বৃষ্টিবিলাস পর্ব-৩৮ এবং শেষ পর্ব

0
933

#বৃষ্টিবিলাস
৩৮[অন্তিম পর্ব]
#writer_Mousumi_Akter

রাত এগারোটায় শুভ প্রবেশ করলো বাসর ঘরে।রোজা ফুলে ভরা বাসরে বসে অপেক্ষা করছে শুভর জন্য।এটা ছিলো সেই কাঙ্ক্ষিত দিন।যার জন্য শুভ অপেক্ষা করছিলো দুইযুগ।প্রেয়সীকে আপণ করে পাওয়ার মতো আনন্দ কি আর কিছুতে আছে।মেরুণ কালারের সেরোয়ানী পরা শুভর।রোজা লাল টুকটুকে গরজিয়াস লেহেঙ্গা পরে বসে আছে বাসর ঘরে।পুরো ঘরে তাজা গোলাপের সুঘ্রাণ।সেই সাথে শুভ রেখেছে অসংখ্য ডালিয়া ফুল।রাজ আর অহনা এতক্ষণ রোজার পাশেই বসে ছিলো সাথে বিয়ে বাড়ির অনেক আত্মীয় ছিলো।বাসর ঘর নিয়ে রোজাকে লজ্জা দেওয়া বিভিন্ন কথা বলে যাচ্ছে।রোজা চুপ করে বসে আছে।এর ই মাঝে শুভর দরজায় এসে দাঁড়ালো।শুভকে দেখেই সবাই বেরিয়ে গেলো।রাজ যাবার সময় বলে গিয়েছে দ্রুত যেনো মামা হতে পারি।সবাই বেরিয়ে গেলে শুভ ঘরে প্রবেশ করে দরজার সিটকিনী লাগিয়ে দিতেই কেঁপে উঠলো রোজা।লজ্জায় যেনো মিহিয়ে যাচ্ছে রোজা।ভাবতেই ভীষণ লজ্জা লাগছে আজ তার বাসর রাত।এ রাতে কি হতে পারে সেসব ধারনা রোজার আছে।লেহেঙ্গার কাপড় খামচে ধরে লজ্জায় বিছানার চাঁদরের দিকে তাকিয়ে আছে রোজা।একটুও তাকাতে পারছে শুভর দিকে।শুভ রোজার এই লজ্জা রাঙা মুখটার দিকে তাকিয়ে আছে একভাবে।ঘরে রাখা ফুলের মতোই সুন্দর লাগছে রোজাকে।এই হাজার টা ফুলের মাঝে রোজা যেনো একটা আলাদা কোনো ফুল।শুভ খাটের পাশে বসে রোজার হাতের উপর হাত রাখলো।রোজা সাথে সাথে যেনো লাফিয়ে উঠে হাত সরিয়ে নিলো।হৃদপিন্ড ভীষণ জোরে লাফিয়ে উঠলো রোজার।

“শুভ ভীষণ অবাক হয়ে বললো,এটা আমি তোমার সদ্যবিবাহিত হাজবেন্ড কোনো কারেন্ট না বুঝলে। এভাবে কারেন্ট এর মতো শর্ট করলে কেনো।”

“রোজা লজ্জায় চুপ আছে।”

“শুভ রোজাকে আরেক টু লজ্জা দিতে বললো, কারেন্ট তো তুমি? স্পর্শ করলেই কেমন যেনো শর্ট খেয়ে পড়ে যায় আমি।”

রোজা এবার ভীষণ লজ্জায় চোখ যেনো আরো গভীর ভাবে বিছানার চাঁদরের দিকে দিলো।

শুভ বিছানার চাঁদরের সাথেই রোজার হাত চেপে ধরে বললো,

“তোমাকে পাওয়ার জন্য কতশত বৃষ্টিতে ভিজেছি,রোদে পুড়েছি শুধু এই দিনটার জন্য।তোমাকে আমার বউ হিসাবে আমার জীবনে পাবো বলে।আর তুমি কিনা ছোঁয়ার সাথে এক হাত দূরে সরে যাচ্ছো।”

রোজা শুভর হাত ছুটিয়ে বিছানা থেকে নেমে জানালার পাশে গিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো।ইস কী ভীষণ লজ্জা।ফুলসজ্জার ঘরের মতো লজ্জা বোধহয় পৃথিবীর আর কোথাও নেই।শুভর ঠোঁটে দুষ্টু হাসি।হাসতে হাসতে রোজার কাছে এগিয়ে এসে রোজাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,

”যত লজ্জা পাবে তত লজ্জা বাড়বে। যত লজ্জা পাও তোমাকে আজ থেকে সারাজীবন আমার বুকেই মাথা রেখে ঘুমোতে হবে।আর ক্লিয়ার কথা বলে দিচ্ছি বাপের বাড়ি গেলে সকালে গিয়ে বিকালে চলে আসবে।আমি বউ ছাড়া এক রাত ও থাকতে পারবো না।”

শুভর এসব কথায় রোজা আরো লজ্জা পেয়ে যেনো মিহিয়ে যাচ্ছে।নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।লজ্জায় ম*রি ম*রি অবস্থা রোজার।ভালবাসার মানুষ কাছে আসলে এতটা লজ্জা লাগে রোজার আগে জানা ছিলো না।রোজাকে নড়তে দেখে শুভ আর একটু জোরে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে চুমু দিয়ে বললো,

“যত নড়বে তত বেশী দুষ্টুমি করবো।তার থেকে ভালো চুপচাপ আমার আদর নাও।”

রোজা শুভকে ধাক্কা মেরে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে গেলো।ভীষণ লজ্জায় কোনভাবেই সে শুভর সামনে থাকতে পারছে না।রোজা বারান্দার বেলকনিতে এসে দাঁড়ালো।হঠাত শীতল বাতাস এসে রোজার শরীরে ঠান্ডা অনুভূতি দিয়ে গেলো।ঘোলাটে মেঘে ভরা আকাশ।ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি শুরু হলো।রোজা আনন্দে পা*গল হয়ে যাচ্ছে।বৃষ্টি তাকে খুব টানে।রোজা দু’হাত বাড়িয়ে দিলো বৃষ্টি ধরতে।শুভ এসে রোজাকে আবার ও জড়িয়ে ধরে বললো,

“এই বৃষ্টি তোমার আমার বৃষ্টিবিলাসের জন্য রোজা।আজ বৃষ্টি না হলে চমৎকার কিছু একটা মিস হয়ে যেতো।শুভ রোজাকে কোলে তুলে নিয়ে ছাদে চলে গেলো।”

ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝুম বৃষ্টিতে পরিণত হলো।শুভর কোলে রোজার বৃষ্টিবিলাস দুজন মানব -মানবীর বৃষ্টিবিলাস এর জন্যই বোধহয় এই বৃষ্টি। শুভ রোজাকে নামিয়ে দিলে রোজা আকাশে ডানা মেলে যেনো প্রিয়তমর সাথে বৃষ্টিবিলাসের সাথে প্রেমের অন্য জগতে বিচরণ করলো।ঘন ঘন মেঘ গর্জনে রোজা ছুটে এসে এসে শুভর বুকে মাথা গুজছে।অদ্ভুত এক শিহরণ,অদ্ভুত এক অনুভূতি শুভর ভেতরে শিহরণ ছড়াচ্ছিলো।বার বার রোজার শুভকে এসে জড়িয়ে ধরাতে শুভ কেমন নেশাক্ত হয়ে উঠছিলো।ঝুম বৃষ্টিতে রোজার ওষ্টে ওষ্ট মিলিয়ে যেনো ভালবাসার পরিপূর্ণ তৃপ্তি পেলো শুভ।রোজার ও ভাল লাগছিলো এই ছোঁয়া,এই স্পর্শ, এই আদর।রোজা আবার ও লজ্জায় ছাদ থেকে নিচে চলে এলো।

দুজনেই চেঞ্জ করে নিলো।মেকাপ তুলে ফেলার পরে রোজাকে আরো বেশী মিষ্টি লাগছে।ভেজা চুলে পানি পড়ে জামার পেছন পুরাটা ভিজে গিয়েছে রোজার।শুভ আলমারি খুলে নড়াইল এ ফেলে আসা শুভর দেওয়া ড্রেস গুলোকে রোজার হাতে দিলো।সেই রিং টা আজ আবার রোজার হাতে পরিয়ে দিলো।রোজার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো,আজ এভাবে ভেজা চুলে সামনে এসেছো আর কখনো আসবে না কিন্তু।আমার কেমন নেশা নেশা লাগছে তোমাকে দেখে।বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডায় দুজনের ই একটু উষ্ণতার প্রয়োজন ছিলো।পাতলা একটা কাঁথা মুড়িয়ে শুভ রোজাকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।রোজার গালে মুখে অজস্র চুমু আর ভালবাসা দিয়ে দুজনেই ভেষে গেলো প্রেমের অতল গভীরে।

কেটে গেছে তিনটা মাস………….

রোজার জন্মদিনে ইনভাইট দিয়েছে রাজ আর অহনাকে। রাজ আর অহনা দুজনেই রেডি হয়ে বের হলো ঢাকার উদ্দেশ্য। অহনা আর রাজ দুজনের ই মন খারাপ।চুক্তি অনুযায়ী তাদের এখন সব সত্য সবাইকে জানিয়ে আলাদা হওয়ার পালা।কিন্তু মন সে সায় দিচ্ছে না দুজনের কারোর ই। কিন্তু কেউ ই মুখ ফুটে বলতে পারছে না।আজ সকালেই রাজের আম্মা বলছিলো অহনাকে বমি করতে দেখে এটা তো খুশির খবর মা অহনা।এখন থেকে সাবধানে চলবে কিন্তু।অহনার ভীষণ মন খারাপ হয়েছে কথাটা শুনে।আসলেই তো এমন কিছুই নেই তাদের দুজনের মাঝে এমন টা হলেও তো মিথ্যা হতো না।

‘রাজ বললো,অহনা এবার আর ঢাকা থেকে ফেরার প্রয়োজন নেই তোমার।অনেক দিন তো হয়েই গেলো।কি প্রয়োজন আর সবাইকে মিথ্যা বলার।’

অহনার মনের মাঝে এক যন্ত্রনায় বুক ব্যাথা হয়ে এলো।চোখে পানি চলে এসেছে। চোখের পানি সামলে নিয়ে বললো,

‘হুম ঠিক বলেছো।একটা প্রশ্ন করবো রাজ?’

‘এভাবে বলছো কেনো অহনা।প্রশ্ন করার হলে করে ফেলবে।’

‘এখনো ভালোবাসো রোজাকে তাইনা?’

‘রাজ মৃদু হেসে বললো,রোজাকে সম্মান করি আমি।আমার একমাত্র ফ্রেন্ডের বউ রোজা এটা ছাড়া আমি রোজাকে নিয়ে কিছুই ভাবতে পারিনা।তবে হুম সাময়িক একটা ভাললাগা ভালবাসা রোজার প্রতি এসেছিলো কিন্তু সেটা সঠিক বা প্রকৃত কোনটায় ছিলো না।যা ছিলো আমার একার পক্ষ থেকে রোজার পক্ষ থেকে নয়।তবে অন্য একজন এসে আমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।রোজার প্রতি যে অনুভূতি মাত্রই শুরু হচ্ছিলো অন্য একজন এসে সেই অনুভূতি ভুলিয়ে তার প্রতি ভীষণ অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে।রোজাকে ভুলতে পেরেছি তার জন্য কিন্তু সে চলে গেলে কোনভাবেই তাকে ভুলতে পারবো না।’

‘কে সে রাজ?এতদিন থাকলাম বললে না।অহনা খুব আশা নিয়ে প্রশ্নটা করলো যেনো রাজ তার নাম টায় বলে।’

‘রাজ হেসে বললো ভীষণ বোকা সে।থাক বাদ দাও তুমি কি এখনো শুভ কে ভালোবাসো।’

‘রোজাকে নিয়ে তোমার যে অনুভূতি আমার ও শুভকে নিয়ে সেই একই অনুভূতি। অন্য কেউ এসে শুভ নামক অস্তিত্ব ভুলিয়ে তার নামটা লিখে ফেলেছে।’

‘নিশ্চয়ই অনেক ভাগ্যবান সে।আমার মতো দূর্ভাগ্যবান নয়।’

কেউ কারো মনের কথা প্রকাশ করেও করতে পারলো না।

গাড়িতে রাজের কাধে মাথা রেখে অহনা ঘুমোচ্ছে।অহনার মুখের দিকে তাকিয়ে রাজ ভাবছে বিগত তিনমাসে কাটানো তাদের সময় গুলো।রোজা একসাথে ঘুমোতে যাওয়া,একসাথে ঘুম থেকে ওঠা,ঢাকায় তাদের ছোট্ট ফ্ল্যাট।সম্পর্ক টা নকল হলেও তাদের সংসার টা যেনো সত্য ছিলো।রোজ সন্ধ্যায় ঘুরতে যাওয়া সব কিছুই ভীষণ অভ্যাসে পরিণত হয়ে গিয়েছে।এখন কি কোনভাবেই অহনা ছেড়ে থাকা সম্ভব।

‘বাস ঢাকা এসে থামার পরে রাজ বললো,অহনা মিথ্যা সংসারে গিয়ে লাভ কি?তোমার মায়ের কাছে ফিরে যাও।’

অহনা চুপচাপ নিজের বাসার দিকে রওনা হলো।তখন ভোররাত।অহনা পেছনে তাকাচ্ছে না। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।এই বুঝি রাজ ডাকবে অহনা যেওনা।রাজ হাত দিয়ে চোখে পানি মুছছে আর ভাবছে এই বুঝি অহনা পেছনে ঘুরে তাকাবে।

এমন ভাবতে ভাবতে অহনা পেছনে ঘুরে তাকালো আর রাজ সাথে সাথে বললো,

‘ অহনা সেই মেয়েটা তুমি।আমাকে ছেড়ে যেওনা। আই লাভ ইউ অহনা।’

‘অহনা ছুটে এসে রাজকে জড়িয়ে ধরলো আর বললো,তাহলে চলে যেতে বললে কেনো?’

‘রাজ অহনাকে জড়িয়ে ধরে বললো,যেতে দিয়েছি কোথায়?আমি তো পরীক্ষা করছিলাম তোমার ভালবাসা।’

‘অহনা বললো,এই মিথ্যা বিয়ে সবাইকে জানালে কি ভাববে।’

‘রাজ বললো,আমি তো ভদ্র ছেলে কিছুই করিনি কিন্তু মানুষ অনেক কিছু ভাববে।সকাল হোক সত্যি বিয়ে করে বাসায় যাবো।কেউ কোনদিন কিছু জানতেই পারবেনা।রোজা আর শুভ ও কোনদিন জানবে না ওদের নিয়ে আমাদের কখনো কোনো অনুভূতি ছিলো।অহনা হেসে দিয়ে রাজকে আরেকটু শক্তভাবে জড়িয়ে ধরলো।’

সেদিন দুজনে কাজি অফিস থেকে বিয়ে করে বাসায় ফিরলো।রাজ বরাবর ই একটু দুষ্টু।বাসায় ফিরেই অহনাকে কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে বললো,

‘ এখন ফুলসজ্জা হবে আমাদের।’

‘অহনা বললো ওটা রাতে হয় দিনে না।’

‘রাজ বললো নো ওয়েট করাকরি আমাদের ফুলসজ্জা দিনেই হবে।অহনার গালে চুমু দিয়ে রাজ বললো,প্লিজ অহনা বাঁ*চাও মুঝে।’

‘অহনা বেশ অবাক হয়ে বললো কি হলো রাজ।’

‘রাজ বললো জীবনে প্রথম চুমু দিলাম ভীষণ লজ্জা পাচ্ছি আমি,লজ্জায় ম*রেই যাবো আমি।’

‘অহনা বললো তবেরে খুব লজ্জা তাইনা?জীবনে বাচ্চার মুখ দেখা লাগবে না।’

‘রাজ দুঃখি দুঃখি মুখে বললো,খুব নারভাস ফিল হচ্ছে আমার।’

‘অহনা বললো যাও আমার কাছে আসবে না।’

‘রাজ অহনাকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে আদর করতে করতে বললো আমাকে কি অমন মনে হয় তোমার।রোজা আমায় সামলে বুঝো।অহনা রাজের ভালবাসায় মিশে গেলো অন্য অনুভুতির জগতে।শুরু হলো ভালবাসার নতুন অধ্যায়।’

সেদিন রাতেই রোজার জন্মদিন উপলক্ষে শুভদের বাড়ি বিশাল সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।খুব বেশী মানুষ জন নেই।শুভ আর রোজার বিশেষ কেউ বলতে রাজ আর অহনা ছাড়া আর কেউ নেই।রাজ আর অহনাকে নিয়েই রোজার জন্মদিনের কেক কাটা হলো।রোজার বাবা ও উপস্হিত ছিলো মেয়ের জন্মদিনে।শুভর মা বাবা দুজনে মিলে সব আয়োজন করেছে।এখন তারা ভীষণ হ্যাপি ফ্যামিলি।

–শুভ রাজকে বললো,আমার শালিকার মতো সুন্দরী বউ পেয়েছিস ভাগ্যর ব্যাপার বুঝলি।

–অহনা বললো,জিজু আপনি একদম ঠিক বলেছেন।আমি ভীষণ কিউট হ্যা না।

–রোজা বললো,আমার রাজ ভাইয়া কি কম কিউট হ্যাঁ।

চারজনে বেশ অনেক্ষণ আড্ডা দিয়ে চাঁদনী রাতে হাঁটতে বের হলো।অহনার হাত ধরে হাঁটছে রাজ।আর রোজার হাত ধরে হাঁটছে শুভ।

–এমন সময় রোজা শুভর কানে কানে বললো,তুমি বাবা হতে চলেছো।

–শুভ সাথে সাথে লাফিয়ে উঠে রোজা কে কোলে তুলে নিয়ে উঁচু করে ধরলো।

–অহনা আর রাজ বেশ অবাক হয়ে বললো হঠাত কি হলো।

–শুভ বললো আরে ইয়ার তোরা আঙ্কেল আন্টি হতে চলেছিস।

–অহনা রোজাকে জড়িয়ে ধরে বললো,কনগ্রাচুলেশন রোজা।

–রাজ অহনার কানে কানে বললো এবার তুমি রেডি হও আমিও বাবা হতে চাই।

–যাহ!দুষ্টু।দেরি আছে।

–কোনো দেরি নেই, নো ফ্যামিলি প্লানিং ওকে।

–অহনা লজ্জাহ মিহিয়ে গেলো।

–রোজা বললো রাজ ভাইয়া এইভাবে ফিসফিস না করে অহনাকে আমাদের সামনে প্রপোজ করুন আমি আর শুভ দেখতে চাই।

রাজ অহনার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে বললো,

‘আমার জীবনে দ্বীতীয় বসন্ত হয়ে তুমি এসেছো অহনা।প্রথম বসন্তের পাওয়া সব কষ্ট তুমি নামক বসন্ত আসার পরে মুছে গিয়েছে।রঙিন বসন্তের মতো রঙিন করেছো আমার জীবন।ভালবাসার সব পূর্ণতা তোমার থেকেই পেয়েছি।সারাজীবন তোমার সাথেই থাকতে চাই।’

‘অহনা রাজের হাত ধরে হাতে চুমু দিয়ে বললো,আই লাভ ইউ রাজ।’

শুভ আর রোজার চোখ জুড়িয়ে গেলো তাদের ভালবাসায়।শুভ রোজাকে এক হাতে জড়িয়ে নিয়ে হেঁটে চলেছে রোজার নরম হাত ধরে।

চারজন মানব মানবী হেঁটে চলেছে জীবনের সর্বোত্তম মুহুর্তে। অটুট ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ তারা।যেমন অটুট তাদের বন্ধুত্ব, তেমন ই অটুট শুভ রোজা, রাজ অহনার ভালবাসা।এই ভালবাসার যাত্রা দীর্ঘ হোক।রাজ আর অহনা প্রকৃত বন্ধুর উদাহরণ। শুভ আর রোজা প্রকৃত ভালবাসার উদাহরণ। দুজন মানুষ মন থেকে চাইলে সব বাঁধা অতিক্রম করে পূর্ণতা পায় ভালবাসা।

———————–সমাপ্ত।

(মানুষ মাত্রই ভুলে ভরা।আমার ও অসংখ্য ভুল হয়।সেই ভুল গুলো জেনেও পাঠক-পাঠিকা আমাকে যতটা উৎসাহ দিয়েছে আমি মুগ্ধ।আমি কারো হেটার্স হয়ে লেখালেখি জীবনে থাকতে চাই না।আমার ভুল গুলো সুন্দর সাবলীল ভাষায় ধরিয়ে দিবেন আমি অত্যান্ত খুশি হয়ে ভুল থেকে শুধরে নিবো নিজেকে।এই গল্পটা বন্ধুত্ব আর ভালবাসা নিয়ে ভেবে সাধারণ একটা থিমে লিখেছিলাম।অন্তত সবার মাঝে যেনো এমন ধারনা হয় এক তরফা ভালবাসলেই পেতে হবে এমন নয়, আবার ভালবাসার জন্য বন্ধুত্ব নষ্ট করতে হবে এমন টা ও নয় যার উদাহরণস্বরুপ রাজ আর অহনাকে রেখেছিলাম।আর একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক রেখেছিলাম সেটা হলো ভালবাসলে যেনো শুভর মতোই ভালবাসে।পারিবারিক চাপ বা কোনো কারনে প্রিয় মানুষ টির হাত না ছেড়ে পরিবার কে মানিয়ে নিয়ে ভালবাসার পূর্ণতা দেওয়া।

অবশেষে ভালবাসা সবাইকে।নিউ উপন্যাস শিঘ্রই আনবো)