ভালোবাসার গুন্ঞ্জন পর্ব-০৬

0
2189

#ভালোবাসার_গুন্ঞ্জন💜
#আইদা_ইসলাম_কনিকা
#পর্বঃ০৬

শেষ বিকেলের দিকে আদারা একটা খোলা আকাশের নিচে হাটছে,,,কিছু সময়ের মধ্যেই হয়তো সূর্যটা পশ্চিম আকাশে ডুব দিবে।আদারা আজ গাড়িও আনেনি কারণ জায়গাটা তাদের বাসায় থেকে বেশি দূরে না। তাই হেটে হেটেই চলে এসেছে। হাঠাৎ করেই কেউ এসে আদারার সাথে হাঁটতে লাগে,মানুষটাকে দেখে আদারা বাঁকা হাসে,মানুষটা আর কেউ না মাহির… মাহিরের চোখের আড়াল হয়নি সেই হাসিটা… মাহিরকে দেখে বলে
–এতো গরমেও কালার ওয়ালা টিশার্ট সরবরাহের কারণ কি? মাহির তা দেখে একটু চুপ থেকে বলে
–আমি সব সময় এসির নিচেই থাকি তাই এটা আমার স্বভাবের একটা অংশ। আদারা বলে…
–Mr, MAAK এটা এসি না এটা খোলা আকাশ আর একটা মাঠ, বেশ গরম তাই না? মাহির হালকা গামতে থাকে..। তা দেখে আদারা বলে
— কি হয়েছে মি. ঘামছেন কেনো? মাহির বলে
–এমনি অনেক গরম লাগছে। আদারা হাহাহা করে হেসে দিয়ে মাহিরের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলে
— গরমের জন্য নাকি আপানর গোপন সত্যি টা জানার জন্য? মাহির বলে
–What you mean by that’s? আদারা পলকের মধ্যে মাহিরের টিশার্টের কলারটা টান দিয়ে নিচে নামিয়ে ফেলে। ঘটনাটা এত তাড়াতাড়ি হওয়াতে মাহির কিছু করতে পারে না, আদারা নিজের পেন্টের পকেটে থেকে গানটা বের করে মাহিরের দিকে তাক করে বলে
–MAAK=মাহির আহনাফ আবিদ খান, কি ঠিক বললাম তো? মাহির বাঁকা হাসি দিয়ে পলকের মধ্যে আদারাকে নিজের সাথে চেপে ধরে বলে
–এতো জলদি কিভাবে বেবি,ভেবেছিলাম হাইডএন্ড সিক খেলবো…নট ফেয়ার!!! আদারা মাহিরের পায়ে পাড়া দিয়ে বলে…
–আমার থেকে দূরে থাকুন। আর আমিতো শুধু এভাবেই বলেছিলাম… আর আপনাকে এতো গরমে এই টিশার্ট পরতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল আমার…আর আমি যেখানেই থাকি আপনি কি করে জানেন? আর আপনার নামের একটা সর্টকাট নেম রাখছেন…আর সিসিটিভি ক্যামেরা কোন কাজে আসবে? মাহির বাঁকা হাসি দিয়ে বলে
—তুমি খুব ইন্টেলিজেন্ট মাই কুইন,আমি নিজের ইচ্ছেতে তোমার কাছে ধরা দিয়েছি…ঐদিন তোমার সেই এলেমেলো চুল আমাকে এলোমেলো করে দিয়েছে, তোমার সেই লাল চোখের জল আমাকে পুরিয়ে মেরছে। এই আমি মাহিরের নামে যেই পুরো শহর কাপে সেখানে তুমি আমার সাথে উঁচু গলায় কথা বলো,মানুষ শুনলে কি বলবে বেবি?
আদারার মাহিরের কথা শুনে গা জলে যাচ্ছে… আদারা বলে
–এটা ভালোবাসা না,আমি জানিতো ঐ চিপটার জন্য আপনি এমন করছেন সেটা কখনোই পাবেন না। মাহির বলে
–যা তুমি মনে করো,এবার ভালোয় ভালোয় চিপটা আমাকে দিয়ে দাও বাঁকা হাসি দিয়ে। আদারা বলে
–এতোই সোজা,মামা বাড়ির আবদার নাকি? মাহির বলে
–দেখো তুমি যখন সত্যিটা জানোই যে আমি চিপটার জন্য এমন করছি সেটা দিয়ে দাও নয়তো জানে মরতে হবে তোমাকে। আদারা বলে
–মেরে ফেলুন কিন্তু সেটা কোথায় আমি বলতে বাধ্য নই।। মাহির আদারাকে ধাক্কা দিয়ে নিজের পকেট থেকে গানটা বের করে দুইদিকে দুজন আদারা আর মাহির,আদারা ভাবছে হয়তো কাল সে নয়তো MAAK সকালের সূর্য দেখবে না নয়তো আদারা নিজে, মাহির বলে
–ভালোয় ভালোয় চিপটা দিয়ে দাও নয়তো বন্যা শেষ। আদারা অবাক হয়ে বলে
–মানে? মাহির আদারাকে পিছনে তাকাতে বলে দেখে রাদ দাঁড়িয়ে আছে নিঝুমের মাথায় বন্ধুক তাক করে… নিঝুম কান্না করছে ছোটার জন্য কিন্তু মুখ বন্ধ আরেক পাশে আলফাজ..আর হাজারো গার্ড… আদারা চোখ দিয়ে পানি পরছে,,,, কি করবে সে কিছু বুঝতে পারছে না। আর এই চিপটায় তো লুকিয়ে আছে আরফান খানের কুকিরতি,কত মানুষকে সে বিনাদোষ এ হত্যা করেছে, আরো কতো কি..মোস্ট ওন্টটেট কিমিনাল কিন্তু বাংলাদেশের পুলিশ কিছুই করতে পারেনা সে এখন কানডা আছে.. আদারা চেয়েছিলো ইতালির কথা বলে লন্ডন গিয়ে পুলিশের সাহায্য আরফানকে ধরবে.. জিন্তু তা আর হলো কই.!! তাহলে মাহির আর রাদ কি তারই ছেলে? মাহির বলে
–কি মনে করেছিলে তুমি ইতালির কথা বলে লন্ডনের টিকেট কাটবা আমি সেটা বুঝতে পারবো না?আমার বাবা কিছু করে নাই ঐইগুলা সব মিথ্যা, ভালোয় ভালোয় চিপটা দিয়ে দাও নয়তো এই দুনটাই দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে…আদারা মিনিটের মধ্যেই কান্না বন্ধ করে হাসতে লাগে…আদারা বলে
–ওদের তুমি কিছুই করতে পারবেনা ওদের যদি তুমি মেরে ফেলো আমি কখনোই বলবো না চিপটা কোথায়…আর আমাকে তুমি মারতে পারবানা কারণ আমি ছাড়া ঐটার ব্যাপারে কেউ জানে না মি.খান…। মিহর এখন নিজের জালে নিজে আটকা পড়েছে আদারা আবার বলতে লাগে..
–তুমি যদি ভাবো আমাকে মেরে ফেলবা তাহলে আমি মরার সাথে সাথে ঐভিভিও টা সারা পৃথিবী দেখবে, আর তোমার বাবার নাজায়েজ সন্তান এনা এন্ড এ সিরিয়াল কিলার… ওর কি হবে ওকে তো পুলিশ খুঁজছে…এই তোমাদের পুরো ফ্যামেলিটা কি সম্পূর্ণই সাইকো? মাহির একটা গুলি ছুড়ে মারলো সেটা গিয়ে নিঝুমের হাতে লাগে আর রাদ সেটা দেখে চোখ বুঝে অন্য দিকে ফিরেগেলো… আদারা রাদকে তাক করে ঠিক একই জাগায় গুলি মারলো যেখানে নিঝুমের লেগেছে নিঝুমের লেগেছে বা হাতে ডানায়…ব্যাথায় কাতরাচ্ছে নিঝুম রাদও মুখবুঝে মেনে নিলো কিছু করলো না, না চাওয়া সত্ত্বেও ভালোবাসার মানুষটাকে যে কষ্ট দিচ্ছে কারণ তারা যে বাধ্য..গার্ডরা কিছু করতে চাইলে রাদ হাত দিয়ে না করে.. আলফাজ ছোটার জন্য মুচরামুচরি করছে…।রাদকে গুলি ছুড়েতে দেখে মাহির আদারাকে রাগের মাথায় গুলি করে দিলো আর গুলিটা গালে আদারার বুকের বাপাশে..চারদিকে নিরবতা সবাই অবাক মাহির যে এমন কিছু করবে তা কেউ জানতো না ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে আর টুপটুপ করে বৃষ্টি পরা শুরু হচ্ছে আদারার গুলি লাগা জায়গা টায় হাত দেয় দেখে রক্তে লাল হয়েগেছে…. আলফাজ এই বার কোনোভাবে নিজেকে রাদের কাছ থেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে যায় আদারার কাছে… আদারা এলরেডি নিচে পরেগেছে আর ঐদিকে নিঝুম ভয়ে ব্যাথায় সেন্সলেস হয়ে গেছে। রাদ তা দেখে নিঝুমকে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরে। মাহিরের যখন হুঁশ আসে সে তার মায়াবী পরিকে গুলি করেছে…. দৌড়ে আদারার কাছে যায়… আলফাজ শুধু একটা কথাই বলছে….
–আদারা চোখ খুলা রাখ, আর মাহিরকে দেখে বলে
…আমি জানিনা তুমি কেনো এমনটা করলে কিন্তু আদারার যদি কিছু হয় তাহলে তোমাকে মারতে আমার হাত একটুও কাঁপবে না। মাহির বলে
–তোমার কি মনে হয় মানুষ নিজের ভালোবাসার কাছে খারাপ হতে চায়…আর আমি বাধ্য হয়েছি এসব করতে।
চলবে….