ভালোবাসার গুন্ঞ্জন পর্ব-০৫

0
1859

#ভালোবাসার_গুন্ঞ্জন💜💜
#আইদা_ইসলাম_কনিকা
#পর্বঃ০৫
আদারা মিনিটের মধ্যেই নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো সে সামনে থাকা ব্যক্তিটার থেকে। আর পায়ের সাথে লেং মরে নিচে ফেলে দিলো, আর নিজে ওর উপর ওঠে বসে গলা চেপে ধরে বলে
—তুই মাফিয়া তো আমি কি সস্তা মেয়ে?তখনই ব্যাক্তিটা আদারাকে নিচে ফেলে সে ওপরে চলে এসে বলে
—তুমি মোটেও সস্তা নোও,নয় তো এই MAAK এর নজর তোমার ওপর পরতো না।আদারা কি করবে সে বুঝতে পারছে না আর ব্যাক্তিটা তাকে এভাবে চেপে ধরে আছে সে কি করবে…বাধ্য হয়ে সে ব্যাক্তিটার ঘাড়ে কামড় বসিয়ে দেয়…. আর সাথে সাথে ব্যক্তিটা আহহহ বলে আদারাকে ছেড়ে দেয় আদারা ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথে ব্যাক্তিটাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বলে..
—তো ওন্ডার ওয়াল্ডের কিং আমার সামনে… বাঁকা হাসি দিয়ে… অন্ধকারে আদারাকে দেখা না গেলেও সামনে থাকা বুঝতে পারছে আদারা বাকা হাসছে MAAK বলে..
—তো তুমি কি? কুইন নাকি…প্রিন্সেস?
আদারা তো পুরো অবাক তার মতে সে কি করে জানলো আদারা মাফিয়া ওয়াল্ডের সাথে যুক্ত!!! আদারা বললো
–কে তুই? আর আমি যে এই ওয়াল্ডের সাথে যুক্ত তুই কি করে জানলি? সামনে থাকা ব্যক্তিটা বলে..
–তুমি তো বললা আমি কিং,তো যার রাজ্য সে খবর রাখবে না?…। আদারা এবার রেগে গিয়ে বলে
–জানে মেরে ফেলবো তোকে।।MAAK বলে
–তুমিতো নির্দোষ কাউকে মারো না,আমার দোষ কি?
আদারা বলে
–তুই কেন এসেছিস এখানে,কি চাই? MAAK বলে
–আমি আসতে চায়নি ভাগ্য আমাকে নিয়ে এসেছে এখানে…আর আমি জানলাম তোমার মাধ্যমে কারণ আমি MAAK যে মাফিয়া কিং সেটা তো মাফিয়া জগৎের লোক ছাড়া কোনো কাক-পক্ষী ও জানেনা।

আদারা এখন বেস বুঝতে পারছে সে নিজের কথার জালে নিজে আটকে গেছে…. এতো বছর ধরে তার লোকানো সত্যি কেউ জেনে গেছে। MAAK বলে

–আমার তোমাকে চাই….সো বি রেডি বলে MAAK চলে যায় আদারা যখন হুঁশ আসে তখন সেও পিছন পিছন যায় কিন্তু কিছুই দেখতে পায় না। আদারা ভাবে লোকটা এখানে কোথাও নয়তো নিচে পার্টিতে আছে। নিচে যাওয়ার পর দেখে সবাই পার্টির গানের তালে হালকা ডান্স করছে রাদ আর নিঝুম ও… আলফাজ এক কোনে ফোনে কারো সাথে কথা বলছে… আদারা আলফাজের কাছে যেতে চাইলে তখন আয়শা কেক নিয়ে হাজির হয়ে যায় তাই সবাই কেক কাটে…. আর আদারার আলফাজের কাছে যাওয়া হয় না। কেক কাটার পর রাদ আর মাহির নিঝুমকে গিফট দিয়ে বিদায় নেয়….।
আর আদারা ব্যাস্ত… কেনো MAAK এখানে এসেছে..নিশ্চয়ই কোনো উদ্দেশ্য আছে,আর সে আদারাকে চিনে,প্লাস আজকে পার্টিতেও এসেছে। এটাতো গেস্ট পার্টি ছিল অপরিচিত কেউ ছিল না,সবাই পরিচিত এর মানে চেনা পরিচিত কেউ… আলফাজ এসে আদারার কাঁধে হাত রাখে… আদারা আলফাজকে দেখে বলে
—ভাইয়া MAAK এসেছিল আজকে আর… আলফাজ বলে
–তোর ব্যাপারে সব জেনে গেছে তাইতো? আদারা মাথা দোলায়… আলফাজ বলে…।
–MAAK তোর খারাপ চায় না তোকে ভালোবেসে ফেলেছে, আর সেও কোনো নিস্পাপ কে মারে না। এইযে আমার কিছু দিন আগে শিশু পাচারকারীদের ধরলাম.. ওদের খবর কিন্তু MAAK দিয়েছে।আর সে তোকে প্রথম দেখেছে পার্টিতে…।। আদারা বলে
—পার্টি মানে আজকে,আর তুমি কি করে জানলে? আলফাজ বলে
—সে যে আমাদের চেনা কেউ..। আদারা বলে
—ভাইয়া ভালো করে বলো কে সে? আলফাজ বলে
—তোর শুভাকাঙ্ক্ষী, যা ঘুমিয়ে পর,ধীরে ধীরে সব জানতে পারবি…আর তোদের #ভালোবাসার_গুন্ঞ্জন শুরু হলো বয়কি….। আলফাজ চলে যায় আর আদারা র পাগল পাগল
–অবস্থা কে সে? ভাইয়া তাকে চিনে কিন্তু আমি না আর আমাকে সে আজই দেখলো। সে দিহান, অর্নব,আলিয়া আর আস্তা কে কল দিলো তারপর সব বললো..
.(হ্যা এরা সবাই মাফিয়া জগৎের সাথে যুক্ত।কাহিনী টা শুরু হয়েছিল ৩ বছর আগে তখন সবে মাত্র কলেজে পা রেখেছে আদারা আর আলফাজ বিজনেস জগৎএ কিন্তু আলফাজ বিজনেসের আগে যুক্ত ছিল CID তে আলফাজ সকল প্রমাণের সাথে আসমীদের ধরলেও বড় বড় ক্ষমতা বান ব্যাক্তিদের জন্য তা পেরে ওঠতো না। তাই সে পা দেয় বিজনেস জগৎে তাকে সবাই বিজনেসম্যান হিসাবে চিনলেও সে মাফিয়া ওয়াল্ডের ২য় ভয়ংকর মাফিয়া সে শুধু খারাপ মানুষদের হত্যা করে মানে শাস্তি দেয়…আর আদারা যুক্ত হয় তখন যখন তাকে কিছু ছেলে কিবনাপ করে নুয়ে যায় মেয়ে পাচারের জন্য আর আলফাজ কোনো ভাবে জেনে যায় এটা কিন্তু সে জানতো না সেখানে আদারাও ছিল….সেদিন সে আদারাকে ওখানে দেখে নিজের আত্মঙ্গেন হারিয়ে ফেলে আর সব গুলোকে জানে মেরে ফেলে…. আর আদারাও ধীরে ধীরে যুক্ত হয় এই জগতের সাথে দিহান ওরা আগে থেকেই এই জগৎের সাথে যুক্ত কারণ তাঁদেরকে বাচিয়েছে আলফাজ নিজে আর আলিয়া আস্তা ঐদিন আদারার সাথে ঐখানে বন্ধী ছিল)সবাই বলে টেনশন করিস না, আদারা আর পারছেনা তাই বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলো সে….।

ওপর দিকে মাহির গোসল করে মাত্রই বের হলো রাদ মাহিরের রুমেই বসে ছিল মাহিরকে দেখে বলে
–এতো রাতে গোসল করলি যে? আর তোর ঘাড়ে লালদাগটা কিসের? মাহির মাথার চুলমুছ ছিল সেটা থামিয়ে বলে
–ভাইয়া তুই জানিস আমার এলার্জি আছে, এর জন্যই লাল হয়েগেছে আর তার জন্যই গোসল করেছি। রাদ বললো
–আমার মতে তো তুই মাসরুম জাতীয় কিছু খাসনি তাহলে….মাহির বলে
— ভাইয়া আমার কিন্তু স্ট্রবেরি তে এলার্জি আর আমি সেটা ভুলে খেয়ে ফেলেছি। এইটা বল পানিবিহীন বন্যাকে কবে প্রপোস করবি…নিঝুমের কথা শুনা মাত্রই রাদ মুচকি হাসি দিয়ে বলে
—প্রপোস কেনো করবো? সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দিব। মাহির বলে…
—ওপর আল্লাহ্ শুকরিয়া স্বীকার তো করলি…রাদও মুচকি হাসি দেয়। তারপর রাদ চলে যায়…. মাহির আয়নার সামনে দাড়িয়ে দাগটা দেখে বলে
—হায়রে এলার্জি….
অপর দিকে একের পর একটা ডিংকস করে যাচ্ছে। আদারা বেশ ভালো করেই নেশা চরে বসেছে। সে আগে নেশা করতো না এইসব করতে বাধ্য করেছে তার পরিবার (কেনো সেটা পরে জানতে পারবেন) রাতের আধার কাটিয়ে ভোরের প্রথম আভা উুকি দিয়েছে আাকাশে,আকাশের সাথে মানুষের জীবনের বেশ মিল,যেমন হুট করে বৃষ্টি আবার হুট করেই রোদ…. রাত আকাশটা যেমন কালো অন্ধকারে ছেয়ে থাকে, সকালের সূর্য টা সেটা দূর করে দিয়ে নিজের কিরণ দিয়ে রাঙিয়ে তুলে আকাশ টাকে । মানুষের জীবনও সুখ-দুঃখ, কষ্ট আর আনন্দ দিয়ে ভরা, কষ্টের পরই সুখের আশা করা যায়…. কিন্তু সেটা সে একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে আদারা…. ভালোলাগছেনা তার এইসব তাইতো সে ঠিক করেছে আর যাবেনা সে তাদের আপন নামের স্বার্থপর গুলোর কাছে, নিঝুম, আলফাজ দিহান ওদের কথা মনে পরবে কিন্তু সে আর থাকবে না এখানে…..আলফাজকে বলে ইতালির টিকিট বুক করেছে আদারা….আলফাজ, নিঝুম বারণ করলেও শুনেনি আদারা…. কালকে দেশ ছেড়ে পারি যমাবে নতুন এক দেশে যেখানে না কেউ কিছু বলবে না কিছু করবে…..। এইসব ভাবছে তখনই আদারার ফোনে একটা মেসেজ আসে, মেসেজটা দেখে আদারা অনেক অবাক আর মেসেজটা এসেছে একটা প্রাইভেট নম্বর থেকে… মেসেজটা কিছু এমন ছিল

________ ভালোবাসি এই তোমাকে, তাই বলে ভেবো না যা খুশি করতে পারবে…তুমি যদি কুইন হও আমি কিন্তু কিং আর কিংকে রাগানো ভালোনা সোনা চুপচাপ টিকিট টা কেনসিল করে দাও….নয়তো বিয়ে করে হাত পা ভেঙে ঘরে বসিয়ে রাখবো….।। মোবাইলটা জোরে ফ্লরে ছুড়ে মারলো আদারা আলফাক এসে বলে
–কি হয়েছে…? তারপর আদারা সব বলে তা শুনে আলফাজ হেসে বলে
—ঠিকই তো বলছে তোর দিওয়ানা….। আদারা কিছু সময় চুপ থেকে আলফাজকে বলে
—ভাইয়া আমি কি MAAK দেখেছি? আলফাজ হ্যা বলে আর আদারার শুরু হয়ে যায় তারপর আলফাজ বলে…
—কালকেও দেখেছিস তুই…। আদারা বলে
—তুমি তো আমার ভাই তাহলে কেনো সাইকো টাকে কিছু বলছো না?… আলফাজ কিছু সময় ভেবে বলে
—ওতোর ভালো চায়….আর তোর কাছে যে চিপটা ছিল সেটা কই? আদারা বলে
–আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি ঐটা আমি দিবো না… বলেই হন হন করে চলে গেলো আলফাজ বলে
—কেনো বুঝিসনা তুই…ঐটা তোর মৃত্যুর কারণও হতে পারে ঐ চপটার জন্য আমি আমার ভালো বাসার মানুষটাকে হারিয়েছি… তোকে হারাতে পারবো না।

চলবে…