জীবন_রঙ্গমঞ্চ পর্ব-০৩

0
149

#জীবন_রঙ্গমঞ্চ
#পর্বঃ৩

লেখনীতেঃ #সুমাইয়া_আফরিন_ঐশী

কিন্তু মা নড়লো না। কাঠকাঠ কণ্ঠে জবাব দিলো,

“এক্ষুণি চলছি না আমি। ওই লোকটার সাথে আমার আর কোনো আপোষ নেই। আমি আমার পাওনা বুঝে নিয়ে তবেই নড়বো। আমি আমার কাবিননামার দেড় লাখ টাকা নগদ চাই। আর এই সংসারে আমার বলতে যতটুকু রয়েছে সবটুকু সাথে করেই নিয়ে যাবো আমি। হোক সেটা ব্যাবহারিত নতুন কিংবা পুরাতন।
আমাদের মাঝে আর কোনো পিছু টান থাকবে না। তাই, অফিসিয়াল ভাবেই মুছে দিবো এই নড়বড়ে সম্পর্কের নামটি। এখানে লেনা-দেনায় একচুল পরিমাণ ও ছাড় দিবো না আমি। জবা? তুই ওই লোকটাকে বল, এক্ষুণি যেন সবকিছুর ব্যাবস্হা করে। আমি আমার প্রাপ্য অধিকার চাই।”

একদমে কথাগুলো বলে মা ধীরপায়ে সদর দরজার বাহিরে গিয়ে দাঁড়ালেন। চিরতরে ত্যাগ করলেন স্বামীর শখের ঘরখানা। ত্যাগ করতে হলো, এতদিনের যত্নে গড়া সংসার। যে সংসারটা একটু আগেও তার ছিলো সেই সংসারটা এখন পুরোটাই অন্য কারো। শুধু সংসারটাই নয়, প্রিয় মানুষটিও অন্য কারো। শখের পুরুষটি আজ থেকে তার জন্য একেবারেই নিষিদ্ধ।
বুক চি*রে ভারি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো মায়ের। লোকচক্ষুর আড়ালে চোখ দু’টো টলমল করে উঠলো তার। কিন্তু কাঁদল না মা। চোখের জলটুকু গড়িয়ে পড়ার আগেই নিজেকে সামলে নিলো।
.
এতো মেন্টাল প্রে’সা’রে’র পরেও মা ভে*ঙে পড়েননি। মায়ের শক্তপোক্ত কথা শুনে কিয়াৎক্ষণ আব্বা তব্দা খেয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। যে মানুষটা সামান্য বিষয়ে আঁচলে চোখ মুছতেন। আজ সেই মানুষটা স্বামী হারানোর শোক ভুলে ঝংকার তুলছেন। আব্বা হয়তো ভাবছিলেন, মা এতকিছুর পরেও তার হাত-পা ধরে কান্নায় ভে*ঙে পড়বেন। এতটুকু আশ্রয় ভি*ক্ষা চাইবে।আর উনি মানুষটার অসহায়ত্বের সুযোগ নিবেন। কিন্তু উনি হয়তো জানেন না, “নারী তার প্রিয় মানুষের থেকে অকল্পনীয় আঘাত পেলে বদলে যায়। তখন ভালোবাসাটুকু ঘৃণার চাদরে মুড়িয়ে যায়।”

আব্বা অবিশ্বাস্য চোখে দেখছিলেন মা’কে। কিন্তু মা ভুল করেও তাকায়নি লোকটার দিকে। আমি দেখছিলাম আব্বা”র জন্য মায়ের চোখে একরাশ ঘৃণা।

আমিও বাবা নামক লোকটার দিকে ঘৃণায় আর তাকাতে পারলাম না। এই মুহুর্তে এই লোকটার সাথে কথা বলতেও শরীর ঘিনঘিন করছে। আমিও মুখ ফিরিয়ে নিলাম। মায়ের পিছনে পিছনে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। দাঁড়ালাম মায়ের কাছ ঘেঁষে। মা মলিন হাসলো। এই হাসির আড়ালে আমি দেখছিলাম মায়ের অসহায়ত্বা।

আমার অবস্থা বুঝতে পেরে তাসনিম কোনো সম্মোধন ছাড়াই আব্বা’কে উদ্দেশ্য করে বললেন, ” ভালোবাসার পরিবর্তনে ঘৃণাটুকুই বুঝে নিলেন। নতুন পেয়ে পুরাতনকে’ই বিদায়ই দিলেন।
কাগছে কলমে বিদায় করে দেওয়ার আগে তার প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দিন। সবকিছুর ব্যাবস্হা করুণ।”

আব্বা ততক্ষণাৎ কিছু একটা ভেবে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। আমরা আর কেউ সেদিকে এগোলাম না।
.
.
ইতোমধ্যে সব জায়গায় ছড়িয়ে গেছে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের খবর। উঠোনে এখন বেশ ভির জমেছে। লোকজন নিজেদের কাজকর্ম ফেলে এখানেই দাঁড়িয়ে আছেন। তারা এখন দুই দলে বিভক্ত হয়েছে। এক পক্ষ আব্বার পক্ষে অন্য পক্ষ আম্মা’র পক্ষে। কেউবা আফসোস করছে মায়ের জন্য, কেউ বা “ঠিক কাজ হয়েছে”, “আব্বা ঠিক কাজ করছে” বলে বাহবা দিচ্ছে। আমার মা এদের কথা আমলে না নিয়ে উঠনের এক কোণায় চুপচাপ বসে আছেন। নির্জীব ভঙ্গিতে, কিছু একটা ভাবছেন।
আমি ও মায়ের পাশে বসা। তাসনিম বাড়ির পাশে থাকা বাজারে গিয়েছে কিছু একটা কাজে।

মিনিট পেরোতেই মা হঠাৎ করে বলে উঠলেন, “জবা এখানে বসে আছিস কেন তুই? ঘরে গিয়ে আমার জিনিসপত্র গুলো গুছিয়ে ফেল।”

আমি আমতা আমতা করে বললাম, তুমিও আমার সাথে চলো মা।”

“ওই ঘরটা এখন আমার জন্য নি’ষি’দ্ধ জবা। যে ঘর একবার ত্যাগ করেছি আমি, সেই ঘরে আর পা রাখতে চাই না। তুই যা। ওখানে তোর অধিকার রয়েছে।”

আমি আর কথা বাড়ালাম না। আশে-পাশের কয়েকজন পা’ড়া-পড়শীদের নিয়ে চলে গেলাম মায়ের ঘরে।
একে একে তার সবকিছু ঘুছিয়ে নিলাম। আব্বা বাসায় নেই বোধহয়। নতুন বউ একটা রুমে দরজা বন্ধ করে বসে আছেন। শুনেছি আব্বা, বাড়ির দলিল জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে লোন উঠাতে গিয়েছে।
.
.
বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে ধরনীর বুকে।
গ্রামের কিছু সম্মানিত ব্যক্তিরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সন্ধ্যা সাতটায় আমাদের উঠানে সালিশ বসবে। যেহেতু মৌখিক ভাবে হলেও তাদের তালাক হয়ে গেছে তাই কেউ আর সবকিছু মিটমাট হওয়ার প্রশ্ন তুলছেন না। মায়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন সবাই। মা যেভাবে চায়, তারা সবকিছুর ব্যবাস্হা করে দিবেন। সবকিছু হতে আর মাএ কয়েক ঘন্টা বাকি। আব্বাও ইতোমধ্যে টাকা-পয়সার ব্যাবস্হা করে ফেলছেন।

কি অদ্ভুত সবকিছু! কেউ পবিত্র সম্পর্ক হারানোর শোকে, শোকে কা’ত’র। কেউ বা নতুন পেয়ে পুরাতন’কে বিদায় করার করছে আয়োজন। কোনো এক চাপা ব্যথা বুকে নিয়ে পাথর হয়ে আছেন আমার মা। সেই থেকে এখন অবধি, একই জায়গায় বসে আছেন উনি। এ অবধি আমাদের কারো কিছুই খাওয়া হয়নি। যদিও তাসনিম বাহির থেকে শুকনো খাবার এনেছিলো আমাদের মা-মেয়ের জন্য। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কারো গলা দিয়ে খাবার নামেনি। খাবার গুলো অযত্নে একই ভাবে পড়ে আছে।
.
.
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সময়টি আসলো। বাড়ির উঠোনে বড় আসর বসেছে। অনেক লোক এসেছে, সাথে আছে মসজিদের ইমাম। এলাকার চেয়ারম্যানের সামনেই এক পাশে দাঁড়িয়ে আছি আমি, তাসনিম, মা। বিপরীত দিকে আব্বা দাঁড়িয়ে আছেন। সে বড্ড স্বাভাবিক।
কিন্তু মা…মা আমাকে শক্ত করে ধরে, দাঁড়িয়ে আছেন । আমি টের পাচ্ছি আমার মায়ের সারা শরীর কাঁপছে। চোখ দু’টো টলমল করছে। এরিমধ্যে চেয়ারম্যান “আবদুল মতিন” মা’কে উদ্দেশ্য করে বললেন,”আপনার আর কিছু বলার আছে? কোনো অভিযোগ আছে কি?”

মা কিয়াৎ ক্ষণ চুপ করেই রইলেন। অতঃপর নিচের দিকে তাকিয়ে এলোমেলো কণ্ঠে বললেন,

” নতুন কিছু বলার নেই চেয়ারম্যানসাব। না আমার উপর তার সম্মান ছিল, না আমার উপর তার নিয়ন্ত্রণ ছিল। যখন প্রতিশ্রুতিই নেই, তখন ব্য’র্থ’তা’র দুঃ’খ কিসের!সে তার নিজের পথে গেল, আমি আমার পথে গেলাম। আপনারা দয়া করে, দ্রুত আমার চলে যাওয়ার ব্যাবস্হা করুন। এখানের সবকিছু আমার অসহ্য লাগছে! আমার দ’ম বন্ধ হয়ে আসছে।”

“আমি বুঝতে পারছি আপনার কষ্টটা।”

মা পরক্ষণে মলিন হাসলো, চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্য করে বললেন, “এ পৃথিবীতে সবাই আমাদের বুঝলেও প্রিয় মানুষ গুলো আমাদের কস্মিনকালেও বুঝে না।”

চেয়ারম্যান কিছু বললেন না। মা পুনরায় আবারো বললেন, আচ্ছা বাদ দিন। আর একটা কথা বলি। এখানে আমার মেয়ে-মেয়ের জামাই সহ অনেকেই উপস্থিত রয়েছে। তাই দয়া করে, তাদের সামনে বিভ্রান্ত মূলক প্রশ্ন করবেন না।”

আরো কিছু ফর্মালিটি পুরন করা হলো। বিচারসভা কিয়াৎক্ষণ শুনশান নীরবতায় আচ্ছন্ন। তারমধ্যে চেয়ারম্যানসাব আব্বার থেকে টাকা বুঝে নিয়ে আমার হাতে তুলে দিলেন। অতঃপর মসজিদের ইমামকে অনুমতি দিলেন পরবর্তী ব্যাবস্হা করতে।
কয়েক মিনিট পেরোতেই চোখের সামনে চিরতরে বিচ্ছেদ হয়ে গেলো আমার বাবা-মায়ের।
আম্মা নীরবে কাঁদছে! এতক্ষণে জমিয়ে রাখা অশ্রু গুলো আর বাঁধ মানলো না। মা’কে বুকে জড়িয়ে ধরে আছি আমি। আমার চোখেও জল। মিনিট পাঁচেক পেরোতেই মা নিজেকে সামলে নিলো।
উঠোনের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে বাবা ও তার নতুন বউ।
মা খানিকটা সেদিকে এগিয়ে গেলো। সাথে আমি ও গেলাম। মা লম্বা শ্বাস ছেড়ে জড়ানো কণ্ঠে বাবা’কে বললেন,
“একই পৃথিবীতে আপনিও থাকবেন আর আমিও,
একই বাতাসে পড়বে আপনার আমার নিঃশ্বাস।
কিন্তু, আর এক নেই আমাদের জীবনের পথচলা,
রাখা হয়নি আমাদের এক সাথে চলার আশ্বাস। এই শহরে চলার পথে, আমাদের আর কখনো দেখা কিংবা কথা হোক। আপনি আমি কেউই রাখিনি পিছুটান।
বিচ্ছেদের য’ন্ত্রণা টা ভোগ করে হলেও, সম্পর্ক নামক মৃ’ত্যু’য’ন্ত্র’ণা থেকে আপনাকে মুক্তি দিলাম। তবুও আপনি ভালো থাকবেন।”

মায়ের কণ্ঠে কিছু একটা ছিলো হয়তো। আব্বা সাথে সাথে মাথা নিচু করে নিলেন। আমি মায়ের জড়ানো কথা শুনে শব্দ করে কেঁদে উঠলাম। চোখের সামনে বাবা-মায়ের আলাদা হবার দৃশ্য আর কোনো সন্তানের সামনে না আসুক। এই য’ন্ত্রণা যে সহ্য করার মতো নয়! আহ্! এ যেন এক ম’র’ণ য’ন্ত্র’ণা!

মা এরপর ও থেমে নেই। আব্বার পাশে দাঁড়ানো নতুন বউয়ের দিকে এক পলক তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলেন। অন্য দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

“তুমি আমার মেয়ের বয়সী হবে। তাই, তোমাকে সতিন বলে সম্মোধন করতে পারলাম না। তুমি বাচ্চা মেয়ে হয়েও, আমার থেকে কেঁড়ে নিলে আমার এতদিনের গড়া সংসারটা। না! না! এই মুহুর্তে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। তবে, আমার রুহুের “হায়” তোমাদের ভালো থাকতে দিবে না।”

কথা শেষ করে মা আর এক মুহূর্তও দাঁড়ালো না। এলোমেলো পায়ে দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলেন।
আমি ও আর দাঁড়ালাম না। আব্বার দিকে এক পলক ঘৃণা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলাম। সেই সাথে ক’ব’র দিয়ে দিলাম বাবা নামক মানুষটা’কে। ধরে নিবো, আজ থেকে আমিও এ’তি’ম।
.
.
শুনশান রাত। গাড়ি চলছে আমার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে। মা’কে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়িতেই যাচ্ছি। আমার মায়ের এখন আপন বলতে আমিই। একসময় মা স্বামী’র জন্য সবাইকে ছেড়েছে। সেই থেকেই তার আত্মীয়দের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আজ যখন মা’কেই সেই মানুষটা ছেড়ে দিলো, তার আর কোন পথ রইলো না।
কিন্তু মা তবুও ভে’ঙে পড়েননি। মা তো কিছুতেই ও বাড়িতে যাবে না। প্রয়োজনে সে রাস্তায় থাকতেও রাজি। তার এক কথা, “আমরা যেন চলে যাই। তার কথা ভাবতে হবে না। সৃষ্টিকর্তা তার একটা ব্যবস্হা করেই দিবে।”

কিন্তু মা’কে একা রেখে কি করে যাই আমরা। বহুকষ্টে তাসনিম ভাই বুঝিয়ে আমাদের সাথে এনেছেন।
আমার মা এখনো ভীষণ ইতস্ততবোধ করছে। ও বাড়িটা হোক আমার শশুর বাড়ি। তবুও তো আমার শ্বাশুড়ি একসময় ননদ ছিলো।
স্বামী ত্যাগ করে তারই বোনের বাড়িতে যাওয়া তার জন্য লজ্জাজনক ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, দেয়ালে পিঠ ঠে*কে গেলে কত কিছুই সহ্য করতে হয় আমাদের। আমার মা এখনো গাড়িতে বসে নিরবে চোখের জল ফেলছে। আমি দেখেও বাঁধা দিলাম না। যাক না কষ্ট গুলো অশ্রু হয়ে ঝড়ে।
.
.
আমার শ্বশুর বাড়িতে আসতে আসতে রাত দু’টো বেজে গিয়েছে। বাসায় ননদ,শ্বশুর, শ্বাশুড়ি জেগেই আছেন। আমাদের আসার অপেক্ষা করতে ছিলেন উনারা। তারা উপস্থিত ছিলো না, তবে শুনেছে সবকিছু। তাসনিম আগেই মোবাইল করে জানিয়ে দিয়েছে।
মা গাড়ি থেকে নেমে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তারই পাশে আমি। তাসনিম ব্যস্ত হাতে গাড়ি থেকে মা’লা’মা’ল নামিয়ে নিলেন। ভাড়া মিটিয়ে ড্রাইভারকে বিদায় দিয়ে মায়ের পাশে এসে দাঁড়ালো। আলতো করে মায়ের হাত ধরে, বিনয়ী কণ্ঠে বললেন,

“সম্পর্কে আপনি আমার শ্বাশুড়ি হন। তবে আমি মনে করি, আপনি আমার আরো একজন মা। এটা আমার বাড়ি, ছেলের বাড়িতে থাকতে এতো লজ্জা করবেন না মামণি। আমি থাকতে এই বাড়িতে আপনার কোনো অসম্মান হবে না, আশা করছি ।”

মা এক পলক চাইলে তাসনিমের দিকে তবে কিছু বললো না। এরিমধ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলো আমার শ্বশুর ও ননদ। কিন্তু শ্বাশুড়ি আসলেন না, উনি হয়তো ভিতরেই আছেন। তাসনিম আর দেরী না করে মায়ের হাত ধরেই ভিতরে’র দিকে পা বাড়ালো। আমরা তিনজন ও হাতে-হাতে জিনিসপএ গুলো নিয়ে আসলাম।
বসার ঘরেই গম্ভীর হয়ে বসা ছিলেন আমার শ্বাশুড়ি। তাসনিম তার শ্বাশুড়ির হাত ধরেই মায়ের নিকটে চলে গেলেন। মায়ের দিকে তাকিয়ে মৃদু কণ্ঠে বললেন,

“মা। তোমাকে একটা কথা বলি?”

“বল।” ছোট্ট করে জবাব দিলো মা। তাসনিম কোনো বণিতা ছাড়াই আগের ন্যায় বললেন,

“জবা ও মামণির সাথে আমাদের আগে-পিছে পুরনো সম্পর্কের কোনো পিছু টান নেই। মামণি এই মুহুর্তে, এই বাড়িতে এসেছে শুধু জবার মা হয়ে।জবা তার একমাত্র কন্যা। তুমিও যেমন তোমার ছেলের সাথে একসাথে থাকছো তেমনি মামণি ও এখন থেকে এই বাড়িতে তার মেয়ের সাথে থাকবে। আশা করছি, তাকে কখনো তোমরা অসম্মান করবে না। সবাই মিলেমিশে থেকো মা।”

চলবে…….