ভালোবাসার অধিকার পর্ব-০৯

0
624

#ভালোবাসার_অধিকার❤❤
লেখা- পূজা
পর্ব- ৯


দিয়া ভেতরে গিয়ে নেহাকে জরিয়ে ধরে বললো,
দিয়া: তুই কখন এলি।
নেহা: এইতো আধা ঘন্টা হবে। আন্টি বললেন তুই তর কোনো ফ্রেন্ড এর বাসায় গেছিস তাই দ্বীপ এর সাথেই গল্প করছি।
দিয়া: ভাইয়া তুই কখন এলি।
দ্বীপ: আমি নেহা আসার কিছুক্ষণ আগেই এসেছি।
দিয়া: ওহ। তকে একটা কথা জানানোর ছিলো।
দ্বীপ: কি?
দিয়া: শুভর সাথে সিমির বিয়ে ঠিক হয়েগেছে।
দ্বীপ: কি?
দিয়া: আমরা তো জানতামই না। পরে জেনেছি ওদের দেখে।
আর ঈশান বলেছে ওর আসতে একটু লেইট হবে।
দ্বীপ: কেনো?
দিয়া: জানি না। বলে নি। শুভর বাসায়ই আছে হয়তো এখন।
দ্বীপ: ওকে। তুমি ওখানে এভাবে দারিয়ে আছো কেনো।
এতক্ষণ অনু নেহাকে দেখছিলো। কি শর্ট ড্রেস। ইচ্ছে করছে টাসিয়ে একটা থাপ্পড় মারতে। একটা ছেলের সামনে এইরকম ড্রেস পরে কেউ আসে। ছেলেদের এট্রাকশন করার দান্ধা হুহ😡। দ্বীপের কথায় দ্বীপের দিকে তাকালো আর মুখে হাসি বাট রাগি লুকে বললো,
অনু: না আমি এখানে ঠিক আছি।
নেহা: দ্বীপ ও কে।
দিয়া: ও আমার বেষ্টফ্রেন্ড।
নেহা: ওহ।
দ্বীপ: তুমি ঠিক আছো?
অনু: ঠিক না থাকার কি আছে😡।
দ্বীপ: তোমার মুখ দেখে মনে হচ্ছে রেগে আছো।
অনু: আমি রেগে থাকি বা না থাকি তাতে তোমার কি😡
দ্বীপ: আমার ইত সব😉
নেহা: তুমি এই মেয়েটার সাথে এইভাবে কথা বলছো কেনো। ওর রাগ করোক তাতে তুমার কি।
দ্বীপ: তা তুমি বুঝবে না।
নেহা: (মানেটা কি? দ্বীপের সাথে এই মেয়েটার কোনো রিলেশন আছে নাকি।)
দ্বীপ: তুমি এমন টমেটো হয়ে যাচ্ছ কেনো। ইচ্ছে করছে…😜
অনু: অসভ্য ছেলে। সব সময় শুধু আজে বাজে চিন্তা মাথায় ঘুরে😡।
দ্বীপ: এখন আমি বাজে কথা কোথায় বললাম।
অনু: একদম আমার সাথে কথা বলবে না বলে দিচ্ছি।
দ্বীপ: আমার ইচ্ছা আমি বলবো। তোমার কথা শুনতে যাবো কেনো।
অনু: আমার সাথে কথা বলবে তো আমার কথা শুনবে না😡।
দ্বীপ: সকালেই তো এতো সুন্দর করে কথা বললে। এখন আবার কি হলো।
নেহা: ও যখন বলছে ওর সাথে কথা না বলার জন্য তো তুমি যেছে কথা বলছো কেনো। বাদ দাও। এসব মেয়েরা একটু ভাব নেয় বেশি।
দিয়া: মাইন্ড ইয়র লেঙ্গুয়েজ নেহা। এসব মেয়ে বলে কি বুঝাতে চাচ্ছিস তুই।
নেহা: আমি খারাপ কিছু তো মিন করি নি।
দ্বীপ: আরে বাবা তোমরা ঝগড়া করছো কেনো। আর নেহা তুমি অনুর সাথে ঠিক ভাবে কথা বলবে। ও যাই বলুক আমাকে বলেছে। তুমি এসবের মাঝে কথা বলছো কেনো।
অনু: চল দিয়া। এখানে থেকে লাভ নেই। ওরা কথা বলছিলো। আমরা এসে ডিস্টার্ব করেছি। সরি।
দ্বীপ: আমি কি তোমায় এ কথা একবারো বলেছি।
অনু: বলতে হয় না। আমরা এমনিতেই বুঝি।
দ্বীপকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে অনু দিয়ার হাত ধরে টেনে রুমের বাইরে নিয়ে যায়। অনু রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নেয়। ওয়াশরুম থেকে বেরতেই দিয়া জিজ্ঞেস করে,
দিয়া: তুই এভাবে আমাকে টেনে আনলি কেনো?
অনু: তার আগে বল। এই মেয়েটা কে। কি শর্ট ড্রেস পরেছে দেখেছিস। ছিঃ এরকম ড্রেস পরে একটা ছেলের সামনে কেউ আসে।
দিয়া: নেহা আমার কাজিন। আর ও এরকম ড্রেসই পরে।
অনু: ওহ।
দিয়া: তুই ওর কথায় কিছু মনে করিস না। ও…..
অনু: ধুর। ও কে যে ওর কথায় কিছু মনে করতে যাবো। আমি ওসব কানে ও তুলি নি।
দিয়া: গুড।

অনু আর দিয়া যেথেই নেহা দ্বীপকে বললো,,
নেহা: ও তোমার সাথে এমন রুড বিহেভ করলো আর তুমি ভালো ভাবে কথা বললে কেনো।
দ্বীপ: ও তো সবসময় এরকমই কথা বলে। বাট মনের দিক দিয়ে খুব ভালো। আমার সাথে রেগে কথা বললে ও আমার কিছু হলে ঠিকই আমার যত্ন নেয়।
নেহা: মানে?
দ্বীপ: রাতে আমাকে তেতো কফি খাইয়েছে। ওর জন্য রাতে বৃষ্টিতে বিজে জ্বর এসেছে। এইজন্য সারারাত সজাগ থেকে আমার মাথায় জলপট্টি দিছে মাথা টিপে দিছে।
আর ওর উপর আমি বেশিক্ষণ রাগ করে থাকতে ও পারি না।
নেহা:(এটা কি হচ্ছে। দ্বীপ কি ওই মেয়ের প্রতি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এটা আমি থাকতে কখনো হতে দেবো না। দ্বীপ শুধুই আমার)
দ্বীপ: কি ভাবছো।
নেহা: হুহ না কিছু না।
দ্বীপ: ওকে। অনেক গল্প করলাম এবার তুমি রুমে যাও।
নেহা: ওকে।
নেহা চলে গেলো। দ্বীপ কিছুক্ষণ পর রুম থেকে বেরিয়ে নিচে গেলো। গিয়ে দেখে ওর মা ড্রয়িংরুমে বসে আছেন। গিয়ে ওর মার কাছে বসলো।
দ্বীপের মা: তর অফিসের কি খবর সব কমপ্লিট তো।
দ্বীপ: হ্যা মম। আর দুদিন পর থেকেই জয়েন করবো। সব ডান। ইমপ্লয়ি ও অলমোস্ট পেয়ে গেছি।
দ্বীপের মা: তাহলে তো ভালোই। তা কতো জনের পার্টনারশীপ।
দ্বীপ: ৫জনের। ঈশান তো ২মাস পর ইউএস ফিরে যাবে।
দ্বীপের মা: এতো জলদি কেনো।
দ্বীপ: ও তো আসতেই চায় নি। আমি জোর করে নিয়ে এসেছি। ২মাস থাকবে বলেই ঠিক করে এসেছে।
দ্বীপের মা: ও। তা ও কোথায় এখনো আসে নি।
দ্বীপ: না। শুভর বাসায় আছে। দিয়া বললো শুভর সাথে নাকি সিমির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
দ্বীপের মা: আমাকে রুপা ফোন করে বললো সিমিকে আজ ছেলে দেখতে আসবে আমাকে যেথে বলেছিলো দিয়া গেছে তাই আর যাই নি। ছেলে যে শুভ তা জানতাম না। ভালোই হয়েছে। যোগ্য ছেলেই পেয়েছে।
দ্বীপ: হুম। এখানে এসে একবারো প্রহরের সাথে কথা হয়নি। কাল একবার দেখা করবো ভাবছি।
দ্বীপের মা: সিমির বিয়ের পর প্রহর আর দিয়ার বিয়েটা ও দেখতে হবে।
দ্বীপ: হুম। এসব দেরি আছে। দিয়ার সামনে ফাইনাল এক্সাম।
দ্বীপের মা: এক্সামের পরের কথাই বলছি।
ওদের কথা বলার মাঝখানেই হঠাৎ কলিংবেলটা বেজে উঠে। দ্বীপের মা চিৎকার করে বললেন,
দ্বীপের মা: পাখি গিয়ে দরজাটা খুল।
পাখি: খুলছি।
পাখি গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো। ঈশান এসেছে। ও এসে দ্বীপের পাশে বসলো।
দ্বীপের মা: কি হয়েছে?
ঈশান: কিছু না আন্টি খুব টায়ার্ড। প্রহরের বাসা থেকে আসার পথে রাস্তার কিনারে একটা ছোট বাচ্চাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাই। কেউ হেল্প করতে যায় নি। তারপর আমরা ওকে নিয়ে হসপিটাল যাই। ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসি। ট্রিটমেন্ট এর টাকা ও পে করে আসি।
দ্বীপ: কি? এখন কেমন আছে বাচ্চাটা।
দ্বীপের মা: তোমরা বাচ্চাটাকে একা রেখে এলে কেনো।
ঈশান: একা রেখে আসি নি। হসপিটাল এ নদীকে পাই। ও তো মেডিকেল এর স্টুডেন্ট। ওর কাছেই বাচ্চাটার রেসপন্সিবিলিটি দিয়ে আসি।
দ্বীপ: ওহ! খুজ নিয়ে দেখিস।
ঈশান: দেখবো। তার আগে ফ্রেস হয়ে আসি।
দ্বীপ: চল উপরে।
দ্বীপ আর ঈশান উপরে চলে গেলো। দ্বীপের মা গেলেন কিচেনে। দ্বীপ আর ওর বাবা ওর মায়ের হাতের রান্না ছাড়া অন্য কারো হাতের খাবার খেতে পারে না।
ঈশান ফ্রেস হয়ে এসে বিছানায় শুয়ে পরলো। দ্বীপ গিয়ে সোফায় বসলো। ঈশান জিজ্ঞেস করলো,
ঈশান: তা তর কাজের কি খবর। অল ডান।
দ্বীপ: হুম। অলমোস্ট।
ঈশান: শরির ঠিক আছে।
দ্বীপ: হুম।
ঈশান: আমার তো খুব মাথা ব্যাথা করছে। সকাল থেকে ছুটাছুটির মধ্যে ছিলাম।
দ্বীপ: আমি হেড মাসাজ করতে পারি না।
ঈশান: আই নো😒
দ্বীপ: ওয়েট দিয়া বা অনুকে ডেকে আনছি।
ঈশান: ওকে।
দ্বীপ দিয়ার রুমে গেলো। গিয়ে দেখে অনু শুয়ে আছে। দিয়া বসে ফোন টিপছে।
দ্বীপ: দিয়া তুই একটু আসতে পারবি।
দিয়া: কেনো?
দ্বীপ: কোনো রিয়েক্ট করবি না কিন্তু। ঈশানের খুব মাথা ব্যাথা। যদি একটু মাসাজ করে দিতি।
দিয়া: 😡আমি কেনো দেবো।
দ্বীপ: আরে বাবা রেগে যাচ্ছিস কেনো?। আমার কথাটা শুন।
[দ্বীপ ওই বাচ্চাটার কথা বললো]
দিয়া: ওকে চল।
দিয়া গেলো দ্বীপের রুমে। ঈশান শুয়ে আছে মাথায় হাত দিয়ে। দিয়া গিয়ে ঈশানের মাথা থেকে হাত সরালো। ঈশান চোখ খুলল।
দিয়া: চোখ বন্ধ করেই রাখো। আমি মাথা টিপে দিচ্ছি।
ঈশান চোখ বন্ধ করে নিলো। দিয়া মাথা টিপে দিচ্ছে। আর দ্বীপ বসে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।
কিছুক্ষণ পর নেহা দ্বীপের রুমে এলো। এসে দেখে দিয়া ঈশানের মাথা টিপে দিচ্ছে আর দ্বীপ ল্যাপটপ টিপাচ্ছে। নেহা গিয়ে দ্বীপের পাশে বসলো।
নেহা: হাই গাইজ।
নেহার কন্ঠ শুনে ঈশান মাথা তুলে তাকালো। নেহাকে দেখে ঈশান বিরবির করে বললো,
ঈশান: আমার মাথা ব্যাথা বারানোর জিনিস এসে গেছে।
দিয়া এটা শুনতে পেলো। আর ভ্রু কুচকে ঈশানের দিকে তাকালো।
ঈশান: ও কখন এলো।
দিয়া: বিকেলে।
ঈশান: কেনো এলো।
দিয়া: 😕তোমায় দেখতে।
ঈশান: 😐
দিয়া: চুপচাপ শুয়ে থাকো। নয়তো চলে যাবো।
ঈশান আর কোনো কথা বললো না।
দ্বীপ: হাই।
নেহা: ঈশানের কি হয়েছে।
দিয়া: মাথা ব্যাথা।
নেহা: ওহ। মেডিসিন খাইয়ে দাও। এই ভাবে কি ব্যাথা কমবে।
দিয়া: 😕খেয়েছে।
ঈশান চোখ বন্ধ থাকা অবস্থায়ই বললো,
ঈশান: আমার কমবে।
নেহা: ওহ গুড। দ্বীপ নিচে চলো না।
দ্বীপ: কেনো। এখানেই তো ঠিক আছি।
নেহা: আমার ভালো লাগছে না।
দিয়া: তাহলে তুই যা ভাইয়াকে টানছিস কেনো।
নেহা: আমার একা ভালো লাগছে না। এখানে তো আমি দ্বীপের জন্যই এসেছি। প্লিজ চলো না।
ঈশান: ডং(আস্তে)
দ্বীপ: ওকে চলো।
নেহা আর দ্বীপ নিচে ড্রয়িংরুমে গেলো। দ্বীপের বাবা কিছুক্ষণ আগেই বাসায় ফিরেছেন। এখন রুমে। দ্বীপের মা রান্না ঘরে। দ্বীপ আর নেহা ড্রয়িংরুমে বসলো। নেহা দ্বীপের ঘা ঘেসে বসলো। দ্বীপের সাথে এটা সেটা নিয়ে গল্প করছে। অনু ঘুম থেকে উঠে নিচে আসলো। নিচে দ্বীপ আর নেহাকে এক সাথে দেখে ওর রাগ উঠে গেলো। চলে আসতে নিলেই দ্বীপ অনু এক হাত ধরে টেনে অন্য পাশে বসিয়ে দিলো।
অনু: কি করছোটা কি? আমাকে এভাবে টান দিলে কেনো।
দ্বীপ: তুমি চলে যাচ্ছিলে কেনো।
অনু: আমার ইচ্ছা।
অনু উঠতে গেলে দ্বীপ অনুর কমড় জরিয়ে ধরে আরো কাছে টেনে নেয়। নেহা শুধু রাগে ফুসছে এসব দেখে কিছুই বলতে পারছে না।
আর এদিকে অনু বরফ হয়ে গেছে। চোখ বড় বড় করে দ্বীপের দিকে তাকালো। দ্বীপ একটা চোখ টিপ দিলো। অনু দ্বীপের কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
অনু: কি করছো এসব। আমায় ছারো।
দ্বীপ: ইশশ ছারতে ইচ্ছে করছে না। কি সফট।
দ্বীপের কথা শুনে অনু দ্বীপের দিকে অবাক হয়ে তাকালো। তারপর দিলো দ্বীপের হাতে একটা চিমটি।
দ্বীপ: আউচ। এটা কি করলে।
দ্বীপ অনুর কমড় ছেড়ে দিলো। অনু উঠে দারালো।
অনু: অসভ্য।
বলেই এখান থেকে চলে গেলো।
নেহা: ইশশ তোমার হাতে বেশি লাগে নি তো। এই মেয়েটার সাথে কথা বলতে যাও কেনো তুমি। দেখো কি জোরে চিমটি দিলো। (আমার দ্বীপকে আঘাত করার শাস্ত্রি তোমায় পেতে হবে)
দ্বীপ: আরে এটা কিছু না। এটা কোনো ব্যাথা হলো। বাদ দাও।

ঈশানের ফোন বাজছে। দিয়া তাকিয়ে দেখে নদী ফোন দিছে।
দিয়া: ঈশান?
ঈশান: হু।
দিয়া: নদী ফোন দিছে।
ঈশান: ওহ! ধরে দেখো।
দিয়া ফোন রিসিভ করলো।
নদী: হ্যালো ঈশান?
দিয়া: না আমি দিয়া।
নদী: ওহ! তুই কেমন আছিস?
দিয়া: ভালো। তুই তো এখন আমাদের ভুলেই গেছিস।
নদী: তুই তো জানিস মেডিকেল এ পড়াটা কতোটা টাফ। তারউপর সংসার।
দিয়া: মৃনালভাইয়ায় কিন্তু তকে যথেষ্ট সাপোর্ট করে।
নদী: তা আর বলতে। শুধু কি ও। ওর ফ্যামিলি। ওরা তো আমায় বউ না মেয়ে ভাবেন। তাই তো আমার ডাক্তার হওয়ার ড্রিমটা কমপ্লিট করতে পারছি।
দিয়া: হুম রাইট।
নদী: আচ্ছা যে কারনে ফোন দিছি। ঈশানকে বলিস যে ছেলেটাকে আডমিট করেছিলো। ছেলেটা আউট আব ডেন্জার। আবির শুভকে ফোন দিয়ে জানিয়েছি। তাই ভাবলাম ঈশানকে ও জানিয়ে দেই। তুই বলে দিস ওরে।
দিয়া: ওকে।
নদী: অনু মায়রা তিথি সিমি ওরা কেমন আছে?
দিয়া: সবাই ভালো আছি। শুধু তকেই মিস করি।
নদী: আমি ও তদের খুব মিস করি। আচ্ছা তকে পরে ফোন দিচ্ছি। স্যার ডাকছেন।
দিয়া: ওকে বাই।
দিয়া ফোন কেটে ঈশানের দিকে তাকালো। চোখ বন্ধ করে আছে।
দিয়া: ব্যাথা কমেছে।
ঈশান: হুম।
দিয়া: তোমার তো মনে হয় ঘুম এসে গেছে। ওকে তুমি ঘুমিয়ে পরো। আমি মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছি।
ঈশান: আর লাগবে না। অনেক করেছো। পরে হাতে ব্যাথা করবে। আমি ঘুমিয়ে পরছি। তুমি যাও।
দিয়া: চুপ। তুমি ঘুমাও। তুমি ঘুমিয়ে পরলেই আমি চলে যাবো।
ঈশান আর কিছু বললো না। ঘুমিয়ে পরলো। দিয়া মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে।

অনু ড্রয়িংরুম থেকে বেরিয়ে ছাদে গেলো। কাল ওর মা বাবা চলে আসবেন। কালই চলে যাবে এই বাসা থেকে। খুব মিস করবে সবাইকে বিশেষ করে….
অনু আর কিছু ভাবলো না। এখানে মিস করার মতো কিছু নেই। দোলনায় বসে পরলো। আর আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো। নেহা অনুর পিছু পিছু ছাদে উঠলো। অনুর সামনে গিয়ে দারালো।
অনু: তুমি?
নেহা: হুম। আমি কেনো অন্য কাউকে আশা করছিলে।
অনু: আমি কাউকেই আশা করি নি। তুমি এখানে কেনো?
নেহা: এটা আমার বাসা। আমি যেখানে ইচ্ছে সেখানে থাকতে পারি। এটা অবশ্যই তোমাকে বলবো না।
অনু: তোমার বাড়ি মানে।
নেহা: দ্বীপের সাথে বিয়ে হলে এটা আমার বাড়ি হবে না।
অনু: কি?
নেহা: যা শুনছো তাই। একটা কথা মাথায় ভালোভাবে ডুকিয়ে নাও। দ্বীপের থেকে দুরে থাকবে। ওর আশে পাশে ও যেনো তোমায় না দেখি। আর ফ্রেন্ড এর বাসায় তুমি কি করছো। তোমার নিজের বাসা নেই। নাকি মা বাবা বাসা থেকে তারিয়ে দিয়েছে তাই এখানে আশ্রয় নিয়েছো।
অনু: জাস্ট সাট আপ। না জেনে একদম আমার বিষয়ে কথা বলবে না।
নেহা: আমার কোনো ইচ্ছে ও নেই তোমার বিষয়ে কথা বলার। এখনে পরে আছো কেনো।
অনু: আর থাকবো না। কালই চলে যাবো।
নেহা: গুড। আর এসব কথা একদম দ্বীপকে বলতে যাবে না। দ্বীপ এর কান ভাঙ্গালে খুব খারাপ হবে কিন্তু।
অনু: নিজের মতো সবাইকে ভাব্বে না বুঝেছো।
অনু উপর থেকে নিচে চলে আসে রুমে। কোনোদিনো কেউ ওর সাথে এই ভাবে কথা বলে নি। এতো খারাপ বিহেভ করে নি।
অনু: কালই চলে যাবো। আর থাকবো না এখানে।
ঈশান ঘুমিয়ে পরলেই দিয়া চলে আসে রুমে। এসে দেখে অনু বসে আছে মন খারাপ করে।
দিয়া: কি হয়েছে?
অনু: কিছু না।
দিয়া: তাহলে এভাবে বসে আছিস কেনো।
অনু: এমনি।


রাত সারে দশটা,
সবাই ড্রাইনিং টেবিলে বসে আছে ডিনার করার জন্য। সবাই আসলেও অনু এখনো আসে নি।
দ্বীপের বাবা: অনু কোথায় ও নেই কেনো।
দিয়া: অনু বলেছে ও খাবে না। ওর নাকি খিদে নেই।
দ্বীপ: খিদে নেই মানে নি। এক্ষণি ওকে নিয়ে আয়।
দিয়া: ও একবার যা বলে তাই করে। জোর করলেও কাজ হয় না।
দ্বীপ: তর খাওয়া শেষ হওয়ার পর খাবার রুমে নিয়ে ওকে খাইয়ে দিস।
দিয়া: যদি না খায়।
দ্বীপ: আমাকে ডাকবি।
দিয়া: ওকে।
নেহা দাতে দাত চেপে এগুলো সহ্য করছে। দ্বীপের অনুর প্রতি এই নেকামো ওর সহ্য হচ্ছে না।
দিয়া খেয়ে অনুর জন্য খাবার নিয়ে গেলো রূমে। অনু উল্টো দিকে শুয়ে আছে।
দিয়া: অনু খাবার এনেছি খেয়ে নে।
অনু: বললাম তো খিদে নেই।
দিয়া: ভাইয়া বলেছে তুই না খেলে ভাইয়াকে ডাকতে।
অনু: কেনো?
দিয়া”: খাওয়ানোর জন্য।
অনু: ও বললেই যেমন খেয়ে নেবো। একদম বিরক্ত করবি না ঘুমাতে দে।
দিয়া: ওকে ভাইয়াকে ডেকে আনছি।
অনু দিয়ার কথা না শুনেই আবার চোখ বন্ধ করে শুয়ে পরলো। দিয়া গেলো দ্বীপকে ডাকতে। দ্বীপ এসে দেখে অনু শুয়ে আছে। দ্বীপ এক ঝটকায় অনুকে শুয়া থেকে বসিয়ে দিলো।
অনু: কি প্রবলেমটা কি তোমার।।
দ্বীপ: খেয়ে নাও চুপচাপ।
অনু: খাবো না কি করবে।
দ্বীপ: ঠোটে কিস করবো।
অনু সাথে সাথে মুখে হাত দেয়। দিয়া দরজায় দারিয়ে থেকে মুচকি মুচকি হাসছে।
অনু: ছিঃ এসব কি বলো।
দ্বীপ: খাবে কিনা কিস করবো।
অনু: এটা কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে।
দ্বীপ: আরো বেশি আমি করতে পারবো।
অনু: আমার খিদে নেই।
দ্বীপ: আমি এতো কথা শুনতে চাই না। খাবে কিনা বলো।
অনু: 😐আমার খিদে না লাগলে কিভাবে খাবো।
দিয়া: মিথ্যে কথা বলছিস কেনো? সিমির বাসায় খেয়ে এসেছিলি দুপুরে। এখনো কিছু খাস নি।
দ্বীপ: আমার অনেক কাজ আছে। চুপচাপ খেয়ে নাও।
অনু: তো যাও তোমাকে কি আমি আটকে রেখেছি।
দ্বীপ আর কিছু না বলে নিজেই প্লেট হাতে নিলো। তারপর খাবার অনুর মুখের সামনে তুলল।
দ্বীপ: ভালোভাবে হা করবে কিনা বলো।
অনু: না।
দ্বীপ: দিয়া।
দিয়া: বুঝে গেছি।
অনু: এটা ঠিক না। তোমরা।
অনুকে আর কিছু বলতে না দিয়ে দিয়া অনুকে ধরলো আর দ্বীপ অনুর মুখে ভাত ঘুজে দিলো।
এভাবেই সব খাবার শেষ করলো। খাবার পরে,
দ্বীপ: আমার হাতে খেতে ইচ্ছে করেছে বললেই হতো। এতো ড্রামা করার কি ছিলো😜।
অনু: কিইইইই😡 অসভ্য ছেলে। আমি এ কথা কখন বললাম।
দ্বীপ: সব কিছু বলতে হয় না। বুঝে নিতে হয়।
অনু: তোমাকে তো….
দ্বীপ: আদর করতে ইচ্ছে করছে। বাট এখন টাইম নেই। কাল করো। ওকে বাই।
অনু: উজবুক এর নানা তেলাপোকার বউ। নিজেকে কি ভাবো।
দিয়া হাসতে হাসতে শেষ ওদের কথা শুনে।
দিয়া: ওই ইদুরের বোন তুই হাসছিস কেনো।
দিয়া: আমার মুখ আমি হাসবো তাতে তর কি। আর ভাইয়া তর কথা একটা ও শুনে নি। তার আগেই চলে গেছে।
অনু: হুহ।
দিয়া: ওকে। ঘুমা
দিয়া ওপাশ হয়ে শুয়ে পরলো। অনু ও ঘুমিয়ে পরলো অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে। কাল তো ওকে এ বাড়ি থেকে চলে যেথে হবে। খুব কষ্ট হচ্ছে যেথে।


চলবে??🙄🙄