তোকে ছাড়া আমি শূন্য পর্ব-১১

0
4483

#তোকে_ছাড়া_আমি_শূন্য
পর্বঃ১১
#Faria_siddique

১৯.




আমি আর বিশাল চকলেট নিয়ে দুষ্টামি করতেছিলাম।ঠিক তখনি রুশা আমার কেবিনে ডুকলো।রুশা কেবিনের দরজায় দাঁড়িয়ে কেদে দিল।আমি আর বিশাল দরজার দিকে তাকালাম।দেখলাম রুশা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাদছে।
আমি মুচকি হেসে ইশারায় আমার কাছে আসতে বললাম।রুশা এসে আমার কাছে বসল।
রুশাঃi am sorry baby…আমি বুঝতে পারি নি যে সা……
রুশা আর কিছু বলার আগেই আমি বললাম
আমিঃইয়ে মানে রুশা ও হচ্ছে বিশাল।
রুশা আমার দিকে তাকাল।
আমি ইশারায় সানিয়ার বিষয় বাদ দিতে বললাম।
রুশাঃহাই আমি রুশা।
বিশাল এতক্ষন আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল।আমার ইশারাগুলো ও দেখে ফেলল কিন্তু কিছু বলল না।
বিশালঃহাই আমি বিশাল।তুমি আমাদের সাথে কলেজে পড়তে যে ওই রুশা না??
রুশাঃহুম।
বিশালঃআমি চলে যাওয়ার পর এই পাগলিটাকে তুমিই সামলিয়েছো।
আমিঃকি বললি কুত্তা??(রেগে)





বিশাল কিছু না বলে জোরে জোরে হেসে দিল।
রুশাঃও তো সারাক্ষণ তোমার কথা বলত।
বিশালঃঅনেক কস্ট দিয়ে ফেলেছি জানুকে কিন্তু আর না।এবার যার জন্য জানুকে কস্ট দিয়েছি তার কস্ট পাওয়ার পালা।(রেগে)
আমি বিশালের দিকে তাকালাম।মুহুর্তের মধ্যেই বিশাল আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল।
রুশাঃতা তুমি এতদিন কোথায় ছিলে??
বিশালঃছিলাম কোথাও একটা।
আমিঃআচ্ছা বাদ দে।আর কুত্তা আমার না বিরিয়ানি খাইতে ইচ্ছা করতাছে।নিয়ে আয় না।
বিশাল কিছু বলতে যাবে তার আগেই রুদ্র দরজার কাছ থেকে বলতে শুরু করল।
রুদ্রঃতুমি খাবারও খাও!!
আমিঃনা আমি খাবার খাই না আমি তো মানুষের মাথা খাই।(রেগে)
আমার কথা শুনে বিশাল আর রুশা মিটমিট হাসতে লাগলো।
আর রুদ্র হাসছেই।
রুদ্রঃতোমার শরীর দেখে মনে হয় তুমি কয়বছর খাবার খাও না।( হাসতে হাসতে)
আমিঃদেখুন এবার কিন্তু ভালো হচ্ছে না।(রেগে)
বিশালঃআচ্ছা তুই থাক জানু আমি তোর বিরিয়ানি নিয়ে আসি।
রুশারও একটা কল আসাতে সে চলে গেল বাইরে কথা বলতে।






সবাই যেতেই রুদ্র আমার পাশে বসে আমাকে বুকে জড়িয়ে নিল।আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।আমি ছুটার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না।
আমিঃকি হচ্ছে কি?(রেগে)ছাড়ুন আমাকে।ভাইয়ারা এখনি চলে আসবে।ছাড়ুন বলছি।
রুদ্র ছাড়ল না।বরং আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে কিস করে বলল।
রুদ্রঃতুমি জানো তোমার এই অবস্থা দেখে আমার কি অবস্থা হইছিলো।
আমিঃমানে!(ভ্রু কুচকে)
রুদ্র এবার আমাকে ছেড়ে দিল।তারপর বলল কিছু না।




রুদ্রের কথা শেষ হতেই দাভাই আসল।
দাভাইঃএকটু পরে ডাক্তার আসবে।তোকে চেকআপ করিয়ে রিলিজ দিয়ে দিবে।
আমিঃআচ্ছা।
দাভাই আসাতে রুদ্র আমার কাছ থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে বসল।দাভাই আমার কাছে এসে বসল।
আমি দাভাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।
দাভাইঃপাগলি কাদছিস কেন?
রুদ্র আমার কান্না সহ্য করতে পারে না তাই ও চলে গেছে।
দাভাই বুঝতে পারল তাই আর কিছু বলল না আমাকে।




একটু পর ডাক্তার আসল।ডাক্তারকে দেখে আমি কান্না থামিয়ে দিলাম।ডাক্তার আমাকে চেকআপ করতে লাগলো।




২০.




রুশা কল শেষ করে আমার কেবিনের দিকে আসতেই কেউ তাকে হাত ধরে টান দিয়ে একটা রুমে নিয়ে গেল।
রুশাঃভুত ভুত(চোখ বন্ধ করে চিল্লিয়ে)
ভাইয়াঃচুপ।একদম চুপ।এত চিল্লাচ্ছো কেন?
রুশাঃআপনি!!!!!!
ভাইয়াঃকেন গো ময়নার মা অন্য কেউ আসার কথা ছিল নাকি?(মুখ চেপে চেপে হেসে)
রুশাঃদেখুন যা হওয়ার হয়ে গেছে।সবকিছু ভুলে যান।
ভাইয়াঃনা গো ময়নার মা আমি তো ভুলতে পারব না।আমি যে আমার ময়নার মাকে খুব ভালবেসে ফেলেছি।
রুশা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
রুশাঃআপনি আমাকে ভালোবাসলেই বা কি আমি তো আর বাসি না।
রুশার কথা শুনে ভাইয়া বাকা হাসল।
ভাইয়াঃবাসবে বাসবে তুমিও বাসবে।বাসতে বাধ্য হবে।
রুশাঃকোন দিন ও না।(ভাব নিয়ে)
ভাইয়া বাকা হেসে ভাইয়ার মোবাইলে থাকা ছবি গুলা দেখাল।
রুশাঃ আ আ আপনি এই ছবিগুলা এখনো রেখে দিয়েছেন!!
ভাইয়াঃতা তোমার ভাইয়া কি জানে যে তুমি ক্লাবে গিয়ে এমন কর??
রুশাঃআমি ওইদিনই শুধু ক্লাবে গেছি।
ভাইয়াঃদেখ এখন তুমি যদি আমার কথা না শুন তাহলে এই ছবিগুলা তোমার ভাইয়ার কাছে চলে যাবে।so,choice is yours baby..
এই বলেই ভাইয়া চলে এল।আর রুশা হাবলার মত তাকিয়ে আছে।





আমাকে রিলিজ করে দিল।আমাকে নিয়ে ভাইয়ারা আর বিশাল বাসায় চলে এল।আর রুদ্র আর রুশা ওদের বাসায় চলে গেল।
বিশাল এখন থেকে এখানেই থাকবে।বিশাল আমার সাথে আমার ভার্সিটিতে আমার ইয়ারে ভর্তি হয়েছে।এখন থেকে আমি আর বিশাল একসাথে যাওয়া আসা করবো।




আমি আমার রুমে এসে শাওয়ার নিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাড়ালাম।দাঁড়িয়ে আকাশ দেখতে লাগলাম।
বিশাল এসে আমার পাশে দাড়ালো।
বিশালঃকার কথা ভাবছিস?
আমিঃআমাদের আগের কথাগুলা।আগে আমরা কত মজা করতাম।
বিশালঃআমরা এখনো অনেক মজা করবো।
বিশালের কথা শুনে মুচকি হাসলাম।
বিশালঃ যা গিয়ে ঘুমিয়ে পর।কালকে সকালে কথা হবে।
আমিঃআচ্ছা তুই ও যা।
বিশাল চলে গেল।আমিও রুমে চলে এলাম।






আমি রুমে আসতেই আমার মোবাইল বেজে উঠল।
দেখলাম যে রুদ্র কল করেছে।আমি মুচকি হেসে রিসিভ করলাম।
রুদ্রঃকেমন আছ?
আমিঃভালো।
রুদ্রঃখাবার খেয়েছ?
আমিঃহুম।
রুদ্রঃকালকে ফ্রি আছ?
আমিঃআমার ভার্সিটি আছে।
রুদ্রঃতাহলে ক্লাস শেষ করে আমার সাথে একটা জায়গায় যাবে।
আমিঃআমি পারব না।
রুদ্রঃতোমাকে আমি জিজ্ঞাসা করি নি।আর আমি যদি দেখেছি কোন ছেলের সাথে কথা বলেছ তাহলে দেখবা কি হয় তোমার সাথে।(রেগে)
বলেই কল রেখে দিল।
আমি হাবলার মত তাকিয়ে আছি মোবাইলের দিকে।
আমিঃবললেই হল নাকি?আমি একশবার কথা বলব।হুহ।
তারপর আমি ঘুমিয়ে পরলাম।




রাত ৩ঃ৩০



কিছু একটা পরার শব্দে আমার ঘুম ভেঙে গেল।আমি খেয়াল করে দেখলাম বারান্দা থেকে আসছে।আমি বারান্দায় গেলাম দেখলাম কেউ নেই।
আমি বারান্দা থেকে আসার জন্য পা বাড়ালাম তখনি কারোর সাথে ধাক্কা খেলাম।
আমি তাকিয়ে দেখি রুদ্র দাঁড়িয়ে আছে।আমি চোখ বড় বড় করে ভালো করে দেখার চেষ্টা করলাম।
আমিঃতুমি এখানে!!(অবাক হয়ে)
রুদ্র কিছু না বলে আমার বিছানায় গিয়ে আরাম করে বসল।
রুদ্রঃতোমার রুমটাতো অনেক সুন্দর।
আমিঃআমি জিজ্ঞাসা করেছি তুমি এখানে কেন?(রেগে)
রুদ্রঃতোমাকে দেখার ইচ্ছা হল তাই চলে আসলাম।
আমিঃদেখা শেষ এবার যাও।
রুদ্র কোন কথা না বলে আমাকে নিয়ে বিছানায় বসালো।
তারপর আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরল।
আমিঃএসব কি হচ্ছে??(রেগে)
রুদ্রঃতুমি যদি আর একটা কথা বল তাহলে আমি তোমার দাভাইয়ের রুমে যাব।
আমিঃকিইই
রুদ্রঃহুম।তাই বেশি বকবক না করে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।
আমি আর কিছু না বলে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম।কারন এই লোককে বিশ্বাস নেই।
রুদ্রের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আমি ঘুমিয়ে গেলাম।
আমাকে ঘুমিয়ে পরতে দেখে রুদ্র উঠে আমাকে ভালো করে শুইয়ে দিল।তারপর কপালে কিস করে মুচকি হেসে বলল
রুদ্রঃপাগলি একটা।
বলেই চলে গেল।

চলবে…….