#গল্পঃ_ভিলেন
লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি
পর্বঃ ০৭
———————★★———————–
শুভ: আপনি না একজন মেয়ে আপনার কোন লজ্জা নেই এতোটা বেহায়া…. আপনার একটুও কি বিবেগে বাধঁলো না এরকম কাজ করতে ছিঃ…. ( রেগে রেগে)
বুকের ভিতরটা যেনো কেঁপে উঠলো,,,,দুচোখ বয়ে অঝড় পানি ঝড়ছে!!!… দৌড়ে ওয়াসরুমে গিয়ে সাওয়ার নিচে দাড়িয়ে হাউ-মাউ করে কাঁদতে লাগলাম,,,,,
আমি: আমি তো ইচ্ছে করে এমনটা করিনি তাহলে লোকটা কেনো এমন করলো আমার সাথে কেনো কেনো? ( কাঁদতে কাঁদতে)
একটু পর ওয়াসরুম থেকে বের হতেই শুভ এসে সামনে দাড়ালো,,,
শুভ: সরি,,,,! রিয়েলি সরি খুব রাগ উঠে গেছিলো তাই চরটা মেরেছি….
আমি: ইটিস ওকে,,,( নাক টেনে)
শুভ: প্লিজ কিছু মনে করবেন না,,,,
আমি: হুম ( মাথা নিচু করে)
শুভ: একটা কথা আপনার জেনে রাখা খুব দরকার…. আমি আপনাকে স্ত্রী অধিকার দিতে পারবো না সরি,,,,
লোকটার কথা শুনে আবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম,,,,,
আমি: তাহলে বিয়েটা করলেন কেনো,,,,
শুভ: করেছি মানে করেছি ( অন্যপাশে তাকিয়ে)
আমি: আজব তো!!! বিয়ে করেছেন যখন স্ত্রী অধিকার তো দিতেই হবে,,,,
শুভ: দেখুন সব কিছুর লিমিট আছে আমি যখন বলছি দিতে পারবো না তার মানে পারবোই না,,,,( ধমক দিয়ে)
আমি: তাহলে বিয়েটা করলেন কেনো বলুন,,,,
শুভ: প্রয়োজন ছিলো তাই করেছি ( অন্য দিকে তাকিয়ে)
আমি: আমার দিকে তাকিয়ে সত্যিটা বলেন তো,,,
শুভ কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে হন হন করে বাইরে চলে গেলো,,,,
আমি: কিহহ হলো হঠাৎ লোকটা,,,,,এমন ব্যবহার কেনো করছে আমি তো উনার বউ তাহলে সমস্যা কি কিছুই বুঝতেছি না,,,,হে খুদা প্লিজ দেখো সব যেনো ঠিক থাকে,,,,, ( চোখ বন্ধ করে)
অনমনে ভাবতে ভাবতে নিচে নামছি তখনি আশা এসে হাতটা ধরলো,,,,
আশা: এমা তুমি সাঁজো নি কেনো তুমি না নতুন বউ,,,,,
আমি: এমনি ( মুচকি হেসে)
আশা: এমনি মানে!! আমি সাঁজিয়ে দিচ্ছি এসো,,,,
আমি: আশা থাক না প্লিজজজ
আশা: থাক মানে,,, কি হয়ছে কোন সমস্যা বলতে পারো আমায়,,,,
আমি: তেমন কিছু না আশা,,,
আয়শা: কি যে বলিস তুই আশা ভাবির আবার কি হবে….
আশা: আপু তুই বুঝবি না তোর তো আর কোন ফিলিংস নেই,,,,,
আয়শা: আশা ( ধমক দিয়ে)
আশা: একদম ধমকাবি না
আয়শা: তুই কিন্তুু
আমি: চুপপপপ,,,, দুজনি একদম চুপপ কি করতেছো বাচ্চাদের মতো ঝড়গা করছো,,,,( ধমক দিয়ে)
আশা: তুমি তো দেখছো আপু কেমন করে আগবারিয়ে ঝগড়া করতে আসছে,,,,,
আমি: হুমম দেখলাম,,,দেখো আশা ও তোমার বড় বোন একটু বকতে পারেই তোমার উচিত চুপ থাকা আর আয়শা শোন ছোট বোন কে একটু ভালোবাসতে শিখো দেখো সম্মান দিলেই সম্মান পাবে,,,,,
আয়শা: কান ঝালা-পালা বাবা গো এতো জ্ঞান,,,
আয়শা কানে আগুল দিয়ে চলে গেলো আমি আশার কাঁধে হাত রেখে ইশারা করে চুপ থাকতে বললাম,,,,,
আমি: চলো এসো,,,,
আশা: হুম চলো,,,,
__ সবাই মিলে এক সাথে খাবার খেয়ে নিলাম,,,,,রুমে এসে দেখি শুভ রেডি হচ্ছে চুপিচুপি রুম ডুকলাম আমায় দেখে শুভ ব্যাগটা নিয়ে রুম থেকে বের হতেই ডাক পিছন থেকে দিলাম,,,,
আমি: একটু তাড়াতাড়ি আসবেন,,,,বাসার সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে
শুভ: আমি যাবো না বলছি তো,,,,
আমি: আমি অপেক্ষা করবো,,,,,
শুভ কিছু না বলেই চলে গেলো আমি গিয়ে বেলকুনিতে দাড়ালাম,,,,,
___ প্রায় সন্ধার দিকে সোফায় বসে আছি হঠাৎ শুভ রুমে এসে ব্যাগটা রেখে বলতে লাগলো,,,
শুভ: যদি যাওয়ার হয় তো যেনো তাড়াতাড়ি রেডি হয়,,,,
আমি: সত্যি যাবেন তো,,,( খুশি হয়ে)
শুভ ওয়াসরুমে দিকে চলে গেলো!! আমি সাত-পাঁচ না ভেবে তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিলাম,,,,,
শুভ: আমি যাচ্ছি আপনি আসুন,,,,
আমি: হুম ( মাথা নাড়িয়ে)
শুভ চলে গেলো আমিও পিছন পিছন হাঁটা দিলাম,,,,, নিচে আসতে দেখি সবাই দাড়িয়ে আছি,,,,
মা: বউমা সকালে শুভ সাথে চলে এসো,,,
আশা: হ্যাঁ ভাবি তাড়াতাড়ি এসো খুব মিস করবো,,,
আমি: ঠিক আছে কালই চলে আসবো,,,,
মিঃ মাসুদ: সাবধানে যেও,,,,
আমি: আচ্ছা বাবা,,,, আপনারা সাবধানে থাকবেন,,,,
সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসলাম
শুভ আজ ড্রাইফ করছে আমি বাইরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি,,,,,,,একটু পর হঠাৎ গাড়িটা জোরে ব্রেক করতেই ধাক্কা খেলাম,,,,,
আমি: আহহ,,,,,সাবধানে চলবেন তো,,,,
শুভ: বাসায় পৌছে গেছি কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি শুনছেন না তো,,,,
আমি: ওহহ সরি সরি বুঝতে পারিনি
শুভ: স্টুপিড,,,,নামুন
গাড়ি থেকে নেমে তাড়াতাড়ি করে বাসায় ডুকে গেলাম
আমি: আম্মু,,,,,
আম্মু: ওমাগো আদিবা যে
ওগো দেখো আদিবা আসছে
উপর থেকে সবাই চলে আসলো,,,,
আব্বু: শুভ আসেনি,,,,
আমি: উনি তো,,,
পিছনে তাকিয়ে দেখি লোকটা কোথাও নেই,,,,,
আমি: লোকটা কই গেলো,,,,( মনে মনে)
ছোটমা: আদিবা শুভ কই,,,,,
শুভ: এই তো,,,,,
পিছনে তাকিয়ে দেখি দু হাত ভর্তি জিনিস পএ নিয়ে দাড়িয়ে আছে,,,
শুভ: এগুলো যদি ভিতরে রাখতেন
আব্বু: রহিম এগুলো নিয়ে ভিতরে রাখ,,,,বাবা এসব আনার দরকার ছিলো না,,,
শুভ: প্রথম বার আসলাম এসব না আনলে চলে নাকি,,,,( মুচকি হেসে)
আব্বু: তুমি সত্যি অনেক অসাধারন তোমাকে জামাই হিসেবে পেয়ে আমি খুব হ্যাপি
আব্বু শুভকে জোরিয়ে ধরতেই শুভ অস্তি বোধ করলো,,,,
শুভ: হুমম আমিও খুব হ্যাপি আপনার মতো শশুড় পেয়ে ( বিরক্ত নিয়ে)
আহিরাঃ জিজু কি বাইরে থাকবে নাকি ভিতরে এসো
আব্বু: এসো এসো,,,,
সবাই মিলে শুভকে জামাই আদর করতে ব্যস্ত আমি মন মরা হয়ে দেওয়াল ঘেষে দাড়িয়ে আছি হঠাৎ ছোট বোন আহিরা এসে জোরিয়ে ধরলো,,,
আহিরা: আপু,,,,,,,
আমি: পাগলি,,,,, ( মুচকি হেসে)
আহিরা: তুমি খুব লাকি এমন একটা বর পেয়েছো,,,,
রাতুল: আহিরা ঠিক বলছে কত হ্যানসাম জিজু একদম হিরো,,,,,
আহিরা: হুমমম আপু কথা বলছিস না যে,,,
আমি: হুমম অনেক লাকি রে ( অনমনে)
হঠাৎ তমা আর সোহম বাসায় ডুকলো,,,,
তমা: আম্মুু
ছোটমা: তোরা এখানে,,,
আব্বু: আমি ডেকেছি আজ তো আসার কথা,,,
আম্মু: ভালো করেছো,,,,,
ছোটআব্বু: না আসতে বললেই ভালো হতো না ভাইজান
আব্বু: কি বলছিস চুপ করো,,,আই তমা ভিতরে সোহম এসো
ওরা ভিতরে চলে আসলাম সোহম গিয়ে শুভর পাশে বসলো,,,তমা এসে আমার সামনে মাথা নিচু করে দাড়ালো,,,,
তমা: সরি আপু,,,
আমি: আরে পাগলি সরি বলতে হবে না,,,,তোর তো কোন দোষ ছিলো না তাই না,,,
তমা: তবুও আমার জন্য তোমাকে ছোট হতে হলো,,,
আমি: তুই না আমার ছোট বোন সো তোর জন্য এটুকু কিছুই না আমি চাই তোরা হ্যাপি হ,,,,
তমা: হুমমম আপু ( জোরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো,,,
আমি: পাগলি একটা,,,,
____রাত প্রায় সাড়ে ১০টা বাজে সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে রুমে চলে গেলো,,,,শুভকে নিয়ে আমার রুমে নিয়ে আসলাম,,,,
আমি: ফ্রেস হয়ে এসো সুয়ে পড়েন,,,,
শুভ: হুমমম,,,
শুভ ফ্রেস হতে গেলো আমি গিয়ে সুয়ে পড়লাম,,,,,একটু পর শুভ ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে এসে বিছানা থেকে বালিশ আর চাদরটা নিয়ে সোফায় গেলো আমি আবাক হলাম,,,,
আমি: কি করছেন বিছানায় সুয়বেন না,,,,
শুভ: না
আমি: কেনো,,,,?
শুভ: কাল যা ঘটিয়েছেন তারপর আপনার সাথে একি বিছানায় ঘুমাতে পারবো না
আমি: কিহহ”! তাই বলে সোফায় সুয়বেন,,,
শুভ: হুমম,,,আপনি গিয়ে সুয়ে পড়েন,,,
আমি: আপনার তো সোফায় ঘুমানোর অভ্যস নেই
শুভ: মেনেচ করে নিবো,,,,
আমি: পারবেন না,,,,আপনি বিছানায় ঘুমান আমি সোফায় সুচ্ছি কেমন
শুভ: না না আপনি গিয়ে সুয়ে পড়েন আমি পারবো বলছি তো
আমি: আপনি পারবেন না যান গিয়ে সুয়ে পড়েন,,,,
শুভ: কিন্তুু আপনি
আমি: সমস্যা নাই আপনি যান গিয়ে সুয়ে পড়েন,,,
শুভ: ওকে,,,,
শুভ গিয়ে বিছানায় সুয়ে পড়লো আমি সোফায় গিয়ে সুয়ে পড়লাম,,,,
বার বার নিজেকে একটা প্রশ্ন করতে লাগলাম……
( চলবে)