পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ পর্ব-০৭

0
6925

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -৭
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ অবাক হয়ে যায়। কেননা তার জানা মতে ফিহার বাড়ি তো এখানে নয়। কিন্তু ফিহার বন্ধুরা তো অন্য কথা বলছে। এদিকে ফিহা দেয় ভৌ দৌড়! কেননা আজকে তাকে পালাতেই হবে যেকরেই হোক। তার বন্ধুদের জন্য যে আর কতভাবে যে ফিহাকে ফাঁসতে হবে আল্লাহ জানে। পামকিন ও ফিহার পিছনে দৌড় দিতে যাবে তার আগেই ফারহাজ এসে পামকিন কে খপ করে ধরে ফেলে। টিউপ আর পটকা কিছুই বুঝতে পারছেনা। পামকিন ছুটার চেস্টা করছে কিন্তু সে ব্যর্থ। ফারহাজ
রাগে ফুঁশছে তার আর বুঝতে বাকি রইলো নাহ অই
পুচকি মেয়েটা তাকে বোকা বানিয়েছে।

সে পামকিন কে নিয়ে টিউপ আর পটকার কাছে গিয়ে বলে উঠে—

এইটা তোমাদের ফিহার পামকিন?

টিউপঃ হ্যা এইটা তো ফিহার ই পামকিন!
তাহলে অইদিকে ৩ং বাড়িটা কার?

পটকাঃ কার আবার আমাদের বন্ধু সিমির!

ফারহাজঃ ওহ আচ্ছা ওই পুচকি মেয়েটা তাহলে ইরিনাদের বাসায় থাকে!
ওকে তো এর উচিৎ শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো ফারহাজ মির্জাকে অইটুকু মেয়ে বোকা বানালো

(মনে মনে)

ফারহাজ কিছু না বলে পামকিন কে নিয়ে ভিতরে গেলো।

এদিকে টিউপ আর পটকা কিছুই বুঝতে পারলো নাহ।

তারাও ফিহার বাড়ির দিকে গেলো।

মিঃ রিক ও রিহা ফারহাজ এর দাদি আর মা এর সাথে কথা বলছেন!

ফারহাজ কে দেখে
ফারহাজ এর মা বলে উঠে—
ফারহাজ বাবা তোর হাতে এই খরগোশ কেন??

ফারহাজ কিছু বলবে তার আগেই বলে মিসেস রিহা বলে উঠে—

এটাতো পামকিন আমাদের ফিহার!

মিসেস প্রিয়াঃ ফিহা কে???

রিকাঃ আমাদের ফাতেমার মেয়ে!

ফারহাজের দাদিঃ ওহ হ্যা তোমাদের বাড়ির আশ্রিত ফাতেমার মেয়ে ফিহার???

আশ্রত শব্দ টা শুনে রিক কিংবা রিহার কারোই ভালো লাগেনি তা তাদের মুখ দেখেই স্পস্ট বুঝা যাচ্ছে।

রিকঃ ফাতেমা আমাদের বাড়ির আশ্রত নাহ আমার বোনের মতো সে!

তখনি ফাতেমা আসে।

সে সবাইকে সালাম দেয়।

রিহাঃ আরে ফাতেমা কোথায় ছিলে তুমি??

ফাতেমাঃ ফিহা স্কুল থেকে আসলো ওকে একটু খায়িয়ে দিয়ে আসলাম আজকে আবার ওর বন্ধুরাও এসেছে।

আরে ফারহাজ বাবা তুমি কেমন আছো???

ফারহাজঃ ভালো!

ওহ তাহলে অই পুচকি মেয়েটা ফাতেমা আন্টির মেয়ে।

যখন ও ৮ বছরের ছিলো তখন দেখেছিলাম।

এখন অনেক্টাও চেঞ্জ হয়ে গেছে তাই চিনতেই পারেনি।

কিন্তু এই পুচকি মেয়েটাই আমাকে বোকা বানিয়েছে এর শোধ আমি তুলবোই!

মিসেস প্রিয়াঃ ওহ আচ্ছা যার জন্য আসা আমাদের ইরিনা মা কোথায়???

রিহাঃ মনে হয় রেডি হচ্ছে!

ফাতেমা যাওতো গিয়ে ইরিনাকে নিয়ে আসো!

ফাতেমাঃ ঠিক আছে।

ফাতেমা যাবে তার আগেই ইরিনা চলে আসে।

সুন্দর তাতের একটি শাড়ি পড়ে এসেছে সে!

ফারহাজ মুগ্ধ হয়ে ইরিনার দিকে তাঁকিয়ে আছে।

সবাই ইরিনাকে মুগ্ধ হয়ে দেখে যাচ্ছে কেননা আজকে সত্যিই ইরিনাকে সুন্দর লাগছে!

মিসেস প্রিয়াঃ এইতো আমাদের ইরিনা মা আসো মা!

ইরিনা গিয়ে ফারহাজ এর দাদি আর মাকে সালাম করলো!

দাদিঃ এইযে দিদিভাই বসো বসো আমার পাশে বসো!

ইরিনা মুচকি হাঁসি দিয়ে মিসেস ইরার পাশে বসলো!

মিসেস প্রিয়াঃ কতটা সুন্দর লাগছেনা আমাদের ইরিনা মাকে!

ইরিনা ফারহাজ এর দিকে তাঁকায় ফারহাজ হাত দিয়ে ইশারা করে যে তাকে সুন্দর লাগছে!

ইরিনা লজ্জামাখা হাঁসি দিলো।

মিসেস প্রিয়াঃ ইরিনা যখন এসেই পড়েছে
শুভ কাজ করতে দেরী করতে নেই!

রিকঃ অবশ্যই! কিন্তু আংকেল( মিঃ রাইজাদা)
রাইহান( ফারহাজ এর বাবা)
উনারা আসলো না তো!

মিসেস ইরাঃ আগামী সপ্তাহে একেবারে পাকা কথা বলে যাবো তখনি উনারা আসবেন!

মিসেস প্রিয়াঃ আমরা তো শুধু ইরিনা মাকে দেখতে এসেছি! বিয়ে তো সেই কবে থেকেই ঠিক এখন শুধু আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকা কথা বলার পালা!

রিহাঃ কিরে ইরিনা যা ফারহাজ কে নিয়ে একটু ঘুরে আয়!

ইরিনা ফারহাজ কে নিয়ে বাগানের দিকে যায়।

আর সবাই এদিকে গল্প করতে থাকে!

ফারহাজ ইরিনার হাত টা ধরে নিজের কাছে টেনে বলে উঠে—

ফাইনালি তুমি এইবার আমার হচ্ছো!

ইরিনাঃ আমি তো সেই কবে থেকেই তোমার!
ভালোবাসি!

ফারহাজ মুচকি হাঁসি দেয়!

ইরিনাঃ আমার উত্তর টা কিন্তু পেলাম নাহ সাহেব!

ফারহাজঃ কিন্তু উত্তর দিতে হয়না বুঝে নিতেই হয়!

পামকিন এখনো ফারহাজ এর হাতে।

সে যথাসম্ভব ছুটার চেস্টা করছে।

ইরিনাঃ ফারহাজ ওকে ছেড়ে দাও।

ও ফিহা ছাড়া কারো কাছে থাকতে চায়না।

ফারহাজঃ ওকে এখন ছাড়া যাবেনা।
চোরকে ধরতে হলে একটা ফাঁদ পাততে হয় জানো কি?.

ইরিনাঃ মানে? (অবাক হয়ে)

ফারহাজ বাঁকা হাঁসি দিয়ে বলে উঠে–

তা তুমি বুঝবেনা এইটা পুলিশ আর চোরের ব্যক্তিগত ব্যাপার!

এদিকে

টিউপ আর পটকা বিরিয়ানি খেয়ে যাচ্ছে!

আর ফিহা টেনশনে এদিক ওদিক ঘুড়ে যাচ্ছে!

টিউপ ঃ দোস্ত চিল এতো টেনশন করার কিছুই নেই!

ফিহা রাগে ফেটে বলে উঠে—

তোদের চিলে আমি গোস্ঠির পিন্ডি চটকাবো!

তোদের জন্য আজ আমার পামকিন অই বেটা লাটসাহেব এর কাছে বন্ধি

তোদের যে আমি কি করবো আমি নিজেও জানিনা

এই বলে ফিহা পা ছুড়িয়ে কান্না করতে থাকে। রাগে দুঃখে ফিহার প্রচন্ড কান্না আসছে!

ফিহাঃ পামকিন রে তোকে অই পুলিশ লাটসাহেব জেলে নিয়ে গেলো রে

ওরেএ আমার পামকিন (কাঁদতে কাঁদতে)

টিউপ আর পটকা ফিহার কাছে গিয়ে বলে উঠে—

ফিহা এইভাবে কাঁদিস না তুই আমরা অই পুলিশের থেকে পামকিন কে নিয়ে আসবো!

ফিহা মুখ ভেংচি কেটে বলে উঠে—

তোদের মতো রাক্ষসদের দল দের নিয়ে কোনো বিশ্বাস নেই তোরা খালি পারিস গিলতে।

টিউপও এইবার ন্যাকা কান্নার সুরে বলে উঠে—

দেখ দেখ এখন ফিহা আবার আমাদের খাবার নিয়ে খোটা দিচ্ছে!

পটকা টিউপ এর মাথায় একটা চাটা মেরে বলে উঠে—

ফিহা দোস্ত তুই চিন্তা করিস না আমরা পামকিন কে ঠিক উদ্দ্বার করবো??

ফিহার আর টিউপ একসাথে বলে উঠে—

তা কীভাবে????

ফারহাজ আর কিছু বলবে তখনি ইরিনার ফোনটা বেজে উঠে!

সে তাড়াতাড়ি সামনে ঘুড়ে যায়।

কেননা তাকে এখন ভাং ধরে থাকতে হবে যে সে ফিহাকে দেখিনি নাহলে আজ ফিহাকে নাগালে পাওয়া যাবেনা!
ইরিনা ফোনটার দিকে তাঁকায় বেজেই চলছে।

ফোনটা পেয়ে ইরিনার মুখে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার!

হাঁসি মুখটা হঠাৎ ফ্যাকাশে হয়ে উঠে!

ফারহাজ বুঝতে পারছেনা ইরিনা হয়েছে টা কি?

তাই সে ইরিনার কাধে হাত রেখে বলে উঠে—
।ইরিনা আর ইউ ওকে???

ইরিনা নিজেকে সাম্লে বলে উঠলো—

ফারহাজ একটা ইম্পোর্টেনট কথা আছে আমি একটু যাই তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করো কেমন!

ফারহাজ কিছু বলবে তার আগেই ইরিনা বলে উঠে—

আমি এক্ষুনি চলে আসবো ফারহাজ

এই বলে সে যতদ্রুত স্হান ত্যাগ করে।

ইরিনার ব্যাবহার টা ঠিক লাগছেনা ফারহাজ এর।

তখনি সে খেয়াল করে ফিহা কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে লুকিয়ে!

তার পিছনে পটকা আর টিউপ!

ফারহাজ সামনে ঘুড়ে যায় কেননা সে জানে

ফিহা যদি বুঝে যায় ফারহাজ তাদের দেখে ফেলেছে।

তাহলে ফিহা আবারোও পালিয়ে যাবে তখন আর ফিহাকে নাগালে পাওয়া যাবেনা।

ফারহাজ ফোন হাতে নিয়ে কথা বলার ভং ধরে।

এদিকে,,

টিউপঃ অইযে দেখ পামকিন একটা কিনারা গুটিশুটি মেরে বসে আছে এই সুযোগ চল!

ফিহাঃ কিন্তু যদি আমাদের দেখে ফেলে!

পটকাঃ পুলিশ সাহেব এখন ফোনে ব্যস্ত!

চল তো ”

ফিহা মাথা নাড়ায়।

।তারা ধিরপায়ে এগোতে যাবে।

তখনি পিছন থেকে ফারহাজ ফিহার হাত খপ করে ধরে ফেলে।

ফারহাজ কে দেখে টিউপ আর পটকা দেয়।

ফারহাজ এর এইরকম আচরনে ফিহা কিছুটা তাজ্জব বনে যায়।

ফারহাজঃ এইবার কোথায় পালাবে পুচকি
(বাঁকা হাঁসি দিয়ে)



চলবে,,,,