জীবন_রঙ্গমঞ্চ পর্ব-০৪

0
124

#জীবন_রঙ্গমঞ্চ
#পর্বঃ৪
লেখনীতেঃ #সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

তাসনিমে’র কথা শুনে উনারা কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া করেনি। আমার শ্বাশুড়ি এখনো আগের মতে গম্ভীর হয়ে বসে আছেন। উনি বরাবরই ছেলের কথার উপরে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায় না। তার যত কূ’ট’নৈ’তি’ক’তা ছেলের আড়ালে। তাসনিম মায়ের জবাবেরও আশা করছে না। ততক্ষণাৎ আমার দিকে তাকিয়ে তরল গলায় বললেন, “মামণি’কে গেস্ট রুমটা ঠিক করে দেও জবা। আজ থেকে ওই রুমটা তার জন্য বরাদ্দ। আর হ্যাঁ, মামণি’কে ফ্রেশ করিয়ে কিছু খাইয়ে দাও। মামণির জরুরী বিশ্রামের প্রয়োজন।”

নিজের কথা শেষ করে তাসনিম আমার মায়ের হাত ছেড়ে দিলেন। আমি উনাকে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালাম। আমি ধীরপায়ে এগিয়ে গিয়ে মায়ের ডান হাতটা নিজের কোমল হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলাম।
উনি আর এক মুহূর্তোও এখানে দাঁড়ালো না। বড়বড় পা ফেলে নিজের রুমে চলে গেলেন। উনার সাথে সাথে শশুর বাবাও নিজেদের রুমে চলে গেলেন। পিছন থেকে আমার শ্বাশুড়ি গুরু গম্ভীর কণ্ঠে ছেলেকে উদ্দেশ্য করে শুধালো, ” টেবিলে খাবার দিচ্ছি তাসনিম। ফ্রেশ হয়ে জলদি খেতে আয়। সারাদিনে তো মনে হয় পেটে একটা দানা-পানিও পড়েনি।”

ওপাশ থেকে কোনো জবাব এলো না, লোকটা বোধহয় শুনতে পায়নি। আমিও আর দাঁড়ালাম না মাকে নিয়ে চলে যেতে নিলাম। পাশ থেকে ননদ “তাসফিয়া” মিষ্টি হেসে বললো, “তুমিও মামণিকে নিয়ে তাড়াতাড়ি খেতে এসো ভাবি। আমি মা’কে সাহায্য করছি।”

আমি প্রত্যুওরে একটু হাসলাম। মেয়েটা বরাবরই মিষ্টি স্বভাবের, সাথে তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমতীও বটে। এই যে তার মা শুধু ছেলেকেই ডাকলো আমাদের মা-মেয়েকে খেতে আসতে বলেনি , মায়ের দৃষ্টি-ত্রুটিটুকু খুব সূক্ষ্ম ভাবে গুছিয়ে দিলো। তান্মধ্যে আমার শ্বাশুড়ি মায়ের সামনে এসে দাঁড়ালো। খুব চাপা স্বরে বললেন, ” নিজের সংসার খেয়ে এখন আমার সংসারটা খেতে এসেছো বুঝি!”

মা কিছু বললো না, মাথা নিচু করে নিলো। উনার এমন কথা শুনে শরীর জ্ব’লে উঠলো আমার। আমিও মায়ের হাতটা আরো একটু শক্ত করে ধরে গমগমে গলায় বললাম,

“আমার মা কোনো রা*ক্ষ*সী নয় ফুপি, যে তোমার সংসার গিলে ফেলবে। বরং তোমার চ’রি’এ’হী’ন ভাই’কে ভরসা ও বিশ্বাস করে আজ বাজে ভাবে ঠকে গিয়েছে মানুষটা। সারাজীবন সংসারে ত্যাগ স্বীকার করা এই আমার মা’টাকে রাস্তায় ছুঁ’ড়ে মা’র’তে দ্বিতীয়বার ভাবেনি সে।
আর হ্যাঁ, আমার মা’কে অসহায় ভেবো না তোমরা। আমার মায়ের এই জবা আছে। এই জবা তার মায়ের হাত ধরেছে, আজ থেকে কোনো দুঃখ তাকে ছুঁ’তে পারবে না। তাই,নিজেদের লিমিট ক্রোশ করো না কিন্তু, বলে দিলাম। বেশি বুঝতে আসলে তোমাদের ভাই-বোন’কে আর এতটুকু ছেড়ে দিবো না আমি।”

ওখানে আর দাঁড়ালাম না, মাকে নিয়ে দ্রুত রুমে চলে আসলাম। মা এসেই ধাপ করে পিছনায় বসে পড়লেন। মায়ের চক্ষু থেকে গড়িয়ে পড়লো দু’ফোঁটা অশ্রুকণা। আমি মায়ের পাশে বসলাম, যত্ন করে সেগুলো নিজের আঁচল দিয়ে মুছে দিয়ে কোমল কণ্ঠে বললাম,

“কেঁদো না মা। কিছু দুঃখ, সুখের আভাস। চিন্তা করো না মা, আমি আছি না। জানো না, দুঃখের থাকে স্বস্তি লুকিয়ে থাকে?”

মা ভারী দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। মলিন কণ্ঠে বললো, “আমাকে একটা কাপড় বের করে দে জবা। একটু ফ্রেশ হতে হবে।”

আমি আর দেরি করলাম না, বিনাবাক্যে মায়ের হাতে কাপড় তুলে দিলাম। মা চলে যেতেই রুমটা হালকা করে গুছিয়ে নিলাম। অতঃপর রান্না ঘরে চলে গেলাম। তাসনিম ভাই টেবিলেই বসা ছিলেন, আমাদের আসার অপেক্ষা করছিলেন। আমাকে একা দেখে বললেন,

“জবা তুমিও একটু ফ্রেশ হয়ে আসো না। তারপর সোজা খেতে এসো, অপেক্ষা করছি আমি। আর, মামণি কোথায়? তাকে ও নিয়ে এসো।”

লোকটার এত খেয়াল, দায়িত্ববোধ দেখে কিঞ্চিৎ হাসলাম আমি। মুচকি হেসে বললাম, “আপনি খেয়ে নিন, অপেক্ষা করতে হবে না আপনাকে। আমি আজ মায়ের জন্য রুমে খাবার নিয়ে যাই। আমি তার সাথেই খাবো। আপনি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন, আমি আসছি।”

“আচ্ছা। খেয়ে নিও কিন্তু।”

আমি মাথা নাড়ালাম। মায়ের জন্য প্লেটে করেই রুমে খাবার নিয়ে আসলাম। এসে দেখি মা জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন। বিরবির করে বলছেন,

” হৃদয় জুড়ে আজ ব্যা’থার ছাড়’পো’কা, কা’মড়ে দিলেই ফু’লে উঠে সব স্মৃতি।ঝ’রা পাতার ন্যায় ঝ’রে গেলো জীবন। আমার হয়েও, হলে না তুমি ;
মাঝ পথেই আজ ইতি।”

হয়তো কথার সাথে দু’ফোঁটা অশ্রুও ছিলো তার চোখে। আমি শুনেও না শোনার বান করে গ্লাসে পানি ঢেলে নিলাম। মা আমার আসার শব্দ পেয়ে নিজেকে সামলে নিলো। খাবার দেখে বললেন, “এগুলো আনছিস কেনো? আমার কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না। তুই খেয়ে ঘুমিয়ে পর মা।”

আমি কিছু বললাম না। ভাত মেখে মায়ের মুখের সামনে ধরলাম। মা যেন আজ ছোট বাচ্চা হয়ে গেছে আর আমি তার মা। মা বাচ্চাদের মতো জেদ ধরেছে, খাবে না সে। আর আমি মায়েদের মতো নাছোড়বান্দা! আমার ছোট্ট মেয়েটাকে জোর করে অল্প একটু খাইয়ে দিলাম। প্লেটের বাকিটুকু নিজেই খেয়ে নিলাম। মা নির্জীব হয়ে বসে আছেন, ফেকাসে হয়ে গেছে মুখখানা। মনে হচ্ছে, আজ তার দেহের প্রাণ নেই। মায়ের বয়স আজ যেন দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। শখের পুরুষটি হয়ে গেলো অন্যকারো, সাথে আগলে রাখা সংসার খানা হারিয়ে গেলো চিরতরে । আহা! সে কি যন্ত্রণা.. চাপা ব্যথায় ক্ষ’ণে ক্ষ’ণে দ*গ্ধ হচ্ছে আমার মায়ের হৃদয়খানী।
মায়ের এমন রুপ দেখে চোখ দু’টো ছলছল করে উঠলো আমার। চটজলদি নিজেকে সামলে নিলাম। ভা’ঙা’চো’রা মানুষটার সামনে নিজেও ভে*ঙে পড়লে চলবে না। উঠে দাঁড়ালাম আমি। ব্যাগ থেকে মায়ের রাতের ঔষধ গুলো বের করে খাইয়ে দিলাম। ঔষধের সাথে একটা ঘুমের ঔষধ ও দিয়ে দিলাম। না হলে আজ বাকি রাতটুকু অসহ্য য’ন্ত্র’ণা’য় ছ’ট’ফ’ট করে কাটাবে মানুষটা। অতঃপর মা’কে সুয়ে দিলাম। মায়ের মাথার পাশে বসে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আমি। মা আমার যত্নটুকু দু-চোখ মেলে উপভোগ করছে কিন্তু আজ আর তার মুখে কোনো শব্দ নেই। প্রিয় হারানোর শো*কে কথার ঝুলি ফুরিয়ে গিয়েছে বোধহয়। মিনিট দশেক পেরোতেই মা চোখ বন্ধ করে নিলেন। ঔষধ কাজ হয়েছে। নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লো মা। আমি আরো কতক্ষণ তার পাশে বসে হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে আসলাম নিজের রুমে।
.
.
ঘড়ির কাঁটায় রাত তিনটে ছুঁই ছুঁই। তাসনিম এখনো জেগে আছেন। লোকটা বসে বসে এখনো আমার আসার অপেক্ষা করছেন। সময় কাটানোর জন্য ফোন স্ক্রল করছিলেন। আমাকে দেখে মুচকি হেসে উঠে দাঁড়ালো। আমিও ধীরপায়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। উনি হুটকরে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন আমাকে। বারকয়েক মাথায় গাঢ় ওষ্ঠ ছুঁয়ে দিলো।উনার আদুরে স্পর্শ পেয়ে সারাদিনের ক্লান্ত শরীরটা এলিয়ে দিলাম তার প্রশস্ত বক্ষে। সারাদিন ঝুট-ঝামেলার পর এখানে যেন এক চিলতে শান্তি পেলাম আমি। নিজেকে আর সামলাতে পারিনি আমি, এতক্ষণের আঁটকে রাখা কান্না গুলো দলা-পাকিয়ে আসছে। ফুঁপিয়ে উঠলাম আমি। কান্নারত কণ্ঠে বললাম,

“আমাদের সবকিছু এলো-মেলো হয়ে গেলো তাসনিম ভাই। ওই লোকটা… ওই লোকটা আমার মা’কে শেষ বয়সে এতবড় শাস্তি দিলো। আমি ওই লোকটাকে কখনো ক্ষমা করবো না, কখনো!”

উনার হাতের বন্ধন আরো একটু গাঢ় হলো। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মেলাম কণ্ঠে বললেন,

“কাউকে ঠ’কা’নো’র চেয়ে ঠ’কে যাওয়া ভালো।
ঠ’ক’লে হয়তো সাময়িক অ’শা’ন্তি, কিন্তু ঠ’কা’লে এপার ওপার, দু পারে অ’শা’ন্তি!”

আর কিছু বললো না উনি। কাঁদতে দিলো আমায়। কাঁদলে বুকে জমে রাখা কষ্ট গুলো কমে যায়। আমিও নিজেকে আটকালাম না, বিশ্বস্ত সঙ্গীর, উম্মুক্ত বক্ষে মাথা রেখে সুযোগ বুঝে কেঁদে নিলাম। মিনিট দশেক পেরোতেই কান্নার বেগ কমে গেলো আমার। উনি আমায় আদুরে কণ্ঠে ডাকলো,” “র*ক্তি”ম’জবা!”

“হু।”

আমার সাড়া পেয়ে উনি আমার মাথা দু’হাতে উঁচু করে ধরলো। কপালে চুমু খেয়ে চোখের জলটুকু যত্ন করে মুছে দিয়ে বললে,

“এভাবে কেউ কাঁদে, পাগলী! ইশ! চোখ-মুখ ফুলির ফেলছো তো।”

আমি মাথা নিচু করে ফেললাম। আবারও চোখ দু’টো টলমল করছে। উনি আমার কাঁধ হাত দিয়ে পুনরায় বললেন, ” বি স্ট্রাং জান! তুমি এভাবে ভে’ঙে পড়লে হবে বলো? তোমার কাঁধে দায়িত্ব বেড়েছে জবা। মায়ের সব দায়িত্ব তোমার কাঁধে এসেছে। তুমি ছাড়া কিন্তু তার কেউ নেই। তুমি ভে’ঙে পড়লে তো চলবে না সোনা। মা’কে ভালো রাখতে হবে তো জান।”

আমি চ*ট করে মাথা তুলে তার দিকে তাকিয়ে বললাম, “আমি মা’কে অনেক ভালো রাখবো তাসনিম ভাই।”

লোকটা হাসলো। ততক্ষণাৎ আমাকে ধরে নিয়ে বিছনায় সুয়ে দিলো। তার সাথে টুকটাক কথা বলতে বলতে কখন জানি ঘুমিয়ে পড়লাম জানি না। ঘুম ভাঙলো ফজরের আযানের সুরে। চোখ মেলতেই দেখলাম, তাসনিম আমাকে জড়িয়ে ধরে আরামে ঘুমাচ্ছে। ঘুমালেও যে পুরুষদের এতো মায়াবী লাগে উনাকে না দেখলে বুঝতামই না। আমি একদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলাম তার দিকে। ছেলেটার মুখে যেন হাজারো মায়া লেপ্টে আছে। অদ্ভুত এক মায়া’য় টানছে আমাকে।এ যেন আমার মায়ারাজ!
আমি ঝুঁকে তার কপালে এক চুমু খেয়ে নিঃশব্দে উঠে পড়লাম।
.
.
বাড়ির সবাই এখনো ঘুমাচ্ছে। ফজরের নামাজ পড়ে মায়ের রুমে চলে গেলাম আমি। গিয়ে দেখি মা জায়নামাজে বসে দু-হাত তুলে রবের নিকট প্রার্থনা করছে আর ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে । সেই কান্নার সুর শুনে কেঁপে উঠলো আমার আ*ত্মা। এই কান্না কি ভালো থাকতে দিবে স্বার্থপর মানুষগুলো কে? কক্ষণো না! কক্ষণো না! রব এদের বিচার করবেই। শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না। নিঃশব্দে চলে এলাম রান্না ঘরে।
ভোরের আলো ফুটেছে। রান্না করছিলাম আমি। কিছুক্ষণ পরই তাসনিম এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আমায়। ঘাড়ে চুমু খেয়ে মৃদু কণ্ঠে বললো, “একটু রুমে আসবে জবাজান? তোমার সার্টিফিকেট গুলো খুঁজে পাচ্ছি না।”

আমার রান্নার হাত থেমে গেলো। উনার দিকে ঘুরে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “এতো ভোরে আমার সার্টিফিকেট খুঁজছেন কেন আপনি? ওগুলো দিয়ে কি করবেন এখন?”

“তোমার জন্য কিছু চাকরির এপ্লাই করতে চাচ্ছি আমি। তারজন্য ওগুলোর প্রয়োজন রয়েছে। আজকে অফিসে যাওয়ার সময় নিয়ে যাবো কাগজপত্র গুলো।”

“চাকরি, এখন? আপনি না বললেন গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট না করে জব করা যাবে না। এখনো তো কমপ্লিট করতে এক বছর বাকি। তাহলে?”

“আগে দরকার পরেনি তো জবাজান। এখন তোমার একটা চাকরির খুব প্রয়োজন। এখন মা এসেছে তোমার কাছে। যতই হোক, এটা তোমার শ্বশুর বাড়ি। তোমার ইনকাম নেই, জামাইয়ের পয়সা দিয়ে মা’কে চালালে খুব সহজেই মানুষ তোমার দিকে আঙুল তুলবে। মামণিকে ও সুযোগ বুঝে কথা শুনাবে। আমি চাই না, আমার বউ এসব শুনে কষ্ট পাক
বা তার দিকে কেউ আঙুল উঁচু করে কথা বলার সাহস পাক। তাই, মায়ের সমস্ত কিছু তুমি তোমার ইনকাম দিয়ে চালাবে। আর আমি তো আছিই। এতে মা ও স্বস্তি পাবে, নিজেকে ছোট মনে করবে না। বুঝলে জবাজান? তোমার ইনকাম কিন্তু আমি চাই না। শুধু মায়ের জন্য হলেও তোমাকে অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে।”

আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে উনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। লোকটার চিন্তা ভাবনা গুলো সত্যিই অন্য রকম। এই লোকটা ক্ষণে ক্ষণে আমাকে অবাক করে দেয়। আমার সমস্ত বিপদ-আপদে ঢাল হয়ে পাশে দাঁড়ায়। এই লোকটা আমার সাহস, আমার শক্তি, আমার অনুপ্রেরণা! এই পুরুষটি’কে আমি ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি! এই পুরুষটি একান্তই আমার। আমার মায়ারাজ!

চলবে…..