প্রেমতরী পর্ব-১১

0
332

#প্রেমতরী
পর্ব :- ১১
.
আজ প্রায় ১ মাস হলো মিষ্টি সূর্যের আলো চোখে দেখে না।
মা বাবার মৃত্যুর পর মিষ্টি নিজেকে মা বাবার সেই অন্ধকার ঘরে আটকে ফেলে।
আজ পর্যন্ত কেউ মিষ্টিকে ওই ঘর থেকে বের করতে পারে নি।
মায়ের বিছানার পাশে বসে নিজে নিজে কি জানি বলে।
আর একটু পর পর বাবার কাছে ক্ষমা চায়।
মামুন, জেঠু জেঠিমা কারো সাথেই মিষ্টি ওতো বেশি কথা বলে না।
সকালে কাজে যাওয়ার আগে মামুন মিষ্টিকে খাইয়ে দিয়ে যায়, দুপুরে জেঠিমা, আর রাতে মামুন এসে আবার খাইয়ে দেয়।
খাবার শেষে মামুন মিষ্টির কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।
এভাবেই দিনগুলো চলছে।
এরমধ্যে মামুনের মা একটা আইডিয়া খুজে বের করে।
মিষ্টিকে নিয়ে বাহিরে কোথায়ও থেকে ঘুরে আসতে। যেনো আলো বাতাসে মেয়েটা কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
যেই বলা সেই কাজ, মামুন মিষ্টিকে কোলে করে এনে গাড়িতে বসায়।
প্রায় সপ্তাহ খানেরকের জন্য ফুফুর বাড়িতে রওয়ানা দেয়।
ফুফুর বাড়িতে পুরো ঘর ভর্তি মানুষ, দাদুও ফুফুর সাথে ওখানেই থাকে, এতো মানুষের মধ্যে থেকে যদি শোকটা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারে।
.
গাড়ি থেকে নামার পর দাদু এসে মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে।
মিষ্টি চুপচাপ দাড়িয়ে আছে।
মিষ্টিকে সাথে নিয়ে দাদু ঘরে প্রবেশ করে।
এতগুলো মানুষকে দেখে মিষ্টি কিছুটা বিরক্তবোধ করে।
মিষ্টিকে ভেতরে পাঠিয়ে দিয়ে মামুন বাহিরে চলে আসে।
একটু পর ভেতর থেকে নিশি বেরিয়ে আসে।
নিশি হলো মামুনের ফুফাতো বোন, কানাডায় বাবার কাছে থাকে, ওখানেই লেখাপড়া করে।
বছরে দু-একবার বাড়ি আসে। কয়েকদিন হলো নিশি বাড়িতে এসেছে।
মামুনকে দেখে নিশি এগিয়ে আসে।
–ভাইয়া কেমন আছো? কতদিন পর তোমার সাথে দেখা।
–এইতো ভালোই, তা এতদিন পর কোথা থেকে উদয় হলেন আপনি?
–৩ দিন হলো বাড়ি আসলাম। তোমাদের বাড়ি যাবোই ভাবছিলাম, ভালোই হলো তোমরা চলে এলো। মামা মামী কেমন আছে?
–সবাই ভালো আছে।
–ছোট মামা আর ছোট মামীর মৃত্যুর খবর শুনেও আমি আসতে পারলাম না। আমার ভিসা জটিলতার কারনে আসা সম্ভব হয়নি। খুবই কষ্ট লাগলো, মিষ্টি আপু কোথায়?
–পেছনে তাকিয়ে দেখ।
নিশি পেছনে তাকিয়ে দেখে মিষ্টি হনহন করে তার দিকেই এগিয়ে আসছে,
মিষ্টি কোনো কথা না বলে নিশিকে পাশ কাটিয়ে মামুনের সামনে আসে।
এবং মামুনের হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে যায়।
–এটা কি হলো?(মামুন)
–বাড়ি চল, এখানে আমার ভালো লাগছে না।(মিষ্টি)
–যাবো তো, মাত্রই তো আসলাম। এভাবে চলে যাওয়া যায় নাকি? দাদু, ফুফু এরা কি ভাববে।
–তাহলে আমার সাথে থাক, আমাকে একা ফেলে যাবি না।
–আচ্ছা যাবো না, চল নিশি এসেছে, ওর সাথে গল্প করি।
–এখন না, পরে।
–আচ্ছা চল দাদুর কাছে,
–বললাম না পরে।
–কি করবি তাহলে?
–এখানে বসে থাক, বাহিরে যাওয়া লাগবে না।
–কি মসিবত, বেড়াতে এসেও এখন রুমের মধ্যে বসে থাকতে হবে?
–আচ্ছা যা,
–রাগ করে বললি?
–আমি রাগ করবো কেনো? আমি রাগ করার কে?
–বাবুলে, আমাল বাবুটা লাগ কত্তে?
–ঢং করিস নাতো, যা।
–এতো রেগে যাচ্ছিস কেনো? কি হয়েছে?
–কিছু হয় নি।
–আমায় বলনা কি হয়েছে।
–তুই একদম নিশির সাথে কথা বলবি না।
–কেনো?
–আমি বলছি তাই।
–ও আমাদের ফুফাতো বোন হয়, কথা বললে কি সমস্যা?
–কোনো সমস্যা না, যা বল কথা।
–আজব তো, এটা কেমন কথা?
–দেখ মামুন, আমার ভালো লাগছে না।
–চল বাহির থেকে ঘুরে আসি, আকাশটা মেঘলা, বৃষ্টি হবে মনে হয়। ভিঝবি?
–না।
–তুইতো বৃষ্টিতে ভেজার জন্য পাগল ছিলি, এখন ভিজবি না?
–না, তুই যা, গিয়ে ভিজ। আমার ইচ্ছে করছে না।
–একটু বাহিরে আয়, দেখবি ভালো লাগবে। আয় আমার সাথে।
–জোর করিস না, তুই যা।
–না, তুইও চল। আয়….।
–বললাম তো যাবো না, কেনো বিরক্ত করছিস, যা এখান থেকে।
–আমি আছি তো, দেখবি তোর ভালো লাগবে। চল…।(বলেই মামুন মিষ্টির হাত ধরে বাহিরে আসার জন্য দরজার দিকে পা বাড়ায়)
ওমনি মিষ্টি এক ঝাটকায় মামুনের হাত ছাড়িয়ে নেয়।
মামুনের হাতটা গিয়ে লাগে দরজায়।
ব্যথায় শব্দ করে ওঠে মামুন।
–কি হয়েছে দেখিতো, লেগেছে?(মিষ্টি)
–না, লাগেনি।
–হাতটা দেখা।
–কিছু হয়নি। তুই রুমে চলে যা, আমি আর বিরক্ত করবো না।
মামুন সোজা বাহিরের দিকে হাটা দেয়।
কিছু বলতে চেয়েও মিষ্টি বলতে পারে নি। দরজার সামনে দাড়িয়ে দেখছে মামুনকে, মামুন সোজা বাড়ির ছাদে চলে গেছে।
মিষ্টি জানালার গ্রিল ধরে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে। চারদিক কেমন যেনো অন্ধকার হয়ে আসছে।
মনে হচ্ছে এখনই ঝুম বৃষ্টি নামবে।
.
–ভাইয়া, ছাদে কি করছো? বৃষ্টি আসবে। ভেতরে চলো, আম্মু তোমায় ডাকছে।(নিশি)
–একটু পর আসতেছি, তুই যা।(মামুন)
–ভাইয়া, তোমার কি মন খারাপ?
–নাতো, মন খারাপ হবে কেনো?
–তা তো জানি না, হয়তো মিষ্টি আপুর সাথে ঝগড়া হয়েছে।
–ধুর পাগলি, ঝগড়া হবে কেনো? এমনি আকাশটা মেঘলা হয়ে আছে, তাই দেখতে চলে এলাম।
–মিষ্টি আপু ওমন মন মরা হয়ে থাকে কেনো?
–চাচা চাচির মৃত্যুর শোক ও এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি, একদমই চুপ হয়ে গেছে। কারো সাথে তেমন একটা কথাও বলে না। ওকে এখানে নিয়ে এলাম যাতে এত মানুষের মাঝে থেকে যদি কিছুটা পরিবর্তন হয়। কিন্তু ও তো রুম থেকেই বের হচ্ছে না।
–একটু সময় নাও, দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছে।
–হুম
–আচ্ছা আমি যাই, আম্মু রান্নাঘরে একা।
–আচ্ছা যা।
–বৃষ্টিতে ভিজো না কিন্তু।
–তুই যা।
নিশিকে বিদায় দিয়ে মামুন আনমনে আকাশের দিকে চেয়ে আছে।
কিছুক্ষণ পর মিষ্টি ছাদে আসে।
–মামুন…..

–বৃষ্টি হচ্ছে, ভেতরে চল।

–কিরে, কথা শুনতে পাচ্ছিস না?(মিষ্টি মামুনের হাত ধরে সামনের দিকে ঘুরায়)
–কি হয়েছে?
–মামুন, তুই কাঁদছিস? কি হয়েছে?
–কই কিছুনা তো।
–কি হয়েছে আমাকে বল।
–আমি আর পারছি না। খুব ক্লান্ত মনে হচ্ছে নিজেকে।
–আমি কখনো তোর চোখে পানি দেখিনি, কেনো যেনো আমার নিজেই কান্না চলে আসতেছে, কি হয়েছে আমায় বল।
–এই পাগলি, তুই কাঁদবি কেনো? আমার কিচ্ছু হয়নি। আমার তো নিজের ব্যর্থতার কারনে চোখে পানি চলে আসলো। তুই কেনো কাঁদবি, পাগলি।
–ব্যর্থতা? কিসের?
–চাচিকে কথা দিয়েছিলাম। তোকে কখনো কষ্ট দিবো না,তোর কষ্ট হয় এমন কোনো কাজও করবো না। সবসময় হাসিখুশি রাখবো। কিন্তু আমি কিছুই করতে পারছি না।
–কে বলছে তুই পারছিস না? তুই তো আমার সবকিছুরই খেয়াল রাখিস। আমাকে হাসিখুশি রাখার চেষ্টা করিস। আমি কি কখনো তোকে কোনো অভিযোগ করেছি?
–না করিস নি। করতি, যদি তুই আমার সেই মিষ্টি হতি। আমি আমার সেই মিষ্টিকে হারিয়ে ফেলেছি, যে আমার পুরো বাড়িটা মাতিয়ে রাখতো, সবার এত খেয়াল রাখতো, দুই পরিবার একাই সামলে নিতো। এই মিষ্টি আমি চাই না, আমি আমার পুরোনো মিষ্টিকে ফেরত চাই।
বৃষ্টির পানিতে কারোর চোখের পানি দেখা যাচ্ছে না, তবে দুজনই ভালোভাবে বুঝতে পারে যে দুজনই কাঁদছে।
–ঘরে চল, তোর বৃষ্টির পানিতে ভেজা বারণ, জ্বর চলে আসবে। আয়।
–তুই যা, আমি যাবো না।
–চল না।
–না।
মিষ্টি কোমড়ে আচল গুজে মামুনের হাত ধরে টেনে রুমে নিয়ে আসে।
–যা বাথরুমে ঢুক, কথা বললে কথা কানে যায় না? এক কথা বার বার বলা লাগে কেনো?
মিষ্টি মামুনকে বকতে বকতে গোসল করিয়ে দেয়,
মামুন অবাক চোখে মিষ্টির দিকে চেয়ে আছে।
অনেকদিন যাবত মিষ্টির এই শাসনগুলোকে মিস করছিলো। এতদিন তেমন কোনো কথাই বলেনি।
আর আজ মিষ্টি বকাবকি করতেছে। এটাই চাচ্ছিলো মামুন।
একটু পর মিষ্টি নিজে ফ্রেস হয়ে চুলগুলো মুছতে মুছতে বাহিরে আসে।
–কিরে? তুই এখনো মাথাই মুছিস নি। এভাবে বসে আছিস কেনো?
–তুই মুছে দিবি, তাই বসে আছি।
–আমার হইছে এক জ্বালা, ওনারে গোসল করাই দিতে হবে, মাথা মুছে দিতে হবে। এখন বলেন আপনাকে খাওয়াইও দেই।
–দে।
–আমার ঠেকা পরছেতো এত বড় দামড়া ছেলেরে খাওয়াই দিমু।
–আচ্ছা থাক লাগবে না। আমি খেয়ে নেবো।
–ডং করিস না, বস এখানে। আমি ফুফুকে বলে খাবার নিয়ে আসি।
.
মিষ্টি দ্রুত পায়ে ফুফুর কাছে চলে যায়।
মামুনের চোখ দিয়ে আনন্দের অশ্রু ঝরে পড়ে।
আজ কতদিন পর মিষ্টি তার সাথে এভাবে কথা বলছে।
মিষ্টির সাথে খুনসুটিতে এভাবেই দিনটা পার হয়ে যায়।
হঠ্যাৎ রাতে মামুনের কাঁপুনি দিয়ে জ্বর চলে আসে।
মামুনকে এভাবে অসুস্থ হতে দেখে মিষ্টি কান্নায় ভেঙে পড়ে।
ডাক্তার এসে কিছু ঔষুধ দিয়ে যায়, আর মাথায় পানি দেওয়ার জন্য বলে যায়।
মাঝরাতে মামুনের ঘুম ভেঙে যায়, চোখ মেলে দেখে মিষ্টি ঘুম ঘুম চোখে তার মাথায় পানি দিচ্ছে।
মিষ্টি সন্ধ্যায় চোখে কাজল দিয়েছিলো মামুনকে দেখানোর জন্য। চোখের পানিতে সেই কাজল এখন পুরো চোখে লেপ্টে আছে।
–মিষ্টি…….
–কি করছিস, উঠিস না। শুয়ে থাক।
–তুই ঘুমাসনি?
–না,
–ঠান্ডা লাগতেছে খুব।
–দাড়া আমি কম্বল নিয়ে আসি।
এই মাঝরাতে মিষ্টি দোড়ে দাদুর কাছে চলে যায়।
–দাদু, এই দাদু, ওঠো না।
–কে?
–আমি মিষ্টি।
–কি হয়েছে?
–একটা কম্বল দাও, মামুনের ঠান্ডা লাগতেছে।
–এই গরমের মধ্যে ওর ঠান্ডা লাগতেছে?
–হুম।
–আলমারিটা খুলে দেখ, ওখানে আছে।
মিষ্টি একটা কম্বল নিয়ে আবার মামুনের কাছে দৌড় দেয়।
গিয়ে দেখে মামুন আবার ঘুমিয়ে গেছে।
আস্তে করে মামুনকে কম্বলটা গায়ে জড়িয়ে দেয়।
তবুও এই গরমের মধ্যে মামুন ঠান্ডায় কাঁপছিল।
কোনো উপায় না পেয়ে মিষ্টি নিজেই কম্বলের ভেতর ঢুকে মামুনকে শক্ত করে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে।
ধীরেধীরে মামুনের কাঁপুনি বন্ধ হয়।
এমনিতেই গরম, তার ওপর কম্বলের নিচে আবার মামুনের শরীরের তাপ, মিষ্টির অবস্থা পুরো খারাপ।
সকালে মামুনের ঘুম ভাঙলে তাকিয়ে দেখে মিষ্টি তার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
ভালো করে খেয়াল করে দেখে তার পুরো শরীর ভেজা।
মিষ্টিরও পুরো শরীর ভেজা,
–মিষ্টি, এই মিষ্টি, ওঠ না।
চোখ কচলাতে কচলাতে মিষ্টি ঘুম থেকে ওঠে।
–এতো পানি কিসের? বিছানা ভিজে কি অবস্থা হইছে।(মামুন)
–তোর শরীর ঘেমে এই অবস্থা হয়েছে। (মিষ্টি)
–এই গরমের মধ্যে কম্বল কেউ গায়ে দেয়?
–তোর তো রাতে ঠান্ডা লাগছিলো, তাই তো দিলাম।
–আমার নাহয় ঠান্ডা লাগছিলো, তুই কেনো কম্বলের নিচে?
–কম্বলেও তোর ঠান্ডা লাগছিলো, তাই তোকে জড়িয়ে শুয়েছিলাম। যেনো তোর ঠান্ডা না লাগে।
–তোর গরম লাগে নি?
–ওই একটু লাগছিলো।
–পাগলী একটা, নেমে দাড়া।
–তোর শরীরটা এখন কেমন লাগছে?
–এখন ঠিক আছে।
–কেনো বৃষ্টিতে ভিজতে গেলি? মানা করছিলাম আমি? আমার কথার তো কোনো দাম নাই।কেনো শুনবি আমার কথা।
–সবই শুনবো এখন থেকে।
–যা বলবো সব?
–হুম।
.
–এই যে মিস্টার এবং ওনার মিসেস, দরজাটা তো লাগান।(নিশি)
নিশির এমন কথা শুনে দুজন বিছানা থেকে নেমে দাড়ায়।
মিষ্টি কোনো কথা না বলে সোজা বাহিরে চলে যায়।
–তুই হঠ্যাৎ এখানে?(মামুন)
–তোমাদের ডাকতে আসলাম। আম্মু নাস্তা করতে ডাকতেছে।
–আচ্ছা যা আসেছি।
–তোমার জ্বর কমছে?
–হ্যা, অনেকটা।
–আচ্ছা মামুন ভাই, মিষ্টি আপু আমাকে দেখলে এমন করে কেনো? সেই ছোটবেলা থেকেই আমার সাথে এমন করে আসতেছে। আমি এমন কি করলাম?
–আমি কি জানি তোদের মধ্যে কি হইছে, মনে করে দেখ পুরোনো কোনো ইতিহাস আছে নাকি।
–ধুর, কিছুই তো হয়নি।
–আমি জানি না বাবা,
–আচ্ছা বাদ দাও, ফ্রেস হয়ে নাস্তা করতে আসো। সাথে তোমার বউরে নিয়া আসো।
–আচ্ছা যা।
পুরো দিন মামুন মিষ্টিকে ভালো করেই ফলো করছে, অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে মিষ্টির।
ফুফু, দাদু, বাড়ির সবার সাথেই আড্ডা দিচ্ছে, হেসে হেসে কথা বলছে।
আগের মতো মন মরা হয়ে বসে থাকে না।
মিষ্টিকে এভাবে হাসিখুশি দেখে দাদু আর ফুফুও অনেকটা খুশি।
–মিষ্টি,
–হুম বল।
–তোর মনটা ভালো আজ?
–আমার আবার কি হবে?
–খুব খুশি লাগছে তোকে আজ।
–তোকেও তো খুশি লাগছে, আমি কি কিছু বলছি?
–আমার খুশির কারন তো তুই, তোকে হাসি খুশি দেখলে আমার মনটা এমনিতেই খুশিতে ভরে ওঠে। দেখ, দাদু, ফুফু সবাই কত খুশি তোকে নিয়ে।
–তাই?
–হুম।
–কাউকে খুশি রাখা তো আর আমার কাজ না, আমার কাজ শুধু আমার জামাইকে খুশি রাখা, তোর জন্য আমি সব করতে পারবো।
–তাই বুঝি?
–হুম, শোন, আর কখনো যেনো আমি তোর চোখে পানি না দেখি। আমার দুনিয়াটা কেপে ওঠে।
–ও আচ্ছা, আমার চোখে পানি দেখে আপনার এতো পরিবর্তন? তাহলে তো রোজ আমার চোখে পানি দেখবেন আপনি।
–তোর চোখ আমি তুলে নেবো।
–পারবি?
–হুম পারবো।
–ডাকাত নাকি তুই?
–না, তোর বউ।
–এদিকে আসবি?
–কেনো?
–একটু জড়িয়ে ধরতাম।
–এহ, সখ কত, আসবো না।
–একটু আগে নিশি আমাকে ডাকছিলো, আমি ওর কাছে গেলাম।
ওমনি মিষ্টি এসে মামুনকে জড়িয়ে ধরে।
.
.
.
চলবে………
.
লেখক#A_Al_Mamun