একটু বেশিই ভালোবাসি পর্ব-১০

0
3450

#একটু_বেশিই_ভালোবাসি
#Maishara_Jahan
Part……………10

,,,,,,,,,,, হুমম,,,শুধু শুধু আমার বিয়ের ডেকোরেশনটা শেষ করে দিলো, এখন আবার নতুন করে ডেকোরেশন করা লাগছে। কতো গুলো টাকা বেঁচে যেতো (আফসোস এর সাথে বলছে)

অয়ন,,,,,,,,, শালা কিপটা।

মেঘা চোখ কচলাতে কচলাতে নিচে আসে, এসে দেখে অয়ন সবাইকে অর্ডার দিচ্ছে, কাজ তাড়াতাড়ি করতে। দেখে রাগ হচ্ছে।

মেঘা,,,,,,,,, আমাকে বিয়ে দিয়ে বিদায় করার কতো তাড়া এনার৷ মনে আমি এনার উপর বোঝ হয়ে আছি, বিয়ে দিয়ে বিদায় করতে পারলে বাঁচে।

গিয়ে সোফায় বসি, মাথাটা চিন চিন করে ব্যাথা করছে, কাল সারা রাত ঘুম হয়নি। যে কাহিনি হয়ছে তাতে ঘুম আসার ও কথা না। জানি না কার কফি রাখা টেবিলে, আমি কিছু না ভেবে উঠিয়ে খেতে থাকি। আমি বসে চুপচাপ কফি খাচ্ছি আর কি একটা নিয়ে গভীর ভাবনায় মগ্ন আছি, সেটা কি নিজেও উপলব্ধি করতে পারছি না।

কিছু ক্ষন পর অনুভব করলাম আমার পাশে কেও দাড়িয়ে আছে। আমি তার দিকে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি অয়ন ভাইয়া এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও তার দিকে এক ধেনে তাকিয়ে আছি।

রিমান,,,,,,,,,, কিরে এমন হেবলার মতো তাকিয়ে আছিস কেনো।

রিমান ভাইয়ার কথায় হুশশ ফিরে, আমি তাড়াতাড়ি চোখ ফিরিয়ে সরে যায়।

অয়ন,,,,,,,,, কফিটা আমার ছিলো, আমি জাস্ট এক চুমুক দিয়ে এখানে রেখেছি ঠান্ডা হওয়ার জন্য, আমার কফি ফিরত দে।

মেঘা,,,,,,,,, (এক কাপ কফির জন্য কেমন করছে দেখো) এটাতে আমি মুখ লাগিয়ে ফেলেছি, আপনার জন্য আরেকটা আনতে বলছি।

অয়ন,,,,,,,,, লাগবে না, তুই আনা, যেটা আমার সেটা আমারি।

অয়ন ভাইয়া আমার হাত থেকে কফিটা নিয়ে খেতে থাকে৷

রিমান,,,,,,,, ওমাগো টুরু লাভ (আস্তে) তা মেঘা তোর ঠোঁটের এ অবস্থা কেনো, এখন গরম পড়ছে, তাই ফেটে রক্ত বের হয়েছে মনে হয়। ঠোঁটে কিছু দিয়ে রাখবি সবসময়।

মেঘা ঠোঁট ধরে কটমট করে অয়নের দিকে তাকায়। আর অয়ন কিছুই করেনি এমন একটা লুক দেয়।

উপর থেকে ফারিয়া সিরির রিল ধরে ধরে নামছে।

রিমান,,,,,,,, কি হয়েছে তোমার।

ফারিয়া,,,,,,,,, তেমন কিছু না, আমাদের না এক জায়গায় যাওয়ার কথা ছিলো, যাবে না।

রিমান,,,,,,,,, হুমম তুমি বসো, আমি উপর থেকে গাড়ির চাবিটা নিয়ে আসছি।

ফারিয়া,,,,,,,,,, ঠিক আছে।

রিমান উপরে চলে যায়।

ফারিয়া,,,,,,,,,, কি ব্যাপার মেঘা দেখে তো মনে হচ্ছে কাল সারা রাত ঘুমাও নি, কার খেয়ালে মগ্ন ছিলে।

আমি অয়ন ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি, অয়ন ভাইয়া আমার জবাবা শুনার জন্য চোখ স্থির করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও মুখটা ঘুরিয়ে আর একটু ভাব দেখিয়ে বললাম।

মেঘা,,,,,,,,, যার দুদিন পর বিয়ে সে আর কার খেয়ালে মগ্ন থাকবে, তার হবু স্বামী ছাড়া।

কথাটা মনে হয় অয়ন ভাইয়ার পছন্দ হলো না, তাই কফির মগটা জোরে টেবিলে রাখলো।

রাফি,,,,,,,,, আমার কথা এতো মনে পড়ছিলো তাহলে একটা ফোন দিতে তাহলেই হতো।

আমরা সবাই পিছনে তাকিয়ে দেখি রাফি এসেছে।

রাফি,,,,,,,, আরেক বার আমার কথা মনে পড়লে সোজা একটা ফোন দিবে। দুষ্টু হাসি দিয়ে।

মেঘা লজ্জায় লাল হয়ে যায়।

মেঘা,,,,,,,,,,( আরে আর আসার সময় পেলো না, দুররর এখন আমি কি করবো)

রাফি,,,,,,,,,, এতো লজ্জা পাওয়ার কিছু নেয়।

অয়ন,,,,,,,,,,,, তুমি এখানে।

বাবাও চলে আসে, রাফির আওয়াজ শুনে। ভালো মন্দ সব জিজ্ঞেস করা হয়।

রাফি,,,,,,,,,,,, আসলে কাল বিয়ে তাই ভাবলাম, মেঘাকে শপিং করিয়ে দিয়৷ সময় খুব অল্প তাই বিয়েটাও সাধারণ ভাবে হবে। তাও আমি চাই মেঘা তার পছন্দ মতো লেহেঙ্গা বা শাড়ি পরুক।

অয়ন,,,,,,,,,, মেঘাকে এখন বাহিরে পাঠানো ঠিক হবে না, আবার হামলা হতে পারে। মেঘার জন্য আমি শপিং করে নিয়ে আসবো। ওর কি পছন্দ না পছন্দ সব আমি জানি। তাই বিয়ের আগে বাহিরে বের হওয়ার দরকার নেয়, তাই না আংকেল।

বাবা,,,,,,,, ঠিক বলেছো অয়ন, এখন মেঘাকে বাহিরে পাঠানো যাবে না। মেঘার সেফটির জন্য, বিয়েতে শুধু যাদের ভালো জানি তাদের দাওয়াত দিয়েছি।

রাফি,,,,,,,,,, ঠিক আছে আংকেল আপনি যা ভালো মনে করেন।

রাফি সোফায় বসে, সাথে সাথে অয়ন ও বসে। আমি ইচ্ছে করে রাফির সাথে বেশি বেশি কথা বলছি, যদিও ভালো লাগছে না।

রিমান,,,,,,,,,, ফারিয়া চলো আমরা যায়।

ফারিয়া,,,,, আমি তো মনে করছি আপনি চাবি না গাড়ি আনতে গেছেন।

রিমান,,,,,,,,,, চাবি খুঁজে পাচ্ছিলাম না। চলো এবার।

রিমান আর ফারিয়া তাদের অফিসে যায়। সেখানে গিয়ে রিমান বসে, ফারিয়া কিছু লোকদের সাথে কথা বলছে। কিছু ক্ষন পর ফারিয়া কিছু পেপার নিয়ে আমার কাছে আসে।

ফারিয়া,,,,,,,,,, রিমান তোমার এই ফাইলে সাইন করতে হবে৷

রিমান,,,,,,,,,,, কিসের কাগজ এটা।

ফারিয়া,,,,, এটা না জেনে সাইন করা যায় না।

রিমান,,,,,,,, ওকে, (সাইন করতে গিয়ে থেমে যায়) (এটা ডিভোর্স পেপার না তো আবার) আমি সাইন করবো, কিসে করছি দেখে নিবো না।

ফারিয়া,,,,,,,,,, ঠিক আছে দেখো।

রিমান ফাইল খুলে ভালো করে দেখে অভাক হয়ে যায়।

রিমান,,,,,,,,, এটা কি করে সম্ভব, আমি এতো সম্পত্তির মালিক, আর আমিই জানি না। কে দিলো এতো সম্পত্তি আমার নামে, আমার বাবা যে লোক মারা যাওয়ার আগে আমার নামে একটা সুতাও লেখে দিবে না।

ফারিয়া,,,,,,,,, এ সব সম্পত্তি সব আমার।

রিমান,,,,,,,, তাহলে আমার নামে কিভাবে আসলো, উড়ে উড়ে।

ফারিয়া,,,,,,,,,, এটা আমার মার জমি ছিলো, তিনি মারা যাবার পর আমার বাবার নামে আসে। আমার বাবা এমন করে দলিল করে যে, আমার বিয়ে হওয়ার পর সম্পত্তি আমার স্বামীর নামে হয়ে যাবে। এখন আমার জমি তোমার থেকে ফিরত চাই।

রিমান,,,,,,,,, তোমার মা মারা গেছে মানে, তাহলে মিস্ সাইলা বেগম কে৷

ফারিয়া,,,,,,,,, তিনি আমার বাবার দ্বিতীয় বউ।

রিমান,,,,,,,,, ওও,, এটা আগেই বলতা, এতো প্যাচিয়ে বলার কি ছিলো, আমি এমনি পেপারে সাইন করে দিতাম, তাছাড়া আমি নিজের উপার্জন করা টাকায় বিশ্বাস করি।

রিমান পেপারে সাইন করতে নেয়, তখন সাইলা বেগম আসে।

সাইলা বেগম,,,,,,, দাঁড়াও রিমান। সাইন করার আগে কথাটা তো শুনো।

সবাই পিছনে তাকায়, সাইলা বেগম রিমানের সামনে আসে।

রিমান,,,,,,,,,, কি কথা মা।

সাইলা বেগম,,,,,,,,, সাইন করার আগে এই জমির দামটা তো শুনে নাও। এই জমির দাম বিশ কোটি টাকা। এখানে একটি লোক হোটেল খুলতে চায়, নগত টাকা দিয়ে এটা কিনে নিবে। সেটা শুধু শুধু ফালিয়ে রেখে লাভ নেয়। তুমি বুঝমান তাই এটা বিক্রি করে দিলে কেমন হয়, এটা এখন তোমার নামে তাুমি যা ইচ্ছে করতে পারো।

ফারিয়া,,,,,,,,, তুমি এনার কথা শুনো, সেখানে,

রিমান,,,,,,,, তোমাকে কিছু বলার দরকার নেয়, এই সম্পত্তি আমার নামে লেখা হলেও আমার না। তাই এতে আমার কোনো অধিকার নেয়। ফারিয়ার জিনিস ফারিয়া যা খুশি করুক, আমার কোনো আপত্তি নেই।

বলে রিমান সাইন করে দেয়। ফারিয়া খুশিতে লাফিয়ে সবার সামনে রিমানকে জরিয়ে ধরে।

ফারিয়া,,,,,,,,,, থ্যাংকিউ।

রিমান কাশি দেয়, ফারিয়া সাথে সাথে ছেড়ে দেয়।

রিমান,,,,,,,,, তোমাদের আফিসে আসলাম অথচ বাবাকে দেখছি না।

ফারিয়া,,,,,,,,,,,, বাবা উপরে আছে, নিজের কেবিনে, বাবার কিছু কাজ আছে তাই নিচে আসেনি।

রিমান,,,,,,,,, আমার তাড়াতাড়ি যেতে হবে, তাই আমি বাবার সাথে দেখা করে এখনি আসছি।

ফারিয়া,,,,,,, ঠিক আছে।

একটু পর কেবিন থেকে সবাই বেরিয়ে যায়, শুধু ফারিয়া আর তার মা আছে। ফারিয়া ফাইল গুলো গোছাচ্ছে।

সাইলা বেগম,,,,,,,,, ফারিয়া এখনো সময় আছে, জমি গুলো আমার নামে লিখে দে।

ফারিয়া,,,,,,,,, সরি সাইলা বেগম। আপনি যদি আমার মা হতেন তাহলে লিখে দিতাম কিন্তু আপনি শুধু আমার বাবার দ্বিতীয় বউ।

সাইলা বেগম,,,,,,,,,, সাবধানে কথা বল। ভুলে যাস না কার সাথে কথা বলছিস।

ফারিয়া,,,,,,,,, আমি মিসেস্ সাইলা বেগমের সাথে কথা বলছি। আর কি লাভ হলো রিমানকে উশকিয়ে। কি ভেবেছিলেন আমার মায়ের স্মৃতি আপনি মুছে ছাড়বেন। কিন্তু সেটা তো হলো না। সবাইকে নিজের মতো ভাববেন না ওকে।

সাইলা বেগম,,,,,,,, বিয়ে হওয়ার পর দেখি মুখ ফুটেছে।

ফারিয়া,,,,,,,, কেনো আমি কি আগে বোবা হয়ে থাকতাম নাকি। মাঝেমধ্যে তো মনে হয় আপনার আসল রুপটা বাবাকে বলে দিয়, কিন্তু কি করবো আমি আপনার মতো না।

সাইলা বেগম,,,,,,,,, মুখটা বেশি চলছে তাই না, মুখটা ভেঙে দিবো (ফারিয়ার মুখ চেপে ধরে)

ফারিয়া ছিটকিয়ে মুখ ছারিয়ে নেয়।

ফারিয়া,,,,,,,, আমার বাবার সম্পত্তির মধ্যে আমি সবচেয়ে বড় ভাগটা পাই। ভেবেছিলাম নিবো না কিন্তু এখন ছাড়বো না। আপনার লোভ ঘুরিয়ে দিবো।

সাইলা বেগম,,,,,,,,, এখন আবার আমার সম্পত্তির দিকে নজর। রাগে

সাইলা বেগম রাগে একটা বড় ভারি তামার সোপিজ ফারিয়ার দিকে ছুড়ে মারে, যেটা গিয়ে ফারিয়ার পিঠে লাগে৷ ফারিয়া ছিটকে পরে যায়। এটা রিমান দেখে ফেলে।

রিমান,,,,,,,,, ফারিয়াআআ

রিমান দৌড়ে ফারিয়াকে ধরে। ফারিয়াকে ধরে উঠায়। রিমান রেগে যায়।

রিমান,,,,,,,,, ভুলে যাবেন না, ফারিয়া এখন শুধু আপনার মেয়ে না, আমার স্ত্রী। তাই ওর গায়ে হাত দেওয়ার আগে শত বার ভাববেন। ফারিয়াকে কেও আঘাত করবে সেটা আমি সহ্য করবো না, সেটা যে কেও হোক। চলো ফারিয়া৷

ফারিয়া শুধু রিমানের দিকে তাকিয়ে আছে। তার মুখে কোনো কষ্টের ছাপ দেখা যাচ্ছে না। ফারিয়া হাঁটার চেষ্টা করে কিন্তু সহজে পারছে না। রিমান ফারিয়ার হাত ধরে।

রিমান,,,,,,,, তোমার গায়ে দেখি জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে, তার মধ্যে এই আঘাত।

রিমান তাড়াতাড়ি ফারিয়াকে কোলে নিয়ে, অফিসের মাঝখান থেকে যায়। সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে।

ফারিয়া,,,,,,,, সবাই আমাদের দেখছে। নামিয়ে দিন।

রিমান,,,,,,,, দেখছে তো দেখতে দাও। I Don’t care.

রিমান তাড়াতাড়ি ফারিয়াকে নিয়ে বাসায় যায়। বাসায় গিয়ে ও ফারিয়াকে কোলে করে নিয়ে যায়।

ফারিয়া,,,,,,,,, দয়া করে আমাকে নামিয়ে দাও, বাবা মা আছে তাড়া কি বলবে। সবাই কি ভাবে।

রিমান,,,,,,,, যা খুশি ভাবতে দাও, আমি কি অন্য কারো বউকে কোলে নিছি।

রিমান ফারিয়াকে কোলে করে বাড়ির ভিতরে আসে, সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। ফারিয়া লজ্জায় মুখ লুকিয়ে রেখেছে।

মেঘা,,,,,,,,, হাউ রোমান্টিক (বত্রিশটা দাঁত বের করে)

রিমান,,,,,,,,, ও রোমান্টিক ওলা, তোর ভাবি অসুস্থ চলতে পারছে না, তাই কোলে উঠিয়েছি।

অয়ন,,,,,,, কি হয়েছে৷

রিমান,,,,,,,,৷ জ্বর

মেঘা,,,,,,,, হ্যাঁ ভাবিকে সকালেও অনেকটা অসুস্থ মনে হচ্ছিল।

রিমান,,,,,,,,, অয়ন ডক্টরকে ফোন দে।

অয়ন,,,,,,,, এ্যা তুই কি মিস্তিরি নাকি। ডক্টর থাকতে ডক্টরকে ফোন দিবো।

রিমান,,,,,,,,, ওও সরি আমি ভুলেই গেছিলাম। ঠিক আছে আমি ফারিয়াকে নিয়ে উপরে যাচ্ছি।

রিমান ফারিয়াকে নিয়ে উপরে যায়।

অয়নের ফোন আসে।

অয়ন,,,,,,,,, হ্যাঁ রিনা বলো।

অয়ন রিনার সাথে কথা বলছে, সেটা দেখে মেঘা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে। এটা দেখে অয়ন কথা বলতে বলতে চলে যায়।

মেঘা,,,,,,,,,, কি এমন ঘোড়ার ডিম বলবে যেটা আমার সামনে বলা যাবে না। নিশ্চয়ই ভালোবাসার কথা বলবে৷ ভালোবাসে আরেক জনকে কিস করে অন্য জন্যকে শয়তান একটা।

,,,,,,,,,

রিমান ফারিয়াকে শুয়িয়ে চেকাপ করে, কিছু ঔষধ দিয়ে ফারিয়াকে শুয়িয়ে দেয়।

রিমান,,,,,,,,, ওনি তোমাকে মারলো কেনো, কি হচ্ছে কিছুই তো বুঝছি না।

ফারিয়া,,,,,,,,, সম্পত্তির জন্য, যেটা আমার মার নামে ছিলো। সেখানে একটা দরিদ্রশ্রম আর একটা এতিম খানা আছে। যেটা বিশাল বড়। এই দুটো আশ্রম কোনো অনেক বড়ো। যেটা আমার নানা আমার মাকে লিখে দিয়েছিলো।

আর আমার মার ইচ্ছে ছিলো আমার নামে লিখে দিবে যেটা হওয়ার আগেই তিনি মারা যায়। আমার বাবা এটা আমার নামে লিখে দিতে চাই, তাই আমার সৎ মা বাবাকে অনেক বুঝায় কিন্তু কোনো কাজ হয়না তাই সে বাবাকে উল্টো পাল্টে বুঝিয়ে বলে, আমি এতো বড় দায়িত্ব নিতে পারবো না, তাই এমন করে দলিল করতে যাতে আমার বিয়ের পর সব সম্পত্তি আমার স্বামীর হয়ে যায়।

বাবা এমনি করলো। তারপর আর কি শুরু হয়ে গেলো আমার উপর অত্যাচার তার ভায়ের ছেলেকে বিয়ে করার। যাতে সব সম্পত্তি তার নামে হয়ে যায়। আমি আর কোনো উপায় না পেলে বলি আমি একটা ছেলেকে ভালেবাসি।

তারা জিজ্ঞেস করে সে ছেলেটা কে, আর তখন আমার চোখে পড়ে একটা মেগাজিন সেটাই ছিলো বেস্ট হার্ট সার্জারির আটিকেল, সেখানে তোমার নাম সহ ছবিও ছিলো। আমি তো এমনি বলে দিয়। কিন্তু কে জানতো সেটা আমার মার বান্ধবীর ছেলে হবে।

বাবা আমাকে না বলে তোমার মা বাবার কাছে বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে যায়। বলে আমরা দুজন দুজনাকে ভালোবাসি। আমি চাপে পড়ে সব কিছু তোমার মা বাবাকে বলি। তারা আমাকে বলে তোমাকে বিয়ে করতে তাহলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর তারা আমার মায়ের সম্পত্তি আমাকে আবার ফিরিয়ে দিবে। আমি আর কোনো উপায় না পেয়ে,,

রিমান,,,,,,,, আমাকে বলির পাঠা করে দিলে তাই তো।

ফারিয়া,,,,,,,,,,, হ্যাঁ, মানে না।

,,,,,,, আমাকে আগে বললেই পারতে।

,,,,,,,,, আমি বলেছিলাম তোমাকে সব কিছু বলার কথা কিন্তু তোমার বাবা না করে, আর বলে,

,,,,,,,,, কি তারিফ করেছে আমার।

,,,,,,,,,, বলেছে তুমি নাকি একটা গাধা, রাম ছাগল সব প্যাচ লাগিয়ে দিবে। তাই এখন বলার দরকার নেয়।

,,,,,,,,,, প্রথম দিনেই এতো তারিফ করেছে,,, ইজ্জতের ফালুদা করে দিয়েছে।

,,,,,,,আচ্ছা এসব কথা তুমি তোমার বাবাকে বলো না কেনো৷

,,,,,,,,,,, অনেক কষ্টে বাবা নিজেকে সামলিয়েছে। অনেক জোর করে বিয়ে দিয়েছি বাবাকে। এখন একটু মাকে ভুলতে পেরেছে। আর আমি বাবাকে আবার কষ্ট দিতে চাই না। (হায় তুলতে তুলতে)

,,,,,,,,,, মানে নিজে খাল কেটে কুমির এনেছে।

ফারা ঐদিক ফিরে ঘুমিয়ে যায়। কারন রিমান তাকে ঘুমের ঔষধ দেয়।

অনেক ক্ষন পর রিমান এসে দেখে ফারিয়ার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেছে। জ্বরে কাঁপছে। রিমান তাড়াতাড়ি ফারিয়াকে একটা ইনজেকশন দেয়।

তারপর পানি এনে ফরিয়ার হাত পা মুছে দিচ্ছে। কপালে পানি পট্টি দিচ্ছে।

চোখে অশেষ ঘুম তাও মৃদু মৃদু তাকিয়ে দেখছি, একজন আমাকে পরম ভালোবাসায় আমার যত্ন করছে। তার চেহেরায় চিন্তার ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। যতোটা শান্তি আমার জল পট্টি দেওয়াতে না হচ্ছে তার থেকে বেশি হচ্ছে রিমানের স্পর্শে।

রিমান সুপ নিয়ে আসে, ফারিয়াকে খাওয়াতে। তাই ফারিয়ার পিঠে ধরে ফারিয়াকে উঠাতে নেয়, আর ফারিয়া ব্যাথায় কাতারিয়ে উঠে।

রিমান,,,,,,,,, কি হলো ফারিয়া।

রিমান ফারিয়াকে ঘুড়িয়ে দেখে ফারিয়ার পিঠ লালচে হয়ে গেছে। যেটা দেখে রিমানের চোখে পানি চলে আসে।

রিমান,,,,,,,, আরেক বার ঐ মহিলা কিছু করতে চাইলে ছাড়বো না আমি।

ফারিয়াকে উঠিয়ে বালিশ খাড়া করে তাকে বসায়। রিমান গিয়ে ঔষধ নিয়ে আসে। এসে ফারিয়ার পাশে বসে। ফারিয়ার পিঠ নিজের দিকে ফিরায়। তারপর রিমান ফারিয়ার ব্লাউজের ফিতা গুলো একেক করে খুলতে লাগে। ফারিয়া আটকানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।

রিমান ফিতা গুলো খুলে আস্তে আস্তে ঔষধ লাগিয়ে দেয়। ফারিয়া রিমানের প্রতেকটা স্পর্শে কেঁপে উঠছে, আর রিমান বার বার বলছে,

,,,,,,,,, ব্যাথা লাগছে তোমার।

,,,,,,,,,,,(তোমার স্পর্শে আমার ব্যাথা চলে গেছে। তোমার এমন আচরণেই তো আমি আমার মন দিয়ে দিয়েছি)

রিমান ফারিয়াকে ঔষধ লাগিয়ে তার ফিতাগুলো আবার বেঁধে দেয়। তারপর ফারিয়াকে সুপ খায়িয়ে দেয়। ফারিয়াকে এক কাঁধ করে শুয়িয়ে দেয়।

রিমান,,,,,,,,,, ( তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাও, কাল মেঘার বিয়ে, জানি না কি হবে। তার মধ্যে আবার তুমি অসুস্থ হয়ে গেছো। আল্লাহ এমন কিছু করো যাতে বিয়েটা অয়ন এর সাথেই হয়, না হলে বাঁচবে না আমার বন্ধুটা)

ফারিয়াকে শুয়িয়ে রিমান ও এসব ভাবতে ভাবতে শুয়ে পড়ে। ফারিয়া রিমানের দিকে তাকায়।

রিমান,,,,,,,,,, চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকো ঘুম চলে আসবে।

ফারিয়া একটু এগিয়ে এসে রিমানকে জরিয়ে ধরে শুয়ে থাকে। রিমানের বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে দেয়। রিমান কারেন্ট লাগার মতো কেঁপে উঠে।

রিমান,,,,,,,,,,, ফারিয়া কি করছো।

ফারিয়া,,,,,,,, আপনার হার্ট এতো দ্রুত চলছে কেনো। মানুষের হার্টের চিকিৎসা না করে আগে নিজের হার্টে চিকিৎসা করুন। (চোখ বন্ধ করে, ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে)

রিমান,,,,,,,,, তুমি ছেড়ে দিলেই হার্ট নিজে নিজে নরমাল হয়ে যাবে।

,,,,,,,, তাহলে দরকার নেয়, আমার এভাবে থাকতে ভালো লাগছে।

,,,,,,,,,, সত্যি বলতে আমারো।

রিমান ও ফারিয়কে জরিয়ে ধরে, শক্ত করে। ফারিয়া রিমানের বুকের সাথে মিশে যায়। দুজন দুজনকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,

ভালো লাগলে like, comment করে সাথে থাকুন ধন্যবাদ।