দুই_পৃথিবী পর্ব-০৯

0
1263

#দুই_পৃথিবী
#লেখিকা-নাইমা জাহান রিতু
#পর্ব-৯
অনেকক্ষণ হলো মুহিব স্নেহা কে না দেখতে পেয়ে একদম অস্থির হয়ে গেছে।সারাবাড়ি তে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে খোজা বাকি আছে।তারপরও স্নেহার কোন পাত্তা নেই।’মেয়েটা গেল কই!বিপদে পড়লো না তো আবার!নাকি ইচ্ছে করেই এমন করছে!ফোন টা ও রুমে ফেলে রেখে গেছে।এমন কেন করে মাঝেমাঝে স্নেহা!যেন এই জগৎ সংসার সম্পর্কে তার সামান্যতম আগ্রহ ও নেই।কিন্তু গত দুই দিন যাবৎ হলো তো স্নেহা পুরোপুরি চেঞ্জ হয়ে গিয়েছিল তাহলে আজ আবার এমন কি হলো?নাকি সত্যিই বিপদে পড়েছে?গ্রামের লোকজন তো তেমন একটা সুবিধার না।স্নেহাকে দেখে কিছু লোক কিভাবে যেন তাকিয়ে ছিল।ওরা কিছু করলো না তো?’মুহিব আর কিছু ভাবতে পারলো না।তার মাথাটা যেন কেমন ঝিনঝিন করছে।।

সন্ধ্যা নামার আগেই একজন ভদ্রসভ্য,লাজুক ছেলের সাথে বিয়ে হয়ে গেল অনুর।কয়েক মিনিটের মাঝেই তারা দু জন সারাজীবন এর জন্য এক হয়ে গেল।যে ছেলেটির সংগে কোনো জন্মেও অনুর পরিচয় ছিল না,তার সাথে পরম পরিচয়ের অনুষ্ঠানটি এত ছোট হলে দেখতে ভালো লাগে না।কেমন যেন মন টা খারাপ হয়ে যায়।অবশ্য মুসলমানদের বিয়ে তো এমনই।কাজি এসে বর এবং কনের কাছে যাবে,তাদের বিয়েতে মত আছে কিনা জানতে চাইবেন।তারা তিন বার কবুল বলবে,ব্যাস।এখানে তো সময় লাগবার ও কথা নয়।
অনু এখন বসে আছে স্টেজে তার বর আতিকের পাশে।ছাদে ছোট্ট করে স্টেজ টা সাজানো হয়েছে নানান ফুল দিয়ে।তার ঠিক মাঝখানে বসে আছে দুই জন।যারা কিছুক্ষণ আগে নতুন জীবনে পা দিয়েছে।যাদের চোখে এখন নিজের সংসার সাজানোর হাজারো স্বপ্ন।আতিক হালকা কেশে নিজের উপস্থিতি জানান দেওয়ার চেষ্টা করছে।কিন্তু অনুর দৃষ্টি সে কিছুতেই তার দিকে ফেরাতে পারছে না।অনু অবশ্য ব্যাপার টা বুঝতে পারছে,তবুও চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।সে তো নতুন বৌ,তাকে তো আজ লজ্জা পেয়ে নিচের দিকেই তাকিয়ে হবে।তাই নয় কি?
আতিক শুধু সুযোগ এর অপেক্ষায় আছে,যখনই মানুষ কিছুটা কমবে তখনই অনুকে দেখবে সে,কিছু কথা বলবে।একবার মাত্র দেখেছিল সে অনুকে।তারপর হুট করে তার মা খবর দিল বিয়ে ঠিকঠাক,তুই ছুটি নিয়ে চলে আয়।আতিকও ভদ্র ছেলের মত কোন শব্দ উচ্চারণ না করে মায়ের আদেশে কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এল বিয়ে করতে।কিন্তু এখন অনুকে দেখা বা কথা বলার মতো সে কোন সুযোগই খুঁজে পাচ্ছে না।অবশ্য আর কিছুক্ষণ দেরি করলেই তাদের বাড়িতে গিয়ে সে অনুর সাথে কথা বলতে পারবে,কিন্তু কেন যেন দেরি সহ্য হচ্ছে না।তাই আতিক আর কিছু না ভেবে রাফি আর রুনকি কে ডেকে কানেকানে কিছু কথা বললো।তার একটু পরেই নিচ থেকে রাফি আর রুনকির চিৎকার শুনলো সবাই।সাপ সাপ বলে চিৎকার করছে তারা।তাদের চেঁচামেচি শুনে ছাদে এতক্ষণ যারা ছিল নিচে নেমে গেল তারা।তাদের যেতে দেখে আতিক জয়ের একটা হাসি দিয়ে অনুর দিকে তাকালো।কিন্তু অনু উঠে দাঁড়িয়ে কেন?যাচ্ছে কই?আতিক কিছু না বলেই অনুর হাত ধরে টান দিয়ে বসিয়ে দিল তাকে।অনু টানের ঝোক সামলাতে না পেরে পড়ে যেতে নিলেই আতিক তার হাত ধরে ফেলে তাকে বসিয়ে দিল।অনু নিজে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছে,কি হচ্ছে এগুলো?নিচে পিচ্চি দুটো চিৎকার করছে আর উপরে এই কাণ্ড।তার মাথায় কিছু আসছে না।আতিক এখনো তার হাতটা ছাড়ে নি,বরং আরো চেপে ধরেছে।
-কেমন আছো?
অনু উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলো।নিজেকে এখনো ধাতস্থ করতে পারছে না সে।আতিক অনুর নিরবতা দেখে আবারো বললো
-কি ব্যাপার?কথা বলছো না কেন?
আবারো অনুর নিরাবতা দেখে আতিকের নিজের কপালে নিজের থাপড়াতে ইচ্ছা করলো।এত কষ্ট করে রাফি আর রুনকিকে দিয়ে অভিনয় টা করতে নিচে পাঠালো,যাতে সে অনুর সাথে এখন কিছুটা সময় একা কাটাতে পারে।কিন্তু এই মেয়ে তো কথাই বলছে না।আচ্ছা মেয়েটা আবার বোবা না তো?না,বোবা হবে কেন!যেদিন অনুকে দেখতে এসেছিল সেদিন তো কথা বলতে দেখেছিই।তাহলে এখন কথা বলছে না কেন?এদিকে অনুর হাত এখনো ছাড়ে নি আতিক।এত জোড়ে চেপে ধরে আছে যে ব্যাথা লাগছে।অনু নিরবতা ভেংগে বলেই ফেললো
-আহ,হাত ছাড়ুন।লাগছে তো।
আতিকের কানে যেন কথা গুলো বাজতে লাগলো।কি সুন্দর কণ্ঠ!’আহ লাগছে তো।”আহ লাগছে তো'”!!
-ছাড়ুন।
আতিক হাত টা ছেড়ে অনুর দিকে তাকিয়ে বললো
-এতোক্ষন কথা বলছিলা না কেন?ব্যাথা দিলে কথা বলবা না হলে বলবা না?
ইতস্তত করে অনু বললো
-না তেমন কিছু না।নিচে কি যেন হয়েছে।আপনার সাথে যে দুই পিচ্চি ছিল ওরা চিৎকার করছে।
-করছে করুক।দেখি তুমি আমার দিকে তাকাও তো।
অনু আতিকের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেল।এই লোকের মাথা ঠিক আছে তো?
অনুকে এখনো নিচের দিকে তাকানো দেখে আতিক হাত দিয়ে অনুর মুখ টা নিজের দিকে এনে মুগ্ধ দৃষ্টিতে বললো
-মাশাল্লাহ।
এর আগেও তো একবার অনুকে দেখেছিল আতিক।কিন্তু অনু যে এত টা সুন্দর সেদিন তো তার চোখে এটা ধরা পড়েনি।সেদিন আর দশ টা স্বাভাবিক মেয়ের মতোই লাগছিল অনুকে।কিন্তু আজ তাহলে কেন অন্যরকম লাগছে?মনে হচ্ছে পৃথিবীর সব চেয়ে রূপবতী নারীটি এখন তার সামনে বসে আছে।এটিই কি তাহলে বিয়ের পাওয়ার?বিয়ের পরে কি প্রত্যেকটা স্বামীর চোখেই তার স্ত্রীকে দেখতে অসম্ভব রূপবতী লাগে?যতই সেই স্ত্রী অসুন্দরী হোক না কেন??আতিক মুগ্ধ চোখে অনুর হাতের দিকে তাকাল।তারপর ধীরে অনুর হাত টা নিজের হাতে নিয়ে তার ঠোটের সাথে ছুয়িয়ে আলতো করে একটি চুমু দিল।আতিকের ঠোটের সাথে অনুর হাত টা স্পর্শ করতেই অনুর শরীর বেয়ে বয়ে গেল যেন এক ভয়ংকর ভূমিকম্প।

সন্ধ্যা নেমেছে কিছুক্ষণ হলো।আকাশ টা মেঘে ভরে আছে।চারিদিকে অন্ধকার।হালকা চাঁদের আলোর জন্য রাস্তা ঘাট পরিষ্কার না দেখা গেলেও আবছা দেখা যাচ্ছে।সেই পথ ধরেই দুজন যুবক যুবতি হেটে চলছে।চারপাশটা অসম্ভব নিরব,মাঝেমাঝে পাখির ডাকের দু একটা শব্দ কানে আসছে।নিরবতা ভেঙে যুবতি টি বললো
-আমাকে মিথ্যে কেন বলেছো আফসান?
আফসান হয়তো হালকা হাসির মতো ভঙ্গি করলো।অন্ধকারে সেটা দেখা যাচ্ছে না।তারপর স্নেহার দিকে তাকিয়ে বললো
-আমি কিন্তু মিথ্যে কিছু বলি নি স্নেহা।আমি একবারো বলি নি যে আমি অবিবাহিত কিংবা আমার ছেলে মেয়ে নেই।
স্নেহা কঠিন মুখ করে বললো
-তুমি সত্যি টাও বলো নি আফসান।
-তুমি কখনো জানতে চাও নি।তারপর ও তোমাকে যেদিন বিয়ের কথা বললাম সেদিন তোমাকে আমি বলতে চেয়েছিলাম।কিন্তু তার আগেই তুমি…
আফসানের কথা শেষ করার আগেই স্নেহা বললো
-আমাদের ৪ মাসের পরিচয়ের মাঝে কি তুমি আমাকে এটা বলতে পারতে না?
-পারতাম।কিন্তু বলি নি।
-কেন বলো নি?
-তোমাকে আমি চিনি ১ বছরের বেশি হলো।আর তুমি এটাও জানো তোমাকে ঠিক আমি কতোটা পছন্দ করি।আর এর জন্যই আমি দূরে থেকে তোমাকে দেখতাম।তোমার ছবি আঁকতাম।কখনো কাছ থেকে দেখার বা জানার সাহস পেতাম না।কারণ ছিল একটাই।সেটা আমার পাস্ট।আমার বিয়ে,বউ,বাচ্চা।তারপর যেদিন হঠাৎ করে আমার ফ্লাটে চলে এলে সেদিন আমি পুরো হকচকিয়ে গিয়েছিলাম।তারপর শুরু হলো দেখা করা,ফোনে কথা হওয়া।তোমাকে এতোটাই পছন্দ করতাম আমি,তাই যেদিন তুমি নিজে থেকেই এসে তোমার হাতটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলে,আমার নেশা হয়ে উঠলে তখন আর তোমাকে হারাতে চাই নি।তোমাকে নিয়ে নতুন ভাবে জীবন শুরু করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু আমি তোমাকে জানাতে চেয়েছিলাম সেদিন।
আফসান ছোট একটা নিশ্বাস ফেলে আবারো বলতে শুরু করলো
-আমি মোটামুটি প্রস্তুত হয়েই ছিলাম যে তুমি সত্যিটা শোনার পর আমাকে ফেলে চলে যাবে।মানুষিক ভাবেও নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছিলাম।কিন্তু মনের কোথাও একটা আশা ছিল যে,না স্নেহা যাবে না।স্নেহা আমার সাথে আমার নতুন জীবন গোছাতে আমাকে সাহায্য করবে।আর এই কারণেই হয়তো তুমি যখন সেদিন তোমার বিয়ের কথা বলে আমাকে ফেলে রেখে চলে এলে,তখন নিজেকে সামলাতে পেরেছিলাম।আমি তোমার চেয়ে বয়সে বড়।ম্যাচিউরিটি আমার মাঝে আছে।তাই আর আবেগগে প্রশয় দেই নি।ভেবেছি থাক স্নেহা নিজের মতো করে সুখি থাকুক।কিন্তু যখনই ভাবতাম তুমি অন্যকারো বউ,সে তোমাকে স্পর্শ করবে,রাতের পর রাত এক বিছানায় ঘুমাবে তখন বুকের বাম পাশটায় কেমন যেন ব্যাথা অনুভব হতো।
স্নেহা এতক্ষন চুপ করে মন দিয়ে আফসানের কথা গুলো শুনছিল।আফসান থামতেই স্নেহা বললো
-তুমি কি আমাকে শাবানা ভাবো?আর নিজেকে আলমগির?বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলবে আর আমি বিশ্বাস করবো?তুমি কি ভেবেছিলে সব জেনে আমি তোমাকে বিয়ে করে তোমার দুই ছেলে মেয়েকে নিজের মনে করে সুন্দর একটা সংসার সাজিয়ে নিতাম?কখনই না।জীবন টা কোনো সিনেমা না আফসান।আর আমি নিজেও শাবানা না।আর নিজেকেও আলমগির ভেবে ভূল আশা নিয়ে বসে থেকো না।অবশ্য যা অভিনয় তুমি করো আলমগির হতে তোমার আর দেরি নেই।আশা করি খুব শিঘ্রই তুমি তোমার নতুন শাবানাকে খুঁজে নিবে।
কথাগুলো বলেই এক সেকেন্ড ও না দাঁড়িয়ে স্নেহা হাটা শুরু করলো বিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে।আফসান হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে রইলো অন্ধকার পথের দিকে।যে পথের কোনো শেষ নেই।স্নেহা তাকে ভূল বুঝে চলে গেল।কিন্তু সে তো কোন অভিনয় করে নি।তার দিক থেকে স্নেহার জন্য ছিল একদম নবাগত শিশুর ন্যায় ভালোবাসা।নবাগত শিশুরা যেমন পবিত্র তার ভালোবাসা টাও ঠিক ততোটা পবিত্র।

বিয়ে বাড়ির গেটের আলো জ্বলছে আর নিভছে।চারিদিক থেকে কয়েকটি কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ আসছে।বিয়ে বাড়ি হলো কুকুর বাবাজিদের জন্য আড্ডা খানা।তার সাথে কানে ভেসে আসছে চিৎকার করে কান্নার শব্দ।অনুর মা,পারা প্রতিবেশি রা মরা কান্নার মতো কান্না শুরু করে দিয়েছে।অবশ্য মেয়েকে বিদায় দেওয়ার মতো বড় কষ্টের চেয়ে কোনো বাবা মার কাছে আর কিছু নেই।অনুর মা ৪ বার জ্ঞান হারিয়েছে এর মাঝে।এই অবস্থাতেই রাত ৯ টার দিকে অনুকে নিয়ে রওনা হলো বরপক্ষরা।অনুর সাথে কে যাবে এ নিয়ে নানান ঝামেলার পর ঠিক হলো মুহিব আর স্নেহা যাবে।স্নেহাও অমত করে নি।এক রাতেরই তো ব্যাপার।সবাইকে নিয়ে নাটর আতিকদের বাড়ি পৌছাতে পৌছাতে ১১ টা বেজে গেল।দোতালা বিশাল বড় একটা বাড়ি।দেখতে কিছুটা পুরনো।আবার অতোটাও পুরনো না।অনুদের বাড়ির মতো এ বাড়িতে আলো দিয়ে সাজায়ও নি।বউ নামানো নাটোকিয়তা শেষ হবার পর অনুকে আতিকের ঘরে নিয়ে যাওয়া হবে।আতিকের বোনরা বাসর ঘর সাজিয়ে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে রেখেছিল।মুহিবকে একাই এই ঝামেলা মেটাতে হলো।টাকা দেবার পর অনুকে ঢুকতে দিল ঘরে।অনুর পাশে কিছুক্ষন বসে থেকে স্নেহা বিরক্ত হয়ে বললো
-অনু তুমি থাক।আমি তাহলে যায়।আমার মাথা ধরেছে ফ্রেশ হয়ে একটা ঘুম দিব।
অনু স্নেহার কথা শুনে স্নেহার হাত ধরে বললো
-পায়ে ধরি ভাবি।প্লিজ যেয় না।আমার ভয় লাগতেছে।
-ভয়ের কি আছে?আতিক নামের লোকটি এসে কি তোকে খেয়ে ফেলবে নাকি?
অনু করুন কণ্ঠে বললো
-না ভাবি।প্লিজ যেয় না।উনি আমাকে সন্ধায় কি করছো জান?হাতে চুমু খেয়েছে।এখন না জানি কি করবে।ভয় লাগছে।প্লিজ যেয় না।
অনুর কথা শুনে হাসতে থাকলো স্নেহা।এদিকে স্নেহার হাসি দেখে অনুর চোখ পানিতে ভরে উঠেছে।যেন যে কোন মুহূর্তেই টপটপ করে গড়িয়ে পড়বে গালে।হাসি থামিয়ে স্নেহা বললো
-ছোটটা তেমন একটা এডভান্স না।প্রথম বার তাও হাতে চুমু খেয়েছে।আর বড়টা এতো বেশি এডভান্স যে প্রথম বারেই সরাসরি…
বলতে বলতেই উঠে গেল স্নেহা।অনু স্নেহার গমনের দিকে হা করে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো’ভাবি কি সব বলে!অবশ্য মনে হয় না ভাবির মাথা ঠিক আছে।কেমন যেন উদ্ভট উদ্ভট কথা বলে।কিন্তু যাই বলুক না কেন!ভাবির রূপের কাছে এগুলো কিছুই না।এতো সুন্দর মেয়ে যে এক বার কারো তার দিকে তাকিয়ে মন ভরবে না।বারবার তাকাতে ইচ্ছে হবে।’

রাত ২ টা।মুহিব ঘুমিয়ে পড়েছে।সারাদিনের খাটাখাটি তে সে অনেক ক্লান্ত।সেটা তার গভীর ঘুম দেখেই বোঝা যাচ্ছে।এদিকে তার পাশেই শুয়ে আছে স্নেহা।অবশ্য স্নেহার চোখে ঘুম নেই।মাথাটা ঝিমঝিম করছে।এক কাপ চা খেতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু এখানে কাকে বলবে সে!অনুর ঘর থেকে চলে আসার পর আশা নামের মেয়েটি তাকে আর মুহিবকে এই ঘর দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছে।স্নেহা এই ঘরে এসেই এক ঘন্টা ধরে আগে শাওয়ার নিয়েছে।।তাও মাথা ব্যাথাটা যাচ্ছেই নাহ।চা টা এখন খুব বেশিই দরকার তার।স্নেহা তার ফোন টা হাতে নিয়ে আফসান কে কল করলো।
আফসান এখনো ঘুমোয়নি।মাত্রই সিগারেট ধরিয়ে বিছানায় বসেছে সে ঠিক তখনি তার ফোনে এল স্নেহার কল।আফসান কিছুটা সময় ভাবলো কল রিসিভ করবে কিনা।তারপর হুট করেই রিসিভ করে ফোনটা কানে নিল সে।ওপাশ থেকে স্নেহার গলার আওয়াজ পাওয়া গেল
-এই যে মিস্টার আলমগির,আমার জন্য এক কাপ চা নিয়ে আপনাদের ছাদে আসুন তো।

(চলবে)