নোলক ২ পর্ব-০২ এবং বোনাস পর্ব

0
87

#নোলক_২
পর্ব ২
#তানিয়া_মেধা
সকাল ঘুম থেকে উঠে যায় মুনিরা। নতুন বাড়ি ঘুম খুব একটা ভালো হয়নি। নিজের শাড়ি ঠিক করে কলপাড়ে চলে যায় ফ্রেশ হতে। তখন তার শ্বশুড়ি আসে সেখানে। আফসানা বেগম গম্ভীর মুখে মুনিরাকে বলে,’ হাত মুখ ধুয়ে আমার রুমে আসো।’

মুনিরা মাথা নেড়ে বলে,’ আচ্ছা আম্মা।’

আফসানা বেগম চলে যান সেখান থেকে। মুনিরা হাতমুখ ধুয়ে গামছা দিয়ে মুছে যায় আফসানা বেগমের ঘরে। আফসানা বেগম তখন বসে পান চিবচ্ছিলেন। মুনিরাকে দেখে ইশারায় পাশে এসে বসতে বললেন। মুনিরা মুচকি হেসে আফসানা বেগম এর পাশে গিয়ে বসে। আফসানা বেগম নিজের পাশে রাখা বক্স থেকে একটা নোলক বের করে মুনিরার নাকে পড়িয়ে দেয়। তারপর মুনিরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ এটা আমাদের এই বংশের নিয়ম পুত্রবধূকে নোলক পড়িয়ে বউয়ের সম্মান দেওয়া।’

মুনিরা হাসে একটু। একবার নোলকটায় হাত বুলিয়ে দেখে নেয়। শ্বাশুড়ির রুম থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায় নিজের ঘরে। স্বামীকে এটা দেখাবে বলে। নিজ কক্ষে ঢুকে দেখে দিলোয়ার হিসাব করছে। মুনিরা হাসি হাসি মুখ করে তার পাশে গিয়ে বসে বলে,’ দেখুন আম্মা আমাকে এইটা দিছে। ‘

মুনিরার কন্ঠ কানে আসতেই বিরক্তিতে চোখমুখ কুচকে ফেলে দিলোয়ার। মুনিরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ এতে এতো খুশি হওয়ার কি আছে?’

মুনিরা মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে, ‘ ওমা খুশি হবো নাহ উপহার পেয়ে।’

এবার দিলোয়ার বেশ খড়া গলায় বলে,’ যা খুশি করো তবু আমাকে বিরক্ত করো নাহ।’

দিলোয়ারের এমন কথায় ব্যতিত হয় মুনিরা। শুধু নিজের খুশিটাই তো বলতে এসেছিল। এটা কি খুব বড় ভুল হয়ে গেছে। দুঃখী মনেই নিজের ঘর ত্যাগ করে।

এ বাড়িতে তেমন কোন কাজ করার মতো পায় নাহ মুনিরা। কারণ কাজ করার জন্য অনেক লেক রাখা হয়েছে৷ তাই মুনিরা মাথায় কাপড় দিয়ে চলপ যায় এ বাড়ির বাগানে। অনেকটা জায়গা নিয়ে বাগানটা তৈরি। বাগান দেখাশোনা করার জন্যও লোক রাখা হয়েছে৷ মুনিরা বাগানটা ঘুরে দেখে৷ এখন মনটা অনেকটা সতেজ লাগছে মন খারাপ কমে গেছে। কমবেই নাহ কেন এত সুন্দর বাগান দেখলে তো যে কারো মন ভালে হয়ে যাবে।

এভাবে সারা বাগান ঘুরছিল। তখন চোখের সামনে আসে একটা দৃশ্য। এটা দেখে তার সময় থেমে গেছিলো। কি করবে সে? বিয়ের পরেরদিনই এমন দৃশ্য কোন মেয়ে মেনে নিতে পারবে। তার স্বামী অন্য একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আছে। সহ্য হলো নাহ তার সেখান থেকে বেরিয়ে গেলো সে। নিজের রুমে বসে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে সে।

সারা দিন আর ঘর থেকে বের হলো নাহ মুনিরা। আফসানা বেগম কয়েকবার এসে দেখা করে গেল তার সাথে। সারাদিনে একবারও দিলোয়ার ঘরে আসার প্রয়োজন মনে করলো নাহ।

রাত তখন বাজে ১২ টা দিলোয়ার রুমে প্রবেশ করলো। মুনিরা তখনও একইভাবে বসে ছিল। দিলোয়ার মুনিরার দিকে এক নজর তাকিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো দিলোয়ারের চোখ বন্ধ হতেই মুনিরা প্রশ্ন করলো,’ কে সেই মেয়েটা?’

দিলোয়ারের চোখ খুলে গেল। উঠে বসে মুনিরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ মানে?’

মুনিরা সোজাসাপ্টা প্রশ্ন করলো, ‘ ভালোবাসেন অন্য কাউকে?’

দিলোয়ার বুঝলো মুনিরা আজ তাকে দেখে নিয়েছে। মুনিরার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ হ্যা বাসি আমি সাবিনাকে ভালোবাসি সে ছাড়া আর কারো জন্য আমার হৃদয়ে জায়গা নেই।’

মুনিরা নিজের চোখের পানি মুছে বলে,’ তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করলেন? ‘

দিলোয়ার বেপোরোয়া ভাবে উত্তর দিলো, ‘ মা জোর করছে তাই।’

মুনিরা হাসে। মা জোর করেছে তাই তার জীবনটা সে নষ্ট করে দিবে। তার জীবনটা কি এতটাই তুচ্ছ।

এতটুকু বলে মুনিরা দম নেয়। তার চোখে পানি টলমল করছে। পদ্ম উৎসুক নয়নে তাকিয়ে আছে পরে কি হয়েছে সেটা জানতে। মুনিরা নিজের চোখের পানি মুছে নেয়। পদ্মর দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ এক গ্লাস পানি এনে দাও।’

পদ্ম মাথা নেড়ে উঠে যায়। এক গ্লাস পানি এনে মুনিরাকে দেয়। মুনিরা হালকা হেসে পানি ঢকঢক করে পুরোটা শেষ করে। পদ্ম মুনিরার সামনের চেয়ারে বসে বলে,’ এরপর কি হয়েছে মা?’

মুনিরা আবারও দম নিয়ে বলতে শুরু করে।

দেখতে এক মাস কেটে যায়। দিলোয়ার এখন মুনিরার প্রতি দুর্বল হয়েছে। তাদের সম্পর্কও এখন আট দশটা স্বামী-স্ত্রীর মতো। সকাল থেকে মুনিরা বমি করে যাচ্ছে। কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করছে নাহ খাবারের ঘ্রাণ নাকে যেতেই গা গুলিয়ে আসে তার। আফসানা বেগম তার এগুলো লক্ষ্য করে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে। সেখানে জানতে পারে সে গর্ভবতী হয়েছে। তার এ খবর শুনে খুশি হন তার শ্বাশুড়ি। সেও কম খুশি হয় নি। মা হওয়া তো একটা নারীর সবচেয়ে আনন্দের।

আফসানা বেগম বাড়িতে আসার সময় মিষ্টি নিয়ে আসে। তার নাতি আসবে সে মিষ্টি বিতরণ করবে না তা হয় নাকি।

এদিকে মুনিরা অপেক্ষা করছে দিলোয়ারের। দিলোয়ার আসলে তাকে কিভাবে এটা বলবে এসব নিয়ে হাজারও কল্পনা করছে সে। কিন্তু সেদিনও দিলোয়ার বাড়ি রাত ১০ টায়।

তবে সেদিন দিলেয়ার একা আসেনি তার হাত ধরে বধূ সেজে এসেছিল সাবিনা। বেশ অবাক হয়েছিল মুনিরা সাবিনাকে এই সাঝে এই বাড়িতে দেখে তাও আবার দিলোয়ারের পাশে। আফসানা বেগম এগিয়ে এসে ছেলের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে, ‘ এই মেয়ে এই বাড়িতে কি করছে দিলোয়ার?’

দিলোয়ার মাথা নত করে বলে, ‘ ওকে আমি বিয়ে করেছি মা। ‘

মুনিরার বুকটা ছ্যাত করে উঠে। এ সে কি শুনলো। আফসানা চিৎকার করে উঠে দিলোয়ারের দিকে তাকিয়ে বলে,’ কোন সাহসে এই মেয়েকে নিয়ে এই বাড়িতে আসছো?’

দিলোয়ার কিছু বলে নাহ মাথা নিচু করে থাকে। আফসানা বেগম গর্জে উঠে ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ তুমি এই মেয়েকে যেখান থেকে এনেছো সেখানে দিয়ে আসো।’

দিলোয়ার মথা নত করেই বলে,’ পারবো নাহ আমি ও আমার স্ত্রী। বেরিয়ে যেতে হলে আমিও সাথে চলে যাবো।’

আফসানা বেগম অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে যান। মুনিরা তার পিছনে দাড়িয়ে নিরবে চোখের জল ফেলছে। আফসানা বেগম ছেলের দিকে দ্বিগুণ তেজে বলে,’ ঐ মেয়েকেই যেহেতু দরকার তোর তাহলে মুনিরার কাছে কেন গেলি। বাচ্চাটার কি হবে?’

এতটুকু বলে চোখ নামিয়ে ফেলেন। কখনো কল্পনাতেও ভাবেন নি ছেলেকে এগুলো বলতে হবে মা হয়ে। দিলোয়ার বলে,’ বাচ্চা মানে?’

মুনিরা এবার চুপ থাকে নাহ। নিজের চোখের পানি মুছে বলে,’ হুম আপনার সন্তান বেড়ে উঠছে চমার গর্ভে। ‘

এবার সে আফসানা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে, ‘ আম্মা থাকতে দিন ওদের। সাবিনার গর্ভেও আপনার ছেলের সন্তান।’

এতটুকু বলে চলে যায় নিজের রুমে মুনিরা। আফসানা বেগম অবাক হয়ে তাকান। আজ শুধু তার অবাক হওয়ার পালা।

মুনিরা নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে কাঁদতে থাকে। পাশের টেবিলে পড়ে থাকা চিঠিটা হাতে নেয় যেখানে দিলোয়ার তাকে জানিয়েছে সাবিনার প্রতি সে এখনও দুর্বল এছাড়া তার সন্তান সাবিনার গর্ভে। এ কথা শুনে কোন মেয়েই স্বাভাবিক থাকতে পারে নাহ কিন্তু মুনিরা পেরেছে থাকতে স্বাভাবিক। মন মানতে চাইছে নাহ সাবিনাকে কিন্তু নিজের সন্তানের দিকে তাকিয়ে থেকে যাচ্ছে এ বাড়িতে। তার তো যাওয়ার আর তেমন বিশেষ কোন জায়গা নেই।

এতটুকু বলেই ঢুকরে কেঁদে উঠে মুনিরা। এবার পদ্মর চোখে জল। তার চোখের সামনেও ভেসে উঠে শুভ্রর দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার দৃশ্যটা। পদ্ম মুনিরাকে আটকায় নাহ। কান্না করুক মন হালকা হবে এতে। অনেক দিনের জমে থাকা কষ্ট বের হয়ে আসুক কান্নার মাধ্যমে।

চলবে

#নোলক_২
বোনাস পর্ব
#তানিয়া_মেধা

মুনিরার ঘুম নেই চোখে। সবার চোখে ঘুম থাকলেও সে ঘুমাতে পারছে নাহ। পেটে হাত দিয়ে সেদিক তাকিয়ে চোখের জল ফেলছে হয়তো ভ্রুণটাও কাঁদছে মায়ের সাথে। দুহাত দিয়ে পেটে জড়িয়ে নেয়। নিজ মনেই বলতে থাকে,’ এক দিকে তুই আসার খুশি অন্যদিকে তোর বাবার দেওয়া মরণ যন্ত্রণা দুটো মিলিয়ে ভীষণ পুড়াচ্ছে আমার। ‘

এগুলো বলে চিৎকার করে কেদে উঠে। তার চিৎকারে পাশের রুম থেকে ছুটে আসেন আফসানা বেগম। মুনিরা ফ্লোরে বসে কাঁদছে। আফসানা বেগম মুনিরাকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে। মুনিরা আফসানা বেগমের বুকে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে,’ আমার সাথেই কেন এমন হলো আম্মা?’

আফসানা বেগম জবাবে কি বলবেন বুঝতে পারলেন নাহ। সাবিনার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে যখন তার আসল রূপ জানতে পারে তখনই তিনি পছন্দ করেন মুনিরাকে। মেয়েটা গুণে রূপে সব দিকে দিয়ে ছিলো। এখন অনুশোচনা হচ্ছে মেয়েটার জীবনটা নষ্ট হয়ে গেছে।

মুনিরা নিজের মতো কাঁদছে তার কান্না দেখে বাড়ির সবার চোখে মায়া আর পানি দেখা দিলেও পানি ছিলো নাহ শুধু দিলোয়ারের চোখে আর সাবিমার চোখে ছিল পৈশাচিক শান্তি।

আযানের ধ্বনিতে এতটুকু বলে থেমে গেল মুনিরা। পদ্মও উঠে গেলো নামাজের সময় হয়ে গেছে নামাজ পড়ে তারপর বাকীটুকু শুনবে।

নামাজ পড়তে চলে যায় দুজনই তবে মুনিরা আসার সময় বলে,’ এখন আর এসো নাহ শুনতে রাতে এ ঘরে এসো বাকিটুকু বলবো।’

পদ্ম কিছু বলে নাহ বিনিময়ে মাথা নাড়ায়। দিলোয়ারের জন্য তার মনে থাকা সম্মানটা ভেঙে গেছে। কি করে পারলো বিয়ে করার পরও পরনারীর কাছে চাহিদা মেটাতে যেতে।

এগুলো ভেবে সে ওযু করতে চলে গেলো। ওযু করে নামাজ পড়ে নিলো। এরপর কুরআন নিয়ে বসলো। পদ্ম অনেক ছোট থাকতেই কুরআন পড়া শিখেছে। কিছুক্ষণ পড়ে কুরআন রেখে উঠতেই দরজা টেলে রুমে প্রবেশ করে শুভ্র। শুভ্র চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। কিন্তু পদ্ম সেদিক পাত্তা না দিয়ে বের হয়ে যেতে নিলেই তার হাত ধরে এক টানে নিজের কাছে নিয়ে যায়। পদ্ম বিরক্তির গলায় বলে,’ কি হচ্ছে কি ছাড়ুন আমায়।’

শুভ্র পদ্মকে নিজের সাথে আরও চেপে ধরে বলে, ‘ নাহ যেতে দিবো নাহ।আমার তোমাকে প্রয়োজন নিজের করে পেতে চাই।’

শুভ্রর কথা শুনে পদ্ম সোজাসাপ্টা জবাব দিলো,’ নিজের করে পেতে চান! ভয় পাচ্ছেন ছেড়ে যাবো আমি আপনার মতো স্বার্থপর নয় যে নিজের চাহিদা মেটাতে না পেরে বিয়ে করতে চলে যাবো। ‘

শুভ্র মাথা নিচু করে ফেলে। সত্যিই তো সে অনেক বড় অপরাধ করেছে। পদ্মকে ছেড়ে দেয় সে। পদ্ম ছাড়া পেয়ে আর এক সেকেন্ডও দাড়ায় না সেখানে চলে আসে সেখান থেকে।

পদ্ম সোজা চলে যায় মুনিরার রুমে। দিলোয়ার আর সাবিনা ফিরে এসেছে একটু আগে। পদ্মকে মুনিরার রুমে ঢুকতে দেখে সেও পিছন পিছন যায়। দরজায় কান পাততেই পদ্মর কথা কানে আসে সেখানে পদ্ম জোরে বলছে, ‘ দরজার পিছনে দাড়িয়ে মানুষের কথা শুনা ভালো অভ্যাস নয় কূটনী শ্বাশুড়ি। ‘

সাবিনা চমকায় পদ্ম জানলো কি করে সে এখানে দাড়িয়ে আছে। পরক্ষণেই আবার জ্বলে উঠে এটা শুনে যে তাকে কূটনী শ্বাশুড়ি বলেছে। কিন্তু কিছু বলে নাহ এর শোধ পরে নিবে ভেবে চলে যায় সেখান থেকে।

******
গভীর রাত হলো সবাই ঘুমিয়ে গেছে। ঘুমায়নি শুধু তিনজন। পদ্ম আর মুনিরা গেলো রুমের বারান্দায়। শুভ্র তাদের রুমের বাহিরে দাড়িয়ে। পদ্মকে দেখার জন্য সে ছটফট করছে। তাই একটা নজর তাকে দেখার জন্য ছুটে এসেছে তার কাছে কিন্তু পদ্ম দেখা মিললো নাহ উদাস হয়ে চলে যায় রুমে।

এদিকে মুনিরা বারান্দায় দাড়িয়ে আবারও বলতে শুরু করে

শুভ্র পেটে থাকাকালীন আমার সাথে কথা না বললেও খেয়াল রাখছিল দিলোয়ার। যখন সাত মাস পড়লো তখন তার দেশের বাহিরে যেতে হলো তিন বছরের জন্য। যেতে দিতে মন না চাইলেও যেতে দিতে হলো তাকে নয়তো ব্যবসার বিরাট লস হবে। ও চলে যাওয়ার নানা রকম ঘটনা ঘটতে থাকলো। রাতের আধারে কেউ আসতো এ বাড়িতে। এছাড়া আফসানা বেগম দিনকে দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

আফসানা বেগমের দেখাশোনা বাড়ির কাজের লোক আর মুনিরার করতে হয় সাবিনা আশে পাশেও যায় নাহ।

কিন্তু ঘটনা ঘটে এক রাতে। তখন দুজনেরই ৯ মাস চলছিল। খোদার যন্ত্রণায় হঠাৎই ঘুম ভেঙে যায় মুনিরার। কিছু খাবার উদ্দেশ্যে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়াতেই দেখে সাবিনার ঘর থেকে এক লোক বের হয়ে যাচ্ছে।

মুনিরা আড়ালে লুকিয়ে যায়। লোকটা চলে যেতেই সে বেরিয়ে আসে। এসে সাবিনার রুমে ঢুকে অবাক হয়ে যায়। মুনিরা কিছু বলতে নিবে তখনই সাবিনা উঠে এসে মুনিরাকে ধাক্কা মারে। মাটিতে পরার সাথে সাথেই মুনিরার ব্লিডিং হতে শুরু করে। মুনিরার চিৎকারে সবাই ছুটে আসে। সবাইকে আসতে দেখে সাবিনাও ব্যথায় চিৎকার করার নাটক করতে থাকে। সবাই দুজনকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মুনিরার যখন জ্ঞান ফিরে তখন তার পাশে একটা ফুটফুটে ছেলে বাবু দেখতে পায়। মুনিরা নিজের সন্তানের দিকে তাকিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসে।

এদিকে জানতে পারে সাবিনারও ছেলে সন্তান হয়েছে। এ খবর শুনে বেশ অবাক হয় কারণ সাবিনা তো,,,, কিন্তু কিছু বলে নাহ নিজের মনের কথা নিজের মাঝেই রেখে সবার সামনে খুশি হওয়ার নাটক করে। সত্যিটা সবার সামনে বের করতে হবে কিন্তু সেটা হুট করে নয় প্ল্যানিং করে করতে হবে।

চলবে