ভালোবাসাময় প্রহর পর্ব-০৬

0
285

#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:৬

রক্তিমের বলা প্রতিটি কথা অধরার হৃদয়ে গিয়ে বাঁ/ধ/লো তার মন চাইছে রক্তিমের কথা বিশ্বাস করতে কিন্তু সেই ছবিগুলো তার চোখের সামনে ভে/সে উঠলো।রক্তিম অধরার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে বললো,

~অধরা,আমাকে কিছুদিন সময় দেও আমি সব ঠিক করে দিবো।

অধরা রক্তিমের ছোয়া পেয়ে হালকা কেঁ/পে উঠলো সে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললো,

~আপনি এখন চলে যান রক্তিম ভাইয়া আমি একা থাকতে চাই।

রক্তিম অধরাকে ছেড়ে দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলো অধরা ধ/প করে বিছানায় বসে পরলো সে বুঝতে পারছেনা কে সত্য বলছে আর কে মিথ্যা?কিন্তু সে সবকিছু বুঝে শুনেই সিদ্ধান্ত নিবে যাতে তার দ্বারা কোনো অ/ন্যা/য় না হয়।সে কারো মনে কষ্ট দিতে চায় না কারো অ/ভি/শা/প নিয়ে সে নিজ ভালোবাসা চায় না।অধরা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বারান্দায় চলে গেলো এখন সে প্রকৃতির সাথে সময় কাটাবে কিছুক্ষণ নিজ সমস্যা গুলোকে ভুলে থাকার জন্য।দিবার বাবা সোফায় পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে সাথে আছে রক্তিমের বাবাও।রক্তিমের বাবা বেশ গম্ভীর কন্ঠে বললো,

~তুমি আবারো সেই একই প্রযেক্ট এর ফাইল নিয়ে এসেছো।তোমাকে রক্তিম অনেক সুন্দর করেই বুঝিয়ে দিয়েছিল এসব অ/বৈ/ধ জিনিসের ব্যবসাতে আমরা নেই।তুমি কেন বার বার আমাদের কাছেই আসছো দেখো এসব বিষয়ে আমি আর কোনো কথা বলতে পারবো না।

দিবার বাবা হাত জোড় করে বললো,

~প্লিজ ভাইজান আমার দিকটা বুঝার চেষ্টা করুন আমি এই ব্যবসার জন্য মার্কেট থেকে অনেক টাকা উঠিয়েছি এসব স্বর্ণ যদি সঠিক সময় না পৌছায় তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে।

রক্তিমের বাবা বললেন,

~দেখো হারুন(দিবার বাবা) আমি তোমায় আগেও বলেছি যেখানে স/র/কা/রে/র পারমিশন নেই সে কাজে আমার কম্পানিও নেই আমাকে মা/ফ করো ভাই।

রক্তিমের বাবার কথা শেষ হতেই রক্তিম সেখানে উপস্থিত হয়ে বললো,

~বাবা একদম ঠিক বলেছে ফুপা আপনি কেন বার বার আমাদের কাছে আসছেন?

দিবার বাবা রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বললো,

~আপন ভেবেই আসছি যাতে তোমাদেরও লাভ হয়।

রক্তিম তাচ্ছিল্য পূর্ণ হাসি দিয়ে বললো,

~আমাদের লাভ?আপনি তো এসব করছেন যাতে আপনার
মা/ল কোথাও যদি ধ/রা পরে যায় তাহলে আপনি আমাদের ওপর সব দো/ষ চা/পি/য়ে নিজে কে/টে পরেন।আপনি কী ভেবেছেন আমি কী কিছুই জানি না সব খবর নিয়েছি আমি। আপনার মত আর আপনার মেয়ের মতো নি/চু মনের মানুষ আমি একটাও দেখিনি।

রক্তিমের কথায় তার বাবা একটু রেগে গিয়ে বললো,

~এসব কেমন কথা রক্তিম?বড়দের সাথে কেউ এভাবে কথা বলে?

তাদের কথার আওয়াজে রাত আর রক্তিমের মাও বের হয়ে আসে দিবা বাসার দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে সে ভ/য়ে ঘামছে কারণ রক্তিম যদি সব বলে দেয়।রক্তিম তার বাবার কাছে গিয়ে দুহাত ধরে বললো,

~বাবা,তোমাকে অনেক কথা বলার আছে দিবার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো দিবাই প্রথম আমাকে এ কাজের অফার দেয় তাই আমি তাকে হ্যাঁও বলে দেই।কিন্তু সকল খোজ খবর নেওয়ার পর জানতে পারি এই প্রযেক্টা পুরোপুরোই
অ/বৈ/ধ।তাই আমি সেখান থেকে সরে আসি এরপর থেকে দিবা আমাকে নানান ভাবে বুঝাতে থাকে কিন্তু আমি তার ডাকে সাড়া দেইনি।এভাবেই আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক খা/রা/প হয়ে যায় ফুপার প্লান টা খুব সুন্দর ছিলো কিন্তু আফসোস আমি তা পূরণ হতে দেইনি।

রক্তিমের কথা শুনে সবাই দিবার বাবার দিকে ঘৃনা ভরা দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো রক্তিমের বাবা বললেন,

~তুমি এখান থেকে এখনই চলে যাও হারুন নাহলে আমি ভুলে যাবো তুমি আমার বোনের স্বামী।

দিবার বাবা মাথা নিচু করে ফাইলটা হাতে নিয়ে চলে গেলো যাওয়ার সময় দিবার দিকে এক পলক তাকালো।দিবা চোখে পানি এনে রক্তিমের বাবার সামনে গিয়ে বললো,

~মামা,আমি জানতাম না যে প্রজেক্ট টা অ/বৈ/ধ প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিবেন।

রক্তিম দিবার কথা শুনে বললো,

~এতো অভিনয় কীভাবে করিস তুই?তুই সব জানতি তাই তো আমাকে বিয়ে করার জন্য কত রকমের পায়তারা করচ্ছিস।
যখন জানতে পারলি আমি অধরাকে আমি ভালোবাসি সেসময় থেকে তোর রূপ পাল্টাতে থাকে।

রক্তিমের কথা শুনে রক্তিমের মা ও বাবা অবাক হলো তার বাবা বললেন,

~তুমি অধরাকে ভালোবাসো?

রক্তিম বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,

~জ্বী বাবা অধরাকে আমি ভালোবাসি।

দিবা রক্তিমের বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,

~মামা,আমি ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে এসব করেছি আমাকে
মা/ফ করে দিন।

রক্তিমের বাবা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,

~তুমি যেহেতু নিজ ভুল বুঝতে পেরেছো তাই আমি তোমাকে মা/ফ করে দিলাম কিন্তু তুমি এখনই এ বাসা থেকে চলে যাবে।

দিবা মাথা দুলিয়ে একবার রক্তিমের দিকে তাকিয়ে নিজ রুমে চলে গেলো ব্যাগ গুচ্ছাতে। রাত দিবার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বললো,

~এক বি/প/দ কে/টে/ছে তন্নিকে গিয়ে খবরটা দিয়ে আসি।

রাত ধীর পায়ে সেখান থেকে চলে গেলো রক্তিম তার বাবার সামনে দাড়িয়ে আছে। রক্তিমের মা বললেন,

~দেখেন যা হওয়ার হয়ে গেছে যেহেতু ছেলে অধরাকে চায় আমাদের উচিত সব ঠিকঠাক করে দেওয়া।

রক্তিমের বাবা বললেন,

~তাই করতে হবে আমি চেষ্টা করবো যদি অধরা রাজি থাকে বিয়েতে তাহলে সব ঠিকঠাক করা যাবে।

রক্তিম মায়ের দিকে তাকিয়ে ইশারায় ধন্যবাদ জানালো রক্তিমের বাবা বললেন,

~আজ রাত আমরা অধরার বাসায় যাবো।

অধরা বাবাকে সব বলেছে দিবার বলা প্রতিটা কথা সব শুনে অধরার বাবা বললেন,

~এ ধরনের কোনো কথা হয়নি আমার সাথে হ্যাঁ ব্যবসায় আমার টাকা রয়েছে দিবা তোমায় সব মিথ্যে বলেছে।আর রক্তিমের সাথে দিবার কোনো সম্পর্ক নেই আমি জানি দিবা এসব কেন করছে?

বাবার কথায় অধরা মুখ তুলে তাকালো আর বললো,

~কী কারণে বাবা?

অধরার বাবা কিছু বলতে যাবে তার আগেই কলিংবেল বেজে উঠলো অধরার মা রান্নাঘর থেকে হাত মুছতে মুছতে বের হলো আর দরজা খুলে দিলো।দরজা খুলতেই রক্তিম সহ পুরো পরিবারকে দেখে অবাক হয়ে গেলো অধরার মা হেসে বললো,

~আরে আপনারা আসুন ভিতরে।

সবাই ভিতরে প্রবেশ করলো অধরা আর তার বাবা রুম থেকে বের হয়ে রক্তিমদের দেখে একটু অবাক হলো।রাত এসে অধরাকে বললো,

~তোর শাঁ/ক/চু/ন্নি বোনটা কই রে?

অধরা রাতের কান ম/লে দিয়ে বললো,

~শুনলে তোকে আ/স্তো রাখবে না রুমে আছে কাল পরীক্ষা তাই হয়তো ব্যস্ত।

রাত বললো,

~যাই সুখবরটা দিয়ে আসি।

অধরা বললো,

~কীসের সুখবর?

রাত একবার রক্তিমের দিকে তাকালো তারপর বললো,

~সব জানতে পারবি।

বলেই সে তন্নির রুমের দিকে চললো অধরা এখন ভাবনায় চলে গেলো।রক্তিমের বাবা অধরার বাবাকে বললেন,

~আজ তোর কাছে একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। আমি জানি তুই আমার কথাটা রাখবি।

অধরার বাবা বললেন,

~কেমন প্রস্তাব?

রক্তিমের বাবা বললেন,

~আমি রক্তিমের জন্য অধরাকে চাই।

রক্তিমের বাবার কথা অধরার কানে পৌচ্ছাতেই সে বলে উঠলো,

~বাবা যে কোনো সিদ্ধান্তের আগে আমি রক্তিম ভাইয়ার সাথে কথা বলতে চাই।

রক্তিম অধরার কথা শুনে বললো,

~আমি জানি তোমার অনেক প্রশ্ন রয়েছে আজ আমি সব প্রশ্নের উত্তর দিবো।

অধরা আর রক্তিম ছাদে দাড়িয়ে আছে হালকা হাওয়ার তালে অধরার চুলগুলো উড়ছে অধরা অধীর আগ্রহে রক্তিমের দিকে তাকিয়ে আছে।রক্তিম ফোনটা বের করে কিছু একটা বের করে অধরার সামনে তা তুলে ধরলো অধরা ফোনের দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় এগুলো সে কী দেখছে?মানুষ এতোটা নিচ কীভাবে হতে পারে?রক্তিম অধরাকে বললো,

~এখন আমি যে কথা গুলো বলবো তা মন দিয়ে শুনো।

অধরা রক্তিমের দিকে তাকালো রক্তিম বলতে শুরু করলো

চলবে