নেশাময় ভালোবাসার আসক্তি পর্ব-১৭+১৮

0
103

#নেশাময়_ভালোবাসার_আসক্তি
#পর্ব -১৭
#নীলাম্বরী_সেন_রাধিকা

প্রায় অনেকক্ষন পেরিয়ে যাওয়ার পর মেঘা বের হয়ে আসলো। আদ্রিয়ান কে রুমে দেখতে না পেয়ে সস্থির নিশ্বাস ফেললো। এতক্ষন নিজের ফর্মে ছিলো এখন নরমাল বিহেভ করতে হবে । নাহলে আদ্রিয়ান টের পেয়ে যেতে পারে। তাই তারাতারি কম্বল গায়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো। এখনও হালকা পেট ব্যাথা আছে।

এসব ভাবতে ভাবতেই দেখলো আদ্রিয়ান হাতে স্যুপ এর বাটি নিয়ে হাজির হলো। সাথে জুস, ফল। এসব দেখেই মেঘা নাক সিটকালো।

“উঠে জলদি এসব ফিনিশ করো।এরপর মেডিসিন আছে ওইগুলোও খেতে হবে।

“আমার এখন খিদে নেই। আর এইসব খাবার আমি খাবো না।

“তোমার উত্তর চাইনি আমি, খেতে বলেছি মানে খেতে হবে।

“কিন্তু আমার পেটে তো খিদে নেই জোর করে খাবো নাকি আজব!!

বলেই জিহ্বা তে কামড় দিলো। আজ কিসব ব্যাবহার করছে। আদ্রিয়ান মেঘার কথাই কোনো ভ্রুক্ষেপ করলো না। বেডে মেঘার পাশে বসে তাকে উঠার জন্য ইশারা করলো। মেঘাও উঠে বসলো। কারণ আদ্রিয়ান এর চোখ গরম করা মানেই মেঘার সব সাহস ফুস। আদ্রিয়ান মেঘাকে খাইয়ে দিতে লাগলো। আর মেঘা আদ্রিয়ান এর দিকে তাকিয়ে থাকলো। কতদিন পর লোকটি কে মন ভরে দেখছে। অনেকদিন হলো এতো কাছে থেকে দেখা হয়নি। অবশ্য আগে তো মন চাইতো না কিন্তু এখন মন বড্ড অশান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু না তাকেও তো শক্ত হতে হবে। নিজের কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। ভেবে চোখ নামিয়ে খেতে লাগলো। এইদিকে আদ্রিয়ান মেঘা কে দেখছে। এই হঠাৎ করেই চোখের সংযুক্তি হলো আর এখন লজ্জায় চোখ নামিয়ে রাখলো। অবশেষে তার পরীর মন নিজের করতে পেরেছে। এখন শুধু মেঘার মুখে শিকার করার বাকি।

________________________

মানবশুণ্য রাস্তায় খুব স্পিডে চলছে কালো ও নীল রঙের দুইটি বাইক। একে অপরকে পাল্লা দিয়ে চলছে। যেনো হার জিতের লড়াই চলছে। এক পর্যায়ে কালো বাইক টি জিতলো। আর নীল বাইক টি থামলো এর পরপরই। প্রথম বাইক এর ব্যাক্তিটি নেমে হেলমেট খুলে নিজের সিল্কি চুল গুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করে হালকা হেসে পিছনের ব্যাক্তিটির জন্য অপেক্ষা করলো

পিছনের ব্যাক্তিটি হেলমেট খুলতেই রেশমি সোনালী চুল গুলো আস্তে আস্তে গড়িয়ে পড়লো পিট জুড়ে। চোখের মধ্যে আক্ষেপ নিয়ে সামনের ব্যাক্তি টির দিকে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি নেমে হেলমেট টি নিক্ষেপ করলো। ওমনিই সামনের ব্যাক্তি টি ক্যাচ করে নিলো

“দিস ইজ নট ফেয়ার ভাই। তুমি আজকেও আমাকে হারিয়ে দিলে।

“তুই যদি আমাকে হারাতে না পারিস এতে আমি কি করতে পারি বল। আর জানিসই তো হারতে আমি একদম পছন্দ করিনা।

“উফ তুমিও না ভাই,, যায় হোক এত বছর পর বাংলাদেশে এসে মনটাই ভালো হয়ে গেছে। থ্যাংক গড এক্সাম টা শেষ হয়েছিল। নইলে তো মম ডেড আসতেই দিতো না।

“তো ক্রেডিট টা কার?

বলেই ছেলেটি ভ্রু কুচকে তাকালো

“অবিয়াসলি তোমার ভাই। তুমি যদি রাজি না করাতে তাহলে কি আসতে দিতো। আচ্ছা তুমি তো এখানে কোনো এক কাজে এসেছিলে। তোমার কাজ কদ দূর?

ছেলেটি আকাশের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে চোখ বন্ধ করে কারো প্রতিচ্ছবি দেখলো। সেই প্রতিচ্ছবি তে ভেসে উঠলো কারো মায়াবী মুখশ্রী। যার জন্য এত দূর আসা।আদো কি সফল হবে ইচ্ছে নাকি,,

“কি হলো ভাই?

“অনেকটায় এগিয়েছে। এখন শুধু কাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তি টির দেখা পেতে বাকি

মেয়েটিও ভাইয়ের কথাই সম্মতি জানালো। এরপর দুইজনই কিছুক্ষন ওভার ব্রিজ এর উপর থেকে আবার নিজেদের গন্তব্যে চলে গেলো। এরা দুইজন হলো ভাইবোন। লন্ডনেই তাদের বাসস্থান। ভাই এর নাম নিদ্র খান আর বোন নিশি খান। নিদ্র একজন সফল বিসনেজ মেন আর মাফিয়া ট্যাগও সাথে নিয়ে আছে। নিশি এইবার ভার্সিটি শেষ করেছে।

_____________________

আজকে মেঘাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হবে। ডক্টরের প্রেসক্রাইব করা টেস্ট গুলো করতে। আদ্রিয়ান এখন মেঘাকে তেমন ইগনোর না করলেও দূরত্ব বজায় রেখে চলে। মেঘাকে রেডি হয়ে জলদি নিচে আসার জন্য বলা হলো। দশ মিনিটের মধ্যেই মেঘা চলে আসলো। হিজাব আর নরমাল একটি থ্রী পিস পড়ে। আদ্রিয়ান মেঘার দিকে তাকিয়েই সামনে হাটা শুরু করলো। মেঘাও আদ্রিয়ান এর পিছু পিছু গেলো। গাড়িতে দুই জন উঠলে ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দিলো। অনেক দিন পর বাইরের আলোড়ন দেখে মেঘা খুশি হয়ে গেলো। ওর কখনোই বন্ধী জীবন পছন্দ নয়। মুক্ত পাখির মত প্রকৃতি দেখতে পছন্দ করে। করবেই নাইবা কেনো তার আব্বু তো তাকে সাবলম্বী হওয়া শিখিয়েছে। প্রত্যেক মুহুর্ত ফেস করতে শিখিয়েছে।

“কাচ টা একটু নামিয়ে দেননা।

“এই অসময়ে ঠান্ডা আবহাওয়ায় অসুস্থ হতে চাইছো কি? তোমার পিছনে সারাক্ষণ পরে থাকলেই তো হবে না। তুমি ছাড়াও আমার অনেক ইম্পর্ট্যান্ট কাজ আছে

আদ্রিয়ান এর এরূপ কথা শুনে মেঘার মুখের খুশির আলোড়ন টা নিমিষেই উধাও হয়ে গেল। আদ্রিয়ান এর কথায় খুবই কষ্ট পেলো। তাকে তো আর বলেনি সে অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা করতে। নিজে নিজে চিকিৎসা করবে আর এখন সেই কাজের খোটাও দিয়ে দিলো। মেঘার প্রচন্ড রাগ উঠছে নিজের প্রতি।

“ড্রাইভার আংকেল গাড়ি বাড়ির দিকে নিয়ে যান।

“গাড়ি নিজ গন্তব্যে তেই যাবে

“কিন্তু আমি সেই গন্তব্য যাবো না

“তোমার মতামত তো জানতে চাইনি আমি। তাই চুপচাপ বসে থাকো।

আদ্রিয়ান এর কথাই আর কিছু বলতে পারলো না। বলেও লাভ নেই। তাই চুপচাপ মন খারাপ করে ঠোঁট ফুলিয়ে বসে থাকলো। আদ্রিয়ান এর মেজাজ টা আজকে কিছুটা উগ্র। কারণ আজকে ড্রাগন কিং এর লোকেরা কিছু মেয়ে নৌপথে বাইরে পাচার করা হবে। এই গ্যাং যত ধরনের বাজে কাজ আছে তাই করে। কিন্তু এর প্রধান লিডার এর সন্ধান এখনও পাইনি আদ্রিয়ান। তাই কাজ গুলো খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। যার নিদারুণ মেঘার সাথে ব্যাবহার এর কথা মাথাতেও আসেনি।

কিছুক্ষন পরই তারা হসপিটালে পৌঁছে গেলো। এরপর মেঘার যাবতীয় টেস্ট করানো হলো। এতক্ষন মেঘা মন খারাপ করে থাকলেও কিছু একটা মনে পড়ে গেলো। আদ্রিয়ান যখন মেঘাকে নিয়ে বের হবে তখনই মেঘা

“শুনেন,,

মেঘার ডাক শুনে পাশে তাকালো আদ্রিয়ান।

“আমি একটু ওয়াশরুমে যাবো।

“ঠিক আছে। আসো আমার সাথে

“না না আপনাকে আসতে হবে না। আমি নিজেই যেতে পারবো। আর লেডিস ওয়াশরুমে আপনি গিয়ে কি করবেন

মেঘার কথা শুনে আদ্রিয়ান সরু দৃষ্টিতে তাকালো। এরপর সম্মতি দিলে মেঘা তাড়াতাড়ি অপজিটে গিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো। আর আদ্রিয়ান ফোনে কিছু অসমাপ্ত কাজ করতে লাগলো। যে করেই হোক মেয়ে গুলোকে বাঁচাতে হবে। আদ্রিয়ান মেয়েদের যথেষ্ট রেসপেক্ট করে। আর নারী ও শিশু পাচার করা আদ্রিয়ান শুনলেও গায়ের র*ক্ত গরম হয়ে যায়। তাই যেখানেই এসব খবর পাই তখনই তাদের উচিৎ শায়েস্তা করবে।

মেঘা ওয়াশরুমে গিয়েই দেখলো ঐখানে আগে থেকেই একটি প্যাকেট রাখা। সেই প্যাকেট টি নিয়ে তাড়াতাড়ি ঢুকে প্যাকেটের ভিতরে থাকা বোরকা টা পড়ে নিলো। এরপর আদ্রিয়ান আর গার্ড দের ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে গেলো। অবশ্য জান হাতে নিয়ে বের হয়েছে। যার জন্য এতো কষ্ট করে এত কিছু করলো সেই কাজই যদি নাহয় তাহলে সবই বৃথা। এসব ভাবতে ভাবতে তাড়াতাড়ি দুই তলায় উঠে ২০৬ নম্বর রুমে গেলো। যেখানে তার কাঙ্ক্ষিত ব্যাক্তিটি অপেক্ষা করে আছে তার জন্য।

রুমে ঢুকেই সেই ব্যাক্তিটি কে দেখতে পেলো আর তাড়াতাড়ি গিয়ে তার বুকে পড়লো। ব্যাক্তিটিও সাদরে তার মাথায় হাত বুলাতে লাগলো। অনেকদিন পর প্রিয় মানুষ টাকে স্পর্শ করতে পারছে।

#চলবে_কি?

#নেশাময়_ভালোবাসার_আসক্তি
#পর্ব -১৮
#নীলাম্বরী_সেন_রাধিকা

বন্ধ কারাগারের মত কোনো এক বন্ধী রুমে অবিরাম ভাবে অনেক মেয়ের কান্না শুনা যাচ্ছে। সাথে শুনা যাচ্ছে কারো কারো গুঙ্গানির শব্দ। কেমন যেনো হালকা আলোর মাঝে কত গুলো নিষ্পাপ জান বাঁচার জন্য চটপট করছে। কিছুক্ষন পর হয়তো এদেরকে নৌপথে চালনা করা হবে। এদের মধ্যে আরেকজনও আছে যাকে কিছুক্ষন আগেই আনা হয়েছে। কড়া ওষুধের ড্রাগস দেওয়াতে তার অবস্থা এখন প্রায় বেহুশের মতো। সে টেরও পাচ্ছে না তার সাথে কি হতে যাচ্ছে।

কিছুক্ষন পর রুমের দরজা খুলে দুই তিন জন গার্ড ভেতরে ঢুকে তাদের সবার উপর রাইফেল নিক্ষেপ করে বাইরে সিরিয়াল ভাবে যাওয়ার নির্দেশ দিলো। মেয়েরাও ভয়ে যাওয়া শুরু করলো। না গেলে হয়তো তাদের আবার মারধর করবে। অসহনীয় যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না। সবাই যখন বের হয়ে যায় তখন একটি মেয়ে এসে নিচে পড়ে থাকা মেয়েটিকে ডাক দেই কিন্তু মেয়েটির তেমন কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া গেলো না। যখন কোনো ভাবে উঠানো সম্ভব হচ্ছে না তখন মেয়েটি কে ওই গার্ড দের মধ্যে একজন এসে মেয়েটিকে ধমক দিয়ে যেতে বললো। মেয়েটিও চলে গেলো অন্য মেয়ে গুলোর সাথে।

কিরে মাইয়াডা তো এহনো উঠলো না

ভাই, ডোজ মনে হয় বেশি দিইয়া ফালাইছি। তানা হইলে এতক্ষন তো বেঁহুশ থাহার কথা না

যায় কো মাইয়াডা কিন্তু সেই মা*ল। এইডারে দেখলে ভালই টাকা পাইবো বসে। কি বলোস?

হরে, হাচা কথা কৌঁছস।

বলেই গার্ড গুলো মেয়েটাকে তুলে নিলো। এরপর কাঙ্ক্ষিত মেয়ে গণনার রুমে নিয়ে গেলাম যেখানে ফাইনাল বাছাই করে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হবে।

__________________________

আদ্রিয়ান এর রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। এক তো পাচার এর ব্যাপার টা সাথে মেঘার গায়েপ হওয়ার জন্য। আজ তার অসতর্কতার জন্য তার জান তার কাছে নেই। সাথে গার্ড নিয়েও আসেনি। যার জন্য সব কিছুই তার কাছে এখন বিষাক্ত মনে হচ্ছে। ইচ্ছে করছে সব কিছু ধ্বংস করে দিতে।

মেঘা যখন ওয়াশরুমে গেলো তখন আদ্রিয়ান ফোন কিছু ইনফরমেশন কালেক্ট করছিলো। এরপর সেসব করার মধ্যেই প্রায় অনেক্ষন সময় হয়ে যায়। যখন খেয়াল হয় যে প্রায় ৩০ মিনিটের উপরে হয়েছে কিন্তু মেঘা আসেনি। তখনই আদ্রিয়ান ফোন পকেটে রেখে মহিলা ওয়াশরুমে বাইরে দাঁড়িয়ে মেঘার নাম ধরে ডাকা শুরু করে কিন্তু কেউ সাড়া দেইনা। তাই ভেতরে ঢুকে চেক করে যে কেউই নেই সেখানে। আদ্রিয়ান ভ্রু কুচকে কপালে স্লাইট করতে থাকে। এরপর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আশেপাশে গিয়ে খুঁজেও যখন মেঘার কোনো হদিস পাইনা তখনই কিছুটা খটকা লাগে। যদি তার মনের সন্দেহ সঠিক হয় তাহলে মেঘার জন্য কি ওয়েট করছে তা শুধু আদ্রিয়ানই জানে।

খুঁজ করতে করতে আদ্রিয়ান তার গার্ড দের খবর দিয়ে দেই। সাথে আসাফ আর তার প্রিয় গার্ড রুশকেও। পুরো হসপিটাল কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘিরে ফেলা হয়েছে। এতো গার্ড দেখে হসপিটাল এর সবাই অবাক হয়েছে সাথে ভয়ও পাচ্ছে অনেকে। কি হচ্ছে কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না কারোরই।

আসাফ আর রুশ সাথে কয়েক জন গার্ড মিলে চারদিকে খুঁজলেও যখন মেঘার কোনো চিহ্নও পেলো না তখন রুশ সিকিউরিটি রুমে গেলো। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখানোর জন্য সেখানের গার্ড রা রাজি হচ্ছিল না। তখন রুশের সাথে থাকা গার্ড রা তাদের ব*ন্ধুক দেখিয়ে ফুটেজ কালেক্ট করে। সেখানে সব ফুটেজ থাকলেও মেঘার ওয়াশরুমে যাওয়ার ফুটেজ টাই কালেক্ট করতে পেরেছে। কিন্তু আসার সময়ের ফুটেজ তো দূরের কথা তখন কার সময়ের সব ব্ল্যাক দেখাচ্ছিল। এরপর তারপরের আরো কয়েক টা ফুটেজ ব্লাঙ্ক। মনে হচ্ছে কেউ ইচ্ছে করে ফুটেজ গুলো ডিলেট করেছে। কিন্তু কে?

সব কিছুই আদ্রিয়ান কে হস্তান্তর করা হলে আদ্রিয়ান এর চোখের মণি রক্ত রঞ্জিত ধারণ করে। সামনে থাকা টেবিল টি খুবই জোরে লা*তি মা*রে। আর তাতে থাকা জিনিস গুলো সব কিছুই ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়।

“যেই এই কাজটি করেছে সে অত্যন্ত বুদ্ধি নিয়েই করেছে। বলতে হবে আমাকে টক্কর দেওয়ার মতোই ছিলো। কিন্তু সে আমার জানের দিকে হাত বাড়িয়ে একদম ঠিক করেনি। তার পরিণাম যে কতটা ভয়ানক হবে সে চিন্তাও করতে পারছে না। রুশ তাড়াতাড়ি আমার স্পেশাল গার্ড দের খবর দাও। আর গাড়ি বের করো।”

এরপর আদ্রিয়ান গাড়ি করে নিজের গন্তব্যে যেতে থাকে। আর রাগে ফুঁসতে থাকে। হালকা ভয়ও পাচ্ছে যদি তার স্নিগ্ধ পরীর কোনো ক্ষতি করে দেই। না না এসব কিছুই হবে না। তার জনের কিছু হতে দেবেও না।

________________________

কোনো এক আলিশান বেড রুমে শুয়ে আছে মেঘা। যার কোনো হুশ নেই। বেঘোরে বেহুশের মত ঘুমোচ্ছে। আর পাশে রকিং চেয়ারে হেলান দিয়ে তাকে নেষালো চোখে দেখার তৃপ্তি মিটাচ্ছে। এই প্রথম তাকে সামনে থেকে দেখছে। এতদিন যাকে দেখার জন্য এতো চেষ্টা করলো সে কিনা তারই আন্ডারের অন্ধকার রাজ্য ছিলো। সে যদি সময় মত না দেখতো তাহলেতো তার মায়াবতী কোনো এক অন্ধকার রাজ্যে গিয়ে তলিয়ে যেতো। ভেবেই নিজের প্রতি রাগ বাড়ছে। সাথে সেই গার্ড দের উপরও। অবশ্য সেই গার্ড গুলো আর বেঁচে নেই। খুবই নির্মম ভাবে তাদের মারা হয়েছে।

কারণ টা হলো তাদের ময়লা হাতে তার মায়াবতীকে স্পর্শ করেছে সাথে কুনজরে দেখেছে। তাই তাদের অবস্থান টাও দেখিয়ে দিয়েছে সে। বলেই বাকা হাসলো। এরপর রকিং চেয়ার থেকে উঠে মেঘার পাশে বসে সামনের চুল গুলো ঠিক করে দিলো। যা এতক্ষন চেহারার সামনে অবাধ্য ভাবে হালকা বাতাসে উড়ছিল।

“যাকে সামনে থেকে দেখার জন্য এত দূর থেকে পাড়ি দিলাম। তাকেই দেখার সাধ্য মিলেনি আমার এতদিন। কিন্তু ভাগ্যের কি বিড়ম্বনা। সে আমার রাজ্য আগে থেকেই এসে বসে আছে। অবশ্য এটাতে হয়তো তোমার ভালো হয়নি তাইনা মায়াবতী? ওই কু*** গুলো তোমাকে ছুঁয়েছে। ওদের নোংরা হাত তোমার পবিত্রতা কে নষ্ট করেছে। তাইনা? তুমি একদম চিন্তা করো না ওদের কে আমি একদম ওদের যোগ্য ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছি”

বলেই সাইকো দের মত ঘাড় বাকা করে হাসতে লাগলো।

এখন তো তুমি আমার খাঁচায়। আর যেতে দেবো না তোমায়। আমার খাঁচা ভাঙ্গা এত সহজ নয় মায়াবতী। সারাজীবন তোমার মায়ায় থেকেই কাটাতে চাই গো। আর ওই আদ্রিয়ান কেও তো দেখাতে চাই তার অবস্থান কোথায়।

এসব বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আর রেখো গেলো ঘুমন্ত মেঘাকে। যে কিনা সব কিছু থেকেই অজ্ঞাত। তাকে ঘিরে হচ্ছে এতো কিছু কিন্তু সে তার মতই ঘুমোচ্ছে। কেউ বিজয়ের হাসি হাসছে তো কেউ প্রিয় জনের খুজার জন্য তাগাদা দিচ্ছে।

__________________________

স্যার, কিছু খবর কালেক্ট করতে পেরেছি

মেমের বিষয়ে বলেই কিছু কাগজ আর কিছু ছবি দিলো। যেখানে দেখা যাচ্ছে মেঘা বোরকা পরে ২০৩ নম্বর রুমে ঢুকলো। এরপর এর ফুটেজ নেই। এরপর মেডিক্যালের বাইরে কোনো এক ব্যাক্তির সাথে মেঘাকে দেখা যাচ্ছিল। এরপর আর কিছু নেই

স্যার আমার মনে হচ্ছে মেম নিজের থেকেই পালিয়েছে। ছবিতে তো তাই বলছে। তানাহলে আপনি ভাবুন, এত কিছু তো প্ল্যান ছাড়া সম্ভব না মেমের গায়েব হওয়াটা।

আদ্রিয়ান সব শুনে পেপার ওয়েট টি দূরে দেয়ালে ছুঁড়ে মারল। এরপর সবাইকে বের হয়ে যেতে বললে আদ্রিয়ান দরজা লক করে দেই। এরপর ফুটেজের ছবিটা সামনে এনে ক্রুধমিশ্রিত চোখে তাকিয়ে বাকা হাসি হাসলো।

” আমার থেকে পালিয়ে ঠিক করনি জান। আমার নরম কিছু যখন তোমার এই পদক্ষেপ নিয়েছে তখন আমাকে আমার ফর্মে ফিরতে হবে। খুব সাহস দেখিয়ে ফেলেছো গো জান। এত সাহস যে ভালো না জান। জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ এরপরের সব কিছুর জন্য তুমি দায়ী হবে। মাইন্ড ইট”

#চলবে_কি?