পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ পর্ব-০৮

0
6554

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -৮
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ ফিহার হাত শক্ত করে ধরে ফেলে।ফারহাজকে দেখে ফিহার ছোট্ট বুকে হঠাৎ করেই একটা কম্পন করে উঠে । এইটাকি ভয় এর কম্পন নাকি অন্যকিছু সে বুঝতে পারছেনা। শুধু বুঝতে পারছে বুকটা অদ্ভুদভাবে ধুকপুক ধুকপুক করছে। ফারহাজের ও কেমন একটা লাগছে। তার শুধু মনে হচ্ছে ফিহা তার খুব কাছের কেউ। ফারহাজ জানেনা এর উত্তর। এদিকে ফিহার
ছোট্ট মস্তিষ্ক জানান দিচ্ছে যে তাকে এখন পালাতেই হবে মানে হবেই নাহলে এই লাটসাহেব তাকে ধরে নিয়ে যাবে। ফিহা কিছু বলবে তার আগেই ফারহাজ বলে উঠে— আর কিছু আমি শুনতে চাইনা তুমি কি ভেবেছো প্রতিবার তোমার এইসব চিপ ড্রামা করে
তুমি পার পেয়ে যাবে হাহ??
এই ফারহাজ মির্জা বোকা বানাও তুমি এত্তো বড় সাহস তোমার পুচকি??
ফারহাজ এর ধমকে
ফিহা ভয় পেলেও কিছুটা সাহস সংষয় করে কেননা এইভাবে যদি ভয় পেতে থাকে তাহলে তো এই লাটসাহেব মাথায় চড়ে বসবে।
ফিহা গলাটা খাকাড়ি দিয়ে বলে উঠে—

এইযে লাটসাহবে দুরর্ত্ব মেনটেইন করুন!। তারপর কথা বলুন! আমি আপনার বিয়ে করা বউ না।

এইটুকু মেয়ের মুখে এই কথা শুনে কিছুটা ভ্যবাচ্যাকা খেয়ে যায় ফারহাজ সে দূরে সরে যায়

হতে কতক্ষন???

হঠাৎ এইরকম কথায় ফারহাজ আর ফিহা দুজনেই
অবাক হয়ে যায়।

ফারহাজ পিছনে তাঁকিয়ে দেখে ইরিনা।

ফারহাজঃ ইরিনা তুমি এইসব কি বলছো?

ইরিনা হেঁসে এসে বলে উঠে—
ডোন্ট সিরিয়াসলি ফারহাজ আমি জাস্ট কিডিং!

ফারহাজ কিছুটা গম্ভীর সুরে বলে উঠে—

এইরকম মজা আমার মোটেও পছন্দ নাহ তুমি জানো!

তাও আবার এই পুচকি মেয়েকে নিয়ে।

ফিহা গাল ফুলিয়ে ফেলে।

ইরিনা কানে হাত দিয়ে বলে উঠে—

আচ্ছা বাবা সরি! কিন্তু
তোমাদের কাহিনিটা কি?

এইভাবে ঝগড়া করছো কেন???

ফিহা গাল ফুলিয়ে বলে উঠে–

দেখো আমার মতো গুড গার্ল তোমার এই হবু বর লাটসাহেব জেলে দিতে চায় এইটা কি ঠিক বলো??

ফারহাজ যে ফিহাকে মিথ্যে ভয় দেখাচ্ছে

তা বুঝতে একটুও সময় লাগলো নাহ ইরিনার!

ইরিনা ফিহার গালে হাত রেখে বলে উঠে—
আমার ফিহা রানীকে জেলে দিবে? এতো সাহস তাও আমি থাকতে

ফিহা ঃ হুম! বলে দাও তো লাটসাহেব কে!

ইরিনা ঃ হুম হুম বলে দিবো।

ফিহা আর কিছু না বলে দ্রুত পা চালিয়ে পামকিনকে কোলে করে নিয়ে চলে যায়।

সে তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে গিয়ে বসে পড়ে।

বুকটা এখনো জোড়ে জোড়ে ধুকপুক ধুকপুক করেই যাচ্ছে!

ভাগ্যিস সেসময় ইরিপু এসেছিলো নাহলে ফিহার যে কি হতো আল্লাহ জানে।

এদিকে ,,

ফারহাজ সেই প্রথম দিন থেকে ঘটে যাওয়া সব ঘটনাই ইরিনাকে বলে দিলো।
যা শুনে ইরিনার হাঁসি কিছুতেই থামছেনা।থামবে নাই বা কেন ফারহাজ এর মতো বদমেজাজী ছেলেক কিনা ফিহার মতো পুচকি মেয়ে বোকা বানিয়ে ছাড়লো এমনকি রাস্তার সকলের সামনে কোমড় বেঁধে ঝগড়া পর্যন্ত করেছে ভাবা যায়।

ফারহাজ কিছুটা বিরক্তির সুরে বলে উঠে—

ইরি তুমি থামবে অই পুচকি মেয়েটা এতো কিছু করলো
আমাকে বোকা বানালে আর তুমি হেঁসেই যাচ্ছো!

ইরিনা হেঁসে বলে উঠে–;
নাহ শুধু সেইজন্য নাহ! আমি তো এইটা দেখছিলাম
তুমি কীভাবে ফিহার সাথে বাচ্ছা হয়ে গিয়েছিলে!
তুমিও ওর সাথে কমোর বেধে ঝগড়া করছিলে
তুমিও না কি কান্ড করলে ওকে জেলে যাওয়ার ভয় দেখালে। অফিসার ফারহাজ মির্জা এখন শুধু বদমেজাজীও নাহ + ঝগড়ুটে ভাবা যায়? হা হা হা!

ইরিনার হাঁসি মোটেও ভালো লাগছেনা ফারহাজ এর!

তার নাকে বিন্দু বিন্দু লাল হয়ে গেছে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ফারহাজ এর।

ফারহাজঃ ইরিনা তুমি আমার মজা নিচ্ছো??

(রেগে)

ইরিনা এইবার হাঁসিটা থামিয়ে বলে উঠে—

রেগে যাচ্ছো কেন??

আমি তো জাস্ট এইটুকু বলছিলাম যে ফিহা বাচ্ছা মেয়ে এতো কিছু কি ও বুঝে বলো?
ওর কথা বাদ দাও!

ফারহাজ হাত ভাজ করে বলে উঠে—

অই মেয়েটা তাও বাচ্ছা?? কত পাঁকা পাঁকা কথা বলে দেখেছো??

ইরিনা ফারহাজ এর হাত ধরে বলে উঠে–

বুঝেছি সাহেব এর রাগ এখনো কমেনি চলো চলো
আমার এখন প্রচন্ড আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করছে।

ফারহাজঃ আইসক্রিম তাও এইসময়?

ইরিনা খানিক্টা আবদারেরে সুরে বলে উঠে—

চলো নাহ প্লিয!

ফারহাজ মুচকি হাঁসি দিয়ে বলে উঠে–

চলুন সাহেবা!

(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

ফাতেমা ভাতের লুকমা টা ফিহার দিকে এগিয়ে বলে উঠে–

কি হয়েছে খা??

ফিহা কিছু একটা নিয়ে চিন্তা করছিলো মায়ের কথায় তার হুশ আসে।

ফিহা বলে উঠে—
আচ্ছা মা ইরিনা আপুর বিয়ে ঠিক তাইনা??

ফাতেমাঃ হুম তাইতো শুনলাম!

ফিহা ঃ অই লাটসাহেব এর বাড়ির থেকে কারা এসেছিলো?

ফাতেমাঃ লাটসাহেব টা কে??

ফিহা ঃ আসলে মানে অইযে ইরিপুর হবু বর!

ফাতেমাঃ দাদি আর মা!

ফিহাঃ কই আমি তো তাদের দেখলাম নাহ

ফাতেমাঃ তুই যখন তোর বন্ধুদের সাথে খেলছিলি তখন তারা চলে গেছে!

ফিহাঃ ওহ আচ্ছা ঠিক আছে পরে সবাইকে দেখবো নেহ আচ্ছা মা শুনেছি সেই বাড়িতে নাকি অনেক মানুষ থাকে??

ফাতেমাঃ হুম তো শুনেছি!

ফিহা হাত তালি দিয়ে বলে উঠে–

ইরিপু তো অনেক লাকি! তার শ্বশুড় বাড়িতে কত্ত মানুষ।
আমারোও অনেক মানুষ একসাথে থাকলে ভালো লাগে!

ফাতেম হঠাৎ করেই বলে উঠে–
তুইও তো এমন লাকি ছিলিরে।

ফিহা ঃ কি বললে তুমি???

ফাতেমা কথা ঘুড়ানোর জন্য বলে উঠে–

এই মেয়ে এই ঘুমাবি চল!

ফিহা আর কিছু না ভেবে ঘুমের রাজ্যে পারি দেয়।

ফারহাজ বসে কিছু ফাইল ঘাটছে কিছু জটিল কেস চলে এসেছে আজকে!

আজকে আর বাসায় যাওয়া হবেনা।

তখনি রুপ এসে বলে উঠে—

স্যার!

ফারহাজ রুপের দিকে না তাঁকিয়েই বলে উঠে—

কোনো ইনফরমেশন পেয়েছো কি?

রুপঃ এখনো পাইনি!

ফারহাজ ফাইলের দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে—

আমি কিচ্ছু শুনতে চাইনা! যত তাড়াতাড়ি পারো ইনফরমেশন কালেক্ট করো বুঝতে পেরেছো???

রুপ মাথা নিচু করে বলে উঠে–

জ্বী স্যার!

রুপ চলে যায় ফারহাজ বসে পড়ে আজকে কিছুটা টায়ার্ড ছিলো কিন্তু আজকে ইরিনার সাথে সময়টা ভালোই কেটেছে।

হঠাৎ করেই ফিহার সেই মুখটা ভেসে উঠে কেমন একটা অনুভুতি হচ্ছে ফারহাজ এর।

মনে হচ্ছে ফিহা তার খুব কাছের কেউ!

ফারহাজ বিষয়টা এড়াতে গিয়েও এড়াতে পারছেনা।

কেন এতো সেই পুচকি মেয়েটা কথা মনে পড়ে তার।

মিঃ রাইহান ( ফারহাজ এর বাবা)

খাবারটুকু খেয়ে নেয় তার পাশে মিসেস প্রিয়া বসে আছেন!

মিসেস প্রিয়াঃ এইবার যততাড়াতাড়ি সম্ভব
ফারহাজ এর বিয়েটা দিলেই খুশি আমি!

রাইহান গভীর চিন্তাতে মগ্ন!

মিসেস প্রিয়া রাইহান কে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলে উঠে—

কি গো কি ভাবছো???

রাইহান ঃ নাহ তেমন কিছুনা!
অই বিসনেজ এর কাজে একটু প্রব্লেম হয়েছে অই আর কি!

মিসেস প্রিয়াঃ আজকাল তুমি সারাদিন বিসনেজ নিয়েই একটু বেশিই চিন্তা করো।

রাহাত তো আছেই ( ফারহাজ এর কাকা)

রাইহানঃ তুমি এতো কিছু বুঝবেনা তো দাও আরেকটু মাংস দাও!

ফিহা মন খারাপ করে এক জায়গায় বসে আছে।
আজকে এক অজানা কারনেই তার মনটা বেশ খারাপ কেন খারাপ সে জানেনা।

ফিহা কে মন খারাপ দেখে পটকা টিউপ আর সিমি কিছুটা অবাক হয় কেননা ফিহা সবসময় হাঁসিখুশি থাকতেই পছন্দ করে!

সিমিঃ ফিহা তুই ঠিক আছিস???

ফিহাঃ হুম!

তখনি একটা বল এসে ফিহার কপালে লাগে ফিহা ব্যাথায় চিৎকার করে উঠে!

ফারহাজ গাড়ি করে কোথাও যাচ্ছিলো।



।চলবে কি?