বেপরোয়া ভালবাসা পর্ব-৩১+৩২+৩৩

0
481

#বেপরোয়া_ভালবাসা
#পর্বঃ৩১
#লিখনীঃ মনা হোসাইন

আদির অদ্ভুত সম্বোধনে ঘুম ভাঙলো আদিবার।
শালিকা শালিকা বলে একমনে চেঁচিয়ে যাচ্ছে সে…আদিবা ঘুমচোখে তাকাতেই আদিত্য বলল,

-“শালিকা আর কত ঘুমাবেন এবার উঠুন প্লিজ। আমার বিছানাটা আমায় ফেরত দিন।

আদিবা আদির কথা বুঝতে পারল না তাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।

-“শালিকা এই যে শালিকা আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন…?

-“আপনি আমায় কিছু বলছেন.?

-“তো আর কাকে বলব? এই ঘরে আর কে আছে?

-” এত সকালে আপনি আমার ঘরে কী করছেন?

-“এটা আপনার রুম না আমার রুম। কী একটা রুমে থাকেন চারদিকে মেয়েলি মেয়েলি ভাব। উফফ এদিকে তাকাই তো তোর কাপড় চোপড় ওদিকে তাকাই তো উফফ আর না বলি গাঁ গুলিয়ে উঠছিল। আর একটু হলে দম বন্ধ হয়ে মা*রা যেতাম . উঠ তাড়াতাড়ি সারারাত ঘুমাতে পারিনি এখন ঘুমাব।

আদিবা প্রথমে আদির কথার মানে বুঝতে পারে নি তবে পরক্ষনেই রাতের সব কথা মনে পড়ল। রাগে শরীর রি রি করে উঠল। রাগী চোখে তাকাল আদির দিকে।আদি তাছিল্যের সুরে বলল,

-‘যাক বাবা এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? আমার তো ভয় লাগছে।

-“আমি কী আপনাকে বলেছিলাম আমার ঘরে যেতে? নিজেই আমাকে এখানে আটকে রেখে চলে গিয়েছিলেন এখন আবার নির্লজ্জের মত আমার উপড় দোষ চাপাচ্ছেন?

-“উম…শালিকা আমি আপনার হবু বর আই মিন বোনের বর আমার সাথে এভাবে কথা বলা যাবে না। সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে বুঝেছেন শালিকা?

আদিবা উঠে আদির ঠিক সামনে দাঁড়ল।আদিও সরে গেল না।আদিবা রাগে কটমট করে বলল

-“কখন থেকে শুনছি শালিকা শালিকা করে যাচ্ছেন আমি কোন এংগেল থেকে আপনার শালী হই?

-“আপনার বোনকে বিয়ে করলে আপনি আমার কে হবেন? অবশ্য শালীর ওপর নাম “আদি ঘরওয়ালি” আপনি চাইলে ঘরওয়ালি ডাকতে পারি।

-“আপনি সত্যি সত্যি সাদিয়াকে বিয়ে করবেন?

-“হ্যা…

-“কিন্তু কেন?দুনিয়ায় এত মেয়ে থাকতে সাদিয়া কেন?

-“কারন সাদিয়া তোর বোন।

-“আমার জীবন টা শেষ করে শান্তি হয় নি?

-” আমি কারোর জীবন নষ্ট করি নাকি গড়ে তুলি সেটাই তো দেখবি।

-“সাদিয়া আপনাকে বিয়ে করতে চায় না।

-“ওর মতামত জানতে চেয়েছে কে?

-“জোর করে বিয়ে করবেন?

-“নাহ ওর মন জয় করেই করব। যাইহোক তুই এখন আজাইরা প্যাঁচাল বাদ দিয়ে এখান থেকে যা ঘুম পাচ্ছে আমার।

আদিবা কথা না বাড়িয়ে বের হয়ে আসতে চাইল সাথে সাথে আদি হাত টেনে ধরল,

-“জামা চেঞ্জ করে যা…এভাবে গেলে সবাই ভাব্বে সাদিয়া কে বিয়ে করতে চেয়ে তোর সাথে বাসর করে ফেলেছি…

আদিবার কেন যেন ভাল লাগছে না তাই কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না। সে বিছানায় তাকিয়ে দেখল আদি আগেই জামা এনে রেখেছে। জামা টা হাতে নিয়ে সে ওয়াশরুমে চলে গেল। আদিও বিছানায় শুয়ে পড়ল।

আদিবা চেঞ্জ করে এসে দেখল আদিত্য ঘুমের রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে।সেও ধীর পায়ে বাইরে আসল।
রান্না ঘরে যেতে দেখল রান্নাঘরে মা কাকিমনি দুজনেই আছে।তাদের রান্নাঘরে দেখে বেশ অবাক হল আদিবা কারন সকালের খাবার সবসময় আদিবা করে। আদিবা এগিয়ে গিয়ে রাগ নিয়ে অথচ শান্ত গলায় বলল,

-‘হটাৎ রান্না করছো..?

আদিবার মা বললেন
-“আজ থেকে আমিই রান্না করব তোর করতে হবে না।

আদিবা তাছিল্যের হাসি হেসে আটার প্যাকেট নিতে নিতে বলল
-“হটাৎ…?

-“আদিবা তুই সবসময় এত হেয়ালি করিস কেন?

-“হেয়ালি কোথায় করলাম? এতদিন ধরে আমি রান্না করি আজ হটাৎ নিয়ম বদলাল তাই অবাক হয়েছি সে যাইহোক শুনলাম সাদিয়ার বিয়ে..

-“নাহ মানে আদি…

-“আদি বলছিল তাই রাজি হয়েছো..? তাই বলতে চাইছো..?

-“আদি এতদিন তোকে পছন্দ করত এখন আর করে না তাই সাদিয়াকে বিয়ে করতে চায়।

-“জেদে বিয়ে করতে চাইছে আর তোমরাও রাজি হয়ে গেলে…

আদিবার কথা শেষ হওয়ার আগেই আদির মা এগিয়ে বললেন,

-“এ বাড়িতে আদির কথায় শেষ কথা ও যদি সাদিয়াকে বিয়ে করতে চায় তোর অসুবিধা কোথায়?
আদি কি ছেলে হিসেবে খারাপ?

আদিবা উত্তর দিল না হটাৎ করেই যেন তার মন খারাপ হয়ে গিয়েছে রান্নাঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে বিছানার নিচ থেকে বক্সটা বের করে রাখল। বক্সের মুখ খুলতেই চোখে পড়ল ২ টো চকলেটের প্যাকেট এক জোড়া নূপূর আর ২ টো মাটির পতুল। পুতুল দুটির নাম রাজা রানী। রাজা রানীকে হাতে নিয়ে বেলকণীতে গিয়ে দাঁড়াল আদিবা।মুহুর্তেই মন ভারী হয়ে উঠল মনে পড়ে গেল পুরোনো দিনের স্মৃতিগুলো।

ফ্লেশব্যাক
আদিবা এবার ক্লাস থ্রিতে, স্কুলে শীতেত ছুটি দিয়েছে আজ, পুরো ১৫ দিনের ছুটি৷ আদিবা ছুটতে ছুটতে বাড়ি ফিরেই নামমাত্র খাবার মুখে দিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াল। দুচোখ খুশিতে চিকচিক করছে মুখে হাসি.. কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মেয়েটার ফুটফুটে মুখটা মলিন হয়ে আসছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল বিকেল গড়য়ে সন্ধ্যা নাহ আদিবা এখনো ঘরে ফিরছে না দেখে আদিবার বাবা এগিয়ে গিয়ে বললেন

-“আজ হয়ত ওরা আসবে নারে মা ঘরে যা…সবে তো স্কুল ছুটি দিয়েছে কাল পরশু হয়ত আসবে…

-“কিন্তু বাবা ভাইয়া তো বলেছিল যেদিন স্কুল ছুটে হবে সেদিনি আসবে।

-“ওটা তো এমনি বলেছে। ছুটেতে আসবে সেটাই বলেছে চল ঘরে চল মা..

আদিবা বাবার সাথে ঘরে যেতে যেতেও কয়েকবার রাস্তায় ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল তারপর মন খারাপ করে ঘরে গেল। দেখতে দেখতে রাত গড়াল আদিবা মন ভার করে খেয়ে নিয়ে শুয়ে পড়ল। গ্রামে রাত নামে তাড়াতাড়ি ৯ টার মধ্যেই চারদিক নিরব হয়ে যায় তারমধ্যে যদি কোয়াশা মোড়া রাত হয় তবে তো আর কথায় নেই।সবাই ঘুমেরে দেশে পাড়ি দিয়েছি হটাৎ দরজায় কটকট শব্দ হল রাত হয়ত ১১ টার কাছাকাছি হবে আদিবার মা গিয়ে দরজা খুলে অবাক হল,

-“ভাইজান ভাবী আপনারা এত রাতে..?

-“আর বলবেন না ভাবী আদি এত জেদি হয়েছে কি আর বলব। বল্লাম আজ স্কুল ছুটি হয়েছে গ্রামের বাড়ি নাহয় কাল যাব। না ছেলের হবে না আজ আসবে মানে আজই আসবে..দেখুন না।

-“ভালই হয়েছে আসুন ঘরে আসুন।

সবার সাথে আদিও ঘরে ঢুকল কিন্তু যে মাঝ ঘরে না দাঁড়িয়ে এক দৌড়ে ভিতরের ঘরে গিয়ে ঘুমন্ত আদিবার ঘরে বসল তারপর ব্যাগ থেকে একে একে জিনিস বের করছে গোটা পাঁচেক চকলেট দুটা মাঠির পুতুল আর একজোড়া নূপুর আর একটা ম্যাজিক শিখার বই । বের করে পাশে রেখে আদিবাকে ডাকল আদি।

আদিবা ঘুম থেকে উঠে বিষয় টা টাহর করতে পারল না কিন্তু পরক্ষনেই আদিকে দেখে জড়িয়ে ধরল। আদিও ধরেছে।

-“ভাইয়া তুমি এসেছো…? আমি জানতাম তুমি আসবে বাবা শুধু শুধু বলল তুমি নাকি আসবে না।

-“কেন আসব না? আমি আমার পরীটাকে কথা দিয়েছি না? আমি আজ না আসলে পরীটা রাগ করবে না বুঝি? আমি কি কথা ফেলতে পারি দেখ তুই যা যা বলে দিয়েছিলি সব এনেছি। জানিস মা টাকা দেয় নি টিফিনের টাকা জমিয়ে কিনেছি নূপুরগুলো সুন্দর না?
বলেই আদিবার পা টেনে নূপুর পরাতে লাগল আদি
আদিবা খিল খিল করে এসে জবাব দিল,

-“খুব সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।

আদি আদিবার মাথা হাত বুলিয়ে বলল
-” আমি তোকে সবসময় এমন হাসিখুশি দেখতে চাই আমি তোর সব কথা রাখব আদিবা। তুই শুধু এই হাসিটুকু আমায় উপহার দিস।

-“আমি তোমার সব কথা রাখব ভাইয়া অনেক ভালবাসব তোমায়…

-“কখনো ছেড়ে যাবি না তো..
আদিবা চকলেট খেতে খেতে জবাব দিল
-“উহু কোনদিন ও না। কথা দাও তুমিও যাবে না..

-“দিলাম কথা যাব না। সারাজীবন তোকে আগলে রাখব।



কথাগুলো মনে পড়তে চোখ ভিজে গেল আদিবার।

-“আমি তো আমার কথা রেখিছি ভাইয়া। এত মার অপমান,অসম্মানের পরেও তোমায় ভুলি নি তাহলে তুমি কেন তোমার কথা রাখলে না? কেন ছেড়ে চলে গেলে?কেন তুমি থেকে আপনি হয়ে উঠলে? আজ তোমার এতই জেদ তুমি সাদিয়া কে বিয়ের কথা বলতে পারলে..? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।তুমি বলেছিলে সারাজীবন আমার সাথে থাকবে।সারাজীবন তোমার হয়ে থাকব বলে স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে পা রাখিনি যদি কেউ পরীর দিকে নজর দেয়।কোন আত্মীয়র সামনে যাই নি যদি বিয়ের প্রস্তাব দেয় আমি তো আমার সব কথা রেখিছি তুমি কি করে তোমার পরীকে ভুলে গেলে? তোমার কী একবারো পরীটার মনে পড়ে না?
আজ তোমায় ভালবাসি বলতেও আমার বুক কাঁপে কি করে এত বদলে গেলে? আমি যে আমার সেই ভাইয়াটাকে আজও ভুলতে পারিনি। এত কিছুর পরেও মন থেকে আদির নামটা মুছতে পারিনি। তুমি কী আমায় কোনদিনি বুঝবে না? তোমার রাগ আর জেদ নিয়েই থাকবে…তোমার পরীর কাছে আর কখনো ফিরবে না?



চলবে..!!

#বেপরোয়া_ভালবাসা
#পর্বঃ ৩২
#লিখনীঃ মনা হোসাইন

আনুমানিক দশটায় ঘুম ভাঙল আদির। নিচে নেমেই সে আদিবার খোঁজ করছে কিন্তু আদিবার খোঁজ নেই।

-“মা আদিবা কোথায়…?

আদির প্রশ্নে মা কিছুটা বিরক্তি নিয়েই জবাব দিল
-“আদিবা কোথায় সেটা জেনে তোর কাজ কী? তুই না সাদিয়াকে বিয়ে করবি?

-“তো সাদিয়াকে বিয়ে করলে আদিবার খোঁজ করা যাবে না?

-“আচ্ছা আদি তুই কী বুঝতে পারছিস না তুই অস্বাভাবিক আচারন করছিস..তোর বাবা এই নিয়ে মন খারাপ করেছেন। বলছেন তার ভাইয়ের শেষ আমানত সে রক্ষা করতে পারছে না।

-“তো আমি বাঘ নাকি ভাল্লুক যে আব্বুর ভাইয়ের আমানতকে গিলে ফেলছি…

-“তুই আদিবার সাথে এমন কেন করছিস?

-“আমি আবার কী করলাম আদিবা আমার হবু শালী আমি ওর খোঁজ করতে পারব না?

-“তোর সাথে কথা বলে আসলে লাভ নেই।

-“ঠিক বলেছো এই একটা বিষয় ছাড়া আমার সাথে সব বিষয়ে কথা বলা যাবে..শুধু আদিবার ব্যাপারেই বলা যাবে না যাইহোক এতই যখন আপত্তি তখন সাদিয়াকে বলো আমাকে এক কাপ কফি বানিয়ে দিতে।

আদির মা আর জবাব দিলেন না গিয়ে সাদিয়াকে বললেন কফি বানিয়ে দিতে। সাদিয়া কফি করে এনে আদিকে দিচ্ছে এরমধ্যে আদিবা চোখে মুখে পানি দিয়ে নিচে নেমে আসল। আদি আর সাদিয়া কে একসাথে দেখে একটু থমকে দাঁড়াল আদিবা। মনটা কি আরও একটু খারাপ হল? হবে হয়ত…কিন্তু এই মন খারাপ অন্যদের সামনে প্রকাশ করা যাবে না ভেবেই পাশ কাটিয়ে রান্নাঘরের দিকে চাইল আদিবা। সাথে সাথে আদি বলে উঠল সাদিয়া সবাইকে একটু ডেকে আন তো সবার সাথে আমার কিছু কথা আছে। বাবাকেও আসতে বলবি।

আদির কথা শুনে সাদিয়া চলে গেলও আদিবা থেমে ভ্রু কুচকে তাকাল,

-“কিছু বলবেন ম্যাডাম…?

আদিবা এগিয়ে আসল,
-“আবার কি গন্ডগোল পাঁকাতে চাইছেন?

আদিবার প্রশ্নের জবাব দিল না হা হা করে হেসে উঠল। আদিবা বুঝল আদির সাথে কথা বলে নিজের মেজাজ খারাপ করার মানে হয় না।তাই রান্না ঘরে চলে গেল।

পরক্ষনেই বসার ঘরে তার ডাজ পড়ল,এসে দেখল বাসার সবাই এসে জমা হয়েছে।আদিবা আসতেই আদি বলল,

-“বসেন ম্যাডাম এই আলোচনায় আপনার থাকা আবশ্যক।

বলে আদিবাকে বসার জন্য ইশারা করল আদিবাও বসল,

-“কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য সবাইকে ডেকেছি। জানি আমার সিধান্ত নিয়ে সবার মাঝেই কিছু সমস্যা আছে আমি সেগুলো ক্লিয়ার করতে চাই। আসলে যেভাবেই হোক আমি অস্ট্রেলিয়ার সিটিজেন হওয়ার সুযোগ পেয়েছি এখন আমি যাকে বিয়ে করব সেও এই সুযোগটা পাবে তাই আমি চাচ্ছিলাম আমার পরিবারের কেউ এই সুযোগটা পাক । সাদিয়া যেহেতু আমাদের বাসায় বড় হয়েছে আর কাকিয়ারো ইচ্ছে ছিল তার মেয়েরা নিজের পায়ে দাঁড়াক তাই আমি সাদিয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছি। এদেশে থেকে চাকরি পাওয়াটা এতটা সহজ না। তাছাড়া বাবার বয়স হয়েছে বাবার পক্ষে সংসার চালানো সম্ভব না আমি একা নিজের পরিবারের দায়িত্ব নিব নাকি বাবা মায়ের নিব নাকি কাকিয়াদের? এমন তো হতে পারে আমার বউ সবার সাথে মিশে থাকাটা পছন্দ করল না তখন কী হবে? আমি শুধু চাই সবাই সবসময় ভাল থাকুক। আমি যেহেতু বিদেশে থাকি বিয়ের পর সাদিয়াও সেখানে চলে যাবে আমি ওকে চাকরি করার সুযোগ দিব ও নিজের পায়ে দাড়িয়ে নিজের পরিবারের খেয়াল রাখতে পারবে.. আমি জানি কাকিয়াও হয়ত এমনটাই চায়। যে যতই সাপোর্ট দেই না কেন নিজের সন্তানের উপার্জনে চলার মধ্যে অন্যরকম শক্তি আছে। এবার তোমাদের সিধান্ত তোমরা যদি চাও বিয়ে হবে না চাইলে হবে না।

আদির কথা শুনে তার মা বললে

-“কিন্তু গতকাল তো তুই বলছিলি তুই আদিবার উপড় রাগ করে সাদিয়াকে বিয়ে করতে চাস।

-“হ্যা বলেছিলাম আদিবার সাথে রাগ করে আমি বিয়েটা করতে চাচ্ছি কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম আমি আদিবার সাথে যেটা করছি সেটা একপাক্ষিক। আদিবাকে আমি পছন্দ করলেও আদিবা আমাকে মনে প্রাণে অপছন্দ করে।এতে ওর দোষ নেই আমি ওর সাথে যেমন ব্যবহার করি তাতে অপছন্দ করারেই কথা। স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখলে আমার সাদিয়াকে নয় আদিবাকে বিয়ে করা উচিত কিন্তু সবাই একবার ভাল করে ভেবে দেখো আদিবা কি আমার সাথে সুখি হবে..? হবে না যে হিসেব নয়েতে মিলেনি সেটা নব্বইতেও মিলবে না।আমাদের মাঝে কখনই সুসম্পর্ক ছিল না সবসময় ঝগড়া মা*রামা*রির সম্পর্ক ছিল। আমি যা যা করেছি তার জন্য আদিবা আমাকে মনে প্রাণে অপছন্দ করে। দোষটা আমার হলেও বিয়ের মত সম্পর্কে দুজনের মত থাকা দরকার আমাদের ক্ষেত্রে সেটা নেই। তাছাড়া আদিবা আমার চেয়ে মাত্র একবছরের ছোট তাই দুজনের ম্যান্টালিটি একই রকম কেউ কারো জন্য সেক্রিফাইস করতে পারি না। অন্যদিকে সাদিয়ার সাথে আমার বয়সের গ্যাপ স্ট্যান্ডার্ড মানের তাই আমাদের বন্ডিংটা ভাল হবে আমার মনে হয়। তাছাড়া আদিবা পড়াশোনা করেনি ও বিদেশে গেলেই বা কি হবে.? ওর পক্ষে নিজের পায়ে দাঁড়ানো সম্ভব?

আদির শেষ প্রশ্নটা যেন তীরের মত বিঁধল আদিবার বুকে। আদিবা চোখ তুলে তাকাল আদির দিকে। সাথে সাথেই আদি বলে উঠল,
-“আই এম সরি আদিবা আমি তোকে হার্ট করতে চাই নি কিন্তু যা সত্যি সেটা তো বদলানো সম্ভব না তাই না? যাইহোক আমার যা যা বলার ছিল বলেছি এবার তোমাদের সিধান্ত তোমরা যদি মনে কর
এই বিয়ে হওয়ার দরকার নেই আমি জোর করব না।
তবে বল্লেই বিদেশে সিটিজেন হওয়া যায় না এই ব্যাপারটা মাথায় রেখো। অন্যকাউকে বিয়ে করে নিয়ে গেলে এই সুযোগটা সে পাবে কিন্তু আমি চাই যার সত্যিই সুযোগটা দরকার সেই পাক। কাকিয়া আর কত অন্যের আশ্রয়ে বাঁচবে..? আমাকে পরে সিধান্ত টা জানিয়ে দিও। বলে আদি নিজের ঘরে চলে গেল। আদির বাবা মা সহ বাসার সবাই আদিবার দিকে তাকিয়ে আছে। আদির কথায় আদিবার যথেষ্ট খারাল লেগেছে কিন্তু সেটা প্রকাশের সুযোগ আজ নেই। আদি তার পরিবারের কথা ভেবেছে এই অনেক। তাছাড়া ভুল তো কিছু বলে নি নিজের পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার ক্ষমতা তার নেই তাই এই বিয়েতে আপত্তি জানিয়ে সবার ক্ষতি করার মানে হয় না।

কেউ কিছু বলার আগেই আদিবা বলে উঠল,
-“মা আমার মনে হয় এই বিয়েতে সবারেই ভাল হবে..

আদিবার কথায় সাদিয়া অবাক হয়ে বলল,
-“তুই এসব কি বলছিস আপু..?

-“কেন ভাইয়া কি ছেলে হিসেবে খারাপ? উনি সবার ভালর কথা ভেবেই সিধান্ত নিয়েছেন। তাছাড়া তুই যে কারনে আপত্তি করছিস সেটাও ভিত্তিহীন আমার সাথে ভাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক কোনদিনি ছিল না। আমার প্রতি উনার যেটা ছিল সেটাকে মোহ বলে। মোহ কেটে গিয়েছে।

বলেই আদিবা উঠে গেল। এদের দুজনের কাহিনি কারোরেই মাথায় ঢুকে নি। আদিবা সোজা আদির ঘরে গেল।

-“আসব…?

আদিবার কন্ঠ শোনে আদি পিছন ঘুরে জবাব দিল,

-“অনুমতি নেওয়া শুরু করলেন কবে থেকে.?

-“ছোটবোনের বরের ঘরে তো হুটহাট ঢুকে পড়া যায় না তাই জিজ্ঞাসা করলাম আসব কি?

-“আসুন…

-“কয়েকটা কথা বলার ছিল

-“কারন ছাড়া আপনি আমার কাছে আসবেন না জানি বলুন কি বলবেন।

-“আপনার কথায় বুঝলাম বিয়ের ব্যাপারে আপনি সিরিয়াস তাই বড় বোন হিসেবে কথা বলতে এসেছি।

-“তারমানে এই বিয়েতে আপনার কোন আপত্তি নেই?

-“আমার আপত্তি থাকবে কেন?

-“সত্যিই নেই?

-“অবশ্যই না বরং আমি খুশি হয়েছি আপনি আমাদের কথা এত ভেবেছেন।

-“তুই ভাঙবি তবুও মচকাবি না তাই না?
(মনে মনে)

-“কী বিড়বিড় কর করছেন? যেটা বলতে এসেছি আপনার যেহেতু বিয়ে ঠিক হয়েছে তাই আশা করব বন্ধ দরজার ঘটনাগুলোকে বাইরে নিয়ে যাবেন না।আমাদের মাঝে যা কিছু হয়েছে সব ভুলে সাদিয়াকে আপন করে নিবেন।

-“ওহ তাই নাকি শালিকা..কিন্তু আপনি আমার শালী মানে তো আপনি আমার অর্ধেক ঘরওয়ালি।

-“আপনি হয়ত ভুলে যাচ্ছেন আমি সাদিয়ার ছোট নই বড় বোন।আমি কোন এংগেল থেকে আপনার শালী হলাম? আমি সম্পর্কে আপনার বড় বোন হতে চলেছি এবার থেকে সম্মানের চোখে তাকালে খুশি হব।

-“আমি বদলে গেলে তোর আফসোস হবে না?

-“আফসোস হবে কেন? বরং খুশি হব।

-“তুই সত্যিই খুশি হয়েছিস ?

-“ভীষন…মনে হচ্ছে বুকের উপড় থেকে ভারী বোঝা নেমে গেল। আপনার কুনজর থেকে মুক্তি পেয়েছি মানে বুঝতে পাচ্ছেন কতটা লাকি আমি?

-“এই মুহুর্তে আমার চোখের সামনে বিদায় হ.. তোর কথা শুনে মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে।

-“খারাপ কিছু বলেছি?

-“আদিবা মার খাওয়ার আগে প্লিজ বেরিয়ে যা…

আদিবা আর কিছু না বলে বেরিয়ে আসল। আদিবা ঘরে ঢুকার কিছুক্ষন পরেই জুই সেখানে আসল,
-“আপু আসব..?

-“এসো…

জুই এসে আদিবার পাশে বসল।
-“আপু যদি কিছু মনে না করো কয়কটা কথা বলতে চাই…

-“বলো..কি বলতে চাও।

-“জানি না ভাইয়ার সাথে তোমার কি হয়েছে কিন্তু জীবনটা ছেলে খেলা নয়। রাগ অভিমানে এত বড় সিধান্ত নিও না প্লিজ। একটা বার চেষ্টা করে দেখবে প্লিজ..

-“জুই তুমি ভুল করছো আমি সেই দলের নই যে নিজের অক্ষমতা স্বীকার করতে জানে না। আমি ভাইয়ার সমবয়সী আর ছেলেরা সমবয়সী মেয়েদের তেমন পছন্দ করে না সব ছেলেই চায় তার বউয়ের বয়স কম হোক।তাছাড়া আমি পড়াশোনা করিনি আমাকে সমাজে পরিচয় দিতে উনার লজ্জা হবে। আমি চাইলেই আমার বয়স কমাতে পারব না আর পড়াশোনাও শুরু করতে পারব না তাই এই চেষ্টা না করাই ভাল। যেখানে ভাইয়া আমাদের পরিবারের কথা ভাবছে সেখানে আপত্তি জানানোর প্রশ্নই উঠে না।

আদি আর আদিবা কথা বলছে এর মধ্যেই আদির গলা ভেসে আসল।

-” জুই এখনী একবাত নিচে আয় সাথে মহারানীকেও নিয়ে আসিস

আদির কথা শুনে জুই আদিবাকে প্রশ্ন করল
-‘ভাইয়া হটাৎ ডাকছে কেন তাও তোমাকে মহারানী বলছে কেন আপু..?

-আগের অপমানে হয়ত পোষায় নি তাই আবার করবেন বলে ডাকছেন যাইহোক চল দেখে আসি।

জুই আর আদিবা নিচে নামতে নামতে দেখল আদি রেডি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। জুই বলল,
-“ভাইয়া কোথায় যাচ্ছো..?

আদি আদিবার দিকে তাকিয়ে জবাব দিল।
-“বাড়িতে বিয়ে আর এখনো শপিং করব না? সামনের সপ্তাহেই আমাদের বিয়ে তাই শপিং এ যাচ্ছি।

আদিবা রিয়েক্ট না করে শান্ত গলায় বলল
-“খুব ভাল কথা যান আমাকে ডাকছেন কেন? তাও উল্টা পাল্টা নামে?

-“তো আমার কি বলা উচিত ছিল শালিকা..?

-“সাবধান আমার সাথে লাগতে আসবেন না। এখন থেকে আমাকে আপু বলে ডাকবেন।

-“তাই নাকি শালিকা আপু..?

-“একটা মানুষ এত নির্লজ্জ হতে পারে আমি সত্যিই জানি না।

-“আজেবাজে কথা রেখে আসুন। বিয়ের শপিং করতে যাব।

-“আমি যাব কোন দুঃখে?

-“আপনি পাত্রী পক্ষের গার্জিয়ান আপনি না গেলে হবে? চলুন চলুন…

আদিবাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল আদি। গাড়িতে অরিন আর সাদিয়া বসে আছে আদি গিয়েই বলল

-“সবাই রেডি তাহলে এখন যাওয়া যাক…

সাথে সাথে আদিবা উল্টো ঘুরে হাঁটা দিল। পিছন থেকে আদি বলে উঠল

-“তাহলে কী ধরে নিব আপনি আমাদের বিয়েটা মেনে নিতে পারছেন না?

আদিবা ভ্রু কুচকে তাকাল।

-“মানে কী…?

-“আপনার হিংসে হচ্ছে তাই মার্কেটিং এ যেতে চাইছেন না।

আদিবা আদির দিকে চোখ গরম করে একবার তাকিয়ে ধমকে বলে উঠল

-“সাদিয়া সামনে গিয়ে বস বলেই গাড়ির দরজা খোলে পিছনে বসে পড়ল…আদির বাচ্চা আজ তোর শপিং করার শখ আমি মিটাব।( মনে মনে)

দেখতে দেখতে গাড়ি এসে থামল শপিং সেন্টারের সামনে।ঢুকতে ঢুকতে আদি বলল,

-“সাদিয়া যা যা পছন্দ হবে সব নিবি..

সাদিয়া মাথা নেড়ে ভিতরে গেল। সাদিয়া ঘুরে ঘুরে জিনিসপত্র কিনছে আদি সবাইকে শপিং করতে বলেছে তাই অরিন আর জুই ও ঘুরে ঘুরে সব দেখছে।শুধু আদিবা দাঁড়িয়ে আছে।

-“শালিকা যান আপনিও কিছু কিনুন আমার একমাত্র বড় শালী বলে কথা।

আদিবা আদির কথাকে গুরুত্ব দিল না চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে এরমধ্যেই সাদিয়া বলল তার সব পছন্দ করা হয়ে গিয়েছে আদি বিল দিতে যাবে তার মধ্যেই আদিবা গিয়ে সাদিয়ার হাত ধরে অলংকারের সেকশনে নিয়ে গেল।

-“বোকার মত কাপড় নিয়ে চলে যাচ্ছিস কেন? বিদেশ ফিরত ছেলেকে বিয়ে করছিস অলংকার না নিলে হয়? আংকেল এক্সপেন্সিভ দু সেট ব্রাইডাল সেট দিন তো…

দোকানদার এগিয়ে দিতেই সাদিয়া বলে উঠল,
-“আপু কি করছো এগুলো তো অনেক দাম।

আদিবা আদির দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে বলল,
-“তাতে কী? তোর বর অনেক বড় লোক মানুষ তাছাড়া শপিং এ বড়বোনকে নিয়ে এসেছে একটু খরচ তো করতেই হবে।বড় বোন তো ছোট বোনকে ঠকতে দিবে না।

আদিবার পাল্লায় পরে বেশ মোটা অংকের টাকা খরচ হল কারন সে সাদিয়ার পছন্দের সব কিছু কিনতে দেয় নি সব নিজের পছন্দে কিনেছে।আর সবকিছুই দামি দামি নিয়েছে।

শপিং শেষে সবাই মিলে বাসায় ফিরে আসল,নাহ এত টাকা নষ্ট করেও আদিকে শাস্তি দেয়া গেল না।কিন্তু আদিবা থামল না নানান রকম পরিকল্পনা করতে লাগল কি করে আদিকে উচিত শিক্ষা দেয়া যায়…



চলবে

#বেপরোয়া_ভালবাসা
#পর্বঃ৩৩
#লেখনীঃ মনা হোসাইন

সকাল নয়টার কাছাকাছি হবে আদি শাওয়ার নিয়ে রুমে ঢুকে ভ্যাবাচ্যাকা খেল। চুল মুছা বাদ দিয়ে সে হা হয়ে তাকিয়ে আছে কারন আদিবা তার ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ঠোঁটে লিপলস্টিক লাগাচ্ছে…

আদিবাকে দেখে আদিত্যে থমকে দাঁড়াল মনে প্রশ্ন জাগল সে কি বাস্তবে আছে নাকি স্বপ্নে..?আদিবার তো তার ঘরে আসার কথা না। এসেছে তো এসেছে আবার সাজগোজ করছে…?আদি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আদিবার এতটা সাহস কি করে হল? এত সাজগোজেই বা করেছে কেন?

দুধে আলাতা গায়ে লাল টুকটুকে শাড়ি, ঘন পাপড়িতে ঢাকা চোখ কাজল রেখায় অপরুপ মায়া ছড়াচ্ছে। ভেজা চুল পিঠ জুড়ে ছড়িয়ে আদিবার সৌন্দর্যকে আড়াল করার চেষ্টা করে চলেছে। হাত ভর্তি কাচের চুড়ি রিনিঝিনি আওয়াজ সারা ঘরময় আদিবার অস্তিত্বের প্রমাণ দিচ্ছে। তবে কি এটা সত্যি আদি অবাক নয়নে তাকিয়ে আছে। মুখে কথা নেই। সে আসলে বুঝার চেষ্টা করছে আদিবা কি সত্যিই তার ঘরে এসেছে নাকি স্বপ্ন দেখছে। আদিত্যর অবস্থা দেখে ফিক করে হেসে উঠল আদিবা। চুড়ির রিনিঝিনির সাথে সেই হাসির শব্দ অপুর্ব শুনাল।

আদিবা লিপস্টিক টা রেখে কাজল হাতে নিয়ে পরতে পরতে বলল,
-“এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন..?

আদিকে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে উঠল
-“তুই হটাৎ…

কথা শেষ করার আগেই আদিবা জবাব দিল
-“আপনার কাছেই এসেছিলাম।

-“আমার কাছে.?

আদিবা আদির দিকে ঘুরে তাকিয়ে মিষ্টি হাসল
-“আমাকে কেমন লাগছে…?

আদি ভ্রু কুচকাল
-কেমন লাগছে সেটা পরের বিষয় হটাৎ এমন লাগানোর কারন কী..?

আদিবা আদির দিকে এগিয়ে এসে একদম মুখোমুখি দাঁড়াল। আদিবার চোখে মুখে ভয় কিংবা কোন দ্বিধা নেই। আদিবা কখনো আদির চোখে চোখ রেখে কথা বলেছে বলে আদির মনে পড়ে না। তবে আজ কি করে বলবে..? আদির ধারনা বদলে দিয়ে আদিবা বলে উঠল,

-“আসলে কী বলুন তো আমি তো সাদিয়ার বড় বোন এখন আমার বিয়ের আগে সাদিয়ার বিয়ে হয়ে গেলে লোকে বলবে আমার কোন খুঁত আছে তখন আমার আর বিয়ে হবে না। তাই ভাবছি আপনাদের আগে বিয়েটা করে নিব।

আদিবার কথায় প্রচন্ড রেগে গেল আদি। রাগী চোখে তাকিয়ে বলল,
-“এসবের মানে কী…? কাকে বিয়ে করবি তুই?

-“আহা চাপ নিবেন না আমার বিয়ে নিয়ে আপনাদের ভাবতে হবে না। আমার পাত্র আমি নিজেই যোগাড় করব। গতকাল ম্যাট্রিমনি সাইট থেকে কয়েকজন পাত্র দেখেছি আজ একজনের সাথে মিট করতে যাচ্ছি সেজন্যেই আপনার কাছে এসেছিলাম। আমাকে একটু ড্রপ করে দিন না প্লিজ।

-“মানে কী কোথায় যাবি তুই..?

-“কেন রেস্টুরেন্টে…এত সাজগোজ করলাম কি এমনি এমনি? একটা ছেলের সাথে কথা হয়েছে বলেছে আজ মিট করতে আগে আমরা কথা বলব তারপর সব ঠিক থাকলে গার্জিয়ান নিয়ে বাসায় আসবে। ওই যে ইংরেজিতে বলে না Blind date…

আদিবার কথা শেষ হওয়ার আগেই চেঁচিয়ে উঠল,
-“আদিবা….!!!

আদিবা কি আদির রাগের কারন বুঝল নাকি বুঝল না সেটা বুঝার উপায় নেই কারন সে ভয় পাওয়ার বদলে গোবেচারা মুখ করে বলল,

-“আপনি রেগে যাচ্ছেন কেন? আচ্ছা আপনার যেতে হবে না আমি একাই যেতে পারব তবুও রাগ করবেন না প্লিজ।

আদিবার কথা শুনে আদির মেজাজ খারাপ থেকে আরও খারাপ হচ্ছে রাগে কটমট করে বলে উঠল,

-“কার অনুমতি নিয়ে এত বড় সিধান্ত নিয়েছিস..?

-“কেন? মা,চাচা,চাচী সবার অনুমতি নিয়েছি তো…
আসলে এখন বিয়ে করাটা জরুরী ছিল না কিন্তু আমি তো পড়াশোনা করিনি তাই আমার নিজের পায়ে দাঁড়ানোর উপায় নেই তারমধ্যে ছোট বোনের আগে বিয়ে হওয়ায় যদি আমার আর বিয়ে না হয় তাহলে সারাজীবন আপনার আর সাদিয়ার ঘাড়ের উপড় বসে খেতে হবে।আমি সেটা চাই না। যদি চাকরি করতে পারতাম তাহলে এতটা চিন্তা করতাম না এখন চিন্তা করতে হচ্ছে তাই সিধান্ত নিয়েছি আপনাদের বিয়ের আগে মানে এই সপ্তাহেই আমি বিয়ে করব…চাচা চাচী মা সবাই তাতে রাজি।

-“বাহ ভালই জবাব দেওয়া শিখেছিস দেখছি..তারমানে তুই পড়াশোনা করিস নি এই নিয়ে তোর কোন আফসোস নেই তাই তো?

-“একদমি না। সবাই তো আপনার মত শিক্ষিত মেয়ে বিয়ে করতে চায় না । তাছাড়া আমি একেবারেই পড়াশোনা করিনি এমন তো না।মাধ্যমিক পাশ করেছি তাও ভাল রেজাল্ট করে আর এদেশের বেশির ভাগ ছেলেই চায় বউ একটু স্বল্প শিক্ষিত হবে কথাবার্তা কম বলবে, সংসারের কাজ করবে, বাচ্চা কাচ্চা মানুষ করবে।সেদিক থেকে আমি একদম ঠিক আছি বাসার সব কাজ পারি, কথাবার্তা কম বলি আর বাচ্চাদের পড়ানোর মত যোগ্যতা তো আমার আছে তাই না? তাই বিয়ে নিয়ে ঝামেলা হওয়ার কথা না। তাছাড়া দেখতে একেবারে খারাপ নই…

-“রুপের অহংকার করছিস.? রুপ থাকলেই বিয়ে হয়ে যায়..?

-“কেন আপনার কি মনে হচ্ছে আমার বিয়ে হবে না? ওহ আপনার তো এমন মনে হবেই আপনার কাছে তো আমাকে বয়স্ক মনে হয়। চিন্তা করবেন না আমি সিধান্ত নিয়েছি একটু বয়স্ক ছেলেকে বিয়ে করব যার কাছে আমাকে ছোট মনে হবে। আমার যে আহামরি বয়স হয়ে গিয়েছে তাত কিন্তু না এখনো বাইশে পা দেইনি। এটাই বিয়ের পারফেক্ট বয়স। এই ধরুন ২৭/২৮ বছরের কোন ছেলেকে বিয়ে করব. এর চেয়ে কম বয়সী ছেলেদের বিয়ে করা উচিত না এরা আসলে প্রেমের জন্য পার্ফেক্ট হলেও বিয়ের জন্য পার্ফেক্ট না। ২৫ এর নিচের ছেলেরা তুলনামূলক রাগী আর জেদি হয়, নিজের ভুল সহজে বুঝতে পারে না। এদের মাঝে কেয়ারিং ব্যাপারটা নেই। মেয়েরা স্মার্ট,বেপরোয়া ছেলেদের সাথে প্রেম করতে চাইলেও বিয়ের সময় চায় কেয়ারিং একটা হজবেন্ড। বেপরোয়া,বদমেজাজি যখন তখন গায়ে হাত তুলবে এমন ছেলেকে বিয়ে করে জীবন নষ্ট করতে চায় না কেউ। তাই ২৫ এর নিচের ছেলেরা লিস্ট থেকে বাদ দিয়েছি। জানেন তো ম্যাট্রিমনিতে নিজের পছন্দমত পাত্র খোঁজা যায়।

-“তুই কি কথাগুলো আমাকে বললি..?

-“নাহ তবে কেউ যদি নিজেকে বেপরোয়া,জেদি,বদমেজাজি যখন তখন গাঁয়ে হাত তুলতে লারে এমন ভাবে তাহলে আমার কি করার আছে?

আদি দাঁতে দাঁত চেপে বলল
-“একটু বেশিই পকপক করছিস না…?

-“একদমি না। আমি শুধু মনের কথাগুলো বল্লাম।

-” এই বাসায় বাবা মা কাকিয়া ছাড়াও তো তোর অভিবাবক আছে তার কাছে অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন মনে হল না?

-“কে বলুন তো..?ওহ আপনার কথা বলছেন? কিন্তু আপনি তো এখন আমার গুরুজন না। আপনি যদি আমার ভাইয়া হতেন তাহলে আপনার কাছ থেকে অবশ্যই অনুমতি নিতাম কিন্তু আপনি তো সেই সম্পর্ক বাদ দিয়েছেন। মুখ ভরে শালিকা শালিকা বলেন। শালিকার জীবনের সিধান্ত নেয়ার অধিকার তো বোন জামাইয়ের নেই তাই না?

-“আদিবা তুই আমার ধর্য্যের লিমিট জানিস এর বেশি নিতে পারব না। তাই মা*র খাওয়ার আগে সাজগোজ মুছে নিজের ঘরে যা…

-“কিন্তু মারবেন কেন? কি ভুল বলেছি আমি..?

-“তুই আমার চোখের সামনে থেকে বিদায় হ…

আদিবা আর কিছু না বলে হনহন করে হেঁটে দরজার বাইরে গিয়ে দরজা লক করে দিল। আদি রেগে চেঁচয়ে বলে উঠল,

-“দরজা বন্ধ করলি কেন..?

-“আমি বাইরে যাব কিন্তু আপনার যে চরিত্র আপনি ঝামেলা করবেন তাই লাগিয়ে দিলাম..

-“আদিবা আমি তোকে খু*ন করে ফেলব বলে দিলাম আমাকে রাগাস না দরজা খোল…

আদির চেঁচামেচি শুনে সবাই ছুটে আসল আর অবাক হল আদিবার মা এগিয়ে এসে বললেন

-“এসব তুই কি করছিস আদিবা..?

-“মা ভাইয়া যখন আমাকে বাথরুমে আটকে রাখত তখন তো তোমরা কেউ ওকে প্রশ্ন করতে না আজ করছো কেন? এইটুকু সময় আটকে থাকলে কিছু হবে না আমি বের হওয়ার পর খুলে দিও।

আদি ঘরের ভিতর থেকে আবারো গর্জন করে উঠল,
-“তুই কোথাও যাবি না আদিবা। কি ভেবেছিস তোকে ফিরতে হবে না? তখন কে বাঁচাবে তোকে? আমি এক থেকে তিন গুনব এর মধ্যে দরজা না খোললে দরজা ভাঙব তারপর তোর কি অবস্থা করব জানিস নিশ্চয়..?

আদিবা কিছু না বলে দরজা খোলে দিল।আদি রাগে গজ গজ করতে করতে বাইরে আসল
-“চুপচাপ নিজের ঘরে যা নাহলে পা দুটো ভে*ঙে ঘরে ফে*লে রা*খব.

-“কিন্তু কেন? কি অন্যায় করেছি আমি?”আমার বিয়ে নাহলে আপনাদেরি তো ক্ষতি। সারাজীবন আমার দায়িত্ব নিতে হবে। তাছাড়া আমি তো আপনাদের বিয়েতে আপত্তি জানাই নি আপনি জানাচ্ছেন কেন?

আদি উত্তর দেয়ার আগে আদির বাবা বললেন,
-“আদিবা তো ঠিকি বলেছে আদি তুই সাদিয়াকে বিয়ে করবি। শপিং ও করে ফেলেছিস তাহলে এখন আদিবার সাথে এমন করার মানে কী?

-“আপত্তি জানাচ্ছি না আমি কিছুই করছি না। যা গাড়িতে যা আমি চেঞ্জ করে আসছি..

-“নাহ লাগবে না আপনার যেতে হবে না…

-“একটু আগেই তো বলছিলি যেন ড্রপ করে দেই এখন আপত্তি করছিস কেন?

-“আপনি ওখানে গেলে ঝামেলা করবেন তাই যেতে হবে না।

-“ঝামেলা করব কেন? নিজেকে এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভাবার কোন কারন নেই তোর প্রতি আমার কোন রকম এট্রাকশন নেই তাই তোর বিয়েতে আমার আপত্তি নেই।

-“আলহামদুলিল্লাহ,তবে প্রমিস করুন যাই ঘটে যাক আপনি কোন সিনক্রিয়েট করবেন না।

-“করব না কথা দিলাম।

-“ঠিক আছে আসুন তাহলে আমি যাচ্ছি…

**দুদিনের মেয়ে আমাকে কথা শুনাস শর্ত দিস আজ তো আমি তোকে দেখে নিব (মনে মনে)

আদিবা গাড়িতে যেতে যেতেই আদিত্য আসল। আদি ড্রাইভ করবে তাই সামনে বসেছে আদিবা গিয়ে পিছনে বসতেই আদি চেঁচিয়ে উঠল

-“আমি কি তোর ড্রাইভার..? পিছনে কি? সামনে আয়…

আদিবা কথা না বাড়িয়ে এসে বসল। আদিবার মন আজ বেশ ফুরফুরে মুখ থেকে যেন হাসি সরছেই না তবে আদির মেজাজ যথেষ্ট খারাপ হয়েছে মুখ কালো করে ড্রাইভ করছে মাঝে মাঝে আড় চোখে আদিবাকে দেখছে…

আদিবা হটাৎ বলে উঠল,
-” আমাকে কি খুব সুন্দর লাগছে..?

আদিত্য রাগি চোখে তাকাল।

-“সবসমত রেগে থাকেন কেন? ড্রাইভ বাদ দিয়ে বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছেন তাই তো বললাম।

-“তুই দেখতে খুবি জঘন্য বুঝেছিস? আমি তোকে দেখছি না এমনি তাকিয়েছিলাম।

-‘ওহ তাই নাকি তাহলে মনে হয় আরও একটু লিপস্টিক দিতে হবে বলেই ব্যাগ থেকে লিপস্টিক নিয়ে সাইড মিররে দেখে দেখে লিপস্টিক দিতে শুরু করল।

রাগে আদির মাথা ফেঁটে যাচ্ছে তাই কোন সংকেত ছাড়াই গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিল হুট করে তাল সামলাতে গিয়ে লিপস্টিক এবড়ো থেপড়ো হয়ে গেল..আদিবা রাগে চোখ বড় বড় করে তাকাল।
আদির মুখে দুষ্ট হাসি দেখে আরও ক্ষেপে গেল আদিবা। সেও কোন কিছু না বলে মুখ বাড়িয়ে আদির সাদা শার্টে লিপস্টিক মুছে দিল।

-“কি করলি এটা..?

-“বেশ করেছি আপনি আমার লিপস্টিক নষ্ট করলেন কেন?

-“মাথা মোটা কোথাকার…এখন তুই যখন তোর ম্যাট্রিমনি বফের সামনে যাবি তোর ঠোঁটের অবস্থা আর আমার শার্টের অবস্থা দেখে বেচারা তো হার্ট এট্যাক করবে।

-“আপনি এটা ইচ্ছে করে করেছেন তাই না..? এ্যা এ্যা….

-“আরে বোকার মত কান্না জুড়েছিস কেন আমি তো এমনি বলেছি। দুনিয়ার মানুষ তোর মত বোকা না…

-“আমার বিয়ে যদি নাহয় আমি গ*লায় দ*ড়ি দিব এ্যা….আমার বিয়ে।

-“নির্লজ্জ বেহায়া মেয়ে বিয়ের জন্য মরে যাচ্ছে একেবারে…

-“মরবই তো আমার বুঝি বিয়ে করতে ইচ্ছে করে না..?

-“কর না কর… একটা কেন একসাথে কয়েকটা করে ফেল…

আদিবা চোখ মুছতে মুছতে বলল।
-“আপনি আমার বিয়েতে কি গিফট করবেন?

প্রশ্নটা করতে দেরি হলেও আদির উত্তর দিতে দেরি হলনা ফটাফট বলে দিল
-“আচাড়ের বয়াম..

-“আচাড়? কিন্তু কেন? আচাড় দিয়ে আমি কি করব?

-“বিয়ে হোক তারপর বুঝবি।

দেখতে দেখতে গাড়ি এসে থামল শহরের নামকরা রেস্টুরেন্টের সামনে। আদিবা নেমেই বলল

-“শাড়ির কুচি ঠিক করে দিন।

আদি এদিক ওদিক তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করল আদিবা কথাটা কাকে বলেছে।

-“এদিক ওদিক কি দেখেন আপনাকেই বলেছি।শালীর বিয়েতে কিছু দায়িত্ব তো পালন করতেই হবে তাই না।শাড়ি এলোমেলো থাকলে বিয়ে ভেঙে যায় যদি।

-“তাই বলে আমি আদিত্য চৌধুরী এখন কারোর শাড়ির কুচি ঠিক করব?

-“কেন ঠিক করে দিলে কি হাতে ফুসকা পড়বে.? তাড়াতাড়ি ঠিক করুন না হলে কান্না জুড়ব কিন্তু।

-“আজব তো…

-“এ্যা….

-“থাম থাম দিচ্ছি তবুও এমন অদ্ভুত আওয়াজ করিস না। চোখ দিয়ে পানি বের হয়না এটা কেমন কান্না খোদা জানে।

-“বেশি কথা না বলে কুচি ঠিক করুন।

আদি বাধ্য নিয়ে নিচে বসল।
-“উফফ হচ্ছে না সুন্দর করে করুন না..

-‘তবে রে..দাঁড়া

আদি উঠে দাঁড়াতেই আদিবা দৌড় দিল।
-“আরে ইডিয়েট আস্তে যা। যে ছেলে দেখা করতে এসেছে তোকে এই অবস্থায় দেখলে তো ভাব্বে মেয়ের সাথে নয় ঘোড়ার সাথে মিট করতে এসেছে।

-“চুপ করবেন আপনি..? পাত্রী পক্ষে নিজেই এমন বললে পাত্র পক্ষ কখনো মেয়ে পছন্দ করবে..?

আদিবা আদি কথা বলতে বলতেই একটা ছেলে এগিয়ে এসে বলল,

-“আদিবা তাই না..?

আদিবা তাকিয়ে বলল,
-‘হুম মিস্টার সায়ন তাই না?

-“হ্যা আসুন আমি টেবিল বুক করেই রেখেছি।

-“আপনি যান আসছি…

ছেলেটি সামনে সামনে হাঁটছে আদিবা আদি পিছন পিছন। আদিবা ফিসফিস করে আবারও আদিকে সাবধান করল যেন উল্টো পাল্টা কিছু না বলে।

টেবিলে আদি আর সায়ন সামনা সামনি বসেছে আর আদি আদিবার পাশের সিটে..
-“উনাকে তো ঠিক চিনলাম না..

আদি হাত বাড়িয়ে বলল
-“আদি,নাম শুনেই নিশ্চয় বুঝেছেন ওর কাছের কেউ..সায়ন হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করল

আদিবা আদির হাত টেনে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল
-‘উফ এত ঘুরিয়ে বলতে হয় কেন..? উনি আমার বড় চাচার ছেলে..

-“ওহ আচ্ছা…

-‘এবার বলুন আপনার কি জানার আছে..

-“আরে তেমন কিছু না..কি আবার জানার থাকবে।

আদিবার আগে আদি উত্তর দিল
-“অনেক কিছু জানার আছে। যেমন আদিবার মাথায় গোবর ছাড়া কিছু নেই।ও ভাল করে অ,আ পারে না অতএব ওকে বিয়ে করলে আপনার বাচ্চারা মুর্খ হবে। দ্বিতীয় ও রান্না করতে পারে ঠিকি কিন্তু মুখে দেয়া যায় না। তৃতীয় ও দেখতে একেবারেই ভাল না এখানে আসার আগে তিনঘন্টা ধরে মেকাপ করেছে। ৪র্থ ও সারাদিন এত ঝগড়া করে যে মহল্লার সব কাক উড়ে গিয়েছে।

আদির কথায় আদিবা আর সায়ন দুজনেই অবাক হয়ে আদির তাকাল আদিবা ব্যাপারটা হালকা করার জন্য হাসির অভিনয় করতে করতে বলল,

-“কিছু মনে করবেন না ভাইয়া আপনার সাথে মজা করছেন।

-“উনি কি আমার দুলাভাই হন যে মজা করব? যাইহোক ভাইয়া এই বিয়ে হচ্ছে না।আপনাকে আমার পছন্দ হয়নি।যে ছেলে বিয়ের আগেই মেয়েকে একা রেস্টুরেন্টে ডাকে সে আর যাইহোক চরিত্রবান হতে পারেনা। এই চল বলেই আদিবার হাত ধরল আদি।

-“উফফ ভাইয়া কি করছো তুমি কিন্তু প্রমিস করেছিলে উল্টা পাল্টা কিছু করবে না।

-“করিনি তো.. উল্টা পাল্টা কিছু করব না বলেই মুখে কথা বলছি. উলটো পাল্টা করার হলে তো তোকে এতক্ষনে কানে কপালে থা/প্প/ড়িয়ে বাসায় নিয়ে যেতাম..ভদ্র মেয়েরা পাত্রী দেখাতে রেস্টুরেন্টে আসে ? চুপচাপ বাসার রাস্তা মাপ দেরি করা তো দূর পিছন ঘুরে তাকালে এমন মা*রব নিজের নাম ভুলে যাবি…আর তুই তাকিয়ে কি দেখছিস? বের হ এখান থেকে আমার বোনকে রেস্টুরেন্টে ডাকিস সাহস তো কম না। আদিবার কোথায় বিয়ে হবে সেটা ও না আমরা বড়রা ঠিক করব বুঝেছিস..?



চলবে…!!!