তোর উঠানে বিকাল ছায়া পর্ব-১০

0
597

#তোর_উঠানে_বিকাল_ছায়া🥀
১০ম খন্ড
#লেখিকা-লামিয়া রহমান মেঘলা

ছায়া তমার ব্যবহারে ভিশন অবাক
–ভাইয়া আপুর সাথে ঝগড়া হয়েছে কি?
–না ত আপু কেন?
–ও এমন করছে কেন।
ধরাই যাচ্ছে না ছ্যাত ছ্যাত করছে।
–আরে ওকে নিয়ে তুমি ভেবো না।
ছায়া আবিরের দিকে তাকালো।
ছায়া স্পষ্ট বুঝতে পারছে আবিরের মুখে চিন্তার ছাপ।
সবাইকে খাইয়ে নিজে খেয়ে ছায়া আর নির্ঝর উপরে এলো।
রুমে এসে ছায়া বিছনার এক কোনে নিজেকে গুটিয়ে শুয়ে পরে।
কিছু সময় পর নির্ঝর দেখতে পায় ছায়া কিছিটা শীতে শাড়ির ভেতর ঢুকে গেছে এক দম।
নির্ঝর গিয়ে এসিটা একটু কমিয়ে ছায়ার গায়ে চাদর টেনে দেয়।
তার পর নিজে ছায়াকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে যায়।
ছায়াকে জড়িয়ে নির্ঝর পরম শান্তি অনুভব করে।
চোখ বন্ধ করে ছায়ার চুলের ঘ্রাণ অনুভব করলে অসম্ভব সুন্দর একটা ফিলিংস আসে নির্ঝর এর।
নির্ঝর ছায়াকে সারা জীবন এভাবে আকড়ে ধরে বাঁচতে চায়।
ঠিক এভাবে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে চায়।
,
,
,
মালদ্বীপ থেকে ফিরে সোজা নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে নিজেকে আঁটকে নিয়েছে আদনান।
আদনানের চোখ দুটো রক্তের মতো লাল হয়ে আছে।
হাতের কাছে কিছুই সুরক্ষিত নাই তার সব ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে সে ।
ভয়ে আদনানের কাছে কেউ আসতে পারছে না।
আদনানের রাগ সম্পর্কে সবাই খুব ভালো করে আবগত।
আদনানের মা আদনানের কাছে আসতে চাইলো কিন্তু আদনানের রাগের কাছে সেও নিরুপায়।
নিরাস হয়ে সে আদনানের বাসা থেকে বেরিয়ে এলো।
,
,
,
আবির খেয়াল করছে তমা কেমন অস্থির হয়ে আছে,
কিন্তু এবার তমার অস্থিরতা দেখে আবির তমাকে কিছু বলল না।
উল্টো মুখ করে ঘুমিয়ে পরলো।
আবিরের সত্যি আর সহ্য হচ্ছে না তমার ব্যাবহার।
,
,
,
রাত গড়িয়ে দিন হলো।
নির্ঝর ঘুম থেকে উঠে ছায়াকে নিজের বুকের মধ্যে বাচ্চাদের মতো গুটিয়ে থাকা অবস্থায় আবিষ্কার করে।
ছায়া একটা কিউট ছোট্ট বাবুর মতো হাত পা গুছিয়ে নির্ঝর এর বুকের মাঝে ঢুকে আছে।
নির্ঝর মৃদু হেসে ছায়াকে সরাতে চেষ্টা করে।
কিন্তু ঘুমের ঘোরে মেয়েটা নির্ঝর কে আরও আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে।
নির্ঝর এর মাথায় তা দেখে একটা দুষ্টু বুদ্ধি আসে।
নির্ঝর ছায়ার নাক ঠোঁট টানতে শুরু করে।
ঘুমের মাঝে এমন আকামের শিকার হয়ে ছায়া এক পর্যায়ে চোখ খুলে বিরক্ত চোখে তাকিয়ে পরে,
–কি সমস্যা (ঘুম ঘুম শুরে)
–উঠো।
–একটু পরে।
–না একটু পরে না উঠো আমার চেম্বার আছে।
–না।
–কি না।
–চেম্বার নাই।
–তোমার কথা মতো।
–হয় আমি না আপনার বউ। চুপ থাকেন এবার।
ছায়া নির্ঝর এর ঠোঁট বন্ধ করে দেয় দু আঙুল দিয়ে।
নির্ঝর অবাক ছায়ার কাজে
নির্ঝর ছায়ার হাত সরিয়ে ছায়াকে আবার ডাক দেয়।
–উফ আমার মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে নির্ঝর।। (ঘুম ঘুম শুরে)
–কেন?
–ঘুমের ঘাড়তি। (আবারো সেই একি শুরে)
–ত আমাকে এখন কি করতে হবে?
–আমাকে এভাবে জড়িয়ে শুয়ে থাকেন আমি একটু ঘুমাই।
আর জ্বালাবেন না।
কথাটা বলে ছায়া আবার ঘুমিয়ে যায়।
নির্ঝর ছায়ার কান্ড দেখে কিছুটা শব্দ করে হেসে দেয়।
–পাগলি একটা।
–না ঘুম।
ছায়া আবার নির্ঝর এর ঠোঁট আটকে দেয়।
এবার নির্ঝর ছায়াকে আরও জোরে জড়িয়ে শুয়ে পরে।
ছায়ার চুলের ঘ্রাণ।
ছায়ার বন্ধ চোখের মায়াবী মুখ।
সব মিলিয়ে এক অপরুপ সুন্দরী নারী।
,
,
,
সকাল ১১ টা বেজে গেছে,
তমা খাবার টেবিলে শাশুড়ী মায়ের সাথো বসে আছে।
অনেক সময় ধরে কিছু বলবে বলবে বলে হাত মুচড়ে যাচ্ছে তমা কিন্তু সাহস হয়ে উঠছে না।
তমার এ অবস্থা দেখে তমার শাশুড়ী বলে উঠে,
–কিছু বলবি তমা।
–মা আসলে এতো সকাল হয়ে গেল ছায়াও আসলে না ভাইয়া ও আজ বের হলো ন চজ ত ভাইয়ার চেম্বার ছিল।
–তাতে কি কোন সমস্যা হয়েছে তমা?
–না।
–তবে কাল এসেছে ক্লান্ত তাই ঘুম হয়ত।
–মা আসলে।
–কি বলতে চাইছো তমা।
তোমার মুখে এসব কথা মানায় না।
চোখ রাঙিয়ে কথাটা বলল মিসেস.চৌধুরী।
মিসেস. চৌধুরী এর চোখের দিকে তাকিয়ে তমা চুপ হয়ে গেল।
মিসেস. চৌধুরী চলে গেল উপরে।
তমা বসে রইলো।
আবির ও তমাকে তেমন ভাও দিচ্ছে না।
,
কিছু সময় পর নির্ঝর আর ছায়া নেমে আসে নিচে।
তমা উপরের দিকে তাকিয়ে ছায়াকে নির্ঝর এর সাথে দেখে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে
পরে।
ছায়াকে নির্ঝর এর সাথে সহ্য হচ্ছে না তমার৷
ছায়া আর নির্ঝর নিচে নামতে,
তমা তড়িঘড়ি করে বলতে থাকে,
–ভাইয়া আসুন খাবার খাবেন না।
সকাল থেকে বসে আসি আপনার জন্য।
–কিরে আপু আমার জন্য করিস নি নাকি।
ছায়ার কথায় তমা উত্তর দিলো,
–নারে তুই খাবি না আমি তাই ভাবছি। আর এতো বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকলে কে তোর জন্য খাবার নিয়ে বসে থাকবে।
তমার কথায় ছায়া বেশ কষ্ট পেলো। কিন্তু
নির্ঝর তমার কথাকে তোয়াক্কা না করে ছায়াকে উদ্দেশ্য করে বলল,
–ছায়া ব্রেকফাস্ট তৈরি করো যাও।
–কেন ভাইয়া আমি ত করেছি।
–আমার স্ত্রী এর জন্য যে খাবার না সে খাবার আমার জন্য ও না।
নির্ঝর কথায় তমা উত্তর না দিয়ে উপরে চলে যায়।
ছায়া গিয়ে খাবার তৈরি করে আনে

নির্ঝর আর ছায়া মিলে খেয়ে নেয়,
,
,
,
,
–ছোট থেকে সেই ছোট থেকে তোকে যখন মা এনেছিল তখন থেকে তুই আমার পছন্দের জিনিস গুলো নিয়ে বেড়াচ্ছিস।
আমি তখন থেকে তোর থেকে আমার পছন্দ গুলো বাঁচিয়ে রাখছি।
কিন্তু কি করব এখন।
তুই যে আমার নির্ঝর কে পুরাই কেড়ে নিয়ে গেছিস ছায়া।
আমি কি করে তোকে সহ্য করবো।
সহ্য করতে পারছি না তোকে।
নির্ঝর এর পাশে ত নাই।
আআআআ।
যেদিন আমি নির্ঝর কে প্রথম প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলাম ও আমায় সে দিন তোর জন্য রিজেক্ট করেছিল।
যার জন্য ওর ভাইকে ফাঁসালাম।
আর সেই তুই আমার নির্ঝর কে কেড়েই নিলি ছায়া।
তুই কেঁড়ে নিলি আমার থেকে।

,
,
চলবে,