পরকীয়ার শেষ পরিণতি পর্ব-০৬

0
304

#পরকীয়ার_শেষ_পরিণতি
#পর্ব_৬
#Shimul

হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখি, সাব্বিরের ঠোঁটে এখনো আমার স্ত্রীর লিপস্টিক লেগে আছে। আমি ধারালো ছুরিটা দিয়ে সাব্বিরের দুইটা ঠোঁট কেটে ফেললাম। সাব্বিরের প্রাণ যায় যায় অবস্থা, কিন্তু খাচা ছেড়ে প্রাণ’টা এখনো বের হচ্ছে না। আমি ধারালো ছুরিটা সাব্বিরের কন্ঠনালী বরাবর চালিয়ে দিলাম, সাথে সাথে শরিলে থাকা শেষ রক্তবিন্দু ফিনকি দিয়ে পড়তে লাগলো।
সাব্বির এখনো ইহকাল ত্যাগ করেনি, ওর বিমর্ষ বডিটা এখনো মেঝেতে পড়ে লাফাচ্ছে। হয়তো ইয়াং এবং যুবক বয়সের ছেলে দেখে এতক্ষণ পর্যন্ত বেঁচে আছে।

“গ্রাম গঞ্জে যখন হঠাৎ করে মেহমানের আগমন ঘটে। তখন তো বাজারে যেতে হয় জিনিস কিনতে, মেহমানদের আপ্রায়ন করার জন্য। আর গ্রাম গঞ্জের বাজার থাকে অনেক দূরে। ফ্রিজে ও তেমন কিছু থাকে না, বা সবার বাসায় ফ্রিজও নাই। গৃহকর্তা কোন কিছুর উপায় না পেয়ে তার পোষা পালিত মুরগী’টাকে ২-৩ জন ধাওয়া করে ধরে, ধরে সাথে সাথে জবাই করে উঠানে ফেলে দেয়। কিছুক্ষণ আগে আদার খাওয়া মুরগী’টাকে যখন সদ্য জবাই করে উঠানে ফেলে দেয়, তখন মুরগী’টা অনেকক্ষণ পর্যন্ত দাপাতে বা থাপড়াতে থাকে। কারন ২ মিনিট আগেও মুরগীটা জীবিত ছিল”

সাব্বির ও কিছুক্ষণ আগে আমার স্ত্রী’কে নিয়ে বিছানায় আনন্দ খেলায় মেতেছিল। আর ২ মিনিট পর সেই মুরগীর মত জবাই দিয়ে দিলাম, তাই অনেকক্ষণ পর্যন্ত লাফাচ্ছে। সাব্বিরের সেই বীভৎস দেহর লাফালাফি দেখে, সাব্বিরের বুকে ছুরি’টা পুতে জুড়ে এক টান দিয়ে নাভি পর্যন্ত নিয়ে আসলাম। ওর শরীরের ভিতরের প্রতিটি অঙ্গ দেখা যাচ্ছে। তার কিছুক্ষন পরেই সাব্বিরের ভিতরের পোষা পাখিটা এই সুন্দর দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরকালে পাড়ি জমিয়েছে।

সাব্বিরের টুকরো টুকরো বডিটা একটা বস্তার ভিতর ভরালাম। তার পর ধারালো ছুরিটা হাতে নিয়ে আমার স্ত্রীর সামনে দাঁড়ালাম। আমার স্ত্রী আমার চেহেরার বীভৎস অবস্থা দেখে ১ মিনিটের জন্য ভূমিকম্প আসলে যেভাবে বড় বড় দালান গুলো কাপ্তে থাকে, মানুষগুলো স্টেট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। তেমনি আমার স্ত্রীও সেই ভূমিকম্পে কাপন তোলা বিল্ডিং এর মত কাপতে লাগলো, আর আমার পায়ে এসে লুটিয়ে পড়লো। লুটিয়ে পড়ে জোরে জোরে চিৎকার করে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,

“আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমি জীবনেও আর এরকম করবো না”

আমি তার প্রতি উত্তরে বললাম,,,,,,,,,,,,,,

“তোর জীবন থাকলে তো আর এরকম করবি, আজকেই যে তোর জীবনের শেষ দিন”

আমার কথা শুনে আমার স্ত্রী ভয়ে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,,,,,

“আমি তোমার পায়ে ধরে শপথ করে বলছি, আর কখনো কোন পর পুরুষের দিকে তাকাবো না। আমাকে একটিবারের জন্য ক্ষমা করে দাও”

“তোকে ক্ষমা করার প্রশ্নই আসে না, ‘অসম্ভব’। তোর মতো বিশ্বাস ঘাতক’কে ক্ষমা করব আমি? যে পরকীয়ার জন্য নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে পারে”

“আমাকে শুধু একটা বার সুযোগ দাও, আমি আজীবন তোমার পায়ের কাছে পড়ে থাকবো”

“তোকে আর কিভাবে সুযোগ দেই বল? তোকে সুযোগ দিলে তুই সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমাকে আর আমার ছেলেকে শেষ করে পালিয়ে যেতি। তোকে আর কোন সুযোগ দেওয়া যাবে না। যে মহিলা পরকীয়ার জন্য নিজের পেটের সন্তান’কে মেরে ফেলার হুমকি দিতে পারে, সে মহিলার কাছে স্বামী তো কিছুই না। তুই তো পরকিয়ার জন্য আমাকেও মেরে ফেলার চেষ্টা করতি”

“আমি ভুল করে ফেলেছি, আমার জীবনটা ভিক্ষা দাও। আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, আমি ভালো হয়ে যাব”

“ছি তোর ঐ পাপি মুখে আল্লাহর নাম নিবি না। তুই ভুল করলে তোকে ক্ষমা করে দিতাম, কিন্তু তুই আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছিস। করছিস ভালবাসার নামে বেঈমানি, আর বেঈমানের শাস্তি হলো মৃত্যু, খুব ভয়ানক মৃত্যু,”

মহা মনীষী চার্নক্য বলেছিলেন,,,,,,,,,,,,

“ক্ষমা তাকে করো যে ভুল করেছে। কিন্তু তাকে কখনো ক্ষমা করো না, যে তোমার সাথে বেঈমানি করেছে”

“তুই আমার সাথে বেইমানি করেছিস, আর তোর বেইমানির শাস্তি হলো মৃত্যু, খুব কঠিন যন্ত্রণা দায়ক মৃত্যু। তুই তো জাহান্নামি, এখন এই মুহূর্তে তুই মারা গেলে আল্লাহ তায়ালা তোকে হাবিয়া দোজখে নিক্ষেপ করবে। আল্লাহ তায়ালার বানানো ৭টা দোজখের মধ্যে সব চেয়ে কঠিন এবং ভয়ানক দোজখ হলো হাবিয়া দোজখ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে লজ্জাস্থান হেফাজত কারী মহিলা’কে জান্নাতি বলে ঘোষণা করেছেন” (সুরা মুমিন-৫)

“অন্য আয়াতে যিনাকারি মহিলা এবং যেনার পরিবেশ সৃষ্টিকারিনী মহিলা সম্পর্কে কঠিন আজাব ও শাস্তির কথা ঘোষণা করেছেন” (সূরা নূর-২)

“তোর কপাল ভালো এতক্ষণ পর্যন্ত তুই দুনিয়াতে নিঃশ্বাস নিচ্ছিস। আজরাইল হয়তো কোন কারণে ব্যস্ত ছিল, কিন্ত এই মুহূর্তে আজরাইল তোর সামনে এসে হাজির হবে। আর তোর মত পাপিষ্ট যিনাকারির রুহটা অনেক যন্ত্রণা দিয়ে বের করবেন। মৃত্যুর যন্ত্রণা যে কতো কঠিন এখন তুই উপলব্ধি করতে পারবি”

“মৃত্যুর যন্ত্রণার একটা ব্যাখ্যা বলি তোকে”

হযরত ঈসা (আঃ) একদিন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।দেখলেন রাস্তার পাশে অনেক পুরনো একটা কবর, উনি কবরের পাশে দাঁড়ালেন এবং বললো “কুম বিসনিল্লাহ” “আল্লাহর হুকুমে কবর থেকে উঠো” এমনি কবর থেকে একজন মানুষ উঠলো। তাকে হযরত ঈসা (আঃ) জিজ্ঞাসা করলেন “ও মা আনতা ওমা ইছমোকা” “তোমার নাম কি? তোমার পরিচয় কি”

কবর থেকে উঠা ব্যক্তি জবাব দিলো,,,,,,,,

“আমার নাম ছাম, আমি দাউদ (আঃ) এর ছেলে” দাউদ (আঃ) এর ছেলে হযরত ছাম (আঃ) ও একজন নবী, মানে কবর থেকে উঠা ব্যক্তিটা ও একজন নবী।

হযরত ঈসা (আঃ) বললেন,,,,,,,,

“আপনি তো আল্লাহর একজন নবী”

হযরত ছাম (আঃ) জবাব দিলেন,,,,,,,

“হ্যাঁ”

হযরত ঈসা( আঃ) আবারও বললেন,,,,,,,,,,,

“আপনি কি কবরে যে অবস্থায় শুয়ে ছিলেন, ঐ অবস্থায় শুয়ে থাকতে চান? নাকি আবারও দুনিয়ায় আসতে চান? যদি দুনিয়াতে আসতে চান, তাহলে আমি আল্লাহ দরবারে ফুরিয়াত করবো, আল্লাহ যেন আপনাকে আবার দুনিয়াতে পাঠাই”

হযরত ছাম (আঃ) বললেন,,,,,,,,,,,

“আমি যদি আবারও দুনিয়ায় আসি, আজরাইল কি আবারও আমার জান কবজ করবে”

হযরত ঈসা( আঃ) বললেন,,,,,,,,,,

“আপনি আল্লাহর একজন পয়গম্বর, আপনি আজরাইলকে এতো ভয় পান কেন”

হযরত ছাম (আঃ) বললেন,,,,,,,,,,

“হে নবি হযরত ঈসা (আঃ), আপনার সাথে তো এখনো আজরাইলের দেখা হয় নাই? আপনি কি বুঝবেন! আজ থেকে হাজার বছর আগে আমি হযরত ছাম (আঃ) মৃত্যু বরণ করেছি, আজও পর্যন্ত মরণের কষ্ট ভুলতে পারি নাই। কয়েক হাজার বিষাক্ত কাঁটা আমার পেটের ভেতরে ঢুকিয়ে, সমস্ত রগের মধ্যে আর নাড়ি ভুঁড়ির মধ্যে পেচিয়ে কয়েক হাজার লোকের জুড়ে এক টান মারলে যতটুকু কষ্ট অনুভব করতে পারবো, আমি ছাম তার চেয়ে নয় গুন কষ্ট অনুভব করছি। দুনিয়াতে যত নবী রাসুল এসেছে, সবাই নিষ্পাপ তাদের কোন গুনাহ নাই, কিন্তু আমার গুনাহ অনেক দ্বিগুণ”

“একজন নবী হয়ে যদি মৃত্যুর যন্ত্রনা অনুভব করতে পারে। তাহলে তো মত পাপিষ্ট জিনা কারিনী যে স্বামীর হক নষ্ট করে, স্বামীর অগোচরে পর পুরুষ’কে বিছানায় এনে অশ্লীল খেলায় মেতে ওঠে। তোর কতটুকু মৃত্যুর যন্ত্রনা হবে ভেবে দেখ তুই”

আমার স্ত্রী আমার কথা শুনে আমার দু পা জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কান্না করতে করতে বলতে
লাগলো,,,,,,,,,,,,,

“আমাকে একটা বার ক্ষমা করে দাও, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার একটা সুযোগ দাও”

“তোকে কোন ক্ষমা করা যাবে না, আল্লাহর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিস”

কথাটা বলে আমি,,,,,,,,,,,,

#চলবে……………………..