ভালোবাসি বুঝে নাও ২ পর্ব-১৪+১৫+১৬

0
356

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#১৪_পর্ব
.
কিরে সালা তলে তলে এতোদূর আমি তো বুঝতেই পারিনি,, আমি জানতাম তুই প্রেম করিস কিন্তু এটা বুঝিনি যে তুই সেই ঘুরে ফিরে আমার বোনের সাথেই প্রেম করিস(মেহরাব)

তো তাতে কি আমি তাও শিকার করেছি যে আমি ভালোবাসি কিন্তু তুই তো শিকারই করিস না (পেট ডলতে ডলতে বলল মেঘ)

মানে কি বলতে চাইছিস??

চান্দু আমার থেকে লুকানোর চেষ্টা করো না আমি ভালো করেই জানি তুমি ডুবে ডুবে জল খাও।

মোটেও না, তুই ভুল জানিস।

তাই নাকি,, আচ্ছা তাই সই, তা বলবি কবে?? (মেঘ)

কি বলবো আর কাকেই বা বলবো আজব (মেহরাব)

তাই না?? সালা (মেহরাব এর পিঠে চাপড় মেরে) সময় থাকতে বলে দে তানা হলে কিন্তু পরে পাখি উড়ে যাবে (মেঘ)

পাখী যতই উড়ুক না কেনো দিনশেষে সেই ঘুরে ফিরে আমার নীড়েই ফিরতে হবে,, (মেহরাব)

তাহলে শিকার করছিস?? তাহলে আর দেরি কিসের বলে দে (মেঘ)

কেনো আমি বলবো কেনো?? ও বলতে পারে না,, আর বলতেই বা হবে কেনো,, জানিস না সব কথা বলে না রিদয় কিছু কথা বুঝে নিতে হয় (মেহরাব)

বাহ ভালো তো,,, তোরা যা খুশি কর কিন্তু আমার বিয়ে টার কি হবে?? (মেঘ)

হবে তোর ও হবে কিন্তু এখন নয় আরো পরে।

আর কবে??

এই কিরে তুই লজ্জা করে নাহ আমি তোর প্রমিকার বড় ভাই একটু তো সম্মান কর।

কিসের সম্মান তুই আমার বন্ধু আমার ভাই এটাই বড় কথা ওকে,, এখন তাহলে চল আমার আবার ডিউটিতে যেতে হবে।

ওকে চল।

ওরা দুজন চলে গেলো,, মেহরাব খুব সহজেই মেঘ আর মেঘলার সম্পর্ক মেনে নিলো আর মানবে না কেনো মেঘ যথেষ্ট ভালো ছেলে আর মেহরাব মেঘকে অনেক আগে থেকেই চেনে ওহ কেমন সব কিছুই জানে।

,,,,পরদিন দুপুরে,,,,

এই ভর দুপুরে আকাশ ভেঙ্গে রিমঝিম বৃষ্টি নামলো,, মাহির ভীষণ ইচ্ছে করছে এই বৃষ্টিতে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে কিন্তু মা দেখলে রাগ করবে কেননা ব্যান্ডেজ ভিজে যাবে। তবুও এইরকম বৃষ্টি দেখলে কি বৃষ্টি প্রিয় মানুষদের মাথা ঠিক থাকে?? মাহি চুপি চুপি মায়ের চোখ পেরিয়ে সোজা ছাদে চলে গেলো।

কিন্তু মাঝ সিঁড়ি পযন্ত এসে কি মনে করে আবার নিচে নেমে গেলো,, তারপর রুমে গিয়ে মেহরাব এর দেওয়া চুড়ি গুলি ডান হাতে অনেক কষ্টে পড়ে আবার ছাদে চলে গেলো।ছাদের মাঝে খানে গিয়ে ডানহাতটা মিলে দিলো,, কিছুক্ষণের মাঝেই পুরো শরীল ভিজে জামা গায়ে একদম লেপ্টে গেলো,, মাহি চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির প্রতিটা ফোঁটা অনুভব করছে,, তখনি মনে হলো কেউ পিছন থেকে ওকে শক্ত করে জরিয়ে ধরেছে।

তার একটা হাত আমার ঠিক পেটের উপর আর একটা হাত ঘাড়ের থেকে চুল সরাতে ব্যাস্ত,, কি একটা অদ্ভুত শিহরন কিন্তু পরেক্ষণে মনে হলো কে যে আমাকে এতো গভীর ভাবে ছুঁয়ে দিচ্ছে,, পিছন ফিরে তাকাতে গেলেই বুঝলে পারলাম তার শক্ত পক্ত বুকের সাথে আমার পিট আটকে গেছে আমি চাইলেও নড়তে পারছি না,,, পিছনে থাকা অজানা ব্যাক্তি টি আমাকে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো যেনো সে আমাকে তার বুকের ভিতর নিতে চাই,, আমি চেষ্টা করেও তার থেকে নিজেকে সরাতে পারছিনা,, তারপর ওনি পিছন থেকে আমার ডান গালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়িয়ে আমার সামনে এলো,, আমি কাঁপা চোখে নিজের চোখটা খুললাম।

মেহরাব ভাই (চোখ বড় বড় করে) কিন্তু ওনি এখানে?? মেন কথা ওনি এমনটা করলো?? অসম্ভব আমি আবারও নিজের চোখটা বন্ধ করে নিলাম।বেশ কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে দেখলাম ওমা এখানে তো কেউ নেই পুরো ছাদ ফাঁকা তাহলে কি পুরোটাই আমার মনের ভুল?? অজানতেই ডান হাতটা গালে চলে গেলো সত্যি কি সবটাই কল্পনা??..

রাস্তার একপাশ দিয়ে হেঁটে চলেছে মেহরাব বৃষ্টির পানিতে পুরো শরীল ভিজে একদম চুপচুপ করছে,, চুলগুলো কপালের সাথে লেপ্টে আছে চুলথেকেও টপটপ করে পানি পরছে, আর মুখে পাগল করা হাসি কেননা আজকে সে তার প্রেয়সীকে তার অজানতেই ছুঁয়ে দিয়েছে,, এখন যে পাগলিটার রিআ্যাকশন টা কেমন ইস দেখতে পারলে বেশ হতো,, কিন্তু দেখতে গেলে যে আবার যদি ধরা পড়ে যাই এই ভয়ে তারাতারি করে চলে আসা ,।

,,,মাহি সেই কখন থেকে সোফায় বসে গালে হাত দিয়ে বসে বসে মায়ের বকা খাচ্ছে আর সেই মুহুর্তের কথা ভাবছে,, সত্যি কি তার রাগি গোমরা মুখো লম্বার উপর খাম্বা মেহরাব ভাই তাকে চুমো খেয়েছে?? অবিশ্বাস্য বেপার..

আমি সারা ঘরময় তাকে খুঁজে মরি আর সে ভাঙ্গা হাত নিয়ে ছাঁদে বৃষ্টি বিলাস করছে, কতবড় সাহস মেহরাব না বললে তো আমি জানতেই পারতাম না (মাহির মা)

কিহ, মেহরাব ভাই এসেছিলো নাকি??

হুম আসছিলো, একটা কাজে কিন্তু আপনাকে ওভাবে বৃষ্টি তে ভিজতে দেখে রাগ করে চলে গেছে।

ওহ আচ্ছা,, (তাহলে সত্যিই কি পুরোটাই কল্পনা, ছি আমি মেহরাব ভাইকে নিয়ে এমন কিছু কল্পনা করি ওনি যদি ভুলেও জানতে পারে তাহলে আমার যে কি করবে আল্লাহ জানে).

সকালে,,,,

আজ সকাল সকাল মীরার মা মেহরাবদের বাড়ি হাজির,,

কিরে তুই হঠাৎ?? কোনো খবর না দিয়ে (রুপালি)

কেনো এসে ভুল করলাম নাকি?? তোমরা চুপিচুপি ছেলে বিয়ে দাও আমাদেরকে বিয়ের পরে জানাও আর আমরা দেখতে আসলেই দোষ?? (মীরার মা মাবিয়া)

আরে রাগ করছিস কেনো আয় ভিতরে আয় মীরা আসিনী??

আসবে বিকেলের দিকে, একবারে ভার্সিটী থেকে ,, শোনো আপু মীরার বাবা কয়েকদিনের জন্য বাইরে গেছে তাই ভাবলাম আমরা এই কয়দিন এখানেই থাকি যতদিননা ওনি ফেরে (মাবিয়া)

এ তো খুব ভালো কথা থাকবি কোনো সম্যসা নেই।

ওরা কথা বলছিলো তখনি মাহি ওখানে আসলো।

সেকিরে আপা এখনো ভালো করে বিয়েই হলো না তার আগেই এতো আসা যাওয়া,, এই বার বুঝলাম কেনো এই মেয়ের সাথে এতো তারাতারি বিয়ে দিলি (মাবিয়া)

আহ তুই চুপ করবি,, আরে মাহি আয় ভিতরে আয়,

মাহি চাইলে মুখের উপর জবাব দিতে পারতো কিন্তু দিলো না কেননা ওর আব্বু আম্মু শিখিয়েছে বড়দের সম্মান দিতে তাই মাহি মাবিয়ার সামনে গিয়ে বলল।

আসসালামু আলাইকুম খালামনি ভালো আছেন??

ওয়ালাইকুম সালাম হুম ভালো (মুখ বাকিয়ে)

মাহি আর কথা না বারিয়ে মামীকে জিগাস করলো মেঘলা কোথায়।

মামণি মেঘলা আপু কই??

ওই তো উপরে যা তুই।

আচ্ছা এই বলে মাহি উপরে চলে গেলো।

এটা কি করলে আপু উপরে তো মেহরাব এর ও ঘর (মাবিয়া)

তাতে কি হয়েছে??

তোমরা খুব বোকা আপু এই জন্যই তো এই মেয়েকে তোমাদের পছন্দ হলো,,, এখন আমি এসে গেছি দেখি কেমন মেয়েকে বউ বানাচ্ছো (মাবিয়া)

সে যা দেখার দেখিস আমি গেলাম দেখি রান্নার কি অবস্থা (এই বলে রুপালি চলে গেলো)

মাহি মেঘলার রুমে যাওয়ার সময় দেখলো মেহরাব আয়নার সামনে দাড়িয়ে রেডি হচ্ছে মাহি সরাসরি মেহরাব এর সামনে গিয়ে বলল।

মেহরাব ভাই আপনি আমাকে চুমো খেয়েছেন???

চলবে,,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#১৫_পর্ব
.
মেহরাব ভাই আপনি আমাকে চুমো খেয়েছেন???

মাহির কথাশুনে মেহরাব ভ্রু কুঁচকে মাহির দিকে তাকিয়ে বলল।

মাথায় হাত দে (মেহরাব)

মানে??(মাহি বুঝতে না পেরে বলল)

যা বলছি তাই কর মাথায় হাত দে।

ওনার কথা অনুযায়ী আমি ডান হাত মাথায় রাখলাম তারপর ওনার দিকে তাকিয়ে বললাম।

এই যে রাখছি এখন বলুন।

তোর মাথা ঠিক জায়গা আছে??

আজব তো মাথা আবার কোথায় যাবে মাথা তো ঠিক জায়গায় আছে। (মাহি)

আমি তো ভাবলাম তোর হাতের সাথে সাথে মাথাটাও গেছে, কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছিস এরপর থেকে এমন অদ্ভুত প্রশ্ন করলে মেরে যে হাতটা ভালো আছে সেটাও গলায় ঝুলিয়ে দেবো, সর সামনে থেকে (এই বলে মেহরাব চলে গেলো)

আমিও না কি সব অদ্ভুত প্রশ্ন করি সত্যি কি ভাবলো মেহরাব ভাই মাহি তুই না একটা যাতা (নিজেই নিজেকে কথাটা বলে মাথায় একটা টুকা দিলো)

তারপর মেঘলার রুমে গিয়ে বলল।কি গো বিয়ের কণে কেমন আছো??(মাহি)

দূর কিসব বলছিস,, বিয়ে সে এখনো কোথায় পড়ে আছে এখনো ১বছর পর (মেঘলা)

ওরে বাবা মেয়ের তো দেখছি আর তর সইছে না তা মেহরাব ভাই কে বলে বিয়ের ডেটটা আরো আগিয়ে আনবো নাকি??(মজা করে বলল মাহি)

সত্যি প্লিজ বলনা তাহলে ভালোই হবে।

কি বলো একবার বলতে গিয়েই আমার অবস্থা কেরোসিন হয়ে গিছিলো আবার?? না বাবা থাক।

হুম সেটাই।

,,৭ দিন পর,,

মাহির হাতের ব্যান্ডেজ খুলে এসেছে এখন মোটামুটি ভালো তবে হালকা বেথ্যা আছে,,, এতোদিন একটুও পড়াশুনা হয়নি সামনে আবার ইয়ার চেঞ্জ পরিক্ষা ভালো করে পরতে হবে,,, কাল থেকে আবার কলেজ যেতে হবে।

মীরা রেগে ফুসফুস করতে করতে বাড়িতে ঢুকছে,, কেননা ভার্সিটীতে নেহাল ওকে একেবারে জ্বালিয়ে মারছে, মাঝে মাঝে মন চাই ওই ছেলেকে খুন করে ফেলতে,, রেগে ধুপধাপ করে ভিতরে যেতেই মাবিয়ার সাথে ধাক্কা খেলো মীরা৷

কি মা দেখে চলতে পারো না?? যত্তসব (রাগে বলল মীরা)

আরে তুই তো আমায় ধাক্কা দিলি, শোননা ভালো একটা খবর আছে,, আপুর কাছে মাহির নামে অনেক কিছু বলেছি এভাবে বলতেই থাকবো দেখবি মাহির উপর থেকে মন উঠতে বেশি সময় লাগবে না (মাবিয়া)

উফ মা সরো তো সামনে থেকে তোমার কি কোনো কাজ নেই সব সময় পরের নামে কুটনামি করে বেড়াও যত্তসব ভালো লাগছে না আমার রুমে যেতে দাও (এই বলে মীরা গটগট করে ভিতরে চলে গেলো)

একি আমার মেয়ের কি হলো এসব কি বলে গেলো আমি তো ওর ভালোর জন্যই সব করছি তাহলে হঠাৎ এমন পাল্টি খেয়ে গেলো কেনো (ভাবতে লাগলো মাবিয়া)

।।।।।।।।।।
পরদিন,,,

মাহি আজ থেকে কলেজ যাবে আর মেহরাব ওকে বলেছে ও যেনো আর কখনো একা একা কলেজে না যায় এখন থেকে মেহরাব নিজে ওকে পৌঁছে দেবে,, তাই সেই কখন থেকে মাহি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে তখনি মেহরাব আসলো আজকে মেহরাব এর সাথে মীরাও আছে তবে আগের মতো মীরা সামনে নয় পিছনের সিটে বসেছে,। মেহরাব মাহির সামনে গাড়ি থামিয়ে বলল।

চলে আয়।

মাহি গাড়িতে উঠতে গিয়ে অবাক হয়ে গেলো কেননা মীরা পিছনের সিটে বসেছে আর মাহির দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না নিজের মতো করে ফোন টিপতে ব্যাস্ত, মাহি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল কেননা আগের বার তো ওকে দেখে কেমন রেগে আর বেকা বেকা কথা বলছিলো কিন্তু আজকে কি হলো এতো পরিবর্তন।

কিরে গাড়িতে উঠ ওভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে।

মেহরাব এর কথা শুনে মাহি যলদি করে গাড়িতে উঠে বসলো।

,,,,,,,,,মেঘলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে মূলত মেঘের জন্য অপেক্ষা করছে, তখনি পিছন থেকে কেউ বলল।

আরে আপনি এখানে?? (নেহাল)

মেঘলা পিছন ঘুরে দেখলো সেদিন যে ছেলে ওকে কাঁদা পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছিলো সেই ছেলে বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

হুম আমি এই ভার্সিটীতে পড়ি, কিন্তু আপনি এখানে কি করছেন, আবারও কি ভিজিয়ে দেওয়ার মতলব আটছেন নাকি?? কিন্তু আজকে তো আর রাস্তায় কাঁদা পানি নেই সব শুকনো (মেঘলা)

আরে প্লিজ এভাবে বলে লজ্জা দিবেন না ওটা নিতান্তই অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিলো আমি এখনো সরি বলছি (নেহাল)

আরে আপনি এতো হাইপার হচ্ছেন কেনো আমি তো এমনিতেই বলছি ,, তা আপনি এখানে কেনো??

আমিও তো এই ভার্সীটিতেই পড়ি।

ওমা তাই আগে তো কখনোই দেখেনি।

দেখবেন কি করে আমি তো ভালো করে ভার্সীটিতে আসতামই না (মাথা চুলকে বলল)

তাই নাকি,, ওরা দুজন এভাবে কথা বলছে আর দূর থেকে একজন দেখে রেগে ফুসফুস করছে তা আর কেউ না মেঘ।

,,,,,,,,,,,
মীরা ভার্সীটি থেকে একটু দূরেই নেমে গেলো ওর নাকি কি কাজ আছে এই জন্য,, মেহরাব মাহিকে নিয়ে সোজা ওর কলেজের দিকে গেলো তারপর ওর কলেজের সামনে গাড়ি থামালে মাহি গাড়ি থেকে নামতে গেলে মেহরাব মাহির হাত ধরে আটকায়।

কি হলো মেহরাব ভাই আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে তো ছাড়ুন।

মেহরাব কিছু না বলে টুপ করে মাহির গালে একটা চুমো দিয়ে দিলো,, মাহি তো অবাক হয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।

সেদিন বললি না যে আমি তোকে চুমো খেয়েছি কি না,, এই নে এখন চুমো দিয়ে দিলাম আশা করি তোর প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছিস এখন নাম।

মাহির মুখ তো পুরাই হা হয়ে গেছে ও কখনো ভাবতেও পারিনি মেহরাব এমন একটা কাজ করবে,, ও যেনো এখন ঘোরের মধ্যে চলে গেছে,, হঠাৎ মেহরাব এর গাড়ি ছাড়ার শব্দে ওর হুস আসল,,
এখন ওর মাথায় শুধু একটা কথায় ঘুরছে,, ওর মেহরাব ভাই ওকে চুমো দিয়েছে।

চলবে,,,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#১৬_পর্ব
.
,,,,,,ক্রমশ এ গল্পে আরো পাতা জুড়ে নিচ্ছি,,
,,,,,দু মুঠো বিকেল যদি চাও ছুঁড়ে দিচ্ছি,
,,,,আরো কিছুক্ষণ যোগাযোগ ধরে রাখছি,
,,,,,আঙুলে আঙুল যেনো ভুল করে ডাকছি,,
,,,এ ছেলে মানুষি তুলি দিয়ে আঁকছি।

পরন্ত বিকেলে ছাদে বসে ফোনে এই গানটা শুনছি আসোলে মনের ভিতর কেমন যেনো প্রেম প্রেম অনুভূতি হচ্ছে,,, ভালো তো আমি আগেই বেসে ফেলেছি মেহরাব ভাই কে তবে আজকে সকালে সেটা আবার নতুন করে অনুভব করলাম,,, এখন আমি শিওর সেদিন ওই সব সত্যি ছিলো,, ইস ভাবতেই কেমন লজ্জা লজ্জা লাগছে,, তার মানে মেহরাব ভাই ও আমাকে ভালোবাসে তাহলে ওনি বলছে না কেনো?? তাহলে কি ওনি চাইছে যে আমি আগে বলি,, কিন্তু কীভাবে ওনি কি জানেন না মেয়েরা আগে বলে না,, ইস কবে যে বুঝবে হায়!(ছাঁদে বসে বসে কথাগুলি ভাবছিলো মাহি তখনি পিছন থেকে কেউ বলল)

কিরে প্রেমে টেমে পরেছিস নাকি?? এতো ভালোবাসাময় গান শুনছিস (মেহরাব)

পিছনে তাকিয়ে দেখি মেহরাব ভাই দাঁড়িয়ে আছে,, বিকেলে লাল সূর্যের শেষ আলোটা ওনার মুখের উপর পরেছে কতটা পবিত্র লাগছে ওনাকে, একদম সদ্য ফোঁটা তাজা গোলাপের মতো,, হায়! এগুলি তো ছেলেরা মেয়েদের ক্ষেত্রে বলে আর আমি কি না ওনাকে নিয়ে এসব ভাবছি। আমাকে ওনার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলল।

কিরে ওভাবে হ্যাবলার মতো তাকিয়ে আছিস কেনো?? আমার কি রূপ বেরিয়েছে??

ওনার কথা শুনে আমি তারাতারি করে চোখ সরিয়ে ফেললাম, হঠাৎ করেই আমার ভীষণ লজ্জা লজ্জা লাগছে সকালের কথা মনে পড়ে কিন্তু ওনাকে দাখো কোনো হেলদুল নেই যেনো কিছুই হয়নি এমন ভাব।

কিরে ওমন চুপ করে আছিস কেনো?? বোবা হয়ে গেলি নাকি আবার?? তোর বাপ কি জানে?? তাহলে তো আবার হার্টফেল করবে। (আমার পাশে বসতে বসতে বলল)

মানে??(আমি না বুঝে বললাম)

মানে আবার কি প্রথমে হাত ভাঙ্গলি এখন যদি আবার বোবা হয়ে যাস তাহলে তোকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে,, আবার কত টাকা খরচ করতে হবে, আহারে আমার শশুর মশাই।(আফসোস এর সুরে বলল)

আপনি কি বলতে চাইছেন আমার বাবা কিপ্টে??

তা আর বলতে,, নয়ত কেউ বিয়ে এতো পিছিয়ে দেয়,, বিয়েতে খরচ করতে হবে বলেই তো এতো পিছিয়ে দিয়েছে।

মোটেও না আমি এখনো ছোট তাই।

কিহ তুই ছোট?? (আমার মাথা থেকে পা অবধি দেখে) নাহ ঠিকি বলেছিস তুই সত্যি ছোট।

সেটা এভাবে আমায় দেখে বলার কি আছে,

না দেখে নিলাম এখনো তোর অনেক কিছুই ছোট।

মমমানে কি বলতে চাইছেন কি(উড়না জামা ঠিক করতে করতে বললাম)

কি আর বলব এই যেমন তোর হাইট আবার তোর বয়স ও কম এখনো ১৮ তে পরলোনা। পরলোনা বললে ভুল হবে ১৮ছুই ছুই এমন,,, কেনো তুই কি ভাবছিলি হুম??

ক,,কিছু না (ফাযিল লোক একটা)

,,,,,,,
কি হলো এমন করছেন কেনো কি করেছি আমি এতো রেগে আছেন কেনো??সকালেও দেখা না করে চলে গেলেন আবার আমার ফোনও ধরছেন না কেনো??( জোরে বলল মেঘলা)

মেঘলা এটা থানা আস্তে কথা বলো দেখছো এখানে কত মানুষ আমার একটা মান সম্মান আছে,, এভাবে সিনক্রিয়েট করো না (মেঘ)

ওহ আমি সিনক্রিয়েট করছি?? ওকে ঠিক আছে ভালো আপনার কাছে তো আমার কোনো মূল্য নেই একটা মেয়ে এই বিকেলে ও এখন তো বিকেল ও বলা যায় না ভর সন্ধেবেলা এতোটা পথ ছুটে এসেছে তার কোনো মূল্য নেই আপনার কাছে,,, ওকে আমার জন্য যেহেতু আপনার মান সম্মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তো ঠিক আছে চলে যাচ্ছি আমি, আর সরি এখানে এসে সিনক্রিয়েট করার জন্য (এই বলে মেঘলা কান্না করতে করতে চলে গেলো)

মেঘ টেবিলে জোরে একটা বাড়ি মেরে নেহালকে কল দিলো।

হা ভাইয়া বল এসময় কল দিলি কেনো কোনো দরকার??

কোনো প্রশ্ন করবি না যা জিগাস করবো সোজা উত্তর দিবি,, সকালে যে মেয়েটার সাথে হেসে কথা বলছিলি মেয়েটা কে(মেঘ)

কোন মেয়েটা?? ওহ সকালে?? কেনো বলত আর তুই দেখলি কখন??

বলছিনা কোনো প্রশ্ন নয় যা বলছি তার উত্তর দে।

আরে ওই মেয়েটা হলো (তারপর নেহাল মেঘকে সব বলল কাঁদা পানি লাগা থেকে আজকের দেখা হওয়ার সব কিছু)

সব শুনে মেঘ ওহ শিট, এটা বলে ফোন কেটে দিয়ে তরিঘরি করে বেড়িয়ে গেলো,, কেননা সে বড় রকমের একটা ভুল করে ফেলেছে,, তার মেঘ পরিকে একটু বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলেছে,, এখন নিশ্চিত তার মেঘপরির মুখে ঘন কালো মেঘ জমে বর্ষণ শুরু হয়ে গেছে।

আপনি এখনো এখানে কেনো?? বাড়ি যাবেন না সন্ধ্যে হয়ে গেলো তো (মাহি)

যেতে বলছিস কেনো আর একটু থাকি না, প্রিয় মানুষের সাথে পড়ন্ত গোধূলির বিকেল দেখতে বেশ ভালোই লাগছে (আনমনেই বলল মেহরাব)

কিহ আমি আপনার প্রিয় মানুষ?? কই আগে তো বলেননি।

ক,,কে তুই?? তুই কারো প্রিয় মানুষ হতে পারিস নাকি?? তুই তো শুধু বকবক করতে পারিস,, এই বলে মেহরাব উঠে চলে গেলো তারপর আবার ফিরে এসে মাহির হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে বলল।

এটা কিন্তু আমার একদম অপছন্দের ভালো লাগছিলো না তাই নিয়ে আসলাম তারপর ভাবলাম কি করবো তারপর তোর কথা মনে হলো কেননা যেগুলা আমার পছন্দ হয় না সেগুলি তোর ভালোলাগে তাই নিয়ে আসলাম রেখে দে (এই বলে মেহরাব চলে গেলো)

আজব তো ওনার যদি পছন্দই না হয় তাহলে শুধু শুধু টাকা খরচ করার কি দরকার সত্যি ওনি খুবি পেঁচালো একটুও বুঝি না ওনাকে।

তারপর হাতে থাকা প্যাকেট টা খুলে দেখলাম সেখানে একটা লাল পাড় সাদা একটা সুতি শাড়ি যাকে বলে টকটকে লাল,, বাহ ওনার পছন্দ আছে না এটা বলা ঠিক হবে না বলতে হবে ওনার অপছন্দ আছে কিন্তু এটা নিয়ে আমি কি করবো?? আমি তো শাড়ি পড়তেই পারি না, তাতে কি চেষ্টা করতে ক্ষতি কি।

মীরার ফোনটা সেই কখন থেকে বেজেই চলেছে কিন্তু মীরা ইচ্ছে করেই ফোন ধরছে না,, কেননা ফোনটা ঝামেলা দিয়েছে আই মিন নেহাল দিয়েছে,, কিন্তু ফোনের ওপাশের মানুষ টা বড্ড ধেতলা টাইপের ফোন দিয়েই যাচ্ছে তাই বাধ্য হয়েই ফোনটা ধরল মীরা।

কি হলো ফোন ধরছো না কেনো??

আমার ইচ্ছে,, কেনো ফোন দেয়েছেন বলুন।

কেনো এতো তাড়া কিসের আর হ্যাঁ তোমার সাথে কথার বলার সময় আমাও নেই আমি ফোন দিয়েছিলাম তোমাকে এটা বলার জন্য,, তোমাকে যেই কাজটা দেওয়া হয়েছে সেটা করেছো তো??

করবো না দেখি আপনি কি করতে পারেন।

ওকে সেটা কালকে ভার্সীটিতে আসলেই বুঝবে, (এই বলে নেহাল ফোন কেটে দিলো)

ঝামেলা একটা মন টাই চাই এরে মেরে গুম করে দিই,,, কোন কালে যে আমি এর পাকা ধানে মই দিছিলাম আল্লাহ জানে তার প্রতিশোধ এখন নিচ্ছে,, জীবন টা তেজপাতা করে দিলো এই একটা ছেলে,,, (রেগে বলল মীরা)

চলবে,,,,,,??