নাম না জানা পাখি পর্ব-০৮

0
532

#নাম_না_জানা_পাখি
#নূর_নাফিসা_খুশি
#পর্ব_৮

সময়টা রাত দশ-টা স্কুটি নিয়ে হেটে যাচ্ছে এক তরনি। রেস্টুরেন্ট থেকে আশার পথেই স্কুটিটা খারাপ হয়ে যায়। আর কতদিন ই বা চলবে এই স্কুটি খুশি নিজেই তো সেকেন্ডে হান্ড স্কুটি কিনেছিলো। কইমাস থেকে একটু বেশিই খারাপ হচ্ছে স্কুটিটা খুশি খুব বিরক্ত এটা নিয়ে। স্কুটির অপর বিরক্ত হয়ে কি হবে তার জীবন টাই তো বিরক্তিকর হয়ে উঠেছে। এই সকালেই তো মাহিরকে এতো বলেও বের করা যায়নি তার মুখ থেকে কেনো বিয়ে করলো খুশিকে। রেস্টুরেন্টে এসে রেস্টুরেন্টের মালিক আজ টাকা দিতে চেয়েছিলো। কি অদ্ভুত তাই না যখন টাকার জন্য আকুতি মিনতি করেছি করেছি তখন মুখের অপর না করে চলে গেছে।আর এখন যখন দশ দিন পর গেছি তখন টাকা দিতে চাইছে হাইরে দুনিয়া।

খুশি নিজের অনিশ্চিত জীবনের কথা ভাবতে ভাবতে হেটে যাচ্ছে এই ঘুটঘুটে অন্ধকার রাস্তা দিয়ে। মেইন রাস্তা পার হয়েই স্কুটি টা খারাপ হয়েছে এখানে কোনো মেকানিকের দকান ও নেই।

“দূর ভাল্লাগে না এই স্কুটিটা কেনো যে খারাপ হয় আর খারাপ হলে ভুল সময়েই খারাপ হবে দূর দূর ছাই।

নিজের মনে আওরাচ্ছে খুশি। হটাৎ তার চোখে পরে দূরে কয়েকটা বোকাটে ছেলে দাড়িয়ে আছে। তাদের দেখে খুশির কলিজা শুকিয়ে আসে এমনেই রাত তার অপর একা একটা মেয়ে ভয় লাগা স্বাভাবিক । খুশি কি করবে বুঝতে পারছে না দোয়া দরুধ পড়তে পড়তে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে খুশি।

ছেলে গুলোকে পার হয়ে অনেক খানি চলে আসে খুশি কিন্তু ওমা কি আশ্চর্য ছেলেগুলো কিছু বললো না কেনো? ভালো হয়ে গেলো না-কি। খুশি এই ছেলে গুলো কেই দিনের বেলা কতো মেয়েকে বিরক্ত করতে দেখেছে। আর আজ খুশিকে এই রাতে একা পেয়েও কিছু বললো না আজব ব্যাপার।

খুশি হাটছে আর ভাবছে। এক বিরক্ত করলেও ঝামেলা আর এখন করলো না তাতেও খুশি অশান্তি অশান্তি ফিল হচ্ছে। খুশি আর না পেরে আস্তে করে পিছনে তাকিয়ে দেখে, পিছনে তাকিয়ে তো খুশি অবাক। কারণ খুশির থেকে প্রায় পনেরো হাত দূরে মাহির হেটে আসছে। ছেলে গুলোর কিছু না বলার কারণ এখন বুঝতে পারছে খুশি। খুশি মাহিরকে দেখে সামনে মুখ ফিরিয়ে নেয় আর মুচকি হাসে। মাহির ভুল করেছে জানে খুশি রেগেও আছে কিন্তু কেনো জানি খুশি মাহিরকে হেট করতে পারে না। যে মানুষ টার জন্য পাচ বছর ওয়েট করেছে তার দেওয়া লাস্ট চিঠি এখনো যত্নে রেখে দিয়েছে। তাতে কি করে হেট করবে খুশি? খুশির এখন একটাই কাজ মাহির তার সঙ্গে এমন ব্যাবহার কেনো করছে তা জানার।

খুশি এতো কথা ভাবতে ব্যাস্ত তখন পাস থেকে মাহির বলে উঠে।

“এতো রাত করে বাড়ি ফেরার মানে কি?

আচমকা পাস থেকে মাহিরের কথা শুনে চমকে যায় খুশি। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে।

” এটা আমার রোজকার কাজ।

“কাজ করতে হবে না তোমাকে।

“কাজ না করলে সংসার চলবে কি করে?

” কেনো তোমার স্টুপিড বাপ কি জন্য আছে?

মাহিরের কথায় থমকে দাঁড়ালো খুশি, মাহিরের দিকে তিক্ষনো বৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে খুশি। খুশির এভাবে তাকানো দেখে মাহির বলে।

“এভাবে তাকানোর কি আছে যেটা সত্যি সেটাই বলেছি।

” দোয়া করে আপনি এখান থেকে চলে যান মিস্টার মাহির। (কান্না জড়িত গলায়)

“আমি তোমার হাজবান্ড লাগি আর তোমাকে সেইফ বাড়িতে পৌচে দেওয়া আমার করতব্ব।

” বউয়ের বাবা কেও সম্মান করা আপনার কতব্বের মধ্যে পরে মিস্টার মাহির।(রাগ নিয়ে বলে)

“ওহ এই কারণে রাগ তবে তোমার বাপ যা করেছে তাতে তার প্রতি আমার সম্মান আসে না।

” কি করেছে আমার আব্বু?

“সেটা তোমার আব্বু কেই জিজ্ঞেস করে নিও।

” উনি বেচে নেই দুই বছর আগে মারা গেছে। (কান্না করে বলে খুশি)

খুশির কথায় মাহির এবার বেশ অবাকই হলো,, খুশির আব্বু মারা গেছে আর এটা সে জানতো না। খুশির আব্বু মাহির ও মাহিরের আব্বু কে অনেক অপমান করেছে কিন্তু তার মানে এই না যে মরা মানুষ টাকে অসাম্মান করবে মাহির। মাহির গিলতি ফিল করে আর খুশি কে সরি বলতে গেলে খুশি নিজে বলে।

“আমি চলে এসেছি আপনি এবার আস্তে পারেন মিস্টার মাহির।

মাহির আর সরি বলার সুজগ পেলো না তার আগেই খুশি চলে গেলো । মাহিরের খারাপ লাগছে খুশির সামনে খুশির মরা আব্বুকে অসম্মান করে কথা বলেছে সে।

মাহির তার ড্রাইভার কে ফোন করে আস্তে বলে, খুশি রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই খুশির পিছু নেই মাহির। খুশিকে বুঝতেই দেয়নি মাহির তার পিছনে হটাৎ ছেলেগুলো কে দেখে একটু এগিয়ে আসে মাহির যাতে ছেলেগুলো বিরক্ত না করতে পারে খুশিকে।। মাহির গাড়ি তে বসে ডুপ দেয় অতীতে।

অতীত,,,,,
মাহির গ্রাম ঘুরার জন্য আবার বের হতেই চোখে পরে লাল ড্রেশ পরা খুশিকে। আজও অনেক ভালো মেয়ের সঙ্গে কি জেনো খেলছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মাহির তাদের কাছে যেতেই বাকি সব দৌড়ে চলে যায় খুশি ও যেতে নিলে মাহির খুশির হাত ধরে নেই। খুশি কাদো কাদো হয়ে বলে।

” ছেরে দাও প্লিজ আমি আর কখনো তোমাদের গাছে আম চুরি করবো না।

“আমি কি করে বিশ্বাস করবো তুমি আর আম চুরি করবে না?

” সত্যি বলছি রামু কাকার চুলের কসম।

“কে রামু কাকা?(মাহির প্রশ্ন করে)

” ওই যে সেদিন আমাদের তারা করছিলো ওইটা।

মাহির একটু ভেবে মনে করার চেষ্টা করে বলে।

“তার তো চুল ই নেই তুমি কসম খেলে কি করে?(মাহির রাগি ভাব নিয়ে বলে)

” চুল নেই না?আচ্ছা তাহলে আপনার চুলের কসম আপনার তো অনেক সুন্দর চুল।

“থাক আর কসম খেতে হবে না আমি আমার চুল হারাতে চাইনা।

” এবার হাত টা ছারুন।

“পালিয়ে যাবে না তো?

” আপনি আপনার দাদুর কাছে নিয়ে যাবেন না তো?

“না।

” আচ্ছা তাহলে পালাবো না পাক্কা।

মাহির হাত ছেরে দেয় আর বলে।

“কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?

” নাইন

“পিচ্চি!

” না আমি মটেও পিচ্চি না আমি অনেক বড়ো।

“তাই নাকি,, তুমি এই গ্রামের তাহলে তো পুরো গ্রাম চিনো তুমি?

” হ্যাঁ আমি পুরো গ্রাম চিনি আপনি ঘুরবেন গ্রাম?

“হুম কিন্তু আগে তুমি টাই ভালো ছিলো এখন আপনি করে এটা মটেও ভালো লাগছে না, তুমি করে বলো।

” আচ্ছা তুমি করেই বলবো, তবে রামপুর এই গ্রামেই শুধু কিমা বরধো না। রামপুর অনেক বড়ো একটা শহর এই রামপুরে আছে অনেক লুকানো ঐতিহাসিক জিনিস। আমরা রামপুরের গ্রাম সাইডে বাংগালিদের গ্রামে থাকি। রামপুরের বেশির ভাগই হিন্দি ব্যাবহার কারি বাংলা খুব কম বললেই চলে।

“কাল তাহলে যায় ঘুরতে?(মাহির)

“ঠিক আছে আপনি কাল সকাল ৮ টাই চলে আসবেন আমি আপনার গাইড হবো ওকে?

” পিচ্চি মেয়ে হবে আমার গাইড?

“আর একবার পিচ্চি বললে আপনাকে ঘুরতে নিয়ে যাবো না।

” ওকে ওকে সরি আর হবে না, ওকে তাহলে কাল দেখা হচ্ছে।

দুই জনে দুই দিকে চলে যায়। কাল রামপুর শহর ঘুরে দেখবে। আপনাদের ও রামপুর শহর ঘুরাবো এখন টাটা।🙆‍♀️

চলবে?

(রিচেক করা হয়নি, বানান ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)