প্রণয়ের সূচনা পর্ব-৩১+৩২+৩৩

0
221

#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_Nazia_Shifa
#পর্ব_৩১
_________________________
মাঝে কে/টে গেছে তিনদিন।এই তিনদিনে প্রণয়ের সাথে কোনোরকম যোগাযোগ হয়নি সূচনার। সূচনা আর যোগাযোগ করে নি সেদিন রাতের পর।আর না প্রণয় করেছে।তবে ইরার কাছ থেকে কৌশলে দুজনেই একে অপরের খবর নিয়েছে টুকটাক।অবশ্য এ ব্যাপারে দুজনের কেউ ই অবগত না।সূচনার অভি/মানের পা/ল্লা যেন সময়ের সাথে বে/ড়ে গেছে।কিন্তু ভেতরে ভেতরে যে সে প্রনয়কে মিস করছে তা ঢে/র বুঝতে পেরেছে সে।বিগত তিনদিনে তার খা/লি খা/লি অনুভব হয়েছে নিজের মধ্যে।কি যেন নেই নেই ভাব এমন।শুরুতে মানতে না চাইলেও আজ মানতে বা/ধ্য হয়েছে।এই তো সকালের ঘটনা।কাক ডা/কা ভোরে ঘুম থেকে উঠে নিজের পাশে প্রণয়কে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে চক্ষু চ/ড়কগাছ সূচনার।এক মুহূর্তের জন্য ভুলেই গিয়েছিল প্রণয় যে বাসায় নেই, কিন্তু মনে পড়তেই যখন চোখ ড/লে ভালো করে তাকালো তখন উধা/ও।মানে সে কল্পনা করেছে। দিনের বেলাও কেউ কল্পনা করে? প্রণয় না থাকা স্বত্তেও মনে হয় আছে।এর মানে কী?সে কোথাও শুনেছিল বোধহয় -মানুষ যখন কাউকে মন থেকে মনে করে, উপলব্ধি করে তাকে, তাকে নিজের কাছে পেতে চায়,যখন তাতে অভ্যস্ত হয়ে যায়।তখন সে না থাকা স্বত্তেও তাকে অনুভব করে,তার উপস্থিতি টের পায়,তাকে চোখের সামনে দেখতে পায়।”তাহলে? আমিও কি তাকে মন থেকে মনে করছি?মিস করছি প্রণয়কে?প্রণয়ে অভ্যস্ত সূচনা?এত এত প্রশ্ন মনে আসতেই ল/জ্জায় যেন কান গর/ম হয়ে গিয়েছিল সূচনার।ইশশশ সত্যি ই তাই!কিন্তু ক্ষণেই অ/ভিমান মাথা চা/ড়া দিয়ে উঠেছে। মুখ বা/কিয়ে নিজেকে আবারও বলেছে-

–‘মোটেও না আমি মিস করছি না, একটু ও না,এক রত্তি ও না। একাই শান্তি।হুহ!

মুখে বললেই কি হয়? সে নিজেও জানে নিজের মনের অবস্থা। তিনদিন কত ক/ষ্টে কে/টেছে সেই তো জানে।যেন এক একটা মুহূর্ত মাসের সমান।সময় যেন টু/কটুক করে চলছে।ধ্যা/ত!তিথিটার ও পরীক্ষা। ইরা ছে/কা খাওয়া মেয়ের মতো দরজা আ/টকে রুমে পড়ে থাকে।মিসেস আফিয়ার সাথে টুক/টাক গল্প করে আর কাজ/টাজ করে কী আর অত সময় পার হয়? তাই আজকে সূচনা নিজের বাসায় এসেছে।দুপুর তিনটার দিকেই এসেছে।এখন সন্ধ্যা সাতটা প্রায়। মিসেস আফিয়া কে বলেই এসেছে সূচনা।আজকে থাকবে সে।প্রণয় জানে কি না কে জানে?সোফায় পা গুটি/য়ে আরাম করে বসে টিভি দেখছিল সূচনা।কোলে আচারের বয়া/ম। এই সন্ধ্যা বেলা আচার খাও/য়ার জন্য অবশ্য মিসেস দিশা এক গা/দা কথা শুনিয়েছেন সূচনাকে।কিন্তু কে শোনে কার কথা।সে আরাম করে আচার খা/চ্ছে আর টিভি দেখছে।মাঝে সাঝে প্রণয়ের খেয়াল আসলেও পাত্তা না দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তার আরাম হা/রাম করতে কলিংবেল বে/জে উঠলো। মেজাজ খা/রাপ হয়ে গেল একদম সূচনার।কিন্তু কলিংবেলের আওয়াজ শুনেও না শোনার ভান করে নিজের কাজ চালিয়ে গেল সূচনা।মিসেস দিশা হ/ন্তদন্ত ছুটে আসলেন রুম থেকে।দরজার দিকে এগোতে এগোতে বললেন –

–‘ কান কী খে/য়েছিস নাকি? কলিং বেলের আওয়াজ কী শুনছিস না?

সূচনা এবারও পা/ত্তা দিল না।মিসেস দিশা দরজা খুলে দাড়িয়ে রইলেন। তাকে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে দেখে সূচনা জিজ্ঞেস করলো-

–‘ আম্মু কে এসেছে?দাড়িয়ে আছো কেন?

সোফা থেকে মাথা বা/কিয়ে একটু উকি মা/রলো।মাথায় ওড়না টেনে ভ্রু কু/চকে উঠে আসলো দরজার সামনে।হাসি টেনে জিজ্ঞেস করলো-

–‘ চাচা আপনি?এই সময়ে?

–‘এটা কে সূচি?(মিসেস দিশা)

সূচনার নিচু স্বরে বললো-

–‘ চাচা ওনার বাসার গাড়ি ড্রাইভ করে,পরিবারের অংশই আমাদের।

–‘আচ্ছা,ভেতরে আসুন,বসুন। (মিসেস দিশা।

সূচনার কথা শুনে লোকটা কৃতজ্ঞতার সহিত হাসলো।ইতস্তত করছিলেন ভেতরে আসতে কিন্তু সূচনা জো/র করে নিয়ে আসলো।সোফায় বসেই লোকটা বললো-

–‘আম্মা তাড়াতাড়ি রেডি হন, আমি আপনারে বাসায় নিয়া যাইতে আইসি।

সূচনা ভ্রুকুটি করে অবাক চোখে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো-

–‘ চাচা আমি আজকে থাকব এখানে।কালকে সকালে যাব।

–‘ না না আম্মা, আব্বার ক/ড়া নির্দেশ আপনেরে বাসায় নিয়া যাইতে কইসে।আপনে খালাম্মারে ফোন দিয়া কথা কন।

সূচনা সাথে সাথে ই কল দিল মিসেস আফিয়া কে।মিসেস আফিয়াকে বলতেই উনি বললেন-

–‘প্রণয় অনুমতি দিয়েছিল এজন্য ই যেতে দিয়েছি রে এখন ও কল দিয়ে বললো তোকে নিয়ে আসতে এজন্য ই পাঠিয়েছি।তুই তাড়াতাড়ি এসে পড়।

সূচনা আর কিছু বলতে পারলনা। তবে রা/গ আর মন খা/রাপ দুটোই হয়েছে। এতদিন পর কত আশা নিয়ে এসেছিল মা/য়ের সাথে থাকবে অথচ প্রণয় তাও দিলনা।
_____________________________
–‘ডঃ আনান সিদ্দিকী কেমন আছেন?

এগারো তলা হোটেলের বিল্ডিং। তার ওপরের ফ্লোরে ছাদ। নিচের তলা গুলো তে লোক সমাগম অনেক তবে একেবারের ওপরের তলাগুলো তে রুম বুক করে যারা শুধু তারাই অবস্থান করেন।রুম সার্ভিস রা রুমের যাবতীয় কাজ করে দিয়ে যান সময় মতো। তেমন কো/লাহল নেই বলে যারা হ/ট্টগো/ল পছন্দ করেন না তারা ওপরের তলার রুম গুলোই বু/ক করেন।আনান সিদ্দিকী, পেশায় তো ডক্টরই।দেশের বাইরে ছিলেন। দেশে তার নিজের হসপিটাল আছে একটা।এত বছর ম্যানেজারের হাতে সব দায়িত্ব দিয়ে চলে গিয়েছিলেন।খবর রাখেননি কোনো।পরিবারে কেউ নেই বললেই চলে।বিয়ে করেছিলেন।কিন্তু ওনার স্ত্রী চলে গেছেন বিয়ের মাস খানেকের মা/থায়।তার প্রেমি/কের সাথে।তারপর আর বিয়ে করেননি উনি।হসপিটালের হিসাবে ঝা/মেলা হয়েছে। গণ মান্য কোনো ব্যক্তি নাকি মাম/লা করেছেন তার হসপিটাল অথোরিটির বিরু/দ্ধে,সাথে ম্যানেজারের বি/রুদ্ধে। ওনার বিশ্বাস ম্যানেজার কিছু করেনি।কিন্তু পরিস্থিতি উনি সামলাতে পারছিলেন না তাই বাধ্য হয়ে এসেছেন।অনেকটা ভ/য়ে আছেন উনি।এত বছরের রা/জ না খুলে যায় সেজন্য। হোটেলের নয়তলায় রুম নিয়েছেন উনি।রুমেই ছিলেন উনি।ওনার ম্যানেজার হাবিব সাহেব ডে/কে এনেছেন ছাদে।ছাদের এক কোণে দাড়িয়ে ছিলেন চুপচাপ।তখনই উক্ত বাক্যটুকু শুনে পেছনে ফিরলেন উনি।বর্তমানে ঘা/বড়ানো আর প্রশ্ন সূচক মুখশ্রীতে সামনে তাকিয়ে আছেন।তার সামনে দাড়ানো প্রণয় আর তন্ময়।তার কাছে অপরিচিত এই দুটো মুখশ্রী।তার দৃষ্টি পড়তে প্রণয় বা তন্ময়ের সময় লাগেনি। পাঞ্জাবীর পকেট থেকে ফোন বের করলেন হাবিব সাহেবকে কল দেয়ার জন্য কিন্তু তার আগেই উনি উপস্থিত হলেন সেখানে।আনান সাহেব ব্যতীব্যস্ত গ/লায় জিজ্ঞেস করলেন-

–‘এসব কী হাবিব?এরা কারা?আমাকে চিনে?পথ আট/কেছে কেন এভাবে?

হাবিব সাহেব নিশ্চুপ রইলেন।আনান সাহেব যেন রো/বটের ন্যায় বারবার কথাগুলো জিজ্ঞেস করলেন।কিন্তু প্রতিবারই হাবিব সাহেব চুপ।শুধু বললেন-

–‘ আমি জানিনা স্যার এনাদের সাথে আপনার কি হিসাব আপনিই জানেন।হাবিব সাহেব কথাটা বলতেই প্রণয় বলে উঠলো-

–‘ঠিক বলেছেন হাবিব সাহেব। আপনার বুদ্ধি আছে।ইউ আর ইন্টেলিজেন্ট এনাফ।তা ডঃআনান বললেন না কেমন আছেন?আনান সিদ্দিকী,বাহ কী সুন্দর নাম!আবার সাদা ফক/ফকে পায়জামা পাঞ্জাবি লাগিয়েছেন। সাদা তো শুভ্রতার প্রতীক।কত সুন্দর পবিত্র মতো নিজেকে সাজিয়ে রেখেছেন লোক সম্মুখে অথচ কাজকর্ম এত নি/চ কেন স্যার?

–‘তুমি কি বলতে চাইছো?ফা/জলামো করছো?আমার সম্পর্কে ধারণা আছে কোনো?

–‘আমার যতটুকু আছে অতটুকু যথেষ্ট কিন্তু আপনার ধারণা নেই আমি আপনার কতোবড় ক্ষ/তি করতে পারি।

–‘মানে?

–‘বছর কয়েক আগে, একজন ভদ্রমহিলার পো/স্টমর্টে/ম রি/পোর্ট বানিয়েছিলেন।ফে/ক রিপো/র্ট। তাকে মার্ডা/র করা হয়েছিল, আপনি তারই মা/র্ডারা/রের টাকা খে/য়ে ফে/ক রিপো/র্ট বানিয়েছিলেন যে রিপো/র্টে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল সে মহিলা সুই/সাইড করেছে।রাইট?মনে পড়ে কিছু?
__________________________
লট/কানো মুখ নিয়ে প্রায় আটটার দিকে বাড়ি ফিরলো সূচনা।মিসেস আফিয়া আর ইসহাক সাহেব ড্রয়িং রুমে ই বসেছিলেন।সূচনার মুখ দেখে মুখ টি/পে
হাসলেন মিসেস আফিয়া। এগিয়ে যেয়ে সূচনাকে টে/নে নিজের কাছে বসালেন।ইসহাক সাহেব গ/ম্ভী/র স্বরে বললেন-

–‘ফ্রেশ হয়ে নাও বাইরে থেকে এসেছো।আফিয়া কিছু খেতে দাও।

এতটুকু বলেই উঠে চলে গেলেন উনি। সূচনা অবাক হলোনা।ইসহাক সাহেবের কথাবার্তা এমন গ/ম্ভীর বা উনি মানুষটা ই যে গ/ম্ভী/র স্বভাবের তা এখন বুঝে গেছে সে।তবে তার গম্ভী/র মুখশ্রীর আ/ড়ালে যে মায়ার পরিমান টাও অনেক বেশি তা ও বুঝা যায়। মিসেস আফিয়া দু চার কথা বলার পর ফ্রেশ হতে বলে রান্নাঘরে চলে গেলেন।সূচনা রুমে চলে আসলো।তিথি ইদানীং বেশিরভাগ সময় রুমেই থাকে।মেয়েটাকে কত বলে সূচনা যে একটু বাইরে আসো, সারাদিন রুমে থাকলে একঘেয়ে/মি চলে আসবে,পড়তে ও ভালো লাগবেনা তখন।কিন্তু সে রুমেই থাকে।ফ্রেশ হয়ে তিথির রুমেই গেল সূচনা।পড়ার টেবিলে বই খো/লা কিন্তু তিথির দৃষ্টি বইয়ের মধ্যে না।সামনে তাকিয়ে হাতে থাকা কলম নাড়া/চাড়া করছে।সূচনা পেছন থেকে যেয়ে জিজ্ঞেস করলো-

–‘সামনে কী নন্দিনী?

যেন চম/কালো তিথি।

–‘ আরে ভাবি তুমি কখন এসেছো?

–‘এই তো একটু আগেই।

–‘ভালোই করেছো এসেছো।একা একা ভালো লাগেনা।

–‘আমি আসলেই কী?তুমি সারাক্ষণ বইয়ে আর ইরা রুমে ডু/বে থাকে।আমিতো একাই থাকি।দিনাপু ই ভালো ছিল কত কথা বলতাম।হোক সেটা পড়ালেখা রিলেটেড অন্তত খালি বসে থাকতে হতনা।

–‘ইশশশ আমাদের ওপর অভিমান করেছ? শোনো আমি না এতক্ষণ ভাবলাম যে তুমি ঠিকই বলছো একটানা রুমে বসে পড়তে পড়তে একঘে/য়েমি চলে আসে আর পরতেও ভালো লাগেনা তখন। তাই পড়ার ফা/কে ফা/কে একটু ব্রে/ক নিব আর ঔ সময়টায় তুমি আর আমি আড্ডা দিব। ঠিক আছে না?

–‘ সত্যি?

–‘হুম।তবে ইরাপুর কিছু করতে হবে।কী যে হয়েছে আল্লাহ মালুম।

–‘তুমি ভেবনা সেটা নিয়ে।ছোট্ট মাথা/য় চা/প পড়বে বুঝলে।

–‘হু

–‘পড়ো তাহলে কিছু লাগলে ডে/কো।

–‘ঠিক আছে ডা/কব।

তিথির রুম থেকে ইরার রুমের দরজার সামনে দাড়ালো সূচনা। বারকয়েক ধা/ক্কা দিলে দরজা খুল/লো ইরা।সূচনার কেন যেন ইরাকে স্বাভাবিক মনে হলো না।সে হালকা করে উ/কি মা/রলো রুমে।তার রুমটা তে ও কেমন অন্ধ/কার, গুমো/ট ভাব।ইরার চোখ মুখ ফো/লা।কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই ইরা দু/ষ্টু হাসি হেসে বললো-

–‘তোমরা কি শুরু করেছো বলোতো।ভাইয়া আমাকে ফোন দিয়ে তোমার খবর নেয় তুমি আবার আমাকে খুঁ/টিয়ে খুটি/য়ে জিজ্ঞেস করে ভাইয়ার খবর নাও।একজন আরেক জনকে কল দিয়ে ই তো জিজ্ঞেস করতে পারো।নাকি অভিমান করেছো?তোমাদের অভিমানের চক্ক/রে আমি ফোন রিসিভ করতে করতে পা/গল হয়ে যাব মনে হচ্ছে।

সূচনা কিঞ্চিৎ ল/জ্জা পেল সাথে অবাক ও হলো ব/টে।প্রণয় ইরার কাছ থেকে খবর নেয় মানে?মানে তার মতো কি সে ও তাকে ফোন না দিয়ে ইরার কাছ থেকে লুকি/য়ে তার খবর নেয়?ইশশশ ভাব কত তার, নিজে ফোন দিলে যেন হা/ইট কমে যাবে। যত্তসব!

–‘ ভাবি?

–‘হ্য,,হ্যা।

–‘কোথায় হারা/লে?

–‘কোথাও না।ইরা তোমার সাথে কথা আছে।

–‘ভাবি আমার শরীর খা/রাপ লাগছে, এখন ঘুমিয়ে থাকি সকালে বলো।প্লিজ।

সূচনা মাথা নাড়ালো শুধু আর ইরা দরজা লাগিয়ে দিলো পলকেই যেন পালি/য়ে গেল সে।হিসাব মেলাতে পারলনা সূচনা কি হয়েছে ইরার?

#চলবে

#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_ Nazia_Shifa
#পর্ব_৩২
____________________________
–‘আমি একটা মেয়ের রে/প করেছি।মেয়েটা গরীব, পড়াশোনার জন্য ঢাকা তে থাকে। দেখতে পুরোই আ/গুন।তাই আর নিজেকে ক/ন্ট্রো/ল করতে পারিনি।সে আমার নামে মা/মলা দেয়ার হু/মকি দিয়েছে।আপনার কাছেই আসবে।এই নিন।কী করবেন জানেন তো।

সামনে বসে থাকা মাঝ বয়সী পুলিশ অফিসারের দিকে মাঝারি আকারের কালো রঙা একটা ব্যাগ টা এগিয়ে দিল ছেলেটা।বয়স তার ছাব্বিশ কি সাতাশ হবে।থুতনি তে হাত বুলাতে বুলাতে পুলিশ অফিসারটি
বললো-

–‘পুলিশ স্টেশনে বসে পুলিশ কর্মকর্তাকে আদনান হাসানকে ঘু/ষ দিচ্ছ।তোমার শা/স্তি কি হতে পারে জানো?

ছেলেটা অতি স্বাভাবিক গলায় বললো –

–‘ শা/স্তি কী সেটা জানি ভালো করে তবে আপনি যে শা/স্তি দিবেন না সেটাও আমি ভালো করে জানি।লোকমুখে আপনার কর্ম/কাণ্ডের কত সুনা/ম শুনেছি। টাকার বিনিম/য়ে তো মা/র্ডা/র কে সু/ইসা/ইড কে/স বানিয়ে দিতেও প/টু আপনি।সেখানে এটা তো ছোট্ট একটা জিনিস।করে দিন,আপনাও শান্তি আমারও শান্তি।

আদনান সাহেব কিয়ৎক্ষণ চুপ রইলেন।স্মৃতি হাতরা/লেন বোধহয়।বুঝতে পারলেন কথা বাড়ানো মানেই তার বি/পদ হতে পারে। তাছাড়া এসব তো আর নতুন না তার জন্য। রাজি হয়ে গেলেন।দু হাত টেবিলে রেখে ছেলেটার দিকে কিছুটা ঝু/কে নিচু স্বরে জিজ্ঞেস করলেন –

–‘ কত আছে?

–‘নিজেই দেখে নিন খুলে।

ব্যাগটা টে/নে নিয়ে খু/লে দেখলেন।উল্টে পাল্টে গুন/লেন।বা/কা হাসি দিয়ে বললেন-

–‘হয়ে যাবে।ডিটেলস বলে দিও।

–‘হুম।
____________________________
–‘আনান সিদ্দিকী মানুষ রূপী পি/শাচ একজন।আমি
ওনার নিজস্ব ****** হসপিটালের ম্যানেজার।ওনার সব কু/কর্মের সাক্ষী আমি।এতবছর ওনার ভ/য়ে বলতে পারিনি।উনি হু/মকি দিয়েছিলেন আমার পরিবারের ক্ষ/তি করবেন বলেছেন। আমার মেয়েকে রে/প করার ও হুম/কি দিয়েছেন।বছর ছয়েক আগে আমাদের হসপিটালে একটা মেয়ের ডে/ড ব/ডি আনা হয়েছিল, সুই/সাইড করেছিল সে।মেয়েটা দেখতে ভা/রী সুন্দর ছিল।পোস্ট/মর্টেম করার দায়িত্ব স্যারেরই ছিল আর উনি সেই মৃ/ত মেয়েটাকেই রে/প করেছেন।যেখানে মৃ/ত একটা মেয়েই ছার পায়নি সেখানে আমার মেয়ে তো,,,বাবা হয়ে মেয়েকে বি/পদে ফেলতে পারিনি।হসপি/টালের মর্গের পাহারাদরকেও মে/রে ফেলেছেন।কত ফে/ক রিপো/র্ট বানিয়েছেন উনি। জীবনের ভয় তো সবারি আছে।আমার ও ছিল তাই চুপ ছিলাম।কিন্তু এখন এখন আর না।আমি সবকিছু বলে দিব, আমার শা/স্তি হলেও সমস্যা নেই। শা/স্তি মেনে নিব।শুধু এই শয়/তানটা শা/স্তি পাক।

বিস্ফো/রিত নয়নে ক্লিপটা দেখছিলেন আনান সাহেব।ক্লিপটা তে কথাগুলো বলেছেন হাসিব সাহেব।সে কল্পনাতেও আনতে পারেননি হাসিব সাহেব এমন কিছু করবেন।রা/গে, চিন্তায় রীতিমতো কা/পতে লাগলেন উনি।বয়সও তো কম হয়নি। টেনশন এখন নেয়া দায় তার।

–‘কী ভাবছেন ডাক্তার সাহেব?(প্রণয়)

–‘ এসব কিছু মিথ্যা,ফা/সানোর চেষ্টা করছো।আমাকে বো/কা মনে হয়।

–‘আপনি নিজেও জানেন।তাই আপনার সাথে কথা বাড়াবোনা।কালকে সকালের মধ্যে এই ভিডিও ক্লিপটা ভাইরাল হয়ে যাবে শুধু। হাসিব সাহেবের সাথে থাকুন আপনি,তন্ময় চলো।
_____________________________

~অলস মেঘলা মন, আমার আবছা ঘরের কোণ
চেয়ে রইত,ছুঁতে চাইতো, তুমি আসবে আর কখন
শ্রান্ত ঘুঘুর ডাক,ধুলো মাখা বইয়ের তাক
যেন বলছে,বলে চলছে, থাক অপেক্ষাতেই থাক।

–‘বাহ আমার বির/হে দেখছি কা/তর হয়ে গেছ।

রাতের আকাশে মেঘের ভেলা।কার্তিক মাস এটা,একটা সময় পুরো কার্তিক মাস জুড়ে বৃষ্টি হতো তুমু/ল বেগে।কিন্তু এখন তেমন হয়না।অবশ্য আজকের আকাশ যেন বৃষ্টির বার্তা দিচ্ছে। মেঘেদের মিলন হয়েছে আকাশে,বাতাসের বেগও বাড়তি।দেখে মনে হচ্ছে তুমুল বর্ষণ হবে আজকে। সেই সময়টাতেই ব্যালকনিতে দাড়িয়ে গুন-গুন করছিলো উপরোক্ত গানটুকু।তখনই কানে এলো বাক্যটা।চকি/তে পাশে তাকাতেই দেখা গেল, আসমানী রঙা টি-শার্ট আর কালো রঙ এর ট্রাউজার পরে গ্রিলে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে প্রণয়।প্রথমবারের মতো সূচনা এবার আর বো/কা বনে গেল না। আবারও তার কানে আসলো-

–‘আমার বির/হে যে তোমার এই অবস্থা হয়েছে জানতামনা।

আনমনে ই সূচনা বললো-

–‘জানবেন কিভাবে? আপনি তো আর আমার খবর রাখেননি।

–‘ কে বলেছে খবর রাখিনি?তুমি আমাকে কত মিস করেছো আমি কিন্তু জানি।এমনকি কল্পনাও করো আমায় ঠিক যেমনটা এখন করছো।

–‘আপনি ঠিকই বলেছেন,আমি মিস করছি আপনাকে।আপনার বির/হে সত্যি কা/তর।শূন্য লাগে আপনাকে ছাড়া,কোনো কিছুতে মন বসতে চায়না,খালি বসে থাকতেও ভালো লাগেনা।তৃষ্ণা জেগেছে চোখে, যে তৃষ্ণা আপনাকে না দেখে মি/টবে না।আপনি আসবেন না সত্যি সত্যি?আপনি তো,,

বাকিকথা মুখেই রয়ে গেল,তার কল্প প্রণয় নেই।মি/লিয়ে গেছে কল্পনা তেই। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল সূচনা।এতক্ষণ যেন কোনো ঘোরের মধ্যে ছিল সূচনা।আমি কি সত্যি ই আপনাকে মিস করছি?চোখ বন্ধ করে মনকে প্রশ্ন করলো সে।উত্তর আসলো-

–‘তোমার অ/সুখ করেছে, যেই সেই অসু/খ না।মনের অসু/খ, হৃদকোমলের অসু/খ।সে অসু/খ সারাতে হলে তোমার তাকেই প্রয়োজন যে এই অসু/খের সূচনা ঘটিয়েছে।

ফট করে চোখ মেলল সে।দু হাতে মাথা চেপে ধরে নিজেই নিজেকে বললো-

–‘উফফফ পা/গল হয়ে গেছি আমি,সত্যি ই পা/গল হয়ে গেছি।একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ কখনোই এমন আচরণ করে না।কিন্তু প্রেমে পড়লে কোনো মানুষ কি স্বাভাবিক আচরণ করতে পারে? তাদের ব্যবহারে তো পরিবর্তন আসে, প্রেমের ছোয়া লাগলে।হায়!দম বন্ধ/কর অনুভূতি। এবার সত্যি শ্বাস আ/টকে যাবে বোধহয়।

ব্যালকনি থেকে এসে সোজা রুমে এসে শুয়ে পড়ল বিছানায়।মেঘ গর্জে উঠাল আচ/মকা।চ/মকে উঠল কিঞ্চিৎ সূচনা।হুট করে চিন্তা জে/কে বসল মনে।আনমনে ই বললো-

–‘উনি এখন কোথায়?কোনো কাজে বাহিরে নাকি হোটেলেই আছেন?ঠিক আছেন তো?

পরমুহূর্তে নিজেই নিজের মাথায় চা/টি মে/রে বললো-

–‘ সে বাচ্চা না,নিজেকে সামলাতে জানে।সামলে নিবে।

কাথা টে/নে টান হয়ে শুয়ে পড়ল বিছানায়।আজকে ঘুম ভালো হবেনা।হবে কীভাবে মন টা যে আজকাল ফাজ/লামো শুরু করেছে।কথা শোনেনা।তার মন অথচ পড়ে থাকে অন্য জায়গায়।
__________________________________
কানে কিছুর শব্দ আসতেই ঘুম হালকা হয়ে গেল সূচনার।চোখ বন্ধ করে রাখতে পারলা না। পিটপিটিয়ে চাইলো।কিসের শব্দ ঠাহর করতে কিয়ৎপরিমাণ সময় লাগল।অতঃপর যা বুঝল, বৃষ্টির ঝুম ঝুম শব্দ। হ্যা,,তাই তো মনে হচ্ছে। বৃষ্টি হচ্ছে তাহলে।কাথার ভেতর থেকে মুখ বের করে তাকালো।ড্রিম লাইট জ্বলছে রুমে।হাত বের করে বেড সুইচ টি/পে লাইট অন করলো।ফোনে সময় ও পরখ করে নিল।ভোর পাচটা প্রায়।আযান দিবে দিবে সময়। এখন ঘুমাতে গেলে আর উঠতে পারবেনা, নামাজ ও পড়া হবেনা।তাাই আর না শুয়ে উঠে দাড়ালো। বৃষ্টি হচ্ছে তাই ব্যালকনির উদ্দেশ্যেই পা বাড়ালো। ব্যালকনিতে পা রাখতেই বৃষ্টিট পানির ঝা/পটা আর হাওয়া ছুয়ে গেল সমস্ত কায়া, সাথে মনও।চোখ বন্ধ করে অনুভব করলো।আর একটু এগিয়ে যেয়ে গ্রীলে দুহাত রেখে রাস্তায় রাখল দৃষ্টি। জন শূন্য রাস্তা, মানুষ নেই একটাও।এখনও ভোরের আলো ফুটে/নি সম্পূর্ণ। রাস্তায় সোডিয়াম বাতি গুলো এখনও জ্ব/লছে।চারপাশে চোখ বুলাতে যেয়ে একটা জায়গা তেই স্থির হয়ে গেল চোখ।সূচনা হতবিহ্বল এর ন্যায় তাকিয়ে রইলো সেদিকে।কী দেখছে সে? পরমুহূর্তেই মনে পড়লো আবারও হেলুসিনেশন হচ্ছে তার।ধূর।এই হেলুসিনেশনের জ্বা/লায় এখন কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যে সেটাই ভোলার পথে।ব্যালকনি থেকে রুমে এসে সোজা গেল ওয়াশরুমে। ওযু করে এসে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজে দাড়ালো।নামাজ শেষে আবারও ব্যালকনিতে যেয়ে দাড়ালো। মিনিট পাচেক পার হতেই ঘাড়ে কারো হাতের স্পর্শ পেল।চম/কালো সে।এই সাত সকালে তার রুমে কে আসলো?রুমেট দরজা তো ল/ক করা।তাহলে?ভী/রু মনে ঘার ঘুরে তাকালো পেছনে।অস্ফুটে স্বরে উচ্চারণ করলো-

–‘প্রণয়?
_____________________________
–‘ মি.আদনান আপনাকে সাস/পেন্ড করা হয়েছে আর আপনাকে আদালতে তোলা হবে।শা/স্তি আদালত ই ঠিক করবে।

–‘মজা করছেন,, আপনি জানেন আমি কবে থেকে এই স্টেশনে আছি।

–‘ আপনি যখন থেকেই থাকেন না কেন সেটা দেখার বিষয় না আমাদের। আপনি আইন ল/ঙ্ঘন করেছেন।সাধারণ মানুষ পুলিশ কে বিশ্বাস করে তাদের কাছে সাহায্যের জন্য আসে আর আপনি সেই মানুষদের সাহায্য দেয়ার বদলে টাকা খেয়ে অপরাধীদের অপরা/ধ ঢেকে নিরপ/রাধীদের ই শাস্তি দেন।

–‘কীসের দায়ে বলছেন আপনি?প্রমাণ আছে?

–‘ আছে দেখেই তো বলছি এই নিন দেখুন।

একটা ক্লিপ ছাড়া হলো আদনান সাহেবের সামনে।যেখানে দেখা যাচ্ছে উনি মাঝরি আকারের কালো রঙা ব্যাগ থেকে টাকা গুনছেন।কালকের সেই ছেলেটাই তো দিয়েছিল।কিন্তু এটা তো তার ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্র অংশ। আর কিছু বুঝতে বাকি রইলো না।রা/গে হাত মুঠ হয়ে এলো তার।

–‘থানায় চলুন আমাদের সাথে।

–‘আমি একজনকে কল করতে চাই।সেই অনুমতি আছে জানি।সময় দিন।

–‘ঠিক আছে যান।

একটু দূরে যেয়ে কল লাগালো সেই ছেলেটাকে।কল দিতেই সাথে সাথে রিসিভ হলো যেন কলের অপেক্ষা তেই ছিল।ফোন রিসিভ হতেই কর্কশ গলায় আদনান সাহেব বললেন –

–‘ কু**** বা**চ্চা কী করেছিস তুই?কেন করেছিস?কে পাঠিয়েছে তোকে?

–‘স্যার বিশ্বাস করেন আমি নিজে থেকে কিছু করিনি। আমাকে হু/মকি দিয়েছিল উনি।

–‘কে?

–‘ডঃ আনান সিদ্দিকী।

আদনান সাহেব চম/কে উঠলেন।অবাকের চরম পর্যায়ে উনি।কিছু বলবে তার আগেই পেছন থেকে কেউ বললো-

–‘সময় শেষ স্যারের আরও কাজ আছে।চট্টগ্রাম যেতে হবে।

–‘কে,,কেন?

–‘****** হসপিটালের ওনাড় ড.আনান সিদ্দিকি বারোতলা থেকে পড়ে মা/রা গেছেন।সেই কে/সের যাচ করতেই যাবেন।

#চলবে

#প্রণয়ের_সূচনা
#লেখিকা_Nazia_Shifa
#পর্ব_৩৩
___________________________
–‘এমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেন?আমাকে দেখে কি এলি/য়েন মনে হচ্ছে?

চোখ বড় বড় করে প্রণয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল সূচনা।মূলত বুঝতে সে কি আদৌ আছে নাকি আবারও কল্পনা করছে।তার এমন চাহনি দেখেই কথাটুকু বলা হয়েছে তাকে। কল্পনাই হবে, তার মাথা যে গেছে একেবারে।এবার আর সত্যি ভাববে না।অনেকটা ভাব নিয়ে দুইহাত কোমরে রেখে সূচনা বললো-

–‘ দেখুন আমি জানি, আপনি আবারও আমাকে জ্বালাতে এসেছেন কিন্তু বাস্তবে আসেননি।আমার হেলুসিনেশন হচ্ছে আবার।তবে এবার আর বো/কা হবনা।কি সমস্যা আপনার বলেন তো?জ্বালা/চ্ছেন কেন এভাবে? যান তো।

প্রণয় ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো-

–‘মাথা কী গেছে? কী সব বলছো? হেলুসিনেশন মানে আর কোথায় যাব?মাত্রই তো আসলাম।

–‘আচ্ছা কোথা থেকে এসেছেন শুনি?

–‘কোথায়,গিয়েছিলাম আমি?চট্টগ্রাম তো ফিরব তো সেখান থেকেই।

–‘মোটেও না হতেই পারে না। আপনি যান তো,, মেজা/জ খা/রাপ হয়ে যাচ্ছে।সাত সকালে শুরু হয়ে গেছে জ্বা/লাতন।

–‘ঠিক আছে গেলাম।

–‘আপনি দরজা দিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?

সূচনার সামনে থেকে সরে ব্যালকনির দরজার দিকে পা বাড়াতে নিলেই বলে উঠল সূচনা।প্রণয়ের এবার ভ্রু জোড়া আরও কু/চকে এলো বির/ক্তি আর অবাক হওয়ার কারণে। ঘুরে তাকালো সূচনার দিক।কিছু টা বির/ক্তি মাখা কণ্ঠে ই বললো-

–‘দরজা দিয়ে কোথায় যাচ্ছি মানে?দরজা ছাড়া রুমে যাব কিভাবে?

–‘কেন?হুটহাট আমার কল্পনায় চলে আসেন কিভাবে?দরজা কেন লাগবে?ঠা/স করে চলে যাবেন চোখের পল/কে।

এবার প্রণয় বিড়ম্বনায় পড়ল,সূচনা কি মজা করছে?নাকি সত্যি ই সে এমন উদ্ভট কথাবার্তা বলছে?প্রণয় বলেই ফেললো –

–‘ তুমি দেখি সত্যি ই পা/গল হয়ে গেছ।তোমার বর এতদূর থেকে এসেছে কোথায় তার হাত পা টি/পে দিবে,মাথার চুল টে/নে দিবে তা না করে উল্টাপাল্টা ব/কথা আরও মাথা খাচ্ছো।ধূর।

ধুপ/ধাপ পা ফেলে ব্যালকনি থেকে রুমে আসলো প্রণয়।সে আসার পরে সূচনা ও চলে আসলো।রুমে এসে দেখল ফা/কা রুম, তাই সত্যি ভেবেই নিয়েছিল আবারও প্রণয়….কিন্তু ভাবনা ও তার পূরণ হলো না।তার আগেই চোখে পড়ল সোফার ওপর রাখা ব্যাগটায়।এটা নিয়েই তো প্রণয় গিয়েছিল সেদিন।তার মানে..তার মানে প্রণয় সত্যি ই এসেছে আর সে কিনা এতক্ষণ।ইশশশশ!কী এক বা/জে অবস্থা।সূচনা স্থির হয়ে গেল যেন।কি সব উল্টা পাল্টা ব/কেছে সে।প্রণয় জেনে গেল সব,কোথায় সেদিনের ব্যবহারের জন্য প্রণয় তার অভিমান ভা/ঙাবে সে জায়গায় এমন বো/কার মতো এক কাজ করে বসলো।’তার হাত ঘা/ড়ে স্পর্শ করেছিল,তখনই তো বোঝার কথা,বুঝবি কিভাবে মাথা মো/টা একটা।এসব তোর দ্বারাই সম্ভব সূচি।’নিজেই নিজেকে বললো সূচনা।কী করবে সে ভেবে কুল কি/নারা পাচ্ছে না।তবে মস্তিষ্ক ক/ড়া ভাবে জানান দিচ্ছে-এখন তার সামনে না থাকাটাই উত্তম, পরেরটা পরে দেখা যাবেনি।কিন্তু মন বলছে- থাক না কী হবে?এতদিন যার অপেক্ষায় ছিলাম,যাকে দেখার তৃষ্ণা জেগেছিল চোখ জোড়ায়,যার জন্য ছট/ফট করছিল মন তাকে না দেখার ভাবনা আঁট/ছিস।এতটা বো/কা তুই?উফফ,,মন মস্তি/ষ্কের এই মত বি/রোধের খেলায় অসহায় মুখে দাড়িয়ে রইলো সেখানেই।ততক্ষণে প্রণয়ের পদার্পণ ঘটেছে।সূচনা খেয়াল করেনি, হয়তো এখনও ভাবছে সে যাবে না থাকবে?তার মুখাবয়ব দেখে প্রণয় আন্দাজ করতে পেরেছে সে ভাবনায় মত্ত।কোনোরকম কথা বার্তা ছাড়াই আ/চমকা সূচনার হাত ধরে ফেলল প্রণয়।আত/কে উঠল সূচনা।প্রণয়কে সামনে দেখতে পারল তাও তার হাত তার হাতে বন্দি।কেমন যেন অনুভূত হলো।শ/ক্ত করে হাত ধরেছে প্রণয়।ছাড়ানোর চেষ্টা করার আগেই প্রণয় টা/নতে টা/নতে বিছানার সামনে নিয়ে গেল।ধা/ক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল সূচনাকে।সূচনা অবাকের ওপর চর/ম অবাক।কী করছে প্রণয় যেন সব মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।প্রণয়ও ধপ করে শুয়ে পড়ল তার পাশে, একেবারে তার গায়ে/র সাথে গা মি’লিয়ে।কে/পে উঠল সূচনা।প্রণয়ের গা গর/ম প্রচন্ড রকমের।সব দ্বিধা, লাজ -লজ্জা ভুলে চিন্তিত গলায় বললো-

–‘ আপনার গা অনেক গর/ম,জ্বর এসেছে।

–‘হু।

অস্ফুটস্বরে প্রণয় জবাব দিল।পূর্বের ব্যায় চিন্তিত ঘাব/ড়ে যাওয়া কণ্ঠে ই সূচনা বললো-

–‘কী হু?শরীর পু/ড়ে যাচ্ছে। কবে থকে জ্বর?মেডিসিন নিয়েছেন কোনো?

–‘আসার সময় বৃষ্টি তে ভিজেছিলাম, আমার গা/য়ে বৃষ্টি সহ্য হয় না,জ্বর উঠে যায়।

–‘আশ্চর্য,, আপনি জানেন তাহলে কেন ভিজলেন বৃষ্টি তে?

–‘কিছু জিনিস মনে পড়ছিল,খুব করে।মেঘ জমেছিল
বু/কে। বৃষ্টি দেখে মনে হলো বু/কে জমা মেঘগুলোও পরিষ্কার হয়ে যাবে বৃষ্টি তে ভিজলে তাই ভিজেছি।

চোখ বন্ধ রেখে কথাগুলো বললো প্রণয়।কথাগুলো বলার সময় তার স্বর কাপ/ছিল সূচনা টের পেল। কিছু বললো না আর।শব্দহীন ভাবে বিছানা থেকে উঠে ওয়াশরুমে গেল।জগে করে পানি এনে সাইড টেবিলে রাখল।একটা সুতি কাপর মতো পানিতে ভিজিয়ে কপালে চে/পে ধরলো প্রণয়ের।কপালে স্পর্শ পেতেই চোখ পিটপিটিয়ে চাইলো প্রণয়।তার দৃষ্টিতে দৃষ্টি পড়তেই সূচনা বিব্রত বোধ করলো একটু।তার দিকে তাকিয়েই প্রণয় আলতো স্বরে বললো –

–‘এত কষ্ট করতে হবেনা, একটু ঠিক মতো ঘুমালে ই ঠিক হয়ে যাব।

–‘জলপট্টি দিচ্ছি, বড় কোনো কাজ করছিনা।চুপ করে শুয়ে থাকুন।

তার কথার পিঠে প্রণয় কিছু বললোনা।সূচনাও চুপ রইলো।মিনিট বিশেক পার হলো কিন্তু জ্বর কমলো না, বরং বাড়লো।কুঁকড়ে শুয়ে আছে প্রণয়,সূচনা উঠে যেয়ে কাবার্ড থেকে একটা কম্ফোর্টার এনে গায়ে জড়িয়ে দিল তার।আলতো স্বরে ডা/কলো-

–‘শুনুন।

উত্তর এলোনা কোনো।আবারও ডাক দিল-

–‘শুনছেন?

জবাব না পেয়ে ভাবল প্রণয় ঘুমিয়ে পড়েছে বোধহয়। আর ডাকলো না।থাক ঘুমাক কিন্তু মেডিসিন না নিলে তো জ্বর কমবেনা।ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে মেডিসিন বক্স।সেটা বের করে জ্বরের মেডিসিন খুজে নিল সূচনা ।সারারাত জার্নি করে এসেছে, সকালে এসেও তো কিছু খায়নি।খালি পেটে তো মেডিসিন দেয়া যাবেনা।
কী করবে?একটু ভেবে ঠিক করল স্যুপ বানিয়ে দিলে কেমন হয়? হাতের বক্সটা রেখে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল সূচনা। একটু বাদে হাতে স্যুপের বাটি নিয়ে ফিরল।তার যখন জ্বর হত তখন নাকি একমাত্র স্যুপটাই খেত।তাই এটাই মাথায় এসেছে।স্যুপের বাটিটা টেবিলের ওপর রেখে পাশে বসল প্রণয়ের। প্রণয়ের দিকে তাকাতেই বু/কটা যেন ভারি হয়ে গেল।কান্না পাচ্ছে তার? কিন্তু কান্নার কি আছে? সামান্য জ্বরই তো হয়েছে। সিজন চেন্জ হয়েছে এখন প্রায় সব ঘরেই জ্বরের অবস্থান। গতকাল দিনাকে ফোন দিয়েছিল সে ও তো বলল -জাওয়াদের জ্বর হয়েছে।যদিও সূচনার মনে হয়েছে দিনা অনেকটা চিন্তিত, তার গলার স্বর তাই বলছিল।সে উল্টো ভাবছিল -এতটুকু তেই কেমন চিন্তিত হয়ে গেছে দিনা। কিন্তু এখন বুঝতে পারছে কারণ সে নিজেও একই অবস্থায় আছে। প্রণয়কে ডেকে তুললো,অর্ধেক টা স্যুপ খায়িয়ে দিয়ে মেডিসিন দিতেই আবারও শুয়ে পরল প্রণয়।স্যুপের বাটিটা রান্নাঘরে রেখে আবারও রুমে আসলো সূচনা।কী করবে সে?কেউ তো ঘুম থেকে উঠেইনি।তিথি উঠেছে শুধু। সে রান্নাঘরে যাওয়ার সময় ই তিথিকে দেখেছিল ড্রয়িং রুমে হাটাহাটি করতে।সূচনা কিছু বলার আগেই জিজ্ঞেস করে বসলো-

–‘ভাবি ভাইয়া কি ঘুমাচ্ছে?

সূচনা অবাক হয়ে তাকিয়েছিল। তার চাহনি দেখে তিথি বললো –

–‘ওহ আমি জানি,ভাইয়া চলে এসেছে। ভাইয়া এসে ইরাপুকে কল দিয়েছিল কিন্তু আপুর ফোন অফ দেখে আমাকে কল দেয় পরে আমিই সদর দরজা খুলে দিয়েছিলাম। ভাইয়া কি ঘুমাচ্ছে? স্যুপ কার জন্য বানিয়েছিলে এত সকালে?

–‘আসলে তোমার ভাইয়ার জ্বর হয়েছে।

প্রণয়ের জ্বরের কথা শুনে তিথি অস্থির হয়ে গেলেও সূচনা আশ্বাস দিয়েছে।তিথিকে চা বানিয়ে রুমে দিয়ে এসেছে।সে পড়ছে আর এখন তার সামনে বসে থাকা মানে তার পড়ায় ব্যাঘাত ঘটানো।অগ্যতা রুমে এসে পড়েছে।বড় কথা প্রণয়কে একা রেখে যাওয়ার কথাটা মাথায় ই আসেনি তার।প্রণয়ের পাশে বসেই এসব ভাবছে সূচনা।তার দৃষ্টি প্রণয়ে নিবদ্ধ। সে ভাবছে- পরিস্থিতি কীভাবে কীভাবে বদলে যায়। কিছুদিন আগেও তার জ্বর হত আর তার মা শিয়রে বসে থাকত তার,মাথায় হাত বুলিয়ে দিত।আর আজকে সে বসে আছে।মিসেস দিশা প্রায় ই তাকে বলতেন-

–‘শোন সূচি,পরিস্থিতি কিন্তু সবসময় একরকম থাকেনা।এখন যেমন আছিস সবসময় তেমন থাকবিনা। একদিন তোরও বিয়ে হবে, সংসার হবে। পরিস্থিতি অবুঝকেও বুঝদার করে গড়ে তোলে।যে মানুষটা একসময় অন্যের ওপর নির্ভর করে বাঁচত একটা সময় সে মানুষটাকে ঘিরেই একটা পরিবার গড়ে ওঠব।সবই পরিস্থিতির খেলা।’

আসলেই ঠিকই তো বলতেন। পরিস্থিতির খেলা সব।প্রণয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে দেয়াল ঘড়িতে সময় পরখ করে নিল।পৌনে সাতটার মতো বাজে।প্রণয়ের চুলে বিচরণ করা হাতটা হঠাৎ থেমে গেল সূচনার।সে থামায়নি,প্রণয় ধরেছে তার হাত।দেয়াল ঘড়ি থকে দৃষ্টি এসে ঠেকল প্রণয়ের পানে।প্রণয় বারকয়েক পলক ফেলতে ফেলতে সূচনাকে দেখছে।তার দিকে তাকিয়ে থেকে হালকা হেসে বললো-

–‘তোমার হাতে জাদু আছে,,মাথাটা হালকা লাগছে এখন।

সূচনা খুশি হয়ে গেল বোধহয়, ঠোট এলিয়ে হাসলো। কিন্তু সেই হাসি ক্ষণিকেই বিস্ম/য়ে পরিণত হলো।প্রণয় একহাতে তার কোমর আ/কড়ে ধরে মুখ গুঁ/জল তার পে/টে। মৃদু স্বরে বললো-

–‘ ঘুম পেয়েছে জান। তুমি সাথে না শুলে ঘুমাব না।

সূচনার কিংক/র্তব্যবিমুঢ় হয়ে গেছে। প্রণয় আবার তার কথাটুকু আওড়ালো।সূচনা কোনো রকম উত্তর দিল-

–‘আ,,আপনি ঘুমান,আমি ঘুমাব না।

–‘তোমাকে ঘুমাতে বলেছে কে?ঘুমাব তো আমি।

–‘তাহলে আমি শুতে যাব কেন?ছাড়ুন।

–‘বেশি কথা বলো তুমি,,জ্বর এসেছে তাই বলে যে দুর্বল হয়ে গেছি ভেবোনা। এটুকু জ্বরে মিয়িয়ে যাব না আমি। শোও,,না হয়।

প্রণয় সরে গেল সূচনা কে ছেড়ে দিয়ে। প্রণয়ের পাশে ই কিঞ্চিৎ দূরত্ব রেখে শুয়ে পরল সূচনা।প্রণয় এক হাত দিয়ে সূচনাকে কম্ফোর্টার সহ টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।ফিচেল কণ্ঠে বললো –

–‘আমার ঠান্ডা লাগছে।

প্রণয়ের সংস্পর্শে আসতেই যেন সূচনার ভেতরটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছে একদম।নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে কম্পন রত কণ্ঠে বললো –

–‘আ,,আমাকে ছা,ছাড়ুন,আ,,আমি আরেকটা ক,কম্ফোর্টার এনে দিচ্ছি।

–‘আমার কম্ফোর্টার লাগবে না, তোমাকে লাগবে।এই ঠান্ডা কম্ফোর্টারে না তোমার নরম কায়ার উষ্ণ আলি/ঙ্গনে কমবে।ডোন্ট মুভ জান,আই নিড ইউ,আই নিড ইউর আর্মস।

ব্যস এটুকুই যথেষ্ট ছিল,,সূচনা জমে যেন ঠান্ডা হয়ে গেছে। নড়া/চড়া বন্ধ হয়ে গেছে তার।একদম গুটিশুটি মে/রে শুয়ে রইলো।প্রণয় দুহাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সূচনাকে। গালে ঠোঁ/ট ছুয়িয়ে বললো-

–‘ আই ফিল পিস নাও।
____________________________
সকাল দশটা।ড্রয়িং রুমে বসে টিভি দেখছেন ইসহাক সাহেব। টিভিতে নিউজ চলছে, কোনো এক অফিসারকে সাসপেন্ড করে দেয়া হয়েছে,বহু বছর ধরে সে জনসেবার নামে ঘুষ খেয়ে যাচ্ছিল।তার নিচে দিয়ে ই হেডলাইন দেখা গেল। **** হসপিটালের মালিকের মৃত্যু হয়েছে বারো তলা থেকে পড়ে।সেটা সুই/সাইড ভাবছে পুলিশরা কিন্তু খতি’য়ে দেখবেন সত্যি টা আদৌ কি।ইসহাক সাহেব টিভ অফ করে দিলেন। আফসোসের স্বরে বললেন-

–‘জনগনের নিরাপত্তা দেয়া হয় পুলিশদের হাতে আর তারা ই সেই নিরাপত্তা হরণ করে।

–‘সবাই তো এক না মামা,,এসব অফিসারদের ভিড়ে কিছু সৎ অফিসার ও আছে।না থাকলে তো এই অফিসারের সত্যি টা বের করতে পারত না।

সোফায় বসতে বসতে ইসহাক সাহেব কে বললো প্রণয়।তাকে দেখে ইসহাক সাহেব বললেন –

–‘সেটা ঠিক বলেছিস,,সত্যি ই সে বাহাদুর বলতে হয়।কিন্তু এমন একজন দুইজন ফ্রড অফিসারদের জন্য সবাইকেই খা/রাপ বানিয়ে ফেলে।যাক সেসব তোর জ্বর কমেছে?

–‘হ্যা ঠিক আছি এখন।ঔই অফিসারটা কিন্তু আমার বন্ধু মামা।

–‘কী বলিস?

–‘হ্যা।

–‘তাহলে তো দেখা করতে হয়।

–‘হবে, সে এখানেই জয়েন হয়েছে।

–‘আচ্ছা,,নাম কী তার?

–‘মুগ্ধ।
_________________________
–‘কন্গরেচুলেশন মি.মুগ্ধ। ডিউটিতে জয়েন হয়েই এত বড় একটা কাজ করেছেন আপনি। ওয়েল ডান।

উপরোক্ত কথা শুনে মুগ্ধ ঠোট এলিয়ে হাসলো।কৃতজ্ঞতার সহিত বললো-

–‘শুকরিয়া স্যার। দোয়া আর বিশ্বাস রাখবেন যেন সামনে আরও ভালো কিছু করতে পারি।

–‘অবশ্যই।রেগুলার হয়ে জয়েন হবে কবে?

–‘যবে আপনি বলবেন।

–‘আমি তো বলব কালকেই হতে। তোমার মতো ডেডিকেটেড অফিসার কে শীঘ্রই চাই আমাদের ডিপার্টমেন্টে।

–‘ঠিক আছে তাহলে।

পুলিশ স্টেশন থেকে বেড়িয়ে আসলো মুগ্ধ। বাইরে ফোন বের করে কল লাগালো কাউকে।ফোন ওপাশ থেকে রিসিভ হলে মুগ্ধ হাসিমুখে বললো-

–‘ভাই কাজ হয়ে গেছে,তোর প্ল্যান কাজ করে গেছে।এবার তো শান্তি পাবি তুই।

ওপাশ থেকে…

–‘হ্যা,,,তোর ক্রেডিট।

–‘মজা নিসনা,, প্ল্যান তোর ক্রেডিট ও তোর আমি তো একটু অভিনয় করেছিলাম।

–‘ হুম। মামা আপনার কাজে মুগ্ধ হয়ে গেছেন মি.মুগ্ধ। দেখা করতে চায় বলছেন।

–‘কী বলিস?সত্যি?

–‘ হ্যা।

–‘আচ্ছা দেখা তো অবশ্যই করব তাকেও তো প/টাতে মানে মুগ্ধ করতে হবে। কারণ তোর মামা তো আমারও মামা হেহেহে।

–‘রাখ,,বাসায় যা,,ঘুমা।

–‘হুম।

ফোন কে/টে বু/কে হাত দিয়ে লম্বা শ্বাস নিল মুগ্ধ। কি বলতে কি বলে ফেলছিল।আর একটু হলেই শেষ।তবে খুশি খুশি লাগছে তার অনেক।মে/জাজ একেবারে ফুর/ফুরে।
_________________________
–‘আমি একটু ছাদে যাব,,বৃষ্টি তে ভিজতে দিবেন আজকে?

–‘অসময়ের বৃষ্টি তে ভিজলে জ্বর উঠবে।

–‘বেশি না একটু।প্লিজ।

–‘ঠিক আছে তবে আমিও যাব।

–‘কে,,কেন?

–‘তুমি বৃষ্টি তে ভিজবে আমি দেখব তোমাকে।

#চলবে