তোকে ছাড়া আমি শূন্য পর্ব-১০

0
4160

#তোকে_ছাড়া_আমি_শূন্য
পর্বঃ১০
#Faria_siddique

১৮.




জীবন মানুষকে কোথায় এনে দাড় করায় সেটা কেউ বলতে পারে না।জীবনটা বরই স্বার্থপর।নিজের মত করে চলতে থাকে।আমি কোনদিন ভাবিও নি যে বিশাল আর সামিয়া একদিনের পার্থক্যে আমার সামনে চলে আসবে।বিশালকে দেখে আমি খুব বড় একটা শক খেলাম।



আমি ভেবেছিলাম বিশাল আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে আর কোনদিন আমি ওকে খুজে পাব না।কিন্তু যখন ওকে আমার সামনে দেখলাম তখন ধাক্কাটা সামলাতে পারি নি।




এবার আসুন বিশাল সম্পর্কে কিছু জানা যাক


(বিশাল চৌধুরী।দেখতে হ্যান্ডসাম,সুন্দর।উচ্চতা ৫” ১১।বিশাল লাল সুন্দর। বিশাল আগে এত সুন্দর ছিল না।এই তিন বছরে বিদেশে থেকে নিজেকে অনেক পরিবর্তন করে নিয়েছে।এখন আর আগের মত আবেগ নেই।সামিয়ার প্রতিও নেই আগের সেই ভালোবাসা।বরং আছে একরাশ ঘৃণা আর প্রতিশোধ নেয়ার নেশা।
এই সবকিছুর মধ্যে শুধু একটা জিনিসই বিশাল এখনো পরিবর্তন করে নি।আর তা হচ্ছে আমার প্রতি তার স্নেহ,ভালোবাসা।)




চোখ খুলে আমি নিজেকে হসপিটালে আবিষ্কার করলাম।
সেখানে আমার মাথার পাশে ভাইয়ারা বসে আছে আর একটু দূরে রুদ্র আর বিশাল বসে আছে।

আমি উঠার চেষ্টা করতেই ভাইয়ারা আমাকে ধরে উঠালো।
বিশাল ভাইয়াদের বললো
বিশালঃ আমি জানুর সাথে একা কথা বলতে চাই ভাইয়া
আমিঃআমি কারোর সাথে কথা বলবো না দাভাই ওকে চলে যেতে বলো।
দাভাই আর ভাইয়া মুচকি হেসে বিশাল কে বললো
দাভাইঃনে তোর জানুর রাগ ভাঙা।
ভাইয়াঃ দেখ এবার কি হয় তোর সাথে আমরা গেলাম।
আমিঃ দাভাই তোমাকে তো আমি পরে দেখছি আগে বাসায় যেয়ে নেই।
দাভাই আর কিছু না বলে মুচকি হেসে ভাইয়া আর রুদ্র কে নিয়ে বেরিয়ে গেলো।




বের হতেই রুদ্র দাভাই কে বললো

রুদ্রঃ ফারিয়া হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে গেলো কেনো বল তো(উদ্দিগ্ন হয়)
দাভাইঃ আসলে আমার বোন টা মাথায় বেশি চাপ নিতে পারে না । যখন ওর দিভাই মারা যায় তখন থেকেই ওর মাথায় বেশি চাপ পরলে ও অজ্ঞান হয়ে যায়
ভাইয়াঃ আর বিশাল কে দেখে মিষ্টি খুব বড় একটা শক খায় যা ও মেনে নিতে পারে নি তাই ও অজ্ঞান হয়ে যায়।
রুদ্রঃও আচ্ছা।
( এই মেয়ে তো দেখি আমাকে জ্বালিয়া মারবে মনে মনে বললো)
দাভাইঃ চল রুদ্র এবার আমরা একটু কাজের কথা বলে নেই।
রুদ্রঃ হ্যা চল।




(আমার ভাইয়া আর রুদ্র কলেজ লাইফের খুব ভালো বন্ধু আর বিজন্যাস এও খুব ভালো পার্টনার)



কেবিনে,


বিশাল আমার পাশে এসে বসলেই অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলাম।
বিশালঃ আমার সাথে কথা বলবি না?
আমিঃ……………………..
বিশালঃপ্লিজ জানু আমাকে মাফ করে দে? আমি আর থাকতে না পেরে ওর বুকে মুখ গুজে কান্না করে দিলাম😭 বিশাল ও কান্না করে দিল।
আমিঃ জানিস আমি তোকে কতো মিস করেছি।
বিশালঃ আমিও তো তোকে অনেক মিস করেছি।
আমি আর কিছু না বলে অন্যদিকে তাকিয়ে রইলাম।
বিশাল বুঝলো আমার এখনো রাগ ভাঙেনি তাই ও আমার সামনে কতোগুলা চকলেট রাখলো।
আমি চকলেট দেখেই শেষ।আমি মুচকি হেসে চকলেট নিতেই বিশাল জোড়ে জোড়ে হেসে দিলো।
বিশালঃআমি তো জানি আমার জানু চকলেট দেখলেই সব রাগ পানি হয়ে যায়।
আমিঃহুম
বিশালঃআর আমার উপর রাগ করে নেই তো?
আমিঃনা।
এই বলেই আমি চকলেট খেতে লাগলাম।







বিশালও আমার সাথে চকলেট খেতে লাগল।আমি বিশালকে চকলেট না দিয়ে আমি খেতে লাগলাম।
বিশাল চকলেট নিতে চাইলে আমি তাকে মারতে শুরু করলাম।
একটু পরেই আমরা নিজেদের বাচ্চামির জন্য নিজেরাই হাসতে লাগলাম।
বিশালঃতোর মনে আছে আমি আর তুই এইভাবেই ঝগড়া করতাম আগে।(হেসে হেসে)
আমিঃহুম আর সামিয়া আমাদের থামাতো।(হেসে হেসে)
সামিয়ার কথা শুনতেই বিশালের মুখ কালো হয়ে গেল।
আমি বুঝতে পেরে বিশালকে স্বাভাবিক রাখার জন্য ওর হাত থেকে চকলেট নিয়ে নিলাম।
বিশালঃতুই আবার আমার চকলেট নিছোস?
আমিঃচকলেট শুধু আমার সম্পত্তি।
বিশালঃহ আর আমি উইরা আইছি।
আমিঃহ তুই তো রোহিংগা।
বিশালঃতবে রে….
এই বলেই আমার চুল টেনে ধরল।আমিও বিশালের চুল টেনে ধরলাম।
কিছুক্ষণ পর দুইজনই হাসতে লাগলাম।






দাভাই,রুদ্র আর ভাইয়া মিলে কাজ নিয়ে কথা বলতাছিল ঠিক তখনি রুশা গিয়ে রুদ্রের কাছে দাড়ায়।
রুশাকে দেখে আমার দুইভাই ভ্রু কুচকে নিল।যার মানে তারা তাকে চিনে না।
রুশাঃভাইয়া।
রুদ্রঃকিরে তুই এখানে??
রুশাঃহুম ফারিয়া কে দেখতে আসলাম।
দাভাইঃকে ও রুদ্র?
রুদ্রঃও দাড়া তোদের সাথে পরিচয় করাই দেই।ও হচ্ছে আমার বোন রুশা আর রুশা ওরা হচ্ছে ফারিয়ার ভাই।
দাভাইঃহাই রুশা।
রুশাঃহ্যালো
ভাইয়া রুশার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে তারপর বলে উঠল
ভাইয়াঃতোমাকে আমি কোথাও দেখেছি।
রুশাঃক ক কোথায় দেখেছেন ভাইয়া।
ভাইয়াঃমনে পরেছে।
রুদ্রঃকোথায় দেখেছিস?
ভাইয়া রুশার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে বলল
ভাইয়াঃশপিংমলে।
রুশা ভাইয়ার কথা শুনে হাফ ছেড়ে বাচল।
রুশাঃআমি ফারিয়াকে দেখে আসি।
রুদ্রঃযা।
রুশা যাওয়ার সময় ভাইয়ার দিকে তাকালে ভাইয়া বাকা হেসে এক চোখ মারে।
রুশা অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে চলে যায়।




আসুন এবার জানা যাক ভাইয়া আর রুশার পরিচয় কোথায়



(ভাইয়া আর রুশার দেখা হয় এক ক্লাবে।কয়েকদিন আগে ভাইয়া একটা ক্লাইন্টের সাথে দেখা করতে ক্লাবে যায়।ওখানে রুশা তার ফ্রেন্ডসরা ছিল।রুশার ফ্রেন্ডরা রুশাকে জোর করে আ্যালকোহল খাইয়ে দিয়েছিল।রুশা প্রথমবার খাওয়ার কারনে নেশা বেশি হয়ে যায়।
ভাইয়া তখন ঠিক রুশার পাশের টেবিলে ছিল।রুশার হুশ না থাকায় সে কি করছিল কিছুই বুঝতে পারছিল না।
সে আমার ভাইয়ার টেবিলে গিয়ে ভাইয়ার কোলে বসে ভাইয়াকে কিস করে বসে।
ভাইয়া অবাক হয়ে ফ্রিজ হয়ে আছে।
রুশাঃকি হল ময়নার বাপ এভাবে হা করে আছ কেন??
ভাইয়াঃকি আজব??আর কি হচ্ছে এগুলা??আর এই ময়নার বাপই বা কে???(রেগে)
রুশাঃহুশশ।(ভাইয়ার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে).তুমি জানো না ময়না হচ্ছে আমাদের মেয়ের নাম।
ভাইয়া হাসবে কি কাদবে বুঝতে পারছে না।
ভাইয়া কিছু বুঝে উঠার আগেই রুশা ভাইয়ার মোবাইলে ভাইয়ার আর রুশার সেলফি তুলে ফেলল।
ভাইয়া আর সহ্য করতে না পেরে ভাইয়ার গার্ডদের ডাকল।
তারা এসে ভাইয়ার কাছ থেকে রুশাকে সরিয়ে দিল।তারপর ভাইয়া সেখান থেকে চলে আসল।)




এই হচ্ছে আমার ভাইয়া আর রুশার দেখা হয়ার কাহিনী।


এই কাহিনী টা মনে করে ভাইয়া মুচকি একটা হাসি দিল।

চলবে…………..