তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব-০৬

0
2681

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_৬
.
.বেলা নিচে পড়তে নিলেই হঠাৎ হাত বাড়িয়ে কেউ তার কোমর জড়িয়ে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচায়। এদিকে সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। বেলার পিছনে দাঁড়িয়ে বেদ সারা নিশান ওম রুহি দাঁড়িয়ে চোখ বড় বড় করে দেখছে। সিঁড়ির নীচে দাঁড়িয়ে আছে বেলা সহ বাকিরা। চারিদিকে থেকে সবাই ওদের কে দেখছে।
.
–“ম…ম্যা..ডি ।

. বেলা নিজের কোমরের থেকে হাত ছাড়িয়ে সরে যেতে নিলে বেলা কে আরো চেপে ধরে চারিদিকে তাকিয়ে ওদের থেকে একটু দূরে সিঁড়ির কয়েক ধাপ উপরে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকজন বখাটে পোলা।
.
–” কিরে । এই দেখ আমি তো ছুঁয়ে দিলাম এই বেল ফুল কে। এই ফুল কে নাকি কেউ ধরার সাহস করে না তাহলে দেখ আমি করে দেখালাম তো।
.
–” হাই বিউটি… ফুল। তুমি দেখছি বেশ আগুনে ফুল। তোমাকে নাকি ছোঁয়া যায় না। শুধু দূর থেকে দেখে যেতে হয়। কিন্তু এখন তো আমি এই ফুল ছুয়ে ফেলেছি আর ফুলের সুবাস ও নিচ্ছি। বেলার ঘাড়ের কাছে মুখ এনে বলে ওঠে।
.
–” তো গাইজ। এই মূল্যবান রেনবো ব্র্যান্ড এর বেস্ট ফুল তো এখন আমার হাতের মাঝে। দেখো কেমন আমার হাতের মাঝে পড়ে আছে। আহারে তোরা যে টা পারিস নি আমি সেটাই করে দেখিয়েছি। ম্যাডি বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে চুপ করে শুনে যাচ্ছে নিজের হাত শক্ত করে মুঠো বেঁধে রেখেছে। আর পিছনের সবাই বেদ নিশান ওম রুহি সারা রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।
.
. হটাৎ বেলার আজ সকালের কথা মনে পড়ে যায়। নিজের রাগ টা নিজের মধ্যে দমিয়ে রেখে বাঁকা হাসতে থাকে। তার আজ সকালে সাঁঝ এর বলা কথা গুলো মনে পড়ে যায় বেলার।
.
–“যাচ্ছ যাও। কিন্তু মনে রেখো। তুমি কিন্তু আমার নজরে থাকবে। তোমার ওপর আমার নজর সব সময়ে থাকবে তাই এমন কিছু করবে না যার জন্য তোমাকে কঠিন শাস্তি পেতে হয়। আর এই শরীরে যেনো কোনো ছেলের স্পর্শ না লাগে। যদি এমন টা হয় তাহলে সেই যে হোক না কেনো নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করবে।
.
.সাঁঝ এর বলা কথা মাথায় আসতে বেলা চুপ করে দাঁড়িয়ে নিজের দৃষ্টি চারিদিকে ঘুরিয়ে দেখে করিডোর এর শেষ প্রান্তে ওদের দিকে তাকিয়ে একজন লোক ফোন উচু করে ধরে আছে। বেলা এটা দেখতে বাঁকা হেসে ওঠে। পিছন থেকে বেদ বেলা কে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে আসতে নিলে বেলা হাতের ইশারায় চুপ থাকতে বলে।
.
–“হে গাইজ আই এম ম্যাডি। এই ইউনিভার্সিটিতে নতুন। কিন্তু সবার কাছে রেনবো মিউজিক ব্র্যান্ড আর বেল ফুলের কথা শুনে আমি তোমাদের কে প্রুফ করে দিলাম ফুল ফুলই হয়। তার বেশি কিছু না। চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–” এই যে বেল ফুল তোমার নাকি অনেক ভাব। তুমি নাকি কোনো ছেলে কে ছেড়ে কথা বলো না পেটানো থেকে তাহলে আমাকে ও একটু দেখাও। ম্যাডি বেলার কোমরের স্লাইড করতে করতে বলে ওঠে।
.
–” ওকে বেবি । তুমি জাস্ট টেন মিনিট এই ভাবে আমাকে ধরে রাখো। তার পর আসা করছি তোমার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়ে যাবে। বেলা বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
–” ওহহহহহোঅঅঅ । হাও সুইট। আমি তোমাকে এই ভাবে ধরে রাখতে চাই। আজ থেকে তুমি আমার হয়ে যাও বেবি। ট্রাস্ট মি খুব ইনজয় করবে। বাই দ্য ওয়ে। টেন মিনিট হয়ে গেলে তুমি যদি আমার মনের ইচ্ছা পূরণ করতে না পারো তাহলে আমি সবার তোমাকে কিস করে আমার করে নেবো।
.
–” চলো দেখা যাক কার মনের ইচ্ছা পূরণ হয়।
বেলা বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
. এদিকে বেলার কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে দেখে যাচ্ছে। আর ওই বখাটে ছেলে গুলো নিজের নিজের মোবাইল বের করে ভিডিও করছে। পিছনে দাঁড়ানো বেদ এর হাতে সারা চিমটি কেটে দেয়।
.
–” এই সব কি হচ্ছে। মিষ্টি ভাবি কি বলছে। এই মুখপোড়া টা কে? সারা বলে ওঠে।
.
–” জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড সি। বেদ মুচকি হেসে বলে ওঠে।
.
. দশ মিনিট পর…
.
–“কি বেবি। ইচ্ছা টা পূরণ হল না তো। ইসস। তবে কোনও চিন্তা নেই আজকে আমি তোমার গায়ে আমার স্ট্যাম্প মেরে দেবো সবার সামনে তোমাকে কিস করে। ম্যাডি চিৎকার করে চারিদিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
. এদিকে বেলা কিছু না বলে দাঁড়িয়ে আছে। আর ম্যাডির বন্ধুরা চিৎকার করে ওঠে। ম্যাডি বেলার মুখের দিকে এগোতে নিলে হটাৎ মাথায় কাঁচের বোতল ভেঙে যায়।
.
. পিছন থেকে ঘাড় ধরে হ্যাচকা টান মেরে বেলার থেকে সরিয়ে দেয়। ম্যাডি গিয়ে সিঁড়ির কাছে ছিটকে পড়ে। হঠাৎ এমন আক্রমণের জন্য সব স্তব্ধ হয়ে যায়। তাদের চোখের সামনে যেনো ফাইট শুট চলছে। সবাই সামনে তাকাতে বলে ওঠে।
.
–“এস আর
.
–” সাঁঝ রওশন।
.
. সাঁঝ বেলার হাত ধরে টান মেরে নিজের বুকের ওপর এনে ফেলে তার পর দু হাত দিয়ে বেলার মুখ উচু করে তুলে ধরে সবার চিন্তার জাল ছিড়ে বেলার ঠোঁটে তার ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। এদিকে বেলা ও একটু চমকে গেছিলো সে জানত এমন কিছুই হবে। আর বাকিরা তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সাঁঝ আর বেলার দিকে। নিচে পড়ে থাকা ম্যাডি ও দেখছে ওদের কিসিং সিন। বেলা কোনো প্রকার বাধা দেয় না বরং সে নিজের এক হাত সাঁঝ এর কোমরে আর এক হাত সাঁঝ এর জ্যাকেট ধরে রাখে।
.
. সাঁঝ বেলার থেকে ছুটে এসে বেলা কে নিজের সাথে চিপকে নিয়ে সবার দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–“আশা করছি এখানে থাকা সবাই তাদের উত্তর পেয়ে গেছো। আর কেউ কিছু জানতে চায়। আর কারোর কোনো কৌতূহল আছে।
.
–” ওকে তো এর পর এই ভুল করার সাহস যেনো কারোর না হয়। সাঁঝ চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ তার গার্ডদের হাতের ইশারা করতে একটা পেটি হতে এসে দাঁড়ায়। সাঁঝ ওখান থেকে কাঁচের বোতল নিয়ে নিচে পড়ে থাকা ম্যাডির কাছে গিয়ে কলার ধরে টেনে দাঁড় করায়। হাতের থাকা বোতল দিয়ে ম্যাডির ডান হাত উচু করে তুলে ধরে কাঁচের বোতল ভাঙতে থাকে। পটাপট ডিম ভাঙ্গার মত করে দুটো হাতে কাঁচের বোতল ভাঙছে। চারিদিকে সবাই ভীতু চোখে তাকিয়ে আছে। সাঁঝ কে দেখতে এই মুহূর্তে প্রচুর হিংস্র লাগছে। ওর চোখ মুখের দিকে তাকালে ভয় পেয়ে যাবে সবাই।
.
. এদিকে এই ঝামেলার জন্য প্রিন্সিপাল সহ ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের সবাই এসে হাজির হয়েছেন। কিন্তু সামনের দৃশ্য দেখে কেউ কোনো কথা বলতে পারছে না। তাদের কারোর এত সাহস নেই সাঁঝ রওশন কে কিছু বলার। যেখানে সে পুরো গভর্নমেন্ট হেড হয়ে বসে আছে। পুরো ব্যাঙ্গালোর যার ইশারায় চলে সেখানে তাদের সাহস কোথায় সাঁঝ রওশন কে কিছু বলার। চুপচাপ দেখা ছাড়া তাদের কিছু করার নেই।
.
. সাঁঝ কে এত হিংস্র হতে দেখে বেলা পিছন থেকে গিয়ে সাঁঝ এর কাঁধে হাত রাখে। সাথে সাথে সাঁঝ থেমে যায়। পিছনে না ফিরে খানিকটা সরে বেলা কে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ম্যাডি কে সাঁঝ এর গার্ড তুলে নিয়ে যায় সাথে ওই বখাটে ছেলে গুলো কে ও।
.
–“আশা করছি এর পর আর কারো সাহস হবে না আমার প্রোপার্টিতে চোখ তুলে তাকানোর। আজকের ঘটনা শুধুমাত্র তোমাদের জন্য একটা উদাহরণ ছিল নেক্সট টাইম পুরো ফিল্ম টাই দেখবে। বলেই বেলা কে টেনে নিয়ে বেরিয়ে যায়। আর পিছন পিছন বেদ নিশান সারা রুহি ওম ও।
.
. আর এদিকে সবাই হা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এত ক্ষণ তাদের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো ভেবেই সব একে অপরের মুখ চাওয়া চায়ি আর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে শুরু করে দিয়েছে।ঠিক কিছুটা এমন।
.
–“সাঁঝ রওশন এর সাথে বেলার কি সম্পর্ক।। বেলা কি এস আর এর গার্লফ্রেন্ড। সাঁঝ রওশন কি বেলার সাথে আছে। ওহ মাই গড সাঁঝ রওশন আর বেলা একসাথে।

——————

–” ম্যাম বেলা আবার ও বেঁচে গেছে।
.
–“হোয়াট ? ফোনের ওপর থেকে চিৎকার ভেসে আসে।
.
–” ইয়েস ম্যাডাম। সব কিছু ঠিক চলছিল। হটাৎ মাঝখানে আবারো সাঁঝ রওশন চলে আসে।
.
–” এটা কি করে সম্ভব। না না এটা হতে পারে না। বারবার আমার চাল উল্টে যেতে পারে না। তুমি আমার সব প্ল্যান এই ভাবে ভেঙে দিতে পারো না সাঁঝ।
.
–“ম্যাডাম ম্যাডি স্যার এর অবস্থা খুব খারাপ। আর সব থেকে বড় কথা সাঁঝ রওশন নিজের সাথে ম্যাডি স্যার কে নিয়ে গেছে।
.
–“আর তোমরা কি করছিলে তাহলে। আমার ভাই এর গায়ে যদি একটা আঁচ লাগে আমি সবাই কে শেষ করে দেবো কাউকে ছাড়ব না।
.
–“ম্যাডাম লোক পাঠিয়েছি ম্যাডি স্যার কে যেকোনো ভাবে ওখান থেকে সরিয়ে আনতে।
.
–“তোমরা কি করবে আমি জানি না কিন্তু আমার ভাই এর যেনো কোনো ক্ষতি না হয়। পিছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিতে ফোন রেখে ঘুরে দাঁড়ায়।
.
. এই নাম না বলা মেয়েটি ও তাকে জড়িয়ে থাকা ছেলেটির স্পর্শে মাতাল হয়ে একে অপরের ঠোঁটে মেতে ওঠে। দুজনের মধ্যে পুরো জোশ এর সাথে একে অপরের সাথে মিশতে থাকে। একে অপরের প্রতি ডুবে যায়। আসতে আসতে ঠোঁট। ঠোঁট ছেড়ে গলা। আবার গলা ছেড়ে ঘাড়। একে একে পুরো শরীরে বিচরণ করতে থাকে একে অপরের। ধীরে ধীরে তাদের শরীর থেকে খসে পড়তে থাকে রুমের চারিদিকে তাদের ড্রেস। একে অপরের প্রতি শরীরি ভালোবাসা মেতে ওঠে।
.
–“বেবি । এবার সময় হয়ে এসেছে। আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। এবার আমার বেলা কে চাই। বিছানার ওপর শুয়ে নিজের বুকের ওপর থাকা মেয়েটি কে বলে ওঠে
.
–” ইয়েস হানি। আর আমার সাঁঝ কে চাই।
.
–“অনেক অপেক্ষা করে ফেলেছি আর না। এবার ওই বেলা কে আমি পেয়েই ছাড়বো। আর কিছুতেই হাত ছাড়া করব না। এই আর এম যা চায় তা নিজের করে নেই। বিশ্রী ভাবে হেসে বলে ওঠে।
.
–“ইয়েস । তোমার বেলা চাই আর আমার সাঁঝ কে চাই। যে কোনও মূল্যে সাঁঝ কে আমার চাই।
.
–“তো এবার ফিরে যাওয়া যাক। খেলা শুরু হোক তাহলে। অপেক্ষা কিসের আর। আর এম হেসে মেয়েটির উন্মুক্ত পিঠে স্লাইড করতে করতে বলে ওঠে।
.
–” খেলা তো শুরু হয়ে গেছে। এবার শুধু চাল দেয়ার পালা। আর কোনো ভুল হবে না। এবার আর ওরা বুঝতে পারবেনা যে কোনদিকে দিয়ে ওদের ওপর ঝড় আসতে চলেছে।
.
. আমাকে একবার আসতে দে বেলা। তোকে আমি নিজে হাতে শেষ করব। তোকে আমি এই পৃথিবীতে কিছুতে বাঁচতে দেবো না। কিছুতেই না। তোর কাছে থেকে সব কিছু কেড়ে নেবো। আর তুই সেটা বুঝতেও পারবি না। তোর জন্য সাঁঝ পাগল আর সাথে এই আর এম ও দিয়ানা হয়েছে। কিন্তু আমি তোকে কারোর হতে দেবো না। তোকে আমি নিজে হাতে তোর বাবা মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেবো। নিজের মনে মনে বলে ওঠে অজানা মেয়েটি বাঁকা হাসতে থাকে।
.
.
.
.💝💝💝
.
.চলবে….