পরকীয়ার শেষ পরিণতি পর্ব-০৪

0
273

#পরকীয়ার_শেষ_পরিণতি
#পর্ব_৪
#Shimul

আমি গিয়ে আবারও তার চুলের মুঠি ধরলাম, আর বলতে লাগলাম,,,,,,,,,,,,

“কি অপরাধ আমার, কি অপরাধ করেছিল আমার নিষ্পাপ ছেলেটা? কেন তুই এ মনটা করলি”

সাথে সাথে আমার স্ত্রী পা দুটো জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,

“আমার ভুল হয়ে গেছে, আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি আর কখনো এরকম করবো না”

“তোর মতন বিশ্বাসঘাতককে যদি আমি ক্ষমা করি, তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাকে ক্ষমা করবে না। তুই কেন এ মনটা করলি? কিসের অভাব আমার, টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি সবই আছে। তারপরও তুই কেন এমন করলি? তোকে আমি ভালোবাসি নি, সময় দেয়নি? কথা বল আমার কথার উত্তর দে, আর নাহয় তোকে আমি আজকে এখানেই মেরে ফেলবো।

আমার স্ত্রী ভয়ে মাথা ঝাকি দিতে শুরু করলো।

আমি আবার বললাম,,,,,,,,,

“কিসের অভাব তোর বল, কিসের অভাব আমি পুরন করিনি”

“সব করেছো”

“তাহলে তুই কেন মনটা করলি? আমার সব কথার জবাব দে, তা না হলে আমি তোর মুখ সুই সুতা দিয়ে সেলাই করে দিব। তোকে আমি সময় দিই নি”

“হ্যাঁ দিয়েছো”

“ভালো ভালো দিনে আমি তোকে উপহার দেইনি”

“হুম দিয়েছো”

“তোকে আমি অফিস বাদ দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে এবং শপিং করতে নিয়ে যাইনি”

“হ্যাঁ”

“আজও পর্যন্ত আমার বিয়ের ছয় বছরের জীবনে তুই যা চেয়েছি সব দেয়নি”

“হ্যা দিয়েছো”

“তাহলে তুই কেন এ মনটা করলি? আমার বিশ্বাসটা কেন ভাঙলি? কেন আমাকে আমার সন্তানকে নিঃস্ব করিলি, একবার আমাদের সন্তানের কথা ভাবলিনা? তুই ভাববি কি করে, তোর মতো জঘন্য নারী পৃথিবীতে মনে হয় না আর একটা আছে! তুই পরকীয়ার জন্য আমার একমাত্র ছেলে’কে মারার হুমকি দিয়েছিস। আমার ছেলে একটা কথা তোর ভয়ে কিছু বলতে পারেনি আমাকে। তোর মত মেয়েকে যদি আগুনে জ্যান্ত পুড়িয়ে ফেলি, তবুও আমার মনের ক্ষুপ কমবে না। আমার ভাবতে অবাক লাগছে, তোর মতো মেয়ে এ কাজ করবে, আমি কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। টানা ১ বছর তুই আমার পিছনে পাগলের মত ঘুরলি, কিন্তু তোকে আমি পাত্তা দেইনি। তুই আমার পায়ে ধরে তোর ভালোবাসা ভিক্ষা চেয়েছিস, তোর সেই ভালোবাসার কাছে আমি হেরে তোকে আমি জীবন সঙ্গিনী করে নিয়েছি। কোন কিছুর অপুণ্য আমি রাখিনি, রানীর মত জীবন তোকে আমি দিয়েছি।
আর তুই সেই ভালোবাসার মানুষকে ঠকিয়ে পর পুরুষ নিয়ে দিন দুপুরে বিছানায় শুয়ে থাকিস! এমন কোন রাত্রি বাদ যাই নাই আমি তোকে কাছে টানার চেষ্টা করিনি। তুই পরকিয়ার জন্য বারবার আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিস, আমি কিছু মনে করিনি। হয়তো ভেবেছি তুই অসুস্থ, কিন্তু তুই আমার গোপনে আমার অগোচরে আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়ে পর-পুরুষকে বিছানায আনন্দ দিস। পর পুরুষ তোকে এত সুখ দিতে পারে, আমি তোকে সুখ দিতে পারিনি? প্রতিটা সময় প্রতিটা ক্ষণে তোকে আমি কাছে টানার চেষ্টা করেছি, কিন্তু তুই নিজের স্বামীকে বাদ দিয়ে পর পুরুষকে কাছে টানিশ। আমি কিসে ব্যর্থ তুই আমাকে বল? তুই যদি আমার একটা ব্যর্থতা দেখাতে পারিস, আমি তোকে তোর ওই নাগরের হাতে তুলে দিব! কি হল কথা বল বলছি”

“না তোমার কোন ব্যর্থতা নাই”

“তাহলে কেন এমনটা করলি? আজকে তোর আর তোর ওই নাগরের এমন অবস্থা করব যে, তোরা কখনো কল্পনাও করতে পারবি না”

আমার কথা বলা শেষ করার সাথে সাথে আমার স্ত্রী আমার পা জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে লাগলো। আর বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,

“প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। আর কখনো জীবনে এরকম করবো না, আমি সত্যি বলছি। তুমি যে ভাবে বলবা, আমি সেভাবেই তোমার সব কথা শুনবো”

আমি এক ঝটকায় পা টা সরিয়ে নিয়ে আসলাম।

“তোদের মতো মেয়েকে আমি ভালো করে চিনি। যে মেয়ে নিজের পেটের সন্তান কে পরকীয়ার জন্য মেরে ফেলার হুমকি দিতে পারে, সে মেয়ে
একজন পুরুষ দিয়ে সন্তুষ্ট না, সে বহু পুরুষ গামি। তাকে যদি ছেড়ে দেই সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে। আর তুই তো আরো জঘন্য, কারণ তুই আমার পিছনে একটা বছর পাগলের মত ঘুরেছিস, আমাকে পাবার জন্য। সে তুই তোর ভালোবাসা মানুষকে ভুলে, তোর দেহ-মন সঁপে দিয়েছিস অন্য একজন পর পুরুষকে। তোর মতো মেয়েকে যদি আমি ছেড়ে দিই, তাহলে তুই কেয়ামত পর্যন্ত সঠিক রাস্তায় আসতে পারবি না”

“আমি তোমার পায়ে ধরে শপথ করে বলছি, আমি সঠিক রাস্তায় চলে আসব”

আমার বউয়ের আকুতি মিনতি দেখে আমার আরো রাগ উঠে গেলো। চুলের মুঠি ধরে আরো দুইটা থাপ্পড় দিলাম, সে থাপ্পড় খেয়ে জুরে জুরে চিল্লাতে লাগলো। আমি ওর চুলের মুঠি ধরে বললাম,,,,,,,,,,,,

“যা গোসল করে আয়” কিন্তু সে ভয়ে কাঁপতে লাগলো।

আমি ওর চুলের মুঠি ধরে ওয়াশ রুমে ঢুকিয়ে দিলাম।।

৭-৮ মিনিট পরে ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে কাঁপতে কাঁপতে খাটে বসে পড়লো। আমি আবারও গিয়ে ওর চুলের মুঠি ধরলাম আর বললাম,,,,,,,,,,,,,,

“সুন্দর একটা শাড়ি পর, পড়ে ভালোভাবে সাজগোজ কর। তারপর আমি যে ভাবে বলবো, সেভাবে তোর নাগর’কে ফোন করে আসতে বল। আমি বাসায় আছি সে কথা যদি তোর মুখ দিয়ে বের হয়েছে, তাহলে তোর জিব্বা আমি কেটে ফেলবো”

ও আমার কথা শুনে বলতে লাগলো,,,,,,,,

“আমি পারবো না”

এ কথা শোনার পরে আমার রাগ যেন পর্বতের শেষ চুড়ায় উঠে গিয়েছে। চুলের মুঠি ধরে ইচ্ছে মত কয়েকটা থাপ্পড় দিলাম, থাপ্পড় খেয়ে ভয় কাঁপতে কাঁপতে সাজগোজ করতে লাগলো।

সাজ গুজ পরিপূর্ণ হলে, ওঁকে মোবাইল দিয়ে
বললাম,,,,,,,,,,,,,,,,,

“তোর নাগর কে ফোন করে আসতে বল। ওঁকে বলবি যে আমি আজকে আসবো না, আমি আমার ছেলেকে নিয়ে নিজের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি। তাড়াতাড়ি বল আসার জন্য”

আমার স্ত্রী ভয়ে ভয়ে তার হাত থেকে মোবাইলটা ফেলে দিল। আমি আবারও চুলের মুঠি ধরে মোবাইলটা তার হাতে দিলাম, আর বললাম,,,,,,,,,,,,,,

“আমি তোকে যা যা বলেছি, সেগুলো সব বলে ওকে এখানে নিয়ে আয়”

তারপর আমার স্ত্রী ওকে ফোন দিয়ে, আমি যা যা শিখিয়ে ছিলাম সব বলল।

তারপর দরজাটা খোলা রেখে ওকে বললাম,,,,,,,,,,

“তুই বিছানায় ওয়েট কর, একদম এখান থেকে একপা নড়বি না। তা না হলে তোকে আমি সত্যি সত্যি,,,,,,,”

তারপর কিছু না বলে আমি একটা মাংস কাটার ধারালো একটা ছুরি নিয়ে ওয়াশ রুমে প্রবেশ করলাম।

বাহিরে ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে। আকাশের মেঘ কিছুক্ষণ পরে পরে জুড়ে গর্জন করছে, মনে হচ্ছে কিছুক্ষণ পরে অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামবে। সেই বৃষ্টির সাথে মনে হয় আমার সংসার নিয়ে দেখা স্বপ্নগুলো সব হারিয়ে যাবে। হারিয়ে যাবে ভালবাসার উপর থেকে বিশ্বাস।

সকাল থেকে ঝিরঝির বৃষ্টি, দিনটা কে বেসামাল করে তুলেছে। সে সাথে আজকের দিন টা আমাকে আরো এক কালো অন্ধকারে নিয়ে গেছে। আমার জীবন টাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে। ভালোবাসার নামে বেইমানি করেছে, আর হয়তো কখনো সে অন্ধকার থেকে বের হয়ে রুপালি স্বপ্ন দেখতে পারবো না।

আমার মাথা রাগে এতটা গরম হয়ে আছে যে, শরীরের প্রতিটি পশমের গোড়া দিয়ে ঘাম বের হচ্ছে। যখনই চোখ দুটো বন্ধ করি তখন সেই দৃশ্যটা শুধু আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে যে,,,,,,,,,,,

“সাব্বির আমার স্ত্রীকে কোলে নিল, আর সে সাথে সাথে আহ্লাদী হয়। তার দুই হাত দিয়ে সাব্বিরের গলাটা জড়িয়ে ধরলো” এই দৃশ্যটা যখন আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তখন নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা। এতটা রাগ শরীরে এসে জমা হয়েছে যে, দুনিয়ার যেকোন দানব যদি আমার সামনে আসে, তাকে আমি খুবই তুচ্ছ মনে করব।

ওয়াশ রুমের দরজাটা অল্প ফাঁক করে ধারালো ছুরি টা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। আর অপেক্ষা করছি সেই জানোয়ারের, যে আমার আর আমার ছেলের জীবনটা ধ্বংস করে দিয়েছে। ধ্বংস করে দিয়েছে একটা সুন্দর সংসার, তার অপেক্ষার প্রহর গুনতে লাগলাম।

হঠাৎ করে দরজা একটা আওয়াজ হলো, মনে হয় আমার শিকার এসে গেছে। হ্যাঁ সাব্বির এসেছে,

দরজায় কারো আওয়াজ পেয়ে আমার স্ত্রী বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো, আর সাব্বির সাথে সাথে দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকে আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে পাগলের মত চুমু দিতে লাগলো। আর বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,

“হেই তুমি এত সুন্দর করে সেজেছো আমার জন্য, তুমি ওই সময় আমাকে যেতে দিলে কেন? আগে যদি বলতে তোমার স্বামী আজকে আসবে না, তাহলে কষ্ট করে আমার আর যাওয়ার দরকার ছিলনা। রাতটা তোমার সাথে কাটিয়ে সকালে চলে যেতাম। তোমাকে কিন্তু আজকে খুব সুন্দর লাগছে। চলো আজকে সারারাত তোমাকে মন ভরে আদর করবো”

কিন্তু আমার স্ত্রী ভয়ে কোন কথা বলছে না।

সাব্বির আমার স্ত্রীর ঠোঁট জোড়ার সাথে ওর ঠোঁট জোড়া লাগিয়ে আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় পড়ে গেল।

এ দৃশ্য দেখে আমি নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছি না। বারবার ধাঁরালো ছুরি টার দিকে তাকাচ্ছি, আর মনে মনে ভাবছি,

“এক কুপে কি দু’টার কল্লা আলাদা করতে পারবো তো”

#চলবে…………………………….