কল্পনায় হলেও শুধু আমারি থেকো পর্ব-০৫

0
699

#কল্পনায়_হলেও_শুধু_আমারি_থেকো💖
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা
#পর্ব_০৫
আমি বসে ছিলাম আমার পাশে আমান বসে আছে,
হটাৎ সামনে থেকে কেউ, এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো।
আমি বুঝে ওঠার আগে রিমি বলে উঠলো,
–আপু তুই এমন কেন বলবি।
মেঘের চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে এটা যে রিমি ত বুঝতে বাকি নেই মেঘের।
কিন্তু ও এখানে কি করে এলো ওকে আনলো কে।
–রিমি তুই।
রিমি মেঘকে ছেড়ে মেঘের সামনে আসে,
–হ্যাঁ আমি কোথায় চলে এসেছিস এটা আমায় ফেলে না বলে।
বল কেন এসেছিস।
–মেঘ নিশ্চুপ।
কি উত্তর দিবে উত্তর দেওয়ার মতো কিছু প্রশ্ন যে সে করে নি।
পাশ থেকে আমান উঠে এসে রিমির পাশে দাঁড়ায়,
–আরে আপনি ত বাংলাদেশি ভাষায় আমার সালি হন তাই না।
তার মনে আমার বোনের মতো।
ও সরি বোনের মতো না বোন ই।
তাহলে ভাই এর বিয়েতে এতো কান্না কাটি কেন.
রিমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমানের দিকে,
–আপনি আমায় নিতে পাঠিয়েছিলেন?
–হ্যাঁ আমি কারন তুমি তোমার বোনকে ভিশন ভালোবাসো আর তোমার বোনের বিয়েতে তুমি নেই এটা ত হয় না।
মেঘ অবাক হচ্ছে আমানের কথা শুনে।
ছেলেটার মাথায় কি চলে তা বুঝা সত্যি মুস্কিল।
কি হচ্ছে তা এখন অন্তত বোঝা ভিশন মুস্কিল।
বিয়ের অনুষ্ঠান টা শেষ।
রাত ৮ টা বাজে,
মেঘ রিমির সাথে একটা ঘরে বসে আছে।
রিমি শুধু কান্না করছে মেঘ শান্তনা দিচ্ছে,
–আমি কাল চলে যাবো আপু।
–কেন?
–আমার পরিক্ষা।
–ওহ আমি কি বলব রিমু সোনা আমার প্লিজ তুই আর কাঁদিস না।
–তুই শুখে থাকবি এটাই অনেক বড়ো আমার কাছে আর কিছুর উত্তর চাই না আমি।
–(শুখে কি আর থাকা হলো রে বোন।
তুই যদি জানতি।) মনে মনে,
রিমি বেরিয়ে যায়,
রিমিকে রেস্ট নিতে দেওয়া হয়।
কাল যখন রিমি কথা বলছিল তখন,
আমানের লোক যায় তাদের বাসায়।
রিমিকে বিয়েতে উপস্থিত করার জন্য,
মেঘ বুঝতে পারে না কি হচ্ছে যদি আমান খারাপ হয় তবে রিমিকে কেন আনলো।
কি হচ্ছে এগুলো সবি যেন একটা কল্পনা।
,
,
রাত ১১ টা।
আমানের বাসার চারিদিকে সব উঁচু উঁচু ইমারত,
চারিদিকে লাইটে চকমক করতে থাকে এই দেশটা সব সময়।
আমানের বাড়িটার পাশে কাচের তৈরি।
ভেতর থেকে সব দেখা গেলেও বাইরে থেকে কিছু দেখা যায় না।
আমানের ঘর থেকে সামনের দিকে ভিশন সুন্দর দেখায় সব।
আমান এখনো রুমে আসে নি।
মেঘ তার ইয়া বড়ো গাউন টা খুলে একটা নর্মাল ড্রেস পরেছে,
ভালো লাগছে না কিছুই।
ইচ্ছে হচ্ছে রিমির কাছে থাকতে কিন্তু তার কাল বাসায় যেতে হবে আর এখন সে ঘুম।
না ঘুমালে যে কাল জার্নি করতে পারবে না।
মেঘ জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছে হটাৎ করোী কোমল স্পর্শ তার কোমড়ে টের পেল।
পেছনে উপস্থিত লোকটার পার্ফিউম এর ঘ্রাণ টা মেঘের চেনা।
এতোই কাছে কাছে থেকেছে যে এতো দিন তাকে বেশ অনেকটাই চেনা হয়ে গেছে।
–মিসেস.খান। আমার দায়িত্ব আজ থেকে আপনার।
মনে আমার পিএ কে আমি ছুটি দিয়ে দিয়েছি।
এখন থেকে আমার পার্সোনাল সব কিছুর খেয়াল আপনি রাখবেন।
আমার খাওয়া আমার ঘুম আমার অফিস মিটিং কয়টায় আমার টাই বেঁধে দিবেন আমার সার্ট ইন করে দিবেন আমার চুল ঠিক করে দিবেন আমায় ব্লেজার পরিয়ে দিবেন।
আমার খাওয়ার সময় কি খাবো তা শুধু আপনি রান্না করবেন।
ও হ্যাঁ আমার খাবার টাই শুধু আপনি রান্ন করবেন।
আর কেউ না ওকে।
তোমার বাবা ঠিক আছেন কাল কথা বলে নিও। তোমার মাও ঠিক আছে।
সবাই সুস্থ আছে সো নো চিন্তা।
আর হ্যাঁ সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ,
আমার বাবা হওয়ার দায়িত্ব টাও আপনার সব থেকে বড়ো দায়িত্ব।
কিন্তু আজ আপনি আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিবেন।
মানে আপনার এই মিষ্টি চুলের ঘ্রাণ এ আমি ঘুমোবো।
আমান কথা গুলো শেষ করে আমায় নিয়ে বিছনায় শুইয়ে দিলো,
আর আমার চুলে মুখ গুজে দিলো।
আমার পেট জড়িয়ে ধরেছে এক হাতে।
তার গরম নিশ্বাস আমার গলায় পড়ছে।
বার বার কেঁপে উঠছি আমি।
সে আমায় একটা চুমু দিলো গলায়।
তার পর চোখ বন্ধ করে নিলো।
প্রতিটা মেয়ে চাই তার স্বামী তাকে অনেক ভালোবাসুক।
আমার ক্ষেত্রে কিন্তু ব্যতিক্রম নয়।
আমিও চাই আমার স্বপ্ন গুলো তার হোক।
আমায় অনেক ভালোবাসুক।
আমার পরিবারের দয়িত্ব নিক সে।
কিন্তু তা কি আদও সম্ভব?
যা চেয়েছি তা কি আদও পেয়েছি?
মেঘ চোখ বন্ধ করে নেয়।
মেঘের কপাল ভিশন ভালো লোকটা তাকে ভিশন ভালোবাসে।
কিন্তু আফসোস মেঘ লোকটাকে ভিশন ঘৃণা করে। সাথে ভয় ও পায়।
কথায় আছে ঘৃণা ভয় যেখনে ভালোবাসা সেখানে বাসা বাঁধতে পারে না।
মেঘ চোখ বন্ধ করে নেয়।
এক অসম্ভব সুন্দর ঘ্রাণ তার নাকে আসছে
আর সেই ঘ্রাণ তাও পাশে থাকা লোকটার থেকে আসছে।
নড়বার কোন অবস্থা নেই লোকটা তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে।
মেঘ কিছু সময় পর ঘুমিয়ে যায়,
,
,
,
বাংলাদেশ,
একটা মহিলা আমানের ছবির কাছে গিয়ে তির মারছে।
একটা দুইটা তিনটা প্রায় ৫-৬ টা তির মারার পর চিৎকার দিয়ে ওঠে,
–এই ছেলে আমার থেকে কি করে জিততে পারে।
কি করে?
কিভাবে সম্ভব?
এতো গুলো বছর যাকে আমি লুকিয়ে রেখেছি।
যার জন্য আমি এতো বছর চেষ্টা করেছি।তা সব শেষ হয়ে গেল।
আআ….. আআআ……
কি করে কি করে সম্ভব এটা।
মেঘের খোঁজ তোকে কে দিলো আমান…………
কে দিলো……..
সব শেষ করে দেব আমি।
আমার কাজ হাসিল না হলে আমি মেঘকে মেরে দিবো।
শেষ করে দিবো সব।
মহিলাটার পাশে থাকা কিছু গার্ড মহিলাকে পানি এগিয়ে দেয়।
মহিলা পানি খেয়ে নেয়,
–খোজ চালাও কোরিয়ার রাজধানী সিহোল এ আছে ওরা।
আমানের দূর্বলতার খোঁজ লাগাও।
আমানের বাড়ির খোঁজ লাগাও।
আমার প্রতি মিনিটের খবর চাই।
মহিলা কথা গুলো তার গার্ড দের বলে বেরিয়ে গেল।
,
,
,
মাঝ রাত,
রাত ৩ টা,
হটাৎ শুকনো কাশি শুরু হশ মেঘের,
চোখ আপনা আপনি খুলে যায়,
পাশে থাকা পানি আনতে গেলে আমানের হাতের বাঁধন তাকে আটকে ধরে,
মেঘ সেটাকে আলগা করার চেষ্টা করতে আমান উঠে যায়,
–কি হয়েছে,
মেঘের কাশি হচ্ছে কিছু বলতে পারছে না।
আমান জলদি উঠে বসে।
পাশে রাখা পানি এনে মেঘের হাতে দেয়,
–নেও খেয়ে নেও।
মেঘ পানি খেয়ে নেয়।
কিছু সময় পর কাশি বন্ধ হয়ে যায় মেঘের।
–তুমি ঠিক আছো?
–হুম।
–কি হয়েছিল?
–জানি না।
–মানে?
–হটাৎ গলা খুসখুস করছিল।
–ও।
আমান গিয়ে শুয়ে পরে।
মেঘ উঠে ওয়াসরুমে গিয়ে তার পর এসে আমানের বিপরীত দিকে শুয়ে পরে।
আমান গিয়ে আবারো মেঘকে জড়িয়ে ধরে,
মেঘ কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে যায়।
কি বলবে?
এভাবেই ঘুমিয়ে যায় দু’জন।
সকালে,
মিষ্টি একটা রোদ এসে মেঘের মুখের উপর পরে,
মেঘ ঘুমিয়ে আছে।
মায়াবী ঘুমন্ত চোখ দু’টো আমানের বুকের মাঝে আছে।
এটা কি সর্গ?
চলবে,