/-গল্প ভালোবাসি তোমাকে -/
/-লেখক মিঃ আবির মিঃ ভুত -/
/-Part-2-/
_ রেল স্টেশনে বসে আছি ট্রেনের অপেক্ষায়। আজ রাইসার দেয়া কালো শার্টটা পড়ে এসেছি।
সাথের বন্ধুদের কিছুই জানাই নি। জানলে ওরা মন খারাপ করবে।
সময় কাটছেনা, তাই একটা পত্রিকা কিনলাম। প্রথম পৃষ্ঠার লেখায় চোখ আটকে গেল।
আজ বিশ্ব ভালবাসা দিবস।
বুক পকেটে রাঈসার দেয়া চিঠিটা ভাজ করে রাখা আছে। ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো, কিন্তু শেষ স্মৃতি হিসেবে রেখে দিলাম।
সাতপাচ ভাবতে ভাবতে পেপারটি হাতে রেখেই ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমের
মধ্যেই হয়তোবা নিঃশব্দে হু হু করে কেঁদে উঠলাম! কেউ দেখলো না গরীবের কান্না।
গরীবদের ভালবাসতে নেই।
হটাৎ ট্রেনের হুইসেলে বাস্তবে ফিরে এলাম,
_ নিজের অজান্তেই চোখের কোনে পানি জমে এসেছে, ট্রেনের যাত্রা শুরু,
ট্রেনে উঠতে যাব ঠিক তখনেই হাতটা কোথায় যেনো আটকা পড়ে গেলো,
হাতটা ছুটানোর জন্য পিছন ফিরে তাকাতে আমি অবাক হলাম, কারন রাইসা আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আছে।
_ তুমি এখানে? (আমি)
_ চলে যাচ্ছিলে আমাকে ছেড়ে, বাবা যখন তোমার সাথে ফোনে কথা বলছিলো তখন আমি লুকিয়ে শুনছিলাম,
যখন শুনলাম তুমি চলে যাবে, তখন খুব কেদেছি। তাইতো ছুটে এলাম তোমার কাছে! (রাইসা )
_ ।(আমি)
_ কি হলো চুপ করে আছো কেনো? আর কালো শার্টটা পড়ে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। (রাইসা )
_ আমি তোমাকে ভালোবাসি আবির i Love You,মিঃ ভুত (রাইসা )
_ দেখো রাইসা তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, তাছাড়া তোমার সাথে আমার যায়না। আমি গরীব ঘরের ছেলে
আমাদের ভালোবাসতে নেই! আমি বামূন হয়ে আকাশের চাদঁ ধরতে চাইনা, তার চেয়ে ভালো হবে তুমি ফিরে যাও।
(নিচের দিকে তাকি একমনে বলে ফেল্লাম কথা গুলো, আজ গরীব বলে বলতে পারিনি আমিও যে তোমাকে ভালোবাসি রাইসা )
_ হটাৎ বুকের সাথে কিছু লেপ্টে যাওয়ায় বাস্তবে ফিলে এলাম, তাকিয়ে দেখি রাইসা আমাকে
জড়িয়ে ধরে আছে আর কানের কাছে তার মুখটা এনে বলছে,
_ আকাশের চাদঁ যদি নিজে থেকে তোমার হাতে এসে ধরা দেয়, তাহলে কি তোমার কোনো আপত্তি আছে আবির ।
_ একভাবেই কথা গুলো বলে যাচ্ছে রাইসা , আর আমার ইচ্ছে হচ্ছে, নিজের বাহূডোরে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরি
রাইসা কে।
কিন্তু ধরতে পাড়লাম না, কারন সেই সামর্থ টা আমার নেই!
(অবারো ট্রেনের হুইসেলের শব্দে বাস্তবে ফিরে এলাম, ট্রেন চলছে তার নিজ গতিতে।)
_ রাইসা কে ছাড়িয়ে নিয়ে তার দুই গালে কষে দুইটা চর মারলাম। আর বললাম,
_ আমি তোমাকে ভালোবাসিনা রাইসা , আমি তোমাকে ভালোবাসতে পারিনা, কারন আমি গরীব। চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে গেলো,
রাইসা কাদঁছে, তার চোখ থেকে বের হওয়া পানি গুলো এক ফোটা করে মাটিতে পড়ছে, আর মাটি সেটা শুষে নিচ্ছে,
আর সেই মুহুরতে আমার মনে হচ্ছে আমার কলিজাটা কেউ যেন হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করে টুকরো টুকরো করে দিচ্ছে।
চোখের কাজল তার গালে লেপ্টে লেগে আছে, খুব ইচ্ছে করছে তার গাল বেয়ে পরা পানি মুছে দিতে,
কিন্তু আমি পারিনি, মুছে দিতে পারিনি আমি গরীব বলে!
তখন খুব চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো, গরীবরা কি ভালোবাসতে পারেনা, গরীবদের কি ভালোবাসার আধিকার নেই?
সেই চিৎকার কেউ কখনো শুনেনি আর শুনতেও পারবেনা।
হটাৎ নিরবতা ভেঙ্গে রাইসা বলে উঠলো,
_ আবির তুমি আমাকে মারলে, এই আবির তুমি আমাকে আরো মারো তুবুও প্লীজ আমাকে ছেড়ে যেওয়া, আমি যে তোমাকে ছাড়া বাচবোনা।
প্লীজ আবির আমাকে ছেড়ে যেওনা।
আমি তার কোনো কথা শুনলাম না, বুঝলাম না তার ভালোবাসার আর্তনাদের কান্না।
_ তুমি এখান থেকে চলে যাও রাইসা , আমি যে আর পারছিনা। প্লীজ তুমি এখান থেকে চলে যাও আমাকে একটু একা থাকতে দাও।
_ রাইসা চলে যাচ্ছে যাওয়ার আগে শুধু একটা কথাই বলে গেলো,
_ আমি চলে যাচ্ছি রাইসা ! আর যাওয়ার আগে আমার একটা কথা ভালো করে শুনে নাও,
_ বিয়ে যদি করি তাহলে আমি তোমাকেই করবো, আর তোমাকে না পেলে আমি বাচবনা আমি মরে যাবো।
ভালো থেকে আবির ,
_ রাইসা চলে যাচ্ছে আর বার বার আমার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে, হয়তো সে ভেবেছে আমি তাকে পেছন থেকে আটকাবো,
আর আমার মন বলে যাচ্ছে প্লীজ যেওনা থাকোনা আর কিছুটা সময় আমার সাথে,
কিন্তু আমি মুখ ফুটে বলতে পারিনি, আটকাতে পারি নি তাকে,
ওর চলে যাওয়ার দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছি আমি, সে চলে গেলো।
_ আর আমি গ্রামের বাড়ি চলে যেতে পারলাম না, পারলাম চলে যেতে রাইসা কে ছেড়ে।
চলবে……..