিছু বলবে না। তাই না ফারিয়া। (ইশারা দিয়ে)

ফারিয়া,,,,,,,,, কিছু বলবো না মানে, বেঁধে ঘরে রেখে দিবো, শুনে রাখুন বিয়ের আগে কি করেছেন সেটা আমার না জানলেও চলবে, তবে এখন থেকে মেয়েদের সাথে বেশি ফ্লাট করার চেষ্টা করলে না আপনার এক দিন কি আমার একদিন। কথা বলবেন ঠিক আছে, তবে লিমিট ক্রস করলে খবর আছে। আর আমাকে ছেড়ে মেয়েদের সাথে স্বপ্নেও ঘুরলে না, সেখানে গিয়ে ফিটাবো।

রিমান হা করে আছে, আর ওর বন্ধুরা মিটিমিটি হাসছে। সবাই রিমানকে অভিনন্দন জানিয়ে চলে যায়।

রিমান ফারিয়ার হাত ধরে তার কেবিনে নিয়ে যায়।

রিমান,,,,,,,, এটা কি ছিলো, আমার বন্ধুদের সামনে আমার ইজ্জতের ফালুদা করে দিলে।

ফারিয়া,,,,,,,,, ভালো করেছি,, আপনার দেখি মেয়ে ফ্রেন্ডদের অভাব নেয়। আর আপনি ভাবলেন কিভাবে, মেয়েদের সাথে আপনি ঘুরেতে গেলে আমার কোনো প্রবলেম থাকবে না।

রিমান,,,,,,,, কেনো থাকবে প্রবলেম, আমি এ বিয়ে মানি না।

ফারিয়া,,,,,,,, বললেই হলো, আমি মানি এই বিয়ে। আর আমি আমার হাসবেন্ডকে অন্য মেয়ের সাথে দেখতে পারবো না।

রিমান,,,,,,,, তুমি আমাকে জোর করে আটকে রাখতে পারবে না।

ফারিয়া রিমানের টাই ধরে নিচের দিকে টান দিয়ে নিজের দিকে ঝুকায়। আর চোখে চোখ রেখে বলে,,

ফারিয়া,,,,,,,,,, আমি জোর করে না ভালোবেসে আটকে রাখবো তোমাকে।

রিমান ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে কয়েকটা ঢোক গিলে। ফারিয়া রিমানের টাই ধরে নিচের দিকে ঝুকাচ্ছে, যেই কিস করতে যাবে, ওমনি রিমানের বন্ধুরা এসে পড়ে। ফারিয়া রিমানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।

,,,,,,,,,, সরি সরি

ফারিয়া,,,,,,,,, আমি বাসায় যাচ্ছি, তোমার কাজ শেষ হলে সাবধানে বাসায় এসো।

বলে ফারিয়া আর কোথাও না তাকিয়ে তাড়াতাড়ি হাঁটা শুরু করে।

রিমান,,,,,,,,, আরে শুনো, আমার

ফারিয়া তাড়াতাড়ি উপর তলা থেকে নিচের তলা এসে পড়ে। এসে দেখে সে ইনিফ্রম এখনো খুলে নি। ফারিয়া তাড়াতাড়ি খুলে এটা হাতে নেয়।

ফারিয়া,,,,,,,,, এখন যেয়ে দিয়ে আসতে পারবো না, বাসায় দিয়ে দিবো নে,,

ফারিয়া লজ্জায় ইনিফ্রম দিয়ে নিজের চেহেরা ডাকে। তারপর ইনিফ্রম জরিয়ে ধরে। সবাই ফারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে ফারিয়া তাড়াতাড়ি চলে যায়।

রাতে,,,,,,,,

সবাই খেতে বসে। অয়ন খাচ্ছে নাকি খাবারের সাথে যুদ্ধ করছে কে জানে। কারন খাবারের টেবিলে মেঘার বিয়ের আলোচনা হচ্ছে। মেঘা চুপচাপ খাচ্ছে।

অয়ন,,,,,,,,, মেঘা তুই এতে চুপচাপ কেনো।

মেঘা,,,,,,,, তো কি চিৎকার করে গান গাইবো।

অয়ন,,,,,,,, তোর বোনের সাহস কিছুটা বেশিই বেড়ে গেছে মনে হচ্ছে (রিমানের কানে)

রিমান,,,,,,,,, আমার বোন না তাই।

অয়ন,,,,,,, আমি সেটাই তো বলছি তোর বোন হয়ে এতো সাহস কিভাবে হলো।

রিমান,,,,,,,, তুই কি বলতে চাস আমার সাহস নেয়, আমার মতো সাহসী আর পাবি না হুহহ।

অয়ন,,,,,,,, আচ্ছা তাহলে উঠে চিৎকার করে বল, বাবা আমি মেঘার বিয়ে হতে দিবো না মানে দিবো না।

রিমান,,,,,,, আজ সাহসিকতা দেখানোর মুড নেয়, অন্য দিন দেখাবো। (চামচ মুখে নিয়ে)

খাবার খেয়ে সবার সবার রুমে চলে যায়। মেঘা যেতে নেয় অয়ন মেঘাকে এক টান দিয়ে এক কোনায় নিয়ে যায়। গিয়ে দুহাত চাপ দিয়ে দেওয়ালের সাথে ধরে।

অয়ন,,,,,,,, আজ কাল সাহস একটু বেশিই বেড়ে গেছেনা তোর (রাগী কন্ঠে)

মেঘা,,,,,,, হ্যাঁ বেড়েছে কি করবেন আপনি।

অয়ন,,,,,,,,,, চাইলে অনেক কিছুই করতে পারি। (আরো চাপ দিয়ে ধরে)

মেঘা,,,,,,,,,, কিছুই করতে পারবেন না, ছাড়েন আপনি, আমি ব্যাথা পাচ্ছি। ভুলে যাবেন না আমার হবু স্বামী বড় এসপি।

অয়ন,,,,,,,,,,, তুই কি আমাকে ভয় দেখাচ্ছিস, কি করবে তোর হবু স্বামী (রাগ)

মেঘা,,,,,,,,,,, আপনি এমন করলে আমি কিন্তু রাফির কাছে বিচার দিবো।

এটা শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে যায় অয়নের।

,,,,,,,, আচ্ছা কি বিচার দিবি তুই।

,,,,,,,,,,, আপনি যা যা করছেন সব বলবো।

,,,,,,,,, আমি তো এখনো কিছুই করিনি, এটা বিচার দিলে কেমন দেখাবে দাঁড়া তোকে বিচার দেওয়ার মতো ভালো কারন দিয়।

বলে অয়ন মেঘার ঠোঁটে কিস করতে থাকে। মেঘার আটকানোর কোনো উপায় নেয়। কিছু পরে ছেড়ে দেয়।

অয়ন,,,,,,,,, এবার গিয়ে বিচার দে, গিয়ে কি বলবি, বলবি অয়ন ভাইয়া আমাকে কিস করেছে৷ এক মিনিট আইনের লোক তো আবার প্রমান ছাড়া কাজ করে না। দাড়া রাফিকে প্রমান করার জন্য প্রুফ দিয়ে দিচ্ছি।

মেঘা,,,,,,,,, মানে

অয়ন মেঘার নিচের ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দেয়, মেঘা শুধু সরানোর চেষ্টা করছে। কামড় দিয়ে রক্ত বের করে দেয়।

অয়ন,,,,,,,,,,, এবার প্রমান সহ বিচার দে রাফির কাছে। দেখবো তোর এসপি আমার কি বিচার করে।

বলে মেঘাকে ছেড়ে নিজের রুমে যেতে থাকে।

মেঘা,,,,,,,,,,, কি ভাবেন কি নিজেকে, যে আমার পিছনে পরে রয়েছে তার থেকে বড় সাইকো আপনি, রাগ উঠলে যা খুশি করেন, ছাড়বো না আপনাকে। (রাগে চিৎকার করে)

অয়ন পিছনে তাকিয়ে বলে,

,,,,,,, তুই যাবি, নাকি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আসতে হবে।

,,,,,,,,,,,, ডেবিল একটা (রাগে)

,,,,,,,, তুই দাঁড়া আমি আসছি।

অয়ন যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়, আর মেঘা ওড়া ধুড়া দৌড় দেয়।

,,,,,,,,,,, দাঁড়া ঐ (বলে হাসতে হাসতে নিজের রুমে চলে যায়)

সকালে,,,,,,,,

মেঘার বিয়ের প্রস্তুতি জোরদার হতে থাকে, সেখানে অয়ন সাহায্য করছে।

রিমান অয়নকে এতো শান্ত শিষ্ট দেখে অভাক হয়ে গেছে। তাও আবার বাড়ি সাজাতে সাহায্য করছে।

রিমান অয়নের কাছে গিয়ে, অয়নের কপালে হাত দিয়ে চেক করছে।

অয়ন,,,,,,, কি হলো।

,,,,,,,, তোর কিছু হলো না তো, এটা মেঘার বিয়ে আর তুই এতো শান্ত ভাবে বসে আছিস, তাও আবার সাহায্য করছিস।

,,,,,,,,,,,, দেখতে হবে না, নিজের বিয়েতে যেনো কোনো কমতি না থাকে।

,,,,,,,,, প্ল্যান কি তোর।

,,,,,,,,,,, জেনে যাবি, অপেক্ষা কর।

,,,,,,,,,,, হুমম,,,শুধু শুধু আমার বিয়ের ডেকোরেশনটা শেষ করে দিলো, এখন আবার নতুন করে ডেকোরেশন করা লাগছে। কতো গুলো টাকা বেঁচে যেতো (আফসোস এর সাথে বলছে)

অয়ন,,,,,,,,, শালা কিপটা।

চলবে,,,,,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ