তুমি আমার জিবন পর্ব-০৫

0
96

#তুমি_আমার_জিবন
#লেখিকা_তৃষা_খাতুন
পর্ব ৫

এই মেয়ে এমন করে নিঃশ্বাস নিচ্ছ কেন। আমি তো কিছুই করিনি, এই পর্যন্ত। তুমি যদি চাও তাহলে,

কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো আব্রাহাম। তার কথা শুনে আমার শরীর কেঁপে উঠে। আচমকা জরিয়ে ধরাই কেমন যেন একটা লাগছিল। নিঃশ্বাস আটকে আসছিল। তাই আব্রাহাম আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরে।

“”কি হলো চুপ কেন? কিছু বলো।

“”কি বলবো

“”আমি কি কিছু করবো

“”কি মানে কি করবেন। শুকনো ঢোক গিলে বললাম।

“” আরু

আব্রাহাম এর মুখে আমার নাম শুনে বুকের ভেতর কেমন এক ভালোলাগা অনুভূতি হচ্ছে। এমন। অনুভূতি কখনো আমার হয়নি।

আমি বলে উঠলাম, হুম বলেন।

আরুর কথা শুনে, আরুকে ছেড়ে, আরুর মুখে আমার দু হাত দিয়ে ধরে বলে উঠলাম,

তুমি কিছু মনে করো না। কিছুক্ষণ আগে যা হলো। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো জানো। আমি কোনো দিন দেখি নি, আমার মা আমার ফুপুদের দেখে অসন্তোষ হোন। আমি সব সময় দেখেছি, আমার ফুপুরা আসলে আমার মা কত খুশি হয়। আমার মা এতো কিছু করে তাদের জন্য তার পরও আমার মাকে কটু কথা বলে। আমার জানো খুব কষ্ট হয়। আমার মা কোনো দিন মুখ ফুটে আমাদের এ বেপারে কোনো দিন কিছু বলেনি।

আমার একটা বেপার খুব খারাপ লাগছে জানও। আমি আহি আর রাইমাকে সব সময় আমার নিজের বোন মেনেই আসছি । তাদের কখনো আলাদা করে দেখিনি। আমি নিজের বোন মেনেই ওর সাথে কথা বলতাম। আমি যাকে ছোট বোন মেনে আসছি, তাঁকে কিভাবে বিয়ে করি। এদের বিবেক বুদ্ধি কি সত্যিই লোপ পেয়েছে।

আব্রাহাম এর কথা শুনে আমার ও খারাপ লাগছে। তাদের কথা আমারও কানে আসছে। তাদের উচিত হয়নি এভাবে আম্মাকে কথা শুনানোর। আর আম্মার তো নিজের সখ থাকতেই পারে, তার ছেলে কে নিজের পছন্দ মত মেয়ের সাথে বিয়ে করাতে। আমার কেমন যেন, আপনার ওই ফুফুকে দেখে জল্লাদ রিনা খানের মতো লাগলো। আর কেমন চোখ বড় বড় করে কথা বলছিলো।

আরুর শেষের কথা শুনে আমার হাসি পায়। ঠোঁট চেপে হাসি আটকাতে চাইলাম। কিন্তু পারলাম না।

হা হা হা

আব্রাহাম হাসতে হাসতে বিছানায় বসে পরে। আরুর দাড়িয়ে আব্রাহাম এর হাসি দেখছে।

____________

খাবার টেবিলে বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছেন বাড়ির সবাই। সেখানে উপস্থিত সবাই । আব্রাহাম চুপ চাপ খাবার খাচ্ছে। আর এদিকে আরু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখছে। এতো গুলো মানুষের সামনে খেতে তার অস্তিত্ব হচ্ছে। সে ভাবছে,

একটু আগে এরা ঝগড়া করলো। আবার এক সাথে ক্ষেতে বসেছে। আর এই রিনা খানের মতো দেখতে এই ফুফু শাশুড়ি কেমন খাবার গুলো মুখে ফুঁসছে। আর দাদি শাশুড়ি কেমন করে যেন আমাকে দেখছে। এ দের দিকে খেয়াল করতেই আমার খাওয়া হয়ে উঠলো না।

আমার ভাবনার মাঝে শাশুড়ি মা আমার কাছে এসে বলেন

তোর কি এসব খাবার ভালো লাগছেনা। অনেকক্ষণ ধরে দেখছি কিছুই খাচ্ছিস না।

আসলে

কি হয়েছে, বল মা। তোর কি অন্য কিছু খেতে ইচ্ছে করছে।

না আমার অন্য কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না।

তাহলে খাচ্ছিস না কেন।

আমার কেমন আনইজি ফিল হচ্ছে। তাই খেতে পারছিনা।
আমার কথা শুনে শাশুড়ি মা আমার প্লেট টা তার হাতে নিয়ে আমাকে বলেন,

উঠে আয় আমার সাথে

আম্মার কথা টা শুনে সবাই আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। এতোক্ষণ আমরা ফিসফিস করে কথা বলছিলাম, যা অন্য কেউ শুনতে পায়নি । আর আম্মার শেষের কথা টা একটু জোরে বলায় সবাই শুনতে পেয়ে তাকাচ্ছে। আব্রাহাম বলে উঠে,

কি হয়েছে মা । তুমি ওকে উঠে আসতে বলছো কেন।

কিছু হয়নি‌ । আরু সবার মাঝে খেতে পারছেনা, তাই ওকে বলছি উঠে আসতে । ও বরং রুমে খাবে।

আম্মার কথা শুনে আমার দাদি শাশুড়ি বলে উঠে,

আহ ঢং দেখলে যান বাঁচে না। আর কত কি যে দেখা লাগবে।

‌দাদি শাশুড়ির কথা শুনে আমার মুখ থেকে ফট করে। কথা বের হয়ে যায়,

তাহলে চোখ বন্ধ করে রাখেন ,‌তাহলে ঢং দেখতে হবে না ।

আমার কথা শুনে খাবার টেবিলে দাদি শাশুড়ি আর জল্লাদ ফুফু ছাড়া সবাই হেসে উঠল

চলবে