ভালোবাসা অবিরাম পর্ব-০৬

0
559

#ভালোবাসা_অবিরাম
#পর্বঃ০৬
#আইরাত_বিনতে_হিমি

খাবার টেবিলে বসে আছে আশরাফ চৌধুরী। সাথে আছে পরিবারের সকল সদস‍্য। এই চৌধুরী ভিলার একটা বড় নিয়ম হচ্ছে সকালের নাস্তাটা সবাই এক সাথে করবে এরপর যে যার গন্তব্যে চলে যাবে। নিয়মটা অবশ‍্য এই বাড়ির কর্তা আশরাফ চৌধুরীরই করা। তাই তো সেই কখন থেকে ঘরির টাইম দেখছে আর উপরে তাকাচ্ছে। কারণ এখনো খাবার টেবিলে আসফি চৌধুরী আর নিলু অনুপস্থিত। আশরাফ চৌধুরীর কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই দেখলো আসফি উপর থেকে নামছে। আসফি এসে তার চেয়ারে বসলো। তাকে দেখে পাশে এগিয়ে আসলেন তার মা এবং তাকে খাবার পরিবেশণ করতে লাগলেন। খাওয়ার মাঝেই আশরাফ চৌধুরী বলে উঠলো….

আসফি এত লেট করে ডাইনিংয়ে আসলে যে। আর নিলু কোথায়।

আসফি মুখে খাবার দিয়েও থেমে গেলো। হাতের খাবারটা প্লেটে রেখে। আশরাফ চৌধুরীর দিকে তাকালো এবং শান্ত ভঙ্গিতে বললো….

আগে তো কখনো ডাইভিংয়ে আমি লেট করে এসেছি কিনা তা নিয়ে তুমি কোনো কথা বলিনি বড় আব্বু। তাহলে আজ কেনো। যাই হোক প্রশ্নটা যেহেতু করেছো তাহলে তো উত্তর দিতেই হয়। কালকে থেকে অনেক ধকল গেছে তাই একটু বেশি সময় নিয়ে ঘুমাচ্ছিলাম আর কি। আর রইলো নিলুর কথা ও ঘুমাচ্ছে। কালকে এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো তাই আর ডাকিনি। একটু পর আপি যেয়ে ওর খাবার উপরেই দিয়ে আসবে। ওকে সব Answer পাইছো……

তার কথার স্টাইল দেখে আদনান চৌধুরীর খুব রাগ হলো তাই সে বললো…

আহ আসফি এইটা কেমন কথা বড় আব্বুর সাথে কেউ এইভাবে কথা বলে এখনি সরি বলো…..

সরি বলবো কেনো আমি কি কোনো অন‍্যায় করছি আমার তো মনে হয় না। তাই সরি বলার প্রশ্নই আসে না। তোমরা Questions করছো আমি Answer দিছি ব‍্যাস। যাইহোক এইসব নিয়ে আমি বেশি কথা বলতে চায়না। বড় আব্বু তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।

বলে ফেলো কি কথা।

আসলে বড় আব্বু। আমাদের হসপিটালে আমি চাইছি কিছু আলাদা unit খুলতে আর কি যদি তুমি পারমিশন দাও।

কেমন unit খুলতে চাইছো।

এই ধরো এত বড় হসপিটাল খরচ বেশি এইসব মেন্টালিটি নিয়ে আমাদের হসপিটালে অনেকেই আসে না। তাই আমি চাইছি দরিদ্রের জন‍্য আলাদা একটা unit খুলতে। যেখানে তারা আলাদা facility পাবে। বুঝতে পেরেছো নিশ্চয়।

রিসাদ চৌধুরী বলে উঠলো

wow that’s great idea আসফি। আব্বু এই unit টাহ কিন্তু বেশ কাজে দিবে। দেখো আমরা কিন্তু মূলত hospital টাহ খুলছি। দরিদ্রের সেবা করতে। আর আসফিরও ডাক্তার হওয়ার পিছনে মূল কারণ এইটা সো আমার মনে হয় idea টাহ ভালো কি বলো তোমরা

সবাই একসাথে বলে উঠল

হ‍্যা হ‍্যা খুব ভালো idea

আশরাফ চৌধুরী বলল

দেখো যেটা তুমি ভালো মনে করো। hospital টাহ তো আমি তোমার ভরশায় ছেড়ে দিছি। আর যে যাই বলুক না কেনো আমি জানি তুমি তোমার জীবন দিয়ে হলেও আমার reputation কারো কাছে খারাপ হতে দিবে না। তুমি একাই একশো। যাইহোক তুমি hospital সামলাও আমরা সবাই business দেখছি ওকে। All the best my son. সাবধানে মাথা ঠাণ্ডা রেখে সব কিছু করবে ওকে….

ওকে বড় আব্বু আমি তাহলে উঠি।

রেখা চৌধুরী বলল

কোথায় যাচ্ছিস তুই।

Hospital এ আম্মু

কিহ সবে তোদের বিয়ে হলো আর এর মাঝেই তুই hospital join করছিস। this is not done আসফি। এইটা একদম ঠিক কাজ না। এখন তোর নিলুকে সময় দেওয়া দরকার।

what সব কাজকর্ম ছেড়ে কি এখন আমি ওর পিছনে পরে থাকবো। কিসব বলছো আম্মু। আমি পারবো না আসছি আমি

আরে আসফি শোন

আশরাফ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল। নিজের কেবিনে বসে আছে ডাক্তার রিমি। হাত দিয়ে একটু পর পর একটি বল ঘুরাচ্ছে। আজ সে প্রচন্ড রেখে আছে। যেনো একটু পরেই সে ব্লাস্ট হবে। এমন সময় তার কেবিনে ডুকলো তার assistant রাত্রি। তাকে উদ্দেশ্য করে রাত্রি বলল….

ম‍্যাম আসফি স‍্যার আসছে

ওকে আসতে দাও

আসফি রিমির কেবিনে ঢুকেই রিমিকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরল আর বলল….

সরি রিমিপরি এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর জন‍্য। আসলে বাসা থেকে বাহির হতে একটু দেরি হয়ে গেছে আরকি। যাইহোক তোমার কিখবর সেটা বলো। একি এখনো রাগ কমেনি কি করতে হবে বলো আমায় আমি সব করবো তাও এইভাবে রাগ করে থেকো না প্লিজ

এইবার রিমি আসফির দিকে ঘুরলো আর বলল আমি কি চাই তুমি খুব ভালো করেই যানো আসফি।

তারপর রিমি নিজের হাতদুটি আসফির গ্রীবায় রাখলে। আর নিজের ওষ্ঠজোড়া আস্তে আস্তে আসফির ওষ্ঠদ্বয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। রিমির চোখ বন্ধ তাদের মাঝে দূরত্ব খুব কম। এমন সময় আসফি রিমিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয় আর বলে

এইসব কি হচ্ছেটা কি রিমি তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি এইসব পছন্দ করি না তারপরও এমন কেনো করো বারবার। আমার কাছে নিজেকে কেনো বারবার ছোট করো why

so what তাতে কি মিঃ আসফি চৌধুরী আপনি যদি ঘরে বউ রেখে প্রেমিকার কাছে আসতে পারেন তাহলে আমি কেনো এইটা পারবো না। আপনি সারারাত বউর সাথে বাসর করে এখন আসছেন প্রেমিকার মান ভাঙ্গাতে। আর সামন‍্য কিস করতে গেছি তাতে দোষ। আপনার কি মনে হয় কোনটা shameful কাজ আপনারটাহ না আমার টাহ কোনটা কি হলো বলছেন না কেন কোথায় গেলো আপনার আওয়াজ।

দেখো রিমি তুমি আমায় ভুল ভাবছো। আমি বাধ‍্য হয়ে বিয়েটা করছি ট্রাস্ট মি।

বিশ্বাস! বিশ্বাস করবো আপনাকে সরি আমি আর পারবো না। আপনার ঐসব কথা শুনতেই তো আমার ইচ্ছে হচ্ছে না। প্লিজ মিঃ চৌধুরী আপনি আমার রুম থেকে বাহির হয়ে যান প্লিজ

দেখো রিমিপরি আমার কথাটা একটু..

প্লিজ leave me alone আমি একটু একা থাকতে চায় আপনি এখন আসুন

ওকে ওকে কুল আমি যাচ্ছি তুমি ঠাণ্ডা হও। আমি তোমার সাথে পরে কথা বলবো এখন তোমার মাথা অনেক গরম। এখন আমি যাচ্ছি ওকে। মাথা ঠাণ্ডা হলে আমায় ডেকো ওকে। আমি তোমার জন‍্য আছি বুছঝো পাগলি

চলবে….