ভালোবাসি বুঝে নাও-2 পর্ব-২৬+২৭+২৮

0
372

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২৬_পর্ব
.
হুম তো বলুন মহারাণী আমাকে কি শাস্তি দিবেন।

আপনার শাস্তিটা হলো নো টার্চ (মেহরাব কে ছেড়ে দূরে দাঁড়িয়ে বলল মাহি)

এটা আবার কেমন শাস্তি বুঝলাম না(মেহরাব)

আচ্ছা আপনি এটা বলুন,, ধরুন যে একটা ছেলে বিছানায় শুয়ে টিভি দেখছে তো তার পাশে তার সুন্দরী বউও আছে তো টিভিতে অনেক রোমান্টিক একটা মুভি চলছে তো ছেলেটার খুব ইচ্ছে করছে পাশে থাকা তার সুন্দরী বউকে ইচ্ছে মতো ভালোবাসতে, কিন্তু সে পারছে না কেননা তার বউয়ের সাথে তার ঝগড়া হয়েছে আর তার বউ তাকে বলেছে যে সে যেনো তাকে টার্চ না করে,, এখন বলুন সেই মহুর্তে ওই ছেলেটার অবস্থা কেমন(মাহি)

খুবই শোচনীয় (করুন মুখে বলল মেহরাব)

হমম সেটাই খুব শীঘ্রই আপনার অবস্থা ও ঠিক ওমনি হতে চলেছে।

মানে??

সেটা সময় হলেই বুঝবেন এখন আপনার শাস্তি হলো আমি না বলা অবধি আপনি আমায় আপনার হাত দিয়ে ছোঁবেন না আর আমি যা যা বলবো তাই করতে হবে তবে সেটা আমায় না ছুঁয়ে ওকে (মাহি)

কিন্তু

নো টক (মেহরাব কে বলতে না দিয়ে)

ওকে তাই হোক তাহলে।এবার তাহলে যাওয়া যাক সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে আর রাত ও হয়ে যাচ্ছে ।

ওকে চলুন।

চল,, এই বলে মেহরাব মাহির হাত ধরতে গেলে।

এই কি করেন আপনার না আমায় ছোঁয়া নিষেধ দূরে থাকুন।

ওকে ঠিক আছে চল তাহলে।

পরদিন সকালে।

আজকে হলুদ পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে, বাগানে স্টেজ টাও একদম কমপ্লিট মাহির কথা অনুযায়ী ওখানে বেলুন ও লাগানো হয়েছে,,, মেঘলাকে হলুদ শাড়ি আর ফুল দিয়ে সাজিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে বরের বাড়ি থেকে হলুদ আসলেই গায়ে মাখানো হবে। মাহিও আজকে হলুদ শাড়ি পরেছে, সবাই বাগানে বসে ছিলো তখনি মাহি দেখলো মেহরাব উপরে নিজের রুমে যাচ্ছে হয়ত ফ্রেশ হতে অনেক কাজ করছে বেচারা, মেহরাব কে উপরে যেতে দেখে মাহির মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চাপলো মহিও চুপিচুপি মেহরাব এর রুমে গেলো।

মেহরাব এর রুমে ঢুকার আগে মাহি নিজের ব্লাউজ এর ফিতাটা হাত দিয়ে খুলে দিলো তারপর রুমে ঢুকে দেখলো মেহরাব ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছে।

এই দাঁড়ান দাঁড়ান (মাহি)

কি হয়েচে বালিকা বধূ ডাকিস কেনো?? (মেহরাব পিছন ঘুরে বলল)

শুনুন না আমার না এই ফিতাটা খুলে গেছে একটু লাগিয়ে দেন না প্লিজ (মাহি)

মেহরাব ভ্রু কুঁচকে মাহির দিকে তাকালো,, বাড়িতে এতো মানুষ থাকতে মাহি কিনা ওর কাছে এসেছে ফিতা লাগানোর জন্য তার থেকেও বড় কথা যে মেয়ে তার কাছে আসতেই চাই না সে কি না আগ বাড়িয়ে তার কাছে আসতে বলছে তাও আবার ব্লাউজ এর ফিতা লাগানোর জন্য,, ব্যাপারটা কি নিশ্চয়ই কোনো ঘাপলা আছে (মনে মনে বলল মেহরাব)

কি হলো এতো কি ভাবছেন লাগিয়ে দেন ছেলের বাড়ি থেকে সবাই চলে আসবে তো (আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলল মাহি)

হুম আসছি,, এই বলে মেহরাব মাহির পিছনে গেলো যেই পিঠ থেকে চুল সরাতে যাবে তখনি মাহি বলল।

আস্তে আপনাকে কিন্তু আমায় না ছুঁয়ে সব কিছু করতে হবে ওকে।

কিন্তু না ছুঁয়ে ফিতা বাঁধবো কি করে বাঁধতে গেলে তো একটু না একটু হাত লাগবেই (মেহরাব)

সেটা আমি কি জানি আপনি কীভাবে আমায় না ছুঁয়ে ফিতা বাঁধবেন,, এখন কথা না বলে কাজ করুন তো (এখন দেখো চান্দু কেমন লাগে, অন্য ছেলেকে নিয়ে আমায় সন্দেহ করা না?? এখন বোঝাবো এই মাহি কি জিনিস,, আজ থেকে আপনার সত্তীতের থুরী পুরুষত্বের পরিক্ষা দেখি আপনি কি করেন)

মাহি আয়নায় দেখলো মেহরাব অল্প অল্প চুল হাতে নিয়ে পিঠের থেকে সরিয়ে কাঁধে রাখছে মাহির ভিষণ হাসি পাচ্ছে,, মেহরাব এমন ভাবে চুল সরাচ্ছে যেনো হাত মাহির পিঠে লাগলেই তার হাত পুরে যাবে,, প্রায় অনেক্ক্ষণ ধরে মেহরাব মাহির ব্লাউজ এর ফিতা লাগালো।

শেষ,, বাবা বাঁচলাম(হাফ ছেড়ে একটা বিজয়ের হাসি দিয়ে বলল মেহরাব)

মাহি কিছু বলতে যাবে তখনি নিচে থেকে শুনতে পেলো যে বরের বাড়ি থেকে হলুদ নিয়ে চলে আসছে,, মাহিও দৌড়ে নিচে চলে গেলো।
নেহাল কালো পান্জাবী পরে আর জিন্স পরে চোখে কালো সানগ্লাস নিয়ে হাতে হলুদের ডালা নিয়ে অনেক ভাবের সাথে ভিতরে ঢুকছে,,, নেহাল এর সাথে ওর অনেক গুলা কাজিন আর বন্ধুরা সহ আরো অনেকেই আছে সবার হাতে কিছু না কিছু আছে,,, নেহালদের কাছ থেকে জিনিস গুলো নিয়ে ওদের কে বসতে দেওয়া হয়েছে।

নিন এই যে পিচ্চি তুমিও নাও,, এটা আপনার (মীরা সবাইকে শরবত দিচ্ছিলো আজকে ও হলুদ শাড়ি পরেছে,,তো শরবত দিতে দিতে সামনে গিয়ে দেখলো একটা চেয়ারে নেহাল বসে আছে অনেক ভাব নিয়ে)

আপনি এখানেও চলে আসছেন?? আমার পিছু নিয়ে (রেগে বলল মীরা)

আরে কাঁদা সুন্দরী তুমি এখানেও কি বেপার আমায় পছন্দ হয়ে গেলো নাকি আমি যেখানে যাচ্ছি তুমি সেখানে ঠিক বুঝলাম না (নেহাল)

আপনার বোঝার দরকারও নাই,, তা আপনি কি শোক পালন করছেন?? পাগল না ছাগল হলুদের দিনে কালো রঙের পাঞ্জাবি পরে আসছেন আপনি জানেন না হলুদে হলুদ পাঞ্জাবি পরতে হয় (মীরা)

ওহ তাই নাকি,, কি বলতো আমার না হলুদ পাঞ্জাবি নেই তুমি এক কাজ করো শাবানার মতো তোমার এই শাড়ি কেটে আমায় একটা পাঞ্জাবি বানিয়ে দাও,, যত্তসব এই কোন বই তে লেখা আছে যে হলুদে হলুদ পাঞ্জাবি পরতে হবে?? সবাই পরলেও আমি পরবো না ওকে কেননা আমি সবার থেকে আলাদা (ভাব নিয়ে বলল নেহাল)

হুম এই জন্যই তো ঘরের মধ্যে ও সানগ্লাস পড়ে আছেন কানা একটা (এই বলে মীরা চলে গেলো)

কিহ আমি কানা,, ওহ সালার আমি তো ভাবের চোটে সানগ্লাস টা খুলতেই ভুলে গেছি।

,,,,,,একে একে সবাই মেঘলা কে হলুদ লাগালো তারপর অন্যরাও অনেক হলুদ মাখলো, খুব ভালোভাবেই অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হলো,,

,,সন্ধ্যাই,,

উফ সবাই কি আমার গাল সরকারি পেয়েছে নাকি হলুদ দিয়ে একদম ভরে ফেলছে,,,, রুমে এসে মাহি মুখ ধুয়ে মুখ মুছতে মুছতে বলল তখনি দরজা আটকানোর শব্দে পিছনে তাকালো দেখলো মেহরাব দাঁড়িয়ে আছে ওনার দুগালেও হলুদ আর সেটাও মাহিই দিয়েছে তবে মেহরাব মাহিকে দিতে পারিনি কেননা আগেই তো মাহি বলেছে মাহিকে ছোঁয়া নিষেধ।

একি আপনি দরজা আটকালেন কেনো??(মাহি)

মেহরাব কিছু বললো না মাহির দিকে এগোতে লাগল,, আর মাহিও পিছাতে লাগলো,, মাহি পিছাতে পিছাতে একদম দেওয়ালের সাথে লেগে দাঁড়ালো।

দেখুন আপনি কিন্তু আমায় ছুঁতে পারবেন না এটা আপনার শাস্তি (কাঁপা কাঁপা গলায় বলল মাহি)

মেহরাব নিজের মুখ এগিয়ে নিয়ে মাহির গালের সাথে ঘসে হলুদ লাগিয়ে দিলো,, তারপর মাহির সামনে হাঁটু গেরে বসে ঠোঁট দিয়ে মাহির পেটের উপর থেকে কাপড় সরিয়ে ওখানে নিজের গাল ঘসে হলুদ লাগিয়ে দিলো।
মেহরাব এর গালের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি মাহির পেটে ফুটছিলো মাহি ঠোঁট কাঁমড়ে ধরে চোখ বন্ধ করে ছিলো তখনি মেহরাব মাহির কানে ফিসফিস করে বলল।

তুই আমায় তোকে ছুঁতে নিষেধ করেছিস, এটা কখনো সম্ভব?? তবুও আমি মানছি,, কিন্তু তুই এটা বলিসনি যে মুখ দিয়ে তোকে ছুঁয়া যাবে না,,, সাধারণ মানুষ হাত দিয়ে যদি কাউকে ছোঁই তাহলে তাকে ছোঁয়া বলে তুই ও এটাই বলেছিস যে তোকে হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে না,, এই জন্যই তো তোকে ঠোঁট দিয়ে ছুঁয়ে দিলাম। (এই বলে মেহরাব মাহির কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দরজা খুলে চলে গেলো,, আর মাহি এখনো ওভাবেই দেয়ালের সাথে লেগে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে, এই প্রথম কেউ ওকে এতো গভীর ভাবে ছুঁয়ে দিলো)

চলবে,,,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২৭_পর্ব
.
ভাবি অনেক রাত হয়ে গেছে এখন আমায় যেতে হবে অলরেডি সবাই চলে গেছে আমি না গেলে আবার মা টেনশন করবে (নেহাল)

যাবে তো তবে একটু দাঁড়াও দরকার আছে (মেঘলার সাথে নেহালকে আরো আগে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো মেঘ আর মেঘ কে রাস্তায় সেই কাঁদার ঘটনা টাও বলেছিলো,,তারপর থেকে নেহাল এর সাথে টুকটাক কথা হতো একে অপরকে চিনেও গেছে তাই তুমি করেই বলে)

কি দরকার??(নেহাল)

সেটা এখনি বুঝতে পারবে এই ইপ্সা আপু মীরা কে ডাকো তো,, তোমার মনে নেই ডেয়ারের কথাটা (শেষ এর কথাটা ফিসফিস করে বলল মেঘলা)

হ্যাঁ আমি এখনি যাচ্ছি এই বলে ইপ্সা মীরাকে ডাকতে গেলো,, কিছু সময় পর ইপ্সা মীরাকে নিয়ে আসলো, মীরা নেহাল এর পিছনে এই জন্য মুখ দেখা যাচ্ছে না,, এই মেঘলা এই যে মীরা। (ইপ্সা)

কিরে ডাকছিস কেনো বল (মীরা)

পরিচয় করিয়ে দিই এই হলো নেহাল আমার একমাএ দেবর প্লাস ছোট ভাই আর নেহাল ও হলো আমার খালাত বোন মীরা (মেঘলা)

ওহ,, আসসালামু আলাইকুম,, আপনি???(রেগে প্লাস জোরে বলল মীরা)

তুমি এখানেও??? এটা কীভাবে সম্ভব (নেহাল)

কিরে তোরা একে অপরকে চিনিস নাকি??(মেঘলা)

চিনবো বা আবার মেঘলা তোর এই দেবর চরম অসভ্য (মীরা)

আর নিজে কি একে তো কাঁদা সুন্দরী তার উপর ধানি লংকা (নেহাল)

দেখুন মুখ সামলে কথা বলুন (মীরা)

দেখাও…ভাবি আমার সময় নেই তোমার এই ধানি লংকা বোনের সাথে কথা বলার আমি গেলাম,, আন্টিকে বলে দিও, (এই বলে নেহাল চলে গেলো,,মীরাও মুখ ভেংচি কেটে চলে গেলো,, মেঘলা আর ইপ্সা কিছুই বুঝলো না বোকার মতো দাঁড়িয়ে থাকলো)

রাতে,,,,,

ছাঁদের সিঁড়ি উপর দাঁড়িয়ে এক হাত কমরে দিয়ে আরেক হাতে আপেল নিয়ে মনের সুখে খাচ্ছে মাহি,,, মূলত মাহি পাহারায় আছে কেননা ছাঁদে মেঘ আর মেঘলা কথা বলছে, মেঘ চুপিচুপি মেঘলার সাথে দেখা করতে আসছে,, আর মাহিকে বলেছে পাহারা দিতে।

উফ এখনে কত মশা কালকে বিয়ে আর এই মশা গুলো তো দেখছি আজকে আমাকে কামড়ে একেবারে লাল করে দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করছে,, সব দোষ মেঘ ভাইয়া আর মেঘলা আপুর ঘোড়ার ডিম কালকে বিয়ে আর আজকে দেখা করতে আসছে, আজব এতো দেখা করার কি আছে।

মাহি একা একা এগুলা বলছে আর আপেল খাচ্ছে তখনি দেখলো শুভ রাকিব রনি সহ আরো মেহরাব এর বন্ধু আর কাজিনরা সবাই এদিকেই আসছে।

আরে মাহি তুমি এখানে?? এখানে দাঁড়িয়ে কি করছো??(শুভ)

হ্যাঁ এতো রাতে এখানে কেনো?? আচ্ছা এখানে আছো ভালোই হয়েছে এখন চলো ছাঁদে য়াই আজকে রাতে তো ঘুম হবে না, সারারাত আড্ডা দেবো আর মজার বেপার কি জানো তো আজকে ছাঁদে বারবি কিউ হবে জয় আর অনিক সব কিছু আনতে গেছে একটু পর বাকি সবাই চলে আসবে এখন চলো (রাকিব)

ও ত,তাই ন,,নাকি ভালো তো (এইরে কাম সারছে এখন কি হবে এদের আটকাবো কীভাবে এরা যদি সবাই এখন ছাঁদে যায় তাহলে তো সব গন্ডগোল হয়ে যাবে,, মনে মনে বলল মাহি)

কিরে তোরা এখানে দাঁড়িয়ে কি করছিস (পিছন থেকে বলল মেহরাব)

এইতো তুইও চলে আসছিস চল যাওয়া যাক (শুভ)

একি মাহি তুই এভাবে সামনে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো সর সামনে থেকে(ভ্রু কুঁচকে বলল মেহরাব)

না না এখন যাওয়া হবে না (মাহি)

মানে??(মেহরাব)

ম,,মানে আমি বলছি তাই এখন আমরা গল্প করবো চলুন (আল্লাহ বাঁচাও এই মেঘলা আপুর জন্য যে আর কি কি করতে হবে কে জানে,, মেহরাব এর গলা জরিয়ে বলল)

মেহরাব আমার মনে হয় মাহি না মানে ভাবি এখন রোমান্টিক মুডে আছে তো আমরা এখন তাহলে যাই একটু পরে আসছি,, এই চল সবাই, এই বলে শুভরা সবাই চলে গেলো।

এসব কি হচ্ছে মাহি সবার সামনে এটা কি করলি তুই??(রেগে বলল মেহরাব)

ই,,,ইয়ে ম,,মানে আসোলে আমি প্রেম করবো (মেহরাব এর গলা ছেড়ে মাথা চুলকে বলল মাহি)

কিহ??

মানে আমার প্রেম প্রেম পাচ্ছে (ওরে গাধী কি বলছিস এসব)

মাথাটা কি একেবারেই গেছে?? নাকি কিছু খেয়েছিস।

ওদিকে মেঘলা আর মেঘ কথা শেষ করে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলো তখনি দেখলো সিঁড়িতে মাহির সাথে মেহরাব দাঁড়িয়ে।

এই যাহ, একেই বলে যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয় (ফিসফিস করে বলল মেঘলা)

ওহ তাহলে এই বেপার আপনি তাহলে পাহারাদার হওয়ার কাজ করছেন?? (উপরে মেঘকে দেখে বলল মেহরাব)

ইয়ে মানে আমার কোনো দোষ নেই সব দোষ মেঘ ভাইয়ার..

এ কিরে মাহি তুমি না আমার বোন হও ভাইকে এভাবে ফাঁসিয়ে দিচ্ছো?? বাহ ভালো তো (মেঘ)

আগে নিজে বাঁচি পরে আপনাকে বাঁচাবো,, (মাহি)

এই তুই এখানে কি করছিস??(মেহরাব)

ইয়ে মানে সূর্য না থুরি চাঁদ দেখতে আসছিলাম আর কি (কেবলামার্কা হাসি দিয়ে)

আমারে কি তোর বোকা মনে হয়?? কেনো তোদের বাসার ছাঁদ থেকে বুঝি চাঁদ দেখা যায় না (মেহরাব)

ভাই সব বুঝেও কেনো আমায় এভাবে টেনসন দিচ্ছিস বল।

ঠিক আছে অনেক হয়েছে মেঘ তুই এখন যাহ কেউ দেখে ফেললে আবার সম্যসা হবে,, আর শুভরা দেখলে তোকে একদম সাবান ছাড়া ধুয়ে দিবে যাহ পালা (মেহরাব)

তুই তো আমার সত্যি কারের ভাই,, মাহি একথা মনে থাকলো তোমার ও তো সামনে বিয়ে তখন বোঝাবো মজা,, এই বলে মেঘ চলে গেলো।

,,,,,গভীর রাত প্রায় ১২টার কাছাকাছি চারিদিক থেকে ঝিঁঝি পোকার আওয়াজ আসছে,, ছাঁদের এক পাশে গরম গরম বারবিকিউ হচ্ছে আর আরেক পাশে সবাই গোল হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে,,,
একেতে মাঝরাত তারপর ছাঁদ চারপাশ থেকে শো শো করে বাতাস বইছে মাহি গুটিসুটি মেরে বসে মেহরাব এর গায়ের সাথে গা ঘেসে বসেছে।

কি হয়েছে?? (মেহরাব)

শীত করছে অনেক (করুন মুখ করে বলল মাহি)

তুই কিরে এটা কি শীতের সময় যে তোর শীত করছে আমার তো মন চাইছে এখানেও এসি থাকলে ভালো হতো,, এই জন্যই বলি বেশি করে খা তুই তো খাসই না চিকনি একটা (মেহরাব)

এখনো এভাবে বকা দিবেন?? আমার শীত করলে আমি কি করবো আর আপনার তো গন্ডারের চামড়া শীত লাগবে কি করে।

কিহ বললি তুই??

আচ্ছা সরি,, আমি কি নিচে চলে যাবো??

কেনো??

শীত করছে তো।।

আয় এদিকে আয়,,,, এই বলে মেহরাব হাত বারিয়ে মাহিকে এক হাতে জরিয়ে একদম বুকের সাথের মিশিয়ে নিলো যেনো নিজের গায়ের তাপ দিয়ে মাহির শীত দূর করে দিবে মাহিও মেহরাব বুকে চুপটি করে থাকলো।

আপনার কিন্তু আমায় ছোঁয়া নিষেধ ওকে নির্ঘাত শীত লাগছে তাই আপনার হেল্প নিচ্ছি একটু নইত নিতাম না..

সব সময় বেশি কথা চুপ করে থাক।

অনেক রাত অবধি সবাই আড্ডা দিয়ে তারপর বারবিকিউ খেয়ে আবার আড্ডায় মেতে উঠেছিলো বেশ খানিকক্ষণ ধরে আড্ডা দিয়ে সবাই এখানেই ঘুমিয়ে পরেছে,, আগে থেকেই মাদুর কাথা আর বালিশ নিয়ে আসছিলো মাদুর এর উপর কাথা বিছিয়ে বালিশে হেলান দিয়ে বসার জন্য,, কিন্তু এখন সেটা মাথার নিচে দিয়ে সবাই ঘুমাতে ব্যাস্ত।

মাহি মেহরাব এর কোলের উপরে হাত পা ছেড়ে দিয়ে ঘুমাচ্ছে মেহরাব অপলক দৃষ্টি তে তার বালিকা বধূ কে দেখতে ব্যাস্ত।

তোর উপর শুধু আমার অধিকার তোকে দেখারও আর তোকে ছোঁয়ার ও খুব ভালোবাসি তোকে বালিকা বধূ,,, ঘুমন্ত মাহির কপালে চুমো দিয়ে বলল মেহরাব ।

সরি বালিকা বধূ তোর অনুমতি না নিয়েই তোকে ছুঁয়ে দিলাম,তবে এই মেহরাব তার বালিকা বধূ কে ছোঁয়ার জন্য কবেই অনুমতি নিয়েছে (এই বলে মেহরাব কিঞ্চিৎ হাসলো)

চলবে,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২৮_পর্ব
.
সকালে সবাই কমরে হাত দিয়ে ছাঁদ থেকে নামছিলো।

সেকিরে তোরা রাতে ছাঁদে ছিলি নাকি?? আর এভাবে কমরে হাত দিয়ে রেখেছিস কেনো কি হয়েছে?? (রুপালি)

আন্টি তোমার ছেলে কিন্তু এটা ঠিক করেনি আমাদের না ডেকে রাতে নিজের বউকে নিয়ে চলে আসছে আর আমরা ছাঁদে নিচে শুয়ে কমর আর ঘাঁড় সোজা করছি (শুভ)

হ্যাঁ আন্টি মেহরাব এটা একদম ঠিক করেনি আজকে বিয়ে আর বিয়ে বাড়িতে কি কমর বেঁকা করে কমরে হাত দিয়ে থাকবো নাকি??(রাকিব)

একবার ওকে পাই তারপর দেখাবো মজা, সালা আমার ঘাঁড় একদম বেঁকে গেছে আহ(অনিক)

আচ্ছা ও ঘুম থেকে উঠলে যা করার করিস, এখন যা যে যার রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে কাজে লেগে পর অনেক কাজ বাবা যা যা (রুপালি)

ঠিক আছে।

এই বলে যে যার রুমে চলে গেলো। মাহি আড়মোড়া ভেঙে ঘুম থেকে উঠে দেখলো ও বিছানায় মেঘলার পাশে শুয়ে আছে।

আরে আমি তো ছাঁদে ছিলাম তাহলে এখানে আসলাম কি করে,, এটা বলে মাহি মেঘলাকে ডাকতে লাগল।এই মেঘলা আপু উঠো,, আজকে তোমার বিয়ে আর বিয়ের কণেকে এতোবেলা অবধি ঘুমাতে হয় না উঠো উঠো(মাহি)

উম কি হয়েছে,, এতো সকালে ডাকছিস কেনো, তোরা দুজনে মিলে কি আমাকে ঘুমাতে দিবি না নাকি,, মাঝ রাতে ভাইয়া ডেকে তুললো আবার এখন তুই (ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসে বলল মেঘলা)

মানে,,??আর আমি তো ছাঁদে ছিলাম তাহলে রুমে আসলাম কীভাবে??

আরে রাতে ভাইয়া আমাকে ডাকছিলো পরে আমি উঠে দরজা খুলে দেখি তুই ভাইয়ার কোলে ঘুমিয়ে আছিস,, ভাইয়া বলল তুই নাকি ছাঁদে ঘুমিয়ে পরেছিলি তাই তোকে দিয়ে গেছে (মেঘলা)

ওহ তারমানে ভাইয়া আমায় দিয়ে গেছে হমম এবার বুঝলাম।

মেঘলা এই মাহি দরজা খুলো অনেক বেলা হয়ে গেছে,, দুজনেই উঠো আন্টি আমায় তোমাদের ডাকতে পাঠালো (দরজায় ধাক্কা দিতে দিতে বলল ইপ্সা)

মাহি গিয়ে দরজা খুলে দিয়ে আসলো আর মেঘলা বিছানায় বসে এখনো ঝিমাচ্ছে।

এই চলো চলো অলরেডি অনেক বেজে গেছে এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে কইটা খেয়ে নাও নইতো পরে পার্লার থেকে সাজানোর জন্য মানুষ আসলে আর খাওয়ার সময় পাবে না,, আর মাহি তুমিও চলো ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে খেয়ে নাও।

ওকে ঠিক আছে।

মাহি আর মেঘলা ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলো,, গিয়ে খেয়ে মাহি সোফায় বসে পরলো বাড়িতে এতো মানুষ সবাই সবার মতো কাজে ব্যাস্ত ও কি করবে সেটা খুঁজেই পাচ্ছে না,, তখনি রুপালি আসলো।

মাহি যা তো বাগান থেকে মেহরাব কে ডেকে নিয়ে আয়, এতো বেলা হয়ে গেছে ছেলেটা এখনো কিছুই খেলো না,, সকালে উঠেই কাজে লেগে গেছে,, (রুপালি)

কি বলো মামনি মেহরাব ভাই এখনো খাইনি?? এতো বেলা হয়ে গেছে আচ্ছা আমি ডেকে নিয়ে আসছি,,, (সত্যি আমি যে কি করি ওনার কথা তো আমার মাথায় ছিলো না কত বেলা হয়ে গেছে ইস,, এই বলে মাহি যেখানে রান্না হচ্ছে সেখানে চলে গেলো)

মেহরাব এর ফর্সা মুখটা আগুনের আঁচে আর রোদের জন্য একদম লাল হয়েগেছে ঘেমে টির্শাট এর অর্ধেক ভিজে গেছে,, নাকের ডগায় ঘাম জমে আছে আগুনের আঁচে ওটা চকচক করছে,, আচ্ছা ছেলেদের ও নাক ঘামে?? নাকি শুধু ওনারই ঘামে,, শুনেছি মেয়েদের নাক ঘামলে নাকি বর অনেক ভালোবাসে, কিন্তু ওনার ও তো অনেক নাক ঘামছে তাহলে কি আমিও ওনাকে অনেক ভালোবাসবো,,ইস কি লজ্জা ভাবতেও কেমন লজ্জা লজ্জা লাগে,,, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মাহি এসব ভাবছিলো তখনি ওর মনে পরলো ওতো মেহরাব কে ডাকতে এসেছে,
এখানে এসে ওনাকে না ডেকে নির্লজ্জের মতো ওনাকে দেখে যাচ্ছি আমিও না ধ্যাত।

মেহরাব ভাই এই যে আপনাকে আন্টি ডাকছে খাওয়ার জন্য (মাহি)

মেহরাব রান্নার ওখানে দাঁড়িয়ে সব কিছু তদারকি করছিলো তখনি মাহি ওকে ডাকলো, ওহ সবাইকে বলে মাহির কাছে আসলো।

কি হয়েছে বল ডাকছিস কেনো?(মাহির উড়নার মুখ মুছতে মুছতে বলল মেহরাব)

ওই আন্টি আপনাকে খাওয়ার জন্য ডাকছে চলুন,

ওকে চল,, এই বলে মেহরাব সামনে যেয়ে আবার মাহির কাছে এসে বলল।

তুই খেয়েছিস??

হুম (ওনি এতোকাজের মধ্যে ও আমার খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে আর আমি কেমন ওনাকে রেখেই খেয়ে নিলাম, এটা একদম ঠিক হয়নি খুব পঁচা আমি,, মনে মনে এটা বলে মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো মাহি)

কি হয়েছে মন খারাপ কেনো?? কেউ কিছু বলেছে?? খালামনি কি আবার

না না ওনি কিছু বলেননি,,, আমার খুব কান্না পাচ্ছে খুব খারাপ লাগছে। (কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলল মাহি)

কেনো কি হয়েছে??

আমি খুব খারাপ আপনি এতো কাজের মধোও আমার কথা মনে রেখেছেন আমি খেয়েছি কি না তার খোঁজ নিচ্ছেন আর আমি কোনো কিছু না ভেবেই আপনাকে রেখে খেয়ে নিলাম এটা একদম ঠিক হয়নি।

মেহরাব মাহির দুগালে হাত রেখে বলল,,কে বলল আমার মাহি খারাপ আমার মাহি তো অনেক ভালো,, যে ভুল করে সেই ভুলটার জন্য অনুসূচনা করে সে কখনোই খারাপ হতে পারে না,,, আর এর জন্য কিন্তু তোর শাস্তি পাওনা আছে।

কিহ শাস্তি??(করুন মুখ করে বলল মাহি)

হুম শাস্তি আর সেটা হলো আমাকে এখন খাইয়ে দিতে হবে,,, রাজি তো??

হুম।

এই যাহ তোকে তো ছুঁয়ে দিলাম, এখন কি হবে (মেহরাব)

ধ্যাত মেহরাব ভাই আপনিও না,, বদ লোক একটা (হেসে বলল মাহি)

এইতো আমার বালিকা বধূ হেসেছে,, এখন চল চল যলদি করে খাইয়ে দে পেটেতো ক্ষিধের চোটে ইঁদুর দৌড়া দৌড়ি করছে (মেহরাব)

হম চলুন,, তারপর মাহি মেহরাব কে নিজের হাতে খাইয়ে দিলো আর মেহরাব ও অনেক তৃপ্তি নিয়ে খেলো।

দুপুরের দিকে পার্লার থেকে লোক এসে মেঘলাকে সাজাতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো,, মাহিও সব কাজ সেরে মেঘলার কাছ থেকে অন্য নিজের রুমে আসলো ফ্রেশ হয়ে রেডি হওয়ার জন্য,, রুমে ডুকে দরজাটা বন্ধ করে পিছন ঘুরে দেখলো বিছানায় একটা প্যাকেট রাখা।

আরে এইটা কি,, আর কেই বা এখানে এটা রাখলো,, এই বলে মাহি বিছানার কাছে গিয়ে প্যাকেট টা হাতে নিয়ে খুলে দেখলো ওতে একটা লেহেঙ্গা রাখা আর এটা সেই লেহেঙ্গা যেটা ও সেদিন মেঘলার সাথে গিয়ে পছন্দ করেছিলো কিন্তু মেহরাব এর জন্য কিনতে পারিনি,,,
লেহেঙ্গার গায়ে একটা কাগজ লাগানো ছিলো সেটা খুলে হাতে নিয়ে দেখলো ওতে কিছু লেখা আছে,, মাহি লেখাটা পরতে লাগল।

,,,,আমার প্রেয়সী কে লাল রঙে একদম লাল পরী লাগবে,,, আর আমার বালিকা বধূ নিজে এটা পছন্দ করেছে তো আমি কি সেটা না এনে পারি, আমি চাই তুই এটা পরে একদম লাল জীবন্ত একটা গোলাপ হয়ে আমার কাছে আসবি।

,,,ইতি, তোর লম্বার উপর খাম্বা বদ বর।।

মাহি লেখাটা পরে নিজের অজান্তেই হেসে ফেলল কেননা ও জেনে গেছে এটা কে এখানে রেখেছে। মাহি লেহেঙ্গা টা হাতে নিয়ে বলল।

এটা যখন আপনি আমার জন্য কিনেছেন তখন এটা তো আপনাকেই পরাতে হবে মিস্টার লম্বার উপর খাম্বা বদ বর এটা বলে মাহি হেসে ফেলল।

মেহরাব সব কাজ সেরে নিজের রুমে গেলো ফ্রেশ হতে, একদম রেডি হয়ে নিচে যাবে, ঘেমে একদম গোসল করেছে উঠেছে তাই নিজের রুমে এসেই ওয়াশরুমে ঢুকে পরলো,,, মাহি যেনো এই সুযোগটার অপেক্ষাই ছিলো,, হাতে প্যাকেট টা নিয়ে চুপি চুপি মেহরাব এর রুমে ঢুকে পরলো,, ভ্যাগিস দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিলো না।

মাহি রুমে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিছানায় এসে বসে মেহরাব এর জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। প্রায় অনেক্ক্ষণ পর মেহরাব একটা সেন্টার গেঞ্জি আর টাওয়ার পরে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসলো। এসে দেখলো মাহি ওর বিছানায় বসে আছে।

তুই এখানে আর এখনো রেডি হসনি কেনো,, একটু পরেই তো ওবাড়ি থেকে লোকজন চলে আসবে (মেহরাব)

রেডি হবো কি করে রেডি যে করাবে সেই তো এরুমে এসে বসে আছে।

মানে??

চলবে,,,,,???