তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব-০৭

0
2682

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_৭
…. বেলা আধঘন্টা যাবত ওয়াশরুমে সাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে আছে। সাওয়ারের পানিতে পুরো ভিজে চুপ চুপে হয়ে গেছে বেলার মুখ টা ও অসহায় করে দাঁড়িয়ে আছে। তার অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে আছে। দম আটকে দাঁড়িয়ে আছে পুতুলের মতো করে কোনো কিছু বলতেও পারছে না আর নিজেকে ছাড়াতে পারছে। চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে। বেলার ঠিক সামনে হাঁটু মুড়ে তার কোমর জড়িয়ে রেখেছে সাঁঝ। তার ঠোঁটের দ্বারা ক্রমাগত বেলার পেট সংলগ্ন উষ্ণ স্পর্শে ভরিয়ে দিচ্ছে। বেলা না পারছে মেনে নিতে আর না পারছে স্পর্শের থেকে মুক্তি পেতে পেতে। সাঁঝ তাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। কখন হাত দিয়ে বেলার পেট স্লাইড করছে। তো কখন ঠোঁটের দ্বারা স্পর্শ করছে। সাঁঝ এর চোখ গুলো লাল রক্তের মত হয়ে আছে। মুখে ফুটে আছে হিংস্রতায় ভরা পাগলামি।
.
.
. কয়েক ঘণ্টা আগের মুহূর্ত…
.
. বেলা কে ইউনিভার্সিটি থেকে নিয়ে বেরিয়ে আসার পর চোখ মুখ পুরো হিংস্র হয়ে ছিল। মনে হচ্ছিল এখন কার জন্য নিজের রাগ টা কে কন্ট্রোল করে রাখছে পরে সুদে আসল তোলার জন্য। বাড়িতে আসার পর গাড়ি থেকে নেমে বেলা কে কোলে তুলে নিয়ে একেবারে ওয়াশরুমে ঢুকে সাওয়ারের তলায় দাঁড় করিয়ে দেয়। বেলা চেয়ে ও নিজে কে ছাড়াতে পারেনা নিজেকে সাঁঝ এর হাতের থেকে। সাঁঝ আসতে আসতে বেলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে বেলা পিছু হতে হতে দেয়ালের সাথে লেগে যায়। সাঁঝ এগিয়ে এসে বেলার সাথে লেগে দাঁড়িয়ে দু হাত দিয়ে গলায় এর পাশে থেকে চুল গুলো সরিয়ে দেয়। এদিকে সাঁঝ এর এমন ছোঁয়াতে ফ্রিজ হয়ে যায় বেলা। সাঁঝ নিজের মুখ নামিয়ে এনে বেলার গলায় আঙুল দিয়ে স্লাইড করে গলায় মুখ এনে এক কামড় বসায়। বেলা চমকে উঠে সরতে নিলে সাঁঝ আরো শক্ত করে ধরে রাখে।
.
. বেলার গলায় মুখ ডুবিয়ে রেখে হাত নামিয়ে আনে বেলার কোমরের কাছে দু হাত দিয়ে পেটে থেকে কোমর পুরো স্লাইড করতে থাকে সাঁঝ। আর এদিকে বেলার শ্বাস আটকে গেছে সাঁঝ এর এমন করাতে। দম নিতে পারছে না। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সরতে চেয়ে ও পারছে না। সাঁঝ নিজের মুখ বেলার গলায় থেকে তুলে বেলার কাঁপতে থাকা ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে রুডলি কিস করতে থাকে আর হাত দিয়ে শক্তি দিয়ে বেলার পেটে স্লাইড করতে থাকে। বেলা চোখ মুখ কুঁচকে দাঁড়িয়ে আছে। সাওয়ারের পানিতে দুজন ভিজে যাচ্ছে। বেলা তার দু হাত তুলে সাঁঝ এর মাথায় রেখে নিজের থেকে ছাড়াতে চাচ্ছে কিন্তু এতে হচ্ছে ঠিক উল্টো টাই। সাঁঝ আরো শক্ত করে চেপে বসছে বেলার ঠোঁটে। কিছুক্ষণ পর বেলার ঠোঁটের থেকে ছুটে এসে বেলার বন্ধ চোখের দিকে তাকিয়ে হিসহিসিয়ে বলে ওঠে।
.
–“তুমি এটা ইচ্ছা করে করেছে তাই না। আমি তোমাকে সকালে বলে ছিলাম আর তাই তুমি বাজিয়ে দেখে নিলে আমাকে তাই তো। আর তাই তুমি ওই ব্যাস্টার্ড এর হাত তোমার শরীরে রেখে দিলে। বলতে সাঁঝ এর চোখ মুখ পুরো কঠিন হয়ে উঠছে।
.
–” এমনিতে তোমাকে ধরে ছিল তবু ঠিক ছিল। কিন্তু ও তোমার কোমরে হাত দিয়ে ধরে রেখেছিল। এর জন্য তো ও এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে কি না আমি জানি না। কিন্তু ঘরওয়ালি তুমি এর জন্য শাস্তি পাবে। আমার সহ্য ক্ষমতা দেখতে গিয়ে আমাকে জ্বালাতে গিয়ে নিজের জন্য বিপদ ডেকে এনেছ সুইটহার্ট। সাঁঝ তার মুখ বেলার কানের কাছে গিয়ে বলে ওঠে।
.
. বেলা সাঁঝ এর এমন কথা শুনে চমকে গিয়ে চোখ খুলে তাকায় সাঁঝ এর দিকে। সাঁঝ বেলার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে কোমরে থাকা হাত দিয়ে বেলার পেটে থেকে কোমর পর্যন্ত বেলার শার্ট এর বোতাম খুলতে থাকে। এদিকে সাঁঝ এর এমন করতে দেখে বেলা চমকে গিয়ে সরতে নিয়ে ও পারে না।
.
–“ক.. কি করছেন আপনি। পাগল হয়ে গেছেন নাকি। বেলা কাঁপা গলায় ছটফট করতে করতে বলে ওঠে।
.
–” এটা তোমার আগে মনে করা উচিত ছিল ঘরওয়ালি। তোমাকে আমি আগেই সাবধান করেছিলাম এই শরীরে যেনো কোনো ছেলের ছোঁয়া না লাগে কিন্তু তুমি। সাঁঝ দাঁতে দাঁত চেপে বলে বেলার উন্মুক্ত কোমরে দু হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে।
.
–” এই শরীরে শুধু আমার স্পর্শ থাকবে আর কারোর কোনো স্পর্শ থাকবে না। শুধু আমি থাকব তোমার মনে প্রাণে শরীরে শুধু আমি বিচরণ করব। সাঁঝ নিজের মুখ বেলার মুখের সাথে লাগিয়ে রেখে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ এর কথা বলার সময়ে তার ঠোঁট বারবার বেলার ঠোঁট ছুয়ে যাচ্ছে আর এতে বেলা কেঁপে কেঁপে উঠছে। তার নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। এদিকে সাঁঝ বেলার দিকে চেয়ে আছে আর একটু আগের দৃশ্য গুলো ভাবছে। আর এটা ভাবতে সাঁঝ এর চোখ মুখ হিংস্র থেকে আরো হিংস্র হয়ে উঠছে।
.
. হটাৎ করে বেলার সামনে হাঁটু মুড়ে বসে যায় সাঁঝ। দু হাতে ধরে থাকা বেলার কোমর ধরে নিজের দিকে টেনে নিয়ে আসে। শার্ট দু দিকে সরিয়ে দিয়ে বেলার পেটে নিজের হাত দিয়ে শক্ত করে স্লাইড করতে থাকে। আর বেলা চোখ মুখ শক্ত করে বন্ধ করে রেখেছে। বেলা নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে রেখেছে। জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে।
.
–“এখানে ধরে রেখেছিল না ওই ব্যাস্টার্ড টা। ওর সব ছোঁয়া আমি মুছে দেবো। কারোর ছোঁয়া তোমার শরীরে থাকতে দেবো না। শুধু মাত্র আমি থাকব তোমার মধ্যে। আর কেউ না। কেউ না। সাঁঝ বেলার পেটে স্লাইড করতে করতে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ একবার বেলার বন্ধ চোখ মুখের দিকে তাকিয়ে নিয়ে নিজের মুখ এগিয়ে বেলার পেটে একটা কামড় বসায়। আর এতেই বেলা কেঁপে ওঠে। তার শরীরে মধ্যে যেনো রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দম আটকে আসছে। আরো দ্রুত গতিতে নিশ্বাস নিচ্ছে আর হার্ট তো এক্সপ্রেস এর গতিতে ছুটে চলেছে। এই কামড় যতো না ব্যাথার ছিল তার থেকে বেশি বেলা কে পুরো ফ্রিজ বানিয়ে দিয়েছে।
.
. এদিকে সাঁঝ তার ঠোঁট দিয়ে আসতে আসতে বেলার পেটে থেকে কোমরে পুরোটা জুড়ে নিজের ঠোঁটের স্পর্শ দিতে আছে। প্রথমে রাগী ভাবে বেলার কোমর স্পর্শ করলে এখন তা আসতে আসতে নেশায় আসক্তি ভোরে গেছে ঘোর লেগে গেছে সাঁঝ এর। কখন বেলার পিঠে তার জিহ্বা দিয়ে লেহন করছে তো কখন ও ছোটো ছোটো চুমু দিয়ে ভরিয়ে তুলছে। আর তার সাথে মাঝে মাঝে ছোটো ছোটো আদুরে কামড় ও আছে।
.
.
. বেলা এই আধঘন্টা ধরে সাওয়ারের তলায় দাঁড়িয়ে সাঁঝ এই লাভ টর্চার সহ্য করে যাচ্ছে। সাওয়ারের পানিতে পুরো ভিজে জুবু থুবু হয়ে গেছে। বেলা এবার আর না পেরে এক হাত দিয়ে খুব শক্ত করে সাঁঝ এর মাথার সিল্কি সিল্কি চুল গুলো খিচে ধরেছে। আর এক হাত সাঁঝ এর মুখে পাশে থেকে এনে ঠিক কানের পাশে একটা রাম চিমটি কেটে ধরে থাকে। সাঁঝ বেলার পেটে থেকে মুখ উঠিয়ে বেলার মুখের দিকে তাকাতে দেখতে পায় চোখ মুখ কুঁচকে বন্ধ করে রেখেছে। ঠোঁট গুলি ক্রমাগত কাঁপছে। চোখে মুখে ফুটে আছে রাগ আর অসহায় এর ছোঁয়া। জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। সাঁঝ উঠে দাঁড়িয়ে গিয়ে বেলার ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে একটা গভীর চুমু খেয়ে বেরিয়ে যায় ওয়াশরুমে থেকে।
.
. এদিকে বেলা জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। আর সাঁঝ ওয়াশরুমে থেকে বেরিয়ে গেছে বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি করে ডোর লক করে দিতে গেলে। হটাৎ করে আটকে যায়। হালকা মুখ উচু করে দেখে সামনে ভেজা চুপ চুপে সাঁঝ দাঁড়িয়ে আছে। এক হাত বাড়িয়ে তার ড্রেস ধরিয়ে দেয়। বেলা তাড়াতাড়ি করে ড্রেস নিয়ে ডোর লক করে দেয়।
.
. বেলা কিছুক্ষন আগের মুহুর্ত মনে করে বিড়বিড় করে ওঠে।
.
–“দেখে মনে হয় না এত বজ্জাত লোক। দেখে মনে হয় ভাজা মাছ উল্টে খেতে পারে না সাদা সিধে প্রাইমারী স্কুলের নাদান বাচ্চা। কিন্তু ভিতরে ভিতরে একদম অসভ্যের হাড্ডি এক সেকেন্ডের মধ্যে কলেজে এর গণ্ডি পেরিয়ে যায়।। লজ্জা শরম যেনো বেঁচে দিয়েছে সবার সামনে কেমন চুমু খেয়ে নিলো আর এখন পুরো তো সিনেমা বানিয়ে ফেললো। ইমরান হাসমি ও ছাপিয়ে যাবে। সব সময়ে মুখ বানিয়ে রাখে এমন যেনো কেউ করোলার জুস খাইয়ে দিয়েছে। মুখ টা অল টাইম গোমরামুখো ভিলেন অমরেশ পুরী বানিয়ে রাখে। আর রোম্যান্স এর সময়ে পুরো হিরো হয়ে তিনশো ষাট ডিগ্রি ঘুরে ঘুরে ইমরান হাসমি ও শাহ-রুখ-খান মিক্সড হয়ে যায়।

——————

–“স্যার আপনার কথা মত সব তৈরী করে রেখেছি। আকাশ সাঁঝ এর অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে ওঠে।
.
–” ওকে নিয়ে এসো সব কিছু। সাঁঝ তার সিক্রেট এর রুমে ঢুকতে ঢুকতে বলে ওঠে।
.
. এখানে পুরো জায়গা গার্ড দিয়ে ভরা চারিদিকে সাঁঝ এর গার্ড ছেয়ে আছে। সাঁঝ এর অনুমতি ছাড়া একটা মাছি ও ভিতরে ঢুকতে পারবে না আর না বেরোতে পারবে।
.
–” স্যার আজ খবর ছিল বেলা ম্যাডাম কে আবারো হ্যারাজ করার জন্য এমন করা হয়েছিলো। আকাশ বলে ওঠে।
.
–” কে আছে এর পিছনে? সেটা খুঁজে বের করার জন্য ও কি তোমাকে নিমন্ত্রণ পত্র পাঠাতে হবে। সাঁঝ দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
–“না স্যার খুঁজে নিয়েছি। এটা আর. এম করিয়েছে। আকাশ বলে ওঠে।
.
–“ওই ব্যাস্টার্ড কে তো জ্বালিয়ে মারব। আগে এটা কে শেষ করে নেই। রাগে চিৎকার করে বলে একটা সেল এর দরজা লাথি মেরে খুলে ভিতরে ঢুকে যায়।
.
. ভিতরে একটা টেবিলে বরফ এর ওপর শুয়ে টেবিলে এর সাথে উল্টো করে বেঁধে রেখেছে ম্যাডি কে। তার দুটো হাত পুরো রক্তে জমে আছে। তার পুরো শরীর ফ্যাকাশে নীল হতে শুরু করে ঠান্ডায়। সাঁঝ রুমের ভিতরে ঢুকে ম্যাডি কে দেখে যেনো এবার ওর রাগ সপ্তম পর্যায় পৌঁছে যায় চোখ মুখ পুরো হিংস্র রূপ ধারণ করে। পাশের থাকা ছোট্ট টেবিল এর ওপর থেকে একটা রুল বাড়ি তুলে নেয় সাঁঝ। আর তারপর পেটাতে থাকে গায়ের জোরে সাঁঝ। এতেও যেনো ওর রাগ কমছে না। চোখের সামনে বারবার ভেসে আসছে বেলার কোমর ধরে থাকার দৃশ্য টা। রুল বাড়ি ফেলে পাশে থাকা চিলি ও সল্ট পাউডার নিয়ে ম্যাডি এর গায়ে ছড়াতে থাকে। তারপর আবার ও পাশের থেকে কাটা কাটা একটা রুল বাড়ি তুলে নেয়।এবং সেটা দিয়ে মারতে থাকে। রুমের মধ্যে ম্যাডির চিৎকারে ভোরে যায়। কাঁটা যুক্ত বাড়ি দিয়ে মারার ফলে গায়ে পড়ার সাথে সাথে রক্ত ছিটকে ছিটকে বেরিয়ে আসছে। সারা গায়ে থেকে মাংস খুবলে খুবলে উঠে যেতে থাকে।
.
–“তুই খুব বড় ভুল করে ফেলেছিস আমার জীবন এর দিকে হাত বাড়িয়ে। এই সাহস দেখানো তোর উচিত হয়নি। ওর দিকে যে চোখ তুলে তাকায় তাকে আমি দ্বিতীয়বার আর চোখে দেখতে পাওয়ার মত অবস্থা রাখি না। আর তুই তো ওর শরীরে হাত দিয়েছিলি। আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস তাহলে তুই ভাব তোর সাথে কি হতে চলেছে । তোকে আমি নরকের থেকে ঘুরিয়ে আনবো যে কয়েক মুহূর্ত তুই এই পৃথিবীতে শ্বাস নিবি। আমি তোর জীবন জাহান্নাম বানিয়ে দেবো। সাঁঝ ম্যাডি চুলের মুঠি ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
–“এ যেনো এক মুহূর্তের জন্য ও শান্তির নিশ্বাস নিতে না পারে এক মুহূর্তে জন্য ও যেনো এর চিৎকার বন্ধ না হয়। এক মুহূর্তের জন্য ও যেনো চোখ ও না বন্ধ হয়। সাঁঝ আকাশ এর দিকে তাকিয়ে হুঙ্কার ভরা আওয়াজ বলে ওঠে।
.
–” ওকে স্যার। আকাশ বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ রুম থেকে বেরিয়ে আকাশ এর পুরো কথা শোনার আগে। পিছন পিছন আকাশ ও ম্যাডির পুরো খাতির যত্নের ব্যবস্থা করে বেরিয়ে পড়ে।
.
.
.
.💝💝💝
.
. চলবে….